Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025

    অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025

    আলস্যের জয়গান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    দেবযান – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

    উপন্যাস বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এক পাতা গল্প333 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ১৩. একটু পরে পুষ্প এল

    একটু পরে পুষ্প এল। বল্লে–কি করছিলে?

    যতীন তার দিকে সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে বল্লে–পুষ্প, তুমি মায়া? মিথ্যে?

    –সে কি যতীন-দা? ব্যাপার কি?

    –এ সব ভেল্কি? তুমি ভুল বুঝিয়েচ পরলোক-টরলোক। আমরা মরে ভূত হয়ে আছি। চক্রপথে এখনো আমাদের অনেক ঘুরতে হবে।

    পুষ্প খিল খিল করে হেসে বল্লে–এ তত্ত্ব তুমি জানলে কোথায়? নতুন কথা তোমার মুখে!

    –হাসি নয়। আমার মনে শান্তি নেই। এক মহাপুরুষ এসে অদ্ভুত দর্শন করিয়ে গেলেন আমার গা ছুঁয়ে। এখন বুঝেচি সব মিথ্যে।

    –কিছুই বোঝোনি। বুঝতে অনেক দেরি! ভগবানের দয়া যেদিন হবে সেদিন বুঝবে। এ আমি অনেকদিন জানি। কিন্তু তাতে কি? এতেই আনন্দ। যুগে যুগে আসবো যাবো, এর শোক-দুঃখেও আনন্দ। খুঁজে নেবো। লীলাসঙ্গী হয়ে থাকবো তাঁর। তিনিই খেলা করছেন,

    খেলুড়ে না পেলে খেলা করবেন কাকে নিয়ে? সবাই ব্ৰহ্ম হয়ে বসে থাকলে সব শূন্য, নিরাকার। তুমি নেই, আমি নেই, জগৎ নেই–ইহলোক নেই, পরলোক নেই। সত্যি কথা। কিছুই নেই–আবার সবই আছে। খেলা করো না দুদিন, যতদিন তিনি খেলাবেন।

    -তারপর?

    -তারপর সকলের যা গতি, তোমারও তাই। তাঁতে ভক্তি রাখো, সব হবে। তুমি তো তুমি, আমি তো আমি–লক্ষ লক্ষ বছর ধরে অতি উচ্চ স্তরের আত্মা, যাঁরা দেব-দেবী হয়ে গেছেন–তাঁরাও তাই।…সব অনিত্য।

    –তুমি এসব কি করে জানলে?

    –করুণাদেবী সেদিন বলেচেন। ও নিয়ে মন খারাপ কোরো না। ও শেষ অবস্থার কথা। যখন সে অবস্থা আসবে, তখন আর বসে ভাবতে হবে না। তিনিই পথ দেখিয়ে দেবেন। এখন চলো, আশাবৌদির বড় বিপদ, কিছু করতে পারি কিনা দেখা যাক–

    যতীন ব্যস্ত হয়ে বল্লে–কি-কি-বিপদ? আশার? কি হয়েছে?

    পুষ্প কৌতুকের হাসিতে ভেঙে পড়লো যেন। বল্লে–ঐ! এত বাসনা এত মায়া যার মধ্যে এখনও, তিনি জগৎকে উড়িয়ে দিয়ে ভগবানে মিশে যেতে চান! সন্নিসি ভেল্কি দেখালে কি হবে, ও অবস্থা তোমার আমার জন্যে নয়। পৃথিবী ছেড়ে এসে এখনও তার বাঁধন কাটাতে পারেন না, উনি বড় বড় বুলি ঝাড়েন।

    –সন্ন্যাসী তাই বলছিলেন, সময় হয়নি।

    –সময় শুধু হয়নি যে তা নয়–হোতে ঢের দেরি। ও নিয়ে মাথা ঘামাবে না বলে দিচ্চি। তাঁর লীলাসঙ্গী হয়ে থাকো, মনে মনে সৰ্ব্বদা তাঁকে ভক্তি করে ডাকো। তিনিই আলো জ্বালবার কর্তা। করুণাদেবী কি কম উঁচু স্তরের জীব? কিন্তু উনি বলেন, আমি মনেপ্রাণে মেয়েমানুষ সুখদুঃখ স্নেহভালবাসা নিয়ে থাকতে ভালবাসি। তাঁর সঙ্গে মিশে যেতে চাই নে, লীলাসহচরী হয়ে থাকি তাঁর সৃষ্টিতে। তাঁকে ভালবাসি মনেপ্রাণে, তাঁর জীবদের সেবা করি যুগে যুগে। এই আমার তপস্যা। মুক্তি চাইনে।

    -সত্যি, এমন না হোলে আর দেবী! দেবী কি–সাক্ষাৎ মা! জগতের করুণাময়ী মা। আমাকে একবার দেখা দিতে বোলো, পায়ের ধুলো নেবোনা ভুল হোলো, ধুলো আর এখানে কোথায়? তা ছাড়া ওঁদের পায়ে কি ধুলো লাগে! এত উচ্চ জ্ঞান তাঁর এ আমি জানতাম না।

    –আচ্ছা আর অত বিচার করতে হবে না তোমায়। আমি বলবো তোমায় দেখা দিতে। ওঁরাই তো দেবী। পৃথিবীতে ওঁদেরই তো মন্দির প্রতিষ্ঠা করে পূজো করা হয়। ওঁরাই দুর্গা, ওঁরাই কালী, ওঁরাই সরস্বতী। নামে কি আসে যায়? অন্য দেশে হয়তো অন্য নামে পূজো করে।

    –এখন কিছু কিছু বুঝচি। আগে এ সব কথাই শুনিনি কখনো। পুষ্প–সত্যি বলছি।

    –সময় না হোলে শুনতেও পায় না কেউ। অবধূত তোমায় কি দেখালেন বলো না?

    যতীন বর্ণনা করলে। বর্ণনা করবার সময় তার সমস্ত শরীরে কাঁটা দিয়ে উঠলো। সেই অপূর্ব অনুভূতি ও পুলকের স্মৃতি এখনও ওর মনে খুব জাগ্রত–তাই বর্ণনা করতে গিয়ে এখনও তার কিছুটা যেন। আবার সজাগ হয়ে উঠলো মনে।

    আবার সেই অতীন্দ্রিয় জগৎ, যেখানে সংকল্পও নেই, বিকল্প নেই, মনের পারের সেই অনিৰ্দেশ্য রাজ্য, ক্ষণকালের জন্যও যার মধ্যে প্রবেশের অধিকার সে পেয়েছিল মহাপুরুষ অবধূতের কৃপায়–সে জগতের বর্ণনা মুখে সে কি দেবে? কথা তার জড়িয়ে যেতে লাগলো, ঘন ঘন রোমাঞ্চ হতে লাগলো সে অবস্থার স্মরণে। পুষ্প সব শুনে স্তব্ধ হয়ে বসে রইল।

    পরে হাত জোড় করে উদ্দেশে প্রণাম করে বল্লে–তাঁর চরণে প্রণাম করো যতীন-দা। বড় ভাগ্যে তাঁর সাক্ষাৎ পেয়েচ। সাক্ষাৎ ঈশ্বরের সমান ওঁরা। কি পুণ্য না জানি ছিল তোমার!

    দুজনে পৃথিবীতে নেমে এসেচে।

    সন্ধ্যার কিছু পরে। যতীন কবি নয়, কিন্তু পৃথিবীর এ সন্ধ্যা, কি যে। ভাল লাগলো ওর!

    পৃথিবীতে বৈশাখ মাসের প্রথম, আম্রনিকুঞ্জের নিভৃত অন্তরালে কোকিলের ডাক, সন্ধ্যা হওয়ায় প্রস্ফুটিত বিপুষ্পের ঘন সুবাস, একটি জামগাছে কচি সবুজ থোলো থোলো জাম ধরেচে, রাঘবপুরের হাট সেরে হাটুরে গোরুর গাড়ীর সারি চুয়াডাঙ্গার কাঁচা সড়ক ধরে চলচে আমকাঁঠাল বাগানের তলায় তলায়, মাঠে মাঠে আউশ ধানের ক্ষেতে সবুজ ধানের জাওলা।

    আশাদের পুকুরের ধারের তেঁতুল গাছের তলায় ওরা বসলো। যতীনের মনে হোল, কি সুন্দর পৃথিবীর বসন্ত! সেই বহুপরিচিত প্রিয়। পৃথিবী, কত দুঃখ-সুখ, আশা-আনন্দের স্মৃতিতে ভরা। সে পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়ে ভাল আছে কি মন্দ আছে জানে না, কিন্তু পৃথিবীতে এলেই মন সরে না এখান থেকে যেতে। এই বৈশাখে কচি আমের ঝোল, বেলের পানা, ঐ অদূরবর্তী চূর্ণী নদীতে এই গরমের দিনে

    অবগাহন স্নান, হাট থেকে পাকা তরমুজ কিনে আনা…নাঃ, পৃথিবীই ভালো। কোথায় এ সব সুখ? মাটির পথে চলার ছোটখাটো কত আনন্দ, কত স্মৃতি…হাসি অশ্রু…

    পুষ্প হঠাৎ বল্লে–কি ভাবচো যতীন-দা? ব্রহ্মজ্ঞান পেতে গিয়েছিলে।?

    –না পুষ্প, বড় ভাল লাগছে। অনেক দিন পরে এসে–

    –পৃথিবীর বাতাসে বাসনা-কামনা ভাসছে, এজন্য বড় বড় আত্মারা। পৃথিবীতে আসতে চান না। ছেলেবেলায় যাত্রা হয়েছিল একটা গান শুনেছিলে নৈহাটিতে? ‘এ বাঁধন বিধির সৃজন, মানব কি তায় খুলতে পারে’–পৃথিবীতে ফিরে এসে বেশীক্ষণ এই জন্যে থাকতে নেই। ঐ ছোটখাটো সুখদুঃখের সোনার শেকলে বাঁধা পড়তে সাধ যায়। ‘পঞ্চভূতের ফাঁদে, ব্ৰহ্ম পড়ে কাঁদে’–তুমি তো তুমি!

    –যা বলেচ পুষ্প, তুমি দেখছি অনেক কিছু জানো–

    –সত্যি যতীন-দা। আমার কি ইচ্ছে হয় না? এখনই হচ্চে। বড় বড় আত্মা পৰ্য্যন্ত অনেক সময় পৃথিবীতে কিছুক্ষণের জন্যে ফিরে পুনর্জন্ম গ্রহণের কামনা করেন। নিম্নস্তরের দুৰ্বল আত্মার তো কথাই নেই। খুঁৎ খুঁৎ করে পৃথিবীর কাছাকাছি ঘোরে। নয়তো ফট করে আবার জন্ম নিয়ে বসে। তাদের ঘন ঘন পৃথিবীতে আসা বারণ!

    যতীন হেসে বল্লে–যেমন আমি–

    –তুমি কেন, অনেক মহারথীর এই দশা হয়। কিন্তু তাই যদি হবে, তবে মানুষ এগিয়ে চলবে কবে? ভগবানের তা ইচ্ছে নয়। এগিয়ে চলো, এগিয়ে চলো–এক জায়গায় বাঁধা পড়ে থাকলে চলবে না। পথ অফুরন্ত, পথের পাশে ফুলের সুগন্ধে গাছতলায় ঘুমিয়ে পড়তে ভাল লাগে বটে কিন্তু তা আমাদের গতি আটকে দেবে। অভীঃ, ভয় নেই এগিয়ে চলো, অভীঃ

    -ওঃ, তুমি এত কথা জানলে কবে পুষ্প?

    –করুণাদেবীর সঙ্গে কি এমনি এমনি বেড়াই! তা ছাড়া আমি তোমার কত আগে এখানে এসেচি জানো তো? দয়া করে ওঁরা আমায় শিখিয়েচেন। ভগবানের মহাশক্তিই এগিয়ে নিয়ে চলেচে সবাইকে

    হঠাৎ পুষ্প পুকুরপাড়ের ওদিকে চেয়ে বল্লে–ঐ দ্যাখো যতীন-দা–

    যতীন চেয়ে দেখলে পুকুরপাড়ের আমবাগানের তলায় চুপি চুপি চোরের মত একটি লোক এসে দাঁড়ালো। একটু পরেই ওদের বাড়ীর খিড়কিদোর খুলে আশা বের হয়ে এল এবং গাছতলায় লোকটির সঙ্গে যোগ দিলে। যতীন সব্বশরীরে কেমন একটা জ্বালা অনুভব করলে। সংস্কারের প্রভাব, জ্বালা তো দেহের নয়, আসলে মনের।

    সে আপন মনে বলে উঠলো–যদু মুখুয্যের ছেলে নেত্যনারাণ–

    পুষ্প বল্লে–চেন ওকে?

    –কেন চিনবো না? শ্বশুরবাড়ীর এ পাড়াতেই ওদের বাড়ী, ও কলকাতায় কি চাকরি করতো জানি, বি-এ পর্যন্ত পড়েছিল তাও জানি। আশা বলতো প্রায়ই, আমাদের গাঁয়ের নেত্যদা এবার বি-এ পাশ দেবে। উঃ, আশা যে এতদূর নেমে যাবে! এখনও আমি দুবছর। মরিনি–এর মধ্যেই পাপীয়সী!

    –যাত্রাদলের ভীমের মত কথা শুরু করে দিলে যে যতীন-দা! আশা-বৌদির বয়সের কথা ভেবো। জড়দেহ থাকলেই তার কামনা বাসনা আছে। বড় বড় হাতী তলিয়ে যাচ্ছে তো মূর্খ আশা-বৌদি।

    যতীন বিরক্ত হয়ে বল্লে–লেকচার রাখো। এই দেখাতে নিয়ে এলে! উঃ, ইচ্ছে হচ্চে ছোঁকরার ঘাড়টা মটকাই–পারি কই? হাত পা যে হাওয়া!

    –অত অধৈৰ্য্য হয়ো না। খুন করবার প্রবৃত্তি জাগলো কেন? একটা কিছু করতে হবে। সে কিন্তু ওভাবে নয়। একটা ছোঁকরাকে মারলে আরও অনেক ছোঁকরা জুটবে। মন নীচু দিকে নামলে জলের মত গড়িয়েই চলে। আশা-বৌদির অদৃষ্ট ভাল না। এখনও অনেক দুঃখ, অনেক অপমান আছে ওর ভাগ্যে, তুমি আমি কি করবো? কর্মফল ওর। বেচারী! এখন ওরা যা করছে, তাতে বাধা দিতে তুমি আমি কেউ নই! মানুষ স্বাধীন, সে পুতুলখেলার পুতুল নয়। বাসনানদী পাপের পথেও বয়, পুণ্যের পথেও বয়। চলো, এক কাজ করি।

    যতীন কিন্তু এগিয়ে গেল পুকুরের ওপাড়ের দিকে। আশার পরনে সরু কালোপাড় ধুতি, হাতে ক’গাছা সোনার চুড়ি, যতীন চিনতে পারলে তাদের গ্রামের মহেন্দ্র সেকরার দোকান থেকে বিয়ের পরের বছর গড়া। আশা বসে পড়েছে গাছের গুঁড়ির আড়ালে, নেত্যনারাণ। কিন্তু দাঁড়িয়ে আছে।

    আশা বলচে-বাড়ী করে দিলে গাঁয়ের লোক যদি কিছু বলে?

    নেত্য হাত নেড়ে বল্লেথোড়াই কেয়ার। এ শৰ্মা আর কাউকে ভয় করে না। তুমি ঠিক থাকলেই হোল। তুমি বলবে, বাপের বাড়ীর সংসার আর দুদিন পরে ভাই-এদের সংসার হবে। আমার শ্বশুরবাড়ী টাকায় আমি বাড়ী করচি। মিটে গেল, কার কি বলবার আছে?

    –ও জমিটা তা হোলে কিনতে হবে তো?

    –সে লেখাপড়া আমি করে দেবো। বেশ হবে, ইটের দেওয়াল আর খড়ের চালা করে দিই। তুমি ওখানে চলে যাও। পাড়ার বাইরে ঘর হবে, একটু বেশী রাত করে চলে যাবো, শেষ রাতে উঠে চলে আসবো। এমন বনে-জঙ্গলে ভয়ে ভয়ে আর দেখা করতে হবে না। সারারাত্রি মজা করো, কি বলো?

    –তুমি যা বোঝে। আমার কিন্তু হাতে মাত্র পঞ্চাশটি জমানো টাকা আছে, আর কিছু নেই বলে দিচ্চি–দু-এক কুঁচো গহনা-ভাঙা সোনা হয়তো আছে। বাড়ী করবার খরচ কিন্তু তোমায় দিতে হবে।

    নেত্য হাসিমুখে বল্লে–দেখি মুখোনা? ও মুখ দেখে বাড়ী তো বাড়ী, পয়সা থাকলে মটোর গাড়ী কিনে দিতে পারতাম। কিন্তু বলে দিচ্ছি, ও শম্ভু চক্কত্তিটার সঙ্গে আর কথা বলতেও পাবে না কোনো দিন।

    আশা হেসে বল্লে–আহা! শম্ভুদা’র ওপর তোমার অত হিংসে কেন? আমি কবে কি করচি তার সঙ্গে? সে আসে যায়, পাশের বাড়ীর ছেলে, তাড়িয়ে তো দিতে পারিনে?

    –আচ্ছা, ভালো কথা। নিজের বাড়ী হোলে সে তো আর পাশের বাড়ীর ছেলে থাকবে না, তখন নতুন বাড়ীতে না ঢোকে যেন।

    আশা একটু ভেবে বল্লে–হ্যাঁগো, এতে গাঁয়ে কোনো কথা উঠবে তো? আমি মেয়েমানুষ, কি বুঝি বলো। তুমি রাগ কোরো না আমার ভয় করে।

    –কোনো ভয় নেই। নেত্য মুখুয্যে যে কাজে হাত দেবে, তাতে কিছু গোলমাল হবে না। কিছু ভেবো না।

    কথা শেষ করে নেত্য আশার পাশে বসে পড়ে তার হাতখানা নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে বল্লে–আমায় ভালোবাসো আশা?

    আশা এদিক ওদিক চেয়ে মৃদুস্বরে বললে–নিশ্চয়ই।

    –সত্যি বলছো?

    –কেন, সন্দেহ আছে নাকি?

    –তোমারের যে মতিস্থির নেই কিনা, তাই বলচি। কাল সারাদুপুর। শম্ভ চক্কত্তির সঙ্গে গল্প করেচ।

    –আহা! মা সেখানে সব সময়ে বসে। শম্ভুদা একটা কবিতার বই পড়ে শোনাচ্ছিল।

    –কি কবিতা?

    –তা জানি নে। কিন্তু সেজন্যে তুমি ভাবো কেন? আমার একটা উপায় যেখানে হয়, সেখানেই আমি থাকবো। মা বুড়ো হয়েছেন, আমার নিজের হাতে সম্বল নেই। ভাইবৌরা এসে যদি জ্বালা দেয়, দুকথা শোনায়, সে সংসারে থাকা আমার পোষাবে না। যদি অদৃষ্টই মন্দ না হবে, তবে এত শীগগির কপাল পুড়বে কেন আমার?

    আশা মুখ নীচু করে আঁচলে চোখের জল মুছলে। যতীনের মন। করুণা ও সহানুভূতিতে ভরে উঠলো ওর ওপরে–তাহলে জীবনের এসব সঙ্কটময় মুহূর্তেও আশা তার কথা মনে করে! এখনও তাকে সে ভোলেনি! পুষ্প ওর পাশে এসে মৃদুস্বরে বল্লে–চলে এসো যতীনদা, এখানে থেকে কিছু করতে পারবে না।

    গভীর রাত্রি।

    আশা তাদের বাড়ীর ছোট্ট ঘরে ময়লা বালিশ মাথায় দিয়ে মেজেতে মাদুর পেতে শুয়ে আছে। গরমের দরুন শিয়রের জানালাটা খোলা। পুকুরপাড়ের অভিসার থেকে ফিরে সে দুটি মুড়ি খেয়ে শয্যা আশ্রয় করেচে। গরীবের ঘরের বিধবা, রাত্রে লুচি পরোটা জোটে না।

    যতীন বল্লে–আহা, কি খেলে দেখলে তো পুষ্প? পেট পুরে খেতেও পায় না।

    –তা তো হোল, কিন্তু এখনও ঘুমোয়নি ভালো। গরমে ঘুমুতে পারছে না। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। এখন সামনে যেও না। এই রকম আধ-তন্দ্রা অবস্থায় তোমাকে ও দেখতে পেতে পারে। তোমার দেহও এখনও তেমন সক্ষম হয়নি। তাতে ফল হবে উল্টো। ও আঁক-পাঁক করে উঠবে ভূত দেখচে বলে, সেবারে সেই জানো তো?

    যতীন বাইরের রোয়াকে গিয়ে দাঁড়ালো। যতীনের বৃদ্ধ শাশুড়ী পাশের ঘরে অঘোরে ঘুমুচ্ছেন। যতীনের মনে পড়লো, আশার সঙ্গে প্রথম বিয়ের পরে এই ঘরে তাদের বাসর হয়। তারপর জামাইষষ্ঠীতে শ্বশুরবাড়ীতে এসে সে এই ঘরে নববিবাহিতা বধূর সঙ্গে রাত্রিযাপন। করেছে। কোথায় গেল সে সব দিন! তার ইচ্ছে নেই অন্য কোথাও যাবার। আশা বিপন্না, সে এখানে আশার কাছেই থাকবে। স্বর্গ-ট তার জন্যে নয়। ঐ সেই কুলুঙ্গি, আশার জন্যে এক শিশি গন্ধতেল কিনে এনেছিল একবার, ঐ কুলুঙ্গিটাতে থাকত, দুজনে মাখতো। তার মাথায় জোর করে বেশি তেল ঢেলে দিয়ে আশা নিজের হাতে মাখিয়ে দিত। কাড়াকড়ি করে মাখতো দুজনে।

    সেই আশা কেন এমন হয়ে গেল?

    পুষ্প এসে বল্লে–এসো যতীন-দা। আশাবৌদি ঘুমিয়ে পড়েছে।

    আশা খানিকক্ষণ আগে ঘুমিয়েছে। ময়লা বালিশটা মাথায় দিয়ে ছেঁড়া মাদুরে শরীর এলিয়ে দিয়েছে। যতীনের মন করুণায় ভরে উঠলো। মেয়েমানুষ অসহায়, ওদের কি দোষ। সংসারে বহুলোক ওৎ পেতে আছে ওদের বিভ্রান্ত করে ভুল পথে নিয়ে যাবার জন্যে। একটু আশ্রয়ের আশায় ওরা না বুঝে না ভেবে দেখে সে পথে ছোটে। যতীন। কাছে গিয়ে ডাকলে–আশা?

    পুষ্প বল্লে–দাঁড়াও, শুধু ডাকলে হবে না, লেচারের কাজ নয়। ওর মনে তোমাদের কোনো একটা সুখের রাত্রির ছবি আঁকো। যেমন ধরো তোমাদের ফুলশয্যার রাত্রি, তোমাদের গাঁয়ের ভিটেতে।

    –সে কি করে করব?

    –সেদিনের কথা একমনে চিন্তা করো–

    একটু পরে আশার সূক্ষ্ম শরীর ওর দেহ থেকে বের হয়ে মূঢ়, অভিভূতের মত চারিদিকে চাইলে। কিন্তু পুষ্প দেখেই বুঝলে সে দেহ ইদ্রিয়গ্রাহ্য স্থূল জগতের ঊর্ধের অতি নিম্নস্তরেও নিজের চৈতন্য পূর্ণ প্রকাশ করতে অসমর্থ।

    পুষ্প বল্লে–ওকে ছবি দেখাও যতীন-দা–

    –ছবি দেখবে কে? ওর তো এ লোকে জ্ঞান নেই দেখচি–

    –ছবি দেখাও, তা হোলে একটু চাঙ্গা হয়ে উঠবে–

    -ফুলশয্যার রাত্তিরের?

    –বা যে কোনো একটা সুখের দিনের। পারবে তো? আমার দ্বারা তো হবে না। তোমার নিজের ছবি তোমাকে দেখাতে হবে।

    যতীন একমনে ভেবে সত্যিই একটা ছবি তৈরি করতে সমর্থ হোল। এ স্তরে চিন্তার শক্তি ক্ষণস্থায়ী আকার নির্মাণ করতে সমর্থ একটা পুরোনো কোঠার ঘর আশাকে এবং ওদের সকলকেই যেন চারিদিক থেকে ঘিরে ফেললে। কাঁঠাল-কাঠের পুরোনো তক্তপোশে লেপ তোশক পাতা বিছানা যতীনের পৈতৃক, জানালার বাইরে মনসাতলার আমগাছটা, ঘরে জলচৌকির ওপর ঝকঝকে পুরোনো পেতল কাঁসা, যতীনের মায়ের হাতে মাজা। যতীনের শোবার সেই ঘরটি এমন বাস্তব হয়ে উঠলো যে আশার ঘরবাড়ী মিলিয়ে গেল। যতীনও যেন অবাক হয়ে গেল তার চিন্তাশক্তির কাৰ্য্য দেখে। আশা তার শ্বশুরবাড়ীর ঘরটাতে শুয়ে আছে–প্রায় নিখুঁত শ্বশুরবাড়ীর ঘর, দেওয়ালে টাঙানো কাঠের আর্শিটা পর্যন্ত। আশার সূক্ষ্ম দেহ তখনও অর্ধ-অচেতন। যতীন স্নেহপূর্ণ স্বরে ডাকলে–আশা, ও আশা–

    আশা যেন ঘুম ভেঙে উঠে চারিদিকে চাইলে এবং কি দেখে একটু অবাক হয়ে গেল। যতীন আবার ডাকলে–আশা, ও আশা–

    আশা যতীনের মুখের দিকে বিস্মিত দৃষ্টিতে চেয়ে দেখল, যেন কিছু বুঝতে পারলে না।

    –আশা, ভাল আছ?

    পুষ্প বল্লে–অমন ধরনের কথা বোলে না। ছবির সঙ্গে খাপ খাইয়ে পুরোনো দিনের মত কথা বলো।

    যতীন বল্লে–আশা, কাল সকালেই উঠে কাঁপাসডাঙায় যাবো কাজে। ভোরে একটু চা করে দিতে পারবে?

    আশা উত্তর দিলে–খুব ভোরে যাবে?

    –সাতটার মধ্যে।

    আশার চোখের মূঢ় দৃষ্টি তখনও কাটেনি। সে বল্লে–আমি কোথায়।

    যতীন বল্লে–কেন, তোমার শ্বশুরবাড়ীতে–চিনতে পারছো না? কি হয়েছে তোমার? চা দেবে করে?

    –হ্যাঁ।

    –খাবার দেবে না?

    –কি খাবে? চিঁড়ে দিয়ে ঘোল দিয়ে খেও এখন।

    একদিন আশা সত্যিই এই কথা বলেছিল। যতীনের চোখে জল এল আবেগে। সে আবার তার পুরোনো পৈতৃক বাড়ীর বিস্মৃত দিনে ফিরে গিয়েচে নববিবাহিতা আশার পাশে। যতীনের অনুভূতির তীব্রতার সঙ্গে সঙ্গে তার তৈরি ছবি আরও স্পষ্ট নিখুঁত হয়ে উঠলো। আশা এবার আরও সজাগ হয়ে উঠে চারিদিকে চাইলে, কিন্তু তার বিস্ময়ের দৃষ্টি এখনও কাটেনি।

    যতীন বল্লে–তাহলে তাই। আমায় তুমি ভালোবাসো আশা?

    কথা বলেই নেত্য চক্কত্তির মত সে আশার হাতখানা নিয়ে নিজের হাতের মধ্যে রাখলে। তারপর পেছনে চেয়ে দেখলে পুষ্প সেখানে নেই। মেয়েমানুষ, যত উচ্চস্তরের হোক না কেন, প্রেমাস্পদ অন্যকে ভালবাসচে, এতে মন স্থির রাখতে পারে না।

    আশা বল্লে–হ্যাঁগা, তুমি কখন এলে?

    –কোথা থেকে আসবো?

    –যেন তুমি অনেকদিন বাড়ি ছিলে না!

    –নিশ্চয়ই ছিলাম। কোথায় আমি যাবো? খেপলে নাকি আশা?

    আশা প্রবোধপ্রাপ্ত ছোট মেয়ের সুরে বল্লে–যাওনি তাহলে?

    –না আশা–কোথায় যাবো?

    –আমার জন্যে একজোড়া শাড়ী এনে দিও কাল। আটপৌরে শাড়ী নেই। –ক’হাত?

    –এগারো হাত দিও, দশহাতে ঘোমটা দিতে পারিনে মার সামনে, লজ্জা করে।

    –বেশ।

    তারপর আশা ভেবে ভেবে বল্লে–আচ্ছা, আমার কি একটা হয়েছিল। বলো তো, কিছুতেই যেন মনে নিয়ে আসতে পারচি নে।

    –কি আবার হবে, কিছুই না।

    –ও! তবে বোধহয় স্বপ্ন দেখেছিলাম। না?

    –তাই হবে। লক্ষ্মীটি, ও সব ভাবতে নেই। তুমি আমায় ভালবাসো?

    আশা সলজ্জ সুরে বল্লে–হুঁ-উ–

    যতীন ভাবলে, কোন্ জগৎ সত্য? এই ছবিতে গড়া স্বপ্নের জগৎ,

    বাস্তব জগৎ? না কি সবই স্বপ্ন? সেদিন সেই অবধূত যা বলে গিয়েছিল। জগৎটাই জাগ্রত স্বপ্ন ছাড়া আর কি? কোথাকার আশা, কি সে দেখচে, কে তাকে কি ভাবাচ্চে। অথচ আশা ভাবচে এই বুঝি সত্য। ভগবান কি জীবকে ছবি দেখাচ্ছেন না তাঁর সৃষ্ট জগতের মধ্যে দিয়ে, যেমন সে এখন দেখাচ্চে আশাকে?

    সে সস্নেহ সুরে বল্লে–তা হলে তুমি ঘুমিয়ে পড় আশা, রাত হয়েছে–

    –আজ বড্ড গরম না? ঘুম হচ্চে না। একটা মশারি এনে দিও বড়ড় মশা

    –তা হবে। সকালে সকালে উঠে চা করে দিও তাহলে?

    –আচ্ছা।

    পুষ্প বাইরে থেকে বল্লে–চলো, যতীন-দা। একদিনে ওর বেশি। আর কিছু তুমি করতে পার না।

    ওরা চলে যাওয়ার একটু পরে আশার ঘুমও ভেঙে গেল। সে ধড়মড় করে বিছানা থেকে উঠে চারিদিকে দেখলে। এ কোথায় সে আছে? এমন স্পষ্ট স্বপ্ন সে আর কখনো দেখেনি। কতদিন পরে সে। তার স্বামীকে এত স্পষ্ট ভাবে দেখেচে, এইমাত্র যেন তিনি পাশে বসে ছিলেন। কতক্ষণ স্বপ্নের কথা সে ভাবলে। সব কথা তার মনে নেই, এইটুকু মনে আছে, তিনি যেন বলছেন–একটু চা করে দিতে পারো? চা খাবো

    সেই পুরোনো হাসি, পুরোনো আমলের স্নেহদৃষ্টি স্বামীর চোখে। আশা উদভ্রান্তের মত জানালার বাইরে চেয়ে রইল। কোথায় আজ সেই স্বামী, কোথায় তার সেই শ্বশুরবাড়ী! নিজের প্রতি করুণায় তার মন ভরে গেল, চোখে জল এল।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleইছামতী – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    Next Article অপরাজিত – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

    Related Articles

    ছোটগল্প বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

    কাদা kada

    August 11, 2025
    উপন্যাস কল্লোল লাহিড়ী

    ইন্দুবালা ভাতের হোটেল – কল্লোল লাহিড়ী

    May 28, 2025
    উপন্যাস বুদ্ধদেব গুহ

    কোয়েলের কাছে – বুদ্ধদেব গুহ

    May 23, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    রবার্টসনের রুবি – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    বোম্বাইয়ের বোম্বেটে – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    রয়েল বেঙ্গল রহস্য – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025
    Our Picks

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025

    অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025

    আলস্যের জয়গান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }