Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    দ্য রেড ফিঙ্গার – কেইগো হিগাশিনো

    কেইগো হিগাশিনো এক পাতা গল্প226 Mins Read0

    রেড ফিঙ্গার – ১৬

    অধ্যায় ১৬

    মাতসুমিয়া আর কাগা যতক্ষণে ওদের কাজ শেষ করলো, ততক্ষণে আঁধার ঘনিয়েছে বাইরে। ওদের হাতে প্লাস্টিকের ব্যাগ ভর্তি ঘাস আর মাটির স্যাম্পল। তবে এগুলো কোন কাজে আসবে না বলেই ধারণা মাতসুমিয়ার। বাড়িগুলোতে ঘুরে ঘুরে যাদের সাথে দেখা হয়েছে ওর, তাদের কাউকে দেখেই মনে হয়নি একটা বাচ্চাকে খুন করতে পারবে। একদম আটপৌরে, সাধারণ সব পরিবার। কমবেশি টাকা-পয়সা সবারই আছে।

    “খুনী এই এলাকার বলে মনে হয় না,” কাগার সাথে মেইন রোড ধরে হাঁটার সময় মন্তব্য করে মাতসুমিয়া। “সুস্থ মস্তিষ্কের কারো পক্ষে এরকম কিছু করা সম্ভব না। খুনী তো খুব সম্ভবত রাস্তা থেকে বাচ্চা একটা মেয়েকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গেছে, তাই না? এরকম বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষেরা একাই থাকে। লোকটার মূল পরিকল্পনা কি ছিল, তা তো এখনও বলা সম্ভব না, কিন্তু মেয়েটাকে অপহরণের পর নিশ্চয়ই এলাকায় থাকেনি সে। অন্য কোথাও নিয়ে খুন করার পর এখানে লাশটা ফেলে গেছে কেবল। এতে সন্দেহটাও এখানকার লোকদের উপরে এসে পড়বে। আমি মোটামুটি নিশ্চিত সে অন্য এলাকার। আমার ধারণা কি ভুল মনে হচ্ছে তোমার কাছে?”

    জবাবে কিছু বলে না কাগা। মাথা নিচু করে একমনে কি যেন ভাবছে সে। “কিয়োচিরো!”

    এবারে মুখ তুলে তাকালো ওর কাজিন।

    “কি বলেছি শুনেছ কিছু?”

    “হ্যাঁ, হ্যাঁ- শুনেছি। কেন এরকমটা ভাবছ তা-ও বুঝতে পারছি। তোমার কথা ঠিক হতেও পারে।”

    কাগার কথাগুলো মনঃপুত হলো না মাতসুমিয়ার।

    “কিছু বলার থাকলে সরাসরি বলো!”

    মুচকি হাসল কাগা।

    “ওরকম কিছু নেই আসলে বলার। তোমাকে তো আগেই জানিয়েছি, আমরা যারা স্থানীয় থানার, তারা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিপার্টমেন্টের আজ্ঞাবাহী মাত্ৰ।”

    “তুমি কি আমাকে খেপানোর জন্যে এসব বলছো?”

    “আরে না। তুমি কিছু মনে করে থাকলে আমি দুঃখিত।”

    চৌড়াস্তার মোড়ে পৌঁছে গেল ওরা। মাতসুমিয়া হাত উঁচিয়ে একটা ট্যাক্সি ডাকতে যাচ্ছিল, এসময় কাগা বলে সে অন্য এক জায়গায় যেতে চায়।

    দ্রুত হাত নামিয়ে নেয় মাতসুমিয়া। “আবার কোথায় যাবে?”

    “মায়েহারাদের ওখানে,” ক্ষণিকের দ্বিধাবোধের পর বলে কাগা। কোথায় যাবে সেটা মাতসুমিয়াকে জানানোর ইচ্ছে খুব সম্ভবত ছিল না তার, কিন্তু না জানিয়েও থাকা সম্ভব নয়।

    “মায়েহারাদের ওখানে?”

    ব্রিকফেস থেকে নামের তালিকা বের করে দেখে মাতসুমিয়া।

    “ওহ! যে বাসায় ওই বয়স্ক ভদ্রমহিলা থাকেন! ডিমেনশিয়ার রোগী। ওনাদের সাথে আবারো দেখা করতে চাইছ কেন?”

    “সেটা এখন তোমাকে বুঝিয়ে বলতে অনেক সময় লেগে যাবে। হঠাৎই আমার মাথায় এসেছে চিন্তাটা।”

    ফাইল বন্ধ করে বড় ভাইয়ের দিকে চোখ পাকিয়ে তাকায় মাতসুমিয়া। “খুব তো বলছিলে তোমরা মেট্রোপলিটন পুলিশের আজ্ঞাবাহী। এখন আমার কাছ থেকে কিছু কথা লুকাচ্ছ।”

    “আসলেও লুকাচ্ছি বোধহয়, না?” গাল চুলকে বলে কাগা। “আচ্ছা, বলছি। তবে আমার কথা শুনে কোন সিদ্ধান্তে আসবে না কিন্তু। একদমই ছোট একটা বিষয়।“

    “আগে বলো। আমাকে একবার একজন বলেছিল তদন্তের ক্ষেত্রে ছোটখাটো বিষয়গুলোই যে কোন মুহূর্তে মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।”

    সেই একজনটা হচ্ছে ওর মামা। প্রতিক্রিয়া দেখার জন্যে কাগার দিকে তাকায় মাতসুমিয়া, কিন্তু আগের ভঙ্গিতেই রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছে সে।

    তার পিছু পিছু হাঁটতে লাগল ও। কিছুক্ষণের মধ্যে পৌঁছে গেল গিঙ্কগো পার্কে। সর্বসাধারনের জন্যে পার্কটা আবার খুলে দেয়া হলেও টয়লেটে ঢোকার রাস্তাগুলো বন্ধ। অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় কেউ নেই ওখানে। তাছাড়া পার্কটাকে ঘিরে যেসব কানাঘুষো চলছে, সেজন্যেও হয়তো অনেকে আসছে না।

    হলুদ পুলিশি টেপটা পার হয়ে টয়লেটে ঢোকার দরজার সামনে এসে থামলো কাগা। “এত জায়গা থাকতে খুনী এখানে কেন ইউনার মৃতদেহ রেখে গেল?“

    “রাতে খালি পার্কে সাধারণত কেউ আসে। আর এখানে রেখে গেলে সকালের আগে আবিষ্কৃত হবার সম্ভাবনা শূন্যের কোঠায়। কেন, তোমার মাথায় অন্য কিছু ঘুরছে নাকি?“

    “কারো চোখে পড়বে না, এরকম তো আরো অনেক জায়গা আছে। পাশের শহরের পাহাড়ি অঞ্চলে গিয়ে খুব সহজেই সবার নজর এড়িয়ে লাশটা ফেলে আসতে পারত। খুব সহসা কেউ খুঁজেও পেত না। সেটা কেন করলো না?”

    “কারণ সে চেয়েছে সবাই ভাবুক খুনী এই এলাকার কেউ।”

    কাগাকে দেখে মনে হলো না যুক্তিটা মনঃপুত হয়েছে তার। “তোমার তাই মনে হয়?”

    “হ্যাঁ। কিন্তু তোমার মনে অন্য কিছু থাকলে ঝেরে কাশো।”

    “আমার ধারণা অপরাধী এখানকার কেউ এটা বোঝানোর চাইতে খুনীর মূল উদ্দেশ্য ছিল মৃতদেহটা কারো চোখে পড়তে যেন সময় বেশি লাগে।”

    “এসব গৌরচন্দ্রিকা না করে খুনী পার্কটা কেন বেছে নিয়েছে সেটা বললেই বরং তাড়াতাড়ি হবে।”

    ভাইয়ের দিকে তাকায় কাগা।

    “আমার ধারণা খুনী এমনটা করেছে কারণ তার কাছে আর কোন উপায় ছিল না।”

    “আর কোন উপায় ছিল না?”

    “না। নতুবা এখান থেকে দূরে কোথাও মৃতদেহটা রেখে আসাই বেশি যুক্তিযুক্ত। কিন্তু অতদূরে নিয়ে যাওয়ার মত কিছু ছিল না তার।”

    “মানে…গাড়ি?’

    “হ্যাঁ। খুনীর লাইসেন্স নেই। অথবা গাড়িই নেই।“

    “তাই? আমি একমত হতে পারছি না তোমার সাথে।”

    “কেন?“

    “কারণ গাড়ি ছাড়া এরকম একটা অপরাধ করা সম্ভব বলে আমার মনে হয় না। মৃতদেহটা এখানে নিয়ে আসার অন্য কোন উপায় তো নেই। পায়ে হেঁটে আসা সম্ভব না। হ্যাঁ, ভিক্টিম একটা বাচ্চা মেয়ে। কিন্তু কম করে হলেও তো বিশ কেজি ওজন। তাছাড়া একটা বাক্সে ভরে ভিক্টিমের দেহ নিয়ে আসা হয়েছে এখানে। সেটাও নিশ্চয়ই বেশ বড়।”

    “আচ্ছা, ফরেনসিকের লোকেরা বলেছে ভিক্টিমের কাপড়ে পলিস্টাইরেনের উপস্থিতি খুঁজে পেয়েছে, তাই না?”

    “হ্যাঁ। তাদের ধারণা বাক্সটাতে বাসায় ব্যবহৃত হয় এরকম কোন যন্ত্র রাখা ছিল।”

    “পলিস্টাইরিনের উপস্থিতি থেকে আমরা ধারণা করতে পারি ভিক্টিমের মৃতদেহ কোন কিছু দিয়ে না পেঁচিয়েই সরাসরি বাক্সে ঢোকানো হয়, তর্জনী উঁচিয়ে বলে কাগা।“

    এক মুহূর্তের জন্যে মাতসুমিয়া বোঝে না কাগা কি বোঝাতে চাইছে। পরমুহূর্তেই ব্যাপারটা বোধগম্য হয় ওর।

    “ঠিক বলেছ।”

    “তোমার কি গাড়ি আছে?”

    “হ্যাঁ। সেকেন্ডহ্যান্ড একটা কিনেছি।”

    “‘সেকেন্ডহ্যান্ড হলেও গাড়িটার প্রতি তোমার তো একটা টান আছে, তাই না? নিজেকে খুনীর জায়গায় কল্পনা করো। তুমি কি লাশটা কোন কিছু দিয়ে না মুড়িয়ে সরাসরি বাক্সে রাখবে?“

    “সেটায় সমস্যাটা কি তা এখনও বুঝতে পারছি না আমি কিয়োচিরো।”

    “ভেজা হলেও কি রাখবে?”

    “ভেজা…”

    “ভিক্টিম কাপড়ে প্রস্রাব লেগে ছিল, এটা তো মনে আছে তোমার? আমি যখন মেয়েটাকে টয়লেটের ভেতরে প্রথমবার দেখি, তখনও ভেজা ছিল পরনের পোশাক। কথাটা বিশেষভাবে মনে আছে আমার কারণ ফরেনসিক টেকনিশিয়ানদের আগে ওখানে পৌঁছি আমি। কিন্তু টয়লেটের অন্যান্য পরিবেশের কারণে গন্ধটা আলাদাভাবে টের পাইনি।”

    “ওহ হ্যাঁ। এরকম কিছু লেখা দেখেছিলাম রিপোর্টে।”

    “তোমাকে যে প্রশ্নটা করেছি, সেটার উত্তর দাও। মেয়েটার কাপড় প্রস্রাবে ভেজা, এটা জানার পরেও কি সরাসরি বাক্সের মধ্যে রাখবে?”

    উপরের ঠোঁট একবার ভিজিয়ে নিল মাতসুমিয়া।

    “না, আমি চাইব না যে কার্ডবোর্ডের বাক্স থেকে প্রস্রাব আমার গাড়ির সিটে লেগে যাক।”

    “শুধু যে ভিজবে, তা নয় কিন্তু। দুর্গন্ধও থেকে যাবে। সেই সাথে কার্ডবোর্ডেও কোন না কোন চিহ্ন রয়ে যাবে মৃতদেহের।”

    “প্লাস্টিক জাতীয় কিছু দ্বারা মুড়িয়ে নিতাম শরীর।”

    “খুনী কিন্তু সেটা করেনি।”

    “অর্থাৎ, গাড়িতে করে লাশটা নিয়ে যায়নি সে?”

    কাঁধ ঝাঁকায় কাগা। “সেটা তো নিশ্চিত হয়ে বলা যাচ্ছে না। এমনটাও হতে পারে খুনী এসব বিষয়ে খুবই খামখেয়ালী। সিট নোংরা হোক বা না হোক তাতে তার কিছু যায় আসে না। কিন্তু তেমনটা হবার সম্ভাবনা একদম কম। “

    “‘সেক্ষেত্রে এত বড় বাক্স কি করে বহন করলো সে?”

    “এটাই তো মূল প্রশ্ন। তুমি হলে কি করতে?”

    “ভারি একটা বাক্স হাতে করে নিয়ে যাওয়াটা অসুবিধাজনক, এটা তো আগেই বললাম। সেক্ষেত্রে স্ট্রলার ধাঁচের কিছু পেলে ঠেলে নিয়ে যাওয়া যেত। কিন্তু সেটা সহজেই অন্যদের মনোযোগ আকর্ষণ করবে।”

    “আর স্ট্রলার বা হ্যান্ডট্রাকের বদলে আর কি ব্যবহার করা যায়? যেটা কারোন মনোযোগ আকর্ষণ করবে না?

    “কিছু না বলে চুপচাপ ভাবতে লাগলো মাতসুমিয়া। আর কিছু মাথায় আসছে না ওর।“

    মুচকি হেসে পকেট থেকে ফোন বের করে ওকে দেখাল কাগা। “এটা দেখ।” স্ক্রিনে মাটির ছবি দেখে কি বলবে বুঝে পেল না মাতসুমিয়া। “কি এটা? “আমরা এই মুহূর্তে যেখানে দাঁড়িয়ে আছে, সেখানকার ছবি। ফরেনসিকের লোকেরাও নিশ্চয়ই ছবি তুলেছিল, কিন্তু আমি আমার জন্যে আলাদা করে ছবি তুলে রেখেছি।”

    “আমাকে এটা দেখাচ্ছ কেন?”

    “ভালোমত খেয়াল করলে বুঝতে পারবে কেউ একজন ইচ্ছে করে কোন ছাপ মুছতে চেয়েছে”

    ভুল বলেনি কাগা। এবারে মাতসুমিয়ার চোখেও ধরা পড়লো বিষয়টা। “বাচ্চারা মাটিতে দাগ দিয়ে মুছে ফেলার পর এরকম লাগে দেখতে।“

    “খুনী যে কোন ছাপ রেখে যায়নি, এটা নিয়ে অনেকে আলোচনা করছিল। এবারে বুঝতে পারছ কেন কিছু খুঁজে পায়নি ওরা? গতকাল সকাল পর্যন্ত তো বৃষ্টি হয়েছে। ছাপ না পড়াটাই অস্বাভাবিক।”

    “তোমার কথাই হয়তো ঠিক। কিন্তু ছাপ মুছে ফেললে তো আর আমাদের কোন লাভ হচ্ছে না,” ফোনটা ফেরত দিয়ে বলে মাতসুমিয়া।

    “আরেকটু ভালো মতন দেখ, প্লিজ। যে ছাপটা মুছে ফেলা হয়েছে, তার প্রস্থ বোঝার চেষ্টা করো।”

    চোখ কুঁচকে আরো কিছুটা সময় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে রইলো মাতসুমিয়া। “প্রস্থ? ত্রিশ সেন্টিমিটারের মতন?

    “হ্যাঁ। হ্যান্ড ট্রাক বা স্ট্রলারের চাকার প্রস্থ এত বেশি হয় না।”

    “তা ঠিক। তাহলে…” এবারে বুঝতে পারছে মাতসুমিয়া। মাথা তুলে বড় ভাইয়ের দিকে তাকালো ও। “এটা কি সাইকেলের চাকার দাগ?”

    “খুব সম্ভবত,” কাগা জবাব দেয়। “এমনটা একটা সাইকেল যেটার সামনে লাগেজ র‍্যাক আছে। এরকম সাইকেল কিন্তু এখন আর দেখা যায় না। আর এই সাইকেলটা খুব বেশি লম্বাও না।”

    “কিভাবে বুঝলে?”

    “পরিস্থিতিটা চিন্তা করে দেখ একবার। তুমি যে সাইকেলটা চালাচ্ছ, সেটার ব্যাকে বিশাল একটা কার্ডবোর্ডের বাক্স রাখা। অন্য হাত সামনের হ্যান্ডেল ধরে ঠেলছ। সাইকেলটা যদি খুব বড় হয়, সেক্ষেত্রে কিন্তু কাজটা একটু কঠিন হয়ে যাবে।”

    দৃশ্যটা কল্পনা করলো মাতসুমিয়া। কাগা ঠিকই বলেছে।

    “খুনী এমন কোন বাড়িতে থাকে যেখানে ঘাস আছে। তার ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই অথবা গাড়ি নেই। কিন্তু একটা বাইসাইকেল আছে যেটায় লাগেজ র‍্যাক লাগানো। তাই তো?” কথাগুলো বলার সময় ডিপার্টমেন্ট থেকে দেয়া নামের তালিকাটার কথা মনে পড়লো মাতসুমিয়ার। “মায়েহারাদের ওখানে এজন্যেই যাচ্ছ? ওই বাড়িটায় গাড়ি পার্ক করার মত কোন গ্যারেজ নেই। আর…. হ্যাঁ, একটা সাইকেলও তো আছে ওখানে। আমরা থেমেছিলাম ওটার সামনে।”

    “সাইকেলটায় লাগেজ র‍্যাক লাগানো ছিল কিন্তু। চাইলে ওই সাইকেলটায় করে বড় একটা বাক্স নিয়ে যাওয়া সম্ভব।”

    “হুম। কিন্তু …”

    “কি?”

    “একটু তাড়াতাড়িই সন্দেহ করা হয়ে যাচ্ছে না ওনাদের। এমনও হতে পারে যে খুনীর বাড়িতে গাড়ি আছে, কিন্তু সে ইচ্ছে করে সাইকেলে এসেছে।” মাথা নেড়ে সায় জানালো কাগা। “শুধু সাইকেলটা দেখেই যে ওনাদের সন্দেহ করছি আমি, এমন না। আরেকটা বিষয় আছে। গ্লাভস।”

    “গ্লাভস?”

    “প্রাথমিক নজরদারির অংশ হিসেবে মায়েহারাদের বাসায় গিয়েছিলাম আমি। ভিক্টিমের ছবি জনে জনে দেখাতে হচ্ছিল তখনও। তখন মি. মায়েহারার মা’র সাথে দেখা হয়েছিল। ভদ্রমহিলা ডিমেনশিয়ার রোগী, যেমনটা শুনেছি আমরা। তার হাতে একটা গ্লাভস দেখতে পাই আমি, বাগান থেকে ওটা কুড়িয়েছিল সে।”

    “মাটিতে পড়ে থাকা গ্লাভস হাতে নিল কেন?”

    “ডিমেনশিয়ার রোগীরা কখন, কেন কি করছে, সেটার তো উপযুক্ত ব্যাখা দেয়া সম্ভব না। এখানে মূল বিষয়টা হচ্ছে সেই গ্লাভস। আমাকে গ্লাভস জোড়া দেখিয়েছিল ভদ্রমহিলা, মানে হাত মেলে ধরেছিল।” কাগা নিজের হাত মেলে দেখালো। “আর ওই গ্লাভসগুলো থেকে কটু গন্ধ পেয়েছি আমি।”

    “কি?”

    “গন্ধটা বেশ হালকা হয়ে এসেছিল ততক্ষণে, কিন্তু আমি টের পেয়েছিলাম। প্রস্রাবের গন্ধ। “

    “ভিক্টিম প্রস্রাব করে ফেলেছিল, এটা তো জানি আমরা। তুমি কি সেদিকে ইঙ্গিত করছো?”

    “আসলে পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে তো বলা সম্ভব না, তাছাড়া আমার ঘ্রাণশক্তি কুকুরের মতন প্রখর, সেই দাবিও করবো না। কিন্তু সেই মুহূর্তে মনে হয়েছিল। খুনী নিশ্চয়ই গ্লাভস পরেই সব কাজ করেছে, যাতে হাতের ছাপ না খুঁজে পাই আমরা। আর সেই গ্লাভসে প্রস্রাব লেগে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। পলিস্টাইরিন আর কার্ডবোর্ডের বাক্সের ব্যাপারে আমার কি ধারণা, সেটা তো তোমাকে বললামই। এ কারণেই মায়েহারাদের প্রতি আগ্রহী আমি।”

    মায়েহারা পরিবারের ব্যাপারে ভাবলো মাতসুমিয়া। ওর কাছে একদম সাধারণ একটা পরিবারই মনে হয়েছে তাদের। আকিও মায়েহারা আর দশটা স্বাভাবিক জাপানি পরিবারের কর্তার মতনই। শুধু তার মা’র স্মৃতিভ্রংশ বা ডিমেনশিয়া রোগটার কথাই যা একটু বাড়তি মনোযোগ কেড়েছিল ওর। ফাইল খুলে মায়েহারাদের নিয়ে লেখা তথ্যগুলো আরো একবার পড়লো মাতসুমিয়া।

    আকিও মায়েহারা, একটা বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করে, বয়স সাতচল্লিশ বছর বয়স। তার স্ত্রী ইয়াইকো মায়েহারা। ছেলের নাম নাওমি মায়েহারা, চোদ্দ বছর বয়স। আর ডিমেনশিয়ায় ভোগা আকিও মায়েহারার মা’র নাম মাসায়ে মায়েহারা। এদের মধ্যে কে খুনী হতে পারে? কেউ একজন যদি খুনী হয়েও থাকে, তাহলে কি পরিবারের অন্য সদস্যরা জানবে না? না জানিয়ে কি করা সম্ভব?

    কাগাকে প্রশ্নটা করলো ও।

    “না,” কাগা জবাব দেয়। “খুনী যদি উনাদের মধ্যে কেউ একজন হয়ে থাকে, তাহলে বলা যায় তাকে কেউ না কেউ সাহায্য করেছে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার কাজে। অর্থাৎ, অন্ততপক্ষে দু’জনের সম্পৃক্ততা আছে খুনের ঘটনার সাথে। “

    কথাগুলো শুনে অবাক চোখে ভাইয়ের দিকে তাকালো মাতসুমিয়া। ওর প্রশ্নাতুর চোখের প্রেক্ষিতেই যেন পকেট থেকে একটা ছবি বের করলো কাগা।

    হাত বাড়িয়ে ছবিটা নিল মাতসুমিয়া। ভিক্টিমের টেনিস শু পরিহিত পা দেখা যাচ্ছে ওখানে।

    “এটা দেখাচ্ছ কেন?

    “ফিতার দিকে তাকাও,” বলে কাগা। “দুই পায়ের ফিতা কিন্তু একভাবে বাঁধা না। একটার থেকে আরেকটা একটু উপরে বাঁধা হয়েছে। একদিকে আবার বেশি ঢালা, আরেকদিকে আঁটসাঁট। সাধারণত একই ব্যক্তি দুই পায়ের ফিতা বাঁধলে, সেগুলো একইরকম দেখায়।”

    “কিন্তু…” ছবিটা এবারে প্রায় চোখের সামনে নিয়ে এলো মাতসুমিয়া

    “ফরেনসিক টেকনিশিয়ানদের মতে জুতা জোড়া খুলে আবারো পড়ানো হয়েছে ভিক্টিমকে। দুই পায়ের জুতার ফিতা দু’জন আলাদা আলাদা ব্যক্তি বেঁধেছে।”

    “পরিবারের লোকেরা মিলেই কাজটা করেছ বলছো?”

    “খুন হয়তো কোন একজন করেছে। অন্যেরা তাকে বিষয়টা গোপন করার কাজে সাহায্য করেছে।”

    ছবিটা কাগাকে ফেরত দিল মাতসুমিয়া, ওর চোখে তীক্ষ্ন দৃষ্টি।

    “কি হয়েছে?”

    “কিছু না।”

    “এবারে তো বুঝতে পারছ কেন আবারো মায়েহারাদের বাসার ওখানে যাচ্ছি? “আমিও যাব।”

    “মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিপার্টমেন্টের প্রতিনিধির অনুমতি পেয়ে ভালোই হলো।’

    মাতসুমিয়া ঠিক বুঝতে পারল না কথাটা ব্যঙ্গ করে বললো কিনা কাগা তবে ওর মামাতো ভাইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleদ্য মিরাকলস অব দ্য নামিয়া জেনারেল স্টোর – কেইগো হিগাশিনো
    Next Article দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – কিয়েগো হিগাশিনো

    Related Articles

    কেইগো হিগাশিনো

    স্যালভেশন অফ আ সেইন্ট – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য মিরাকলস অব দ্য নামিয়া জেনারেল স্টোর – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    নিউকামার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    ম্যালিস – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য নেম অব দ্য গেম ইজ অ্যা কিডন্যাপিং – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.