Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025

    আরব জাতির ইতিহাস – ফিলিপ কে. হিট্টি (অনুবাদ : প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ)

    September 22, 2025

    নিউ মুন – স্টেফিন মেয়ার

    September 22, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    নিউ মুন – স্টেফিন মেয়ার

    প্রিন্স আশরাফ এক পাতা গল্প645 Mins Read0

    ০৭. এই জঘন্য ব্যাপারটা

    ০৭.

    এই জঘন্য ব্যাপারটা যে কি সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। আমি এখানে কি করছি।

    আমি কি আবার নিজেকে জম্বির হতচেতন অবস্থার মধ্যে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছি? আমি কি আবার নির্যাতনকে উস্কে দিচ্ছি? আমার এখনই সোজা লা পুশে যাওয়া উচিত। আমি জ্যাকবের আশেপাশে খুবই স্বস্তিবোধ করি। এটা যদিও কোন স্বাস্থ্যকর ব্যাপার নয়।

    কিন্তু আমি লেনের মধ্য দিয়ে চালিয়ে যেতে থাকলাম। গাছগুলোর ভেতর দিয়ে। গাছগুলো ঝুঁকে পড়ে একটা ট্যানেলের সৃষ্টি করেছে। আমার হাত কাঁপছিল। সুতরাং আমি স্টিয়ারিং হুইলে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে ছিলাম।

    আমি জানতাম দুঃস্বপ্নের কারণে আমার এমনটি হচ্ছে। এখন আমি সত্যিকারের জাগ্রত। এই স্বপ্নটা আমাকে দুর্বল করতে পারবে না।

    সেখানে খোঁজ করার জন্য কিছু একটা ছিল। অমনোযোগী এবং অসম্ভব। বিছিন্ন। কিন্তু সে সেখানের বাইরে ছিল। অন্য কোথাও। আমি সেটা বিশ্বাস করি।

    অন্য অংশটা হলো পুনারাবৃত্তির সেই অদ্ভুত সেন্স। যেটা আমি আজ স্কুলে অনুভব করেছিলাম। আজকের তারিখটার কাকতালীয় ব্যাপার নিয়ে। অনুভূতিটা ছিল আমি আবার শুরু করতে যাচ্ছি। সম্ভবত সেই পথে আমার প্রথম দিন যেভাবে চলে গিয়েছিল। ক্যাফেটেরিয়ায় সেই বিকালে আমি সত্যিই সবচেয়ে অসম্ভব মানুষ ছিলাম।

    শব্দগুলো একঘেয়ে স্বরে আমার মাথার ভেতর ঘুরপাক খাচ্ছিল। যেন আমি সেগুলো শোনার পরিবর্তে পড়ছিলাম।

    এটা এমন হবে যেন আমার কখনও অস্তিত্ব ছিল না।

    আমি নিজের সাথে মিথ্যে বলছিলাম। কারণগুলো খণ্ড বিখণ্ড করে দিয়ে যেটা দুইভাগে আসছিল। আমি সবচেয়ে শক্তিশালী মোটিভেশন প্রবেশ করাতে চাইছিলাম না। কারণ এটা মানসিকভাবে অদৃশ্য।

    সত্যটা হলো আমি তার কণ্ঠস্বর আবার শুনতে চাইছিলাম। যেমনটি শুক্রবার রাতে আমার একটা শক্তিশালী মতিভ্রম হয়েছিল। সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য তার কণ্ঠস্বর আমার অন্যান্য অংশ হতে এসেছিল। যখন তার কণ্ঠস্বর নিশ্চিত সুপষ্ট এবং মধুর, শ্রুতিধর আমার স্মৃতিতে যেটা আছে তার চেয়েও। আমি সেটা কোনরকম যন্ত্রণা ছাড়াই স্মরণ করতে পারি। এটা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে না। যন্ত্রণা আমাকে ধরে ফেলে যখন আমি নিশ্চিত এটা আমাকে ভোগাবে। কিন্তু সেই দীর্ঘ মুহূর্তগুলো আমি শুনতে পাই। আবার তাকে যেটা প্রতিরোধ যোগ্য নয়। আমার কোন একটা পথ খুঁজতে হবে, এই অভিজ্ঞতাটা আবার পাওয়ার জন্য…অথবা হতে পারে সবচেয়ে ভাল শব্দ হচ্ছে সেই অধ্যায়টা।

    আমি আশা করছি যে ডেজাভু হচ্ছে সেই চাবিটা। সুতরাং আমি তার বাসায় যাচ্ছি, এমন একটা জায়গা যেখানে আমি আমার জন্মদিনের পার্টির পর আর যাইনি। সেই দুভার্গ্যজনক ঘটনার পর থেকে বেশ কয়েক মাস আগে।

    ঘন জঙ্গলের মত জায়গাটার পাশ দিয়ে ধীরে ধীরে এগুচ্ছিলাম। চালাচ্ছিলাম তো চালাচ্ছিলাম। আমি আরো জোরে যেতে শুরু করলাম। কিছুটা অধৈর্য। কতক্ষণ ধরে আমি চালাচ্ছিলাম? এখন কি সেই বাড়িতে আমি পৌঁছাতে পারব না? সেই লেনটা এতটা জঙ্গলে ঢাকা যে এটা এতটা বেশি পরিচিত নয়।

    যদি আমি সেটা খুঁজে না পাই তাহলে কি হবে? আমি কাঁপছিলাম। যদি সেখানে তেমন কোন প্রমাণ না পাই তাহলে কি হবে?

    তারপর সেখানে একটা গাছ ভাঙ্গা দেখলাম, যেটা আমি খুঁজছিলাম। এটা এর আগে কখনও এমনভাবে নজর করিনি। গাছের ফুল এখানে তেমনভাবে ছড়াইনি যেমনটি এরকম অরক্ষিত জায়গায় ছড়িয়ে থাকে। উঁচু উঁচু ফার্ণ গাছ বাড়িটার চারিদিকে। সিডার গাছও গায়ে গায়ে লেগে আছে। এমনকি বিস্তত্ব পোর্চেও। এটা এমন যেন লনটা সবুজ পালকওয়ালা গাছপালার স্রোতে ভেসে গেছে ডুবে গেছে কোমর পর্যন্ত।

    বাড়িটা সেখানে ছিল। কিন্তু এটা সেই আগের মত নয়। যদিও বাইরের থেকে কোন কিছুই পরিবর্তন হয়নি। সেই ফাঁকা জানালাগুলো দিয়ে শূন্যতা হাহাকার করছিল। এটা ছিল ভয়ংকর। যখন আমি এই সুন্দর বাড়িটা প্রথম দেখি তার তুলনায়। এটা দেখতে এমনটি হয়েছিল যেন ভ্যাম্পায়ারদের জন্য উপযুক্ত বাড়ি।

    আমি গাড়ির ব্রেক কষলাম। চারিদিকে তাকালাম। ভেতরে যাব, ভয় ভয় লাগছিল।

    কিন্তু কোন কিছুই ঘটল না। আমার মাথার ভেতরে কোন কণ্ঠস্বর নেই।

    সুতরাং আমি আবার ইঞ্জিন চালু করে ফার্ণের সমুদ্রের মধ্য থেকে বের হয়ে এলাম। হতে পারে, শুক্রবারের রাতের মত, যদি আমি সামনে এগিয়ে যেতাম…।

    আমি শূন্য মুখে ধীরে ধীরে বেরিয়ে এলাম। আমার ট্রাক পিছনে গর্জন করতে থাকল। পোর্চের সিঁড়ির কাছে পৌঁছে থামলাম। কারণ এখানে কিছুই ছিল না। তাদের উপস্থিতির কোনরকম অনুভূতি…আমার এই উপস্থিতিতে। বাড়িটা কাঠিন্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু এটা খুব অল্প কিছু বোঝায়। এটার কংক্রিটের বাস্তবতা আমার দুঃস্বপ্নের সাথে কোন প্রতিক্রিয়া দেখায় না।

    আমি আর খুব কাছে গেলাম না। আমি দেখতে চাইছিলাম না জানালার ভেতর দিয়ে। আমি নিশ্চিত নই কোনটা দেখতে সবচেয়ে কঠিন হবে। যদি কক্ষগুলো খালি থাকে, মেঝে থেকে সিলিং পর্যন্ত শূন্যতার প্রতিধ্বনি হয়। সেটা তাহলে আমার জন্য যন্ত্রণার হবে। আমার দাদীমার শেষকৃত্যের মত, যখন আমার মা আমাকে জোর করে সেই সব দেখা থেকে বাইরে রেখেছিল। তিনি বলেছিলেন সেই অবস্থায় দাদীমাকে দেখার দরকার নেই। তাকে স্মরণ কর বেঁচে থাকার স্মৃতিতে।

    কিন্তু এটাই কি সবচেয়ে খারাপ হবে না যদি না সেখানে কোন পরিবর্তন থাকে? যদি কোচগুলো সেখানে থাকে যেখানে আমি দেখেছিলাম চিত্রকর্মগুলো দেয়ালে খারাপভাবে আছে, পিয়ানোটা তার নিচু প্লাটফর্মে? এটা হতে পারে সেকেন্ডের ব্যাপার যে বাড়িটা একত্রে মুছে যাবে দেখাতে সেখানে কোনরকম কিছু নেই। সবকিছু মনে করিয়ে দিয়ে, অস্পর্শ এবং ভুলে যাওয়া, তাদের পিছনে।

    শুধু আমার মতই।

    আমি ফিরে এলাম শূন্যতা নিয়ে। তাড়াতাড়ি ট্রাকে ফিরে এলাম। আমি প্রায় দৌড়ে এলাম। আমি যাওয়ার জন্য উদ্বিগ্ন। তাড়াতাড়ি মানুষের জগতে ফিরে যাওয়ার জন্য। আমি জঘন্যভাবে শূন্যতাবোধ করছিলাম। আমি জ্যাকবকে দেখতে চাইছিলাম। হতে পারে আমার আবার নতুন এক প্রকারের অসুস্থতায় ধরেছে। আরেকটা আসক্তি। আগের সেই অবশকারী অবস্থার মতই। আমি কিছুর তোয়াক্কা করি না। আমি ট্রাকটা নিয়ে এত জোরে চালিয়ে বেরিয়ে এলাম যে বলার অপেক্ষা রাখে না।

    জ্যাকব আমার জন্য অপেক্ষা করছিল। তাকে দেখে আমি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। আমার সহজে শ্বাস নেয়া সম্ভব হলো।

    হেই, বেলা। সে ডাকল।

    আমি স্বস্তির সাথে হাসলাম। হেই জ্যাকব। আমি বিলিকে দেখলাম। তিনি জানালা দিয়ে আমাকে দেখছিলেন।

    চল, কাজের দিকে যাওয়া যাক। জ্যাকব খুব নিচু কিন্তু আগ্রহান্তিত গলায় বলল।

    যেভাবে হোক আমি হাসতে পারলাম। তুমি সত্যিই আমাকে দেখে অসুস্থ হয়ে পড়নি? আমি বিস্মিত। সে অবশ্যই নিজেকে প্রশ্ন করতে শুরু করবে আমি তার সঙ্গ পাওয়ার জন্য কতটা বেপরোয়া।

    জ্যাকব তার বাড়ির পাশে গ্যারেজের দিকে আগে আগে এগিয়ে চলল।

    না। এখনও পর্যন্ত না।

    দয়া করে সত্যিই বলো কখন আমি তোমাকে অস্বস্তিতে ফেলতে শুরু করব। আমি কখনও তোমাকে ঝামেলায় ফেলতে চাই না।

    ঠিক আছে। সে হাসল। অন্যরকম স্বরে, আমি সেজন্য তোমাকে দমবন্ধ অবস্থায় রাখতে পারি না।

    আমি গ্যারেজের দিকে হেঁটে গেলাম। লাল মোটর সাইকেলটাকে দাঁড় করানো দেখে একটা বড় রকমের ধাক্কা খেলাম। একগাদা ধাতব জঞ্জালের স্তূপের পরিবর্তে এটা এখন একটা মোটর সাইকেলের মত দেখাচ্ছে।

    জ্যাক, তুমি বিস্ময়কর। আমি শ্বাস নিলাম।

    সে আবার হাসল। আমি যখন কোন কাজ হাতে পাই আমি ঘোরের মধ্যে থাকি। সে কাঁধ ঝাঁকাল। যদি আমার মাথায় ঘিলু থাকে আমি সেটাকে বের করে নিয়ে আসি।

    কেন?

    সে নিচের দিকে তাকাল। অনেক সময় ধরে সেভাবে থাকল যাতে আমার মনে হলো সে হয়তো আমার প্রশ্ন শুনতে পায় নাই। শেষ পর্যন্ত সে আমাকে জিজ্ঞেস করল, বেলা, যদি আমি তোমাকে বলি আমি এই মোটরসাইকেল ঠিক করতে পারব না, তুমি তাহলে কি বলবে?

    আমি সাথে সাথে সঠিক কোন উত্তর দিতে পারলাম না। সে আমার অনুভূতিটা উপভোগ করল।

    আমি বলতে চাই…সেটা খুব খারাপ। কিন্তু আমি বাজি ধরতে পারি আমরা কিছু একটা বের করে নিয়ে আসতে পারব। যদি আমরা সত্যিকারের বেপরোয়া হই, আমরা এমনকি হোমওয়ার্কও করতে পারব।

    জ্যাকব হাসল। তার কাঁধ সহজ হলো। সে বাইকের পাশে বসে পড়ল। একটা রেঞ্চ তুলে নিল। তো তুমি ভাবছ আমার কাজ শেষ হয়ে গেলেই তুমি এখানে আর আসবে না, তারপর?

    আমি কি সেটাই বুঝাতে চাইছি নাকি? আমি মাথা নাড়লাম। আমি ধারণা করছি আমি তোমার যান্ত্রিক দক্ষতার উপর সুযোগ নিচ্ছি। কিন্তু যদিন তোমার এটা হয়ে যাবে। তারপরেও আমি এখানে আসব।

    আশা করছ তুমি কুইলকে আবার দেখতে পাবে? সে টিজ করল। তুমি বুঝতে পেরেছো?

    সে হাসল। তুমি সত্যি আমার সাথে সময় কাটাতে পছন্দ করো? সে আনন্দিত স্বরে জিজ্ঞেস করল।

    খুব, খু-উ-ব। আমি এটা প্রমাণ করে দেব। আমাকে কাল কাজে যেতে হবে। কিন্তু বুধবারে আমরা এমন কিছু করব যেটার সাথে যান্ত্রিক জিনিসের কোন সম্পর্ক থাকবে না।

    কিসের মত?

    আমার কোন ধারণা নেই। আমরা আমাদের বাড়িতে যেতে পারি যাতে তুমি আবেগতাড়িত না হয়ে পড়। তুমি তোমার স্কুলের কাজ নিয়ে যেতে পার। তুমি সেটাতে আমার পিছনে থাকবে। কারণ আমি জানি কি।

    হোমওয়ার্ক করা একটা ভাল আইডিয়া হতে পারে। তার মুখ প্রফুল্ল দেখাল। আমি বিস্মিত কীভাবে সে আমার সাথে থাকার জন্য ব্যস্ত।

    হ্যাঁ। আমি সম্মত হলাম। আমাদের মাঝে মাঝে দায়িত্ব সচেতন হওয়া উচিত। না হলে বিলি এবং চার্লি এই বিষয়গুলো সহজভাবে নিবে না। আমি এটা অনুমান করলাম তারা দুজন আমাদের এই একাকীত্বকে কীভাবে দেখছে। সে এটা পছন্দ করল। সে আনন্দিত হলো।

    সপ্তাহে একদিন হোমওয়ার্ক? সে প্রস্তাব দিল।

    সবচেয়ে ভাল হয় এটাকে যদি আমরা সপ্তাহে দুদিন করি। আমি উপদেশ দিলাম। ভাবছিলাম সেই স্তূপের কথা যেগুলোর এ্যাসাইনমেন্ট আমি আজ পেয়েছি।

    সে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। তারপর সে তার টুলবক্সের কাছে গেল। একটা দোকানের ব্যাগ টেনে নিল। সে সোডার দুইটি ক্যান বের করল। একটার মুখ খুলল এবং সেটা আমার দিকে এগিয়ে দিল। সে দ্বিতীয়টা খুলল এবং নিজে মুখে দিল।

    সেখানেই দায়িত্বপরায়ণতা। সে টোস্ট করল। সপ্তাহে দুদিন।

    এবং এর মাঝের বাকি দিনগুলো দায়িত্বহীন এলোমেলো। আমি জোর দিলাম।

    সে মুখ ভেঙুচাল এবং তার ক্যান আমারটার সাথে ছোঁয়াল।

    .

    আমি পরিকল্পনা করেই দেরিতে বাড়ি পৌঁছালাম। আমার জন্য অপেক্ষা করার পরিবর্তে চার্লি একটা পিজার অর্ডার দিয়েছেন। তিনি আমাকে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দিলেন না।

    আমি কিছু মনে করিনি। তিনি আশস্ত করলেন। যাই হোক, তুমি এইসব রান্নাবান্নার ঝামেলা থেকে একটু ব্রেক আশা করেছিলে।

    তিনি জানতেন আমি এখনও পর্যন্ত একজন সাধারণ স্বাভাবিক মানুষের মত আচরণ করছি। তিনি সেই অবস্থার নৌকাকে মোটেই ধাক্কা দিতে চান না।

    হোমওয়ার্কের আগে ই-মেইল চেক করলাম। সেখানে রেনের কাছ থেকে একটা মেইল,আছে। অনেক লম্বা মেইল। মা আমার দেয়া প্রতিটা ঘটনার ডিটেলস লিখেছে, যাতে আমি আজকের দিনের আরেকটা ক্লান্তিকর বর্ণনা দেই। সবকিছুই দেয়া যাবে কিন্তু মোটরসাইকেলের ব্যাপার নয়। এন কি সদ্য হাস্যমুখি রেনেও এই ব্যাপারে আমাকে সর্তক করবে।

    মঙ্গলবারের স্কুল ভাল মন্দ মিশিয়ে কাটল। এঞ্জেলা এবং মাইক আমার ফিরে আসার কারণে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাল। আমার দিকে এত সদয়ভাবে ছিল যেটা গত কয়েক মাসে ছিল না। জেস আগের চেয়ে আরো বেশি প্রতিরোধমূলক। আমি বিস্মিত সেই পোর্ট এঞ্জেলা ঘটনার কারণে তাকে একটা আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে কিনা।

    মাইক আগের মতই এবং কাজের মধ্যেই আলাপ চালিয়ে যায়। সে সেমিস্টারের কাজের চেয়ে কথা বলেই বেশি সময় নষ্ট করে। উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো এখন গা সওয়া হয়ে গেছে। আমি দেখতে পেলাম আমি আবার আগের মত হাসছি। তার সাথে হেসে। কথা বলছি। যদিও এটা জ্যাকবের সাথে যতটা সহজে হয় ততটা সহজ নয়। এটা দেখতে অনেক ক্ষতিহীন মনে হয়।

    মাইক জানালায় বন্ধু নোটিশ টাঙিয়ে দিল যখন আমি আমার ভেস্ট ভাঁজ করতে শুরু করলাম। সে সেটা কাউন্টারের নিচে ঢুকিয়ে দিলাম।

    আজ রাতটা বেশ মজার। মাইক আনন্দের সাথে বলল।

    হা। আমি একমত হলাম। যদিও আমি সন্ধ্যেটা গ্যারেজে কাটাতেই বেশি স্বাছন্দ্য বোধ করি।

    এটা খুব খারাপ হয়েছে যে তুমি গত সপ্তাহের ছবিটা শেষ না দেখে বেরিয়ে গিয়েছিলে।

    তার এই লাইনে কথা বলার কারণে আমি কিছুটা দ্বিধান্বিত। আমি কাঁধ ঝাঁকালাম। আমার কিছুটা সমস্যা হয়েছিল, আমি অনুমান করছি।

    যেটা আমি বুঝাতে চাইছি, তোমার উচিত একটা ভাল ছবি দেখা। যে রকম তুমি উপভোগ কর। সে ব্যাখ্যা করল।

    ওহ। আমি বিড়বিড় করে বললাম। এখনও দ্বিধান্বিত।

    যেমনটি হতে পারে এই শুক্রবারে। আমার সাথে। আমরা একসাথে এমন কিছু দেখতে পারি যেটা মোটেও ভয়ের নয়।

    আমি ঠোঁট কামড়ে ধরলাম।

    আমি মাইকের সাথে এইসব বিষয় নিয়ে ঝামেলায় যেতে চাইছিলাম না। এমনকি তখনও নয় যখন সেই একমাত্র ব্যক্তি যে আমার প্রতি উন্মাদ ধারণা পোষণ করার পরিবর্তে ক্ষমা করতে আগ্রহী। কিন্তু যেটা খুব পরিচিতের মত লাগে। যেন গতবছর জীবনে আসে নি। আমি আশা করছি জেসের কাছে এই সময়ে ক্ষমা চাওয়া উচিত।

    এটা কি ডেটের মত? আমি সভাবে জিজ্ঞেস করলাম। হয়তো নিষ্পত্তির জন্য এটাই সবচেয়ে ভাল পন্থা।

    সে আমার কণ্ঠস্বরের তীক্ষ্মা লক্ষ্য করল। যদি তুমি চাও। কিন্তু এটা আসলে সেই টাইপের কিছু হবে না।

    আমি ডেট চাই না। আমি ধীরে ধীরে বললাম। উপলদ্ধি করছিলাম এটা কতটা সত্য। গোটা জগতটাই যেন মনে হয় একটা অসম্ভব ব্যাপার।

    শুধুই বন্ধুর মত? সে পরামর্শ দিল। তার নির্মল নীল চোখ এখন আর ততটা উৎসুক্য নয়। আমি আশা করছিলাম সে সত্যিকারে ভেবেছিল যেভাবে যোক আমরা বন্ধু হতে পারি।

    সেটা খুব মজার হবে। কিন্তু আমি প্রকৃতপক্ষে এই শুক্রবারের পরিকল্পনা করে ফেলেছি। তো সেটা হতে পারে পরের সপ্তাহে?

    তুমি কি করতে যাচ্ছ? সে স্বাভাবিকভাবে জিজ্ঞেস করল। আমি তার কাছ থেকে সেটাই আশা করেছিলাম।

    হোমওয়ার্ক। আমার…একজন বন্ধুর সাথে পড়াশুনা নিয়ে একটা সেশনে বসার কথা আছে।

    ওহ, ঠিক আছে। হতে পারে এটা সামনের সপ্তাহে।

    সে আমার সাথে সাথে আমার গাড়ির কাছে এল। আগের চেয়ে কম উচ্ছ্বাস নিয়ে। এটা আমাকে পরিষ্কারভাবে মনে করিয়ে দিল ফর্কে আমার প্রথম মাসের কথা। আমি সবার সাথে মিশে ছিলাম। আর এখন এটা একটা প্রতিধ্বনির মত। একটা শূন্য প্রতিধ্বনি।

    পরের রাতে, চার্লি সামান্যতম বিস্ময়ের ভাব দেখালেন না যখন জ্যাকবকে আমার সাথে দেখতে পেলেন। আমরা লিভিং রুমের মেঝেতে বইখাতা ছড়িয়ে হোমওয়ার্ক করছিলাম। সুতরাং আমি ধারণা করেছিলাম তিনি আর বিলি আমাদের আড়ালে আমাদের নিয়ে কথা বলেছেন।

    হেই তোমরা। তিনি বললেন। তার চোখ রান্নাঘরের দিকে। সন্ধ্যের দিকে আমার বানানো ল্যাসগুনার ঘ্রাণ ভেসে আসছিল। সেটা আমি বানিয়েছিলাম। জ্যাকব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছিল। আমি সেটা ভাল করার চেষ্টা করেছিলাম।

    জ্যাকব ডিনারের জন্য থাকল। একটা প্লেটে বিলির জন্য বাসায় নিয়ে নিল। সে আবার আমার বয়সের মাপকাটি দিয়ে বিচার করে আরো একবছর বাড়িয়ে দিল আমার অসাধারণ রান্নার জন্য।

    শুক্রবার গ্যারাজে কাটালাম। শনিবারে আমার স্কুলের পর নিউটনের ওখানে আমার শিফট থেকে ফিরে আবার হোমওয়ার্ক নিয়ে বসলাম। চার্লি এসব দেখে খুব নিরাপত্তা বোধ করছিলেন। সে কারণে তিনি হ্যারির সাথে তার মাছ ধরা নিয়ে সময় কাটাতে গেলেন। যখন ফিরে এলেন, আমাদের সব করা হয়ে গিয়েছিল। নিজেদের বেশ কাল এবং পরিণত লাগছিল। আমরা ডিসকভারি চ্যানেলে মনস্টার গ্যারেজ দেখছিলাম।

    আমার সম্ভবত এখন যাওয়া উচিত। জ্যাকব শ্বাস ফেলল। আমি যতটা। ভেবেছিলাম তার চেয়ে দেরি হয়ে গেছে।

    ওকে, ঠিক আছে। আমি বললাম আমি তোমাকে বাসায় পৌঁছে দেব।

    সে আমার দিকে তাকিয়ে অদ্ভুত ভঙ্গিমায় হাসল- দেখে মনে হলো সে খুশি হয়েছে।

    আগামীকাল, কাজে ফিরে যাও। আমি বললাম ততক্ষণে আমরা নিরাপদে ট্রাকের কাছে চলে এসেছি। কোন সময়টা তুমি আমাকে সেখানে আসতে বলতে চাও?

    সেখানে একটা অব্যাখ্যাত উত্তেজনা ফুটে উঠল। তার হাসির মধ্যে অন্য কিছু। আমি তোমাকে আগে ফোন করব। ঠিক আছে?

    নিশ্চয়। আমি ভ্রু কুঁচকালাম। বিস্মিত কি ঘটতে চলেছে। তার হাসি বিস্তৃত হলো।

    পরদিন সকালে আমি বাড়ি পরিষ্কার করলাম। জ্যাকবের ফোনের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আর চেষ্টা করছিলাম সর্বশেষ দুঘণ্টা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে। দৃশ্যাবলি পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল। গতরাতে একটা বিশাল ফার্ণের সমুদ্রের মধ্যে নিজেকে দেখে বিস্মিত হলাম। সেখানে প্রচুর পরিমাণে হেমলক গাছ। সেখানে আর কিছুই ছিল না।

    .

    আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম। উদ্দেশহীন একাকী। কিছু খুঁজছিলাম না। আমি চাইছিলাম নিজেকে লাথি কষাতে গত সপ্তাহের বোকার মত মাঠের ভেতর দিয়ে যাওয়ার জন্য। আমি সচেতনভাবে মন থেকে স্বপ্নটা ঝেড়ে মুছে ফেললাম। আশা করছি এটা কোথায় তালাবদ্ধ হয়ে থাকবে এবং আবার বেরিয়ে আসবে না।

    চার্লি বাইরের দিকটা পরিষ্কার করছিলেন। সুতরাং যখন ফোন বাজল আমি টয়লেট ব্রাশটা হাত থেকে ফেলে নিচে দৌড়ে এলাম।

    হ্যালো? আমি হাঁপাতে হাঁপাতে জিজ্ঞেস করলাম।

    বেলা, জ্যাকব বলল, একটা অদ্ভুত অস্বাভাবিক স্বর তার কণ্ঠস্বরে।

    হেই জ্যাক।

    আমি বিশ্বাস করি… আমাদের একটা ডেটের কথা ছিল। সে বলল, তার গলার স্বরে যেন অন্য কিছু ভর করেছে।

    এটা এক সেকেন্ড সময় লাগল ব্যাপারটা কি বুঝতে। সেগুলো হয়ে গেছে? আমি এটা বিশ্বাস করতে পারছি না। কি উপযুক্ত সময়ে! আমার দরকার এরকম কিছু যেটা দিয়ে আমি দুঃস্বপ্ন এবং কিছু না করার থেকে মুক্ত হতে পারি।

    হ্যাঁ। সেগুলো চলছে। এবং সবকিছুই।

    জ্যাকব, কোন সন্দেহ ছাড়াই, তুমি সত্যিকার অর্থে অবিশ্বাস্য কাজ করেছ। আমি যাদেরকে জানি তার মধ্যে তুমি সবচেয়ে মেধাবী এবং সবচেয়ে আশ্চর্য মানুষ। তুমি শুধু এইটার জন্য দশবছর বেশি পেয়ে যাচ্ছ।

    শান্ত হও। আমি এখন তাহলে মধ্যবয়সী!

    আমি হাসলাম। আমি এখনই আসছি।

    আমি বাথরুমের কন্টেইনারে আমার পরিষ্কার করার জিনিস ছুঁড়ে দিলাম। জ্যাকেট বের করলাম।

    জ্যাককে দেখতে যাচ্ছি। আমি পাশ দিয়ে দৌড়ে যাওয়ার সময় বাবা জিজ্ঞেস করলেন। এটা আসলে কোন প্রশ্ন ছিল না।

    হ্যাঁ। আমি ট্রাকে লাফ দিয়ে উঠতে উঠতে বললাম।

    আমি এর পরে স্টেশনে থাকব। চার্লি আমাকে ডেকে বললেন।

    ঠিক আছে। আমি প্রতি উত্তরে চেঁচালাম। চাবি ঘুরালাম।

    চার্লি আরো কিছু বলছিলেন কিন্তু আমি ইঞ্জিনের গর্জনের কারণে সেটা স্পষ্ট শুনতে পেলাম না। এটা শুনতে কতটা এমনটা মনে হলো, আগুন কোথায়?

    আমি ব্লাকের বাড়ির পাশে ট্রাক পার্ক করে রাখলাম। গাছের কাছাকাছি রাখলাম যাতে এটার পাশ দিয়ে সহজেই বাইকগুলোকে বের করে নেয়া যায়। আমি বেরিয়ে আসতেই রঙের একটা ধাক্কা আমার চোখে লাগল। দুইটা উজ্জল রং এর মোটরসাইকেল, একটা লাল, অন্যটা কালো, ছাউনির নিচে দাঁড় করানো। সেগুলো বাড়ি থেকে দেখা যায় না। জ্যাকব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল।

    প্রতিটা হান্ডেল বারের সাথে একটুকরো নীল ফিতে বাধা ছিল। আমি সেটা দেখে হাসছিলাম। জ্যাকব বাড়ি থেকে বেরিয়ে এল।

    প্রস্তুত? সে নিচু গলায় জিজ্ঞেস করল। তার চোখ মুখ জ্যোতি ছড়াচ্ছিল।

    আমি তার কাঁধের উপর দিকে একবার তাকালাম। সেখানে বিলির কোন চিহ্ন দেখা গেল না।

    হ্যাঁ। আমি বললাম। কিন্তু আমি এখন আর আগের মত অতটা উত্তেজিতবোধ করছি না। আমি নিজেকে মোটর সাইকেলের উপরে কল্পনা করে দেখছিলাম।

    জ্যাকব বাইক দুইটা আমার ট্রাকের পিছনের বেডে খুব সহজেই তুলে দিল। সেগুলোকে এমনভাবে একপাশে শুইয়ে দিল যাতে দেখা না যায়।

    এখন চলো। সে বলল, তার কণ্ঠস্বর এত উঁচুতে উঠল যেটা সাধারণ সময়ের চেয়ে বেশি, উত্তেজিত। আমি সেই উপযুক্ত জায়গা জানি যেখানে কেউ আমাদের ধরতে পারবে না। খুঁজে পাবে না।

    আমার শহরের দক্ষিণ দিকে চালিয়ে গেলাম। নোংরা রাস্তাগুলো জঙ্গলের পাশ দিয়েই। মাঝে মাঝে সেখানে গাছপালা ছাড়া আর কোন কিছুই নেই। তারপর সেখানে হঠাৎ করে দমবন্ধ করা সুন্দরের প্রশান্ত মহাসাগরের অংশ। সেটা দিগন্তের কাছে। মেঘের নিচে গাঢ় ধূসর। আমরা সমুদ্র সৈকতের উপরে। পাহাড়ের খাড়া উঁচুতে যেখান থেকে সৈকত বিস্তৃত। দৃশ্যটা যেন টেনে লম্বা করা হয়েছে।

    আমি ধীরে ধীরে চালাচ্ছিলাম, যাতে আমি খুব সাবধানে নিরাপদে সমুদ্রের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারি। রাস্তাটা খাড়া পাহাড়ের কাছাকাছি। জ্যাকব মোটরসাইকেল মেরামত নিয়ে কথা বলছিল। কিন্তু তার বর্ণনা এতবেশি টেকনিক্যাল কাজেই আমি তাতে খুব বেশি মনোযোগ দিচ্ছিলাম না।

    আমি খেয়াল করলাম চারটে মৃর্তি রকি লিজে দাঁড়িয়ে আছে। আমি যা ধারণা করেছিলাম তার চেয়েও খুব কাছাকাছি। আমি বলতে পারব না এতদুর থেকে যে তাদের বয়স কত। কিন্তু আমি ধারণা করছি তারা সবাই পুরুষ মানুষ। আজকের বাতাসের এত তীব্র শীত থাকা সত্বেও তারা শুধু মাত্র শর্টস পরে আছে।

    যখন আমি দেখছিলাম, সবচেয়ে লম্বা মানুষটা বাড়ির কিনারার কাছাকাছি চলে এসেছিল। আমি অটোমেটিকভাবেই গাড়ির গতি কমালাম। আমার পা ব্রেক প্যাডেলে দ্বিধান্বিত অবস্থায় ছিল।

    তারপর লোকটা নিজেকে কিনারে থেকে নিচে ছুঁড়ে দিল।

    না। আমি চিৎকার করে বললাম। ব্রেকে চাপ দিলাম।

    কি সমস্যা? জ্যাকব পিছন থেকে চিৎকার জুড়ে দিল। সংকেত দিল।

    ওই লোকটা ওই লোকটা এই মাত্র পাড়ি থেকে নিচে লাফ দিয়ে পড়েছে। কেন তারা লোকটাকে থামাল না? আমাদের এখনই একটা এ্যাম্বুলেন্স ডাকা দরকার? আমি গাড়ির দরজা খুলে ফেললাম এবং বের হতে চাইলাম। সেটা আসলে কাজের কিছু না। এখন সবচেয়ে দ্রুত যে কাজটা করা দরকার তা হলো বিলিকে একটা ফোন করা। কিন্তু এই মাত্র আমি যেটা দেখলাম সেটা যেন আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। হতে পারে, আমি এমন কিছু দেখেছি যেটা জানালার কাঁচের বাইরে ভিন্ন রকমের কিছু একটা।

    জ্যাকব হাসছিল। আমি মাথা ঘুরিয়ে তার দিকে বড়বড় চোখে তাকালাম। সে কীভাবে এতটা ক্যালাস মার্কা হয়? এতটা ঠাণ্ডা শীতল রক্তের?

    তারা হলো শুধুমাত্র ক্লিফ ডাইভার, বেলা। বিনোদন। লা পুশে একটা মলও নেই। তুমি জান। সে টিজ করল। কিন্তু তার কণ্ঠস্বরে অদ্ভুত বিরক্তির ছোঁয়া।

    ক্লিফ ডাইভিং? আমি পুনরাবৃত্তি করলাম। আমি অবিশ্বাসের সাথে লক্ষ্য করলাম দ্বিতীয় মানুষটাও খাড়ির কিনারে এসেছে। থেমে দাঁড়িয়েছে এবং খুব শান্তিপূর্ণভাবে নিচে লাফ দিয়েছে। সে এমনভাবে পড়ছে যেটা আমার কাছে অনন্তকাল বলে মনে হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত খুব সুন্দরভাবে গাঢ় সাগরের জলের নিচে হারিয়ে গেল।

    ওয়াও। এটা এতটা উঁচু! আমি সিটে ফিরে এলাম। এখনও বাকি দুজন ডাইভারের দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছি। এটা অবশ্যই একশ ফিট উঁচু হবে।

    বেশ, হ্যাঁ। বেশিরভাগ লোকই আরো নিচ থেকে জাম্প দেয়। সেটা এরকম ক্লিফের মাঝখানের দিকটা থেকে। সে জানালা দিয়ে জায়গাটা নির্দেশ করল। যে জায়গাটা সে দেখাল সেটা অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে হলো। এই লোকগুলো পাগলাটে। সম্ভবত তারা দেখাতে যাচ্ছে কতটা দৃঢ় চিত্তের তারা। আমি বলতে চাইছি, সত্যিই তারা তাই। আজকে খুবই ঠাণ্ডা। এই পানিতে তারা খুব ভালবোধ করবে না। সে মুখের অভিব্যক্তিতে একটা অদ্ভুত ভাব ফুটিয়ে তুলল। যেন সেই মানুষগুলো তাকে আক্রমণ করেছে। এটা আমাকে কিছুটা বিস্মিত করল। আমি ভাবতে বাধ্য হলাম জ্যাকব কিছুটা অসম্ভব চরিত্রের।

    তুমি এই ক্লিফ থেকে লাফ দিতে পার?

    অবশ্যই। অবশ্যই। সে কাঁধ ঝাঁকাল এবং মুখ কুঁচকাল। এটা একটা মজা। কিছুটা ভয়ের। এক প্রকারের জমাট আনন্দের ব্যাপার।

    আমি ক্লিফের দিকে তাকালাম। তৃতীয় ব্যক্তিটি কিনারের কাছে এসেছে। আমি কখনও আমার জীবনে এমন বেপরোয়া কিছুর মুখোমুখি হয়নি। আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেছে। আমি হাসলাম জ্যাক, তুমি আমাকে ক্লিফ ডাইভিংয়ে নিয়ে যাবে?

    সে ভ্রূ কুঁচকে আমার দিকে তাকাল। তার মুখে অনুমোদনহীনতার চিহ্ন। বেলা, তুমি একটু আগে স্যামের জন্য এ্যাম্বুলেন্স ডাকতে চাচ্ছিলে। সে আমাকে স্মরণ করিয়ে দিল। আমি বিস্মিত হলাম এত দুর থেকেও সে মানুষটা কে তা বলে দিল।

    আমি চেষ্টা করে দেখতে চাই। আমি জোর দিলাম। গাড়ি থেকে আবার বের হতে শুরু করলাম।

    জ্যাকব আমার কব্জি এটে ধরল। আজ নয়। ঠিক আছে? আমরা কি একটা গরম দিনের জন্য অপেক্ষা করতে পারি না?

    ঠিক আছে। সেটাই ভাল। আমি সম্মত হলাম। দরজা খোলার সাথে সাথে ঠাণ্ডা শীতল হাওয়া আমার হাতে কাটা দিয়ে উঠল। কিন্তু আমি তাড়াতাড়ি এটা করতে চাই।

    তাড়াতাড়ি। সে চোখ ঘোরাল। কোন কোন সময় তুমি কিছুটা অদ্ভুত, বেলা। তুমি কি সেটা জান?

    আমি শ্বাস নিলাম। হ্যাঁ।

    এবং আমরা উঁচু থেকে মোটেই লাফ দিচ্ছি না।

    আমি দেখলাম তৃতীয় লোকটা কিছুটা দৌড়ে এসে উড়ার মত ভঙ্গিমায় নেমে গেল। সে এমনভাবে ঘুরল যেন সে একজন স্কি ডাইভার। তাকে দেখে সত্যিকারের মুক্ত, চিন্তাহীন এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন মনে হচ্ছিল।

    বেশ। আমি সম্মত। প্রথমবারে নয়, যাইহোক।

    এখন জ্যাকব শ্বাস নিল।

    তুমি কি আজকে মোটরসাইকেল চালানো শেখার চেষ্টা করবে, না করবে না? জ্যাকব জানতে চাইল।

    ঠিক আছে, ঠিক আছে। আমি বললাম। চোখ জোড়া শেষ ব্যক্তির দিকে নিবদ্ধ ছিল যে খাড়িতে অপেক্ষা করছিল। আমি আমার সিটবেল্ট বেধে নিলাম এবং দরজা বন্ধ করলাম। ইঞ্জিন তখনও চালু ছিল। অলসভাবে গর্জন করে চলেছিল। আমরা আবার রাস্তার দিকে নামতে থাকলাম।

    তো কারা এইসব লোক-এইসব মাথা পাগলা? আমি বিস্মিত।

    সে পিছনে বসে তার গলা দিয়ে একটা বিরক্তির শব্দ বের করল। এরা লা পুশ গং।

    তোমাদের একটা গং আছে? আমি জিজ্ঞেস করলাম। আমি বুঝতে পারলাম আমার স্বর কিছুটা ইমপ্রেসড।

    সে আমার প্রতিক্রিয়ায় হঠাৎ করে হেসে উঠল। সেরকম কিছু নয়। আমি শপথ করে বলতে পারি, তারা হলো হলের মনিটর খারাপ হওয়ার মত। তারা কোন মারামারি শুরু করে না। তারা শান্তি রক্ষা করে। সে নাক টানল। সেখানে উপর থেকে আসা একজন লোক আছে তার নাম মাখরেজ। বিশাল লোক যদিও ভয়ানক দেখতে। বেশ কথিত আছে যে সে মেথকে দুইটা বাচ্চা বিক্রি করেছিল। স্যাম উলি তার নিয়মনিষ্টা থেকে চলে গিয়েছিল। তারা সবাই আমাদের এখানকার এবং উপজাতীয়….এটা দিন দিন উপহাসের যোগ্য হয়ে যাচ্ছে। খারাপ অংশটা হলো কাউন্সিল তাদেরকে সিরিয়াসলি নিয়েছে। এমব্রি বলছিল কাউন্সিল প্রকৃতপক্ষে স্যামের সাথে দেখা করেছে। • তার মাথা নাড়ল। তার মুখ পুরোটাই কঠিন। এমব্রি আরো শুনেছিল লিও ক্লিয়ারওয়াটা কাছ থেকে। তারা তাকে রক্ষাকারী বা এই জাতীয় কিছু নামে ডাকে।

    জ্যাকবের হাত মুষ্ঠিবদ্ধ হচ্ছিল যেন সে কোন কিছুকে আঘাত করবে। আমি কখনও তার দিক থেকে এমন কিছু দেখি নাই।

    আমি স্যাম উলির নাম শুনে বিস্মিত হয়েছিলাম। আমি সেই দুঃস্বপ্নের স্মৃতিকে আর ফিরিয়ে আনতে চাইছিলাম না। সুতরাং আমি এটা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য তাড়াতাড়ি অবলোকন করা শুরু করলাম। তুমি তাকে খুব বেশি পছন্দ করো না।

    দেখে কি তাই মনে হয়? সে সন্দেহজনকভাবে ভি; স্কেস করল।

    বেশ… এটা এরকম শোনাচ্ছে না তারা কোন কিছু করছে, খারাপ কিছু। আমি তাকে শান্ত করার জন্য বললাম। তাকে আবার আন্দময় করে তুতে চেষ্টা করলাম। শুধু গংয়ের ব্যাপারটাই কেমন যেন বিরক্তিকর।

    হ্যাঁ। বিরক্তিকর একটা ভাল শব্দ। তারা সবসময় প্রর্দশিত হতে পছন্দ করে। এই যেমন ক্লিফের ব্যাপারটা। তারা আচরণ করে…যেমন …যেমন আমি এটা জানি না। যেমন কঠিন লোকেরা। আমি এমব্রি ও কুইলের সাথে একবার গত সেমিস্টারে গিয়েছিলাম। স্যাম ফুল নিয়ে এসেছিল। জ্যারেড এবং পলও। কুইল কিছু একটা বলেছিল, তুমি জানো কীভাবে সে অতবড় মুখ পেয়েছে। সে পলকে বিরক্ত করে। তার চোখজোড়া গভীর কালো। তার মুখে হাসি নেই। সে তার দাঁত দেখায় কিন্তু সে হাসে না। এটা এরকম যেন সে এতটাই পাগল যে ঝাঁকাচ্ছে অথবা ওরকম কিছু। কিন্তু স্যাম পলের বুকে তার হাত রাখে এবং তার মাথা নাড়িয়ে দেয়। পল তার দিকে এক মিনিট তাকিয়ে থাকে এবং শান্ত হয়ে আসে। সত্যি বলছি, স্যাম তাকে ফিরিয়ে এনেছিল যেন পল আমাদেরকে ছিঁড়ে ফেলত যদি না স্যাম চলে আসত। সে গুঙিয়ে উঠল। একটা খারাপ ওয়স্টার্ণের মত। তুমি জানো, স্যাম খুব সুন্দর বিশাল মানুষ। তার বয়স বিশ। কিন্তু পল মাত্র সোল। আমার চেয়ে খাট এবং কুইলের মত পেশীবহুল নয়। আমি মনে করি আমাদের যে কেউ একজন তাকে দেখে নিতে পারি।

    কঠিন লোক। আমি একমত। আমি এটা আমার মাথার মধ্যে দেখতে পাচ্ছি যেন আমি বর্ণনা করছি। এটা আমাকে কিছু একটা মনে করিয়ে দিচ্ছে…তিনজন লম্বা কালো মানুষ দাঁড়িয়ে আছে পাশাপাশি আমার বাবার লিভিং রুমে। চিত্রটা একপেশে। কারণ আমার মাথা কোচের একপাশে ঘোরানো ছিল যেখানে ডা. জেরান্ডি এবং চার্লি ঝুঁকে ছিল আমার উপরে…সেটাই কি তাহলে স্যামের গং ছিল?

    আমি আবার তাড়াতাড়ি কথা শুরু করলাম যেন আমার সেই স্মৃতি না আসে। স্যাম কি এই জাতীয় কাজের জন্য কিছুটা বড় নয়?

    হ্যাঁ। তার এখন কলেজে যাওয়া উচিত। কিন্তু সে এখানে আছে এবং কেউ এই বিষয়ে তাকে কখনো কিছু বলে না। গোটা কাউন্সিল একটা সমঝোতায় এসেছিল যখন আমার বোন একটা আংশিক বৃত্তি পেয়েছিল এবং বিয়ে করেছিল। কিন্তু, ওহ না, স্যাম উলি কোন ভুল করতে পারে না।

    তার মুখ একটা অপরিচিত রাগে ফুঁসে উঠছিল। উদ্ধত্য এবং ওই জাতীয় কিছু একটা যেটা আমি প্রথমে চিনে উঠতে পারি নাই।

    এইসব বিষয় সত্যিই কিছুটা বিরক্তিকর এবং..অদ্ভুত। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না কেন তুমি এই জিনিসটাকে ব্যক্তিগতভাবে নিচ্ছ। আমি তার মুখের দিকে তাকালাম। আশা করছি আমি তাকে আঘাত করছি না। সে হঠাৎ শান্ত হয়ে পড়ল। জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকাতে লাগল।

    তুমি এই মাত্র বাকটাকে মিস করলে। সে শান্ত স্বরেই বলল।

    আমি খুব বড় ধরনের একটা ইউ টার্ণ নিলাম। একটা গাছকে প্রায় আঘাত করে বসেছিলাম। ট্রাকটা রাস্তার প্রায় অর্ধেকটা বাইরে চলে গিয়েছিল।

    এইভাবে দেখার জন্য ধন্যবাদ। আমি বিড়বিড় করে বললাম। আমরা এখন পাশের রাস্তায়।

    দুঃখিত। আমি খুব একটা মনোযোগ দেই নাই।

    কিছুক্ষণের জন্য নিরব মুহূর্ত।

    তুমি এখানের যে কোন জায়গায় গাড়ি থামাতে পার। সে নরম স্বরে বলল।

    আমি গাড়ি থামলাম। ইঞ্জিন বন্ধ করলাম। আমার কানে চারিদিকে নিস্তব্ধতা এসে ভিড় করছিল। আমরা দুজনেই বেরিয়ে এলাম। জ্যাকব মোটরসাইকেল দুটো বের করার জন্য পিছনের দিকে গেল। আমি তার অনুভূতি পড়ার চেষ্টা করছিলাম। কোন একটা কিছু তাকে খুব বিরক্ত করছিল। আমি তার স্নায়ু উত্তেজিত করে তুলেছিলাম।

    সে লাল মোটরসাইকেলটা আমার দিকে এগিয়ে দেয়ার সময় আন্তরিকভাবে হাসল। শুভ জন্মদিন। তুমি কি এর জন্য প্রস্তুত?

    আমি তাই মনে করি। মোটরসাইকেলটা হঠাৎ আমার কাছে ভীতিকর বিশাল কিছু মনে হলো, যখন আমি বুঝতে পারলাম শিগগির আমাকে এটার উপর চড়তে হবে।

    আমরা এটাকে খুব ধীর গতিতে নেব। সে প্রতিজ্ঞা করল। আমি ট্রাকের ধারে মোটরসাইকেল ধরে দাঁড়িয়ে রইলাম। সে তারটা নিয়ে আসতে গেল।

    জ্যাক… আমি দ্বিধাগ্রস্ত যখন সে আমার কাছে চলে এল।

    হ্যাঁ?

    তোমাকে সত্যিই কি বিরক্ত করছে? স্যামের ব্যাপারটা কি? আমি বোঝতে চাইছি, সেখানে কি আরো বেশি কিছু আছে? আমি তার মুখের দিকে লক্ষ্য রাখলাম। সে বিকট মুখ ভঙ্গি করল কিন্তু তাকে রাগতে দেখলাম না। সে মোটরসাইকেলে বেধে থাকা ময়লার দিকে দেখল এবং তার পা দিয়ে বারবার কিক দিয়ে সেটা ছাড়াতে চেষ্টা করল। যেন সে কিছুটা সময় নিচ্ছে।

    সে শ্বাস নিল। এটা শুধুমাত্র…সেই পথ যেভাবে তারা আমার সাথে ব্যবহার করে। এটা আমাকে বেরুতে বাধ্য করে। কথাগুলো খুব তাড়াতাড়িই তার মুখ দিয়ে বেরিয়ে এল। তুমি জানো, কাউন্সিল সবসময় সবাইকে সমান রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু যদি সেখানে একজন নেতা থাকে, সেটা হবে আমার বাবা। আমি কখনোই বুঝতে পারি না কেন সেখানে লোকজন তাকে সেইভাবে সেই চোখে দেখে। কেন তার মতামত সর্বাপেক্ষা গ্রহণযোগ্য হয়। এটা এমনটি হতে পারে কিছু একটা তার বাবার কারণে এবং তার বাবার কারণে। আমার বড়দাদু এফিরাইম ব্লাক, শেষ প্রধান ছিলেন। এবং তারা এখনও বিলির কথা শোনে। হতে পারে সেটা সেই কারণে।

    কিন্তু আমি অন্যান্য সবার মতই। কেউ আমাকে বিশেষ বলে খাতির করে না… এখনও পর্যন্ত।

    ব্যাপারটা আমি কিছুটা বুঝতে পারলাম। স্যাম তোমাকে বিশেষভাবে খাতির করে?

    হা। সে একমত হলো। বিভ্রান্তিকরভাবে আমার চোখের দিকে তাকাল। সে আমাকে এমনভাবে দেখে যেন সে কোন কিছুর জন্য অপেক্ষা করছে…যেন আমি তার স্টুপিড গংয়ে যেকোন দিন যোগ দিতে যাচ্ছি। সে অন্য যেকোন ছেলেদের তুলনায় আমার প্রতি অনেক বেশি মনোযোগ দেয়। আমি এটা ঘৃণা করি।

    তুমি কোন কিছুতে যোগ দিতে যাচ্ছ না। আমার কণ্ঠস্বর রাগাম্বিত। এটা সত্যিই জ্যাকবকে হতবুদ্ধি করে দিয়েছে। সেটা আমাকে রাগান্বিত করেছে। এইসব রক্ষাকর্তারা নিজেদেরকে কীভাবে?

    হা। তার পা টায়ারের উপরের ময়লা ছাড়ানোর তালে চলতে লাগল।

    কি? আমি বলতে পারি সেখানে আরো বেশি কিছু আছে।

    সে ভ্রূ কুঁচকাল। তার চোখ মুখ দেখে বোঝা গেল সেখানে এক ধরনের বিষণ্ণতা খেলা করছে। সেখানে রাগের চেয়ে দুশ্চিন্তাই বেশি। এটা এমব্রি। সে ইদানিং আমাকে এড়িয়ে চলছে।

    এই চিন্তাভাবনার কোন যোগসুত্র নেই। কিন্তু আমি বিস্মিত যদি আমি তার বন্ধুর সাথের সমস্যা নিয়ে কোন প্রকার দোষারুপ করি। তুমি আমার সাথে অনেক বেশি সময় দিচ্ছ। আমি তাকে মনে করিয়ে দিলাম। কিছুটা স্বার্থপরের মত। আমি তার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।

    না। সেটা তা নয়। এটা শুধু আমি নই- এটা কুইলও। এবং সবাই। এমব্রি স্কুলের এক সপ্তাহ মিস দিয়েছে। কিন্তু সে কখনও বাসায় ছিল না। আমরা তাকে খুঁজতে চেষ্টা করেছি। যখন সে বাড়ি ফিরে আসে, তাকে দেখায়… তাকে উদভ্রান্তের মত দেখায়। ভীত। কুইল এবং আমি দুজনেই সমস্যাটি কি বলানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু সে আমাদের দুজনের কারোর সাথে কথা বলে না।

    আমি জ্যাকবের দিকে তাকালাম। আমার ঠোঁট উদ্বিগ্নতায় কাঁপতে থাকে। সে সত্যিই ভয় পেয়েছে। কিন্তু সে আমার দিকে তাকাচ্ছে না। সে তার নিজের পায়ের দিকে তাকিয়ে লাথি কষে যাচ্ছে একভাবে যেন সে কাউকে আঘাত করছে। আঘাতের পরিমাণ বাড়ছে।

    তারপর এই সপ্তাহে, সে বেরিয়েছে। এমব্রি স্যামের সাথে বেরিয়েছে। স্যামের গংয়ের সাথে। সে আজকে ক্লিফের এখানে এসেছে। তার কণ্ঠস্বর নিচু, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত।

    সে তারপর শেষ পর্যন্ত আমার দিকে তাকাল। বেলা, আমাকে বিরক্ত করার পরিবর্তে তারা তাকে কজা করেছে। সে তাদের সাথে কোন কিছু করতে চায় না। এখন এমব্রিকে দেখে মনে হচ্ছে সে স্যামের আশে পাশে মন্ত্রমুগ্ধের মত আছে।

    এবং সেটাই পলের সাথের থাকার একমাত্র পথ। শুধু একই ব্যাপার। সে এখন আর স্যামের বন্ধু নয়। সে কয়েক সপ্তাহ ধরে স্কুলে আসা বন্ধ করেছে। যখন সে ফিরে এসেছে, হঠাৎ স্যাম তাকে ঋণী করেছে। আমি জানি না এসবের মানে কি। আমি এটা এখনও বের করতে পারছি না। এবং আমি অনুভব করছি আমাকেও করতে হবে, কারণ এমব্রি আমার বন্ধু এবং…স্যাম আমার দিকে মজার দৃষ্টিতে তাকায়…এবং… সে হঠাৎ কথা বন্ধ করল।

    তুমি কি বিলির সাথে এই ব্যাপারে কথা বলেছ? আমি জিজ্ঞেস করলাম।

    তার ভয় আমার ভেতরেও ঢুকে গেল। আমার ঘাড়ের গোড়া দিয়ে ঠাণ্ডা শীতল স্রোত বেয়ে যেতে থাকে।

    তার মুখে আবার রাগের আনাগোনা। হ্যাঁ। সে নাক টানল। সেটা সাহায্যকারী।

    তিনি কি বলেছেন?

    জ্যাকবের অনুভূতি বেশ ব্যঙ্গাত্বক। যখন সে কথা বলল, তার গলার স্বর তার বাবার গলার স্বরের মত নকল হয়ে গেল। এটা নিয়ে তোমার এখনই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই জ্যাকব। কয়েক বছরের মধ্যে, যদি তুমি না করো….বেশ। আমি এটার ব্যাখ্যা পরে দিচ্ছি। তারপর তার কণ্ঠস্বর নিজের মধ্যে ফিরে এল। এটা থেকে আমি ধারণা করে নিতে পারি? সে বলার চেষ্টা করেছে এটা বয়ঃসন্ধির ব্যাপার স্যাপার বলার। উঠতি বয়সের কারণে? সেখানে আরো বেশি কিছু আছে। ভুল কিছু একটা।

    সে তার নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরল। তার হাত মুষ্ঠিবদ্ধ করল। তাকে দেখে মনে। হলো সে কেঁদে ফেলবে।

    আমি হাত বাড়িয়ে তার কোমরের চারপাশে জড়িয়ে ধরলাম। তার বুকে আমার মুখ চেপে ধরলাম। সে খুবই বিশাল। আমার মনে হলো আমি একটা বাচ্চা মেয়ে তার বুকে আছি।

    ওহ জ্যাক, এটা ঠিক হয়ে যাবে। আমি প্রতিজ্ঞা করলাম। যদি এটা খারাপ কিছু হয় তুমি আমার ওখানে এসে আমার আর বাবার সাথে থাকবে। ভয় পেয়ো না। আমরা কিছু একটা নিয়ে ভাবব।

    সে সেকেন্ডের জন্য থমকে গেল। তারপর তার বিশাল হাত দিয়ে দ্বিধাগ্রস্তভাবে আমাকে জড়িয়ে ধরল। ধন্যবাদ, বেলা। তার কণ্ঠস্বর সাধারণের চেয়ে অনেক বেশি হাস্কি।

    আমরা এক মুহূর্তের জন্য সেভাবে দাঁড়িয়ে থাকলাম। এটা আমাকে আপসেট করল না। আমি সেই জড়াজড়িতে স্বস্তিবোধ করতে লাগলাম। জ্যাকব আমাকে তার শরীরের সাথে মিশিয়ে ফেলতে চাইলাম। তার তপ্ত ঠোঁট আমার অধরের উপর আছড়ে পড়ল। সে তার বিশাল হাত আমার বুকের উপর বোলাতে লাগল। সারা শরীর জুড়ে শিহরণ বয়ে গেল। এইটা অন্যরকম একটা অনুভূতি। এইটা সেরকম কোন অনুভূতি হলো না শেষবার আমি যখন কারোর সাথে এভাবে জড়িয়ে থাকি। এটা বন্ধুত্ব। জ্যাকব খুব অন্তরঙ্গ বন্ধু।

    এটা আমার কাছে অদ্ভুত। এইরকম কাছাকাছি আসা। শারীরিকভাবের চেয়েও আবেগগতভাবে। আমি আবেগগতভাবে উদ্বুদ্ধ হলেই শারীরিক সম্পর্কের দিকে এগোই। যদিও শারীরিক সম্পর্ক আমার কাছে অদ্ভুত। তারপরেও ব্যাপারটা আমি উপভোগ করি। সমস্ত শরীর জুড়ে, শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে আসা শিহরণের কোন তুলনা নেই। এটা উপভোগ করতে আমি পছন্দ করি।

    অন্য আরেকটা মানুষের কাছ থেকেও অদ্ভুত মনে হয়। এটা আমার স্বাভাবিক অভ্যেস নয়। আমি সাধারণভাবে কোন মানুষের সাথে এত সহজভাবে মিশতে পারি না।

    কোন মানুষের সাথে।

    যদি তুমি এইভাবে আমার সাথে প্রতিক্রিয়া দেখাও আমি আরো অনেক বেশি খেয়ালি হয়ে যাব। জ্যাকবের গলার স্বর হালকা, স্বাভাবিক। তার হাসি আমার কানে ধাক্কা দিতে থাকে। তার আঙুলগুলো শান্তভাবে আমার চুল ছুঁয়ে যায়। তার হাত আমার শরীরের উঁচু নিচু পাহাড়, উপত্যকা, নদী ছুঁয়ে যায়। আমার ভাল লাগে।

    বেশ, এটা আমার জন্য বন্ধুত্ব।

    আমি তাড়াতাড়ি তাকে সরিয়ে দিলাম। তার সাথে হাসলাম। কিন্তু সিদ্ধান্ত নিলাম একটা অবস্থানে থাকার।

    এটা বিশ্বাস করা খুব কঠিন আমি তোমার চেয়ে দুবছরের বড়। আমি বললাম। বড় শব্দটার উপর জোর দিলাম। তোমার কাছে থেকে আমার মনে হচ্ছে আমি একটা বামন। তার কাছাকাছি দাঁড়ালাম। তার মুখ দেখার জন্য সত্যিই আমার মাথা উঁচু করতে হচ্ছে।

    তুমি ভুলে যাচ্ছ আমি মাত্র চল্লিশ। অবশ্যই। বয়সের সেই হিসাবে সে বলল।

    ওহ, সেটা ঠিক।

    সে আমার মাথায় চাপড় দিল। তুমি যেন একটা ছোট্ট পুতুল। সে টিজ করল। একটা চীনামাটির পুতুল।

    আমি চোখ ঘোরালাম। আরেকটা ধাপ এগুলাম। এখন চল আমরা আমাদের জিনিসগুলো দেখি।

    সিরিয়াসলি, বেলা তুমি নিশ্চিত, তুমি তা নও। সে তার হাত আমার দিকে বাড়িয়ে দিল। পার্থক্যটা হলো সেটা কোন চাটুকারিতা ছিল না। আমি কখনও তোমার চেয়ে এত ম্রিয়মাণ কাউকে দেখিনি…বেশ শুধু ব্যতিক্রম- সে কথা বন্ধ করল। আমি দূরে তাকালাম। বুঝতে চেষ্টা করলাম না সে কি বোঝাতে চাইছে।

    তো তুমি কি আজ চালানো শিখতে চাইছ? নাকি না?

    ঠিক আছে, চলো চেষ্টা করে দেখি। আমি সম্মত হলাম। আগের চেয়ে বেশি প্রাণশক্তিতে ভরপুর হয়ে গেছি। তার অসমাপ্ত বাক্যটাই আমাকে মনে করিয়ে দিল যে কেন আমি আজ এখানে।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleব্রাইডা – পাওলো কোয়েলহো
    Next Article আরব জাতির ইতিহাস – ফিলিপ কে. হিট্টি (অনুবাদ : প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ)

    Related Articles

    প্রিন্স আশরাফ

    ব্রাইডা – পাওলো কোয়েলহো

    September 22, 2025
    প্রিন্স আশরাফ

    দ্য জাহির – পাওলো কোয়েলহো

    September 22, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025
    Our Picks

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025

    আরব জাতির ইতিহাস – ফিলিপ কে. হিট্টি (অনুবাদ : প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ)

    September 22, 2025

    নিউ মুন – স্টেফিন মেয়ার

    September 22, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.