Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    নীল অপরাজিতা – হুমায়ূন আহমেদ

    হুমায়ূন আহমেদ এক পাতা গল্প80 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    নীল অপরাজিতা – ৪

    ৪

    শওকত সাহেব বারান্দায় বসে ছিলেন।

    আজো তাঁর খুব ভোরে ঘুম ভেঙেছে। ঘুম ভেঙেছে পাখির ডাকে। পাখির দল যে ভোরবেলা এত হৈচৈ করে তিনি আগে কল্পনাও করেন নি। কবিরা পাখির ডাক নিয়ে এত মাতামাতি কেন করেন তিনি বুঝতে পারছেন না। তাঁর কাছে যন্ত্রণার মতো মনে হচ্ছে। তবে রাত কেটে ভোর হবার দৃশ্য অসাধারণ। শুধুমাত্র এই দৃশ্য দেখার জন্যে রোজ ভোরবেলায় ওঠা যেতে পারে।

    পুষ্প চা নিয়ে ঢুকল।

    শওকত সাহেব বললেন, ‘তুমি কি রোজই এত ভোরে ওঠ, না আমার জন্যে উঠতে হচ্ছে?’

    পুষ্প এই কথার জবাব দিল না, হাসল। মেয়েটি বুদ্ধিমতী হাসি দিয়ে বুঝিয়ে দিল—সে রোজ এত ভোরে ওঠে না। মেয়েটি তার বাবার বকবকানির স্বভাব পায় নি —এও এক দিক দিয়ে রক্ষা। দু’জনের কথা শুনতে হলে সর্বনাশ হয়ে যেত।

    ‘তোমার বাবা কি আছেন না স্কুলে চলে গেছেন?

    ‘স্কুলে গেছেন। আজ সকাল-সকাল ফিরবেন। হাফস্কুল।’

    ‘বস পুষ্প, চা খেতে খেতে তোমার সঙ্গে গল্প করি।’

    বারান্দায় বসার কোনো জায়গা নেই। একটি মাত্র চেয়ার। সেখানে তিনি বসে আছেন।

    শওকত সাহেব বললেন, ‘টেবিলটায় বস। আর টেবিলে যদি বসতে অসুবিধা হয় তাহলে ভেতর থেকে চেয়ার নিয়ে এসো।’ পুষ্প টেবিলেই বসল। তবে টেবিলটা একটু দূরে সরিয়ে নিল।

    ‘এখন বল তুমি কেমন আছ?’

    ‘ভালো।’

    দেখে খুব ভালো মনে হচ্ছে না। রাতে ঘুম হয় নি তাই না?’

    পুষ্প হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়ল। এই মানুষটার দৃষ্টি তীক্ষ্ণ। পুষ্প বলল, ‘রাতে ঘুম হয় নি কি করে বুঝলেন?’

    ‘চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝলাম। রাতে ঘুম না হলে চোখের নিচ একটু কালচে হয়ে যায়। তোমার হয়েছে। তবে তুমি যদি এত ফর্সা না হতে তাহলে ধরতে পারতাম না। চা খুব ভালো হয়েছে।’

    ‘আরেক কাপ দেই?’

    ‘না। ভালো হয়েছে বলেই দ্বিতীয় কাপ খাব না। হয়ত দ্বিতীয়টা এত ভালো হবে না। সেই মন্দ চা খেয়ে প্রথম কাপের আনন্দ মাটি হবে। আচ্ছা এখন বল, তুমি আমার কোনো লেখা পড়েছ?’

    ‘একটা পড়েছি।’

    ‘একটা? মোটে একটা?’

    ‘জ্বি। আপনি আসবেন যখন কথা হল তখন বাবা নেত্রকোনা থেকে আপনার একটা বই কিনে আনলেন।

    ‘কোন বইটা কিনলেন?’

    বাবা দোকানদারকে বললেন, উনার সবচে’ কমদামী বই যেটা সেটাই দেন। দোকানদার একটা চটি বই দিয়ে দিল—’প্রথম দিবস, দ্বিতীয় রজনী।’

    ‘কমদামী বই হলেও এটা আমার ভালো লেখার মধ্যে একটা। এই বই নিয়ে সুন্দর একটা গল্প আছে—দাঁড়াও তোমাকে বলি। বৈশাখ মাসের এক তারিখে বই বের হবার কথা। প্রকাশকের দোকানে সকাল থেকে বসে আছি। তখন তো আর আমার এত বই ছিল না—ঐটি হচ্ছে দ্বিতীয় বই। বই বেরুবে—আমার আগ্রহ সীমাহীন। বাইন্ডারের বই দেয়ার কথা; সে আসছে না। দুপুরবেলা প্রকাশক বললেন, আপনি বাসায় চলে যান। বই বের হলে আপনাকে বাসায় দিয়ে আসব। আমি রাজি হলাম না। এসেছি যখন বই নিয়েই যাব। বিকেল পর্যন্ত বসে রইলাম, বাইন্ডারের দেখা নেই। প্রকাশক বললেন, আপনি এক কাজ করুন, বাইন্ডারের ঠিকানা দিয়ে দিচ্ছি—গিয়ে দেখুন কি ব্যাপার।’

    বাইন্ডারকে আওলাদ হোসেন লেনে ধরলাম। সে সবেমাত্র লেই লাগাচ্ছে। আমার খুব মেজাজ খারাপ হল। বাইন্ডার বলল, ‘কিছুক্ষণ বসেন একটা কাঁচা বই দিয়ে দেই।’

    সেই কিছুক্ষণ মানে চার ঘন্টা। বাসায় ফিরলাম রাত ন’টার পর। বাসায় এসে দেখি—রেনুকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। তার তখন ন’মাস চলছে। ডেলিভারি ডেটের এখনো অনেক দেরি। ব্যথা উঠে গেছে আগেই। ছুটে গেলাম হাসপাতালে। স্বাতীর জন্ম হয়ে গেছে। সন্ধ্যায় তাকে মার পাশে শুইয়ে রাখা হয়েছে। আমার লজ্জার সীমা রইল না। আমার প্রথম বাচ্চা অথচ আমি পাশে নেই। আমার লজ্জা এবং দুঃখ রেনু ঠিকই বুঝল। আমার লজ্জা ঢাকার জন্যে বলল, ‘কই দেখি তোমার বই। বাহ কী সুন্দর! বলেই শুধুমাত্র আমাকে খুশি করার জন্যে এই অবস্থায় বইটি পড়তে শুরু করল। আমার চোখে পানি এসে গেল।’

    পুষ্প বলল, ‘আপনি এত সুন্দর করে গল্পটা বললেন যে আমার চোখেই পানি এসে গেছে।’

    ‘রেনু অনেক বড় ভুল করে। নানান ভাবে আমাকে কষ্ট দেয় কিন্তু ঐ রাতের ঘটনার কথা মনে হলেই ওর সব অপরাধ আমি ক্ষমা করে দেই।’

    ‘যে মেয়ে ঐ রাতে এমন কান্ড করতে পারেন তিনি ভুল করতে পারেন না।’

    ‘তাও অবশ্যি ঠিক। এখন তুমি বল, বইটা তোমার কেমন লাগল?’

    পুষ্প চুপ করে রইল।

    শওকত সাহেব বিস্মিত হয়ে বললেন, ‘বইটা কি তোমার ভালো লাগে নি?’

    ‘জ্বি না।’

    ‘ভালো না লাগার তো কথা না। তুমি কি পড়েছ ভালো মতো?’

    ‘জি।’

    ‘কেন ভালো লাগল না বলতে পারবে?’

    ‘পারব।’

    ‘তাহলে বল তো শুনি।’

    ‘আপনি কি আমার কথায় রাগ করছেন?

    ‘না রাগ করছি না। আমার লেখার বিপক্ষে কঠিন-কঠিন কথা আমি সবসময় শুনি। সাহিত্যের অধ্যাপকরা বলেন, পণ্ডিত ব্যক্তিরা বলেন, বিদগ্ধজনেরা বলেন। তোমার মতো অল্প বয়স্ক মেয়ে বলবে তা ঠিক ভাবি নি। বিশেষ করে যে আমার একটি মাত্র বই পড়েছে। এখন তুমি আমাকে বল, কেন ভালো লাগল না।’

    পুষ্প নিচু গলায় বলল, ‘বইটার মূল বিষয়টাই ভুল।’

    ‘মূল বিষয়ই ভুল? কী বলছ তুমি?’

    ‘ঐটি একটি প্রেমের উপন্যাস। উপন্যাসের মূল বিষয় হল ভালবাসলে ভালবাসা ফেরত দিতে হয়—আপনার বই-এর চরিত্ররা তাই করেছে। কিন্তু এমন তো কখনো হয় না। মনে করুন একটা কালো কুদর্শন মেয়ে প্রচণ্ড আবেগ নিয়ে একটি রূপবান ছেলেকে ভালবাসল। সেই ছেলে কি তার ভালবাসা ফেরত দেবে? কখনো না। আপনি লিখেছেন মানুষ হচ্ছে আয়নার মতো। ভালবাসার আলো সেই আয়নায় পড়লে তা ফিরে আসবে। মানুষ আয়নার মতো না। আমার চেয়ে আপনি তা অনেক ভালো করে জানেন। একটা ভুল কথা লিখেছেন—কিন্তু এমন সুন্দর করে লিখেছেন যে, পড়লে সত্যি মনে হয়। মন অসম্ভব ভালো হয়ে যায়।’

    ‘মন ভালো হওয়াটাকে তুমি তুচ্ছ করছ কেন?

    ‘ভুল কথা বলে মন ভালো করলে সেটাকে তুচ্ছ করা কি উচিত না?’

    ‘পুষ্প আমি আরেক কাপ চা খাব।’

    পুষ্প উঠে গেল। শওকত সাহেব চুপচাপ বসে রইলেন।

    .

    পুষ্প চা নিয়ে ফিরে এল।

    তিনি বললেন, ‘থ্যাংক ইউ।’ বলেই হাসলেন। হাসির অর্থ—তুমি যা বলেছ শুনলাম। আমি রাগ করি নি। কিন্তু তিনি যে রাগ করেছেন তা ঢাকতে পারছেন না।

    ‘স্যার আমি কি আপনার নাশতা নিয়ে আসব?’

    ‘নিয়ে আস।’

    মেয়েটিকে প্রচণ্ড ধমক দিতে ইচ্ছে হচ্ছে। বলতে ইচ্ছে করছে—’শোন বোকা মেয়ে, আমি এই পৃথিবীটাকে যেমন দেখি, যেমন ভাবি তেমন করেই লিখি। সত্যিকার পৃথিবীটা কেমন তা নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই। সত্যিকার ছবি হচ্ছে ফটোগ্রাফি। সাহিত্য ফটোগ্রাফি নয়, তৈলচিত্র। সেই তৈলচিত্রে আমি কিছু রং বেশি ব্যবহার করেছি। মানুষকে যেভাবে দেখতে ভালবাসি আমি সেইভাবে আঁকি। যদিও জানি মানুষ সে রকম নয়। আমি নিজেও তেমন নই। কিন্তু আমার সে রকম হতে ইচ্ছে করে। কাজেই আমি ধরে নিয়েছি অন্যদেরও তাই হতে ইচ্ছে করে। আমি মানুষের ইচ্ছের ছবি এঁকেছি।’

    এইসব কথার কিছুই বলা হল না। তিনি নিঃশব্দে নাশতা খেলেন। নাশতা শেষ করে লেখার টেবিলে গিয়ে বসলেন। পুষ্প পেছনে-পেছনে এল।

    ‘কিছু বলবে পুষ্প?’

    পুষ্প নরম গলায় বলল, ‘আপনি আমার কথায় এতটা মন খারাপ করবেন আমি ভাবি নি। আমি অতি সামান্য মেয়ে, আমার কথার কি গুরুত্ব আছে? ‘

    ‘আমার সহজে মন খারাপ হয় না। কঠিন আঘাতও আমি সহজভাবে গ্রহণ করতে পারি। কিন্তু এই বইটির ব্যাপারে আমার এক ধরনের স্পর্শকাতরতা আছে। লেখক হিসেবে আমার আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। প্রথম বইটি প্রকাশিত হবার পর তিন বছর একটি লাইন লিখতে পারি নি। তারপর এই বইটি লিখলাম। লেখার পর মনে হল নিজের স্বপ্ন অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা আমার আছে। হোক না স্বপ্নটা মিথ্যা।’

    ‘আপনি নিজে যদি এটা বিশ্বাস করেন তাহলে আমার উপর এত রাগ করলেন কেন?’

    ‘তোমার উপর রাগ করেছি কারণ তুমি আমাকে যা বলেছ তাও কিন্তু আমি বিশ্বাস করি।’

    ‘তা কেমন করে হয়?’

    ‘হয়। একই সঙ্গে আমরা ভালবাসি, আবার যাকে ভালবাসি তাকে ঘৃণাও করি। তুমি সম্ভবত এখনো কারো প্রেমে পড় নি। প্রেমে পড়লে বুঝতে পারতে।’

    ‘আপনি কি এখন লিখবেন?

    ‘হ্যাঁ।’

    ‘লেখার সময় আমি যদি পাশে বসে থাকি আপনি কি রাগ করবেন?’

    ‘আমি চাই না লেখার সময় কেউ আমার আশেপাশে থাক। লিখতে লিখতে প্রায়ই আমার চোখে পানি আসে। এই দৃশ্য অন্যের কাছে হাস্যকর মনে হবার কথা।

    ‘তাহলে আমি যাই।’

    ‘আচ্ছা যাও-ভালো কথা, তোমাকে আমার পছন্দ হয়েছে Young lady, you are smart. এখন যাও, আমি লেখা শুরু করি।’

    ‘আজও কি দুপুরে খাবেন না?’

    ‘খাব। এখানে খাবার আনতে হবে না। ঠিক দু’টার সময় আমি তোমাদের ঘরে আসব।’

    ‘বিকেলে কি আমার সঙ্গে মঠটা দেখতে যাবেন?’

    ‘যাব।’

    ‘সত্যি যাবেন?’

    ‘হ্যাঁ, সত্যি যাব।’

    .

    মঠ ব্যাপারটা আসলে ইটের বিশাল স্তূপ।

    বোঝা যাচ্ছে এক সময় অনেক উঁচু ছিল, এখন ভেঙে একাকার হয়ে আছে। চল্লিশ পঞ্চাশ ফুটের মতো উঁচু। উপরে উঠার সিঁড়ি আছে। মোফাজ্জল করিম সাহেবও সঙ্গে আছেন। তিনিই সবচে’ অবাক হলেন, এইটা কি ব্যাপার? জিনিসটা কী?’

    শওকত সাহেব বললেন, ‘আপনি কখনো আসেন নি?’

    ‘আসবো না কেন? এই রাস্তায় কত আনাগোনা করেছি। জঙ্গলের ভেতর কখনো ঢুকি নাই। অবশ্য শুনেছি মঠের কথা।’

    পুষ্প বলল, ‘বাবা সিঁড়ি দিয়ে উঠলে কেমন হয়?

    ‘করিম সাহেব আঁতকে উঠলেন, ‘পাগল হয়েছিস? এটা সাপের আড্ডাখানা। তার উপর বর্ষাকাল। কাছেপিঠেই বেশিক্ষণ থাকা উচিত না।’

    শওকত সাহেব বললেন, ‘জিনিসটা কী কেউ কি বলতে পারে? দেখতে অনেকটা বাতিঘরের মতো! এই জায়গায় বাতিঘর থাকবে কেন? বৌদ্ধদের কিছু না তো?’

    করিম সাহেব বললেন, ‘না। এই অঞ্চলে কোনো বৌদ্ধ নাই।’

    ‘এরকম স্তূপ কি একটাই, না আরো আছে?’

    ‘জানি না তো!’

    ‘খোঁজ নেয়া যায়?’

    ‘অবশ্যই খোঁজ নেয়া যায়। স্কুলে একটা নোটিশ দিয়ে দিলেই হবে। দূর দূর থেকে ছেলেরা পড়তে আসে।’

    ‘তাহলে একটা নোটিশ দিয়ে দেবেন তো? আমি খুবই অবাক হচ্ছি। জঙ্গলের ভেতর এমন বিশাল ব্যাপার দেখব আশা করি নি বলেই বোধহয় অবাক হচ্ছি।’

    ‘শীতকালে একবার আসবেন স্যার। আমি সব পরিষ্কার-টরিষ্কার করে রাখব। শীতকালে জায়গাটা এমনিতেও খুব সুন্দর হয়। সোহাগী নদীর দুই ধারে কাশফুল ফোটে। আহ্ দেখার মতো। চলেন স্যার, আজ ফেরা যাক। কাদায় মাখামাখি হয়ে গেছেন।

    ‘চলুন।’

    ‘আপনার জন্যে স্যার একটা ভালো খবর আছে।’

    ‘বলুন শুনি।’

    ‘ওসি সাহেবকে বলেছিলাম একটা বজরার ব্যবস্থা করতে। উনি খুবই করিতকর্মা লোক। ব্যবস্থা করে ফেলেছেন। সন্ধ্যার মধ্যে বজরা ঘাটে চলে আসবে।’

    শওকত সাহেব অবাক হয়ে বললেন, ‘বজরা দিয়ে আমি কি করব?’

    ‘বজরায় বসে লেখালেখি করবেন। ঘুরবেন।’

    ‘আমি তো ভাই রবীন্দ্রনাথ না। আমি যেখানে আছি ভালো আছি।’

    ‘সেটা তো স্যার রইলই। বজরাও রইল।’

    আগে আগে যাচ্ছেন করিম সাহেব, তাঁর পেছনে শওকত সাহেব। পুষ্প এবং নৌকার মাঝি সবার পেছনে। পুষ্প নৌকার মাঝির সঙ্গে গল্প করতে করতে আসছে। চুল দু’বেণি করায় তাকে খুকী-খুকী লাগছে। আজ সে সুন্দর একটা শাড়ি পরেছিল। কাদায় শাড়ির অনেকখানিই নষ্ট। কাদার দাগ উঠবে বলে মনে হয় না। শওকত সাহেব লক্ষ করলেন, পুষ্প মাঝির সঙ্গে ময়মনসিংহের স্থানীয় ভাষায় টেনে টেনে কথা বলছে। মাঝির মতো করেই বলছে। করিম সাহেব যদিও তা করছেন না। ভাষার ব্যাপারে তিনি যে খুব সাবধান তা বোঝা যাচ্ছে।

    করিম সাহেব বললেন, ‘স্যার কি গোমাংস খান?’

    ‘খাব না কেন?’

    ‘অনেকে খায় না। এই জন্যে জিজ্ঞেস করছি। আমি লোক পাঠিয়েছি।’

    ‘কোথায় লোক পাঠিয়েছেন?’

    ‘এখানে তো স্যার গোমাংস পাওয়া যায় না। আশেপাশে মাংসের দোকান নাই। হাটবারে গরু জবেহ হয়। আজ সেঁজুতখালির হাট। ঐখানে লোক পাঠিয়েছি।’

    ‘ও আচ্ছা।’

    ‘সেঁজুতাখালির হাটে আজেবাজে গরু জবেহ করে। বাছা-বাছা গরু জবেহ হয় হলদিয়া হাটে। সোমবার হাট আছে। আমি নিজেই যাব। তবে সেঁজুতখালির হাটে মাঝে—মধ্যে ভালো গোশত পাওয়া যায়—এখন দেখি আপনার ভাগ্য।’

    ‘গোশত কেমন তা দিয়ে আমার ভাগ্য বিচার করবেন?’

    ‘ছিঃ ছিঃ স্যার এটা কি বললেন? আমি একটা কথার কথা বলেছি।

    বাড়ি ফিরতে-ফিরতে সন্ধ্যা মিলিয়ে গেল। উঠানে জলচৌকি পেতে কে একজন বসে আছে। বারান্দায় একটা বেতের ঝুড়ি এবং একটা সুটকেস। যে বসে আছে তার বয়স বাইশ তেইশ। বেঁটে-খাট একজন যুবক। বেশ স্বাস্থ্যবান। মনে হচ্ছে সম্প্রতি গোঁফ রেখেছে। গোঁফের পেছনে অনেক যত্ন এবং সাধনা আছে তা বোঝা যাচ্ছে।

    ‘তাকে দেখেই পুষ্প দূর থেকে চেঁচিয়ে উঠল’ ওমা বাবু ভাই! বাবু ভাই তুমি কোত্থেকে?’

    শওকত সাহেব লক্ষ করলেন, বাবু ভাই নামধারী যুবক এই উচ্ছ্বাসের প্রতি বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দেখাল না। যেন সে ধরেই নিয়েছে তাকে দেখামাত্র এমন রূপবতী একটি মেয়ে আনন্দে চেঁচিয়ে উঠবে।

    করিম সাহেব বললেন, ‘ও আমার দূর সম্পর্কের ভাগ্নে হয়। পুষ্পের সঙ্গে তার খুব ভাব।’

    শওকত সাহেব বললেন, ‘ও আচ্ছা।’

    তিনি দোতলায় উঠে এলেন। রেনুকে আরেকটা চিঠি লেখা দরকার। প্রথম চিঠিটিও পাঠানো হয় নি। আশ্চর্য ব্যাপার এখানে এসে পা দেয়ার পর রেনুর কথা তাঁর মনে হয় নি। স্বাতীর কথাও না। যেন ঐ জীবন তিনি পিছনে ফেলে এসেছেন। সেখানে ফিরে যাবার আর প্রয়োজন নেই।

    তিনি জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। এখান থেকে কুয়াতলাটা দেখা যাচ্ছে। পুষ্প কুয়াতলায় দাঁড়িয়ে—ঐ ছেলেটির কি যেন নাম—বাবু। হ্যাঁ বাবু, বালতি বালতি পানি তুলে পুষ্পের পায়ে ঢালছে। কিছু বোধহয় বলছেও—কারণ পুষ্প কিছুক্ষণ পরপর খিলখিল করে হেসে উঠছে। আশ্চর্য, এত আনন্দিত হয়েছে মেয়েটা? তিনি কি কখনো কাউকে এত আনন্দিত করতে পেরেছেন?

    শওকত সাহেবের মনে পড়ল কাদা পায়েই তিনি তাঁর ঘরে ঢুকেছেন। সারা ঘর কাদায় মাখামাখি। তিনি ঘর ছেড়ে বাথরুমে ঢুকলেন। দীর্ঘ সময় নিয়ে গা ধুলেন। কাজটা বোধহয় ঠিক হল না। আবার জ্বর না এলে হয়।

    গোসল শেষ করে ঘরে ঢুকে দেখেন ময়নাতলা স্কুলের দপ্তরি ইউনুস মিয়া ঘরে কেরোসিন ল্যাম্প জ্বালাচ্ছে।

    ‘ইউনুস মিয়া!’

    ‘জ্বি স্যার।’

    ‘কাদা পায়ে ঘরে ঢুকে ঘরের অবস্থা কি করেছি দেখ। একটু পরিষ্কার করে দিবে?’

    ‘দিতাছি স্যার।’

    ‘নিচে গিয়ে পুষ্পকে বলবে এককাপ চা দিতে?’

    ‘জ্বি স্যার, বলতাছি।’

    ‘তোমার কি মনে হয়—আজ রাতে বৃষ্টি হবে?’

    ‘এইটা স্যার ক্যামনে বলব? আল্লাহতালার ইচ্ছার উপরে সব নির্ভর।’

    ‘তা ঠিক।’

    শওকত সাহেব লেখার টেবিলে বসলেন। রেনুকে চিঠি লিখতে হবে। ভাগ্যিস চশমার কাচে ডান হাত কাটে নি। ডান হাত কাটলে কিছুই লিখতে পারতেন না। বাঁ হাতে যন্ত্রণা হচ্ছে। সারাদিন এই যন্ত্রণা টের পান নি কেন?

    কল্যাণীয়াসু,

    রেনু, প্রথম চিঠি (যা নৌকায় লেখা) তোমাকে পাঠাতে পারি নি। এর মধ্যে দ্বিতীয় চিঠি লেখা হল। দুটোই এক সঙ্গে পাঠাচ্ছি। এখানে কেমন আছি তা বলে লাভ নেই। ভালো আছি। মহাকবি বজলুর রহমান যেমন বলেছেন—বাড়ি তেমন নয় তাতে বুঝতেই পারছ। তবু খারাপ না। মোফাজ্জল করিম সাহেব যত্নের চূড়ান্ত করছেন। আলাদা বাবুর্চির ব্যবস্থা করা যায় নি। শুরুতে বেশ কয়েকবার বলেছি—অজ পাড়াগাঁয় তা বোধহয় সম্ভবও নয়।

    এখানকার বর্ষা খুব enjoy করছি। এর মধ্যে ঝড়ের মধ্যে পড়েছিলাম। অনেকদিন পর ছেলেবেলার মতো বৃষ্টিতে ভিজলাম। সেই রাতে একটু জ্বরের মতো হয়েছিল। তুমি এই খবরে আঁতকে উঠবে না। এমন জ্বর—যা থার্মোমিটারেও মাপা যায় না।

    এখন তোমার বিরুদ্ধে একটি গুরুতর অভিযোগ—তুমি অষ্টাঙ্গ সংগ্রহ বলে একটি বই সুটকেসে ঢুকিয়ে দিয়েছ। আমার যতদূর ধারণা এইসব বই সাধু সন্ন্যাসীদের জন্যে। তুমি কি ভাবছ আমি সন্ন্যাসী হবার জন্যে এখানে এসেছি? অষ্টাঙ্গ সংগ্রহ থেকে কিছু অংশ তুলে দিচ্ছি। পড়লেই বুঝবে কি জিনিস পাঠিয়েছ—

    যে ব্যক্তি সপ্তর্ষি মণ্ডলের সীমান্তে অরুন্ধতী নক্ষত্র দেখিতে পায় না সেই ব্যক্তি এক বছর পর মৃত্যুবরণ করে।

    ভক্তি, সদাচার, স্মৃতি, দানশীলতা, বুদ্ধি ও বল এই ছয়টি গুণ যাহার নষ্ট হয় তাহার মৃত্যু ছয় মাসের মধ্যে ঘটে।

    বই পড়ার পর অরুন্ধতী নক্ষত্র দেখার চেষ্টা করে বিফল হয়েছি—কাজেই ভয়ে ভয়ে আছি। ছয়টি সদ্গুণের মধ্যে মাত্র দু’টি-বুদ্ধি ও স্মৃতি এখনো আছে। এই দু’টি চলে গেলে কি যে হবে কে জানে।

    এতক্ষণ রসিকতা করলেও মৃত্যু নিয়ে আমি কিন্তু প্রায়ই ভাবি। এতদিন যা লিখেছি তার কিছু কি টিকে থাকবে? স্বাতীর ছেলেমেয়েরা কি পড়তে পারবে, না তার আগেই সব শেষ? স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ বলেছেন—

    “আমার কীর্তিরে আমি করি না বিশ্বাস।
    জানি, কাল সিন্ধু তারে
    নিয়ত তরঙ্গাঘাতে
    দিনে দিনে দিবে লুপ্ত করি।”

    সেখানে আমি কে?

    আজ এই পর্যন্ত।

    পুনশ্চঃ আমার স্মৃতিশক্তি যে এখনো আছে—কবিতার চারটি চরণ লিখে তা প্রমাণ করলাম। কাজেই আরো কিছু দিন টিকে থাকব। কি সর্বনাশ, আসল খবর দিতে ভুলে গিয়েছি। লেখা খুব ভালো এগুচ্ছে—পঁয়ত্রিশ পৃষ্ঠা লিখে ফেলেছি।

    ‘স্যার আপনের চা।’

    চা নিয়ে এসেছে ইউনুস মিয়া। শওকত সাহেবের মন খারাপ হয়ে গেল। তিনি কি মনে-মনে আশা করেছিলেন পুষ্প আসবে?

    ‘ইউনুস মিয়া

    ‘জ্বে।’

    ‘পুষ্প কি করছে?’

    ‘গল্প করতেছেন।’

    ‘কার সঙ্গে?’

    ‘ঐ যে আসছেন বাবু ভাই।’

    ‘সে কি প্রায়ই আসে?’

    ‘জ্বে আসেন।’

    ‘পুষ্প গল্প করলে রান্নাবান্না কে করছে?’

    ‘মতির মা চইল্যা আসছে।’

    ‘আচ্ছা ঠিক আছে, তুমি যাও।’

    তিনি রেনুর কাছে লেখা চিঠিটি আবার পড়লেন এবং অবাক হয়ে লক্ষ করলেন চিঠির কোথাও পুষ্পের কথা নেই। রেনু এই চিঠি পড়ে বুঝতেও পারবে না এ বাড়িতে পুষ্প নামের রূপবতী একটি মেয়ে আছে। তিনি এই কাজটি কেন করলেন? ইচ্ছাকৃতভাবে করেন নি। অবচেতন মন তাঁকে বাধা দিয়েছে।

    ‘স্যার আসব?’

    শওকত সাহেব দেখলেন দরজার কাছে বাবু দাঁড়িয়ে। পান খেয়ে ঠোঁট লাল করে এসেছে।

    ‘আপনার সাথে পরিচয় করবার জন্য আসলাম। আপনাদের মতো মানুষের দেখা পাওয়া আর হাতে আসমানের চাঁন পাওয়া এক কথা।’

    ‘আমাকে তুমি চেন?’

    ‘জ্বি না—পুষ্প আমারে বলেছে।’

    তাকে ভেতরে আসার কথা বলতে হল না। সে নিজ থেকেই ঘরে ঢুকে পালঙ্কে পা তুলে বসল। তার মধ্যে অপরিচিত একজন মানুষের সঙ্গে কথা বলার প্রাথমিক সংকোচটুকুও পুরোপুরি অনুপস্থিত।

    ‘তুমি কি পড়াশোনা কর? ‘

    ‘জ্বি। বি. এ. দিছিলাম—রেফার্ড হয়ে গেল। অবশ্য আই. এ. এক চান্সে পাস করেছি।’

    ‘এসএসসি এক চান্সে পার নি?’

    ‘জ্বি না। এসএসসি এক চান্সে পাস করা খুবই কঠিন ব্যাপার। জুয়েল ছেলেমেয়েরা পারে।’

    ‘তুমি নিজেকে জুয়েল মনে কর না?’

    ‘আরে না। কি যে স্যার আপনে বলেন।’

    ‘পাস করার পর কি করবে; চাকরি-বাকরি?’

    ‘চাকরি-বাকরি আমারে কে দিবে? তারপরেও ধরেন যদি ভুল করে কেউ দেয় তা হইলেও তো সাড়ে সর্বনাশ।’

    ‘সাড়ে সর্বনাশ কেন?

    ‘লেখাপড়া কিছুই জানি না। আই. এ-তে তাও কিছু পড়েছিলাম। বি. এ-তে কিছুই পড়ি নাই। নকলের উপর পাস করেছি। এইবার বাইরে থাইক্যা খুব স্ট্যান্ডার্ড নকল আসছে।’

    ‘তারপরেও রেফার্ড পেয়ে গেলে?’

    না পাইয়া উপায় কি বলেন—ঐ দিন হঠাৎ ম্যাজিস্ট্রেট আইসা উপস্থিত। সাপ্লাই বন্ধ। এই এক পেপারে আমার সর্বনাশ হইছে। অন্যগুলোয় ফিফটি ওয়ান পার্সেন্ট নম্বর আছে।’

    ‘নম্বর তো খুব ভালো পেয়েছ।’

    ‘আপনারে কি বললাম স্যার—খুব স্ট্যান্ডার্ড নকল ছিল এই বৎসর। ভেরি হাই স্ট্যান্ডার্ড।’

    ‘পাস করে কি করবে তা কিন্তু এখনো বল নি—’

    ‘আমাদের মতো ছেলেদের ব্যবসা ছাড়া গতি কি বলেন। বাবার একটা ফার্মেসি আছে নেত্রকোনা সদরে—আল মদিনা ড্রাগ স্টোর। ঐটা দেখাশোনা করব। আপনে স্যার আমার জন্য দোয়া রাখবেন। আপনি জ্ঞানী মানুষ। পুষ্প যেসব কথা আপনার সম্বন্ধে বলল, শুনে চোখে পানি এসে গেল।’

    শওকত সাহেব চুপ করে বসে রইলেন। পুষ্প তাঁর সম্পর্কে এমন কী বলতে পারে যে, বাবু নামের এই ছেলের চোখে পানি এসে যায়!

    ‘পুষ্প কি বলেছে আমার সম্পর্কে?

    ‘ঐ যে স্যার ঝড়ের মধ্যে পড়লেন—তারপর ব্রেইন ডিফেক্ট হয়ে গেল–খালি উল্টা-পাল্টা কবিতা। স্যার এখন তাহলে যাই। স্লামালিকুম।’

    তিনি সালামের উত্তর দিলেন না। উত্তর দেবার মতো অবস্থা তাঁর ছিল না। তিনি পুরোপুরি হতভম্ব।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleতুমি আমায় ডেকেছিলে ছুটির নিমন্ত্রণে – হুমায়ূন আহমেদ
    Next Article সায়েন্স ফিকশন সমগ্র – হুমায়ূন আহমেদ

    Related Articles

    হুমায়ূন আহমেদ

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    হুমায়ূন আহমেদ রচনাবলী ১১

    December 12, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এই আমি – হুমায়ূন আহমেদ

    December 12, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    মীরার গ্রামের বাড়ী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }