Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025

    ওডিসি – হোমার

    October 13, 2025

    প্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    October 13, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    নিঃসঙ্গ পাইন – জাহানারা ইমাম

    জাহানারা ইমাম এক পাতা গল্প110 Mins Read0

    নিঃসঙ্গ পাইন – ৪

    ৪

    ঈদের দিন সকালে সাকিনার সঙ্গে রকিবের আবার একটু মতান্তর হয়ে গেল। দশটায় জামাত। বাসা থেকে সবাই বেরোবে নয়টায়। কাছেই মসজিদ কিন্তু তাড়াতাড়ি না গেলে ভেতরে জায়গা পাওয়া যাবে না। সবাই খুব সকালে উঠেছে। সাকিনা সাতটাতেই খোঁপা বাঁধতে বসেছে। বেশ কারুকার্যময় খোঁপা, ঢাকায় থাকাকালীন বেশ কষ্ট করে শিখেছে। রকিব বাথরুম থেকে এসেই বলে উঠল—’এই খোঁপা বেঁধো না, খোঁপা বেঁধো না। চুলটা ছেড়ে রাখ, খুব চমৎকার লাগবে।’

    ‘দুর, নামাজে চুল খুলে যাওয়া যায় নাকি? তাছাড়া চুল ছেড়ে বাইরে কোথাও যাওয়াটা তো অভব্যতা

    কে বলেছে তোমায়? এদেশে সবাই বেশিরভাগ সময় চুল ছেড়েই রাখে। তা ছাড়া তোমায় যা লম্বা চুল, ছেড়ে রাখলে যা মানাবে না! সবার মুণ্ডু ঘুরে যাবে।’

    সাকিনা চোখ পাকিয়ে বলল, ‘আবার এদেশের কথা? তাছাড়া মাথায় কাপড় দিয়ে নামাজ পড়ার সময় খোলাচুল সামলাবো কী করে?’ বলে সাকিনা আবার খোঁপা বাঁধার কাজে দুইহাত মাথার পেছনে তুলল।

    রকিব গলায় জেদ এনে বলল, ‘না, তুমি খোঁপা বাঁধতে পারবে না। চুল ছেড়েই যাবে।’

    সাকিনার ভ্রূ কুঁচকে গেল, ‘কী আযাইরা জেদ করছ? কোথায় কিভাবে ড্রেস করে যেতে হবে, তার একটা মাপকাঠি আছে না? পার্টির দিনে নাহয় চুল ছেড়ে রাখব।’

    ঈদটা বৃহস্পতিবারে পড়েছে উইক-ডে-তে। এদেশে ঈদের ছুটি নেই। যারা নামাজ পড়তে চায় তারা সবাই নামাজের জন্য ছুটি নিয়েছে। কিন্তু ঈদের ভোজটা হবে উইক-এন্ডে, শনিবার রাতে।

    রকিব হঠাৎ রেগে গেল, ‘তুমি দেখছি সব ব্যাপারেই আমার সঙ্গে টক্কর দিচ্ছ। আমি ভালো মনে যা-ই বলছি, তুমি তার উলটো করছ। আমি বলছি চুল ছেড়ে গেলে মোটেও খারাপ দেখাবে না, তবু তুমি জেদ করে এঁড়ে তর্ক তুলছ।’

    সাকিনাও রেগে বলে উঠল, ‘আমার ভীষণ অপছন্দ নামাজে চুল ছেড়ে যাওয়া। আমি চুল বেঁধেই যাব।’

    ‘না, তুমি চুল ছেড়ে যাবে।’

    ‘তাহলে আমি যাবই না।’

    রকিবের দুইচোখ ধকধক করে উঠল—‘তুমি অবশ্যই যাবে এবং চুল ছেড়েই যাবে।’

    রকিবের দিকে তাকিয়ে সাকিনা হঠাৎ যেন জমে গেল। বিস্ফারিত চোখে খানিকক্ষণ তাকিয়ে থেকে হঠাৎ উঠে বিছানায় আছড়ে উপুড় হয়ে পড়ল, হু হু করে কাঁদতে লাগল।

    ‘ভাবী, আর ইউ ডান?’ বলতে বলতে রকিবের চাচাত বোন সীমা ঘরের কাছে এসে ব্যাপার দেখে হঠাৎ মাম্মি, মাম্মি বলে ছুটে চলে গেল। আর একমিনিটের মধ্যে চাচী, চাচা, সীমা, সীমার ভাই রবিন— সবাই এসে হাজির। চাচা এসেই রকিবকে এক ধমক লাগালেন, চাচী-সীমা সাকিনার দুপাশে বিছানায় বসে তাকে সান্ত্বনা দিতে লাগলেন। চাচা রকিবকে কাঁধের কাছে ধরে ঘরের বাইরে নিয়ে চাপা গলায় বকে উঠলেন, ‘কিরে, অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে শেষরক্ষা হয়েছে, তুই সেটা নষ্ট করে দিতে চাস? খবরদার বউমার ওপর এত সরদারি করবি না। ভালো ঘরের নম্র স্বভাবের মেয়ে, কোথায় তাকে নিয়ে শান্তিতে সংসার করবি, তা না—’

    রকিব বলতে গেল, ‘চাচা আমি তো বেশি কিছু বলিনি–’

    ‘কী বলেছিস আর কী বলিসনি তা আমার জানার দরকার নেই। তোর জন্য অনেক ঝামেলা সয়েছি, আর নয়। মনে রাখিস, আই ক্যান স্টিল রুইন ইয়োর ক্যারিয়ার। অত ভালো মেয়েটাকে যদি কষ্ট দিস, তোকে তাহলে ছাড়ব না। এখন যা মাপ চেয়ে, মান ভাঙিয়ে তৈরি করে নে। আজ আর ভেতরে জায়গা পাব বলে মনে হয় না

    রকিবকে আর কষ্ট করতে হল না। দেখা গেল ইতিমধ্যেই সাকিনা বিছানা থেকে উঠে আবার ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসেছে আর স্বয়ং চাচী তার চুল বেণি করে দিচ্ছেন। ‘এখন আর সময় নেই বেশি, শুধু বেনি করেই চলো বউমা। পার্টির দিন তোমার পছন্দমতো খোঁপা বেঁধো।’

    সবাই খুব তাড়াহুড়ো করে তৈরি হয়ে বেরিয়েও দেখা গেল মসজিদের ভেতরটা ও বাইরের বারান্দা লোকজনে ভরে গেছে। বারান্দার পরেও লনে বড়বড় সতরঞ্জি বিছানো হয়েছে। মেয়েদের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা অবশ্য ভেতরেই, আলাদা একটা পাশে।

    চাচী আর সাকিনার হাতে বড়বড় দুটো ডিশভর্তি সেমাইয়ের জর্দা। বাড়ি থেকে বানিয়ে নিয়ে এসেছেন। ওঁরা গাড়ি থেকে নেমে প্রথমে লনের পেছনদিকে গেলেন। সেখানে বড়বড় টেবিলে সেমাই, জর্দা, ফিরনির বড়বড় ডিশ একে-একে জমা হচ্ছে। প্রতিটি পরিবারই কিছু-না-কিছু নিয়ে এসেছেন। আগে থেকে ঠিক করে দেয়া হয়েছে- কে কী নিয়ে আসবেন। নামাজ শুরু হতে এখনো কিছুটা দেরি আছে। কয়েকজন মহিলা বিরাট কাচের গামলায় ফ্রুট-জুস ঢালছেন। অন্য দুজন পলিথিন ব্যাগ থেকে বের করছেন গাদাগাদা কাগজের প্লেট আর গ্লাস।

    মসজিদে নামাজ পড়া সাকিনার জীবনে এই প্রথম। খুব ভালো রাগছিল তার। কত যে মহিলা এসেছেন, তার চেয়েও বেশি এসেছে বাচ্চা।

    একটু পরে নামাজের সময় হল। মায়েরা বাচ্চাদের হাত ধরে মসজিদের ভেতরে তাঁদের সংরক্ষিত জায়গার দিকে চলে গেলেন। পুরুষরা যাঁরা দেরি করে এসেছিলেন, তাঁরা লনে বিছানো সতরঞ্জির ওপর দাঁড়ালেন।

    নামাজের সময় আলাদা পড়লেও খাবার সময় মেয়ে-পুরুষ সবাই একত্রে মিলিত হলেন খাবারটেবিল ঘিরে। কখনো রকিব, কখনো চাচী— বাঙালি অনেকের সঙ্গে সাকিনার পরিচয় করিয়ে দিলেন। খুব ভালো লাগছিল সাকিনার। প্রায় দেশের-বাড়ির ঈদের মতোই। পরিবেশ ভিন্ন কিন্তু এত লোকজনের মেলামেশা, ছোট ছেলেমেয়েদের দৌড়োদৌড়ি, পরিচিত সেমাই ফিরনি—এসবে দেশের গন্ধ পাচ্ছিল সে। যদিও সমাগত লোকজনের মধ্যে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই পাকিস্তান, আরব, ইরাক, ইরান, মিশর, লেবাননের অধিবাসী — তবুও।

    একটি মেয়ে খাবারের প্লেট হাতে ঘুরতে ঘুরতে এসে সাকিনার পাশে দাঁড়াল, একটু আগেই এর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সাকিল নামটা মনে করতে পারল না। মেয়েটি সেটা বুঝে হেসে বলল, ‘আমার নাম ইয়াসমীন, বাবা-মা সঙ্গে এদেশে আছি পনের বছর। ঐ যে আমার মা’ বলে ইয়াসমীন ডাক দিল ‘মা মা শুনে যাও, এই যে ইনি রকিব ভাইয়ের বউ।’

    ‘তাই নাকি? বাহ্ ভারি সুন্দর বউতো। রকিবের কপাল বটে।’ অনেক ভারী গহনা আর ভারী জরির কাজ-করা ঝলমলে শাড়ি পরিহিতা ইয়াসমীনের মা এসে খুঁটিয়ে সাকিনাকে দেখতে লাগলেন। সাকিনা একটু অস্বস্তি বোধ করতে লাগল। ইয়াসমীন ব্যাপারটা বুঝে ‘চলুন আপনাকে ওদিকে আরো অনেকের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিই’ বলে হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল।

    ইয়াসমীন মেয়েটিকে সাকিনার খুব ভালো লেগে গেল। লম্বা, একহারা গড়ন, ফরসা রং, সোনালি চুল অথচ শাড়ি পরে আছে; বাংলা বলার অ্যাকসেন্টও তো খাঁটি বাঙালি, মা-টিও হুবহু বাঙালি রমণী- তাহলে ওর সোনালি চুল, অতিরিক্ত ফরসা রঙ? মেয়েটি যেন অন্যের মনের কথা পড়তে পারে, হেসে বলল, ‘পিগমেন্টের অভাব। ঢাকায় দেখেননি—কোনো কোনো ছেলেমেয়ের চুল সোনালি, গায়ের রঙ অতিরিক্ত সাদা?’ সাকিনা ঘাড় নেড়ে স্বীকার করল, দেখেছে।

    ইয়াসমীন তাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে ঘুরে অনেকের সঙ্গে আলাপ করাল। নিজেও নানা বিষয়ে তার সঙ্গে গল্প করতে লাগল। বলল ৭১ সনে কিভাবে তার বাবা-মা তাদের চার বোনকে নিয়ে করাচী থেকে প্রথমে লন্ডনে আসে, তারপর এখানে এসে অনেক কষ্ট করে একটা ট্রাভেল-এজেন্সির ব্যবসা গড়ে তুলেছে। এখন তারা সবাই মোটামুটি নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে গেছে। ইয়াসমীন লেখাপড়া শেষ করে বাবার ট্র্যাভেল এজেন্সিতে যোগ দিয়েছে। ‘আমাদের কোনো ভাই নেই তো। আমি তাই বাবার বড় ছেলে’ বলে মুক্তোর মতো দাঁত বের করে হাসল।

    ইয়াসমীনের হাসিটা বড় সুন্দর। এই অল্প দশ-পনের মিনিটের মধ্যেই সাকিনা তাকে প্রিয়সখী বানিয়ে ফেলল মনে মনে। এখানে আসার পর এই প্রথম সে একটি মেয়ের দেখা পেল—যে তার সমবয়সী, যে অনর্গল বাংলাতেই কথা বলল এতক্ষণ, যার সঙ্গে সেও প্রাণ খুলে বাংলায় কথা বলতে পারল। এই প্রথম উপলব্ধি করল এতদিন বাংলায় কথা বলে তার তৃপ্তি হয়নি। চাচী মুরুব্বি মানুষ, এমনিতেও কথা কম বলেন। সীমা, রবিন একেবারে শিশু বয়স থেকে এদেশে মানুষ হবার ফলে বাংলার চেয়ে ইংরেজিই বলে বেশি। রকিবের সঙ্গে প্রাণ খুলে কথা বলাটা ঠিক হয়ে ওঠেনি, তার সঙ্গে অর্থহীন কলকূজনের সঙ্গে প্রণয়লীলাতেই সময় কেটেছে বেশি। কথা যা হয়েছে তা বেশির ভাগ হয় সংসারের কথাবার্তা, নয় রকিবের মাস্টারি।

    ওরা দুজনে ভিড় থেকে সরে গিয়ে একটু দূরে আলাদা দাঁড়িয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলছিল। ইয়াসমীন নিজের সম্বন্ধে এত কথা বলার পর সাকিনাও অসংকোচে তার কথা বলছিল ইয়াসমীনকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়ছিল হলে থেকে। রোকেয়া হল, বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গন কেমন, কেমন করে তার বিয়ে হয়ে অনার্স পরীক্ষা না-দিয়েই এদেশে এসেছে—এই সব। ইয়াসমীন কখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েনি, রোকেয়া হলে থাকেনি, কারণ তার বাবা পিআইএ-তে চাকরি করতেন এবং তাদের ছোটবেলাটা করাচীতেই কেটেছে। ইয়াসমীন খুব মনোযোগ দিয়ে সাকিনার ক্যাম্পাস-জীবনের কথা শুনছিল। এমন সময় রকিব সেখানে এসে হাজির। ‘আরে তুমি এখানে? তোমাকে সারা দুনিয়া খুঁজে এলাম!’ ইয়াসমীনের দিকে তাকিয়ে একটু কাষ্ঠহাসি হাসল, ‘হ্যালো ইয়াসমীন, কেমন আছ? বহুদিন দেখা নেই।

    ‘হ্যাঁ, এখন তো দুজনের রাস্তা আলাদা, তাই দেখা হয় না।’

    ‘সাকী এবার বাড়ি ফিরতে হবে। চাচী যেতে বলেছেন। বাসায় অনেক কাজ পড়ে আছে। চল। আচ্ছা ইয়াসমীন, গুড বাই।’

    ইয়াসমীন মিষ্টি হেসে ‘বাই’ বলে মেয়েদের ভিড়ের দিকে চলে গেল।

    গাড়িতে ওঠা পর্যন্ত রকিব কোনো কথা বলল না, বিভিন্নজনের কাছ থেকে হাসিমুখে বিদায় নিতে লাগল। গাড়ি চলামাত্র তার মুখভাব বদলে গেল, চিবিয়ে বলল, ‘ওই মেয়েটার সঙ্গে এত ভাব কখন হল?’

    সাকিনা একটু চমকে গেল, ‘কী ব্যাপার? অমন করে বলছ কেন? এখানেই তো আলাপ হল!’

    রকিব রূঢ়কণ্ঠে বলল, ‘মেয়েটা সুবিধের না। ওর সঙ্গে মিশবে না। ‘

    সাকিনা আহতস্বরে বলল, ‘আমার মেশা না-মেশার সুযোগ কোথায়? যেখানে নিয়ে যাও, সেখানে ছাড়া নি-ে নিজে কোথাও যাবার উপায় আছে যে মিশতে বারণ করছ? কিন্তু ব্যাপারটা কী? মেয়েটা তো ভারি চমৎকার–-’

    ‘হ্যাঁ, প্রথমে অমনি চমৎকারই লাগে। তারপর স্বরূপ বেরোয়।’

    মসজিদে প্রাঙ্গণের ভালো-লাগাটুকু উড়ে গিয়ে সাকিনার আবার খারাপ লাগতে শুরু করল। রকিবের হয়েছেটা কী? কদিন থেকেই ও এ-রকম করছে। ক্ষণে ভালো মেজাজ, ক্ষণে রেগে টং। সকালে চাচী আর সীমা তাকে সান্ত্বনা দিতে এলে রকিবকে চাচা ঘরের বাইরে টেনে নিয়ে রাগ-রাগ গলায় কী যেন সব বকাবকি করছিলেন। সাকিনা কথা বুঝতে পারেনি, কিন্তু চাচার ক্রুদ্ধ কণ্ঠস্বর তার কানে এসেছে। চাচা অত রেগে গেলেন কেন? সীমাই বা অমন ত্রস্ত হয়ে ছুটে মাকে ডাকল কেন, চাচীই অমন করে ছুটে এলেন কেন? স্বামী-স্ত্রীর মন কষাকষিকে তাঁরা সবাই যেন একটু বেশি গুরুত্ব দিয়ে নিজেরা ছুটে এসেছেন। কেন? এর মধ্যে কি কোনো রহস্য আছে? এখন আবার রকিবের এইরকম ব্যবহার। ইয়াসমীন মেয়েটাও কিন্তু বলেছিল, এখন দুজনের রাস্তা আলাদা বলে দেখা হয় না। এ কথার অর্থ কী? সাকিনার মাথাটা কেমন যেন ঘুরতে লাগল, বুকটা খালি মনে হচ্ছে, পেটের মধ্যে যেন মোচড় দিচ্ছে। সে সীটের পেছনে মাথা হেলিয়ে চোখ বুজল। রকিব হঠাৎ চকিত হয়ে নিজেকে সামলে নিল। স্বরে মমতা আর উদ্বেগ এনে বলে উঠল, ‘কি মনি? খারাপ লাগছে? কী রকম লাগছে? গাড়ি থামাব?’

    পেটের ওপর দুই-হাত রেখে সাকিনা চোখ বন্ধ অবস্থাতেই মাথা নাড়ল। রকিব আরো ব্যস্ত হয়ে পড়ল, ‘পেটে ব্যথা করছে? হ্যাং অন সোনা, এক্ষুনি বাড়ি পৌঁছে যাব। খুব বেশি ব্যথা? এখন তো ব্যথা হবার কথা নয়। এখন তো মোটে ছয় মাস—’

    সাকিনা হেসে ফেলল, চোখ খুলে রকিবের দিকে মুখ ফিরিয়ে বলল, ‘পেটে এমনি হাত বোলাচ্ছিলাম বুদ্ধ, ব্যথা হতে যাবে কেন খামোখা? শুধু শুধু সীন করো!’

    রকিবও হেসে দিল। মেঘটুকু উড়ে গেল এই হাসির ঝাপটায়।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleসাতটি তারার ঝিকিমিকি – জাহানারা ইমাম
    Next Article একাত্তরের দিনগুলি – জাহানারা ইমাম

    Related Articles

    জাহানারা ইমাম

    একাত্তরের দিনগুলি – জাহানারা ইমাম

    August 13, 2025
    জাহানারা ইমাম

    সাতটি তারার ঝিকিমিকি – জাহানারা ইমাম

    August 12, 2025
    জাহানারা ইমাম

    বুকের ভিতর আগুন – জাহানারা ইমাম

    August 12, 2025
    জাহানারা ইমাম

    বিদায় দে মা ঘুরে আসি – জাহানারা ইমাম

    August 12, 2025
    জাহানারা ইমাম

    বীর শ্রেষ্ঠ – জাহানারা ইমাম

    August 12, 2025
    জাহানারা ইমাম

    নয় এ মধুর খেলা – জাহানারা ইমাম

    August 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    Our Picks

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025

    ওডিসি – হোমার

    October 13, 2025

    প্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    October 13, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }