বানর ও বাবুই
এক বনে ছিল এক তালগাছ। তাতে বাসা বেঁধে থাকত এক বাবুই দম্পতি। বেশ সুখেই ছিল তারা। হঠাৎ হেমন্তের এক সকালে এল মুষলধারে বৃষ্টি। যেমন হাওয়া, তেমন বৃষ্টি। তাই ছুটতে ছুটতে এক বানর এসে আশ্রয় নিল সেই গাছের নীচে। ঠঠক করে কাঁপছে তার দন্তপাটি। দেখে বাবুই বলল: তোমারতো হাত আছে, পা-ও আছে। একটা লম্বা লেজও আছে। দেখতে অনেকটা মানুষেরই মতো। কিন্তু ঘর বাঁধ না কেন? বৃষ্টিতে ভিজে কেন এমন কাঁপছ! আমাদের কেবল ঠোঁট আছে। তা দিয়েই কেমন সুন্দর বাসা বানিয়ে আমরা কত আরামে আছি। তোমরা আসলে অলস ও মূর্খ। তাই কষ্ট পাচ্ছ।
একেতো বৃষ্টিভেজা, তায় আবার তুচ্ছ এক বাবুইর উপদেশ। শুনে বানরের গেল মাথা গরম হয়ে। সে দাঁত খিচিয়ে বলল: আমি শীতে কাঁপছি তাতে তোর কি? তোর এত স্পর্ধা যে আমায় উপদেশ দিচ্ছিস! চুপ থাক, নইলে উচিত শিক্ষা দেব!
বাবুই: সাপকে দুধ খাওয়ালে তাতে যেমন তার বিষই বাড়ে, তেমনি মূর্খকে উপদেশ দিলে তাতে তার ক্রোধই বাড়ে।
বানর: তবে রে পাজি! দেখাচ্ছি মজা! এই বলে গাছে উঠে বাবুইর বাসা ভেঙ্গে ফেলল এবং বাসার ভেতরে যে ডিম ছিল, তা নীচে পড়ে খানখান হয়ে গেল।
করটক: তাই বলছিলুম, মূর্খকে উদেশ দিয়ে কোনো লাভ নেই। তোকে প্রথম থেকেই এত করে বললুম যে, রাজার সঙ্গে লড়তে যাসনে। তাতে পদে পদে বিপদ। তা আমার কথা শুনলি না। অবশ্য শুনবিই বা কেন? মরাগাছে জল দিলে তাতে কি আর ফল ধরে? দেখ যারা অন্যের বিপদ দেখে নাচে, তারা নেচেনেচে নিজের বিপদকেই স্বাগত জানায়। আর মনে রাখিস—ধর্মের কাছে অধর্ম একদিন পরাস্ত হবেই। তাইতো—
ধর্মবুদ্ধি পাপবুদ্ধি ছিল দুই সখা।
মিলেমিশে আয় করে ভুরি ভুরি টাকা।।
লোভে পড়ে পাপবুদ্ধি করে মস্ত পাপ।
তার ফলে পুড়ে মরে আপনার বাপ।।
দমনক: খুলে বলো।
করটক: শোন …