প্রথম প্রবন্ধ
অনেক বছর আগে আমি একবার পালামৌ গিয়েছিলাম। ফিরে আসার পর সেখানকার কথা লিখতে আমার কয়েকজন বন্ধু আমাকে বারবার অনুরোধ করতেন। আমি তখন তাদের ঠাট্টা করে উড়িয়ে দিতাম। এখন কেউ অনুরোধ করে না, তবু আমি সেই গল্প লিখতে বসেছি। কারণটা হলো বয়স। গল্প করা এই বয়সের একটা রোগ—শুনুক বা না শুনুক, বুড়ো মানুষ গল্প করবেই।
এতদিন আগের কথা লিখতে বসেছি, সব কিছু ঠিকঠাক মনে নেই। আগে যা লিখতাম, এখন ঠিক তা-ই লিখব, এমন নয়। তখন যে চোখে সেই নির্জন পাহাড়, ফুলে ভরা বন দেখতাম, সে চোখ এখন আর নেই। এখন মনে হয় পাহাড় শুধু পাথুরে, বন কেবল কাঁটায় ভরা, আর সেখানকার মানুষগুলো নষ্টচরিত্র। তাই যারা বয়সের গুণে শুধু সৌন্দর্য ভালোবাসেন, তাদের আমার লেখায় তৃপ্তি হবে না।
যেদিন পালামৌ যাওয়া স্থির হলো, সেদিনও জানতাম না সেটা কোন দিকে, কত দূরে। তাই ম্যাপ দেখে রাস্তা ঠিক করলাম। হাজারিবাগ হয়ে যেতে হবে ভেবে ইনল্যান্ড ট্রানজিট কোম্পানির ডাকগাড়ি ভাড়া করে রাত দেড়টায় রাণীগঞ্জ থেকে রওনা হলাম। সকালে বরাকর নদীর পূর্ব পাড়ে গাড়ি থামল। নদীটা খুব ছোট, তখন জলও কম ছিল। সবাই হেঁটে পার হচ্ছিল। গাড়ি ঠেলে পার করতে হবে, তাই গাড়োয়ান কুলি ডাকতে গেল।
পূর্ব পাড় থেকে দেখলাম, ওপারের ঘাটে একজন সাহেব বাংলোয় বসে পাইপ টানছে। সামনে একজন চাপরাশি গেরুয়া রঙের মাটি হাতে দাঁড়িয়ে আছে। যে লোক পার হতে আসছে, চাপরাশি তার হাতে সেই মাটি দিয়ে কিছু একটা দাগ কাটছে। পার হওয়া লোকের বেশির ভাগই আদিবাসী, তাদের যুবতীরা নিজেদের হাতে মাটির দাগ দেখে আড়চোখে তাকাচ্ছে আর হাসছে। আবার অন্যের গায়ে সেই দাগ কেমন দেখাচ্ছে, সেটাও দেখছে। শেষে যুবতীরা হাসতে হাসতে দৌড়ে নদীতে নামল। তাদের দৌড়াদৌড়িতে নদীর জল ছিটকে কূল ভেসে যাচ্ছে।
আমি এই দৃশ্য দেখছি, এমন সময় কয়েকটি আদিবাসী বালক-বালিকা এসে আমার গাড়ি ঘিরে ধরল। “সাহেব, একটা পয়সা দাও!” বলে চেঁচাতে লাগল। আমি ধুতি-চাদর পরা নিরীহ বাঙালি, আমাকে কেন সাহেব বলছে, জানতে চাইলাম, “আমি সাহেব নই।” একটি মেয়ে তার নাকের ছোট অলংকারে নখ দিয়ে বলল, “হ্যাঁ, তুমি সাহেব।” আরেকজন জিজ্ঞেস করল, “তবে তুমি কি?” আমি বললাম, “আমি বাঙালি।” সে বিশ্বাস করল না, বলল, “না, তুমি সাহেব।” তারা ভাবল, গাড়িতে চড়লে সে নিশ্চয়ই সাহেব।
এই সময় একটা দুই বছরের শিশু আকাশের দিকে মুখ তুলে হাত পাতল। কেন হাত পাতছে, সেটা সে নিজেও জানে না। সবাই হাত পাতছে দেখে সেও হাত পাতল। আমি তার হাতে একটা পয়সা দিলাম। শিশু সেটা ফেলে দিয়ে আবার হাত পাতল। অন্য একটি ছেলে সেই পয়সা কুড়িয়ে নিলে, শিশুর বোনের সঙ্গে তার ঝগড়া বেধে গেল। এই সময় আমার গাড়ি ওপারে গিয়ে উঠল।
বরাকর থেকে দু-একটা ছোট পাহাড় দেখা যাচ্ছিল। বাঙালিরা শুধু মাঠ দেখে অভ্যস্ত, মাটির একটা ঢিবি দেখলেই তাদের আনন্দ হয়। তাই সেই ছোট পাহাড়গুলো দেখে আমার যে খুব আনন্দ হলো, এতে আশ্চর্য কী? ছোটবেলায় পাহাড়-পর্বতের গল্প অনেক শুনেছিলাম। একবার এক সন্ন্যাসীর আখড়ায় চুনকাম করা একটা গিরিগোবর্ধন দেখে পাহাড়ের আকার বুঝেছিলাম। কৃষক মেয়েরা শুকনো গোবর দিয়ে যে ঢিবি করে, সন্ন্যাসীর গোবর্ধন তার চেয়ে কিছু বড়। তার ওপরে চার-পাঁচটা ইট বসিয়ে চূড়া বানানো হয়েছে। সবচেয়ে উঁচু চূড়ার পাশে একটা সাপের ফণা বানিয়ে তাকে নানা রঙে রাঙানো হয়েছে। যাতে সাপটা নজর এড়িয়ে না যায়, তাই ফণাটা একটু বড় করে বানানো হয়েছে। ফলে পাহাড়ের চূড়ার চেয়ে সাপের ফণাই বড় দেখাচ্ছে। এটা কারিগরের দোষ নয়, সন্ন্যাসীরও দোষ নয়। সাপটা কালীয়দমনকারী কৃষ্ণের কালীয়, তাই পাহাড়ের চেয়ে তার ফণা বড় হবেই। সন্ন্যাসীর এই গিরিগোবর্ধন দেখে ছোটবেলায় পাহাড়ের একটা ধারণা হয়েছিল। বরাকরের পাহাড় দেখে সেই ধারণাটা একটু বদলাতে শুরু করল।
বিকেলে দেখলাম, একটা সুন্দর পাহাড়ের পাশ দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে। এত কাছ দিয়ে যাচ্ছে যে পাহাড়ের ছোট ছোট পাথরের ছায়া পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। গাড়োয়ানকে গাড়ি থামাতে বলে আমি নেমে পড়লাম। গাড়োয়ান জিজ্ঞেস করল, “কোথায় যাবেন?” আমি বললাম, “এই পাহাড়ে একবার যাব।” সে হেসে বলল, “পাহাড় এখান থেকে অনেক দূরে, সন্ধ্যার আগে আপনি সেখানে পৌঁছতে পারবেন না।” আমি কথাটা বিশ্বাস করলাম না। আমার চোখে পাহাড় খুব কাছেই মনে হচ্ছিল, পাঁচ মিনিটেই পৌঁছে যাব। তাই গাড়োয়ানের কথা না শুনে পাহাড়ের দিকে হাঁটলাম। পাঁচ মিনিটের জায়গায় পনেরো মিনিট দ্রুত হেঁটেও পাহাড় তত দূরেই মনে হচ্ছিল। তখন ভুল বুঝে গাড়িতে ফিরে এলাম। পাহাড়ের দূরত্ব বোঝা বাঙালির পক্ষে খুব কঠিন—এই শিক্ষা আমি পালামৌ গিয়ে বারবার পেয়েছি।
পরদিন দুপুরে হাজারিবাগ পৌঁছলাম। সেখানে গিয়ে শুনলাম, এক সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির বাড়িতে আমার খাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। প্রায় দুদিন খাওয়া হয়নি, তাই খাবারের কথা শুনেই ক্ষুধা আরও বেড়ে গেল। যিনি আমার জন্য আয়োজন করছেন, তিনি আমার আসার খবর পেলেন কী করে, তা খুঁজে বের করার সময় পেলাম না। তখুনি তাঁর বাড়িতে গাড়ি নিয়ে যেতে বললাম। যাঁর বাড়িতে যাচ্ছি, তাঁর সঙ্গে কখনও দেখা হয়নি। নাম শুনেছি, সুখ্যাতিও অনেক শুনেছি। সবাই বলেন তিনি ভালো মানুষ। কিন্তু সে প্রশংসায় কান দিইনি, কারণ বাঙালি মাত্রই ভালো মানুষ। বাঙালির কাছে শুধু প্রতিবেশীরাই দুষ্ট। যাদের প্রতিবেশী নেই, তাদেরই নাম ঋষি। ঋষি মানে শুধু প্রতিবেশীহীন গৃহস্থ। ঋষির আশ্রমের পাশে প্রতিবেশী বসালে তিন দিনের মধ্যে ঋষিত্ব চলে যায়। প্রথম দিন প্রতিবেশীর ছাগল ফুলগাছের সব পাতা খেয়ে ফেলবে। দ্বিতীয় দিনে তার গরু এসে কমণ্ডলু ভেঙে দেবে। তৃতীয় দিনে প্রতিবেশীর স্ত্রী এসে ঋষিপত্নীকে গয়না দেখাবে। তারপর ঋষিকে ওকালতি বা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের পরীক্ষা দিতে হবে!
এখন সে সব কথা থাক। যাঁর বাড়িতে যাচ্ছি, তাঁর বাগানে গাড়ি ঢুকতেই প্রথমে ভাবলাম, এটা নিশ্চয়ই কোনো ধনী ইংরেজের বাড়ি। পরক্ষণেই ভুল ভাঙল। বারান্দায় কয়েকজন বাঙালি বসে আমার গাড়ির দিকে তাকিয়ে আছেন। গাড়ি থামতেই আমি নেমে পড়লাম। আমাকে দেখে সবাই সাদরে এগিয়ে এলেন। যাঁকে চিনতে না পেরে প্রথমে প্রণাম করলাম, তিনিই গৃহকর্তা। শত লোকের ভিড়েও আমার চোখ প্রথমে তাঁর দিকেই পড়ত। এমন প্রসন্ন মুখ আমি কমই দেখেছি। তখন তাঁর বয়স পঞ্চাশ পার হয়েছে, কিন্তু তাকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছিল। সম্ভবত এটাই প্রথম আমি কোনো বৃদ্ধকে সুন্দর দেখলাম।
আমি তখন নিজে যুবক, তাই বৃদ্ধকে সুন্দর দেখা ধর্মসংগত নয়। কিন্তু সেদিন সেই অদ্ভুত ঘটনাই ঘটল। এখন আমি নিজেই বৃদ্ধ, তাই প্রায় সব বৃদ্ধকেই সুন্দর দেখি। একজন মহাপুরুষ বলেছিলেন, মানুষ বৃদ্ধ না হলে সুন্দর হয় না। এখন আমি তাঁর কথার যথার্থতা বুঝি।
প্রথম সাক্ষাতের পর স্নান করতে গেলাম। স্নানঘরটা ইংরেজি ধাঁচের, কিন্তু খাওয়া হিন্দু রীতিতেই হলো—তবে তাতে পেঁয়াজের আধিক্য ছিল। পেঁয়াজ হিন্দুধর্মের বড় শত্রু। তবে খাবারে আর কোনো দোষ ছিল না—ঘিয়েভাত আর দেবীদুর্লভ ছাগলের মাংস, দুটোই নির্দোষ।
আমি পেঁয়াজের কথা বলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ‘পেঁয়াজ’ শব্দটা যবনদের, তাই ‘পলাণ্ডু’ শব্দটা ব্যবহার করে সাধুদের মুখ পবিত্র রাখলাম। কিন্তু পলাণ্ডু আর পেঁয়াজ একই জিনিস কিনা, এ নিয়ে আমার বহুদিন ধরে সন্দেহ ছিল। একবার পাঞ্জাবের এক রাজা জগন্নাথ দর্শনে যাওয়ার পথে মেদিনীপুরে কয়েকদিন ছিলেন। শহরের লোকেরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এলে একজন জিজ্ঞেস করলেন, “মহারাজ, আমরা শুনেছিলাম আপনি হিন্দুচূড়ামণি, কিন্তু আসার সময় আপনার রান্নাঘরের সামনে পলাণ্ডু দেখে এলাম।” রাজা আশ্চর্য হয়ে “পলাণ্ডু!” বলে বারবার উচ্চারণ করতে লাগলেন। সঙ্গে সঙ্গে খোঁজ নিতে উঠে পড়লেন, শহরের লোকেরাও তাঁর পিছু নিলেন। রান্নাঘরের সামনে দাঁড়িয়ে একজন বাঙালি পেঁয়াজের স্তূপ দেখালে রাজা হেসে বললেন, “এটা পলাণ্ডু নয়, এটা পেঁয়াজ। পলাণ্ডু খুব বিষাক্ত জিনিস, ওটা শুধু ওষুধে ব্যবহার হয়। সব জায়গায় জন্মায় না। যে মাঠে জন্মায়, সেখানকার বাতাস দূষিত হয়ে যায়, তাই কেউ সেখানে যায় না। সে মাঠে আর কোনো ফসল হয় না।”
রাজার কথা যদি সত্যি হয়, তাহলে অনেকেই নিশ্চিন্ত হতে পারেন। পলাণ্ডু আর পেঁয়াজ এক কিনা, তা পশ্চিমে খোঁজ করলে জানা যেতে পারে। বিশেষ করে যেসব বাঙালি সিন্ধুপ্রদেশে আছেন, তাঁরা সহজেই এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন।
খাওয়ার পর বিশ্রামঘরে বসে বাচ্চাদের সঙ্গে গল্প করতে করতে তাদের শোবার ঘর দেখতে গেলাম। ঘরটা বেশ বড়, চার কোণে চারটি খাট, মাঝে আরেকটি। বাচ্চারা বলল, “আমরা চার কোণে শুই, আর মাঝে মাস্টারমশাই থাকেন।” এই ব্যবস্থা দেখে খুব খুশি হলাম। দিনরাত বাচ্চাদের সঙ্গে শিক্ষক থাকা খুব জরুরি, এটা অনেকেই বোঝেন না।
বাচ্চাদের ঘর থেকে বেরিয়ে আরেকটি ঘরে দেখি, এক থোকা পাকা কলা দোল খাচ্ছে, আর তাতে একটা কাগজ ঝুলছে। পড়ে দেখলাম, প্রতিদিন কতগুলো কলা খরচ হয়, সেটা এতে লেখা আছে। লোকেরা এটাকে ছোট নজর বলে, কিন্তু আমি তা মনে করি না। বরং এই হিসাব দেখে আমি আরও মুগ্ধ হলাম। যাঁর কথা বলছি, তাঁর কাছে বড়-ছোট সবই সমান গুরুত্ব পায়। অনেকে বড় জিনিস দেখেন, কিন্তু ছোট জিনিস দেখতে পান না। যাঁরা উভয়ই দেখেন, তাঁরাই প্রকৃত প্রশংসার যোগ্য।
কলার হিসাব নিয়ে বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে জানলাম, একদিন এক চাকর লোভ সামলাতে না পেরে দুটো পাকা কলা চুরি করে খেয়ে ফেলেছিল। গৃহকর্তার সব কিছুতেই নজর থাকে, তাই চুরি ধরা পড়ল। তিনি চাকরকে ডেকে জরিমানা করলেন, তারপর তাকে ইচ্ছেমতো কলা খেতে দিলেন। চাকর পেট ভরে কলা খেল।
বিকেলে বাগানে হাঁটছি, এমন সময় গৃহকর্তা কাছারি থেকে ফিরলেন। আমাকে নিয়ে বাগান, পুকুর সব দেখালেন। কোন গাছ কোথা থেকে আনা, তারও ইতিহাস বললেন। দুপুরে কলার হিসাব দেখে যা ভাবছিলাম, তা মনে করেই জিজ্ঞেস করলাম, “আমি ভাবতাম এখানে কলা হয় না, কিন্তু আপনার বাগানে প্রচুর দেখছি।” তিনি বললেন, “এখানে বাজারে কলা মেলে না। আগে কারও বাড়িতেও ছিল না। লোকের ধারণা ছিল, এখানকার পাথুরে মাটিতে কলার গাছ শুকিয়ে যায়। আমি দেশ থেকে ‘তেড়’ জাতের কলা এনে লাগালাম। এখন সব সাহেবই আমার কাছ থেকে চারা নিয়ে বাগানে লাগিয়েছেন। এখন এখানে কলার অভাব নেই।”
এভাবে কথা বলতে বলতে বাগানের এক কোণে গিয়ে দেখি, দুটি আলাদা ঘর। গৃহকর্তা বললেন, “একটায় আমার নাপিত থাকে, অন্যটায় ধোপা। এরা আমার বেতনভোগী চাকর নয়, কিন্তু বাড়িতে জায়গা দিয়ে বেঁধে রেখেছি। যখন দরকার, তখন পাই। ধোপা-নাপিতের কষ্ট এভাবে মেটালাম।”
সন্ধ্যায় দেখলাম, মাস্টারমশাইয়ের সামনে বাচ্চারা পড়ছে, আর টেবিলে তিনটি সেজ জ্বলছে। যাঁরা কলার হিসাব রাখেন, তিনি বাচ্চাদের জন্য অতিরিক্ত আলোর ব্যয় কেন করেন, জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, “এটা অপব্যয় নয়। কম আলোতে পড়লে বাচ্চাদের চোখ খারাপ হয়ে যেতে পারে। ভালো আলোতে পড়লে চল্লিশের পরেও চশমা লাগবে না।”
বড় বড় সাহেবরা প্রায়ই তাঁর বাড়িতে আসতেন, তাঁর কথায় মুগ্ধ হতেন। বাঙালিরা ছোট-বড় সবাই তাঁর সৌজন্যের প্রশংসা করতেন। তিনি যে বাড়িতে থাকতেন, তা দেখলে মন পবিত্র হয়ে যেত। বাসস্থানের প্রভাব মনের ওপর অনেকটা থাকে। যারা নোংরা ছোট ঘরে থাকে, তাদের মনও সাধারণত ছোট হয়। যাঁর কথা বলছি, তাঁর মন তাঁর বাড়ির মতোই প্রশস্ত ছিল।
রাত দেড়টায় বাহকের কাঁধে চড়ে ছোটনাগপুর রওনা হলাম। সেখান থেকে পালামৌ পৌঁছতে আরও কয়েকদিন লাগল। পথের বর্ণনা আর দেব না, এই কয়েক লাইন লিখেই অনেককে বিরক্ত করেছি। এবার মূল গল্পেই থাকব—যদি দু-একটা বাড়তি কথা বলে ফেলি, তাহলে বুঝবেন, বুড়ো বয়সের দোষ!