Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    নীটফল

    আশাপূর্ণা দেবী এক পাতা গল্প189 Mins Read0
    ⤶

    ৬১-৬৩. চিঠির লাইন দুটো

    ৬১.

    চিঠির লাইন দুটো তো তখনি মুখস্থ হয়ে গিয়েছিল, তবু এত এতবার পড়ে চলেছে শানু যে, দেখলে মনে হতে পারে শানু একটা শিলালিপি উদ্ধার করার চেষ্টা করছে।

    কথা তো এই–উঃ বহু সাধনায় তোর ঠিকানা মিলেছে। আমার ঠিকানা চিঠির মাথায়।
    –পার্থ।

    কী এর অর্থ? কোন ইঙ্গিত বহন করছে? শানু কি সেই ইঙ্গিতটাই অনুধাবন করতে পেরে উঠছে না? তাই স্কুল কামাই করে বাড়ি বসে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে?

    কামিনী বলল, ইস্কুল যাবেন না মাস্টার দিদিমণি?

    না। ভাল লাগছে না।

    তবে চিঠিটা দ্যান, দিয়ে আসি।

    শানু চমকে বলল, কীসের চিঠি?

    বারে বা! কামাই করলে চিঠি দ্যান না? সেদিন মাথা ধরলো–

    আজ দেব না। ইস্কুল ছেড়ে দেব, আর যাব না।

    ওমা ই আবার কী কতা?

    বলে কামিনী সরে গেল। তারপর একটু পরে এসে বলল, আমি মন করতেছিলাম আজ ওবেলা ঘর যাব।

    শানু এই ছন্দপতনে বিরক্ত হল। বলে উঠল, তা যাবে তো এক্ষুনি ঘুরে এসো না! ওবেলা কেন?

    কামিনী শুকনো শুকনো মুখে বলল, বলতেচি কি দুটাদিন মাসির কাছে কাইটে এসতুম।

    শানু আরও বিরক্ত হল, তোমার আবার মাসি-টাসি কোথায় ছিল।

    আপনার অসুবিধে হবে বলে কুনোদিন যাব বলি নাই, আজ মনটা নিচ্ছে।

    শানুর মনে হল, এই কথাটা সত্যি নয়, এটা একটা বানানো অজুহাত। হয়তো কামিনী কোনও মনের মানুষ জুটিয়ে মরছে। মরুক, আমার কী!

    একটু চুপ করে থেকে বলল, ঠিক আছে। চালিয়ে নেব।

    কামিনী জিভ কাটল।

    আ-কপাল। আমি কি আপনারে কষ্ট পেতে দিব? অন্য লোক দিব?

    অন্য নোক আবার কোথা পাবে?

    আচে।

    মুখটা বাড়িয়ে ডাকল, এই পচি ইদিকে আয়।

    ল্যান্ডিঙে দাঁড়িয়ে থাকা একটা দস্যি চেহারার মেয়ে ঢুকে এল।

    কামিনী বলল, এই যে। এই পচিই দুটাদিন চাইলে দেবে।

    নাম এবং আকৃতি কোনওটাই পছন্দ হল না শানুর, তবু বলল, ঠিক আছে।

    শানু জানল না, সে একটা সাপের গর্তে পা দিল।

    জানতে পারল অনেক রাত্রে।

    যখন ঘুম আসছে না, অন্ধকারে চোখ বুজে শুয়ে শুয়ে ভাবছে পার্থর নিজের ঠিকানাটা দেবার অর্থটা না বোঝবার নয়, অথচ ভেবে পাচ্ছি না, চিঠি দিয়ে লাভ কী? ওই বদলোকটা যে কোন মতলবে শানুর চিঠি নিয়ে এ রকম শয়তানী খেলছে কে জানে। তার থেকে আমিও কামিনীর মতো দুটো দিন ঘর যাবার ছুটি নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। সত্যি এতদিন মা বাবা-ছোড়দা কাউকে না দেখে রয়েছি কী করে? নাঃ। কালই বেরিয়ে পড়ব। ওখান থেকেই চিঠি দেব। কত দূরে চলে গেছে পার্থ।

    হঠাৎ ভাবনায় ছেদ পড়ল।

    মাটি থেকে উঠে আসার কাঠের সিঁড়িটায় একটা জুতোপরা পায়ের উঠে আসার শব্দ পেল। শব্দ পেল বাইরের দরজাটার খিল খুলে দেবার।

    শানু কানখাড়া করল।

    শানু হাত বাড়িয়ে টেবিলের উপর রাখা টর্চটা নিতে গেল, হাতে পেল না। অথচ থাকেই হাতের কাছে।

    শানু উঠে বসল।

    আর চিৎকার করে উঠল, কে?

    শানু ঘরের মধ্যে একটা নোংরা জানোয়ারকে ঢুকে আসতে দেখতে পেয়েছে। এতক্ষণে শানু সাপের গর্তে পা দিয়ে খেলাটা বুঝতে পেরে গেল, কারণ এখন শানুর মনে পড়ল শোয়ার আগে ঘরের দরজার ছিটকিনিটাকে হঠাৎ কেমন নড়বড়ে হয়ে ঝুলে থাকতে দেখেছিল, ভাল করে লাগাতে পারেনি।

    শানুর গলা থেকে একটা তীক্ষ্ণ চিৎকার বেরিয়ে এল, কে এখানে? বেরিয়ে যাও।

    শানু একটা চাপা খ্যাঁকঘেঁকে হাসি শুনতে পেল। জানোয়ারটার গা থেকে একটা উগ্র গন্ধ আসছে, এগিয়ে আসছে খুব কাছে।…শানু দেখতে পেল পচি নামের সেই কদর্য প্রাণীটা ছায়ামূর্তির মতো দরজা আগলে দাঁড়িয়ে।

    .

    ৬২.

    একটা বাংলা বর্ণপরিচয় নিয়ে জিয়াকে পড়া শেখাচ্ছিলেন ভবদেব, বন্দনা এসে দাঁড়ালেন।

    বন্দনার চেহারাটা হঠাৎ যেন গুঁড়িয়ে গেছে। বন্দনার সেই রাগ রাগ মুখের লাবণ্য মাধুর্য অস্তৰ্হিত, বন্দনার সর্ব অবয়বে বার্ধক্যের ছায়া। রগের চুলগুলো সহসাই কেমন ধূসর হয়ে গেছে। মুখের চামড়ার আঁকিবুকি।

    বন্দনা যেন আছড়ে এসে পড়লেন, কিন্তু ভবদেবের এই নিশ্চিন্ততা দেখে বন্দনার সর্বশরীর ঈর্ষায় জ্বলে উঠল। হ্যাঁ প্রাণাধিক প্রিয়জনের উপরও ঈর্ষা আসে বইকী! এটা স্বাভাবিক মনুষ্যধর্ম! আমি এত যন্ত্রণা পাচ্ছি, আর ও নিশ্চিন্ত সুখের মধ্যে নিমজ্জিত? এর থেকে ঈর্ষণীয় আর কী আছে? ও আমার হৃদয়বেদনার অংশীদার হবে না? এ অসহ্য।

    বন্দনা বেজার গলায় বললেন, এই এক খেলা হয়েছে। সংসার হেজে যাচ্ছে, মজে যাচ্ছে, দৃকপাত নেই, একটা পাখিকে বুলি ফোঁটানোর সাধনায় প্রাণপাত! আশ্চর্য!

    ভবদেব বন্দনার মুখের দিকে চেয়ে বললেন, আমি দৃপাত করলেই তোমার সংসার হেজে মজে যাওয়া থেকে রক্ষা পাবে?

    বন্দনা উথলে উঠলেন, শুধু আমার সংসার?

    আহা না হয় আমাদেরই হল, কিন্তু প্রশ্নটা তো থেকেই গেল।

    বন্দনা বললেন, সময়ে তাকালে রক্ষে পেত!

    সে কথা আর এখন ভেবে লাভ কী? সময়টা তো আর ফিরে আসবে না।

    বন্দনার স্বর ক্লান্ত বিরক্ত, বললেন, এখনও অনেক কিছু করার আছে। বসে বসে একটা খুকিকে নিয়ে সময় নষ্ট করা দেখলে বিষ ওঠে।

    ভবদেব আবহাওয়াটা হালকা করতে চেষ্টা করলেন। বললেন, আরেব্বাস। একেবারে বিষ! সতীনের হিংসে নাকি?

    কাজ হল না। বন্দনা এ কৌতুক গায়ে মাখলেন না। বললেন, বাজে কথা রাখো। আমার যে কী জ্বালা, তা যদি একটুও বুঝতে

    বন্দনার গলার স্বরটা বুজে এল।

    তা কথাটা হয়তো ভুল নয়। বন্দনার বড় ছেলে বাড়িছাড়া হয়ে চলে গেল, একদিনের জন্যে আর দেখা করতেও এল না। এ যে কী জ্বালা। ভবদেব কি বুঝতে পারছেন? আরও কত জ্বালা তাঁর বড় ছেলের সেই সাজানো গোছানো আরাম আয়েসের অনুকূল যুক্ত ঘরখানা গিয়ে দখল করে বসল ওই স্বামীত্যাগিনী ভাগ্য খুইয়ে আসা, হাড়জ্বালানি মেয়ে।

    বন্দনার কি এ ববস্থায় সায় ছিল? এক ফোঁটাও না। তবু কীভাবে যে হয়ে গেল এটা। যেন এটাই স্বাভাবিক? এই তীব্র জ্বালার এক তিলও বোঝবার ক্ষমতা আছে বন্দনার স্বামীর?

    বন্দনার চিরকালের ডানহাত, বন্দনার একমাত্র বুকের বল মেজ ছেলেটা তাঁর চিরকালের জ্ঞাতিশত্রুর একটা বখে যাওয়া ছেলের জন্যে (পয়সার বৃষ্টি করার কথা ছেড়ে দিলেও), নিজের জীবনটাই বানচাল করে ফেলল, এ জ্বালা একটুও বোঝবার ক্ষমতা আছে ভবদেবের?

    বন্দনার সেই সদাহাস্যমুখ, সদা ফুর্তিবাজ টগবগে ছেলেটার মুখে এখন না আছে হাসি, না আছে কথা। গাড়িটা নিয়ে ঘুরে বেড়ায় বটে, কিন্তু সেই বীরদর্পের ভঙ্গি আছে? সাজেসজ্জায় সেই জলুস আছে?

    যখন তখন তো আবার কোথায় না কোথায় চলে যায়, বলে যায় দুচারদিন না ফিরলে ভেবো না।…ভেবো না বললেই না ভেবে থাকা যায়?…কেন যায়, কোথায় যায়, ভগবান জানে।…ফিরে এসে বলে, বাঁকুড়া ঘুরে এলাম জলকষ্ট দেখতে, পুরুলিয়া ঘুরে এলাম খরা দেখতে, উড়িষ্যা ঘুরে এলাম বন্যা দেখতে।…যত রাজ্যের খরা বন্যা দুর্ভিক্ষ জলকষ্ট দেখার কী এত দরকার পড়ল তার কে জানে।..মায়ের পেটের বড় ভাই একটা মিথ্যে অপবাদ দিয়ে, ছুতো করে বাড়ি ছাড়ল, সে অপমানটা বড় লেগেছে। সয়ে নিতে পারছে না এখনও।…আমায় কিনা বলল, দাদা মিথ্যে বলেনি মা! দিয়েছি তো একটা পাজির মাথার খুলি গুলি করে উড়িয়ে..বেঁচে থাকলে সমাজের অনেক অনিষ্ট করত।

    আমি কি ও কথা বিশ্বাস করেছি নাকি? আমার স্থির বিশ্বাস, আর কারও দোষের বোঝা ঘাড়ে নিয়ে বসে, এইটি ঘটিয়েছে।…কে জানে বিয়ে হলে, এই বাউন্ডুলে ভাবটা যেত কিনা। কিন্তু ছেলের বিয়েতেও আর রুচি নেই আমার। আমার এই রুচি না থাকার জ্বালা, তোমাকে এতটুকু ছুঁচ্ছে? অথচ তুমি বাপ!

    আসলে এই মানুষটার মন যেন কচুপাতা পদ্মপাতার মতো, সব কিছু গড়িয়ে পড়ে যায়। নইলে শানুটাকে কোন বনবাসে রেখে এসে, আজ দুমাস আড়াই মাসের মধ্যে একবার গিয়ে দেখে আসতে ইচ্ছে হয় না? নিয়ে চলে আসতে ইচ্ছে হয় না?…চাকরি না করলে খেতে পাবে না শানু?

    বন্দনার মন হুহু করে জ্বলছে না তার কথা ভেবে?…

    বন্দনার ছোটবোনটা, বন্দনার প্রাণতুল্য আদরের ছোটন কিনা একটা কুড়নো জঞ্জাল নিয়ে এমন উন্মত্ত। যে পৃথিবী ভুলে গিয়েছে। দিদি বলে একটা ফোন পর্যন্ত করে না। বন্দনা করলে, আপদ বালাইয়ের মতো দুমিনিট দায়সারা কথা কয়ে বলে, আচ্ছা রাখছিরে দিদি।…

    এ জ্বালাটাই কি কম? এ নিয়ে কোনও বোধ দুঃখ আছে বন্দনার স্বামীর!

    না, কিছু নেই। হাতের কাছে একটা মোমের পুতুল পেয়েছেন, তাকে নিয়েই মশগুল।…তোমার লজ্জার মাথা খাওয়া মেয়ে রাতদিন মদ খেয়ে ভ্যাম হয়ে পড়ে থাকে, নয়তে গড়াগড়ি খেয়ে কাঁদে। আর তুমি মহাপুরুষ নির্বিকার মনে তার বাচ্চা সামলাচ্ছো, আর তার মুখে বুলি ফোঁটাচ্ছো। বল জল খাব। ভাত দাও, এটা? বা-লিশ।…এটা? ছাতা!…ওটা? কাক। ওটা? বেড়াল।…এটা অ, এটা আ।

    ঠিক ঠিক বলাতে পারলে তো কী আহ্লাদ।

    অমি, আজ তোর মেয়ে পুরো একটা সেনটেন্স বলেছে। মামু গাড়ি চড়ে বেড়াতে মা-মু-গা-ড়ি… শুনতে যা মজা লাগল।

    এতেও যদি বিষ না ওঠে তো কীসে উঠবে?

    বুজে আসা গলাকে ঝেড়ে নিয়ে বন্দনা তীক্ষ্ণ একটি প্রশ্ন ছুঁড়লেন, প্রাণপাত সাধনায় ওকে শিখিয়ে পড়িয়ে মানুষ করে তোলায়, কোন্ স্বর্গের সিঁড়ি গাঁথা হবে তোমার?

    ভবদেব মেয়েটার পিঠে একটু স্নেহের স্পর্শ ঠেকিয়ে বন্দনার দিকে তাকিয়ে বললেন, স্বর্গের সিঁড়ি? ভেবে দেখিনি তো। তা তুমি তো জীবনভরই প্রাণপাত সাধনা করে এলে, কখানা সিঁড়ি গাঁথতে পারলে?

    আমার কথা বাদ দাও

    বন্দনার গলাটা আবার বসে এল, বললেন, আমার তো চিরজন্মই ভস্মে ঘি!

    ভবদেব শান্ত গম্ভীর গলায় বললেন, শুধু তোমার একার নয় বন্দনা, আমাদের আর আমাদের মতো নেই নেহাত সাধারণদের সকলেরই সব সাধনাই ভস্মে ঘি! হোমের আগুন জ্বলে উঠবার প্রত্যাশাটাই ভুল।

    বন্দনা কেঁদে ফেললেন, কিন্তু কেন? কেন আমাদের কোনও প্রত্যাশা থাকবে না? আমাদের এই সংসার করার মধ্যে কি ফাঁকি ছিল? ভালবাসার অভাব ছিল? নিষ্ঠার অভাব ছিল? শ্রদ্ধার অভাব ছিল? বল?

    এ প্রশ্নের জবাব বোধহয় এই যুগটাই খুঁজছে বন্দনা।…হয়তো আমাদের মধ্যে এ সবের অভাব ছিল না, অভাব ঘটেছে ওই বস্তুগুলোর মর্ম বোঝবার মতো হৃদয়ের, এই নতুন যুগ ওই মহৎ শব্দগুলোকেই তাচ্ছিল্য করে উড়িয়ে দিতে শিখিয়েছে।…তাই আমরা শূন্যের উপর দাঁড়িয়ে আছি।…

    বন্দনা চোখ মুছে বললেন, মায়া মমতা শ্রদ্ধা বিশ্বাস নিষ্ঠা ভালবাসা চিরকালের সংস্কার। এইসব ভাল ভাল জিনিসগুলো যদি মানুষের মন থেকে মুছে যায়, কী নিয়ে বাঁচবে সে?

    ভবদেব জিয়ার দিতে তাকালেন, দেখলেন, পড়া থেকে ছুটি পেয়ে সে একমনে তার রঙের পেন্সিলের বাক্স খুলে ছবি আঁকছে।…চিরকালের শিশুর প্রথম চিত্রকলা যা হয়–গাছ, বাড়ি, নদী, আকাশ।

    বিদেশি পেন্সিল রঙে উচ্চমানের ঔজ্জ্বল্য। দেখলেন পুরো গাছটাকে সে টকটকে লাল রঙে আঁকছে।…হয়তো আকাশটাকে সবুজে ছোপাবে।…তার মানে স্বাধীনতার স্ফুরণ। যে স্বাধীনতার বিকাশ প্রকৃতিকে লঙ্ঘন করে।

    ভবদেব বন্দনার দিকে মুখ ফিরিয়ে গভীর গম্ভীর গলায় বললেন, হয়তো তাদের বাঁচার জন্যে অন্য মালমসলা আবিষ্কার হবে বন্দনা।…আমিই বা কতটুকু জানি বল? জীবনকে আর পৃথিবীকে দেখেছি তো তোমারই মতো ছোট্ট একটুকরো গণ্ডির মধ্যে। কোথায় কী ভাঙাগড়া চলছে, তার কতটুকু সন্ধান রাখি? কিন্তু আমরা তো রয়েছি আমাদের শ্রদ্ধা বিশ্বাস নিষ্ঠা ভালবাসা আর মূল্যবোধগুলি নিয়ে?

    আস্তে বন্দনার টেবিলের কোণে চেপে ধরা হাতটার উপর একটু হাত ছোঁয়ালেন, বললেন, আমাদের মধ্যে তো আর ফাঁকির কারবার নেই? আমাদের দিনগুলো এই সম্বলেই চলে যাবে, কী বল? যাবে না!

    আস্তে হাতটায় একটু চাপ দিলেন।

    আশ্চর্য! এখনও ওই লম্বা ছাঁদের মসৃণ আঙুল কটির গভীর স্পর্শ বন্দনার মধ্যেকার সব উদ্বেলতা শান্ত করে দিতে সক্ষম?…এখনও ওই মৃদু চাপটুকু বিহ্বল করে দিতে পারে? বিবশ করে দিতে পারে!

    কিছুক্ষণের জন্যে বুঝি একটু স্তব্ধতা নামে।

    কিন্তু কতক্ষণের জন্যেই বা?

    রূঢ় পৃথিবীর তীব্রতা বিদীর্ণ করে দেয় না সে স্তব্ধতা? হয়তো প্রতিনিয়তই পৃথিবীর এক এক আকস্মিক রুক্ষতার আঘাত জীবনের পরম ক্ষণগুলিকে দীর্ণ করে করে জীবনকে খণ্ড খণ্ড করে চলে।

    পাশের দেয়ালের ওপার থেকে ওঠে সেই নিত্য নিয়তির আকাশ বিদীর্ণ করা আক্ষেপ বাণী, ওরে পানুরে, তুই কূলে এসে তরী ডোবালি কেন বাপ? তুই সেইদিনই গুণ্ডার হাতে মরলি না কেন?…ওরে তুই জন্মেই মরিসনি কেন?

    প্রতিদিন বিভা তার পলাতক পুত্রের প্রতি এই তীব্র প্রশ্ন নিক্ষেপ করে চলে।

    হয়তো ভয় পায় বুঝি, শোকটা ভুলে যাচ্ছে।

    হয়তো বা ভাবে, তার মাতৃহৃদয়ের ব্যাকুলতা যন্ত্রণা পৃথিবীকে জানানো দরকার।

    হঠাৎ এই শব্দে জিয়ার নিবিষ্টতার দেয়ালও বিদীর্ণ হয়ে গেল। পেন্সিল ফেলে দিয়ে সে দুহাতে কান চেপে ধরে আর্ত গলায় বলে উঠল, এগেন! এগেন।

    তারপর ভবদেবের হাঁটু চেপে ধরে নতুন শেখা ভাষায় কান্না গলায় বলল, মার কাছে যাব।

    ভবদেব তাকে কোলে তুলে নিয়ে বললেন, চলো তোমার মার কাছে দিয়ে আসি। এখনও যেখানে তোমার অভয় আশ্রয়।

    যতদিন সন্তানের শৈশব, ততদিনই তো মায়ের এই মহিমা। মায়ের ক্ষমতার সীমা কতটুকু, সেটা জানবার ধার শিশু ধারে না। মায়ের কাছটাই তার কাছে শেষ কথা।

    যখন থেকে তার চোখে মায়ের ক্ষমতার সীমা ধরা পড়ে, তখন থেকেই মায়ের মহিমা সীমিত। তখন শুরু হয় অবজ্ঞা, অথবা করুণা।

    …কিন্তু মা জাতটাই বোধ হয় জাত বেহায়া! আর হাড় কাঙালি। তাই বিভা তার মাকে মেরেধরে গয়না কেড়ে নিয়ে যাওয়া বখা ছেলের জন্যে অবিরাম বিলাপ করে চলে, বন্দনা তাঁর মোদো মাতাল মেয়ের জন্যে তার প্রিয় বস্তু মোচার ঘণ্ট আর ধোঁকার ডালনা বেঁধে মরেন, তার মা-বাপকে অগ্রাহ্য করে চলে যাওয়া ছেলের জন্যে বিরলে অশ্রুপাত করেন, আর মায়ের নিষেধ না মেনে চলে যাওয়া স্বাধীন স্বেচ্ছাচারিণী মেয়ের বিরহে কাতর হয়ে স্বামীর কাছে এসে কেঁদে পড়েন, কালই তুমি শানুকে নিয়ে চলে এসো। আমার মন মানছে না।

    ভবদেব তাঁর বাবার খাতার সাদা পাতা ফুরিয়ে ফেলে নিজেই একখানা খাতা ধরেছেন। অনেক রাত্রে যথানিয়মে সেটাই নিয়ে বসেছিলেন। আজ লিখছিলেন, মানুষের মধ্যেকার সমস্ত মহৎ বৃত্তিগুলি বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এটা কি সম্ভব? হয়তো তার চেহারা বদলাচ্ছে, পুরনো ছাঁচ থেকে নতুন ছাঁচের মধ্যে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে, আমরা…

    এই সময় বন্দনা এলেন।

    ভবদেব অবাক হয়ে বললেন, এই কথাটা বলতে তুমি এখন ঘুম থেকে উঠে এলে?

    আমার ঘুম হচ্ছিল না। শানুর জন্যে হঠাৎ

    বেশ তো, গেলে তো কাল সকালে যাব, আজ রাত্রে তো নয়? এখন ঘুমোওগে।

    ঘুম আসছে না।

    চেষ্টা করো। এসে যাবে। আচ্ছা কাল নিশ্চয় যাব।

    বন্দনা নেমে গেলেন।

    ভবদেবের মনে পড়ল না, কী লিখছিলেন। খাতাটা মুড়ে সরিয়ে রেখে আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়লেন।

    শুধু শুয়ে শুয়ে ভাবলেন, চিরাচরিত মহৎ বলে চিহ্নিত সব গুণগুলি যদি সত্যিই হারিয়ে ফেলে মানুষ, তবু ভালবাসা বস্তুটা কি হারিয়ে ফেলতে পারবে?

    পারবে না। ভালবাসা বস্তুটা থাকবে না এমন দুর্দিন কি আসতে পারে? থাকবেই হয়তো একা কুম্ভ রক্ষা করে চলবে তার বুদির গড়। একা ভালবাসাই পারবে পৃথিবীকে টিকিয়ে রাখতে।

    ঘুমোবার চেষ্টা করতে করতে ভাবলেন, কখন কীভাবে শানুর কাছে পৌঁছে, দিনে দিনেই নিয়ে চলে আসা যায়। জলপথ ভিন্ন গতি নেই, এটা বড় অসুবিধে। স্থলপথে যেভাবে যেমন করেই হোক নিজের সময়ে এগিয়ে যাওয়া যায়। এটা বড় দুরূহ।

    এই দুরূহর কথা শানুও অনেক সময় ভেবেছে। স্থলপথ হলে যেভাবে হোক বেরিয়ে পড়া যায়, দেখিয়ে অথবা লুকিয়েও।…লঞ্চ ছাড়া গতি নেই। অতএব জগন্নাথ চক্রবর্তীকে জানানো ছাড়া গতি নেই। ভেবেছিল, এইভাবেই কথা তৈরি হয়।…অসহায়তার শেষ কথা, পায়ের তলায় মাটি নেই।.জলবেষ্টিত মাটি কি আর মাটি?…সেখানে কি পথ কাটা যায়? যেখান থেকে ছুট মেরে বেরিয়ে আসা যায় নিজের স্বাধীনতায়!

    ভবদেব ভাবলেন, গিয়েই বলা চলবে না কাজ ছেড়ে দিয়ে চলে যাবে। তা হলে সহজে ছাড়বে না। লোকটা বোধহয় সুবিধের নয়।

    ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লেন। পরদিনের চিন্তাটা মাথায় নিয়ে।

    কিন্তু পরদিন কি আর সুন্দরবন পর্যন্ত যেতে হল ভবদেবের? শানুকে তো বাড়ি বসেই পেয়ে গেলেন। যাবার উদ্যোগ করছেন, দরজার সামনে ট্যাক্সি এসে দাঁড়াল একটা, নামল শানু আর পার্থ।

    ভবদেব অবাক হয়ে গিয়ে বললেন, ব্যাপার কী পার্থ? খুব গোলমাল লাগছে

    তা ব্যাপারটা একটু গোলমেলেই হয়ে পড়েছিল। এখন ঠিক হয়ে গেছে।

    তুমি গোসাবায় গিয়েছিলে?

    না হলে? তবে বলি, ওই জায়গায় মেয়েকে একা রেখে এসেছিলেন কী করে মেসোমশাই?

    ভবদেব চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ের দিকে তাকিয়ে শান্তভাবে বললেন, যুগের দাবি তো মানতেই হবে পার্থ। কিন্তু শানু? শরীর খারাপ নাকি?

    শানু কিছু বলল না; বলল পার্থ, হ্যাঁ বেশ জ্বর।

    জ্বর? কী মুশকিল। তবে তো শুয়ে পড়া দরকার।…দেবু, তোর মাসিমাকে বল—

    বলতে হল না, বন্দনা কিছুর একটা আভাস পেয়ে এসে গেছেন।…দৃশ্যটার সামনে একটু দাঁড়িয়ে পড়ে পার্থর দিকে তাকিয়ে বললেন, শুধু শুধু মেয়েটাকে এই কষ্টটা দিলে বাবা?

    পার্থ বলল, সেই যে কী একটা বলেন আপনারা, নিয়তি না কী।…কিন্তু একে একটু শুতে দিন গে, জ্বর হয়েছে–

    বন্দনা তাড়াতাড়ি সরে এসে মেয়ের কপালে হাত ঠেকিয়ে বলে উঠলেন, জানতাম। এই রকম কিছু হবে জানতাম। আয়, চলে আয়। পার্থ, তুমি বোসো বাবা। তোমার মেসোমশাইয়ের সঙ্গে

    মেসোমশাইও বললেন, বোসো। তোমাকেও তো খুব টায়ার্ড লাগছে। এ সময় কীভাবে এলে? লঞ্চ ছেড়েছিল কখন? রাত্রে?

    পার্থ বসল। সত্যিই খুব ক্লান্ত দেখাচ্ছিল তাকে। বলল, না লঞ্চে চাপা হয়েছিল কাল বিকেলে। রাতে ক্যানিঙে পড়ে থাকতে হল।

    ক্যানিঙে?

    উপায় ছিল না। শানুর জ্বরটা বেড়ে উঠল—

    আমি কিন্তু এখনও অন্ধকারে আছি পার্থ!

    পরে বলছি মেসোমশাই। বাপী বাড়ি নেই?

    একদা পাড়ার স্কুলে বাপী আর পার্থ সহপাঠী ছিল। অতঃপর দুজনে দুপথে হেঁটেছে।

    ভবদেব মাথা নাড়লেন, হতাশ গলায় বললেন, সে আর কদিন বাড়ি থাকে? হঠাৎ আসে, হঠাৎ বেরিয়ে যায় কিছু বলবে তাকে?

    ওকেই বলব।

    পার্থ মনে মনে বলল, যা বলব, সে কথা তো আর কাউকে বলা যাবে না। দেখা হলে বলতাম, বাপী, তোর তো শুনতে পাই–এখন খুবনামডাক, দু-একটা গর্দান নেওয়া কিছু ব্যাপার নয়, তো একটা বুনন কুকুরের গর্দান নামাতে পারবি?

    কিন্তু বাপী তো বাড়ি নেই।

    ভবদেব বললেন, জ্বর কি আজই হয়েছে?

    না, কাল গিয়ে শুনলাম, গোসাবা মহামায়া বিদ্যালয়ে দিদিমণির নাকি জ্বর, তিন-চার দিন কামাই।…কামাই! ভাষাটা শুনুন!..শয়তান একটা লোক, কিছুতে দেখা করতে দেবে না। বলে, কে আপনি, কী সম্বন্ধ? গার্জেনের চিঠি এনেছেন কিনা। চট করে পুলিশের ভয় দেখালাম। বললাম, তালতলা থানার ও সি পার্থ গুপ্তকে চেনেন? আমার নাম পার্থ গুপ্ত! ও সি!

    কী করব? একটু ভয় না খাওয়ালে? ভয়ে কাজ হল। শুনে নিয়ে আমার ব্যাপারে দ্বিরুক্তি করল না। তবে আমি ও সি তা তো বলিনি?..কিন্তু শানুই তো–যা আপত্তি লাগিয়েছিল!

    .

    ৬৩.

    হ্যাঁ শানু। নাজেহাল করতে বসেছিল পার্থকে।

    পার্থ যখন দু লাইন একটি চিঠি লিখে তার দুশ লাইন একটা জবাব জানার প্রত্যাশায় অপেক্ষা করে করে হতাশ হয়ে শেষ পর্যন্ত চলে এসেছিল, শানু বলেছিল, এখন এলে তুমি? চলে যাও, চলে যাও, আমাকে নিয়ে যাবার কথা ভাবতে বসবে না। কখনও না। কিছুতেই না।

    পার্থ ভেবেছিল, অভিমানটা বড় বেশি দুরন্ত, তারপর খটকা লেগেছিল।

    আর তারপর কিছু একটা অনুমান করেছিল। মরা ছাড়া আমার আর কোনও পথ নেই! পার্থদা।

    শানু বলেছিল, বিশ্বাস করবে? ওঠবার ক্ষমতার অভাবে আমি বিছানায় পড়েই শাড়ির আঁচল গলায়। জড়িয়ে রিটে দাঁত বসিয়ে কেরোসিন ল্যাম্পের থেকে তেল ঢেলে বিছানায় ছড়িয়ে

    বাঃ! চমৎকার! বাহাদুরিতে মোহিত হয়ে যাচ্ছি।

    শানু হতাশ নিশ্বাস ফেলেছিল, কিন্তু সবই তো ফেলিওর। হাতের কাছে একটা দেশলাই পর্যন্ত যদি আমার একটুও ওঠার ক্ষমতা থাকত পার্থদা, হয়তো এসে দেখতে

    গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছিস। কেমন? উঃ দৃশ্যটা কী একখানা মার্ভেলাসই হত! ন্যাকামি রাখ, ওঠার চেষ্টা কর। বিকেলে একটা লঞ্চ ছাড়বে–

    আমায় নিয়ে গিয়ে তোমার কোনও লাভ হবে না পার্থদা।

    আমার লাভ লোকসানটা নিয়ে নাই বা মাথা ঘামালি। যা বলছি কর।

    পাগলামি কোরো না পার্থদা। যা হবার নয়, তা হওয়াতে চেষ্টা কোরো না।…লঞ্চে উঠতে পারলে জলে ঝাঁপ দেব। মরা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই আমার।

    পার্থ বড় গলায় বলেছিল, তা মরাটা তোর হঠাৎ এত জরুরি হল কেন বলতে পারিস?

    বলতে পারব না। পারা যাবে না-পারা অসম্ভব!

    শানু দুহাতে মুখ ঢেকে বলে উঠেছিল, মরা ভিন্ন আর কিছু পথ নেই! নেই! আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। আমি নষ্ট হয়ে গেছি পার্থদা!

    পার্থ হঠাৎ একটু গম্ভীর হয়ে বলল, তুমি কিছুই হওনি। হয়ে থাক তো একটু পাগল হয়ে গেছ।

    শানু উত্তেজিত হয়ে উঠে বসেছিল। যদিও শানুর বুকে দারুণ ব্যথা ছিল। তবু উঠে বসে চেঁচিয়ে বলেছিল, তুমি কেন কিছুতেই বুঝতে পারছ না পার্থদা? জানো, ভাবতে পারো, ওই ঘেয়ো কুকুরটা আমায়–

    পার্থ হাত তুলে বলেছিল, থাক্ বলতে হবে না। বুঝতে না পারবার কী আছে? খোকা না বোকা? তবে বুঝতে পারছি না, একটা কুকুরে কামড়ানোয় মরাটা এমন অবশ্যকর্তব্য হয়ে উঠছে কেন? এই তুচ্ছ একটা ব্যাপার নিয়ে

    পার্থদা! কী?

    তুচ্ছ? কী বলছ তুমি?

    ঠিকই বলছি! কুকুর শেয়ালের কামড়ের মতো একটা তুচ্ছ ব্যাপার নিয়ে জীবনটাকে বরবাদ দিতে হবে? জীবন এত সস্তা?

    তারপর হঠাৎ খুব গম্ভীর হয়ে গিয়ে বলেছে, তবে সময়বিশেষে একটু শিক্ষা পাবার দরকার থাকে শানু। যা হোক কিছু একটা করে বসলেই হয় না। হতভাগা পার্থ একটা উজবুকি কাজ করে বসেছে, তবে, আমিও একটা বিদঘুঁটে কাণ্ড করে ছাড়ব। মানে হয়?…এই রকম একটা জায়গায়, তুই একা থাকতে এলি! আমাদের দেশটি যে কী, জানিস না?

    শানু নিশ্বাস ফেলে বলেছিল, আমার ভাগ্য। জগতে ভাল লোক কি নেই? লোকটা একটা ভাল লোক হতে পারত।

    হয়তো পারত! একজন ভাল লোকও থাকবে না, তা বলছি না। তবে তার সঙ্গে একশো জন খারাপও ভিড় করবে। দেশটা স্বাধীনই হয়েছে, সভ্য হয়েছে কী?..যাক দেরি করে লাভ নেই, তোর ওই সুন্দরী সখীটিকে ডাক, একটু ঠিকঠাক করে দিক তোকে। মনের জোর করে উঠে পড় দিকি।

    মনের জোর!

    শানু হতাশ নিশ্বাস ফেলেছিল, কোথাও কিছু জোর নেই। সব ফুরিয়ে গেছে। আমায় নিয়ে গিয়ে কী করবে পার্থদা?

    আঃ! এ তো ভাল জ্বালাল! কী মনে হচ্ছে তোর? তেলে ভেজে খাব? চিরদিন যাবৎ যেটা করার ঠিক ছিল, সেটাই করা হবে।

    পার্থদা! ঝোঁকের মাথায় একটা মস্ত ভুল করে বোসো না!

    ফের ঘ্যান ঘ্যান? কী চাস? থাপ্পড় খেতে?

    ⤶
    1 2 3 4 5 6 7
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleএই তো সেদিন
    Next Article রাতের পাখি – আশাপূর্ণা দেবী

    Related Articles

    আশাপূর্ণা দেবী

    বিবাগী পাখি – আশাপূর্ণা দেবী

    April 7, 2025
    আশাপূর্ণা দেবী

    কুমিরের হাঁ – আশাপূর্ণা দেবী

    April 7, 2025
    আশাপূর্ণা দেবী

    ঠিকানা – আশাপূর্ণা দেবী

    April 7, 2025
    আশাপূর্ণা দেবী

    ততোধিক – আশাপূর্ণা দেবী

    April 7, 2025
    আশাপূর্ণা দেবী

    ১. খবরটা এনেছিল মাধব

    April 7, 2025
    আশাপূর্ণা দেবী

    নতুন প্রহসন – আশাপূর্ণা দেবী

    April 7, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }