Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025

    আরব জাতির ইতিহাস – ফিলিপ কে. হিট্টি (অনুবাদ : প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ)

    September 22, 2025

    নিউ মুন – স্টেফিন মেয়ার

    September 22, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    নিউ মুন – স্টেফিন মেয়ার

    প্রিন্স আশরাফ এক পাতা গল্প645 Mins Read0

    ১১. সকালের আলোয়

    ১১.

    প্রতিবার সকালের আলোয় চোখ খুলে বুঝতে পারি, আমি বেঁচে আছি। তখনও আমার মনে ভেসে ওঠে আরেকটা ভয়াল রাতের আগমনের আশঙ্কা। আমার হৃৎপির গতি দ্রুততর হয়। হাতের তালু ঘেমে একাকার হয়ে যায়। আমি সত্যিই শ্বাস নিতে পারি না। উঠে বসি এবং নিশ্চিত হই বাবাও ভালভাবে বেঁচে আছেন।

    আমাকে এভাবে জোরে শব্দ করে লাফিয়ে উঠতে দেখে তিনি চিন্তিত হলেন। অথবা কোন কারণ ছাড়াই আমার মুখ হঠাৎ করে সাদা হয়ে যেতে দেখে।

    এই রকম আতঙ্কের মধ্য দিয়েই আরেকটা সপ্তাহ চলে গেল। জ্যাকব এখনও আমাকে ফোন করেনি। কিন্তু যখন আমি আমার স্বাভাবিক সাধারণ জীবনযাপনে মনোযোগ দিচ্ছি। কে জানে সত্যি আমার জীবন স্বাভাবিক যদি হয়ে থাকে তাও সেটা আমাকে আপসেট করে দিচ্ছে।

    আমি তাকে ভয়ানকভাবে মিস করছি।

    আগে আমি একাকী থাকতে ভয় পেতাম। এখন, আগের চেয়েও অনেক বেশি, আমি তার উচ্ছল হাসি এবং তার সংক্রমিত মুখ ভেঙচি দেখি। তার বাড়ির গ্যারেজে নিজেকে অনেক বেশি নিরাপদ বোধ করি। তার উষ্ণ হাত আমার ঠাণ্ডা আঙুল জড়িয়ে থাকা অনেক বেশি ফিল করি।

    আমি আশা করেছিলাম, সে সোমবারে আমাকে ফোন করবে। যদি এমন্ত্রির সাথে কিছুটা উন্নতি হয়ে থাকে, সে কি সেটা আমাকে জানাতে চাইবে না? আমি বিশ্বাস করতে চাই এটা তার জন্য দুশ্চিন্তার ব্যাপার তার বন্ধু সবসময় ব্যস্ত থাকে। এজন্য আমার সাথে বেড়ানো ছেড়ে দিয়েছে।

    আমি মঙ্গলবারে তাকে ফোন করলাম। কিন্তু কেউ উত্তর দিল না। এখনও কি ওই ফোন লাইনে সমস্যা আছে? অথবা বিলি কি কোন একটা কলার আইডি লাগিয়েছে?

    বুধবারে আমি প্রতি আধাঘণ্টা পর পর রাত এগারোটা পর্যন্ত ফোন করলাম। জ্যাকবের উদাত্ত উষ্ণ গলা শোনার জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলাম।

    বৃহস্পতিবারে আমি আমার বাড়ির সামনে ট্রাকে উঠে বসলাম। লকটা আবার ভাল করে লাগিয়ে দিলাম। এক ঘণ্টার জন্য চাবি হাতে নিলাম। আমি নিজের সাথে অনেক লড়েছি, লা পুশের একটা দ্রুত ট্রিপের ব্যাপারে অনেক চিন্তাভাবনা করেছি। কিন্তু আমি এটা না করে পারছি না।

    আমি জানি লরেন্ট এখন ভিক্টোরিয়ার কাছে ফিরে গেছে। যদি আমি লা পুশে যাই, আমি তাদেরকেও সেখানে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেব। যদি জ্যাকব নিকটে থাকা অবস্থায় তারা আমাকে ধরে ফেলে? এটা যতই আমাকে আহত করছে, আমি জানি এটা জ্যাকবের জন্য ভাল যে সে আমাকে এড়িয়ে চলছে। এটা তার জন্য নিরাপদ।

    এটা খুব খারাপ যে আমি কোনভাবেই বাবাকে নিরাপদে রাখতে পারছি না। আমাকে খুঁজতে আসার জন্য দুঃস্বপ্নই তাদের কাছে বেশি পছন্দনীয়। আমি কীভাবে বাবাকে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলতে পারি? যদি আমি তাকে সত্যটা বলি, তিনি তাহলে আমাকে কোন একটা রুমে তালাবদ্ধ করে রাখবেন। আমি এটাও সহ্য করব–স্বাগতম জানাব, যদি এটা তাকে নিরাপদ রাখে। কিন্তু ভিক্টোরিয়া আমাকে খোঁজার জন্য প্রথমেই এই বাড়িতেই আসবে। যদি সে আমাকে এখানে পেয়ে যায়, সেটাই তার জন্য যথেষ্ট হবে। হতে পারে সে আমাকে তখনই ছেড়ে যাবে যখন আমার সাথে তার কাজ শেষ হয়ে যাবে।

    সুতরাং আমি আর এগিয়ে গেলাম না। আমি কি মায়ের কাছে যেতে পারি? আমি কাঁপতে কাঁপতে এই চিন্তা মাথা থেকে বের করে দিলাম। আমার মায়ের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করলাম। আমি কখনও তাকে এইভাবে বিপদের মুখে ফেলতে পারি না।

    দুশ্চিন্তা আমার পাকস্থলীকে কুরে কুরে খেয়ে গর্ত করে ফেলেছে। শিগগিরই আমার সেটা সারার দরকার হবে।

    সেই রাত্রে, বাবা আমার পক্ষে আরেকটা কাজ করলেন। তিনি আবার হ্যারিকে ফোন করলেন ব্লাকরা শহরের বাইরে গিয়েছে কিনা দেখতে। হ্যারি রিপোর্ট করল বিলি কাউন্সিল মিটিংয়ে বুধবার রাতে যোগ দিয়েছিল। সে একবারও কোথায় যাওয়ার ব্যাপারে কিছু উল্লেখ করে নাই। বাবা আমাকে আর এই জাতীয় কোন ঝামেলা সৃষ্টি না করতে সর্তক করে দিলেন। জ্যাকবের যখন প্রয়োজন হবে আমাকে ফোন করবে।

    .

    শুক্রবার বিকালে আমি স্কুল থেকে গাড়ি চালিয়ে বাসায় ফিরলাম।

    পরিচিত রাস্তা বলে ততটা মনোযোগ দেই নাই। আমার মস্তিষ্কের ভেতর ইঞ্জিনের শব্দ ধীরে ধীরে থেমে যেতে থাকে। দুশ্চিন্তাও নিস্তব্ধ হয়ে যায়। তখন আমার অবচেতন মন এটা আমার জ্ঞানবহিভূত কিছু একটা ঘটে যাচ্ছে মনে করিয়ে দেয়।

    এটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করতেই নিজের বোকামির জন্য নিজেকেই গালি দেই। কেন আমি আরো আগে এই ব্যাপারটা ধরতে পারিনি। আমার বুকের মাবে ক্ষত, বিশালদেহী নেকড়ে, ভ্যাম্পায়ারদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের নেশা এসব এড়িয়ে ব্যাপারটা আমার নজরে আসে।

    জ্যাকব আমাকে এড়িয়ে চলছে। বাবা বলেছিলেন তাকে অদ্ভুত দেখাচ্ছিল। আপসেট…বিলির ফোনের উত্তর দিতে অসহযোগীতা, রূঢ় ব্যবহার।

    ধর্মের কাক! আমি ঠিকভাবেই জানি জ্যাকবের মধ্যে কি হতে চলেছে।

    এটা স্যাম উলি। এমনকি আমার দুঃস্বপ্নেও সেটা সে আমাকে বলার চেষ্টা করেছে। স্যাম জ্যাকবকে ধরেছে। অন্য ছেলেদের ক্ষেত্রে যেটা ঘটেছে জ্যাকবের ক্ষেত্রেও তাই। স্যাম আমার বন্ধুদের চুরি করেছে। জ্যাকবও স্যামের ধর্মানুষ্ঠানের শিকার হয়েছে।

    সে আমাকে একেবারের জন্য ছেড়ে যায় নাই। আমি অনুভূতির তোড়ে সেটা বুঝতে পারলাম।

    আমাদের বাড়ির সামনে অলসভাবে ট্রাকটা রাখলাম। আমি এখন কি করব? আমার বিপদটা এখন অন্যেদের ঘাড়েও ফেলে দিয়েছি।

    যদি আমি জ্যাকবকে দেখতে যাই, আমি ভিক্টোরিয়া অথবা লরেন্টকে আমার সাথে তাকে পাওয়ার একটা সুযোগ করে দেব।

    যদি আমি জ্যাকবকে উদ্ধার না করি, স্যাম তাহলে তাকে আরো শক্ত করে সেই ভয়াবহ বাধ্যবাধকতামূলক গংয়ে যোগ দেয়াবে। যদি আমি খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু না করি এটা আরো দেরি হয়ে যাবে।

    এক সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। কোন ভ্যাম্পায়ার এখনও আমার কাছে আসেনি। এক সপ্তাহ তাদের ফিরে আসার জন্য অনেক বেশি সময়। সুতরাং আমাকেই তারা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে না। তারা রাতের বেলায় আমার কাছে আসতে পারে। আমাকে লা পুশ পর্যন্ত অনুসরণ করার সুযোগটা তাদের অনেক কম। তার চেয়ে জ্যাকবকে স্যামের পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

    জঙ্গলের নির্জন রাস্তায় আরো বেশি বিপদের সম্ভবনা আছে। সেখানে কি কোন অলস দর্শনার্থী নেই কি হচ্ছে সেটা দেখার? আমি জানতাম কি ঘটতে চলেছে। এটা একটা উদ্ধার মিশন। আমি জ্যাকবের সাথে কথা বলতে যাচ্ছি। তাকে অপহরণ করে নিয়ে আসব যদি আমি পারি। আমি একবার এটা টিভি শোতে এই রকম মগজধোলাই জাতীয় জিনিস দেখেছিলাম। সেখানে কোন এক ধরনের প্রতিকারও ছিল।

    আমি সিদ্ধান্ত নিলাম সবচেয়ে ভাল হয় আমি আগে বাবাকে ফোন করি। হতে পারে লা পুশে যেটা ঘটে চলেছে তাতে কোন না কোনভাবে পুলিশের সংলগ্নতা থাকতে পারে। আমি তাড়াতাড়ি ভিতরে গেলাম। ফোনের কাছে চলে এলাম

    বাবা স্টেশন থেকে নিজেই ফোনের উত্তর দিলেন।

    চিফ সোয়ান।

    বাবা, আমি বেলা।

    কি সমস্যা?

    আমি এখন কোন রকম তর্কবির্তকে যেতে চাচ্ছি না। আমার কণ্ঠস্বর কাঁপছিল।

    আমি জ্যাকবকে নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত।

    কেন? তিনি জিজ্ঞেস করলেন। এরকম অপ্রত্যাশিত বিষয় নিয়ে আলাপের কারণে তিনি বিস্মিত।

    আমার মনে হচ্ছে… আমার মনে হচ্ছে ওখানে কিছু একটা খারাপ ব্যাপার ঘটছে। জ্যাকব আমাকে বলেছিল তার বয়েসী ছেলেদের কিছু অদ্ভুত ব্যাপার ঘটছে। এখন সে নিজেই সেরকম অদ্ভুত আচরণ করছে। আমি এ ব্যাপারে ভয় পাচ্ছি।

    কি ধরনের ব্যাপার? তিনি তার পেশাগত পুলিশী গলায় জিজ্ঞেস করলেন। সেটাই ভাল। তিনি আমাকে সিরিয়াসলি নিয়েছেন।

    প্রথমত সে ভয় পাচ্ছে। তারপর সে আমাকে এড়িয়ে চলছে। এবং এখন… আমি ভীত.. সে সম্ভবত সেই উচ্ছংখল গ্যাংয়ের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। স্যামের গ্যাং। স্যাম উলির গ্যাং।

    স্যাম উলি? বাবা আবার বিস্মিত গলায় বললেন।

    হ্যাঁ।

    উত্তর দেয়ার সময় বাবার কণ্ঠস্বর অনেক বেশি স্বস্তিকর মনে হলো আমার মনে হয় তুমি এটা ভুলভাবে নিচ্ছ, বেলা। স্যাম উলি খুব ভাল ছেলে। বেশ, সে এখন একজন পুরুষ মানুষ। ভাল পরিবারের সন্তান। তুমি অবশ্যই শুনে থাকবে বিলি তার ব্যাপারে কথা বলছিল। সে সত্যিই বিস্ময়করভাবে যুবকদের নিয়ে এই এলাকায় কাজ করছে। সেই একজন যে… বাবা বাক্যের মাঝখানেই কথা বন্ধ করে দিলেন। আমি অনুমান করতে পারছি আমাকে উদ্ধারের সেই রাত্রের কথা উল্লেখ করতে চাচ্ছেন, যে রাতে আমি জঙ্গলে হারিয়ে গিয়েছিলাম। আমি তাড়াতাড়ি কথা বললাম।

    বাবা, এটা সেই জাতীয় কিছু না। জ্যাকব তার ব্যাপারে ভয় পায়।

    তুমি কি বিলির সাথে এই ব্যাপার নিয়ে কথা বলেছ? তিনি এখন আমাকে শান্ত করার চেষ্টা করছেন। আমি স্যামের ব্যাপারে কথা বলে তার থেকে সাহায্য পাওয়ার আশা হারালাম।

    আঙ্কেল এ ব্যাপারে অবগত নয়।

    বেশ বেলা, তাহলে আমি নিশ্চিত এটা ঠিক আছে। জ্যাকব একটা বাচ্চা ছেলে। সে সম্ভবত তার চারপাশের সবকিছু নিয়ে জগাখিচুড়ি পাকিয়ে ফেলেছে। আমি নিশ্চিত সে ভাল আছে। যাই হোক, সে তার প্রতিটি পদক্ষেপ তোমার সাথে ফেলতে পারে না।

    এটা আমাকে নিয়ে নয়। আমি জোর দিলাম। কিন্তু সেই যুদ্ধ হেরে গেলাম।

    আমি মনে করি না এটা নিয়ে তোমার দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়া উচিত। বিলিকেই জ্যাকবের ব্যাপারে ছেড়ে দাও।

    বাবা…আমার কণ্ঠস্বর কিছুটা একঘেয়ে শোনাল।

    বেলা। আমি এখন আমার নিজের কাজে খুব ব্যস্ত আছি। দুজন সন্ত্রাসী ক্রিসন্ট লেকের বাইরে থেকে হারিয়ে গেছে। তার উদ্বিগ্ন গলা একবারে চরম সেই নেকড়ে সমস্যা আমাদের হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।

    এই সংবাদ শুনে আমি কিছুক্ষণের জন্য হতবুদ্ধ হয়ে গেলাম। নেকড়েগুলো লরেন্টের সাথে যুদ্ধে টিকে আছে…

    তুমি কি তাদের কি হয়েছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত? আমি জিজ্ঞেস করলাম।

    সেটা নিয়েই ভীত সোনা। সেখানে তিনি দ্বিধান্বিত। সেখানে তাদের পায়ের দাগ আছে এবং… এইবারে রক্তও দেখা গেছে।

    ওহ! তাহলে তারা মুখোমুখি হয়নি। লরেন্ট অবশ্যই সাধারণভাবে নেকড়েগুলোকে রেখে পালিয়ে গেছে, কিন্তু কেন? যেটা আমি তৃণভূমিতে দেখেছিলাম তা শুধু অদ্ভুত থেকে অদ্ভুততর হচ্ছে। বোঝার জন্য আরো বেশি অসম্ভব।

    দেখ। আমাকে সত্যিই এখন যেতে হবে। জ্যাকবের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হয়ো না, বেলা। আমি নিশ্চিত এটা কিছুই না।

    ভাল। আমি হতাশভাবে বললাম। হতাশ এইজন্য যে ব্যাপারটা আরো বেশি সংকটময় অবস্থায় চলে গেছে।

    রাখি। আমি ফোন রেখে দিলাম।

    আমি দীর্ঘক্ষণ এক দৃষ্টিতে ফোনের দিকে তাকিয়ে রইলাম। গোল্লায় যাক। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম।

    দুটো রিং হওয়ার পর বিলি উত্তর দিলেন।

    হ্যালো?

    হেই আঙ্কেল। আমি প্রায় চেঁচিয়ে উঠলাম। আমি আরো বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ গলায় বলতে চেষ্টা করলাম। আমি শুরু করলাম। আমি কী জ্যাকবের সাথে কথা বলতে পারি, প্লীজ।

    জ্যাকব এখানে নেই।

    বেশ একটা ধাক্কা খেলাম। আপনি কি জানেন সে কোথায়?

    সে তার বন্ধুদের সাথে বাইরে বেরিয়ে গেছে। বিলির কণ্ঠস্বরে অহেতুক সর্তকতা।

    ওহ, ইয়ে? আমি কি তাদের কাউকে চিনি? কুইল? নামটা যতটা সাধারণভাবে বেরিয়ে এল, ততটা স্বাভাবিক না।

    না। বিলি আস্তে আস্তে বললেন আমি মনে করি না সে আজ কুইলের সাথে বেরিয়েছে।

    আমি জানতাম এটা স্যামের নাম উল্লেখ করার চেয়ে ভাল।

    এমব্রি? আমি জিজ্ঞেস করলাম।

    বিলিকে এখন উত্তর দেয়ার সময় বেশ সুখী সুখী মনে হলো। হ্যাঁ। সে এমব্রির সাথে।

    এটাই আমার জন্য যথেষ্ট। এমব্রি তাদের মধ্যের একজন।

    বেশ, সে যখন বাসায় ফেরে তখন তাকে বলবেন আমাকে ফোন করতে। ঠিক আছে?

    নিশ্চয়, নিশ্চয়। কোন সমস্যা নেই। ক্লিক।

    শিগগিরই দেখা হবে আঙ্কেল। আমি রেখে দেয়া ফোনে বিড়বিড় করে বললাম।

    আমি লা পুশে ড্রাইভ করে অপেক্ষা করার মনস্থির করলাম। আমি তার বাড়ির সামনে সারারাত বসে থাকব যদি আমার তা করতে হয়। আমি স্কুল মিস দেব। যে ছেলে বাড়ির বাইরে গেছে তাকে কোন না কোন সময় বাড়িতে আসতেই হবে। সে এলে তাকে আমার সাথে কথা বলতে হবে।

    আমি লা পুশে এত তাড়াতাড়ি পৌঁছুলাম যেন কয়েক সেকেন্ডে লেগেছে মনে হলো। আমি সেই ছোট্ট বাড়িখানা দেখতে পেলাম।

    রাস্তার বাম পাশ দিয়ে বেসবল ক্যাপ মাথায় বেশ লম্বা চওড়া গোছের একছেলে এদিকে এগিয়ে আসছে।

    হঠাৎ এক মুহূর্তের জন্য গলার কাছে নিঃশ্বাস আটকে গেল। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী হয়ে উঠলাম। জ্যাকব কোন রকম চেষ্টা ছাড়া চলে যাচ্ছে দেখে থমকে গেলাম। কিন্তু এই ছেলেটা অনেক বেশি চওড়া গোছের। ক্যাপের নিচে তার চুলগুলো বেশ ছোট ছোট করে ছাটা মনে হলো। এমনকি পিছন দিক থেকেও আমি নিশ্চিত হলাম যে এটা কুইল। যদিও শেষবার যখন তাকে দেখেছিলাম তার চেয়ে অনেক বড় লাগছে। এই ছেলেটার কি হয়েছে? তারা কি পরীক্ষামূলকভাবে এমন কিছু খাওয়াচ্ছে যেটা হরমোনকে বাড়িয়ে দেয়?

    তার পাশে গাড়ি থামাতে রাস্তার ভুল পাশ দিয়ে গাড়ি চালালাম। গাড়ির ইঞ্জিন তার পাশে গজরাতে লাগলে সে আমাকে দেখতে পেল।

    কুইলের অভিব্যক্তি বিস্মিত হওয়ার পরিবর্তে আমাকে ভীত করে তুলল। তার মুখ বিবর্ণ। সে গুম হয়ে আছে। তার কপালে দুশ্চিন্তায় কয়েকটা ভাঁজ পড়েছে।

    ওহ, হেই বেলা। সে নিরুৎসাহের সাথে আমাকে সম্বোধন করল।

    হাই কুইল…তুমি ঠিক আছে তো?

    সে আমার দিকে অদ্ভুতভাবে তাকাল ফাইন।

    আমি কি তোমাকে কোথায় নামিয়ে দিতে পারি? আমি প্রস্তাব করলাম।

    নিশ্চয়, আমি ধারণা করছি। সে বিড়বিড় করে বলল। সে লাফ দিয়ে ট্রাকের সামনের দিকে চলে এল। প্যাসেঞ্জারের দরজা খুলে ভেতর উঠে পড়ল।

    কোথায় যেতে চাও?

    আমাদের বাড়ি উত্তর দিকে। দোকানগুলোর ঠিক পিছনেই। সে আমাকে বলল।

    তুমি কি আজ জ্যাকবকে দেখেছো? প্রশ্নটা আমার দিক থেকে এমনভাবে এল যে সে তার কথা শেষ করতে পারল না।

    আমি কুইলকে আগ্রহের সাথে দেখতে থাকলাম। তার উত্তরের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। সে কথা বলার আগে সেকেন্ডের জন্য জানালার বাইরে তাকাল।

    একটা দুরত্ব থেকে। সে শেষ পর্যন্ত বলল।

    একটা দুরত্ব? আমি প্রতিধ্বনি করলাম।

    আমি চেষ্টা করছিলাম তাদেরকে অনুসরণ করার। সে এমব্রির সাথে আছে। তার কণ্ঠস্বর নিচুলয়ের, ইঞ্জিনের গর্জন ছাপিয়ে শোনা খুব কঠিন। আমি কাছাকাছি ঝুঁকে এলাম। আমি জানি তারা আমাকে দেখেছে। কিন্তু তারা ঘুরে গেল। তারা গহীন জঙ্গলের মধ্যে হারিয়ে গেল। আমি মনে করি না তার একাকী ছিল। আমি মনে করি স্যাম এবং তার সাঙ্গোপাঙ্গোরা তাদের সাথে হয়তো থাকতে পারে।

    আমি গাধার মত জঙ্গলের চারধারে ঘণ্টাখানিকের মত ঘুরেছি। তাদেরকে ডেকেছি। আমি আবার রাস্তায় এলাম এবং তখন তুমি গাড়ি চালিয়ে আসছিলে।

    তো স্যাম তাকেও পেয়েছে। আমি দাঁতে দাঁত ঘষে বললাম।

    কুইল আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল তুমিও তাহলে সে সম্বন্ধে জানো?

    আমি মাথা ঝাঁকালাম জ্যাক আমাকে বলেছিল…আগে।

    আগে।

    জ্যাক কি এখন অন্যদের মতই খারাপ?

    কখনও স্যামের পিছু ছাড়া হয় না। কুইল মাথা ঘুরিয়ে জানালা দিয়ে থুতু ফেলল।

    এবং তার আগে সে কি সবাইকে এড়িয়ে গিয়েছিলো? সে কি আপসেট হয়েছিল?

    তার কণ্ঠস্বর নিচু এবং রুক্ষ্ম না। অন্যদের সাথে অনেক আগে থেকে না। হতে পারে সেটা এক দিনই। তারপর স্যাম তাকে তার সাথে নিয়ে নেয়।

    তুমি এটাকে কি মনে করো? মাদকদ্রব্য অথবা অন্যকিছু?

    আমি কখনও দেখিনি জ্যাকব বা স্যাম এই জাতীয় কোন কিছু নিচ্ছে… কিন্তু আমি আর কতটুকু জানতে পারি? এটা আর কি হতে পারে? এবং কেন বড়রা এ ব্যাপারে দুশ্চিন্তা করছে না? সে মাথা নাড়ল। তার চোখের পাতায় ভয় ছায়া ফেলল। জ্যাকব এসব কিছুর অংশ হতে চাইনি…ধর্মানুষ্ঠানের এই মোহাচ্ছন্নতায় জড়াতে চাইনি। আমি বুঝতে পারি না কি তাকে পরিবর্তিত করে দিচ্ছে। সে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। তার মুখে ভয়ের ছাপ। আমি পরবতজিন হতে চাই না।

    তার সেই ভয় আমার চোখেও খেলে গেল। দ্বিতীয়বার আমি এই জাতীয় জিনিসের কথা শুনছি। আমি কাঁপতে লাগলাম তোমার বাবা মা কোন সাহায্য করতে পারে কি?

    সে মুখ ভেঙাল। ঠিক, আমার দাদা জ্যাকবের বাবার কাউন্সিলের একজন। স্যাম উলি এর আগে এই জাতীয় ঘটনা ঘটিয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত সে সচেতন আছে।

    আমরা একে অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। আমরা এখন লা পুশে। আমার ট্রাক খালি রাস্তা দিয়ে রাজকীয় হালে চলছে। আমি গ্রামের একমাত্র দোকানটা দেখতে পেলাম। এটা বেশি দূরে নয়।

    আমি এখন বেরোব। কুইল বলল। আমাদের বাড়িটা এটার ঠিক ডান দিকে। সে আমাকে গাছপালা ঢাকা দোকানের পিছনের জায়গাটা দেখাল। আমি গাড়ি থামালাম। সে লাফ দিয়ে বেরোল।

    আমি এখন জ্যাকবের জন্য অপেক্ষা করতে যাচ্ছি। আমি বেশ কঠোর স্বরে বললাম।

    তোমার সৌভাগ্য ভাল হোক। সে ধাক্কা দিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল এবং লাফ দিয়ে একাকী রাস্তায় উঠে গেল। তার মাথা সামনের দিকে ঝুঁকে আছে।

    গাড়ির ইউটার্ন নেয়া পর্যন্ত কুইলের মুখ আমাকে তাড়িয়ে বেড়াল। আমি ব্লাকদের বাড়ির দিকে এগুলাম। সে ভয় পাচ্ছে সেই পরবর্তীজন কি না। এখানে কি ঘটে চলেছে?

    আমি জ্যাকবের বাড়ির সামনে থামলাম। ইঞ্জিন থেমে গেল এবং আমি জানালার কাঁচ নামিয়ে দিলাম। আজ খুব গুমোট। কোন বাতাস নেই। আমি ড্যাশবোর্ডে পা তুলে দিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম।

    আমার চোখের সামনে একটা নড়াচড়ার আভাস দেখতে পেলাম। আমি ঘুরে লক্ষ্য করলাম বিলি জানালা দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। তার মুখ ভঙ্গিতে দ্বিধাগ্রস্ত। আমি তার দিকে তাকিয়ে শুষ্ক হাসি দিলাম। কিন্তু যেখানে ছিলাম সেখানেই থাকলাম।

    তার চোখ সরু হয়ে গেল। তিনি জানালার কাঁচের উপরের পর্দা ফেলে দিলেন।

    যত সময়ই লাগুক না কেন থাকার প্রস্তুতি নিলাম। আশা করছি আমার কিছু করার আছে। আমি আমার ব্যাকপ্যাক থেকে একটা কলম বের করলাম। পরীক্ষার প্রস্তুতির বইও বের করলাম। আমি সেটাতে দাগ টানা শুরু করলাম।

    শুধু একসারি দাগ কেটে শেষ করেছি এমন সময় একটা তীক্ষ্ম শব্দ আমার পিছনের দরজায় ধাক্কা দিতে লাগল।

    আমি লাফ দিয়ে উঠলাম। সেদিকে তাকালাম। আশা করছিলাম বিলি।

    তুমি এখানে কি করছ বেলা? জ্যাকব গুঙিয়ে উঠল।

    আমি তার দিকে অনুভূতিহীনভাবে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম।

    জ্যাকব এক সপ্তাহের মধ্যে বেশ তাড়াতাড়িই বদলে গেছে। আমি যেরকম দেখেছিলাম তার চেয়ে অনেক বদলে গেছে। প্রথম যে জিনিসটা তার আমার চোখে পড়ল সেটা হচ্ছে তার চুল তার সুন্দর চুলগুলো সব চলে গেছে। এটা খুব ছোট ছোট করে ছাটা। একটা কালো কাপড় দিয়ে তার মাথা ঢাকা। তার মুখের রেখাগুলোও খুব শক্ত পোক্ত কাঠিন্যে ভরা। তার কাঁধ ভিন্নরকম। সেগুলো আগের চেয়ে দৃঢ়। জানালা ধরা হাতটা খুব পেশীবহুল। শিরা আর ধমনীগুলো চামড়ার নিচে আগের চেয়ে বেশি ফুটে উঠেছে। কিন্তু এই সকল শারীরিক পরিবর্তন খুবই অপ্রতুল।

    তার চোখ মুখের অভিব্যক্তি তাকে প্রায় অপরিচিতের মত করে তুলেছে। তার সেই উদাত্ত বন্ধুত্বসুলভ হাসি চুলের মতই চলে গেছে। তার কালো চোখের সেই উষ্ণতাও চলে গেছে। তার পরিবর্তে একটা গুমোট ভাব সেখানে ভর করেছে। যেটা দেখে মনে হয় সে খুব বিরক্ত। জ্যাকবের ভেতর এখন একটা অন্ধকার কাজ করছে। যেন সূর্যের উপর কালোয় ছেয়ে গেছে।

    জ্যাকব? আমি ফিসফিস করে বললাম।

    সে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। তার চোখ টান টান, রাগান্বিত।

    আমি বুঝতে পারলাম আমরা একাকী নই। তার পিছনে আরো চারজন এসে থেমেছে। সবাই লম্বা এবং রুক্ষ্ম স্বভাবের। ঠিক জ্যাকবের মত করেই চুল ছাটা। তারা হয়তো ভাই হতে পারে এমনকি সেই দলের মধ্য থেকে এমব্রিকেও আলাদা করতে পারলাম না। তাদের সবার চোখের ভেতর একই রকম ঔদ্ধত্য।

    একজন বাদে সবার চোখে মুখেই রুক্ষতা খেলা করছে। সবচেয়ে বড়জন। কয়েক বছরের বড়। স্যাম সবার পিছনে দাঁড়িয়ে ছিল। তার মুখ ভঙ্গি শান্ত এবং নিশ্চিত। আমি ঢোক গিলালাম। আমি তার দিকে তাকাতে চাইলাম না। আমি তার চেয়ে বেশি কিছু করতে চাইলাম। যে কোন কিছুর চেয়ে বেশি। আমি সাহসী এবং ভংয়কর হতে চাইলাম। এমন একজন যাকে এই দলের সবাই ভয় পায়। এমন কেউ যাকে স্যাম উলি ভয় পায়।

    আমি একজন ভ্যাম্পায়ার হতে চাইলাম।

    এই ভয়ংকর চাওয়া ধরা পড়ায় বাতাস প্রবাহিত হলো। এটা সমস্ত ইচ্ছের বিরুদ্ধে সবচেয়ে নিষিদ্ধ চাওয়া। এমনকি আমি একমাত্র এই বিদ্বেষপূর্ণ ইচ্ছে পোষণ করি শত্রুর বিরুদ্ধে সুবিধা নেয়ার জন্য। কারণ এটাই সবচেয়ে কার্যকরী। চিরদিনের জন্য আমার ভবিষ্যৎ হারাব। সত্যিকার অর্থে কখনো ফিরে আসতে পারব না। আমি ভিতরে ভিতরে গুঙিয়ে উঠলাম। আমার বুকের ভেতর ক্ষতের আভাস শূন্যতা সৃষ্টি করতে থাকে।

    তুমি কি চাও? জ্যাকব জানতে চাইল। তার অভিব্যক্তি আগের চেয়ে আরো বেশি রুক্ষ হয়ে উঠল। সে আমার মুখের মধ্যে আবেগের উঠাপড়া দেখতে পেল।

    আমি তোমার সাথে কথা বলতে চাই। আমি দুর্বল গলায় বললাম। আমি সেদিকে দৃষ্টিপাত করতে চেষ্টা করলাম। কিন্তু আমি এখনও আমার সেই অদ্ভুত স্বপ্ন থেকে বেরুনোর চেষ্টা করতে থাকলাম।

    চালিয়ে যাও। সে হিসহিস করে দাঁতে দাঁত চেপে বলল। তার চাহনি ভয়ংকর। আমি কখনও তাকে কারোর প্রতি ওভাবে তাকাতে দেখেনি। আমার দিকে তো নয়ই। এটা আমাকে বিস্ময়করভাবে আঘাত করল। একটা শারীরিক ব্যথা। যেন আমার মাথায় ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।

    একাকী! আমিও হিসহিসিয়ে বলাম। আমার কণ্ঠস্বর বেশ দৃঢ়।

    সে তার পিছনের দিকে তাকাল। আমি জানি তার চোখ কোনদিকে যাচ্ছে। প্রত্যেকেই স্যামের প্রতিক্রিয়ার জন্য তার দিকে ঘুরে গেল।

    স্যাম একবার মাথা ঝাঁকাল। তার মুখের ভাব অপরিবর্তনীয়। সে একটা অপরিচিত গ্রাম্যভাষায় একটা ছোটখাট মন্তব্য করল। আমি শুধু এটুকু নিশ্চিত হলাম যে এটা ফরাসি বা স্প্যানিশ নয়। কিন্তু আমি ধারণা করলাম এটা কুইলেট। সে ঘুরে জ্যাকবের বাড়ির দিকে হেঁটে গেল। অন্যরাও, পল জ্যারেড এবং এমব্রিও। আমি অনুমান করলাম, তার তাকে অনুসরণ করছে।

    ঠিক আছে। অন্যরা চলে যাওয়ায় জ্যাকবকে এখন আগের চেয়ে একটু কম রাগাম্বিত মনে হচ্ছে। তার মুখ এখন কিছুটা শান্ত। কিন্তু এখনও আগের চেয়ে আশাহত। তার মুখ দেখে মনে হচ্ছে সেটা চিরস্থায়ীভাবে নিচের দিকে ঝুলে পড়েছে।

    আমি গভীর করে শ্বাস নিলাম। তুমি জানো আমি তোমার কাছে কি জানতে চাই।

    সে উত্তর দিল না। সে আমার দিকে তিক্ত চোখে তাকিয়ে রইল।

    আমি পেছনে তাকালাম। নিঃশব্দতা দীর্ঘায়িত মনে হলো। তার মুখের ব্যথা আমাকে উত্তেজিত করে তুলল। আমি আমার গলায় আবার একটা কিছু আটকে গেছে অনুভব করলাম।

    আমরা কি হাঁটতে পারি? আমি জিজ্ঞেস করলাম যাতে আমি এখনও কথা বলতে পারি।

    সে কোনভাবেই সাড়া দিল না। তার মুখের ভাব পরিবর্তিত হলো না।

    আমি গাড়ি থেকে বের হলাম। উত্তর দিকের গাছগুলোর দিকে হাঁটা শুরু করলাম। আমার পা ভিজে ঘাসে ডুবে যাচ্ছিল। রাস্তার পাশের কাঁদার সাথে শুধু সেই শব্দই ছিল। প্রথমে আমি ভেবেছিলাম সে আমাকে অনুসরণ করছে না। কিন্তু যখন আমি চারিদিকে তাকালাম, সে আমার ঠিক ডানপাশে। তার পা যেভাবে হোক আমার চেয়ে কম শব্দকারী কোন পথ খুঁজে পেয়েছে।

    আমি গাছপালাগুলোর ভেতর বেশি ভালবোধ করছিলাম। যেখানে স্যামের পক্ষে দেখা সম্ভব নয়। যখন আমরা হাঁটছিলাম, আমি সঠিক জিনিসটা বলার জন্য আসছিলাম। কিন্তু কিছুই এলো না। আমি শুধু আগের চেয়ে আরো বেশি রেগে যাচ্ছিলাম। জ্যাকব এই চক্রের মধ্যে পড়েছে… আর বিলি সেটার অনুমোদন দিয়েছে..যে কারণে স্যাম সেখানে অমন নিশ্চিত আর শান্তভাবে দাঁড়িয়েছিল।

    জ্যাকব হঠাৎ রাস্তার উপরে উঠে পড়ে আমার সামনে চলে আসে। তারপর সে আমার মুখোমুখি হওয়ার জন্য ঘুরে দাঁড়াল। সে আমার পথের সামনে এমন বাধা হয়ে দাঁড়ায় যাতে আমি থামতে বাধ্য হই।

    আমি তার হঠাৎ ওরকম চলাচলে দাঁড়াতে বাধ্য হলাম। জ্যাকব আমার এত কাছে। যেমনটি এর আগে আমরা একত্রে সময় কাটিয়েছে। কখন এই পরিবর্তনটা শুরু হলো?

    কিন্তু জ্যাকব আমাকে ভাবার মত যথেষ্ট সময় দিল না।

    এখন কি বলবে বলে ফেল। সে বলল দৃঢ় কিন্তু হাস্কি স্বরে।

    আমি অপেক্ষা করছিলাম। সে জানত আমি কি চাচ্ছি।

    এটা তাই নয় যেটা তুমি ভাবছ। তার কণ্ঠস্বর বেপরোয়া। আমি ওই পথ ছেড়ে দিয়েছি।

    তো, তাহলে এটা কি?

    সে অনেক সময় ধরে আমার মুখের ভাব পড়ার চেষ্টা করল। রাগ পুরোপুরি ৩ চোখ ঠিকরে বেরিয়ে এল না। আমি তোমাকে বলতে পারি না। সে শেষ পর্যন্ত শ।

    আমার চোয়াল শক্ত হয়ে গেল। আমি দাঁতে দাঁত চেপে কথা বলা।  ভেবেছিলাম আমরা বন্ধু।

    আমরা ছিলাম। অতীতের ছিলামের উপর কিছুটা জোর দিয়ে সে বলল।

    কিন্তু তোমার এখন আর কোন বন্ধুর দরকার নেই। আমি তিক্তস্বরে বললাম তুমি স্যামকে পেয়েছ। এটাই কি ঠিক নয়–তুমি সবসময় তাকে এতবেশি অন্য চোখে দেখতে।

    আমি তাকে আগে বুঝতে পারি নাই।

    আর এখন তুমি আলোকিত পথের সন্ধান পেয়েছ।

    আমি যেমনটি ভেবেছিলাম এটা তেমন কিছু ছিল না। সেটা স্যামের কোন দোষ ছিল না। সে আমাকে তার পক্ষে যতটা সম্ভব সাহায্য করেছে। তার কণ্ঠস্বর ধীরে ধীরে ভাঙা ভাঙা হয়ে গেল। সে আমার মাথার দিকে তাকাল। রাগ তার চোখ মুখ দিয়ে ফুটে বেরুচ্ছিল।

    সে তোমাকে সাহায্য করেছে। আমি সন্দেহজনকভাবে পুনরাবৃত্তি করলাম। স্বাভাবিকভাবে।

    কিন্তু জ্যাকবকে দেখে মনে হলো না যে সে শুনছে। সে বড় বড় করে গভীর শ্বাস নিচ্ছে। নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছে। সে এতটাই উন্মত্ত হয়ে উঠেছে যে তার হাত কাঁপছে।

    জ্যাকব, প্লিজ। আমি ফিসফিস করে বললাম। তুমি কি আমাকে বলবে না কি ঘটেছিল? হতে পারে আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারি।

    আমাকে এখন আর কেউ সাহায্য করতে পারবে না। কথাগুলো নিচু স্বরের গোঙানীর মত বের হলো। তার কণ্ঠস্বর এখানো ভাঙা ভাঙা।

    সে তোমার উপর কি করেছে? আমি জানতে চাইলাম। আমার চোখে কান্না জমছে। আমি আগের মতই তার কাছে গেলাম। আমার হাত তার দিকে বাড়িয়ে দিলাম।

    এইবারে সে কুঁকড়ে গেল। তার হাত প্রতিরক্ষা মূলকভাবে ধরে রাখল। আমাকে স্পর্শ করো না। সে ফিসফিস করে বলল।

    স্যাম কি তোমাকে ধরবে? আমি বিড়বিড় করে বললাম। কান্না আমার চোখের কোণ বেয়ে গড়িয়ে পড়ল। আমি সেগুলো আমার হাতের পেছন দিয়ে মুছে ফেললাম। আমার হাত বুকের কাছে ভাঁজ করে রাখলাম।

    স্যামকে দোষ দেয়া বন্ধ করো। তার এই কথাগুলো দ্রুত বেরিয়ে এলো। যেন এটা একটা প্রতিক্রিয়া। তার হাত মাথার উপর তার সেই লম্বা চুলগুলো ধরতে গেল যেগুলো এখন আর নেই। তারপর হাত অসাড়ের মত পাশে পড়ে রইল।

    তাহলে আমি কাকে দোষ দেব? আমি বললাম।

    সে হাসার চেষ্টা করল। ম্লান হাসি।

    তুমি সেটা শুনতে চেয়ো না।

    কারণটা কি আমি জানি না। আমি জোর গলায় বললাম। আমি জানতে চাই। এবং আমি এখনই জানতে চাই।

    তুমি ভুল করছে। সে কথা ফিরিয়ে দিল।

    তুমি কোন সাহসে বল আমি ভুল করেছি। আমি সেই একজন নেই যে তোমার মগজ ধোলাই করিয়েছে। এখন আমাকে বল এগুলো কার দোষ। যদি এটা তোমার সেই মহামতি স্যামের না হয়ে থাকে তো কার?

    তুমি এটা জিজ্ঞেস করছে। সে আমার দিকে তাকিয়ে গুঙিয়ে উঠল। সে কঠোরভাবে তাকিয়ে আছে। তুমি যদি কাউকে দোষ দিতে চাও, কেন তুমি তোমার আঙুল সেই সব কুৎসিত নোংরা দুষ্ট চরিত্রের রক্ত পিপাসুদের দিকে দিচ্ছ না যাদের তুমি এত ভালবাস?

    আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। আমার শ্বাস একটা হুহুস শব্দের মত বের হতে থাকল। আমি যেন সেই জায়গায় জমে যেতে থাকলাম। তার দুমুখী কথার ছোরায় যেন আমি ক্ষত বিক্ষত হতে থাকলাম। সেই ব্যথাটা পরিচিত ভঙ্গিতে আমার শরীর দিয়ে বয়ে যেতে লাগল। ভেতর বাহির সেই ব্যথার গর্তটা ভরে উঠতে লাগল। কিন্তু এটা দ্বিতীয় জায়গা। আমি বিশ্বাস করতে চাই যে আমি তার কাছ থেকে সঠিক কথা শুনছি। তার মুখে কোনরকম সিদ্ধান্তহীনতার চিহ্ন দেখা গেল না। শুধুই উন্মত্ততা।

    আমি এখনও হা হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।

    আমি তোমাকে বলেছিলাম তুমি এটা শুনতে চেয়ো না। সে বলল।

    আমি বুঝতে পারছি না তুমি কি বুঝাতে চাচ্ছো? আমি ফিসফিস করে বললাম।

    সে অবিশ্বাসে এক চোখের ভ্রু তুলল। আমি মনে করি তুমি বুঝতে পেরেছো, প্রকৃতপক্ষে আমি কি বোঝাতে চাচ্ছি। তুমি আমাকে দিয়ে এটা বলিয়ে নিতে পার না। পার কি? আমি তোমাকে আঘাত করা পছন্দ করি না।

    আমি বুঝতে পারছি না তুমি কি বুঝাতে চাচ্ছ? আমি যান্ত্রিকভাবে পুনরাবৃত্তি করলাম।

    কুলিনরা। সে ধীরে ধীরে বলল। শব্দটা খুব ধীরে তার মুখ দিয়ে বের করল। যখন সে এটা বলল আমার মুখ খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে লাগল। আমি সেটা দেখেছিলাম। আমি তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখতে পারি এটা তোমার কাছে কি যখন আমি তাদের নাম বললাম।

    আমি অবিশ্বাসে মাথা আগে পিছে নাড়ালাম। কিছু সময় ধরে একই সাথে বিষয়টি পরিষ্কার হতে চেষ্টা করছিলাম। সে কীভাবে এই ব্যাপারটা জানে? এবং এটা কীভাবে স্যামের সাথে যোগ দেয়ার ব্যাপারে কাজ করছে? কি দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে পারে এরকম একটা সংগঠন গড়ার, যখন ফর্কে এখন আর কোন ভ্যাম্পায়াররা বাস করে না? কেন জ্যাক বিশ্বাস করতে শুরু করেছে কুলিনদের নিয়ে এই জাতীয় গল্প, যখন দীর্ঘ সময় আগে তাদের সকল সাক্ষ্যপ্রমাণ চলে গেছে, তারা আর কখনও ফিরে আসবে না?

    আমার সাড়া দিতে বেশ সময় লাগল। আমাকে বলো না তুমি বিলির কুসংস্কারাচ্ছন্ন আবোল তাবোল শুনেছো। আমি বিদ্রুপাতুকভাবে এটা বললাম।

    সে অনেক বেশি জানে। আমি তার এ জন্য যতটা প্রশংসা করতে চাই তার চেয়ে বেশি।

    সিরিয়াস হও! জ্যাকব।

    সে আমার দিকে সংকটময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল।

    কুসংস্কারের ব্যাপার। আমি তাড়াতাড়ি বললাম। তুমি কোন ব্যাপারে দোষ দিচ্ছ। আমি এখনও বুঝতে পারছি না ..কুলিনরা… তারা প্রায় অর্ধ বছর আগে এখান থেকে চলে গেছে। স্যাম যা করছে তার জন্য তুমি তাদেরকে এখন কীভাবে দোষারুপ করতে পার?

    স্যাম কিছুই করছে না, বেলা। আমি জানি যে তারা চলে গেছে। কিন্তু কোন কোন সময়…জিনিসগুলো চলমান হয় এবং তারপর এটা খুব দেরি হয়ে যায়।

    কি চলমান হয়? কি বেশি দেরি হয়ে যায়? তুমি কি জন্য তাদেরকে দোষারুপ করছ?

    সে হঠাৎ আমার ঠিক মুখোমুখি এসে পড়ল। একেবারে মুখের উপরে। তার রাগ চোখ ঠিকরে বেরুচ্ছিল। অস্ত্রিত্বের জন্য। সে হিসহিসিয়ে উঠল।

    আমি বিস্মিত হলাম। মাথার ভেতর থেকে আসা এ্যাডওয়ার্ডের কণ্ঠস্বরের সতর্কবাণীর শুনলাম। যদিও আমি ঠিক ভীতকর অবস্থায় ছিলাম না।

    শান্ত হও বেলা। তাকে রাগিয়ে দিও না। এ্যাডওয়ার্ডের সর্তকবাণী আমার কানে পৌঁছাল।

    এ্যাডওয়ার্ডের নাম সেই সর্তকতার দেয়াল ভেঙে দিয়েছে। আমার পিছনেই কবর দিয়েছে। আমি এখন সেটা আবার তালাবদ্ধ করতে সমর্থ। আমি এখন আর ব্যথা পাই না। যখন আমি তার সেই মূল্যবান কণ্ঠস্বর শুনি তখনও না।

    জ্যাকব আমার সামনে রাগে কাঁপছিল। বিস্ফোরিত হচ্ছিল।

    আমি বুঝতে পারছিলাম না কেন জ্যাকবের ভ্রান্তি আমার মনের মধ্যে কাজ করছে। জ্যাকব উপস্থিত কিন্তু সে হলো জ্যাকব। সেখানে কোন এড্রেনালিন ক্ষরণ নেই। বিপদেরও কোন কারণ নেই।

    তাকে শান্ত হওয়ার জন্য কিছুটা সময় দাও। এ্যাডওয়ার্ডের কণ্ঠস্বর আমাকে জোর দিয়ে বলল।

    আমি দ্বিধাগ্রস্তভাবে মাথা নাড়লাম। তুমি হাস্যকর। আমি তাদের দুজনেই বললাম।

    বেশ ভাল। জ্যাকব উত্তর দিল। সে গভীরভাবে শ্বাস নিল। আমি এটা নিয়ে তোমার সাথে তর্ক করতে চাই না। এটা আর যে কোনভাবেই হোক কোন ব্যাপার নয়। ক্ষতিটা হয়েই গেছে।

    কি ক্ষতি?

    আমি চিৎকার করে তার মুখের উপর প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করলেও সে কোন প্রতিক্রিয়া দেখাল না।

    চলো, ফিরে যাওয়া যাক। আর বেশি কিছু বলার নেই।

    এখনও অনেক কিছুই বলার জন্য বাকি আছে। তুমি এখনও কিছুই বল নাই।

    সে আমার পাশে পাশে হাঁটতে লাগল। আমরা বাড়ির দিকে ফিরতে লাগলাম।

    আমি আজ কুইলের সাথে ছিলাম। আমি তার দিকে তাকিয়ে বললাম।

    সে হঠাৎ করে থেমে গেল কিন্তু ঘুরল না।

    তুমি তোমার বন্ধুকে মনে করতে পার? কুইল? হ্যাঁ। সে ভীত।

    জ্যাকব আমার মুখোমুখি হওয়ার জন্য ঘুরে দাঁড়াল। তার অভিব্যক্তিতে ব্যথার ছাপ। কুইল, সে এইটুকুই বলল।

    সেও তোমাকে নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। সে উত্তর মত হয়ে গেছে।

    জ্যাকব আমার দিকে বেপরোয়া চোখে তাকাল।

    আমি বলে চললাম সে ভীত এ কারণে যে সেই পরবর্তী শিকার।

    জ্যাকব এটা গাছকে আশ্রয়ের জন্য হাত দিয়ে ধরল। তার মুখ লালচে বাদামী অদ্ভুত সবুজাভে রুপ নিল। সে পরবর্তী শিকার হতে পারে না। জ্যাকব নিজে নিজে বিড়বিড় করল। সে হতে পারে না। এটা এখন শেষ হয়ে গেছে। এটা এখন আর ঘটবে না। কেন? তার মুষ্টিবদ্ধ হাত গাছের গায়ে আঘাত করতে থাকে। এটা খুব বড় একটা গাছ ছিল না। চিকন এবং জ্যাকবের চেয়ে মাত্র কয়েক ফিট উঁচু। কিন্তু এটা এখনও আমার কাছে বিস্ময় যে যখন গাছের গুঁড়ি উপড়ে পড়ল এবং বেশ শব্দ করেই সেটা নিচে পড়ল।

    জ্যাকব দ্রুততার সাথে সরে এল। ভাঙা গাছ তাকে ভীত করে তুলে তাড়াতাড়ি ঘুরিয়ে দিয়েছে।

    আমার এখন ফিরে যাওয়া দরকার। সে ঘুরে তাড়াতাড়ি চলতে লাগল। তার সাথে তাল মিলাতে আমাকে প্রায় দৌড়াতে হলো।

    স্যামের কাছে ফিরে যাবে?

    সেটাই এখন একমাত্র পথ। সে এটাই বলেছিল। সে তাড়াতাড়ি চলতে চলতে বিড়বিড় করছিল।

    আমি গাড়ির কাছে ফিরে তাকে ডাকলাম। অপেক্ষা করো। আমি বাড়ির দিকে ঘুরছিলাম।

    সে আমার মুখোমুখি হওয়ার জন্য ঘুরে দাঁড়াল। আমি দেখতে পেলাম তার হাত আবার কাঁপছে।

    বাড়ি যাও, বেলা। আমি আর তোমার সাথে এক মুহূর্তেও থাকতে পারছি না।

    আমার বুকের ভেতর আবার ক্ষতের যন্ত্রণা শুরু হলো। কান্না ঠেলে আসতে চাইল। তুমি কি…আমার সাথে সম্পর্কটা ভেঙে দিচ্ছ? কথাগুলো পুরোটাই ভুল। কিন্তু সেটাই সবচেয়ে ভাল পন্থা আমি ওভাবেই জিজ্ঞেস করতে পারতাম। সর্বোপরি, যেটা জ্যাক এবং আমার মধ্যে হয়েছিল সেটা স্কুলের প্রেমের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। অনেক বেশি শক্তিশালী।

    সে একটা তিক্ত হাসি দিল। খুবই কম। যদি এটা সেই কেস হয়। আমি বলব বন্ধু হয়েই থাকো। আমি এমনকি তাও বলতে পারি না।

    জ্যাকব… কেন? স্যাম কি তোমাকে অন্য বন্ধুদের সাথে যেতে দিতে পারে না? প্লিজ, জ্যাক। তুমি প্রতিজ্ঞা করেছিলে। আমার তোমাকে প্রয়োজন। আবার সেই আগের মতই শূন্যতা আমার জীবনে চলে এসেছে। জ্যাকব আমার জন্য কিছু আশীবাদ নিয়ে এসেছিল। আবার আগের মতই অবস্থা আমার। একাকীত্ব আমার গলার কাছে বাস্প হ জমা হয়েছে।

    আমি দুঃখিত বেলা। জ্যাকব প্রতিটা শব্দ দুর থেকে শান্ত স্বরে বলল সে। তার কণ্ঠস্বর নয়।

    আমি এখনও বিশ্বাস করি না এটা জ্যাকব সত্যিই বলতে চেয়েছে বা বলেছে। এটা দেখে মনে হয় সেখানে কিছু একটা ছিল। তার রাগী চোখের আড়ালে কিছু একটা সে বলতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমি সেই ম্যাসেজটা ধরতে পারিনি।

    হতে পারে এটা আদৌ স্যাম সংক্রান্ত কোন কিছু নয়। হতে পারে এটা কুলিনদের ব্যাপারেও কিছু নয়। হতে পারে সে শুধু চেষ্টা করছিল তাকে এই আশাহীন অবস্থা থেকে বের করে নিয়ে আসতে। হতে পারে আমার তাকে সেটা করতে দেয়া উচিত। যদি সেটা তার জন্য সবচেয়ে ভাল হয়। আমার সেটা করা উচিত। এটাই ঠিক হতে পারে।

    কিন্তু আমি শুনতে পেলাম আমার কণ্ঠস্বর ফিসফিসানির মত সরে সরে যাচ্ছে।

    আমি দুঃখিত এই জন্য আমি পারি নাই…আগে…আমি আশা করি আমি পারব পরিবর্তন করতে। কীভাবে আমি তোমাকে অনুভব করি জ্যাকব। আমি বেপরোয়া। সত্যের কাছে পৌঁছে গিয়েছি। হতে পারে….হতে পারে আমি পরিবর্তিত হব। আমি ফিসফিস করে বললাম। হতে পারে, তুমি যদি আমাকে কিছুটা সময় দাও…শুধু আমাকে এখন ছেড়ে চলে যেও না, জ্যাক। আমি এটা সহ্য করতে পারব না।

    মুহূর্তেই তার রাগ বিষাদে রুপান্তরিত হয়ে গেল। তার কাঁপতে থাকা একটা হাত আমার দিকে এগিয়ে দিল।

    না। এইভাবে চিন্তা করো না বেলা, প্লীজ। নিজেকে দোষ দিও না। ভেবো না যে এটা তোমার দোষ। এটা পুরোটাই আমার। আমি প্রতিজ্ঞা করছি। এটা তোমার ব্যাপার নয়।

    এটা তুমি নও। এটা আমি। আমি ফিসফিস করে বললাম সেখানে নতুন একজন আছে।

    আমি এটাই বুঝাতে চেয়েছি বেলা। আমি নই… সে নিজের সাথে যুদ্ধ করতে লাগল। তার কণ্ঠস্বর আরো ফ্যাসফ্যাসে হয়ে গেল যখন সে নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করতে লাগল। তার চোখ যেন ব্যথিত আমি তোমার বন্ধু থাকার মত আর সেরকম যথেষ্ট ভাল নই। অথবা সেরকম কিছু নই। আমি আগে যেরকম ছিলাম এখন আর সেরকম নই। আমি ভাল নেই।

    কি? আমি তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। দ্বিধান্বিত। অত্যন্ত ভীত। তুমি কি বলছ? তুমি আমার চেয়ে অনেক বেশি ভাল আছ, জ্যাক। তুমি ভাল। তোমাকে কে বলেছে তুমি নও? স্যাম? এটা একটা জঘন্য মিথ্যা জ্যাকব। তাকে আর সেটা বলতে দিও না। আমি আবার হঠাৎ রাগে ফেটে পড়লাম।

    জ্যাকবের মুখ কঠোর ও নিষ্প্রাণ দেখাতে থাকে। কেউ আমাকে কোন কিছু বলে নাই। আমি জানি আমি কি।

    তুমি আমার বন্ধু। সেটাই তুমি। জ্যাক-তাই নয় কি?

    সে আমার দিক থেকে ফিরল।

    আমি দুঃখিত বেলা। সে আবার বলল। এইবার এটা বিড়বিড়ানির মত শোনাল। সে ঘুরে প্রায় দৌড়ে বাড়িটার দিকে চলে গেল।

    যেখানে দাঁড়িয়েছিলাম সেখান থেকে নড়ার শক্তি হারালাম। আমি ছোট বাড়িটার দিকে তাকিয়ে রইলাম। চারজন বিশাল শরীরের বালক এবং দুজন পুর্নবয়স্ক বিশাল মানুষের জন্য এটা খুব ছোট দেখাচ্ছিল। সেখানে ভেতরে কোন প্রতিক্রিয়া ছিল না। পর্দা টেনে দেয়ার কোন ব্যাপার নয়। কোন কথার শব্দ নয়। কোন চলাচল নয়। দেখে মনে হয় খালি।

    গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়তে লাগল। আমার গায়ের উপর এখানে ওখানে পড়তে লাগল। আমি বাড়িটা থেকে চোখ সারাতে পারলাম না। জ্যাকব ফিরে আসবে। সে আসতে বাধ্য।

    বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। সেই সাথে বাতাসও। বৃষ্টির ফোঁটা এখন আর উপর থেকে সরাসরি পড়ছিল না। সেটা পশ্চিম দিক থেকে আসছিল। আমি সাগরের বাতাসের গন্ধ পাচ্ছিলাম। আমার চুল আমার মুখের উপর এসে পড়েছিল। বৃষ্টির পানি লেপ্টে যাচ্ছিল। আমি অপেক্ষা করছিলাম।

    শেষ পর্যন্ত দরজা খুলল। আমি স্বস্তির সাথে এক পা সামনে এগুলাম।

    বিলি দরজার মুখের কাছে তার হুইল চেয়ার ঠেলে নিয়ে এলেন। আমি তার পিছনে কাউকে দেখলাম না।

    চার্লি এই মাত্র ফোন করেছিল। আমি তাকে বলেছি তুমি তোমার বাড়ির পথে। তার চোখ সমবেদনায় পরিপূর্ণ।

    সমবেদনা শেষপর্যন্ত যেভাবেই হোক এসেছে। আমি কোন মন্তব্য করলাম না। আমি শুধু রোবটের মত ঘুরে দাঁড়িয়ে আমার ট্রাকে উঠলাম। আমি জানালা খোলা রেখেছিলাম। সিটগুলো সব ভিজে একাকার। এটা কোন ব্যাপার নয়। আমি এর মধ্যে ভিজে গেছি।

    খুব খারাপ নয়! খুব খারাপ নয়। আমার মন আমাকে সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করল। এটা সত্য। এটা ততটা খারাপ নয়। এটাই পৃথিবীর শেষ নয়। এটা শুধু সেটারই শেষ যে ছোট্ট সুখটুকু আমার ছিল। এটাই সবটুকু।

    খুব খারাপ নয়। আমি একমত হলাম। তারপর যোগ করলাম কিন্তু যথেষ্ট খারাপ।

    আমি ভেবেছিলাম জ্যাকব আমার বুকের ভেতরের ক্ষত সারিয়ে তুলেছিল। অথবা অন্ততপক্ষে এমনভাবে ঢেকে দিয়েছিল যাতে ব্যথা না পাই। এটা ভুল ছিল। সে শুধু তার নিজের ক্ষতটাই ঢেকে রেখেছিল। সুতরাং আমি এখন একটা ধাঁধার মধ্যে পড়ে গেলাম। আমি বিস্মিত কেন আমি টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ছি না।

    বাবা পোর্চে অপেক্ষা করছিলেন। আমি গাড়ি থামালে তিনি আমার সাথে দেখা করতে বেরিয়ে এলেন।

    বিলি ফোন করেছিল। সে বলল তুমি নাকি জ্যাকের সাথে একটা ফাইট দিয়েছে। বলল তুমি কিছুটা আপসেট। তিনি ব্যাখ্যা করতে করতে আমার জন্য দরজা খুলে দিলেন।

    তারপর তিনি আমার মুখের দিকে তাকালেন। একটা ভয়ানক পরিচিত অবস্থা দেখতে পাওয়া তার অভিব্যক্তিতে ফুটে উঠল। আমি চেষ্টা করছিলাম আমার মুখের অবস্থা বাইরের সেই ঘটনা থেকে দূরে রাখতে। জানি না তিনি কি দেখেছিলেন। আমার মুখের ভাব শূন্য এবং শীতল। আমি বুঝতে পারছিলাম কি আমার মনে করিয়ে দিতে পারে।

    এটা সত্যিই সেটা নয়, কীভাবে এটা ঘটেছে। আমি বিড়বিড় করে বললাম।

    বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরে গাড়ি থেকে বের হতে সাহায্য করলেন। তিনি আমার ভিজে কাপড় নিয়ে কোন প্রশ্ন তুললেন না।

    তাহলে কি ঘটেছে? ভিতরে ঢোকার পর তিনি জিজ্ঞেস করলেন। তিনি সোফা থেকে তোয়ালে তুলে নিয়ে আমার গায়ে জড়িয়ে দিলেন। আমি বুঝতে পারছিলাম আমি তখনও কাঁপছিলাম।

    আমার কণ্ঠস্বর প্রাণহীন স্যাম উলি বলেছে জ্যাকব আর আমার বন্ধু থাকতে পারবে না।

    বাবা অদ্ভুত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালেন। তোমাকে এটা কে বলেছে?

    জ্যাকব। আমি বললাম। যদিও ঠিক এই কথাটাই সে আমাকে বলে নাই। তবুও এটা এখনও সত্য।

    বাবার ভ্রু কুঁচকে গেল। তুমি কি সত্যিই মনে করো ওই উলি ছেলেটার মধ্যে খারাপ কিছু আছে?

    আমি জানি আছে। জ্যাকব যদিও আমাকে সেটা কি তা বলে নাই। আমি শুনতে পেলাম আমার জামাকাপড় থেকে পানির ফোঁটা মেঝেতে পড়ছে। আমি কাপড় পাল্টাতে যাচ্ছি।

    বাবা চিন্তাভাবনা গুলিয়ে ফেললেন। ঠিক আছে। তিনি অন্যমস্কভাবে বললেন।

    আমি সিদ্ধান্ত নিলাম একটা হট শাওয়ার নেব। কারণ আমি খুব ঠাণ্ডা লাগছিল। কিন্তু সেই গরম পানিও আমার শরীরের তাপমাত্রা উষ্ণ করতে পারল না। পানির কল বন্ধ করে দিয়ে বেরিয়ে আসার পরও আমি জমে যেতে থাকলাম। হঠাৎ শুনতে পেলাম, বাবা নিচের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে কারোর সাথে কথা বলছে। আমি তোয়ালেটা আমার চারিদিকে পেচিয়ে নিলাম এবং বাথরুমের দরজার বাইরে কান পাতলাম।

    বাবার গলার স্বর রাগাম্বিত। আমি সেটা কিনে দেই নাই। এটা কোন অর্থ বহন করে না।

    তারপর কিছুটা শান্ত। আমি বুঝতে পারলাম বাবা ফোনে কথা বলছেন। এক মিনিট অতিবাহিত হলো।

    তুমি এটা বেলার উপর ফেলো না। বাবা হঠাৎ চিৎকার দিয়ে উঠলেন। আমি লাফিয়ে উঠলাম। যখন সে আবার কথা বলা শুরু করল, তার কণ্ঠস্বর বেশ সর্তক এবং নিচুলয়ের। বেলা, এটা বেশ পরিষ্কার করেছে যে সে একাকী এবং জ্যাকব শুধু বন্ধুই….বেশ, যদি সেটা এটা হয়ে থাকে, তাহলে তুমি এটা কেন আগে বলো নাই? না বিলি, আমি মনে করি সে এই ব্যাপারে ঠিক… কারণ আমি আমার মেয়েকে জানি। যদি সে বলত জ্যাকব আগে থেকে ভয় পেতো… তিনি কথার মাঝখানে থামলেন এবং যখন আবার উত্তর দিলেন প্রায় চিৎকার শুরু করে দিলেন।

    তুমি কি বলতে চাইছো আমি জানি না। আমার মেয়ে যেটা মনে করে আমি করি! তিনি অল্প কিছুক্ষণের জন্য শুনলেন এবং তারপর তার উত্তর এত নিচুলয়ে হলো যে আমি সেটা শুনতে পেলাম না। তুমি যদি মনে কর আমি তাকে ব্যাপারটা মনে করিয়ে দেব তাহলে সবচেয়ে ভাল হয় তুমি ব্যাপারটা নিয়ে আরেক বার ভাব। সে এটা থেকে উত্তরণের দিকে এগুতে শুরু করেছিল। আমি মনে করি তার বেশিরভাগই জ্যাকবের কল্যাণে। যদি জ্যাকব সেই স্যাম ছোরার সাথে যেতে থাকে তাহলে সেটা আবার তাকে বিষণ্ণতার মধ্যে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। তাহলে জ্যাকবকে এ ব্যাপারে আমার কাছে উত্তর দিতে হবে। তুমি আমার বন্ধু বিলি। কিন্তু এটা আমার পরিবারকে আঘাত করছে।

    সেখানে বিলির কাছ থেকে উত্তর শোনার জন্য আরেকটা বিরতি।

    তুমি ঠিক ধরেছো- এই ছেলেগুলো সহ্যের শেষ সীমায় চলে যাচ্ছে। আমি এই ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করছি। আমরা এই পরিস্থিতির উপর চোখ রাখছি। তুমি এই বিষয়ে নিশ্চিত থাকতে পার। তিনি এখন আর মোটেও চার্লি নন। তিনি এখন চীফ সোয়ান।

    বেশ, হ্যাঁ। বিদায়। ফোন রিসিভার রাখার শব্দ হলো।

    আমি তাড়াতাড়ি পা টিপে টিপে হলঘর থেকে আমার রুমে চলে এলাম। বাবা কিচেনে দাঁড়িয়ে রাগে বিড়বিড় করছিলেন।

    সুতরাং বিলি এই ব্যাপারে আমাকে দোষারুপ করতে শুরু করেছে। আমি জ্যাকবকে ওদিকে নিয়ে গেছি।

    এটা অদ্ভুত। আমি নিজেকে নিয়ে ভয় পাচ্ছিলাম। জ্যাকব আজ সন্ধ্যেয় যেটা আমাকে বলেছে সেটা বলার কারণে। আমি এটা এখন আর বিশ্বাস করি না। সেখানে আরো বেশি কিছু আছে। আমি বিস্মিত যে বিলি এ ব্যাপারে আমাকে দোষ দিচ্ছে। এটা আমাকে এই চিন্তা করতে বাধ্য করছে যে আমি যেরকম ভেবেছিলাম এটা তার চেয়ে অনেক বড় ধরনের গোপনীয় কিছু একটা। অন্ততপক্ষে, বাবা এখন আমার পক্ষে আছে।

    আমি পাজামা পরে বিছানায় গেলাম। এই মুহূর্তে জীবনটা অনেক অন্ধকারাচ্ছন্নই মনে হচ্ছে। আমি নিজেকে প্রতারিত করতে দিয়েছি। ক্ষতটা এখন–এর ভেতরে যন্ত্রণা দিতে শুরু করেছে। কেন নয়? আমি সেই স্মৃতিটা টেনে বের করে এনেছি। সেটা প্রকৃত স্মৃতি নয় যেটা আমাকে আরো বেশি আঘাত করে। কিন্তু এ্যাডওয়ার্ডের কণ্ঠস্বরের সেই হালকা স্মৃতিটা আছে। এটা বারবার মনে পড়ছে। যতক্ষণ না আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। এবং চিৎকার শুরু করলাম।

    আজ রাতে নতুন স্বপ্ন শুরু হলো। বৃষ্টি পড়ছিল এবং জ্যাকব হঠাৎ করে আমার পাশে পাশে হাঁটা শুরু করল। যদি ও আমার পায়ের নিচের মাটি শুষ্কই মনে হচ্ছিল। কিন্তু সে আমার জ্যাকব ছিল না। সে নতুন একজন। কৃতজ্ঞ জ্যাকব। তার সেই হাঁটা আমাকে আরো একজনের কথা মনে করিয়ে দিল। যখন আমি দেখলাম তার বৈশিষ্ট্য পরিবিৰ্তত হতে শুরু করেছে। তার গায়ের রঙ পরিবর্তিত হচ্ছে। তার মুখ ধুসর থেকে সাদা হাড়ের মত হয়ে যাচ্ছে। তার চোখ সোনালি হয়ে যাচ্ছে। তারপর তার গায়ের রঙ সোনালি হয়ে যাচ্ছে। তার খাটো চুল বাতাসে উড়ছে। তার মুখ এতটাই সুন্দর যে আমার হৃদয় আনন্দে কাঁপতে লাগল। আমি তার কাছে পৌঁছুলাম। সে এগিয়ে গেল। তার হাত উপরে তুলল। তারপর এ্যাডওয়ার্ড ভ্যানিস হয়ে গেল।

    আমি নিশ্চিত ছিলাম না। আমি অন্ধকারের মধ্যে জেগে উঠলাম। যদি আমি। পারতাম অথবা কান্না চোখ ফেটে বেরিয়ে আসত। আমি অন্ধকার সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে রইলাম। অনুভব করতে পারলাম এটা মধ্যরাত। আমি কাঁচা ঘুম থেকে জেগেছি। দুশ্চিন্তায় চোখ বন্ধ করলাম এবং স্বপ্নহীন ঘুমের জন্য প্রার্থনা করতে লাগলাম।

    একটা গুঞ্জন আমাকে জাগিয়ে তুলল। কিছু একটা তীক্ষ্ম আঁচড়ের শব্দ আমার জানালার উপর। তীক্ষ্ম শব্দ। যেন কাঁচের উপর নখের আঁচড়।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleব্রাইডা – পাওলো কোয়েলহো
    Next Article আরব জাতির ইতিহাস – ফিলিপ কে. হিট্টি (অনুবাদ : প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ)

    Related Articles

    প্রিন্স আশরাফ

    ব্রাইডা – পাওলো কোয়েলহো

    September 22, 2025
    প্রিন্স আশরাফ

    দ্য জাহির – পাওলো কোয়েলহো

    September 22, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025
    Our Picks

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025

    আরব জাতির ইতিহাস – ফিলিপ কে. হিট্টি (অনুবাদ : প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ)

    September 22, 2025

    নিউ মুন – স্টেফিন মেয়ার

    September 22, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.