Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    দ্য রেড ফিঙ্গার – কেইগো হিগাশিনো

    কেইগো হিগাশিনো এক পাতা গল্প226 Mins Read0

    রেড ফিঙ্গার – ৪

    অধ্যায় ৪

    ট্রেনটা যখন স্টেশনে থামে, এসব চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছিল আকিওর মাথায়। অন্যান্য যাত্রীদের সাথে নেমে পড়ে ও।

    স্টেশনের বাইরের বাস স্টপটায় ইতিমধ্যে লাইন শুরু হয়ে গেছে। ওদিকে পা বাড়ালো। পাশেই সুপারমার্কেটে একটা কৌজু কেকের স্ট্যান্ড আছে। মাসায়ের খুব পছন্দ কেকটা।

    দোকানের সামনে আসতেই কর্মচারী মেয়েটা উঠে দাঁড়াল। পকেটে হাত দিয়ে মানিব্যাগটা বের করে আনলো আকিও। ঠিক সেই মুহূর্তে চোখের সামনে ভেসে উঠলো স্ত্রী’র অগ্নিমূর্তি। বাসায় কি ঘটেছে জানে না, কিন্তু এই মুহূর্তে মা’র জন্যে কিছু নিয়ে গেলে নিশ্চয়ই রেগে উঠবে ইয়াইকো।

    মেয়েটাকে সরি বলে দোকান থেকে সরে আসবে, ঠিক সেই মুহূর্তে একটা লোক এগিয়ে এলো কেকের স্ট্যান্ডটার দিকে।

    “এক্সকিউজ মি, আপনি কি এই বাচ্চা মেয়েটাকে কোথাও দেখেছেন? ওর বয়স সাত বছর। গোলাপী রঙের একটা সোয়েটশার্ট পরে ছিল।”

    ঘুরে দাঁড়ালো আকিও। সচরাচর এরকম প্রশ্ন কাউকে করতে শোনে না ও। দোকানের মেয়েটার হাতে একটা ছবি তুলে দিয়েছে লোকটা।

    “এই এরকম লম্বা,” হাত দিয়ে দেখায় সে। “কাঁধ পর্যন্ত চুল।”

    বিভ্রান্ত দৃষ্টিতে লোকটার দিকে তাকায় দোকানকর্মী।

    “একা ছিল?“

    “হ্যাঁ, খুব সম্ভবত।”

    “না, সরি। আমি দেখিনি।”

    তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে চলে গেল লোকটা। মরিয়া ভঙ্গিতে সুপারমার্কেটের দিকে এগোচ্ছে। নিশ্চয়ই ওখানে গিয়ে সবাইকে একই প্রশ্ন করবে।

    আকিও লম্বা একটা সময় তাকিয়ে রইলো লোকটার দিকে। নিশ্চয়ই ছোট মেয়েটার বাবা সে। আচরণেই স্পষ্ট। হয়তো আশপাশেই কোথাও থাকে।

    অবশেষে বাস এলে উঠে পড়লো আকিও। ভিড়ের মধ্যে দাঁড়ানোর জায়গা করে নিতে নিতে মেয়েটার চিন্তা মুছে গেল মন থেকে।

    দশ মিনিট পর পৌঁছে গেল গন্তব্য। এখান থেকে গলি ঘুপচি পেরিয়ে পাঁচ মিনিট হাঁটলেই ওর বাসা। জাপানের বাবল ইকোনমির(নব্বইয়ের দশকে হঠাৎ অস্থির হয়ে ওঠে জাপানের রিয়েল এস্টেট ব্যবসা) সময়টায় ওর বাবা-মা’র এই নব্বই বর্গমিটারের বাড়িটার দাম গিয়ে ঠেকেছিল একশো মিলিয়ন ইয়েনে। আকিও যে কেন তখন বাবা-মা’কে বাড়িটা বিক্রির জন্যে জোরাজুরি করেনি, সেটা ভাবলে এখনও আফসোস হয়। বয়স্কদের থাকার মত কোন জায়গায় একটা অ্যাপার্টমেন্ট অনায়াসে কিনে ফেলতে পারতো তারা। আর বাকি টাকাটা দিয়ে আকিও আর ওর স্ত্রী নিজেদের বড় একটা বাড়ির স্বপ্ন পূরণ করতো। তাহলে আর এখনকার মত ঝামেলা পড়তে হতো না। আকিও জানে, এসব নিয়ে এখন আর ভেবে লাভ নেই। তবু না ভেবে পারে না।

    বিক্রি না হওয়া বাড়িটাকে দেখলে কেমন যেন বিষণ্ণ মনে হয় ওর কাছে। মরিচা ধরা সদর দরজাটা খুলে ভেতরে পা রাখলো আকিও। ছোট্ট বাগানটা পার হয়ে বাড়ির মূল দরজার হাতল ধরে ঘোরাতেই অবাক হয়ে গেল। প্রতিদিনের মত খুলে যায়নি আজকে দরজাটা। বাধ্য হয়ে পকেট থেকে চাবি বের করলো। আকিও অবশ্য সামনের দরজা বন্ধই রাখতে বলে, কিন্তু ইয়াইকো প্রায়ই ভুলে যায়।

    করিডোর এবং দরজার উপরের বাতিগুলো নেভানো। এসময়ে বাতি বন্ধ থাকাটাও অস্বাভাবিক ঠেকলো আকিও’র কাছে। চারদিকে থকথক করছে নীরবতা। যেন কোথাও কেউ নেই।

    কেবলই জুতা জোড়া খুলেছে এসময় প্রবেশপথের কাছাকাছি ঘরটার স্লাইডিং দরজা সরে গেল একপাশে। আজকে একটা কালো সোয়েটার আর জিনস পরনে ইয়াইকোর। ধীর পায়ে হেঁটে ওর সামনে এসে দাঁড়াল। বাসায় প্রায় কখনোই স্কার্ট পরে না সে।

    “আজকেও দেরি করলে,” ইয়াইকোর কন্ঠস্বর নিষ্প্রভ।

    “তোমার ফোন পেয়েই বের হয়ে গেছি।” জুতো খুলে উঠে দাঁড়ানোর পর প্রথমবারের মতন আকিও টের পেল যে ইয়াইকোর চেহারাটা ফ্যাকাসে। চোখজোড়া লাল হয়ে আছে। হঠাৎই যেন বয়স বেড়ে গেছে তার।

    “কি হয়েছে?”

    জবাব না দিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ইয়াইকো। চুলে একবার আঙুল বুলিয়ে কপালে হাত রাখে, যেন ভীষণ ব্যাথা করছে সেখানে।

    “ওদিকে দেখো,” বলে ডাইনিং রুমের দরজার দিকে ইঙ্গিত করে সে। সামনে এগিয়ে দরজা খোলে আকিও। এখানেও বাতি নেভানো।

    একটা পাংশু গন্ধ এসে ধাক্কা দেয় নাকে। সেজন্যেই বোধহয় রান্নাঘরের ফ্যান চলছে। কারণ জিজ্ঞেস করার আগে সুইচের দিকে হাত বাড়ায় আকিও।

    “লাইট দিও না!” চাপা কিন্তু দৃঢ় স্বরে বলে ওর স্ত্রী।

    হাত সরিয়ে নেয় আকিও।

    “কি হয়েছে?”

    “উঠানের ওখানে… দেখ…”

    “উঠান?”

    চেয়ারের পাশে ব্রিফকেসটা নামিয়ে রেখে ফ্রেঞ্চ উইন্ডোটার(দেয়ালজুড়ে বিস্তৃত দরজাসমেত জানালা) দিকে এগোয় ও। পর্দা ভিড়িয়ে রাখা। কাঁপা কাঁপা হাতে ওগুলো সরিয়ে দেয় আকিও।

    বাগানটা ছোট। সব মিলিয়ে বড় জোর ছয় বর্গ মিটারের মতন হবে। পুরোটা জুড়ে ঘাস এবং ছোট ছোট ঝোপ। এর চেয়ে বাড়ির পেছনে দক্ষিণ দিকের উঠোনটা বড়।

    চোখ কুঁচকে তাকিয়ে সিন্ডার ব্লকের দেয়ালটার সামনে একটা কালো ময়লার ব্যাগের অবয়ব খেয়াল করলো আকিও। অদ্ভুত। এরকম ময়লার ব্যাগ তো খুব বেশি ব্যবহার করে না ওরা।

    “কি আছে ব্যাগে?”

    জবাব না দিয়ে টেবিল থেকে একটা জিনিস তুলে ওর দিয়ে বাড়িয়ে ধরলো ইয়াইকো। একটা ফ্ল্যাশলাইট।

    আকিও লাইটটা নিলে অন্য দিকে মুখ ফেরায় সে।

    মাথা নিচু করে ফ্রেঞ্চ উইন্ডোটা খুলে ফ্ল্যাশলাইট জ্বালে আকিও। সেটার আলোয় বুঝতে পারে প্লাস্টিকের কালো ব্যাগটা কিছু একটা ঢেকে রেখেছে। ভালো মতন দেখার জন্যে নিচে ঝোকে ও।

    সাদা মোজা পরিহিত ছোট্ট একটা পা দেখতে পায়। অন্য পায়ে একটা টেনিস শু।

    কয়েক মুহূর্তের জন্যে একদম স্থবির হয়ে যায় আকিও। বিমূঢ় ভঙ্গিতে দৃশ্যটার দিকে তাকিয়ে থাকে। কি দেখছে তা ঠাওর করতে পারে না। দু’টো পা দেখছে, এটা জানে। কিন্তু পা দু’টো যে কোন মানুষের, এটা ভাবতেই যেন কেমন লাগছে।

    ধীরে ধীরে ফিরে তাকায় ও। স্ত্রী’র সাথে চোখাচোখি হয়।

    “কে এটা?” কর্কশ কণ্ঠে জানতে চায়।

    জবাবে একবার ঠোঁট ভেজায় ইয়াইকো। লিপস্টিক আর নেই বললেই চলে ওখানে।

    “বাচ্চা একটা মেয়ে…কোত্থেকে এসেছে জানি না।”

    “তুমি চেন না?”

    “না।”

    “এখানে কি করছে?

    “জবাব না দিয়ে মাথা নিচু করে ইয়াইকো।

    যে প্রশ্নটা এতক্ষণ মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল সেটা জিজ্ঞেস করেই ফেলে আকিও।

    “বেঁচে আছে?

    মনে মনে তখনও আশা ছিল যে ওর স্ত্রী হয়তো উপরে নিচে মাথা নাড়বে প্রশ্নটার জবাবে। কিন্তু অনড় দাঁড়িয়ে থাকে ইয়াইকো।

    হঠাৎ করে প্রচণ্ড গরম লাগতে শুরু করে আকিওর। হাত আর পায়ের পাতা ঠাণ্ডা হয়ে আসছে ক্রমশ।

    “হচ্ছেটা কি এসব!”

    “আমি জানি না। বাসায় ফিরে দেখি বারান্দায় পড়ে আছে মেয়েটা। দৃশ্যটা সহ্য করা সম্ভব ছিল না আমার পক্ষে। “

    “তাই ময়লার ব্যাগ দিয়ে ঢেকে দিয়েছ?”

    “হ্যাঁ।”

    “পুলিশে খবর দিয়েছ?”

    ‘সেটা কেন করবো?” এবারে পাল্টা ঝাঁঝের সাথে জিজ্ঞেস করে ইয়াইকো। ‘মেয়েটা মারা গিয়ে থাকলে ….”

    “সেটাই তো বলছি,” বসে পড়ে ইয়াইকো, ঠোঁট কামড়ে ধরেছে।

    হঠাৎ করেই সব পরিষ্কার হয়ে যায়। ইয়াইকোর এরকম পাগলের মতন আচরণ, পুলিশের সাথে কথা না বলতে চাওয়া একটা ব্যাপারই ইঙ্গিত করছে।

    “নাওমি? ও কোথায়?

    “ঘরে।”

    “ওকে নিয়ে এসো, যাও।”

    “ও বের হতে চাচ্ছে না।”

    হতাশা জেঁকে বসে আকিও’র মনে। অর্থাৎ, ওর ছেলেও জানে লাশটার কথা।

    “ওর সাথে কথা বলেছ?

    “বলেছি একটু। করিডোরে দাঁড়িয়ে।”

    “ওর ঘরে যাওনি কেন?”

    “আসলে…” কিছু বলেনা ইয়াইকো। উঠে আকিওর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সে। তার চোখের দৃষ্টিতে এবারে বিরক্তি আর অসন্তোষের সংমিশ্রণ।

    “বাদ দাও। কি জিজ্ঞেস করেছিলে ওকে?”

    “ছোট মেয়েটা কে?”

    “তোমার প্রশ্নের জবাবে কি বলে?”

    “‘বিরক্ত কোরো না। মেয়েটা কে জেনে লাভ কি?”

    এরকম জবাব নাওমির পক্ষেই দেয়া সম্ভব। কথা বলার সময় তার সুর কেমন ছিল তাও আন্দাজ করতে পারছে বেশ। কিন্তু এরকম একটা সময়েও নাওমি যে একইভাবে কথা বলবে, তা বিশ্বাস করা একটু কষ্টকরই বটে।

    “ঠাণ্ডা লাগছে। জানালা বন্ধ করি?

    ভেতরে এসে বাইরে না তাকিয়েই জিজ্ঞেস করে ইয়াইকো। ফ্রেঞ্চ উইন্ডোর

    দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়।

    “মেয়েটা কি আসলেই মারা গেছে?”

    মাথা নেড়ে সায় জানায় ইয়াইকো।

    “তুমি নিশ্চিত? অজ্ঞান হয়ে যায়নি তো?”

    “ওভাবেই পড়ে আছে গত কয়েক ঘন্টা।“

    “কিন্তু।”

    “আমারও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে,” ভাঙ্গা কন্ঠে বলে ইয়াইকো। “কিন্তু দৃশ্যটা দেখামাত্র বুঝে যাই যা বোঝার। তুমিও বুঝেছ নিশ্চয়ই?”

    “ওকে কোথায় দেখেছিলে প্রথম?”

    “আসলে…”

    কপালে হাত রেখে আবারো ওখানে বসে পড়ে ইয়াইকো।

    “মেঝেটা পুরো ভিজে ছিল। মেয়েটারই কাজ। চোখ খোলা…”

    কথা শেষ করতে পারলো না সে, ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো।

    এতক্ষণে দুর্গন্ধের কারণটা বুঝতে পারল আকিও। মেয়েটা খুব সম্ভবত এই ঘরেই মারা গেছে।

    “কোন রক্ত চোখে পড়েনি।”

    “না।” মাথা ঝাঁকায় ওর স্ত্রী।

    “তুমি নিশ্চিত? কোন প্রকার ব্যাথা পায়নি তো? হয়তো পা পিছলে পড়ে মাথায় আঘাত লাগে।”

    আকিও মনেপ্রাণে আশা করছে বিষয়টা যেন কেবল একটা দুর্ঘটনা হয়। কিন্তু ইয়াইকো আবারো মাথা ঝাঁকিয়ে না করে দিল।

    “না, ওরকম কিছু চোখে পড়েনি। আমার মনে হয়…গলা টিপে মারা হয়েছে।”

    বুকে হঠাৎই তীক্ষ্ণণ একটা ব্যাথা অনুভব করলো আকিও। যেন হৃৎপিণ্ডটা বেরিয়ে আসতে চাইছে বুকের খাঁচা ছেড়ে। ঢোক গিললো একবার। মুখের ভেতরটা শুকিয়ে কাঠ। গলা টিপে মেরেছে? কে?

    “তুমি জানলে কিভাবে? “

    “দেখে ওরকমটাই মনে হয়েছে। কাউকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করলে সাধারণত প্রস্রাব করে দেয়।”

    আকিও’রও জানা আছে সেটা। টেলিভিশনে দেখেছে অনেকবার, বইয়েও পড়েছে।

    ফ্ল্যাশলাইটটা জ্বলছে এখনো। ওটা নিভিয়ে টেবিলের উপরে নামিয়ে রাখলো। এরপর দরজার দিকে এগোলো।

    “যাচ্ছ কোথায়?”

    “উপরে,” দৃঢ় কণ্ঠে বলে আকিও। ইয়াইকো ভালো করেই জানে ওর গন্তব্য।

    সিঁড়ি ভেঙ্গে উপরতলায় চলে এলো। এখানেও বাতি নিভিয়ে রাখা হয়েছে। আকিও নিজেও সুইচের দিকে হাত বাড়ালো না। এই মুহূর্তে অন্ধকারই দরকার ওদের। ইয়াইকো কেন দ্রুত চলে আসতে বলেছে, সেটা পরিষ্কার।

    নাওমির ঘরটা সিড়ির বামদিকে করিডোরের শেষ মাথায়। দরজার নিচ দিয়ে বাইরে আলোর রেখা এসে পড়ছে। ভেতর থেকে একটা শব্দ কানে এলে কড়া নাড়লো আকিও। কিন্তু জবাব দিল না নাওমি। এক মুহূর্তে অপেক্ষা করে দরজা খুলে ফেললো ও।

    ঘরের মাঝখানে পা ভাঁজ করে বসে আছে নাওমি। বাড়ন্ত শরীর ছেলেটার, কিন্তু পা দু’টো অস্বাভাবিক লম্বা। সামনে রাখা টিভির স্ক্রিনের দিকে নিবদ্ধ তার চোখ। দুই হাতে শক্ত করে ধরে রেখেছে জয়স্টিক। বাবা যে ঘরে ঢুকেছে, সেদিকে কোন নজরই নেই।

    “অ্যাই!” মিডল স্কুলের শেষ বর্ষে থাকা ছেলেকে ডাক দিল আকিও। এবারেও কোন প্রতিক্রিয়া নেই। ভিডিও গেমের প্রতি নিরবিচ্ছিন্ন মনোযোগ নাওমির। শত্রুপক্ষকে কচুকাটা চলছে ওখানে।

    “নাওমি!”

    বাবার কণ্ঠস্বরে এবারে এমন কিছু ছিল যে নাওমি চোখ ফেরাতে বাধ্য হয়। গরগর করে কিছু একটা বলে। “চুপ করো!” শুনতে পায় আকিও।

    “মেয়েটার কি হয়েছে?”

    জবাব না দিয়ে আবারো আগের ভঙ্গিতে আঙুল চালাতে থাকে নাওমি। “তোমার কাজ ওটা?”

    টিনেজার ছেলেটা জবাব দেয় ঠোঁটের একপাশ নাড়িয়ে, বেয়াড়া ভঙ্গিতে।

    “ইচ্ছে করে করিনি।”

    “করেছ তো! কি হয়েছিল!”

    “উফ! বিরক্ত কোরো না তো। ভালো লাগছে না। কিছু জানি না আমি।”

    “তুমি জান না তো কে জানে? জবাব দাও! মেয়েটা কে? কোত্থেকে এসেছে?’

    ছেলেকে শব্দ করে শ্বাস নিতে শুনলো আকিও। কিন্তু কোন জবাব দিল না সে। দৃষ্টি এখনও সামনের ভিডিও গেইমের দিকে। যেন এই বাস্তবতাকে ভুলে থাকার চেষ্টা করছে।

    অধৈর্য্য ভঙ্গিতে ছেলের চেহারার দিকে তাকিয়ে রইলো আকিও। ভিডিও গেইমের স্পেশাল এফেক্টের শব্দ আর ক্রমশ কমে আসতে থাকা শত্রু সেনার আর্তনাদ মিলে মিশে অদ্ভুত এক দ্যোতনার সৃষ্টি করেছে।

    ওর ইচ্ছে করছে ছেলের হাত থেকে জয়স্টিকটা টেনে নিয়ে টিভি বন্ধ করে দিতে। কিন্তু সেটা সম্ভব না। এর আগেরবার যখন কাজটা করেছিল, তখন কি ঘটেছিল তা মনে আছে এখনো। রাগের চোটে পুরো বাড়িতে ভাঙচুর শুরু করেছিল নাওমি। থামাতে গেলে একটা বিয়ারের বোতল তুলে নিয়ে ওকে কাঁধে আঘাত করে সে। আকিও এর পরবর্তী দুই সপ্তাহ বাম হাতটা নাড়তে পারেনি ঠিক মতন।

    ছেলের বিছানার পাশে স্তুপাকারে রাখা ডিভিডি আর মাঙ্গা ম্যাগাজিনগুলোর দিকে চোখ গেল ওর। ম্যাগাজিনগুলোর কয়েকটার প্রচ্ছদে প্রায় নগ্ন কম বয়সী মেয়েদের দেখা যাচ্ছে।

    এসময় পেছন থেকে একটা শব্দ ভেসে এলে ঘাড় ঘুরিয়ে ইয়াইকো’কে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আকিও।

    “নাওমি, বাবা, কথা বলো আমার সাথে,” স্ত্রী’র কথা বলার ভঙ্গি শুনে মাথায় রক্ত চড়ে যায় আকিও’র।

    কিন্তু এবারেও কোন জবাব দেয় না নাওমি। তার পেছনে গিয়ে বসে ইয়াইকো। ডান কাঁধে হাত রাখে।

    “দয়া করে মা’কে বলো কি হয়েছিল। অনেক খেলেছ তো বাবা।“

    ধীরে ধীরে ছেলের কাঁধে ম্যাসাজ করে দিতে লাগলো ইয়াইকো। সেই সময়ে একটা চরিত্র বুক চেপে ধরে পড়ে গেল টেলিভিশনের স্ক্রিনে। চেঁচিয়ে উঠলো নাওমি। গেম শেষ।

    “তোমরা বিরক্ত করছো আমাকে!”

    “নাওমি! যথেষ্ট হয়েছে! কি ঘটেছে সেই বিষয়ে বিন্দুমাত্র ধারণা আছে তোমার!” আকিও গলা চড়াল এবারে।

    জয়স্টিকটা সামনের দিকে ছুড়ে মেরে চোখ পাকিয়ে বাবার দিকে তাকায় আকিও। চেহারা রাগে বিকৃত।

    “শান্ত হও, নাওমি। আর তুমিও চেচিও না ওভাবে।” পরের কথাটা আকিও’র উদ্দেশ্যে বলে ইয়াইকো। এখন দুই হাতে ছেলের কাঁধ ম্যাসাজ করে দিচ্ছে সে। কিন্তু দৃষ্টি স্বামীর দিকে।

    “কি হয়েছে সব বলো আমাদের! তোমার কি ধারণা? পার পেয়ে যাবে এসব করে?”

    “সব তোমাদের দোষ! ওই মেয়ে মরলে তোমাদের কি!”

    আকিও বুঝতে পারেনা, নাওমি কি এতটাই মাথামোটা যে পরিস্থিতির গুরুত্ব মাথায় ঢুকছে না তার?

    “ঠিক আছে। চুপ করে থাকো, সমস্যা নেই। পুলিশের কাছে যাচ্ছি আমি।” সাথে সাথে জমে গেল ইয়াইকো আর নাওমি।

    “কি বলছো তুমি এসব?” বিস্ফোরিত নয়নে বলে ইয়াইকো। “এটা ছাড়া আর কোন উপায় আছে?”

    “পাগল হয়েছ নাকি? আমি কেন পুলিশের কাছে যাব? প্রশ্নই ওঠে না!” রাগে গজরাতে গজরাতে বলে নাওমি।

    টেলিভিশন রিমোটটা তুলে নিয়ে বাবার দিকে ছুড়ে মারে সে। শেষ মুহূর্তে মাথা নিচু করে আঘাত এড়ায় আকিও। দেয়ালে গোত্তা খেয়ে নিচের ম্যাগাজিনগুলোর উপরে পড়ে রিমোটটা।

    “নাওমি, লক্ষ্মী ছেলে না তুমি। শান্ত হও বাবা, প্লিজ,” ইয়াইকো ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বলে। “তোমাকে থানায় যেতে হবে না। কক্ষনো না।”

    “তুমি আবার কি শুরু করলে এখন?” আকিও বলে। “থানায় যাব না তো কোথায় যাব? আর কোন উপায় নেই এখন।”

    “চুপ করো তুমি,” ইয়াইকো রাগত কন্ঠে বলে। “যাও এখান থেকে। আমি কথা বলছি নাওমির সাথে।”

    “আমার বয়স এখনো ষোল হয়নি। আমি কিছু করে থাকলে সব দায় তোমাদের। সুতরাং, এটা তোমাদের সমস্যা, আমার না,” মায়ের আলিঙ্গনের ভেতর থেকেই বলে নাওমি। বিন্দুমাত্র অনুতাপ নেই তার চেহারায়। এই ভঙ্গিটা আকিও’র চেনা। কোন কিছুতেই নিজের দোষ দেখে না নাওমি। সবকিছু অন্যদের উপরে চাপিয়ে দেয়। এরকমটাই হয়ে আসছে বরাবর।

    এখন ছেলেটাকে যতই দোষারোপ করা হোক না কেন, মানবে না সে। কথা শোনার মত পরিস্থিতিতে নেই সে।

    “সবকিছু ঠিক করে শোনো ওর কাছ থেকে,” দরজা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার আগে বলে আকিও।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleদ্য মিরাকলস অব দ্য নামিয়া জেনারেল স্টোর – কেইগো হিগাশিনো
    Next Article দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – কিয়েগো হিগাশিনো

    Related Articles

    কেইগো হিগাশিনো

    স্যালভেশন অফ আ সেইন্ট – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য মিরাকলস অব দ্য নামিয়া জেনারেল স্টোর – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    নিউকামার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    ম্যালিস – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য নেম অব দ্য গেম ইজ অ্যা কিডন্যাপিং – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.