Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    করুণা তোমার কোন পথ দিয়ে – নবনীতা দেবসেন

    September 1, 2025

    হে পূর্ণ, তব চরণের কাছে – নবনীতা দেবসেন

    September 1, 2025

    ভ্রমণের নবনীতা – নবনীতা দেবসেন

    September 1, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    পথের পাঁচালী – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

    উপন্যাস বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এক পাতা গল্প391 Mins Read0

    ২৫. কয়দিন খুব বর্ষা চলিতেছে

    কয়দিন খুব বর্ষা চলিতেছে। অন্নদা রায়ের চণ্ডীমণ্ডপে সন্ধ্যাবেলায় মজলিশ বসে। সেদিন সেখানে নীলকুঠির ভূয়ো গল্প হইতে শুরু হইয়া পুরীর কোন মন্দিরের মাথায় পাঁচমন ভারী চুম্বক পাথর বসানো আছে, যাহার আকর্ষণের বলে নিকটবতী সমুদ্রগামী জাহাজ প্রায়ই পথভ্ৰষ্ট হইয়া আসিয়া তীরবতী মগ্ন শৈলে লাগিয়া ভাঙিয়া যায় প্রভৃতি-আরব্য উপন্যাসের গল্পের মতো নানা আজগুবি কাহিনীর বর্ণনা চলিতেছিল। শ্রোতাদের কাহারও উঠিবার ইচ্ছা ছিল না, এরকম আজগুবি গল্প ছাড়িয়া কাহারও বাড়ি যাইতে মন সরিতেছিল না। ভূগোল হইতে শীঘ্রই গল্পের ধারা আসিয়া জ্যোতিষে পৌঁছিল। দীনু চৌধুরী বলিতেছিলেন-ভৃগু-সংহিতার মতো আমন বই তো আর নেই! তুমি যাও, শুধু জন্মরাশিটা গিয়ে দিয়ে দাও, তোমার বাবার নাম, কোন কুলে জন্ম, ভূত ভবিষ্যৎ সব বলে দেবে-তুমি মিলিয়ে নাও—গ্রহ ও রাশিচক্রের যত রকম ইয়ে হয়-তা সব দেওয়া আছে কি না? মায় তোমার পূর্বজন্ম পর্যন্ত–

    সকলে সাগ্রহে শুনিতেছিলেন, কিন্তু রামময় হঠাৎ বাহিরের দিকে চাহিয়া বলিলেন-না, ওঠা যাক, এর পর যাওয়া যাবে না-দেখচো না-দেখচো না কাণ্ডখানা? একটা বড় ঝটুক-টাট্‌কা না হলে বঁচি, গতিক বড় খারাপ, চলো সব—

    বৃষ্টির বিরাম নাই। একটু থামে, আবাব আমনি জোরে আসে, বৃষ্টির ছাটে চারিধার ধোঁয়া ধোঁয়া।

    হরিহর মোট পাঁচটা টাকা পাঠাইয়াছিল, তাহার পর আর পত্ৰও নাই, টাকাও নাই। সেও অনেক দিন হইয়া গোল-রোজ সকালে উঠিয়া সর্বজয়া ভাবে আজ ঠিক খরচ আসিবে। ছেলেকে বলে, তুই খেলে খেলে বেড়াস বলে দেখতে পাসনে, ডাক-বাক্সটার কাছে বসে থাকবি-পিওন যেমন আসবে। আর অমনি জিজ্ঞেস করবি–

    অপু বলে-বা, আমি বুঝি বসে থাকি নে? কালও তো এলো পুটিদের চিঠি, আমাদের খবরের কাগজ দিয়ে গেল-জিজ্ঞেস করে এসো দিকি পুটকে? কাল তবে আমাদের খবরের কাগজ কি করে এলো? আমি থাকিনে বই কি?

    বর্ষা রীতিমতো নামিয়াছে। অপু মায়ের কথায় ঠোয় রায়েদের চণ্ডীমণ্ডপে পিওনের প্রত্যাশায় বসিয়া থাকে। সাধু কর্মকারের ঘরে চালা হইতে গোলা পায়রার দল ভিজিতে ভিজিতে ঝটাপট করিয়া উড়িতে উড়িতে রায়েদের পশ্চিমের ঘরের কার্নিসে আসিতেছে, চাহিয়া চাহিয়া দ্যাখে। আকাশের ডাককে সে বড় ভয় করে। বিদ্যুৎ চমকাইলে মনে মনে ভাবে-দেবতা কিরকম নলপাচ্চে দেখেচোঁ, এইবার ঠিক ডাকবে-পরে সে চোখ বুজিয়া কানে আঙুল দিয়া থাকে।

    বাড়ি ফিরিয়া দ্যাখে মা ও দিদি সারা বিকাল ভিজিতে ভিজিতে রাশীকৃত কচুর শাক তুলিয়া রান্নাঘরের দাওয়ায় জড়ো করিয়াছে।

    অপু বলে-কোথেকে আনলে মা? উঃ কত!

    দুর্গা হাসিয়া বলে-কত- উ-উঃ! তোমার তো বসে বসে বড় সুবিধে1.ওই ওদের ডোবার জামতলা থেকে-এই এতটা এক হ্যাঁটু জল। যাও দিকি?…

    সকালে ঘাটে গিয়া নাপিত-বৌয়ের সঙ্গে দেখা হয়। সর্বজয়া কাপড়ের ভিতর হইতে কাসার একখানা রেকবি বাহির করিয়া বলে, এই দ্যাখো জিনিসখানা, খুব ভালো-ভরণ না, কিছু না, ফুল কাঁসা। তুমি বলেছিলে, তাই বলি যাই নিয়ে-এ সে জিনিস নয়, এ আমার বিয়ের দান—এখন এ জিনিস আর মেলে না

    অনেক দরদস্তুরের পর নাপিত-বৌ নগদ একটি আধুলি আঁচল হইতে খুলিয়া দিয়া রেকর্মবিখানা কাপড়ের মধ্যে লুকাইয়া লয়। কাউকে যেন না প্রকাশ করে–সর্বজয়া এ অনুরোধ বার বার করে।

    দুই একদিনে ঘনীভূত বৰ্ষা নামিল। তুহু পুবে হাওয়া, খানাডোবা সব থই থই করিতেছেপথে ঘাটে একহ্যাঁটু জল, দিনরাত সো সো, বাশবনে ঝড় বাধে-বাঁশের মাথা মাটিতে লুটাইয়া লুটাইয়া পড়ে-আকাশের কোথাও ফাক নাই-মাঝে মাঝে আগেকার চেয়ে অন্ধকার করিয়া আসে-কালো কালো মেঘের রাশ হু-হু, উড়িয়া পুব হইতে পশ্চিমে চলিয়াছে-দূর আকাশের কোথায় যেন দেবাসুরের মহাসংগ্রাম বাধিয়াছে, কোন কৌশলী সেনানায়কের চালনায় জলস্থলআকাশ একাকারে ছাইয়া ফেলিয়া বিরাট দৈত্যসৈন্য, বাহিনীর পর বাহিনী, অক্ষৌহিণীৰ পর অক্ষৌহিণী, অদৃশ্য রথী-মহারথীদের নায়কত্বে ঝড়ের বেগে অগ্রসর হইতেছে-প্ৰজ্বলন্ত অত্যুগ্র দেববাজ আগুন উড়াইয়া চক্ষের নিমেষে বিশাল কৃষ্ণচমূর এদিক-ওদিক পর্যন্ত ছিঁড়িয়া ফাঁড়িযা এই ছিন্ন ভিন্ন করিয়া দিতেছে-এই আবার কোথা হইতে রক্তবীজের বংশ করাল কৃষ্ণছায়ায় পৃথিবী অন্তরীক্ষা অন্ধকার করিয়া ঘিরিয়া আসিতেছে।

    মহাঝড়!

    দিন রাত সোঁ-সোঁ শব্দ-নদীর জল বাড়ে-কত ঘরদোর কত জায়গায় যে পড়িয়া গেল!…নদী নালা জলে ভাসিয়া গিয়াছে-গরু-বাছুর গাছের তলে, বাশবনে, বাড়ির ছাঁচতলায় অঝোরে দাঁড়াইয়া ভিজিতেছে, পাখি-পাখালির শব্দ নাই কোনোদিকে! চাব পাঁচ দিন সমান ভাবে কাটিল–কেবল ঝড়ের শব্দ আর অবিশ্রাস্ত ধারাবর্ষণ!-অপু দাওয়ায় উঠিয়া তাড়াতাড়ি ভিজা মাথা মুছিতে মুছিতে বলিল-আমাদের বাঁশতলায় জল এসেচে দিদি, দেখবি?

    দুৰ্গা কাঁথা মুড়ি দিয়া শুইয়াছিল–না উঠিয়াই বলিল-কতখানি জল এসেচে রে?…

    অপু বলে, তোর জ্বর সারলে কাল দেখে আসিস। … তেঁতুলতলার পথে হাঁটু জল! পরে জিজ্ঞাসা করে-মা কোথায় রে?

    ঘরে একটা দানা নেই।–দুটোখানি বাসি চালভাজা মাত্র আছে। অপু কান্নাকাটি করে,—তা হবে না। মা, আমার খিদে পায় না বুঝি—আমি দুটি ভাত খাবো।–হুঁ-উ-

    তার মা বলিল, লক্ষ্মী মানিক আমাব-ও রকম কি করে। অনেক করে চালভাজা মেখে দেবো। এখন-রাধবো কেমন করে; দেখচিস নে কি রকম সেওটা করেচে?-উনুনের মধ্যে এক উনুন জল যে? পরে সে কাপড়ের ভিতর হইতে একটা কি বাহির করিয়া হাসিমুখে দেখাইয়া বলে-এই দ্যাখ একটা কইমাছ বাঁশতলায় কানে হেঁটে দেখি বেড়াচ্চে—বন্যের জল পেয়ে সব উঠে আসছে গাঙ থেকে-বরোজ পোতার ডোবা ভেসে নদীর সঙ্গে এক হয়ে গিয়েচে কিনা?…তাই সব উঠে আসচে—

    দুৰ্গা কাঁথা ফেলিয়া ওঠে-অবাক হইয়া যায়। বলে, দেখি মা মাছটা? হ্যাঁ মা, কইমাছ বুঝি কানে হেঁটে বেড়ায়? আর আছে?…

    অপু এখনই বৃষ্টিমাথায় ছুটিয়া যায় আর কি-অনেক কষ্ট তাহার মা তাহাকে থামায়।

    দুর্গা বলে–একটু জ্বর সারলে কাল সকালে চল অপু, তুই আর আমি বাঁশবাগান থেকে মাছ নিয়ে আসবো এখন। পরে সে অবাক হইয়া ভাবে-বাঁশাবাগানে মাছ! কী করে এল? বাঃ তো!– মা কি আর ডালো করে খুঁজেচে। খুঁজলে আরও সেখানে আছে-দেখতে পেলাম না কি রকম কইমাছ কানো হ্যাঁটে-কাল সকালে দেখবো-সকালে জ্বর সেরে যাবে–

    চারিদিকে বন-বাগান ঘিরিয়া সন্ধ্যা নামে। সন্ধ্যার মেঘে ত্ৰয়োদশীর অন্ধকারে চারিধার একাকার। দুর্গা যে বিছানা পাতিয়া শুইয়া আছে, তাহারই এক পাশে তাহার মা ও অপু বসে। সর্বজয়া ভাবে-আজ যদি এখখুনি একখানা পত্তর আসে নীরেন বাবাজীর? কি জানি, তা হতে কি আর পারে না? নীরেন তো পছন্দই করে গিয়েচেন-কি জানি কি হল আদেষ্টে! নাঃ, সে সব কি আর আমার আদেষ্টে হবে? তুমিও যেমন! তা হলে আর ভাবনা ছিল কি?

    ওদিকে ভাইবোনে তুমুল তর্ক বাধিয়া যায়। অপু সরিয়া মায়ের কাছে ঘেঁষিয়া বসে-ঠাণ্ডা হাওয়ায় বেজায় শীত করে। হাসিয়া বলে—মা-কি? সেই–শ্যামলঙ্কা বাটুনা বাটে মাটিতে লুটায় কেশ?…

    দুৰ্গা বলে-ততক্ষণে মা আমার ছেড়ে গিয়েচেন দেশ—

    অপু বলে-দূর-হ্যাঁ মা তাই? ততক্ষণে মা আমার ছেড়ে গিয়েচেন দেশ?-কথা বলিয়াই সে দিদির অজ্ঞতায় হাসে।

    সর্বজয়ার বুকে ছেলের অবোধ উল্লাসের হাসি শেলের মতো বেঁধে। মনে মনে ভাবে-সাতটা নয় পাঁচটা নয়-এই তো একটা ছেলে–কি আদেষ্ট যে করে এসেছিলাম–তার মুখের আবদার রাখতে পারিনে-ঘি না, লুচি না, সন্দেশ না-কি না শুধু দুটো ভাত-নিনকি?!…আবার ভাবেএই ভাঙা ঘর, টানাটানির সংসার।–অপু মানুষ হলে আর এ দুঃখ থাকবে না।–ভগবান তাকে মানুষ করে তোলেন যেন।…

    তাহার পর সে বসিয়া বসিয়া গল্প করে, যখন প্রথম সে নিশ্চিন্দিপুরে ঘর করিতে আসিয়াছিল, তখন এক বৎসর এই রকম অবিশ্রান্ত বর্ষায় নদীর জল এত বাড়িয়াছিল যে ঘাটের পথে মুখুজ্যেবাগানের কাছে বড় বোঝাই নৌকা পর্যন্ত আসিয়াছিল।

    অপু বলে-কত বড় নৌকো মা?

    —মস্ত-ওই যে খোট্টাদের চুনের নৌকো, সাজিমাটির নৌকো, মাঝে মাঝে আসে দেখিচিস তো—অত বড়–

    দুৰ্গা হঠাৎ জিজ্ঞাসা করে-মা তুমি চারগুছির বিনুনি করতে জানো?

    অনেক রাত্রে সর্বজয়ার ঘুম ভাঙিয়া যায়–অপু ডাকিতেছে-মা, ওমা ওঠে- আমার গায়ে জল পড়াচে–

    সর্বজয়া উঠিয়া আলো জ্বলে-বাহিরে ভয়ানক বৃষ্টির শব্দ হইতেছে। ফুটা ছাদ দিয়া ঘরের সর্বত্র জল পড়িতেছে। সে বিছানা সরাইয়া পাতিয়া দেয়। দুৰ্গা অঘোর জুরে শুইয়া আছে—তাহার মা গায়ে হাত দিযা দ্যাখে তাহার গায়ের কাঁথা ভিজিয়া সাপ সাপ করিতেছে। ডাকিয়া বলে-দুর্গও দুর্গা শুনছিস?…একটু ওঠু দিকি? বিছানাটা সরিয়ে নি—ও দুর্গ-শিগগির, একেবারে ভিজে গোল যে সব?…

    ছেলেমেয়ে ঘুমাইয়া পড়িলেও সর্বজয়ার ঘুম আসে না। অন্ধকার রাত-এই ঘন বর্ষা…তাহার মন ছমছম করে-ভয় হয় একটা যেন কিছু ঘটিবে.কিছু ঘটিবে। বুকের মধ্যে কেমন যেন করে। ভাবে- সে মানুষেরই বা কি হল? কোন পত্তিরও আসে না’—টাকা মরুকগে যাক। এরকম তো কোনোবার হয় না?…তার শরীরটা ভালো আছে তো? মা সিদ্ধেশ্বরী, স-পাঁচ আনার ভোগ দেবো, ভালো খবর এনে দাও মা–

    তার পরদিন সকালের দিকে সামান্য একটু বৃষ্টি থামিল। সবজয়া বাটীর বাহির হইয়া দেখিল বাশবনের মধ্যে ছোট ডোবাটা জলে ভর্তি হইয়া গিয়াছে। ঘাটের পথে নিবারণের মা ভিজিতে ভিজিতে কোথায় যাইতেছিল, সর্বজয়া ডাকিয়া বলিল-ও নিবারণের মা শোনা—পরে সলজভাবে বলিল-সেই তুই একবার বলিছিলি না, বিন্দবুনি চাদরের কথা তোর ছেলের জন্যে-তা নিবি?…

    নিবারণের মা বলিল-আছে? দেয়া একটু ধীবুক, মোর ছেলেরে সঙ্গে করে এখনি আসবো এখন-নতুন আছে মা-ঠাকুরোন, না পুরোনো?…

    সর্বজয়া বলিল, তুই আয় না-এখুনি দেখবি?…একটু পুরোনো, কিন্তু সে কেউ গায়ে দেয় নি-ধোয়া তোলা আছে-পরে একটু থামিয়া বলিল-তোরা আজকাল চাল ভানচিস নে?.

    নিবারণের মা বলিল-এই বাদলায় কি ধান শূকোয় মা ঠাকুরোন…খাবার বলে দুটোখানি রেখে দিইচি অমনি

    সর্বজয়া বলিল-এক কাজ করা না-তাই গিয়ে আমায় আধকাটা খানেক আজ দিয়ে যাবি?. একটু সরিয়া আসিয়া মিনতির সুরে বলিল-বৃষ্টির জন্যে বাজার থেকে চাল আনাবার লোক পাচ্চিনে-টাকা নিয়ে নিয়ে বেড়াচ্চি তা কেউ যদি রাজি হয়—বড় মুশকিলে পড়িচি মা–

    নিবারণের মা স্বীকার হইয়া গেল, বলিল-আসবো এখন নিয়ে, কিন্তু সে ভেটের ধানের চালির ভাত কি আপনারা খেতে পারবেন মা-ঠাকুরোন?…বড্ড মোটা—

    নিমছাল সিদ্ধ দুৰ্গা আর খাইতে পারে না। তাহার অসুখ একভাবেই আছে। ঔষধ নাই, পথ্য নাই, ডাক্তার নাই, বৈদ্য নাই। বলে–এক পয়সার বিস্কুট আনিয়ে দেবে মা, নোনতা, মুখে বেশ লাগে।

    সাবু তাই জোটে না, তার বিস্কুট।

    বৈকালবেলা হইতে আবার ভয়ানক বৃষ্টি নামিল। বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ও যেন বেশি করিয়া আসে-ঘোর বর্ষণমুখর নির্জন, জলে থই-থই, কুহু পুবে হাওয়া বওয়া, মেঘে অন্ধকারে একাকার ভাদ্র-সন্ধ্যা! আবার সেই রকম কালো কালো পেঁজা তুলোর মতো মেঘ উড়িয়া চলিয়াছে।…বৃষ্টির শব্দে কান পাতা যায় না—দরজা জানোলা দিযা ঠাণ্ডা হাওয়ার ঝাপটার সঙ্গে বৃষ্টির ছাট দু-জু করিয়া ঢোকে-ছেড়া থলে ছেড়া কাপড়-গোঁজা ভাঙা কাবাটের আড়ালের সাধ্য কি যে ঝড়ের ভীম আক্রমণের মুখে দাঁড়ায়।

    বেশি রাত্ৰে সকলে ঘুমাইলে বেশি বৃষ্টি নামিল। সর্বজয়ার ঘুম আসে না—সে বিছানায উঠিয়া বসে। বাহিরে শুধু একটানা ফুস হ্রস জলের শব্দ; কুদ্ধ দৈত্যের মতো গজমান একটানা গোঁ গোঁ বাবে ঝড়ের দমকা বাড়িতে বাধিতেছে! …জীৰ্ণ কোঠাখানা এক-একবাবেবী দমকায় যেন থর থর কবিয়া কঁপে,.ভয়ে তাহার প্রাণ উড়িয়া যায়.গ্রামের একাধারে বাঁশবনের মধ্যে ছোট ছোট ছেলেমেযে লইয়া নিঃসহায়!.মনে মনে বলে-ঠাকুর, আমি মারি তাতে খেতি নেই-এদেব কি করি?-এই রাত্তিরে যাই বা কোথায়?… মনে মনে বসিয়া বসিয়া ভাবে-আচ্ছা যদি কোঠা পড়ে, তবে দালানের দেওয়ালটা বোধ হয় আগে পড়বে।-যেমন শব্দ হবে আমনি পানচালার দোর দিয়ে এদের টেনে বাব করে নেবো–

    সে যেন আর বসিয়া থাকিতে পারে না-কয়দিন সে ওলশাক কচুশাক সিদ্ধ করিয়া খাইয়া দিন কটাইতেছে–নিজে উপবাসের পর উপবাস দিয়া ছেলেমেয়েকে যাহা কিছু সামান্য খাদ্য ছিল খাওয়াইতেছে- শরীর ভাবনায় অনাহারে দুর্বল, মাথার মধ্যে কেমন করে।

    ঝড়ের গোঁ গো শব্দ, অনেক রাত্রে ঝড় বাড়িল। বাহিরে কি ঝটিকা আসিল! উপায়! একবার বড় একটা দমকায় ভয় পাইয়া সে ঝড়ের গতিক বুঝিবার জন্য সন্তৰ্পণে দালানের দুয়ার খুলিয়া বাইরের রোয়াকে মুখ বাড়াইল.বৃষ্টির ছাটে কাপড় চুল সব ভিজিয়া গেল-জু দুএকটানা হওয়ার শব্দে বৃষ্টিপতনের ঝড়ের শব্দ ঢাকিয়া গিয়াছে-বাহিরে কিছু দেখা যায় না-অন্ধকারের মেঘে। আকাশে বাতাসে গাছপালায় সব একাকার! ঝড়-বৃষ্টির শব্দে আর কিছু শোনা যায় না।

    এই হিংস্ৰ অন্ধকার ও ক্রুর ঝটিকাময়ী রজনীর আত্মা যেন প্ৰলয়দেবের দূতরূপে ভীম। ভৈরব বেগে সৃষ্টি গ্রাস করিতে ছুটিয়া আসিতেছে-অন্ধকারে, রাত্রে, গাছপালায়, আকাশে, মাটিতে তাহার গতিবেগ বাধিয়া শব্দ উঠিতেছে-সুইশ সু-উ-উ-উইশ.সু উ উ উ ই শ…এই শব্দের প্রথমাংশের দিকে বিশ্বগ্রাসী দূতটা যেন পিছু হটিয়া বল সঞ্চয় করিতেছে-সু উ উ—এবং শেষের অংশটায় পৃথিবীর উচ্চ নীচ তাবৎ বায়ুস্তর আলোড়ন, মন্থন করিয়া বায়ুস্তরে বিশাল তুফান তুলিয়া তাহার সমস্ত আসুরিকতার বলে সর্বজয়াদের জীর্ণ কোঠাটার পিছনে ধাক্কা দিতেছে-ইই শ..! কোঠা দুলিয়া দুলিয়া উঠিতেছে…আর থাকে না! ইহার মধ্যে যেন কোনো অধীরতা, বিশৃঙ্খলতা, ভ্রম-ভ্রান্তি নাইযেন দৃঢ়, অভ্যস্থ, প্রণালীবদ্ধ ভাবের কর্তব্যকাৰ্য.বিশ্বটাকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চুৰ্ণ করিয়া উড়াইয়া দেওয়ার ভার যে লইয়াছে, যুগে যুগে এরকম কত হাস্যমুখী সৃষ্টিকে বিধ্বস্ত করিয়া অনন্ত আকাশের অন্ধকারে তারাবাজির মতো ছড়াইয়া দিয়া আসিয়াছে যে মহাশক্তিমান ধ্বংসদূত-এ তার অভ্যস্ত কাৰ্য…এতে তার অধীরতা উন্মত্ততা সাজে না…

    আতঙ্কে সর্বজয়া দোর বন্ধ করিয়া দিল.আচ্ছা যদি এখন একটা কিছু ঘরে ঢোকে? মানুষ কি অন্য কোন জানোয়ার? চারিদিকে ঘন বাঁশবন, জঙ্গল, লোকজনের বসতি নাই-মাগো! জলের ছাটে ঘর ভাসিয়া যাইতেছে…হাত দিয়া দেখিল ঘুমস্ত অপুর গা জলে ভিজিয়া ন্যাত হইয়া যাইতেছে..সে কি করে? আর কত রাত আছে? সে বিছানা হাতড়াইয়া দেশলাই খুঁজিয়া কেরোসিনের ডিবাটা জ্বলে। ডাকে-ও অপু ওঠ তো? জল পড়চে—। অপু ঘুমচোখে জড়িত গলায় কি বলে বোঝা যায় না। আবার ডাকে-অপু? শূনচিস ও অপু? ওঠু দিকি! দুৰ্গাকে বলে-পোশ ফিরে শো তো দুগগা। বড় জল পড়চে-একটু সরে, পাশ ফের দিকি-

    অপু উঠিয়া বসিয়া ঘুমচোখে চারিদিকে চায়—পরে আবার শুইয়া পড়ে। কুড়মা করিয়া বিষম কি শব্দ হয়, সর্বজয়া তাড়াতাড়ি আবার দুয়ার খুলিয়া বাহিরের দিকে উঁকি মারিয়া দেখিল— বাঁশবাগানের দিকটা ফাঁকা ফাঁকা দেখাইতেছে–রান্নাঘরের দেওয়াল পড়িয়া গিয়াছে?…তাহার বুক কঁপিয়া ওঠে-এইবার বুঝি পুরানো কোঠোটা–? কে আছে, কাহাকে সে এখন ডাকে? মনে মনে বলে-হে ঠাকুর, আজকার রাতটা কোনো রকমে কাটিয়ে দাও, হে ঠাকুর, ওদের মুখের দিকে তাকাও—

    তখনও ভালো করিয়া ভোর হয় নাই, ঝড় থামিয়া গিয়াছে কিন্তু বৃষ্টি তখনও অল্প অল্প পড়িতেছে। পাড়ার নীলমণি মুখুজ্যের স্ত্রী গোহালে গরুর অবস্থা দেখিতে আসিতেছেন, এমন সময় খিড়কিদোরে বার বার ধাক্কা শুনিয়া দোর খুলিয়া বিস্ময়ের সুরে বলিলেন-নতুন বৌ!..সৰ্বজয়া ব্যস্তভাবে বলিল-নাদি, একবার বটুটাকুরকে ডাকো দিকি?…একবার শিগগির আমাদের বাড়িতে আসতে বলো-দুগগা কেমন করচে!

    নীলমণি মুখুজ্যের স্ত্রী আশ্চর্য হইয়া বলিলেন—দুগ্ৰগা? কেন কি হয়েছে দুগগার?…

    সর্বজয়া বলিল-কদিন থেকে তো জ্বর হচ্ছিল-হচ্ছে। আবার যাচ্ছে-ম্যালেরিয়ার জ্বর, কাল সন্দে থেকে জ্বর বড্ড বেশি।–তার ওপর কাল রাত্রে কি রকম কাণ্ড তো জানেই-একবার শিগগির বটুঠাকুরকে–

    তাহার বিস্রস্ত কেশ ও রাত-জাগা রাঙা রাঙা চোখের কেমন দিশাহারা চাহনি দেখিয়া নীলমণি মুখুজ্যের স্ত্রী বলিলেন-ভয় কি বৌ-দাঁড়াও আমি এখুনি ডেকে দিচ্চি-চল আমিও যাচ্ছি।–কাল আবার রাত্তিরে গোয়ালের চালাখানা পড়ে গেল-বাবা, কাল রাত্তিরের মতো কাণ্ড আমি তো কখনও দেখিনি-শেযরাত্রে সব উঠে গাবু টাবু সরিয়ে রেখে আবার শুয়োচে কিনা?…দাঁড়াও আমি ডাকি–

    একটু পরে নীলমণি মুখুজ্যে, তাহার বড় ছেলে ফণি, স্ত্রী ও দুই মেয়ে সকলে অপুদের বাড়িতে আসিলেন। রাত্রের অন্ধকারে সেই দৈত্যটা যেন সারা গ্রামখানা দলিত, পিষ্ট, মথিত করিয়া দিয়া আকাশ-পথে অন্তহিত হইয়াছে-ভাঙা গাছের ডাল, পাতা, চালের খড়, কাঁচা বাঁশপাতা, বাঁশের কঞ্চিতে পথ ঢাকিয়া দিয়াছে-ঝড়ের বাঁশ নুইয়া পথ আটকাইয়া রহিয়াছে। ফণি বলিল-দেখেচোন বাবা কাণ্ডখানা? সেই নবাবগঞ্জের পাকা রাস্তা থেকে বিলিতি তট্‌কা গাছটার পাতা উড়িয়ে এনেচে!…নীলমণি মুখুজ্যের ছোট ছেলে একটা মরা চড়ুই পাখি বাঁশপাতার ভিতর হইতে টানিয়া বাহির করিল।

    দুৰ্গার বিছানার পাশে অপু বসিয়া আছে-নীলমণি মুখুজ্যে ঘরে ঢুকিয়া বলিলেন-কি হয়েছে বাবা অপু?

    অপুর মুকে উদ্বেগের চিহ্ন। বলিল, দিদি কি সব বকছিল জেঠামশায়।

    নীলমণি বিছানার পাশে বসিয়া বলিলেন-দেখি হাতখানা?…জুরটা একটু বেশি, আচ্ছা! কোনো ভয় নেই।–ফণি, তুমি একবার চট করে নবাবগঞ্জে চলে যাও দিকি শরৎ ডাক্তারের কাছেএকেবারে ডেকে নিয়ে আসবে। পরে তিনি ডাকিলেন-দুৰ্গা, ও দুৰ্গা? দুৰ্গার অঘোর আচ্ছন্ন ভাব, সাড়া শব্দ নাই। নীলমণি বলিলেন, এঃ, ঘরদোরের অবস্থা তো বড্ড খারাপ? জল পড়ে কাল রাত্রে ভেসে গিয়েছে…তা বৌমার লজ্জার কারণই বা কি-আমাদের ওখানে না হয় উঠলেই হ’ত? হরিটারও কাণ্ডজ্ঞান আর হল না। এ জীবনে–এই অবস্থায় এইরকম ঘরদের সারানোর একটা ব্যবস্থা না করে কি যে কারচে, তাও জানিনে-চিরকালটা ওর সমান গেল–

    তাহার স্ত্রী বলিলেন-ঘর সারাবে কি, খাবার নেই ঘরে, নৈলে কি এরকম আতাস্তরে ফেলে কেউ বিদেশে যায়? আহা, রোগা মেয়েটা কাল সারাৱাত ভিজোচে–একটু জল গরম করতে দাওওই জানালাটা খুলে দাও তো ফণি?

    একটু বেলায় নবাবগঞ্জ হইতে শরৎ ডাক্তার আসিলেন-দেখিয়া শুনিয়া ঔষধের ব্যবস্থা করিলেন। বলিয়া গেলেন যে বিশেষ ভয়ের কোনো কারণ নাই, জ্বর বেশি হইয়াছে, মাথায় জলপটি নিয়মিতভাবে দেওয়ার বন্দোবস্ত করিলেন। হরিহর কোথায় আছে জানা নাই-তবুও তাহার পূর্ব ঠিকানায় তাহাকে একখানি পত্র দেওয়া হইল।

    পরদিন ঝড় বৃষ্টি থামিয়া গেল—আকাশের মেঘ কাটিতে শুরু করিল। নীলমণি মুখুজ্যে দু’বেলা নিয়মিত দেখাশোনা করিতে লাগিলেন। ঝড় বৃষ্টি থামিবার পরদিন হইতেই দুর্গার জ্বর আবার বড় বাড়িল। শরৎ ডাক্তার সুবিধা বুঝিলেন না। হরিহরকে আর একখানা পত্র দেওয়া হইল।

    অপু তাহার দিদির মাথার কাছে বসিয়া জলপটি দিতেছিল। দিদিকে দু-একবার ডাকিল-ও দিদি শুনছিস, কেমন আছিস, ও দিদি? দুৰ্গার কেমন আচ্ছন্ন ভাব। ঠোঁট নড়িতেছে–কি যেন আপন মনে বলিতেছে, ঘোর ঘোর। অপু কানের কাছে মুখ লইয়া গিয়া দু-একবার চেষ্টা করিয়াও কিছু বুঝিতে পারিল না।

    বৈকালের দিকে জ্বর ছাড়িয়া গেল। দুর্গা আবার চোখ মেলিয়া চাহিতে পারিল এতক্ষণ পরে। ভারি দুর্বল হইয়া পড়িয়াচে, চিটি করিয়া কথা বলিতেছে, ভালো করিয়া না শুনিলে বোঝা যায় না কি বলিতেছে।

    মা গৃহকার্যে উঠিয়া গেলে অপু দিদির কাছে বসিয়া রহিল। দুর্গা চোখ তুলিয়া তাহার দিকে চাহিয়া বলিল-বেলা কত রে?

    অপু বলিল।–বেলা এখনও অনেক আছে–রাদ্দুর উঠেচে আজ দেখিচিসি দিদি? এখনও আমাদের নারকেল গাছের মাথায় রোদ্দুর রয়েচে–

    খানিকক্ষণ দুজনেই কোনো কথা বলিল না। অনেকদিন পরে রৌদ্র ওঠাতে অপুর ভরি আহ্রদ হইয়াছে। সে জানালার বাহিরে রৌদ্রালোকিত গাছটার মাথায় চাহিয়া রহিল।

    খানিকটা পরে দুর্গা বলিল-শোন অপু-একটা কথা শোন-

    -কি রে দিদি? পরে সে দিদির মুখের আরও কাছে মুখ লইয়া গেল।

    -আমায় একদিন তুই রেলগাড়ি দেখাবি?

    –দেখাবো এখন-তুই সেরে উঠলে বাবাকে বলে আমরা সব একদিন গঙ্গা নাইতে যাবো রেলগাড়ি করে—

    সারা দিন রাত্রি কাটিয়া গেল। ঝড় বৃষ্টি কোনও কালে হইয়াছিল মনে হয় না। চারিধারে দারুণ শরতের রৌদ্র।

    সকাল দশটার সময় নীলমণি মুখুজ্যে অনেকদিন পরে নদীতে স্নান করিতে যাইবেন বলিয়া তেল মাখিতে বসিয়াছেন, তাহার স্ত্রীর উত্তেজিত সুর তার কানে গোল-ওগো, এসো তো একবার এদিকে শিগগির-অপুদের বাড়ির দিক থেকে যেন একটা কান্নার গলা পাওয়া যাচ্চে

    ব্যাপার কি দেখিতে সকলে দুটিয়া গেলেন।

    সর্বজয়া মেয়ের মুখের উপর ঝুঁকিয়া পড়িয়া বলিতেছে-ও দুগগা চা দিকি-ওমা, ভালো করে চা দিকি-ও দুগগা—

    নীলমণি মুখুজ্যে ঘরে ঢুকিয়া বলিলেন–কি হয়েচে-সরো সব, সরো দিকি-আহা কি সব বাতাসটা বন্ধ করে দাড়াও?

    সর্বজয়া ভাসুর-সম্পর্কের প্রবীণ প্রতিবেশীর ঘরের মধ্যে উপস্থিতি ভুলিয়া গিয়া চিৎকার করিয়া উঠিল-ওগো, কি হল, মেয়ে আমন করচে কেন?

    দুৰ্গা আর চাহিল না।

    আকাশের নীল আস্তরণ ভেদ করিয়া মাঝে মাঝে অনন্তের হাতছানি আসে-পৃথিবীর বুক থেকে ছেলেমেয়েরা চঞ্চল হইয়া ছুটিয়া গিয়া অনস্ত নীলিমার মধ্যে ড়ুবিয়া নিজেদের হারাইয়া ফেলে–পরিচিত ও গতানুগতিক পথের বহুদূরপারে কোন পথহীন পথে-দুৰ্গার অশান্ত, চঞ্চল প্রাণের বেলায় জীবনের সেই সৰ্বাপেক্ষা বড় অজানার ডাক আসিয়া পৌঁছিয়াছে!

    তখন আবার শরৎ ডাক্তারকে ডাকা হইল-বলিলেন—ম্যালেরিয়ার শেষ স্টেজটা আর কি-খুব জুরের পর যেন বিরাম হয়েচে আর আমনি হার্টফেল করে–ঠিক এরকম একটা case হয়ে গেল সেদিন দশঘরায়–

    আধঘণ্টার মধ্যে পাড়ার লোকে উঠান ভাঙিয়া পড়িল।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleঅপরাজিত – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    Next Article চাঁদের পাহাড় – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

    Related Articles

    ছোটগল্প বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

    কাদা kada

    August 11, 2025
    উপন্যাস কল্লোল লাহিড়ী

    ইন্দুবালা ভাতের হোটেল – কল্লোল লাহিড়ী

    May 28, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    রবার্টসনের রুবি – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    বোম্বাইয়ের বোম্বেটে – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    রয়েল বেঙ্গল রহস্য – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডুতে – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    করুণা তোমার কোন পথ দিয়ে – নবনীতা দেবসেন

    September 1, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    করুণা তোমার কোন পথ দিয়ে – নবনীতা দেবসেন

    September 1, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    করুণা তোমার কোন পথ দিয়ে – নবনীতা দেবসেন

    September 1, 2025

    হে পূর্ণ, তব চরণের কাছে – নবনীতা দেবসেন

    September 1, 2025

    ভ্রমণের নবনীতা – নবনীতা দেবসেন

    September 1, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.