Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    দ্য লাস্ট ডন – মারিও পুজো

    মোঃ বুলবুল আহমেদ এক পাতা গল্প630 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ০২. লডস্টোনের সাথে অ্যাথেনা

    ০২.

    লডস্টোনের সাথে অ্যাথেনা অ্যাকুইটেনের কাজ না করার ঘোষণাটি অত্যন্ত গুরুত্ববহ প্রতারণা হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, যার সাথে জড়িত বিশাল পরিমাণে অর্থের বিনিয়োগ ব্যাপক মূল্য দিতে হতে পারে এজন্য অ্যাথেনা অ্যাকুইটেনকে।

    লডস্টোন পুরো হলিউডের এমনই এক প্রভাবশালী ও বৃহৎ স্টুডিও যে, সাধারণত কোনো অভিনয় শিল্পীই অ্যাথেনার মতো নেতিবাচক আচরণের সাহস দেখায় না।

    ঐতিহাসিক কাহিনীনির্ভর ম্যাসেলিনা চলতি বছর ক্রিসমাস মৌসুমের যথেষ্ট গতিশীল প্রযোজনা। শুধু তাই নয়, এমন বড় ছবি পুরো দীর্ঘ ও কঠিন শীতকালে স্টুডিওর সব ছবির পরিপূরক হিসেবে বিবেচিত। আর এতেই প্রধান চরিত্রে কাস্ট করা হয়েছে অ্যাথেনাকে।

    অ্যাথেনার ওপর লডস্টোন স্টুডিওর ক্ষেপে যাওয়ার আরো একটি কারণ হচ্ছে এমন এক সময় অ্যাথেনা ছবিতে কাজ না করার ঘোষণা দিয়েছে যখন বার্ষিক চলচ্চিত্র উৎসবের সমস্ত আয়োজন প্রায় সম্পন্ন। পরের রোববার এলি ম্যারিয়নের বেভারলি হিলস এস্টেটে এই বার্ষিক উৎসব ঘিরে ব্রাদারহুড চ্যারিটি পার্টির দিন নির্ধারিত। এলি ম্যারিয়ন হচ্ছেন লডস্টোন স্টুডিওর সিংহভাগের অংশীদার এবং চেয়ারম্যান।

    সমতল ভূমি থেকে অনেক উঁচুতে বেভারলি হিলসে এলি ম্যারিয়নের ম্যানশনটি আদতে একটি প্রদর্শনী ক্ষেত্র হিসেবেও অনায়াসে চালিয়ে দেয়া যায়। বাড়িটিতে রয়েছে বিশাল বিশাল কুড়িটি কক্ষ। তবে সবচেয়ে বিস্ময়ের বিষয়, এত বড় বাড়িতে মাত্র একটি শয্যাকক্ষ বা বেড চেম্বার। এর কারণ এলি ম্যারিয়ন কখনোই চান না তার বাড়িতে কেউ ঘুমাক। তবে গেস্টদের জন্য অবশ্যই রয়েছে বাংলো-বাড়ি, রয়েছে টেনিস কোর্ট এবং বড়সড় আয়তনের সুইমিং পুল। ম্যারিয়নের বিশ কক্ষ বিশিষ্ট ম্যানশনটির প্রায় ছয়টি কক্ষই সাজানো হয়েছে অত্যন্ত মূল্যবান সব পেইন্টিংস দিয়ে। ম্যারিয়ন এ বিষয়ে প্রায় বলে থাকেন– আমার ম্যানশনের কয়েকটি কক্ষ পেইন্টিংসের জন্য উৎসর্গকৃত।

    সেই বেভারলি হিলসের চ্যারিটি উৎসবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে হলিউডের বাঘা বাঘা প্রায় পাঁচশ ব্যক্তিত্বকে। আমন্ত্রণ রক্ষা করতে অতিথিদের প্রত্যেককে এক হাজার ডলার করে অ্যাডমিশন ফিও দিতে হয়েছে।

    উৎসবের জন্য ম্যারিয়ন ম্যানশনের বাইরে পৃথকভাবে বসানো হয়েছে পানশালা। খাবারের স্থান, নাচের জায়গা ও মিউজিক ব্যান্ডের স্থান। এর বাইরে পুরো স্থান জুড়েই আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য এই আয়োজন। তবে ম্যানসনে অতিথিদের অবাধ বিচরণ সংরক্ষিত। আরেকটি বিষয়, অতিথিদের টয়লেট সিস্টেমেও আনা হয়েছে অভিনবতু— এর জন্য একটি বহনযোগ্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেটি বেশ কৌতুককর।

     

    আরও দেখুন
    অনলাইন গ্রন্থাগার
    বাংলা উপন্যাস
    Books
    বাংলা বইয়ের সাবস্ক্রিপশন
    বাংলা শিশু সাহিত্য
    সেবা প্রকাশনীর বই
    বুক শেল্ফ
    বাংলা কমিকস
    বাংলা সাহিত্য ভ্রমণ
    PDF

     

    ম্যানশন, অতিথিদের বাংলো, টেনিস কোর্ট ও সুইমিং পুলগুলো ঘিরে দড়ির সীমানা টানানো হয়েছে। বসানো হয়েছে নিরাপত্তা রক্ষী। কোনো অতিথিরই এমন নিরাপত্তা ডিঙিয়ে সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। এলি ম্যারিয়ন ব্যক্তি হিসেবে এতটাই প্রসিদ্ধ যে, এমন নিরাপত্তা ও আড়ম্বরপূর্ণ ব্যবস্থা না নিলে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা অসম্ভব কিছু নয়।

    আমন্ত্রিত অতিথিদের লনে গল্প-গুজব, নাচ-গানের জন্য মাত্র তিন ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। আর ম্যারিয়ন ছিলেন ম্যানশনের একটি বড় সম্মেলন কক্ষে। সেখানে একদল হলিউড ব্যক্তিত্বের সাথে তিনি ম্যাসেলিনা ছবিটি সম্পন্নের বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন।

    বেভারলি হিলসে এই আয়োজনের পুরোটাই এলি ম্যারিয়ন নিজেই সম্পাদনা করছিলেন। আশি বছর বয়সেও ম্যারিয়নের স্বতঃস্ফূর্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো। এতটা বয়স তিনি অত্যন্ত সতর্কতা ও ধূর্ততার সাথেই লুকিয়ে রাখতে পারেন। যে কেউ তাকে দেখে ষাটের বেশি মনে করবে না কখনো। তার ধূসর চুলগুলো নিখুঁতভাবে ছাঁটা এবং খুব সামান্যই তাতে রুপালি আভা। কালো সুট পরলে ম্যারিয়নের কাঁধ আরো প্রশান্ত মনে হয়। শরীরের টান টান ভাব আরো প্রস্ফুটিত হয়। সাথে ঠোঁটে ধরা চিকন পাইপ হারিয়ে দিতে পারেন প্রায় যুবকদের ইমেজও। তার পায়ে মাহোগ্যানি জুতা যেন ভূপৃষ্ঠ আঁকড়ে থাকে। লম্বভাবে কাটা সাদা শার্ট ও সাথে গোলাপি টাইয়ের বাঁধনে তার সামান্য ধূসর পাণ্ডুবর্ণও গোলাপি হয়ে ওঠে। তবে লডস্টোনে তার নিয়ম ও আইন পরিচালিত হয় তার নির্দেশমতোই। একটা সময় অবশ্য ছিল, যখন মানুষের ইচ্ছার স্বাধীন মতামতের ওপর ভিত্তি করেই পরিচালিত হতো স্টুডিওর কার্যক্রম। এখন আর সে দিন নেই– কর্তৃত্ব ম্যারিয়নেরই।

     

    আরও দেখুন
    বাংলা উপন্যাস
    বইয়ের
    বাংলা অডিওবুক
    উপন্যাস সংগ্রহ
    বাংলা টাইপিং সফটওয়্যার
    বাংলা ফন্ট প্যাকেজ
    বাংলা বই
    বাংলা শিশু সাহিত্য
    নতুন উপন্যাস
    Library

     

    একটি ছবির মাঝপথে অ্যাথেনা অ্যাকুইটেনের অস্বীকৃতি মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দিয়েছে এলি ম্যারিয়নকে। এতে বিপর্যস্ত হয়েছে ম্যারিয়নের দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠিত নিয়ম, শৃঙ্খলা ও সর্বোপরি তার মনোযোগ।

    ম্যাসেলিনা শত মিলিয়ন ডলারের প্রযোজনা, স্টুডিওর গতি প্রকৃতি। এর অর্থায়ন বিভিন্ন বিদেশী ভিডিও, টিভি, ক্যাবল ইত্যাদি মাধ্যমের সাথে সম্পৃক্ত— যেন এক-একটি স্বর্ণের ভাণ্ডার। আর এই ভাণ্ডার স্প্যানিশ জাহাজ (গ্যালিওন) ডুবির মতো সাগরের অতলে হারিয়ে যাচ্ছে যেন, তা আর কখনোই উদ্ধার করা সম্ভব নয়। এই ভাণ্ডার হচ্ছে অ্যাথেনা নিজেই। তিরিশ বছরে অ্যাথেনা– একজন মেগাস্টার। অ্যাথেনা শুধু ম্যাসেলিনার জন্যই নয়, লডস্টোনের পরবর্তী আরেকটি ব্লকবাস্টার ছবিতেও চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। ম্যারিয়নের মতে, অ্যাথেনা একটি প্রকৃত মেধার নাম, তার মাঝে মেধা ছাড়া আর কি-ইবা আছে! তবে ম্যারিয়ন যে কোনো মেধার পূজারী।

    মেধাকে তিনি ডিনামাইট হিসেবে মনে করেন। ডিনামাইটের মতোই ভয়ঙ্কর এই মেধা, তবে এর নিয়ন্ত্রণও রাখতে হবে। ভয়ঙ্কর বিপজ্জনক এই ডিনামাইটের নিয়ন্ত্রণ রাখতে প্রয়োজন ভালোবাসার। তার নিয়ন্ত্রণে হতে হবে তোষামোদী– বিশ্বে প্রচার করতে হবে এর যত কিছু ভালো সব। এর জন্য হতে হবে বাবা, হতে হবে মা। এর জন্য নিজেকে একজন বোন হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে, এমনকি প্রয়োজনে সাজতে হবে একজন প্রেমিক। তবে খুব বেশি ছাড়ও দেয়া যাবে না। কিন্তু ম্যারিয়নের এখন এমন একটি কঠিন সময়, যখন ডিনামাইট অ্যাথেনার প্রতি কোনো কিছুই সাজতে পারছেন না– দুর্বল হয়ে পড়েছেন তিনি কোনোভাবেই ক্ষমা করতে পারছেন না অ্যাথেনাকে।

     

    আরও দেখুন
    বিনামূল্যে বই
    বাংলা সাহিত্য ভ্রমণ
    অনলাইন গ্রন্থাগার
    বাংলা সাহিত্য
    বাংলা সাহিত্য কোর্স
    বাংলা বইয়ের সাবস্ক্রিপশন
    বাংলা ডিকশনারি অ্যাপ
    বাংলা বিজ্ঞান কল্পকাহিনী
    বাংলা কমিকস
    বাংলা উপন্যাস

     

    কনফারেন্স রুমে উপস্থিত সবাই তাকিয়ে আছেন এলি ম্যারিয়নের দিকে। সবাই ম্যারিয়নের মনোভাব জানতে উদগ্রীব। আজকের এ সভায় উপস্থিত আছে ববি বানজ, স্কিপি ডিরি, মেলো স্টুয়ার্ট ও ডিটা টমি।

    এলি ম্যারিয়ন তাকালেন তার কনফারেন্স রুমের কুড়ি মিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যমানের পেইন্টিংস, টেবিল, চেয়ার, সোফা, ক্রিস্টালের ওয়াইনপূর্ণ ধারক আরো মর্গগুলোর দিকে। তার এই দৃষ্টি ছিল উদাসীন। এসব যেন তারই শরীরের খণ্ড খণ্ড টুকরো। ম্যারিয়নের মনে হলো, যেন শরীরের টুকরোগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে।

    এলি ম্যারিয়ন নিজেই অবাক হয়ে ভাবেন কতটা কৌশলের সাথে তিনি নিজেকে একজন শক্তিশালী, প্রভাবশালী হিসেবে সারা বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করে থাকেন। খুব কঠিন মনে হয় তার বিশ্বের অপর পাওয়ারফুল ব্যক্তিদের সাথে তাল মিলিয়ে চলা।

    ম্যারিয়নের সকালগুলো কখনোই পুরোপুরি অবসাদমুক্ত হওয়ার সুযোগ পায় না। সকালে ঘুম থেকে উঠেই ব্যস্ত হয়ে পড়তে হয় তাকে। ক্লান্তিভরা শরীর নিয়ে শেভ করেন, কোটের বোম লাগান একে একে। তারপর বাঁধেন টাই–টাইয়ের নটটা সামলাতেও বেগ পেতে হয় তার। তবে মনের জোরেই করতে থাকেন সবকিছু। তিনি জানেন মানুষের মানসিক দুর্বলতা হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয়। এটা সক্রিয় হলে যে কোনো মানুষ তার জীবনের ছন্দ হারিয়ে ফেলবে, ক্ষমতাহীন হয়ে পড়বে। তবে এ বয়সে ম্যারিয়ন আর কত দিন তার মনের জোর ধরে রাখবেন?

     

    আরও দেখুন
    বাংলা গল্প
    Library
    সেবা প্রকাশনীর বই
    বাংলা বইয়ের সাবস্ক্রিপশন
    Books
    বাংলা শিশু সাহিত্য
    বাংলা ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণ
    অনলাইন গ্রন্থাগার
    বাংলা ই-বই
    বুক শেল্ফ

     

    তিনি এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ববি বানজকে ব্যবহার করছেন। তার কাছে ধীরে ধীরে গছিয়ে দিচ্ছেন ক্ষমতা। বানজ প্রায় তিরিশ বছরের ছোট হলেও তাকে বন্ধুসুলভ দৃষ্টিতেই দেখেন ম্যারিয়ন। সবচেয়ে কাছের বন্ধু মনে করেন তাকে। এর কারণ দীর্ঘ সময় ধরে বানজ ম্যারিয়নের আনুগত্য।

    স্টুডিওর প্রেসিডেন্ট এবং চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসারের দায়িত্বে রয়েছে বানজ। প্রায় তিরিশ বছর যাবৎ বানজ যেন ম্যারিয়নের কুড়াল। এই দীর্ঘ সময় ধরে তাদের সম্পর্কে একটি নতুন মাত্রাও যোগ হয়েছে। সেটি পিতা-পুত্রের অনেকেই এমন মন্তব্য করে থাকেন আজকাল। ম্যারিয়নের সত্তর বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর থেকে, ক্রমেই তিনি স্বভাবগত কোমল হতে থাকেন। ঠিক ততটুকুই করেন যতটুকু না করলেই নয়। তবে বানজ এক্ষেত্রে সদা সক্রিয়।

    বানজ ছিল এক সময় ছবির পরিচালক। সেই পরিচালক থেকে ম্যারিয়ন তাকে তুলে এনেছেন সমগোত্রে। ম্যারিয়নের সাথে যৌথ ছবি নির্মাণ করে দর্শকের জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর থেকেই উভয়ের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটতে থাকে। বানজ লডস্টোন স্টুডিওর একটি নিন্দনীয় নাম। এই সেই বানজ, যে ছবির পরিচালক, স্টার ও লেখকদের পারিশ্রমিক প্রদানে ঠকিয়ে যাচ্ছে অনবরত। কেউ বিদ্রোহ করে উঠলে আদালতের আশ্রয় নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। এই সেই বানজ যে যে কোনো ট্যালেন্টকে কঠিন শর্তে চুক্তিবদ্ধ করতে বাধ্য করে। এটি ঘটে বিশেষ করে লেখকদের ক্ষেত্রে।

     

    আরও দেখুন
    উপন্যাস সংগ্রহ
    বাংলা স্বাস্থ্য টিপস বই
    বইয়ের
    ই-বই ডাউনলোড
    বাংলা ইসলামিক বই
    বই
    বাংলা ই-বুক রিডার
    বাংলা ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণ
    PDF
    বাংলা গল্প

     

    লেখকদের একটি সাধারণ মাত্রার সম্মানী দিতেও তার কার্পণ্যের সীমা নেই। অনেক ক্ষেত্রে লেখকদের স্ক্রিপ্ট তার হাতে যাওয়ার পরপরই অস্বীকারও করে বসে। তবে বানজের কাছে মোটামুটি একটা মূল্য পায় পরিচালক। পরিচালকের গুরুত্ব তার কাছে একটু বেশিই। এর কারণ তারা হচ্ছে ছবির কলকাঠি নাড়নেঅলা–ইচ্ছে করলেই অন্ধ বানিয়ে ফেলতে পারে তারা। প্রযোজকদের ক্ষেত্রেও বানজের মনোভাব কিছুটা নমনীয়। চুরিবৃত্তির গলদ না পাওয়া পর্যন্ত বানজের কাছে প্রযোজকরা হচ্ছে ছবি তৈরির মানসিক শক্তির উৎস।

    কিন্তু লেখকরা? বেচারা লেখকদের চুক্তিবদ্ধ হতে হয় বানজের কাছে শূন্য সাদা কাগজে। এতে সায় না থাকলে এমন অনেক লেখক বের করে নেয়া যায় বলে একটা হুমকিও শোনা যাবে তার মুখে। লেখা নির্বাচিত হওয়ার পর প্রযোজক বিভিন্ন দৃশ্যের জন্য প্লট সাজান। পরিচালক দেন তার বাণিজ্যিক ভিত্তি এবং স্টাররা সংলাপের অভিব্যক্তিতে ফুটিয়ে তুলতে থাকেন দৃশ্যের পর দৃশ্য। কোনো কারণে কোনো দৃশ্যে যদি সংলাপ না থাকে তবে সে লেখকের বারোটা বাজিয়ে ছাড়বে বানজ। কেটে নেয়া হবে তার সম্মানীর অংশ। এভাবে পূর্বে বহু লেখককে বঞ্চিত করার ঘটনা ঘটেছে, যা একত্রে করলে কয়েক মিলিয়ন ডলার হতে পারে। তবে লেখকদের ক্ষেত্রে বানজের চেয়ে ম্যারিয়ন অনেকটাই নমনীয়। এর কারণ ছবি নির্মাণে চুক্তিবদ্ধ করাতে স্টার, কলাকুশলীদের চেয়ে লেখকরাই সবচেয়ে সহজ বলে মনে হয় তার।

     

    আরও দেখুন
    বাংলা ই-বই
    বাংলা স্বাস্থ্য টিপস বই
    বাংলা ভাষা শিক্ষার অ্যাপ
    বাংলা লাইব্রেরী
    অনলাইন বই
    PDF
    অনলাইন বুক
    বইয়ের
    বইয়ের
    বাংলা বইয়ের সাবস্ক্রিপশন

     

    ম্যারিয়ন এবং বানজ সারা বিশ্বের ফিল্ম ফ্যাস্টিভেলের আয়োজন করে ছবি বিক্রির চেষ্টা চালিয়েছে একসাথে। তাদের ছবির বিশ্ব বাজার তৈরির জন্য তারা কখনো গেছেন লন্ডন, কখনো প্যারিসে, কানসে–কখনোবা টোকিও কিংবা সিঙ্গাপুরে। সারা বিশ্ব সফর করে তাদের কাছে ছবি সংশ্লিষ্ট লেখক, সাধারণ আর্টিস্ট, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ভূমিকাকে একেবারেই নগণ্য মনে হয়েছে। এর পরই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই বঞ্চিতকরণ ধারার। সাম্রাজ্য বিস্তারের নতুন আইন তৈরি হয়েছে তাতে একজন হয়েছেন সম্রাট আর অপরজন তার প্রধান আজ্ঞাবাহী।

    এলি ম্যারিয়ন এবং ববি বানজ দুজনে একমতে পৌঁছেছেন। তাদের মনে হয়েছে লেখক, অভিনয় শিল্পী এবং পরিচালক শ্রেণীর লোকরা বিশ্বের সবচেয়ে অকৃতজ্ঞ। বানজ ও ম্যারিয়ন বলে উঠেছেন, আহা এরা যদি একটু সক্রিয় হতো, তাদের ভালো সুযোগের জন্য যদি একটু কৃতজ্ঞ হতো। তারা যদি নিজেদের তুলে ধরতে একটু চেষ্টা করত! একটু বিখ্যাত হলেই তারা কিভাবে যে এত পরিবর্তন করে ফেলে নিজেদের, বোঝা মুশকিল।

    তাদের ধারণা ছবি সংশ্লিষ্ট এই নগণ্য, অকৃতজ্ঞরা যেন মধু তৈরির মৌমাছিদের প্রতি ক্রুদ্ধ ভিমরুলের মতো আচরণ করতে শুরু করে। আর এদের প্রকৃতিস্থ করতে ম্যারিয়ন-বানজ কৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন। কুড়ি সদস্যবিশিষ্ট একটি আইনজীবীর দল রেখেছেন বিদ্রোহীদের ওপর জাল ফেলার জন্য।

     

    আরও দেখুন
    বাংলা লাইব্রেরী
    বাংলা সাহিত্য ভ্রমণ
    বাংলা ইসলামিক বই
    বিনামূল্যে বই
    বাংলা ভাষা শিক্ষার অ্যাপ
    বাংলা সংস্কৃতি বিষয়ক কর্মশালা
    নতুন উপন্যাস
    বাংলা গানের লিরিক্স বই
    বাংলা অডিওবুক
    বাংলা ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণ

     

    তারা সব সময় শুধু শুধু সমস্যার সৃষ্টি করবে কেন? কেন অসুখী থাকবে তারা সর্বদা? এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, যেসব মানুষ শিল্পের চেয়ে অর্থের পেছনে সবসময় ছুটতে থাকে তাদের সে ক্যারিয়ার দীর্ঘ হতে পারে, জীবনে প্রচুর আনন্দ ও উপভোগ করতে পারে কিন্তু মনের প্রশান্তি তাদের ক্রমেই দূরে সরতে থাকে। কিন্তু যারা সত্যিকার অর্থেই শিল্পের পূজারী তারা যেমন নিজেও স্বর্গীয় সুখ পায়, অপরকেও করতে পারে সুখী। শিল্প ছাড়া ছবি তৈরি হতে পারে কিন্তু তার মধ্যে প্রাণ থাকবে না, ভালোবাসা থাকবে না। আর মানুষও সেটা কিনতে আগ্রহী হবে না।

    .

    ববি বানজ ম্যানশনের বাইরে উৎসবমুখর আমন্ত্রিত অতিথিদের কনফারেন্স রুমে আসন গ্রহণের আহ্বান জানাল। এ আহ্বান থেকে বাদ গেল না একমাত্র মহিলা অতিথি ডিটা টমি। ডিটা টমি লডস্টোনের চলমান ছবি ম্যাসেলিনার পরিচালক।

    ডিটা টমি একজন এ-ক্লাস পরিচালক এবং সমকামী নারী, অভিনেত্রীদের নিয়ে ছবি পরিচালনার তার সুখ্যাতি রয়েছে। আজকাল হলিউডে এই সমকামী শব্দটি প্রায় উঠেই গেছে। বৈধতা পেয়েছে সমলিঙ্গের যৌন বিনোদন। নারী সমকামীদের তাই এখন লেসবিয়ান না বলে ফেমিনিস্ট হিসেবে আখ্যা দেয়া হচ্ছে। ডিটা টমি নিজেও একজন সমকামী নারী। আর কনফারেন্স রুমে পুরুষদের ভিড়ে টমির উপস্থিতি অপ্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে–একেবারেই বেমানান।

     

     

    ডিটা টমি সবসময় বেশ কম বাজেটে ছবি তৈরি করে থাকে। ছবিগুলো প্রচুর অর্থও বয়ে নিয়ে আসে স্টুডিওর জন্য। সবচেয়ে সুবিধা হলো এই, তার ছবিতে নেয়া নারী অভিনেত্রীদের নিয়ে তাকে খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয় না, যা একজন পুরুষ পরিচালকের জন্য অত্যন্ত কষ্টের। আরেকটি বিষয় হলো ডিটা টমি তার সমকামী অভিনেত্রীদের দিয়ে খুব সহজে দৃশ্যের পর দৃশ্যে কাজ করিয়ে নিতে পারে।

    কনফারেন্স টেবিলের শীর্ষস্থানীয় আসন দখল করে বসে আছেন এলি ম্যারিয়ন। তার পাশে ববি বানজ সম্মেলনের বিষয়াদি আলোচনা করছিল।

    বানজ ডিটার উদ্দেশে বলল, স্টুডিওতে যে সঙ্কট দেখা দিয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে আমাদের কি করা উচিত? এ বিষয়ে তোমার কোনো নিজস্ব চিন্তা থাকলে আমাদের বলো। এ সমস্যার মাথা-মণ্ডু কিছুই ঢুকছে না আমার মাথায়।

    টমি আকারে একটু ছোটখাটো, তবে বেশ দৃঢ়তাসম্পন্ন, কথা বলে সবসময় যুক্তি দিয়ে। টমি বানজের কথার প্রতিউত্তরে বলল, অ্যাথেনাকে তার মৃত্যুভয় তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। যতক্ষণ না আপনারা তার এই ভীতি দূর করতে সক্ষম হবেন, তার নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে সক্ষম হবেন–আমার ধারণা, সে ততক্ষণ তার কাজে ফিরে আসতে পারবে না। আর সে যদি ফিরে না আসে তবে আপনাদের পঞ্চাশ মিলিয়ন ডলার নিশ্চিতভাবে গোল্লায় যাবে। সে ছাড়া ছবির কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।

     

    আরও দেখুন
    সাহিত্য পর্যালোচনা
    বাংলা বিজ্ঞান কল্পকাহিনী
    বাংলা সংস্কৃতি বিষয়ক কর্মশালা
    বাংলা লাইব্রেরী
    বইয়ের
    বাংলা বই
    বাংলা ই-বই
    বাংলা ই-বুক রিডার
    বুক শেল্ফ
    বাংলা বইয়ের সাবস্ক্রিপশন

     

    একটু সময় নিল টমি। তারপর বলল, গত সপ্তাহে আমি তাকে নিয়ে কাজ করেছি। সেখানেও আমি আপনাদের সাশ্রয় করেছি।

    দিস ফাকিং পিকচার টমির কথা শেষ না হতেই বানজ এক রকম উত্তেজিত হয়ে উঠল। বলল, আমি কখনোই এটা বানাতে চাইনি।

    ববি বানজের এই কথা উপস্থিত সকলের মনোযোগে আঘাত করল। প্রযোজক স্কিপি ডিরি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলল, ফাঁক ইউ ববি।

    অ্যাথেনা অ্যাকুইটেনের এজেন্ট মেলো স্টুয়ার্ট ক্ষেপে গিয়ে ববির উদ্দেশে বিশেষণ ছুড়ল বুলশিট বলে।

    সত্য কথা হলো ম্যাসেলিনা তৈরির জন্য সবাই খুব বেশি আগ্রহ দেখিয়েছিল। এর কারণ ছবিটির কাহিনী প্রাচীনতম ঐতিহাসিক হলেও খুব সহজেই এটি ব্যবসায় সফলতা আনতে সক্ষম হবে–এই ভেবেই ছবিটি নির্মাণে সবুজ সংকেত দেয় প্রায় সবাই।

     

    আরও দেখুন
    পিডিএফ
    বাংলা ক্যালিগ্রাফি কোর্স
    বইয়ের
    বাংলা ফন্ট প্যাকেজ
    বাংলা গল্প
    বাংলা অনুবাদ সাহিত্য
    বাংলা বিজ্ঞান কল্পকাহিনী
    বাংলা সাহিত্য
    বুক শেল্ফ
    অনলাইন বুক

     

    ম্যাসেলিনা ছবিটির কাহিনী প্রাচীন রোম সাম্রাজ্যের। তখন রোমের সম্রাট ছিলেন ক্লডিয়াস। সমকামী দৃষ্টিকোণ থেকেই ছবিটির বিষয়বস্তু মূলত প্রাধান্য পেয়েছে। তবে এই গল্পের লেখক একজন পুরুষ। লেখক যেভাবে লিখেছে–

    সম্রাজ্ঞী ম্যাসেলিনা ছিলেন দুর্নীতিপরায়ণা, হন্তক এবং বহুগামী নারী। এক রাতে সম্রাজ্ঞী ম্যাসেলিনা রোমের সব মানুষকে যৌনাবেদনের মাধ্যমে বিপথে নিয়ে গিয়েছিলেন।

    ঘটনাটি এমন হলেও ম্যাসেলিনা ছবির কাহিনী নির্মিত হয়েছে একটু ব্যতিক্রম করে প্রায় দুই হাজার বছর আগের ঘটনা। যেখানে ম্যাসেলিনাকে দেখানো হয়েছে একজন বিষাদগ্রস্ত নায়িকা হিসেবে। এ গল্পে ম্যাসেলিনা এমন একজন নারী যার অস্ত্র কেবল তার নারীত্ব। আর এই অস্ত্র কাজে লাগিয়ে সারা বিশ্বে পুরুষ কর্তৃত্বের অবসান ঘটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। পরিবর্তন করা হয়েছে সামাজিক ব্যবস্থায়। নারীকে যারা শুধু যৌন সম্ভোগের বস্তু হিসেবে মনে করে থাকে এমন কর্তৃত্বের অবসানের লক্ষ্যই ছবি নির্মাণের মূল বিষয়বস্তু।

    ছবির ধারণাটি চমৎকার-সম্পূর্ণ রঙিন ও যৌননির্ভর দৃশ্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং জনপ্রিয় বিষয়বস্তু। কিন্তু নিখুঁতভাবে সম্পূর্ণ বিষয়বস্তু তুলে ধরাই হবে সাফল্যের ব্যাপার।

     

    আরও দেখুন
    বাংলা ফন্ট প্যাকেজ
    বাংলা বই
    সেবা প্রকাশনীর বই
    বইয়ের
    বাংলা অনুবাদ সাহিত্য
    বাংলা ভাষা শিক্ষার অ্যাপ
    ই-বই ডাউনলোড
    বাংলা ডিটেকটিভ থ্রিলার
    বাংলা উপন্যাস
    অনলাইন বই

     

    প্রথমে স্ক্রিপ্টটি লিখেছিল ক্লডিয়া ডি. লিনা–গল্পের নিখুঁত অনুসরণ করে চমৎকার একটি পাণ্ডুলিপি দাঁড় করায় সে। ডিটা টমি এই চিত্রনাট্যের চলমান দৃশ্য নির্মাণের দায়িত্ব পায়। প্রায়োগিক ও রাজনৈতিক বিষয়বস্তুর ওপর ছবি নির্মাণের ক্ষেত্রে ডিটার নিযুক্তিও একেবারে সঠিক। সে হচ্ছে একজন শুষ্ক বুদ্ধিজীবী এবং পরীক্ষিত পরিচালক। এদিক থেকে অ্যাথেনা অ্যাকুইটেন ম্যাসেলিনা চরিত্রের জন্য আরো বেশি গ্রহণযোগ্য। পুরো ছবিতে তার চরিত্রটিই মূলত কর্তৃত্ব করেছে। অ্যাথেনার রয়েছে চেহারা ও শরীরের সৌন্দর্য, আর সেই সাথে তার অভিনয়ের দক্ষতা ও মেধা সবকিছুর পরিপূরক। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে অ্যাথেনা সারা বিশ্বে সেরা তিন সুন্দরী ও মেধাবী অভিনেত্রীর একজন। এদিকে ক্লডিয়া নেপথ্যের সেরা একজন জিনিয়াস। ম্যাসেলিনা চরিত্রটিকে অ্যাথেনার উপযোগী করে তুলতে চমৎকার সব কাজ অন্তর্ভুক্ত করেছে তার পাণ্ডুলিপিতে।

    কনফারেন্স কক্ষের সভায় স্কিপি ডিরি বলল, অ্যাথেনাকে ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত ছবির কাজ আমাদের বন্ধই রাখতে হবে। তবে এর জন্য প্রতিদিন আমাদের প্রায় দেড়শ ডলার পরিমাণ বড় অংকের ভর্তুকি দিতে হবে।

    এই হচ্ছে এখন অবস্থা। ইতিমধ্যেই আমরা ব্যয় করেছি পঞ্চাশ মিলিয়ন ডলার আর এদিক থেকে কাজের অগ্রগতি কেবল মাঝপথে। আমরা নতুন স্ক্রিপ্ট তৈরি করে অ্যাথেনাকে বাদও দিতে পারব না, আবার তার মতো আরেক অ্যাথেনা তৈরি করতে পারব না। এ অবস্থায় সে যদি আর ফিরে না আসে তবে এ পর্যন্ত নির্মিত ছবি আঁস্তাকুড়ে ফেলে দেয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।

    এ ছবি বাতিল করতে পারি না আমরা, বানজ বলল। তারকাদের কাজ করতে অস্বীকৃতির বিষয়ে ইস্যুরেন্স কোনো পদক্ষেপই নিতে চাইবে না। যদি তাকে প্লেন থেকে ফেলে দিই, সেক্ষেত্রে ইন্স্যুরেন্স এগিয়ে আসবে।

    এবার মেলোর দিকে তাকিয়ে বানজ বলল, মেলো তাকে ফিরিয়ে আনার দায়িত্বটা তোমার। অ্যাথেনার সব দায়-দায়িত্ব তোমাকেই বহন করতে হবে।

    মেলো স্টুয়ার্ট বলল, আমি শুধুমাত্র তার এজেন্ট। তার মতো নারীর প্রতি আমার আগ্রহ আছে। আমি বলতে চাই অ্যাথেনার আতঙ্কিত হয়ে ওঠার বিষয়টি জেনুইন। বিষয়টি তোমার বোধগম্য হবে না হয়তো। কেননা তুমি সে প্রকৃতির নও। সে সত্যিই আতঙ্কিত, তবে সে যথেষ্ট বুদ্ধিমতী। এক্ষেত্রে বুঝতে হবে আকস্মিক এই আচরণের নিশ্চয়ই কারণ আছে। পরিস্থিতি সত্যিই বেশ ভয়াবহ ও সঙ্কটপূর্ণ।

    বানজ বলল, এই শত মিলিয়ন ডলারের ছবিটি যদি তার জন্য নস্যাৎ হয়ে যায়, তবে সে আরো কখনোই ফিরে আসতে পারবে না, সে কি এটা জানে?

    খুব ভালো করেই জানে।

    বানজ এবার বলল, এমন কেউ কি নেই যে তাকে ফিরিয়ে আনতে পারে। স্কিপি, তুমিও তো চেষ্টা করেছ, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছ। মেলো, তুমিও চেষ্টা করেছ। ডিটা, আমি জানি, তুমি তোমার সাধ্যমতো তাকে বুঝিয়েছ। এমনকি আমিও। আমাকেও সে প্রত্যাখ্যান করেছে।

    বানজের প্রতি উত্তরে টমি বলল, ববি, তুমি তো গুনতিতেই পড়ো না। সে তোমাকে ঘৃণা করে।

    বানজ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল। বলল, অবশ্যই, অনেকেই আমার কথা বলার ধরণ পছন্দ করে না। তবে তারা আমার কথা শোনে।

    টমির কণ্ঠে সহানুভূতি। সে বলল, এমন কোনো ট্যালেন্ট নেই যে তোমাকে পছন্দ করে না। কিন্তু অ্যাথেনার বিষয়টি আলাদা। সে তোমাকে ব্যক্তিগতভাবেই ঘৃণা করে।

    বানজ বলল, অথচ আমিই তাকে স্টার বানিয়েছি।

    মেলো স্টুয়ার্ট শীতল কণ্ঠে বানজের বিরোধিতা করে বলল, সে জন্মগত একজন স্টার। তুমিই বরং তাকে পেয়ে ধন্য হয়েছ।

    বানজ ডিটার উদ্দেশে বলল, তুমি তো তার বন্ধু। তাকে কাজে ফিরিয়ে আনার কাজটুকু তুমিই করো।

    অ্যাথেনা আমার বন্ধু নয়, টমি বলল। সে আমার একজন সহকর্মী। সে আমাকে শ্রদ্ধা করে। এর কারণ আমিই তাকে তৈরি করেছি। সে যখন আমার প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করে আমি খুব মর্মাহত হয়েছি। আমি তোমার মতো নই, ববি। তুমি বছরের পর বছর চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারো।

    বানজ আর ধরে রাখতে পারল নিজকে। ডিটার উদ্দেশ্যে বলল, হু দি হেল ইজ নট টু ফাঁক আজ।

    এলি ম্যারিয়নকে উদ্দেশ্য করে বলল, আইনের আশ্রয় নেয়া ছাড়া উপায় নেই। তোমাকে এর একটা বিহিত করতে হবে।

    উপস্থিত সবার দৃষ্টি নিবদ্ধ হলো কনফারেন্স টেবিলের সবচেয়ে বয়োজ্যষ্ঠ এলি ম্যারিয়নের দিকে। এতক্ষণের আলোচনায় ম্যারিয়ন বেশ বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন। তার বিশাল মাথাটা নড়াচড়া করছিল উপস্থিত অতিথিদের দিকে। এ মুহূর্তে তার মাথা আরো বড় মনে হচ্ছিল। তার এই বড় মাথার জন্য কোনো এক স্টার জোক করে বলেছিল– তার মাথাটা একটু হেঁটে নেয়া দরকার।— এই মন্তব্যে যতটা না ছিল জোক, তার চেয়ে বেশি ছিল বিদ্বেষ।

    ম্যারিয়নকে দেখতে অনেকটা গরিলার মতো। তবে বেশ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ সে– ছড়ানো নাক, মাংসল ঢাউস মুখ। কনফারেন্স টেবিলে তিনি অত্যন্ত কৌতূহলোদ্দীপক চেহারা নিয়ে বসে আছেন। অত্যন্ত ভদ্র অবয়ব তার, শারীরিক বৈশিষ্ট্যে হ্যান্ডসাম না বলে উপায় নেই। তবে তার চোখ দুটো কিন্তু ব্যক্তিত্বের উৎস। শীতল-ধূসর চোখ দুটোতে একটা বুদ্ধিমত্তার ছাপ এবং তা যে কোনো মানুষের মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম। আরেকটি বিষয় হচ্ছে তিনি তার ফার্স্ট নেমটি লোকমুখে শুনতে পছন্দ করেন।

    ম্যারিয়নের কন্ঠে কোনো আবেগ প্রকাশ পেল না। তিনি বললেন, অ্যাথেনা যদি আপনাদের কারো কথাই কর্ণপাত না করে, তবে সে আমার কথাতেও একই উত্তর দেবে। আমার যে অবস্থান তাতে তাকে ইমপ্রেস করার প্রচেষ্টা মানায় না। তবে একজন বোকা টাইপের বিবেকহীন লোকের হামলায় অ্যাথেনার আতঙ্কিত হওয়ার বিষয়টি আমার কাছে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। আমরা কি অন্য কোনো পথের কথা চিন্তা করতে পারি না?

    আমরা চেষ্টা করব, বলল বানজ। তবে অ্যাথেনার মনোভাবের খুব একটা পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না।

    প্রডিউসার স্কিপি ডিরি বলল, আমরা অন্যভাবেও, বিশেষ করে পুলিশ প্রয়োগ করে অ্যাথেনার আটককারীকে শায়েস্তার চিন্তা করে দেখেছি। এতেও ব্যর্থ হয়েছি। কারণ বিষয়টি খুব সহজ নয়। তার বাবার আছে অঢেল টাকা ও রাজনৈতিক যোগাযোগ।

    স্টুয়ার্ট প্রশ্ন করল, এই ছবিটি যদি আমরা বাতিল করে ফেলি তবে স্টুডিওর ঠিক কতটা ক্ষতি হতে পারে? একটু থেমে তার কণ্ঠে প্রতিশ্রুতির সুর ভেসে এলো, স্টুডিওর পরবর্তী কাজে আমি আপ্রাণ চেষ্টা করব যেন এই ক্ষতি পুষিয়ে যায়।

    স্টুডিওর ক্ষতির বিষয়টি স্টুয়ার্ট মেলোর কাছে মেলে ধরাটা একটা সমস্যা। বিশেষ করে অ্যাথেনার এজেন্ট হিসেবে তো এটা প্রকাশ করা বোকামি। ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ প্রকাশ পেলে সুবিধে হবে অ্যাথেনার, এমনটি স্টুয়ার্টেরও। ম্যারিয়ন মেলোর প্রশ্নের কোনো উত্তর দিলেন না, তবে এ বিষয়ে বানজের মতামতের প্রতিই আগ্রহ ছিল তার। ম্যারিয়ন কৌতূহলী দৃষ্টিতে তাকালেন বানজের দিকে।

    অনিচ্ছাসত্ত্বেও বানজ মুখ খুলল, প্রকৃত ব্যয়ের হিসাব পঞ্চাশ মিলিয়ন। ঠিক আছে, মেনে নিলাম যে আমরা এর পুরোটাই পেটে ঢুকিয়েছি। কিন্তু বিদেশী সংস্থাগুলোকে তো তাদের অর্থ ফেরত দিতে হবে, ফেরত দিতে হবে ভিডিও কোম্পানিগুলোকে। তাছাড়া ক্রিসমাসের কোনো লোকোমটিভও আমাদের হাতে এখন নেই। এটা ভিন্নভাবে আমাদের কৌশলগত দিক দিয়ে ক্ষগ্রিস্ত করবে।

    কি যেন একটা ভাবল বানজ–কয়েক মুহূর্ত মাত্র। তার পর বলল, আমরা যদি লাভের দিকটা দেখি তবে সব মিলিয়ে দুশ মিলিয়ন ডলার। এই বিশাল পরিমাণ অর্থ পুষিয়ে দিতে তোমার কি যথেষ্ট প্যাকেজ আছে মেলো?

    স্টুয়ার্ট মেলো হেসে উঠল। তার এই হাসির কারণ স্টুডিওর কর্ণধাররা অ্যাথেনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব মেলোর ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে চাইছে। মেলো বলল, প্রকৃত অর্থ তোমাদের কাছ থেকে বেরিয়েছে, তোমাদের হিসেবে পঞ্চাশ মিলিয়ন।

    ম্যারিয়নের স্বর কঠিন হয়ে উঠল। কণ্ঠের ভদ্র ভাবও কেটে গেল। ম্যারিয়ন প্রায় ধমকের সুরে বলে উঠলেন, মেলো, তুমি এই পরিমাণ অর্থের কতটা তোমার ক্লায়েন্টের কাছ থেকে নিয়ে দিতে পারবে?

    সবাই বুঝতে পারল কি হতে যাচ্ছে। ম্যারিয়ন সিদ্ধান্ত নিলেন, এমন চাপ সৃষ্টি করে যদি কিছু উদ্ধার করা যায়।

    স্টুয়ার্টও ভালো করেই বুঝল–এই ছোট্ট স্কিমের জন্য তাকে কতটা কাঠ খড় পোড়াতে হবে। বানজের সামনে খরচের হিসাব চাওয়া এবং পরবর্তীতে পুষিয়ে দেয়ার বিষয়টি উত্থাপন ছিল মেলোর একটা ন্যায়পরায়ণতা, কিন্তু এর জন্য যে তাকেই এর মাশুল দিতে হবে–এমন অভিপ্রায় নিশ্চয়ই ছিল না তার। সঙ্কটপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে ম্যারিয়নের সাথে, যদি বানজের সাথে ঘটত, তবে নিঃসন্দেহে রুষ্ট আচরণ করত মেলো।

    মুভি ওয়ার্ল্ডে স্টুয়ার্ট মেলোও একজন ক্ষমতাবান ব্যক্তি। ম্যারিয়নকে তোয়াজ করে চলার মতো লোক সে নয়। হলিউডে তার নিজের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে পাঁচ-পাঁচটি এ ক্লাস পরিচালক। তারা শুধু ব্যাংকেবল স্টারই নয়, অত্যন্ত শক্তিশালীও। এদের মধ্যে রয়েছে দুজন ব্যাংকেবল পুরুষ তারকা ও একজন নারী— অ্যাথেনা। আর এমন স্টার থাকার অর্থ সে যে কোনো সময় যে কোনো ছবির জন্য সবুজ সংকেতের সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু নেপথ্যে যার এত ক্ষমতা, সে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করেই যাচ্ছে ম্যারিয়নের প্রতি। ম্যারিয়নের ক্ষুব্ধতায় সেও প্রতিউত্তর দেয়নি। আর এমন মাথা ঠাণ্ডা রেখে কাজ করার কারণেই সে ধীরে ধীরে ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছে।

    মেলো স্টুয়ার্টের সবচেয়ে বড় সম্পদ তার বিচক্ষণতা। সে যা দেবে তা সত্যিকার অর্থেই বিশ্বাস করে। তার বিশ্বাস আছে অ্যাথেনার মেধার প্রতি দশ বছর আগেও, অ্যাথেনা যখন এ জগতে অপরিচিত মুখ, তখনও তার বিশ্বাস ছিল অ্যাথেনার মেধায়। এখনও আছে আগের মতোই। তবে কিভাবে তার মনোভাব পরিবর্তন করে ক্যামেরার সামনে নিয়ে আসবে? মেলোর মন বলছে– নিশ্চিতভাবেই অ্যাথেনা কোনো বিশেষ সমস্যার মধ্যে আছে। আরো এই সমস্যার জন্য তার মতো মেধাবীকে শেষ হতে দেয়া যায় না।

    এখানে অর্থের কোনো বিষয় নয়, স্টুয়ার্টের কণ্ঠে প্রচণ্ড ভাবাবেগ ফুটে উঠল। সে নিজেই উপলব্ধি করল তার বিচক্ষণতার উল্লাস। বলল, তোমরা অ্যাথেনাকে অতিরিক্ত এক মিলিয়নের প্রস্তাব দাও। আমার মনে হয় সে আর ফিরে যাবে না। তোমাদের অবশ্যই সেই দীর্ঘ দিন ধরে অনুপস্থিত তথাকথিত স্বামী সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করতে হবে।

    স্টুয়ার্ট মেলোর কথাগুলো যেন অমঙ্গলসূচক বার্তা বয়ে আনল- সারা ঘরে পিনপতন নীরবতা। সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনছিল মেলোর কথাগুলো। যেখানে উপস্থাপন করা হয়েছে আরো কিছু অর্থের বিনিয়োগ। এটাই কি তাহলে অ্যাথেনাকে আটকানোর প্রারম্ভিক গোজ?

    স্কিপি ডিরি বলল, সে টাকা চায় না।

    ডিটা টমি গজগজ করে উঠল। স্টুয়ার্টের প্রতি ডিটার মোটেও আস্থা নেই। বিশ্বাসও করে না তাকে। তবে এই অর্থ তো আর তার পকেট থেকে যাচ্ছে না। বানজ বিস্ফারিত চোখে তাকাল স্টুয়ার্টের দিকে। কিন্তু স্টুয়ার্ট সূক্ষ্ম দৃষ্টি হেনে যাচ্ছিল ম্যারিয়নের ওপর। অত্যন্ত শীতল চোখে তাকিয়ে ছিল স্টুয়ার্ট।

    স্টুয়ার্টের যুক্তিকে যথাযথ মনে করলেন ম্যারিয়ন। তার বিশ্লেষণে স্টুয়ার্টকে সঠিক বলেই মনে হলো। কিন্তু অ্যাথেনা কি ফিরে আসবে? টাকার জন্য অ্যাথেনা ফিরে আসবে না। ট্যালেন্টরা খুব বেশি চালাক হয় না। ম্যারিয়ন সভার এখানেই সমাপ্তি টানার সিদ্ধান্ত নিলেন।

    তিনি বললেন, মেলো, খুব সতকর্তার সাথে তুমি তোমার ক্লায়েন্টের কাছে ব্যাখ্যা দেবে। এতে যদি সে এক মাস সময়ের মধ্যেও ফিরে না আসে তবে স্টুডিও এ ছবি বাতিল করবে। তারপর সে যা এ পর্যন্ত অর্জন করেছে তার সব কিছু আমরা কেড়ে নেব। সে অবশ্যই অবগত আছে যে, এরপর সে আমেরিকার কোনো বড় স্টুডিওতে কাজ করতে পারবে না।

    কথাগুলো বলেই টেবিল ঘিরে বসে থাকা অতিথিদের দিকে তাকিয়ে রক্তশূন্য হাসি হাসলেন। বললেন, যা গেল, তা মাত্র পঞ্চাশ মিলিয়ন।

    উপস্থিত সবাই বুঝতে পারল ম্যারিয়ন এ বিষয়ে আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন এবং নিশ্চিতভাবেই এ ছবি আর হবে না। তবে ডিটা টমি ম্যারিয়নের এমন মন্তব্যে আতঙ্কিত হয়ে পড়ল। একটি ছবিকে টমি অন্য সবার চেয়ে আলাদা চোখে দেখে থাকে। তার কাছে একটি ছবি তার সন্তানের মতো। ছবিটি যদি সফল হতো তবে টমিও ব্যাংকেবল পরিচালকদের সারিতে উঠে আসত।

    টমি বলল, ক্লডিয়া ডি লিনাকেই এই প্রস্তাবের জন্য পাঠানো সমীচীন হবে। ক্লডিয়া অ্যাথেনার সবচেয়ে কাছের বন্ধুদের মধ্যে অন্যতম।

    ববি বানজ অনিশ্চয়তার সুরে বলল, আমি বুঝতে পারছি না আসলে আমাদেরকে কোন চুলোয় যেতে হচ্ছে। একজন স্টার সবাইকে লাইনচ্যুত করে ফেলেছে। তার সাথে আবার লেখকের বন্ধুত্ব! ফাকিং স্টার! শ্লেষ ঝাড়ল বানজ।

    একথায় ম্যারিয়ন আরো অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেন। ববি, এমন একটি বাণিজ্যিক সভায় অপ্রাসঙ্গিক কথা কখনো বলবে না। ক্লডিয়াকে তার সাথে কথা বলতে দাও। তবে এটাকে এক রকম মুড়েই রাখো। আমাদের অন্য ছবির জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।

    কিন্তু পরের দিন লডস্টোন স্টুডিওর নামে একটি পাঁচ মিলিয়ন ডলারের চেক এসে পৌঁছল। চেকটি পাঠিয়েছে অ্যাথেনা অ্যাকুইটেন। ম্যাসেলিনাতে অভিনয়ের জন্য অ্যাথেনা যে অর্থ অগ্রিম নিয়েছিল তা সে ফেরত পাঠিয়েছে।

    এখন ব্যাপারটি সম্পূর্ণ চলে গেল লয়ারদের হাতে।

    .

    পশ্চিম উপকূলের স্বনামখ্যাত নিরাপত্তা সংস্থা প্যাসিফিক ওশেন সিকিউরিটি কোম্পানি। মাত্র পনেরো বছরে এন্ড্রিও পোলার্ড সংস্থাটি গড়ে তুলছেন। তার কর্মজীবনের শুরু হয় একটি হোটেলের সুইটে। সেই থেকে পোলার্ড এখন সান্তা মনিকায় চার তলা ভবনের মালিক। সেখানে তার রয়েছে পঞ্চাশ জন হেড কোয়ার্টার স্টাফ। এছাড়াও প্রায় পাঁচশ জনের মতো ইনভেস্টিগেটর ও গার্ড যারা যে কোনো কন্ট্রাক্টের সহযোগী– তাদেরকে ফ্রি-লান্স স্টাফ হিসেবে গণ্য করা হয়। আরো রয়েছে একদল ভাসমান রিজার্ভ গ্রুপ। এরা বছরের বিশেষ শুভ অংশে এন্ড্রিও পোলার্ডের জন্য কাজ করে থাকে।

    প্যাসিফিক ওশেন সিকিউরিটি সংস্থাটি এর সার্ভিসের জন্য বিখ্যাত এবং যথেষ্ট ব্যয়বহুল। কর্ণধারদের বাড়ি-ঘরের নিরাপত্তা বিধানে সংস্থা রীতিমতো সশস্ত্র রক্ষী ও সাথে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসেরও যোগান দিয়ে থাকে। প্রযোজক ও তারকা শিল্পীদের জন্য এদের আছে দক্ষ দেহরক্ষীর ইউনিট। একাডেমি অ্যাওয়ার্ড কিংবা বড় কোনো ফ্যাস্টিভেলের উচ্ছল জনতার ঢল নিয়ন্ত্রণে আনতে অত্যন্ত শক্তিশালী ইউনিফর্ম কর্মীরও সরবরাহ দিয়ে থাকে। এছাড়া ব্ল্যাকমেইলিং কিংবা এ ধরনের সঙ্কট নিরসনে কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের দক্ষদের যোগান দিয়ে তদন্তমূলক কাজের সুষ্ঠু সমাধার ক্ষেত্রেও সংস্থাটির যথেষ্ট সুনাম রয়েছে।

    এন্ড্রিও পোলার্ডের এত সুখ্যাতির কারণ সে যে কোনো দায়িত্ব পালনে নিখুঁত এবং তার কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণমূলক। তার কোনো ধনী ক্লায়েন্টের বাড়িতে নিরাপত্তা বিধানে সে প্রথমেই যেটা করবে তা হলো– আর্মড রিসপন্স সাইন মাটিতে বসিয়ে দেবে। এতে রাতের আঁধারে কোনো অস্ত্রবহনকারী গুপ্তঘাতক এলে মাটিতে পেতে রাখা ডিভাইসগুলো সাথে সাথে রঙিন আলো জ্বেলে সিগন্যাল দিতে থাকবে। এছাড়া ম্যানশনে ওয়াল ঘিরে নিরাপত্তারক্ষীদের টহল তো থাকবেই।

    পোলার্ড তার কর্মীদের যথেষ্ট ভাতা দিয়ে থাকে। এর কারণ তাদের জীবন সবসময় হুমকির মুখে। যে কোনো ঘাতকের আক্রমণে তার কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে মৃত্যুর আশঙ্কাও অমূলক নয়। তবে তার ক্লায়েন্টরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রভাবশালী ক্ষমতাবান ও অর্থ সম্পদের মালিক। লস অ্যাঞ্জেলেসের পুলিশ ডিপার্টমেন্টের খুব কাছাকাছি থেকে কাজ করার সুবিধাও সে চতুরতার সাথে আদায় করে নেয়। এক্ষেত্রে তাকে পুলিশের সাথেও সদ্ভাব গড়ে নিতে হয়েছে। ডিপার্টমেন্টের একেবারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে নিম্নমান পুলিশের সাথেও তার ও তার সংস্থার রয়েছে ভালো সম্পর্ক-আর এখানেই তার শতভাগ কৃতিত্ব।

    এন্ড্রিও পোলার্ডের লস অ্যাঞ্জেলেসের খ্যাতিমান গোয়েন্দা জিম লুজির সাথেও ভালো সম্পর্ক রয়েছে–তাদের সম্পর্কটা ব্যবসায়িক। একে-অপরের পরিপূরক হিসেবেও বিবেচিত। জিম লুজি প্রকৃতই একজন গোয়েন্দা হিরো। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে-ক্লেরিকুজিও পরিবারের মদদপুষ্ট।

    পনেরো বছর আগের কথা। তখন পোলার্ড ছিল একজন সামান্য পুলিশ কর্মকর্তা— খুব স্বাভাবিকভাবেই কিছু কিছু ক্ষেত্রে তার অসচেতনতা ছিলই। নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ ডিপার্টমেন্টের ইন্টারনাল অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের চক্রান্তেও পড়তে হয়েছিল তাকে। পোলার্ডের অপরাধ খুব বড় ছিল না তবে তা একেবারে উপেক্ষা করার উপায়ও ছিল না। যে ঘটনাটি তার ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল পোলার্ড তা সরাসরি অস্বীকার করে। তবে বিষয়টি তার ঊর্ধ্বতন বসকে না জানানোটা ছিল একটা বড় ভুল। এ বিষয়ে অভ্যন্তরীণ সমস্ত খবরাখবর জানত ক্লেরিকুজিও ফ্যামিলি। পোলার্ডের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে তারা। আইনজীবী নিযুক্ত হয়। মোটকথা ক্লেরিকুজিও ফ্যামিলির প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে, অবশেষে এন্ড্রিও পোলার্ড রক্ষা পায় নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের নিশ্চিত পানিশমেন্টের হাত থেকে। তবে সে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়।

    নিউইয়র্ক সিটি থেকে পোলার্ড তার স্ত্রী ও শিশুসহ চলে আসে লস অ্যাঞ্জেলেসে। আজকের এই বিশাল প্যাসিফিক ওশেন সিকিউরিটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠার পেছনে শতভাগ অবদান ক্লেরিকুজিও ফ্যামিলির। লস অ্যাঞ্জেলেসে আসার পর ক্লেরিকুজিও ফ্যামিলি তাকে এই প্রতিষ্ঠান তৈরির জন্য অর্থ সহযোগিতা দিয়েছিল– সহযোগিতা করেছিল পুঙ্খানুপুঙ্খ। সেই সাথে সাবধানও করে দিয়েছিল এই বলে যে, তার ক্লায়েন্টরা যেন তার সংস্থার লোকদের কাছে কখনো উৎপীড়নের শিকার না হয়। তাদের বাড়ি-ঘরে চৌৰ্য্য বৃত্তির ঘটনা যেন না ঘটে, সংস্থার কারণে তাদের ক্লায়েন্টরা যেন বিপদগ্রস্ত বা ফাঁদে না পড়ে। কোনো রকমের জুয়েলারি বা অর্থ আত্মসাতের ঘটনাও যাতে না ঘটে। নিরাপত্তাজনিত কারণে যদি ক্লায়েন্টের অগোচরে সেসব সরাতেও হয়, তবে তা যেন আবার ফিরিয়ে দেয়া হয়। ক্লেরিকুজিও ফ্যামিলির এমন সতর্কতামূলক শর্ত আরোপের কারণ— যে আর্মড রিসপন্স সাইন সংস্থা অপরাধীদের জন্য পেতে রাখবে, তাতে যেন তারা নিজেরাই আটকে না পড়ে। অর্থাৎ রক্ষক যদি ভক্ষক হয় তবে সংস্থাটির অঙ্কুরেই বিনাশ ঘটবে।

    ম্যাজিকের ছোঁয়ায় যেন সফলতা পেয়েছিল এন্ড্রিও পোলার্ড। ক্লেরিকুজিও’র শর্তের কখনো লঙ্ঘন হয়নি। ক্লায়েন্টদের নিরাপত্তা রক্ষা ছাড়া কখনো তাদের একটি জিনিসও স্পর্শ করেনি পোলার্ডের লোকরা। তার সংস্থার দেহরক্ষীরা এফবিআইয়ের মতো উন্নত ও অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তাই কোম্পানির বিরুদ্ধে কখনো কোনো বিরূপ মন্তব্যও করেনি কানো ক্লায়েন্ট। তার সদস্যদের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের কোনো নালিশ নেই, সে শিশুই হোক আর নারী। যা কিছু করেছে সংস্থা, শুধুমাত্র নিরাপত্তার জন্য। তবে ব্ল্যাকমেইল কিংবা গুপ্তচরবৃত্তির মতো কিছু অভিযোগ এসেছিল ক্লায়েন্টের কাছ থেকে সেসব যথাযথ শুরুত্বের সাথে পরখ করা হয়েছে–অপরাধীকে দেয়া হয়েছে শাস্তি। মোটের ওপর পোলার্ড ছিল সর্বদা নিষ্কণ্টক, পরিচ্ছন্ন।

    এদিকে পোলার্ডের কোম্পানির কাছে ছিল বিভিন্ন মানুষের দৈনন্দিন জীবনের বৃত্তান্ত। এগুলো কম্পিউটারের মাধ্যমে সংরক্ষিত ও নিয়ন্ত্রিত হতো। তবে তা সর্বদা গোপন রাখা হতো। কেবল একটি ক্ষেত্রে এসব সংরক্ষিত ডাটার গোপনীয়তা লঙ্ঘন হতো। আর সেটি ক্লেরিকুজিও’র ক্ষেত্রে। শুধুমাত্র ক্লেরিকুজিও’র কাছেই এসব ডাটা সরবরাহ করার নিয়ম ছিল। পোলার্ডের ক্লেরিকৃজিও ফ্যামিলির কাছে পোলার্ড ছিল অতিমাত্রায় কৃতজ্ঞ। যদি কেউ তার কাছে চাকরির জন্য আসত, পোলার্ড সরাসরি ক্লেরিকুজিও’র পশ্চিমাঞ্চলীয় ব্ৰুগলিওনের কাছে তাদের বৃত্তান্ত ও দরখাস্ত পাঠিয়ে দিত। সেখানকার অনুমোদনের পর শক্তিশালী অস্ত্রসহ তাদের নিয়োগ দেয়া হতো।

    একাডেমি অ্যাওয়ার্ডের পরদিন এন্ড্রিও পোলার্ডের ডাক পড়ল ববি বানজের অফিসে।

    বজ স্কানেটের চরিত্রের সব তথ্য উঘাটনের দায়িত্ব আমি তোমাকে দিতে চাই, বানজ পোলার্ডের উদ্দেশে বলল। আমি অ্যাথেনা অ্যাকুইটেনের ব্যাক গ্রাউন্ডও জানতে চাই। একজন বড় তারকা হিসেবে তার সম্পর্কে খুব সামান্য তথ্যই আমাদের কাছে আছে। আর বজ স্কানেটের সাথে একটি চুক্তির পরিকল্পনা করছি আমরা। আসলে আমরা চাই আগামী তিন থেকে ছয় মাস অ্যাথেনা আমাদের স্টুডিওর ছবিতে নির্বিঘ্নে কাজ করুক। এ সময়টায় যাতে স্কানেট অ্যাথেনার কাছ থেকে দূরে থাকে, সে চেষ্টাই চালাব আমরা তার সাথে চুক্তি করে। এর জন্য, প্রথমে প্রতি মাসে কুড়ি গ্রান্ডের অফার করবে, তবে তুমি সর্বোচ্চ একশ পর্যন্ত যেতে পারো।

    কিন্তু এর পরেও যদি সে কিছু চায়? কণ্ঠে সন্দেহের সুর তুলে বলল পোলার্ড।

    এর পরের বিষয়টি কর্তৃপক্ষের, বানজ বলল প্রতিউত্তরে। তোমাকে কিন্তু খুব সতর্ক থাকতে হবে এন্ড্রিও। অত্যন্ত ক্ষমতাবান পরিবারের লোক সে। মনে রেখো, মুভি ইন্ডাস্ট্রির ওপর যেন কোনো রকমের আঁচ না লাগে। তাহলে ছবি তো ধ্বংস হবেই, স্টুডিও-ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একটু থামল বানজ। এরপর বলল, আমরা অ্যাথেনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য তোমার সংস্থাকে ব্যবহার করতে চাই।

    পোলার্ডের পাল্টা প্রশ্ন, যদি স্কানেট তোমাদের সাথে চুক্তিতে সম্মত না হয়…?

    তাহলে অ্যাথেনার দিবা-রাত্রী নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকবে তোমার। ছবির কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তোমরা এ দায়িত্ব পালন করে যাবে। বলল বানজ।

    ঠিক আছে, আমি স্কানেটের ওপর খুব সামান্যই চাপ প্রয়োগ করব, পোলার্ড বলল। তবে অবশ্যই তা বৈধ উপায়েই। তাকে কোনো বিষয়ে উপদেশও দেব না।

    বানজ বলল, খুব উপরের স্তর পর্যন্ত তার যোগাযোগ আছে। পুলিশ বিভাগ তাকে একটু বাঁকা চোখেই দেখে। এমন কি জিম লুজিও তাকে ঘাঁটতে চায় না। তার মানে এই নয় যে, তুমি তার সাথে একেবারে ফুলের মতো আচরণ করো, কিন্তু…।

    পোলার্ড যা বোঝার বুঝে গেল। অর্থাৎ একজনকে ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে বেড়াতে হবে, অবশ্য এজন্য তার চাহিদার প্রতি নজরও দেয়া হবে।

    পোলার্ড বলল, আমার সেই চুক্তিটি প্রয়োজন।

    বানজ তার ডেস্কের ড্রয়ার খুলে একটি খাম বের করল। তারপর পোলার্ডের দিকে তাকিয়ে বলল, এখানে তিনটি কপি আছে। তাকে সবগুলোতে স্বাক্ষর করতে হবে। আর এর বিনিময়ে ডাউন-পেমেন্ট হিসেবে আছে পঞ্চাশ হাজার ডলারের একটি চেক। চুক্তির জন্য ডলারের পরিমাণ উন্মুক্তই রাখা হলো। শুধু সে চুক্তিতে সম্মত হলেই তুমি এই ফরমগুলো পূরণ করবে।

    পোলার্ড চুক্তিপত্রের খামটি নিয়ে চলে যেতে উদ্যত হলো। পিছু ডাকল বানজ, একাডেমি অ্যাওয়ার্ডের দিন তোমার লোকেরা নিষ্ক্রিয় ছিল। তারা তাদের অথর্ব পাগুলোর ওপর দাঁড়িয়ে ঘুমাচ্ছিল।

    পোলার্ড বানজের বিরোধিতা করল না। কারণ বানজকে সে চেনে ভালোভাবেই। শুধু বলল, তারা ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য নিযুক্ত গার্ড ছিল চিন্তা করো না, মিস অ্যাকুইটেনের জন্য আমি সর্বোচ্চ ক্রু নিয়োগ করব।

    মাত্র চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে প্যাসিফিক ওশেন সিকিউরিটির কম্পিউটারে বজ স্কানেটের সমস্ত তথ্য সংগ্রহ হয়ে গেল। স্কানেটের বয়স চৌত্রিশ বছর। টেক্সাস-এ অ্যান্ড এম থেকে গ্র্যাজুয়েট। সেখানকার অল-স্টার নামে একটি দলের পৃষ্ঠপোষক এবং একটিমাত্র মৌসুমে ফুটবলের প্রফেসনাল খেলোয়াড়। হাস্টনে তার বাবার রয়েছে একটি ব্যাংক। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, তার এক চাচা টেক্সাসে রিপাবলিকান দলের প্রধান। শুধু তাই নয়, প্রেসিডেন্টের সাথেও তার চাচার রয়েছে খুব আন্তরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। সব মিলিয়ে তারা অঢেল অর্থের মালিক।

    বাবার ব্যাংকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদবিপ্রাপ্ত হওয়ার সুবাদে তেল ইজারা বিষয়ক এক কেলেঙ্কারি থেকে অল্পের জন্য বেঁচে যায় স্কানেট। বিভিন্ন মার দাঙ্গা গুণ্ডামির জন্য তাকে এ পর্যন্ত ছয়বার অ্যারেস্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে একবার স্কানেট দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে এমনভাবে পিটিয়েছিল যে, শেষ পর্যন্ত তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। এসব ঘটনার জন্য তাকে কখনো আদালতে যেতে হয়নি। কারণ ঘটনার পর পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিয়ে তাদের পুষিয়ে দিয়েছে। তার ছয়টি গ্রেফতারের মধ্যে একটি ছিল যৌন নিপীড়নের ঘটনায় অভিযুক্ত।

    স্কানেটের এই উচ্ছল জীবন ছিল অ্যাথেনা অ্যাকুইটেনকে বিয়ে করার আগে। অ্যাথেনার সাথে বিয়ের পর এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়নি– অন্তত বিয়ের এক বছরে তাদের কন্যা সন্তান ব্যাথেনি জন্মের কয়েক মাস পর্যন্ত। অ্যাথেনা তার কুড়ি বছর বয়সে কন্যা সন্তান ব্যাথেনিকে নিয়ে স্কানেটের ঘর ছেড়ে চলে আসে।

    স্কানেট সম্পর্কিত এই তথ্যগুলো ছবির মতো স্পষ্ট হয়ে গেল এড়িও পোলার্ডের কাছে। খুব খারাপ মানুষ হিসেবেই চিহ্নিত হলো স্কানেট, পোলার্ডের চোখেও! পোলার্ডের দৃষ্টিতে স্কানেক্ট এমন একজন মানুষ যে দশ বছর ধরে অ্যাথেনার ওপর হিংসা-বিদ্বেষ মনে মনে পোষণ করে আসছে। এমনই এক মানুষ যে সশস্ত্র পুলিশকে মেরে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এই ধরনের মানুষকে ভীতি প্রদর্শন করে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ানোর সুযোগ একেবারে নেই বললেই চলে। তাকে অর্থ দিয়ে, চুক্তি সই করিয়ে দূরে সরিয়ে রাখা এতই কি সহজ?

    জিম লুজির শরনাপন্ন হলো পোলার্ড। লস অ্যাঞ্জেলেসে লুজি আগে স্কানেটের কেস নিয়ে কাজ করেছে। লুজি ও পোলার্ডের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ আছে যথেষ্ট, আর তাদের মধ্যে আছে সংশ্লিষ্ট কাজের সম্পর্ক। প্রত্যেক ক্রিসমাসে লুজি একটি হ্যান্ডসাম উপহার পেয়ে থাকে পোলার্ডের প্যাসিফিক ওশেন সিকিউরিটি থেকে। যেহেতু তারা একে-অপরের পরিপূরক, পোলার্ড সেই সম্পর্ককে কাজে লাগাতে চায়। স্কানেটের ওপর চলমান মামলা ও তার ব্যক্তিগত জীবনের আরো বিস্তারিত জানতে চায় পোলার্ড।

    জিমের উদ্দেশে পেপালার্ড বলল, বজ স্কানেটের বিস্তারিত তথ্য তুমি কি আমাকে দিতে পারবে? তার লস অ্যাঞ্জেলেসের ঠিকানাও আমার প্রয়োজন এবং আমি তার সম্পর্কে আরো জানতে চাই।

    অবশ্যই, লুজির প্রতিউত্তর। কিন্তু তার বিরুদ্ধে যে কোনো অভিযোগ অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়। তুমি কেন এ বিষয়ে এগুচ্ছ?

    প্রতিরক্ষার দায়িত্ব, পোলার্ডের বিস্মিত উত্তর, কি ভয়াবহ এই লোকটি?

    সে মারাত্মক ধরনের উচ্ছল, জিম বলল। তোমার দেহরক্ষীদের বলে দিও, সে কাছাকাছি এলেই যেন তারা গুলি ছুঁড়তে আরম্ভ করে।

    আর এই অপরাধে তুমি আমাকে অ্যারেস্ট করো আর কি? পোলার্ড রসিকতা করে বলল। এটা আইনবিরুদ্ধ কাজ।

    তা আমি ভালো করেই জানি, লুজিও হাসল। পারলে তা-ই করতাম। তবে তোমার সাথে একটু জোক করলাম আর কি।

    সান্তা মনিকায় একটি ছোটখাটো হোটেল ওশেন এভিনিউয়ে উঠেছে বজ স্কানেট। এটিই পোলার্ডের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ম্যালিবু কলোনিতে অ্যাথেনা অ্যাকুইটেনের বাড়ি থেকে ওশেন এভিনিউয়ে গাড়ি চালিয়ে আসতে লাগে মাত্র পনেরো মিনিট।

    স্কানেটের হোটেলে আসার আগে পোলার্ড অ্যাথেনার বাড়িতে চার জন গার্ডের একটি দল নিযুক্ত করল। আর স্কানেটের হোটেলে রাখল দুই জনের একটি দল। এরপর সেদিন বিকেলে স্কানেটের সাথে দেখা করতে গেল পোলার্ড।

    পোলার্ডের সাথে ছিল আকার-আকৃতিতে বড় ও প্রচণ্ড শক্তিশালী তিন জন রক্ষী। স্কানেট যেমন আকস্মিক পোলার্ডের আগমন হেতু বুঝতে পারেনি, তেমনি পোলার্ডও বুঝতে পারছিল না কি ঘটতে যাচ্ছে।

    স্কানেট তাদেরকে তার হোটেলের সুইটে নিয়ে গেল। মিষ্টি হেসে, বিনয়ের সাথে তাদের অভ্যর্থনা জানাল। কিন্তু তাদের আপ্যায়নের জন্য কোনো আগ্রহই দেখাল না সে। পোলার্ডের চোখে স্কানেটের পরিধেয় বেশ কৌতূহলের সৃষ্টি করেছিল। তার পরনে ছিল শার্ট, টাই এবং জ্যাকেট, মোটের ওপর যেন একজন ব্যাংকার। পোলার্ড নিজের এবং তার তিন দেহরক্ষীর পরিচয় দিল। দেহরক্ষীদের গলায় ঝুলছিল প্যাসিফিক ওশেন সিকিউরিটির আই.ডি.।

    স্কানেট পোলার্ডের দেহরক্ষীদের দিকে হাস্যকর ভঙ্গিতে তাকাল। তারপর বলল, তোমরা নিশ্চিতভাবেই বেশ বড়-সড়। তবে আমি একশটি ছাগল বিট রেখে বলতে পারি, যদি পক্ষপাতহীন লড়াই হয় তবে তোমাদের এক একজনকে কিক মেরে উড়িয়ে দেব।

    উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পোলার্ডের তিন দেহরক্ষী-ই শুধু মুচকি হেসে স্কানেটের কথা মেনে নিল। কিন্তু পোলার্ড বেশ শান্ত হয়ে স্কানেটের বিরোধিতা করল– নিয়ন্ত্রণ করল তার উত্তেজনা।

    আমরা এখানে বাণিজ্যিক কারণে এসেছি মি. স্কানেট। পোলার্ড বলল। হুমকির জন্য নয়। লডস্টোন স্টুডিও আপনাকে এই মুহূর্তে পঞ্চাশ হাজার ডলার ডাউন-পে করতে প্রস্তুত আছে, সেই সাথে আগামী আট মাস পর্যন্ত প্রতি মাসে কুড়ি হাজার ডলার। আর এসব এজন্য যে, আপনাকে লস অ্যাঞ্জেলেসে ছেড়ে যেতে হবে।

    কথাগুলো শেষ করেই পোলার্ড তার ব্রিফকেস থেকে চুক্তিপত্র এবং সবুজ সাদা রঙের একটি ঢাউস চেক স্কানেটের সামনে তুলে ধরল।

    স্কানেট চুক্তিপত্রটিতে মনোযোগর সাথে চোখ বুলাল। বলল, নগণ্য একটি চুক্তি। এর জন্য আমার আইনজীবীরও প্রয়োজন নেই। ডলারের পরিমাণটাও একই সাথে নগণ্য। আমি আশা করছি একশ গ্র্যান্ড ডাউন পেমেন্ট আর প্রতি মাসে পঞ্চাশ হাজার।

    অনেক হয়েছে, পোলার্ড বলল, আপনাকে দমিয়ে রাখার জন্য আমাদের কাছে আদালতের নির্দেশ আছে। অ্যাথেনার ইচ্ছে থাকলে আপনার জেলও হতে পারে। অ্যাথেনাকে ঘিরে চব্বিশ ঘণ্টা আমাদের প্রহরা থাকবে। সেই সাথে আপনার দৈনন্দিন যে কোনো কর্মকাণ্ডের সার্বক্ষণিক খবর রাখবে আমাদের বিশেষ নিরীক্ষণ দল। আর তাই, এই বরাদ্দকৃত অর্থই আপনার জন্য উপযুক্ত।

    স্কানেট বলল, আমার তো খুব শিগগিরই ক্যালিফোর্নিয়ায় আসা উচিত। এর সড়কগুলো সোনা দিয়ে মোড়ানো। তবে আমাকে আপনারা কেন এত কিছু দিতে চাচ্ছেন?

    স্টুডিও মিস অ্যাকুইটেনের নিশ্চয়তা চায়। পোলার্ডের প্রতিউত্তর।

    সে আসলেই একজন বড়… একজন স্টার, উদাস মনে হলো স্কানেটকে। একটু থেমে আবার বলল, ঠিক আছে, সে সব সময়ই স্পেশাল। এবার পরিবর্তন হলো স্কানেট। আবারো সেই উচ্ছলপনা উক্তিতে সে বলল, আমার মনে আছে আমি প্রতিদিন তার সাথে পাঁচ বার মিলিত হতাম।

    এবার তিন দেহরক্ষীর দিকে হাস্যকর দৃষ্টিতে তাকিয়ে স্কানেট বলল, সে এক্ষেত্রেও ছিল বেশ চালাক।

    বিস্মিত পোলার্ড কৌতূহলী দৃষ্টি হেনে তাকিয়ে থাকল স্কানেটের দিকে। যথেষ্ট হ্যান্ডসাম এবং মালবোরো সিগারেটের বিজ্ঞাপন মডেলের মতো তার শরীর। মার্লবোরো মডেলের সাথে তার পার্থক্য কেবল শরীরের রঙে। স্কানেটের ত্বক লালচে এবং উজ্জ্বল। মদপায়ী এবং বিশাল বপুর অধিকারী।

    দক্ষিণাদের মতো স্কানেট টেনে টেনে খুব প্রাণবন্ত স্বরে কথা বলে– বিষয়টি একদিকে যেমন মানবীয় অন্যদিকে তেমনই বিপজ্জনক। বহু নারীই এমন মানুষের প্রেমে পড়ে যায়। নিউইয়র্কে অবশ্য স্কানেটের মতো দেখতে বেশ কিছু পুলিশ আছে, যাদেরকে দস্যু হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে। কোনো খুনের মামলায় যদি তাদের তদন্তের জন্য পাঠানো হয়, তবে এক সপ্তাহের মধ্যেই তারা স্বামীহারা নারীদের সান্তনা দিয়ে ফিরে আসত। জিম লুজিও এমনই এক কর্মকর্তা। পোলার্ডের অক্ষেপ যে, সে তাদের মতো ভাগ্যবান নয়।

    আসুন আমরা আমাদের প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করি। পোলার্ড বলল। স্কানেটকে দিয়ে এই চুক্তি স্বাক্ষরই পোলার্ডের মূল উদ্দেশ্য। পোলার্ড চেকটি তার সামনে রাখল।

    স্কানেট টেবিলের এক কোনায় বসে ছিল। আপনার কাছে কি একটি কলম ধার পেতে পারি?

    পোলার্ড তার ব্রিফকেস থেকে কলম বের করে চুক্তিপত্রে প্রতি মাসে কুড়ি হাজার সংখ্যাটি লিখে ফেলল। এরপর স্কানেট উল্লসিত হয়ে বলল, এর মানে। আশি আরো বেশি পেতে পারি। চুক্তিপত্রের তিনটি কপিতেই স্বাক্ষর করল স্কানেট।

    বলল, আমাকে ঠিক কখন লস অ্যাঞ্জেলেস ছাড়তে হবে?

    আজ রাতেই, পোলার্ড জানিয়ে দিল। আমি আপনাকে আপনার প্লেন ধরিয়ে দেব।

    না তার আর দরকার হবে না, ধন্যবাদ। স্কানেটের অস্বীকার। আমি ভাবছি আমি নিজেই ড্রাইভ করে লস অ্যাঞ্জেলেসে চলে যাব। আর এই চেক দিয়ে জুয়ার দান মারব।

    পোলার্ড বলল, তা আমার লক্ষ্য থাকবে। কিন্তু এখন তার মনে হলো স্কানেটকে তার শক্তি ও প্রভাব দেখানোর প্রয়োজন। পোলার্ড সতর্ক করে দিল, আমি আপনাকে সতর্ক করে দিতে চাই, লস অ্যাঞ্জেলেসে যদি আপনাকে কখনো দেখা যায় তবে অবশ্যই অ্যারেস্ট করা হবে এবং টাকা আদায় করা হবে।

    স্কানেটের লাল মুখ উচ্ছলিত হয়ে উঠল। বলল, আমি সেটাই পছন্দ করব। আমিও অ্যাথেনার মতো বিখ্যাত হতে চাই।

    সেই রাতে পোলার্ডের নিরীক্ষণ দল রিপোর্ট করল–বজ স্কানেট ওশেন এভিনিউ ছাড়লেও বেভারলি হিলস হোটেলে গিয়ে উঠেছিল। সেখানে সে পঞ্চাশ হাজার ডলারের চেকটি দি ব্যাংক অব আমেরিকার একটি অ্যাকাউন্টে ডিপোজিট করেছে। এই রিপোর্টের মাধ্যমে পোলার্ড নিশ্চিত হলো যে, স্কানেটের ওপর কিছুটা হলেও তার প্রভাব পড়েছে।

    পোলার্ড এই তথ্যগুলো রিপোর্ট আকারে ববি বানজের কাছে পাঠাল এবং পরবর্তী নির্দেশনার আহ্বান জানাল। এ বিষয়ে আর কোনো উচ্চবাচ্য না করার নির্দেশ দিল বানজ। এরপর স্কানেটের স্বাক্ষরিত চুক্তিপত্রটি অ্যাথেনার কাছে পাঠানো হলো। স্টুডিওতে আবারো অ্যাথেনার ফিরে আসার নিশ্চয়তা দিতে যে এমন কৌশলের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তা বোঝাতেই এই চুক্তিপত্রের প্রদর্শন। কিন্তু চুক্তিপত্রটি দেখে যে অ্যাথেনা হেসেছিল তা বানজ ও পোলার্ড কেউ বুঝেনি।

    পোলার্ড বলল, তুমি চেকটি বাতিল করে ফেলতে পারো।

    না, বানজের নেতিবাচক জবাব। সে ক্যাশ ভাঙবে আর সাথে সাথেই আমরা তাকে জালিয়াতির মামলায় ফাঁসিয়ে দেব। আমি শুধু চাই অ্যাথেনা যেন না জানুক যে স্কানেট এ শহরেই আছে।

    অ্যাথেনার জন্য আমি ডাবল-সিকিউরিটি বসাব। পোলার্ড বলল। যদি সে উচ্ছল হয়ে ওঠে এবং সত্যিই যদি তার ক্ষতি করতে চায়, তবে কোনোভাবেই তাকে আটকানো যাবে না।

    স্কানেট একজন প্রতারক। বানজ বলল, তার এমন ঘটনা প্রথম নয়। এত কিছুর পরেও সে এই প্রতারণা করল কেন?

    আমি তোমাকে বলছি কেন। পোলার্ড বলল। আমরা তার কক্ষে চুপিসারে ঢুকে তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি। জানো কি পেয়েছি। একটি কন্টেইনার ভর্তি অ্যাসিড।

    ওহ শিট, বানজ প্রায় আঁৎকে উঠল। বলল, বিষয়টি কি পুলিশকে জানানো যায় না? অন্তত জিম লুজিকে তো জানানো যায়।

    পোলার্ড বলল, এসিড রাখা আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ নয়। বরং চুপিসারে তার কক্ষে প্রবেশটাই অপরাধের বিষয়টি প্রকাশ পেলে স্কানেট আমাকে জেলের ভাত খাইয়ে ছাড়বে।

    তুমি কখনো কিছু বলেনি আমাকে, বনজ উদ্বিগ্ন হয়ে উঠল। আমরা কখনো এসব আলোচনা করিনি এবং তুমি যা জানো, সব ভুলে যাও।

    অবশ্যই, মি, বানজ পোলার্ড আশ্বাস দিল। এবং, আমি এর জন্য তোমার কাছে কোনো বিলও দাখিল করিনি।

    অসংখ্য ধন্যবাদ, যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল বানজ। তবে আমার সাথেই থেকো দয়া করে।

    স্কিপি ডিরির কাছ থেকে ক্লডিয়া ধারণা নিচ্ছিল। ছবিতে প্রযোজক ও লেখকের পাণ্ডুলিপি থেকে পরিচালক যেমন নিখুঁত অভিনয়ের জন্য দৃশ্যপট বুঝিয়ে দেয় ক্লডিয়াকে ঠিক সেভাবেই নির্দেশনা দিচ্ছিল ডিরি।

    ডিরি বলল, অ্যাথেনাকে খুব আন্তরিকভাবে তোমার চুমু দিতে হবে। তুমি হবে তার কাছে একেবারেই নত। প্রয়োজনে তোমাকে কাঁদতে হবে, তুমি নার্ভাস হয়ে ভেঙে পড়বে। তুমি তার জন্য যা করেছ তা মনে করিয়ে দেবে। মনে করিয়ে দেবে তুমি তার কত অন্তরঙ্গ একজন সত্যিকারের বন্ধু এবং একই পেশার কর্মী। তোমাকে এ ছবির জন্য অ্যাথেনাকে ফিরিয়ে আনতেই হবে।

    ক্লডিয়া স্কিপিকে প্রশ্ন করল, কিন্তু এর জন্য আমাকেই কেন? শান্ত ও প্রশ্রয়ের কণ্ঠে আরো বলল, তুমি হচ্ছ একজন প্রযোজক, ডিটা একজন পরিচালক, লডস্টোনের প্রেসিডেন্ট বানজ– তোমরা তাকেচুমু দাও গিয়ে। এসব ক্ষেত্রে আমার চেয়ে তোমরা ঢের বেশি অভিজ্ঞ।

    তুমি যাবে কারণ লেখাটা তুমি এমনভাবে লিখেছ যে, অ্যাথেনা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। বলল ডিরি, এই চিত্রনাট্যের জন্য তুমি নিয়েছ আমাকে, নিয়েছ অ্যাথেনাকে। এ অবস্থায় যদি প্রজেক্টটি ব্যর্থ হয় তবে সেই ব্যর্থতার সাথে সর্বদা তোমার নামও উঠে আসবে।

    ডিরি চলে গেল কিন্তু তার কথাগুলো বেজেই চলেছিল ক্লডিয়ার মস্তিষ্কে। ক্লডিয়া জানে ডিরির কথাগুলোই ঠিক। তবে এলোমেলো বেপরোয়া হয়ে উঠছিল যেন তার মন। এমন অবস্থায়, সে প্রায়ই যা-কবে তাই করল ক্লডিয়ার ভাই ক্রসের কথা ভাবল। ক্রসই হচ্ছে একমাত্র লোক যে তাকে এমন সমস্যার সমাধান দিতে পারে। অ্যাথেনার প্রতি বজের এই আক্রমণাত্মক মনোভাব দূর করতে প্রয়োজন কেবল ক্রসের সহযোগিতা এতটাই বিশ্বাস ক্লডিয়ার তার ভাইয়ের প্রতি।

    অ্যাথেনার সাথে সম্পর্ককে বাণিজ্যিক করে ভোলাটা ক্লডিয়া কোন মতেই মেনে নিতে পারছে না– ঘৃণার চোখে দেখছে সে। তাছাড়া অ্যাথেনা তাকে নাকচ করে দিতে পারে। কিন্তু ক্রস তাকে সাহায্য করতে অবশ্যই এগিয়ে আসবে– সে বিশ্বাস ক্লডিয়ার আছে।

    ক্লডিয়া ভেগাসে জানাদু হোটেলে ফোন করল। তবে সে সেখান থেকে জানতে পারল ক্রস সম্ভবত কুওগে রয়েছে। পরের দিন হয়তো সে ফিরে আসবে।

    জানাদু হোটেলে থেকে এই ব্যর্থতার পর তার মনের পর্দায় ভেসে উঠল সেই শিশুকাল। অথচ সবসময় ক্লডিয়া তা ভুলে থাকতে চায়। কুওগে ক্লডিয়া কখনোই তার ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করত না। ক্লেরিকুজিও পরিবারের সাথে কোনোরকম স্বেচ্ছাসেবী কর্মকর্মেও সে নিজেকে জড়াতে চায় না। এমনকি কুওগে তার ছেলেবেলার স্মৃতিটুকুও মুছে ফেলতে চায়। কখনোই মনে করতে চায় না তার বাবার কথা অথবা কোনো ক্লেরিকুজিও’র কথা।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleফিজিকস অব দ্য ইমপসিবল – মিচিও কাকু
    Next Article কায়াহীনের কাহিনী – মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }