Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    দ্য রেড ফিঙ্গার – কেইগো হিগাশিনো

    কেইগো হিগাশিনো এক পাতা গল্প226 Mins Read0

    রেড ফিঙ্গার – ১৯

    অধ্যায় ১৯

    কাগার সাথে পুলিশ স্টেশন থেকে বেরুতে বেরুতে এগারোটা বেজে গেল মাতসুমিয়ার। ভেবেছিল পুরো রাত ওখানেই থেকে যাবে। কিন্তু কোবায়াশি ধমক দিয়ে বলেছে বাসায় গিয়ে বিশ্রাম নিতে। পরদিন সবাইকে একদম সতেজ অবস্থায় চাই তার।

    “তুমি এখন কি করবে?” ভাইকে জিজ্ঞেস করে মাতসুমিয়া।

    “আমি বাসায় যাব। বিশ্রাম নিতে হবে। কেন?“

    “আসলে…আমাকে আধা ঘন্টা সময় দিতে পারবে?”

    “কেন?”

    “উয়েনোতে যেতাম,” কয়েক মুহূর্ত ইতস্ততবোধের পর বলে মাতসুমিয়া।

    “না, ওখানে আপাতত যাওয়ার ইচ্ছে নেই।“

    “সরি?”

    “যা বললাম সেটাই। কালকে দেরি কোরো না। কেসের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ দিন।”

    স্টেশনে ফিরে কোবায়াশি আর ইশিগাকিকে মায়েহারাদের ব্যাপারে সব খুলে বলেছে ওরা। পুরো কথা শোনার পর ইশিগাকি মন্তব্য করে কাগা বরাবরের মতনই একটু বেশি ভেবে ফেলছে। মাতসুমিয়া সব রিপোর্ট দিলেও ওর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঠিকই বুঝতে পেরেছে যে এসবের পেছনে কাগার ভূমিকাই বেশি।

    “আমাদের হাতে এখন অবধি যেসব তথ্য-প্রমাণ আছে, তা যথেষ্ট নয়, ইশিগাকি বলে। “তোমাদের যুক্তিগুলোতে দম আছে অবশ্য। বিশেষ করে গাড়ি না থাকায় কার্ডবোর্ডের বাক্সতে ভরে সাইকেলে করে মৃতদেহ পার্কে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা। কিন্তু কেবল এটুকুর উপরে ভিত্তি করে আমরা কোথাও তল্লাশি চালাতে পারি না।” এটুকু বলে কিছুক্ষণের জন্যে থামল ইশিগাকি। “খুনীর যদি গাড়ি না থাকে, তাহলে কিন্তু আরেকটা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়,” বলে সে। “জানি আমি,” কাগা বললো। “কিভাবে তাহলে ভিক্টিমকে বাড়ি নিয়ে গেল, এই তো?”

    “সেটাই। এরকম ক্ষেত্রে তো সাধারণত ভিক্টিমকে ইচ্ছের বিরুদ্ধে বাড়ি অপহরণ করে অপরাধী। কিছু বলে ভুলিয়ে ভালিয়ে গাড়িতে তুলতে পারলেই হলো, এরপর পালানোর সুযোগ নেই। আবার খুনী যদি এমন কোথাও মেয়েটাকে খুন করে, যেখান থেকে মৃতদেহ সরানোর দরকার পড়বে না, তাহলে গাড়ির কোন দরকার নেই। সেই জায়গাটা লোকচক্ষুর আড়ালে কোথাও হলেই হলো। তোমরা শুরু থেকেই ধরে নিয়েছ খুনী ভিক্টিমকে তার বাসায় বা অন্য কোথাও নিয়ে গিয়ে খুন করেছে। এমনটা করার কারণ কি? খুন শেষে মৃতদেহটার একটা ব্যবস্থা তো করতেই হতো তাকে। আর সেটা সহজ কোন কাজ না। তাহলে কি খুনের ইচ্ছে ছিল না তার? কিন্তু পরিস্থিতির কারণে খুন করতে হয়েছে? কেউ যদি ভিক্টিমকে বিরক্ত করতো, তাহলে কিন্তু সে মা-বাবা’কে জানালেই তারা ব্যবস্থা নিতে পারত। “

    নিস্পৃহ কন্ঠে কথাগুলো বলে গেল ইশিগাকি। তার বিশ্লেষণ ক্ষমতাও তারিফের যোগ্য।

    তবে কাগা পাল্টা যুক্তি দেখায়। তার মতে ভিক্টিম খুনীর পূর্ব পরিচিত।

    “স্কুল শেষে বাড়ি ফিরে মা’কে না জানিয়েই বের হয়ে যায় মেয়েটা। তদন্তে এখনও প্রমাণিত হয়নি, কিন্তু আপাতত আমরা নাহয় ধরে নেই খুনীর সাথে দেখা করতেই বের হয়েছিল সে। তেমনটা হলে খুনীর বাসায় যেতে কোন আপত্তি থাকার কথা না তার। খুনীও হয়তো মনে মনে ভেবেছিল এমনটা হলে গোপনে ফায়দা লুটতে পারবে সে।”

    কাগার কথায় ইশিগাকিকে পুরোপুরি সন্তুষ্ট মনে হল না।

    “তুমি কি বলতে চাইছ, তা বুঝতে পারছি। আগামীকাল মাতসুমিয়াকে সাথে নিয়ে মেয়েটার বাবা-মা’র সাথে আবারো দেখা করবে। তাদের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করবে যে কাউকে সন্দেহ করে কিনা। মায়েহারাদের সাথে ছোটখাটো কোন যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া মাত্র আমরা কাজে লেগে পড়বো।”

    আগ্রহী ভঙ্গিতে মাথা নাড়ে মাতসুমিয়া। কাগার সুদক্ষ অনুমান আর বিশ্লেষণ ক্ষমতা দ্বারা আরেকবার অভিভূত ও। এখন বুঝতে পারছে কেন কাগার সাথে ওকে একই দলে রেখেছে কোবায়াশি।

    তখন অবশ্য এই চিন্তাও মাথায় এসেছিল যে মামা যখন জানবেন ওরা দুই ভাই একই কেসে একসাথে কাজ করছে, ভীষণ খুশি হবেন তিনি। তাই তাকে যত দ্রুত সম্ভব বিষয়টা জানানোর ইচ্ছে ওর। সেক্ষেত্রে দু’জন মিলে মামার কাছে গেলে সবচেয়ে ভালো হয়।

    ওর মামা যে হাসপাতালে আছেন, সেটা উয়েনোতে।

    সাড়ে এগারোটার কিছুক্ষণ পর হাসপাতালের পৌঁছাল ও। রাতের বেলা ছোট গেটটা খোলা থাকে কেবল। দরজার কাছে যে গার্ডটা বসে পাহারা দিচ্ছে, তাকে চেনা আছে ওর। ওকে দেখে মাথা নাড়লো লোকটা।

    মৃদু আলোকিত হলওয়েটা ধরে হেঁটে গিয়ে লিফটে উঠলো মাতসুমিয়া। গন্তব্য পাঁচ তলায়। নার্স স্টেশনের সামনে থেমে দেখল ইউনিফর্ম পরিহিত তোকিকো কানেমরি কিছু একটা লেখায় ব্যস্ত।

    “মামার কেবিনে যেতে পারব?”

    ওকে দেখে হাসি ফুটল তোকিকোর চেহারায়। পরক্ষণেই সেখানে ভর করলো লজ্জা।

    “ঘুমিয়েছেন বোধহয়।“

    “সমস্যা নেই। দেখেই চলে যাব আমি।”

    “যান তাহলে।”

    মাথা নেড়ে মামার কেবিনের দিকে হাঁটতে শুরু করলো মাতসুমিয়া। খালি হলওয়েতে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে ওর পদশব্দ।

    ঘুমোচ্ছে তাকামাসা। কিছুক্ষণ একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার পর মাতসুমিয়া নিশ্চিত হলো ঠিকঠাকই শ্বাস নিচ্ছে ওর মামা। সাবধানে একটা চেয়ার টেনে নিয়ে বসে পড়লো বিছানার পাশে।

    সবসময়ের মতনই শোগির বোর্ডটা রাখা আছে পাশে। অন্ধকার হওয়ায় দেখতে পেল না গতবারের তুলনায় কোন পরিবর্তন এসেছে কিনা। অবশ্য আলো থাকলেও লাভ হতো কিনা সন্দেহ। খেলার নিয়ম জানা নেই ওর।

    আগামী কয়েক দিনে এখানে খুব বেশি আসতে পারবে বলে মনে হয় না। নারিমা থানায় রাত কাটাতে হতে পারে কেসের কাজে।

    মনে প্রাণে আশা করছে যেন ওদের তদন্ত শেষ হবার আগে মামা যেন মারা না যায়। নাহলে সময় দেয়াটা মুশকিল হবে। এই সময়ের মাঝে কাগাও আসতে পারবে বলে মনে হয় না।

    কিছুটা স্মৃতিকাতর হয়ে পড়লো মাতসুমিয়া। কাগার সাথে প্রথম যেদিন দেখা হয়েছিল, সেদিনকার কথা মনে পড়ছে। দশ বছর আগে জুলাইয়ের এক তপ্ত দুপুরে। তখন হাই স্কুলের প্রথম বর্ষে পড়তো ও।

    এর আগে কখনো কিয়োচিরো কাগার সাথে দেখা হয়নি মাতসুমিয়ার। মা’র কাছে শুনেছে কেবল। ততদিনে পুলিশের চাকরিতে যোগ দিয়েছে কাগা। ওগিকুবোকে একটা অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নিয়ে একাই থাকে।

    সেদিন অবশ্য খুব একটা কথা হয়নি কাগা আর মাতসুমিয়ার। দু’জনে কুশল বিনিময় করেছিল কেবল। মাতসুমিয়া নিজেকে বোঝায় কাগা পুলিশ অফিসার হিসেবে ব্যস্ত বিধায় সময় দিতে পারেনি। কিন্তু সেই সময়েও বাবা আর ছেলের মধ্যে ওরকম দূরত্ব অবাক করেছিল কিশোর মাতসুমিয়াকে।

    এরপর আর খুব বেশি একটা দেখা হয়নি। তাকামাসা ঠিকানা বদল করে নতুন একটা অ্যাপার্টমেন্টে ওঠার সময় মাতসুমিয়া আর ওর মা গিয়েছিল সাহায্যের জন্যে। তখনই দ্বিতীয়বারের মতন দেখা হয়।

    মামাতো ভাইয়ের কেন্দো ট্রফিগুলো দেখে চোখ কপালে উঠে যায় মাতসুমিয়ার। এরমধ্যে একটা আবার জাতীয় পর্যায়ের পুরষ্কার।

    “কিয়োচিরোর কোন তুলনা হয় না,” ভাইকে বলে মাতসুমিয়ার মা। “পড়াশোনায় যেমন ভালো ছিল, খেলাধূলাতেও। পুলিশে যোগ দেয়ার পর এর মধ্যেই নাম ছড়িয়ে পড়েছে।”

    ভাইকে খুশি করার জন্যে হয়তো একটু বাড়িয়েই বলেছিল সে, কিন্তু তার কন্ঠে কোন খাদ খুঁজে পায়নি মাতসুমিয়া।

    তাকামাসা একটা কাজে বেরিয়ে যাওয়ার পর সেদিন কাগা আসে সেখানে। মাতসুমিয়ার সন্দেহ হয় ইচ্ছে করেই এমন সময়ে এসেছে সে।

    “বাবাকে সাহায্য করার জন্যে ধন্যবাদ,” ওদের উদ্দেশ্যে বলে কাগা। “আরে, আমাদের ধন্যবাদ জানানোর কিছু নেই। তোমার বাবা যা করেছে আমাদের জন্যে!”

    “এত কাজ তোমাদের দেয়া উচিৎ হয়নি। বাড়ি বদলানোর লোকেরা তো ছিলই,” জিভ দিয়ে শব্দ করে বলে কাগা। “মাঝে মাঝে একটু বেশি করে ফেলে বাবা।”

    মাতসুমিয়ার মনে হয় নিজের বাবার একটু বেশিই সমালোচনা করে ফেলছে কাগা।

    “ওহ কিয়োচিরো, তোমার এই ট্রফিগুলো কি করবো? তোমার বাসায় পাঠায় দেয়ার ব্যবস্থা করবো?”

    “তার দরকার নেই। মুভিং কোম্পানির লোকদের বলে দিচ্ছি ফেলে দিতে।”

    “ফেলে দিবে! তোমার বাবা কত যত্ন করে এগুলো রেখে দিয়েছিল জানো? ফেলে দেয়ার প্রশ্নই আসে না।”

    “এসব রেখে লাভ নেই কোন। এমনি এমনি জায়গা নষ্ট।”

    যেসব বাক্সে ট্রফিগুলো রাখা ছিল সেগুলোতে মার্কার দিয়ে ‘ফেলে দিতে হবে’ লিখে দেয় কাগা। তার অন্যান্য জিনিসে ভর্তি বাক্সগুলোতেও একই কথা লেখে সে। মূলত এই কাজ করতেই সেদিন এসেছিল কাগা, যাতে তাকামাসার নতুন বাসায় তার কোন চিহ্ন না থাকে।

    ছেলে বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ফেরে তাকামাসা। মাতসুমিয়ার সন্দেহটাও প্রকট হয় সেই সময়। দু’জনে ইচ্ছে করেই একে অপরকে এড়িয়ে চলে।

    অনেকগুলো বাক্সতে ‘ফেলে দিতে হবে’ লেখা দেখলেও কোন মন্তব্য করেনি তাকামাসা। এমনকি কাগা এসেছিল শুনেও কোন প্রতিক্রিয়া দেখায়নি সে।

    বাসায় ফেরার পর মা’র কাছে কাগা আর তাকামাসার মধ্যকার সম্পর্কের কথা জানতে চায় মাতসুমিয়া। তাদের কখনো ঝগড়া হয়েছিল কিনা সেটাও জিজ্ঞেস করে।

    “সব পরিবারেই কোন না কোন কাহিনী থাকে,” জবাবে বলে ওর মা। মাতসুমিয়া সেদিন আর জোরাজুরি করেনি কিছু জানার জন্যে। তাছাড়া যে মামা’কে এত শ্রদ্ধা করে, তাকে নিয়ে কানাঘুষোর ইচ্ছেও ছিল না ওর।

    কাগার সাথে পরবর্তীতে যখন দেখা হয়, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাতসুমিয়া। তাকামাসা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। খবর পেয়ে ছুটে যায় মাতসুমিয়া আর ওর মা। সেদিন এক বন্ধুর সাথে শোগি খেলার কথা থাকলেও সময়মত উপস্থিত হয়নি তাকামাসা। আগে কখনোই এমনটা না হওয়ায় তার বাসায় খোঁজ নিতে যায় সেই বন্ধু। গিয়ে দেখে রান্নাঘরে বেহুঁশ অবস্থায় পড়ে আছে সে।

    হাসপাতালের ওয়েটিং রুমে উদ্বিগ্ন চিত্তে বসে মামা’র খবর জানার জন্যে অপেক্ষা করতে থাকে মাতসুমিয়া। ডাক্তাররা শুধু জানিয়েছে তাকামাসার অ্যানজাইনা(হৃদযন্ত্রের পেশি যথেষ্ট পরিমাণ অক্সিজেন না পাওয়ায় তীব্র ব্যাথা বা অস্বস্তি) হতে পারে। কাগা আসার পর তাকে পরিস্থিতি খুলে বলে কাতসুকো।

    “তাও ভালো,” সব শুনে মাথা ঝাঁকিয়ে বলে কাগা। “আমি তো ভাবছিলাম হার্ট অ্যাটাকই হলো কিনা। অ্যানজাইনা পেক্টোরিস ওরকম গুরুতর কিছু না। খুব বেশিক্ষণ হয়তো থাকতেও হবে না এখানে। “

    “তোমার কি একটুও চিন্তা হয় না মামাকে নিয়ে?” কাগাকে ওরকম শান্ত ভঙ্গিতে কথা বলতে দেখে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারে না মাতসুমিয়া।

    সরাসরি ওর চোখের দিকে তাকায় কাগা। “যদি হার্ট অ্যাটাক হতো, তাহলে নিশ্চয়ই এমন প্রতিক্রিয়া দেখাতাম না। কিন্তু অ্যানজাইনা পেক্টোরিস তুলনামূলক কম বিপজ্জনক। ঠিকঠাক চিকিৎসা পেলেই সুস্থ হয়ে উঠবে।”

    সেই সময় এক নার্স এসে জানায় রোগীর জ্ঞান ফিরেছে, তার সাথে দেখা করা যাবে।

    সাথে সাথে তাকামাসার সাথে দেখা করতে ছোটে কাতসুকো আর মাতসুমিয়া। অন্যদিকে ডাক্তারের সাথে কথা আছে বলে ওখান থেকে বেরিয়ে যায় কাগা।

    তাকামাসা’কে বড্ড নির্জীব দেখায় সেদিন। কিন্তু জিজ্ঞেস করলে বলে শারীরিক কোন কষ্ট হচ্ছে না।

    “বুকের এই পাশটায় বেশ কয়েকদিন ধরেই ব্যাথা। আরো আগেই ডাক্তার দেখানো উচিৎ ছিল,” হাসিমুখে বলে তাকামাসা।

    কাগা যে এসেছে সেটা আর বলে না কাতসুকো। মাতসুমিয়াও কিছু বলেনি। আসলে ও ধরেই নিয়েছিল বাবাকে নিশ্চয়ই দেখতে আসবে কাগা।

    কিন্তু ওর ধারণা ছিল ভুল। কিছুক্ষণ পর নার্স এসে জানায় ডাক্তারের সাথে কথা বলে বেরিয়ে গেছে কাগা।

    শেষমেষ আর কাউকে না পেয়ে মা’র উপরে রাগ ঝারে মাতসুমিয়া। “বাবাকে এরকম অবস্থায় রেখে দেখা না করে চলে গেল!”

    “হয়তো অফিসের কোন কাজ আছে।”

    “যতই কাজ থাক, চেহারাটা দেখালে কি হতো শুনি? নিজের বাবার সাথে কেউ এমন কেন করবে?”

    “তুমি সবকিছু জানো না।

    “কি জানি না!” উত্তপ্ত স্বরে জানতে চায় মাতসুমিয়া।

    ছেলেকে এরকম রাগ করতে দেখে কাতসুকো সিদ্ধান্ত নেয় সবকিছু খুলে বলার।

    কাগা’র মায়ের সাথে কখনো দেখা হয়নি মাতসুমিয়ার। ও ধরেই নিয়েছিল কোন দুর্ঘটনায় হয়তো মারা গেছে ওর মামী। কিন্তু কাতসুকো বলে তাকামাসা’র স্ত্রী তাকে বিশ বছর আগে ছেড়ে চলে যায়।

    “এটা নিশ্চিত যে কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি। কেউ অপহরণও করেনি তাকে। কারণ যাওয়ার আগে একটা চিরকুট রেখে গিয়েছিল সে। শুনেছিলাম অন্য কারো সাথে সম্পর্ক আছে, সেটা কতটা সত্য জানি না। সেই সময়ে কাজ নিয়ে অনেক ব্যস্ত ছিল তোমার মামা। চাপ এতই বেশি ছিল যে কয়েকদিন বাসাতেও আসেনি। আর কাগা এক সপ্তাহের একটা কেন্দো কোর্সের জন্যে পাশের শহরে গিয়েছিল। কিন্ডারগার্টেনের ছাত্র ছিল সে তখন।

    “মামা খোঁজেনি মামীকে?”

    “খুঁজেছিল নিশ্চয়ই। আমি আসলে আর কিছু জানি না। এরপর থেকেই বাপ ছেলের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে শুরু করে। কিয়োচিরো এই বিষয়ে কখনো কিছু বলেনি আমাকে। আমার ধারণা ও ভেবেই নিয়েছে বাবার কারণে ওদের ছেড়ে চলে গেছে ওর মা। কারণ পরিবারের প্রতি কোন খেয়ালই ছিল না ভাইয়ার।

    “মামা! কিন্তু আমাদের তো অনেক খেয়াল রাখে।”

    “হ্যাঁ, কিন্তু চিন্তা করে দেখ, আমাদের সাথে যখন দেখা হয় ভাইয়ার, ততদিনে অবসর গ্রহণ করেছে সে। পরিবারের জন্যে যা করতে পারেনি, তা আমাদের জন্যে করেছে।”

    সব শুনে মুখ হা হয়ে যায় মাতসুমিয়ার। বাবা ছেলের সম্পর্ক কেন ওরকম, সেটাও ধারণা করতে পারে অবশেষে। কিন্তু পুরো ঘটনা জানার পরেও মামা’র পক্ষ নেয় ও।

    “মামিকে আর কখনো খুঁজে পায়নি মামা?“

    লম্বা একটা সময় চুপ করে থাকে কাতসুকো। “পাঁচ ছয় বছর আগে জানতে পারে মারা গেছে সে,” কিছুক্ষণ পর বলে। “সেনদাইতে একাই থাকতো। কিয়োচিরো গিয়ে তার ভস্ম নিয়ে আসে।”

    “কিয়োচিরো? মামা যায়নি?”

    “আমি তো পুরো ঘটনা জানি না, কিন্তু কিয়োচিরোই একা যেতে চেয়েছিল। আমাকে এই বিষয়ে কিছু বলেনি ও, আমিও আর জিজ্ঞেস করিনি।”

    “কিভাবে মারা গেছিলেন?”

    “যতদূর জানি, অসুস্থ ছিল। কিন্তু কি অসুখ তা বলতে পারব না। বাবা- ছেলে এক না এক সময় আবার কথা বলবেই।”

    মা’র কথা শুনে মাতসুমিয়ার মনে হয় সে একটু বেশিই আশা করে ফেলছে। ব্যাথা কমে আসায় হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয় তাকামাসাকে। নিয়মিত কিছু ঔষধ খেতে হয় তাকে, কিন্তু স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে।

    ছাত্রজীবনে কয়েক দিন পরপরই মামার কাছে ছুটে যেত মাতসুমিয়া। তার পরামর্শ নিত সব ব্যাপারে। বাবার অপূর্ণতাটুকু পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতো। পুলিশে চাকরি করবে এই সিদ্ধান্ত নেয়ার পর মামাকেই প্রথমে জানায় ও

    ভাগ্নেকে সাকে দিয়ে সেদিন আপ্যায়ন করে তাকামাসা। পুরোটা শুনে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে তার চেহারা।

    তাকামাসা’র ফ্ল্যাটটা সবসময় পরিষ্কারই থাকত। কেউ হঠাৎ করে আসলে বুঝতেই পারবে না যে কেউ থাকে ওখানে। মাতসুমিয়া যতবার গেছে, কখনো ফোনটা বাজতে শোনেনি বা অন্য কাউকে দেখেনি।

    “বন্ধুদের সাথে শোগি খেল না আর?”

    “না, সবাই ব্যস্ত।”

    “দেখি, আমিই শিখে ফেলব। তাহলে একসাথে খেলা যাবে।”

    হাত নেড়ে মানা করে দেয় তাকামাসা।

    “তোর হাতে যদি সময় থাকে তাহলে অন্য কিছু কর। কম্পিউটারের কোন কোর্সও করতে পারিস। এখন পুলিশি কাজে কম্পিউটার জানা থাকলে ভালো। তাছাড়া একা খেলতে সমস্যা হয় না আমার।”

    মামার কথার উপরে আর কিছু বলার সাহস হয়নি মাতসুমিয়ার। ও শোগি খেলা শিখলে মাতসুমিয়া সন্তুষ্ট হবে এই চিন্তা থেকেও সরে আসে।

    দিন দিন বলিরেখা বাড়তে থাকে তাকামাসার, অন্যদিকে দুশ্চিন্তার পারদ চড়তে থাকে মাতসুমিয়ার। যে মামা ওর এত উপকার করেছে, তার শেষ দিনগুলো এরকম একাকী কাটবে, তা মেনে নিতে পারবে না ও।

    কাগা যদি তার বাবার খেয়াল না রাখে, তাহলে ও রাখবে। মাতসুমিয়া এই সিদ্ধান্ত নেয়ার কিছুদিনের মধ্যেই আবারো হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকামাসাকে। কাতসুকো একদিন ভাইয়ের বাসায় গিয়ে দেখে জ্বরে কাতরাচ্ছে সে। জিজ্ঞেস করলে বলে ফ্লু হয়েছে। কিন্তু তার কথা বিশ্বাস হয়নি কাতসুকোর ওখান থেকেই হাসপাতালে ফোন দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে বলে।

    খবর পেয়ে ছুটে আসে মাতসুমিয়া। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার জানায় ক্যান্সারে ভুগছে ওর মামা। প্রথমে পিত্তথলিতে বাসা বাধলেও দ্রুত লিভার আর পাকস্থলিতে ছড়িয়ে পড়ে। চতুর্থ স্টেজের ক্যান্সার হওয়ার দরুণ অস্ত্রোপচার করেও কোন লাভ নেই। তাছাড়া রোগীর হৃদযন্ত্রের দূর্বলতা সমস্যা আরো জটিল করে তুলেছে।

    স্বাভাবিকভাবেই এই কথা ভাতিজাকে জানায় কাতসুকো। কিন্তু এবারেও বাবাকে দেখতে আসে না কাগা। অথচ মাতসুমিয়া ভেবেছিল এমন একটা অসুখের কথা শুনে নিশ্চয়ই আসবে সে। তবে কাতসুকোকে কাগা জানায় চিকিৎসার সমস্ত খরচ দেবে। দরকার পড়লে বাবার যত্ন নেয়ার জন্যে লোকও রাখবে।

    কাগার চিন্তাভাবনার ধরণ বুঝতে পারে না কাগা। জীবনের শেষ দিনগুলোতেও বাবার সাথে এসে থাকতে পারল না সে?

    এসব নিয়েই ভাবছিল ও এমন সময় তাকামাসা বিছানায় শুয়ে শব্দ করে শ্বাস নিতে শুরু করে। এরপর হঠাৎই কেশে ওঠে একবার। ভয় পেয়ে যায় মাতসুমিয়া। রোগীর বিছানার পাশের টেবিলে রাখা রিমোটটায় চাপ দেবে কিনা ভাবে একবার। সংকেত দিলেই নার্স স্টেশন থেকে কেউ না কেউ ছুটে আসবে। ও সিদ্ধান্ত নেয়ার আগেই চোখ খোলে তাকামাসা। কাশিও থেমে গেছে।

    “আহ…..” মাথা নেড়ে বলে তাকামাসা।

    “কেমন আছো তুমি?”

    “তুই কখন এলি? কি হয়েছে?

    “এই কিছুক্ষণ আগে। তুমি ঘুমাচ্ছিলে তাই আর ডাকিনি।”

    “অফিসে সব ঠিকঠাক? “

    “হ্যাঁ। আজকের মত ডিউটি শেষ।”

    “বাসায় যা তাহলে। অনেক রাত হলো তো। গোয়েন্দাদের নিয়মিত ঘুমাতে হয়, নাহলে মাথা খোলে না।”

    “থাকি আর কিছুক্ষণ।”

    মাতসুমিয়া ভাবে একবার বলবে নতুন কেসটায় কাগার সাথে কাজ করছে ও। কিন্তু এতে ছেলের কথা মনে হওয়ায় মেজাজ খারাপও হয়ে যেতে পারে তাকামাসার।

    ওর দ্বিধায় ভোগার মাঝে আবারো ঘুমিয়ে পড়ে তাকামাসা। স্বাভাবিক তালে উঠতে আর নামতে থাকে বুকটা।

    উঠে পড়ে মাতসুমিয়া। বুকে হাত রেখে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে, কাগাকে নিয়ে মামার সামনে আসবেই আসবে।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleদ্য মিরাকলস অব দ্য নামিয়া জেনারেল স্টোর – কেইগো হিগাশিনো
    Next Article দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – কিয়েগো হিগাশিনো

    Related Articles

    কেইগো হিগাশিনো

    স্যালভেশন অফ আ সেইন্ট – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য মিরাকলস অব দ্য নামিয়া জেনারেল স্টোর – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    নিউকামার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    ম্যালিস – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য নেম অব দ্য গেম ইজ অ্যা কিডন্যাপিং – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.