Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025

    অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025

    আলস্যের জয়গান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস – বার্ট্রান্ড রাসেল

    বার্ট্রান্ড রাসেল এক পাতা গল্প493 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ২৩. পদার্থবিদ্যা নিয়ে আরিস্ততেলেসের বই

    ২৩. পদার্থবিদ্যা নিয়ে আরিস্ততেলেসের বই

    এখন আমি আরিস্ততেলেসের দুটি বই নিয়ে আলোচনা করতে চাই, একটির নাম পদার্থবিদ্যা (Physics) এবং অপরটির নাম মহাকাশ সম্পর্কে (On the Heavens)। বই দুটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত, প্রথম বইটি যেখানে তার যুক্তি শেষ করেছে দ্বিতীয়টি সেখান থেকে যুক্তি শুরু করেছে। দুটিই ছিল অতি প্রভাবশালী এবং বিজ্ঞানের উপর প্রভুত্ব করেছে গ্যালিলিওর যুগ পর্যন্ত। প্রগাঢ় সারাংশ (quintessence- জীবদেহ গঠনকারী পঞ্চম বা অতিরিক্ত মৌলিক উপাদান এবং সর্বাপেক্ষা অপরিহার্য অংশ) এবং চাঁদের নিচে (sublunary)- এই সমস্ত শব্দ এই বইগুলোতে প্রকাশিত তত্ত্ব থেকে আহরিত। সেই জন্য দর্শনের ইতিহাস নিয়ে যাঁরা আলোচনা করেন তাঁদের পক্ষে এই বইগুলো অবশ্যপাঠ্য, যদিও এই বইগুলোর প্রায় কোনো বাক্যই আধুনিক বিজ্ঞানের প্রেক্ষিতে গ্রহণযোগ্য নয়।

    আরিস্ততেলেস এবং সেই সঙ্গে অধিকাংশ গ্রিকদের পদার্থ বিদ্যা সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি বুঝতে হলে তাদের কল্পনাপ্রবণ পশ্চাৎপটের পূর্বজ্ঞান প্রয়োজন। প্রতিটি দার্শনিকের নিজস্ব প্রথাগত তন্ত্র যা বিশ্বের কাছে প্রকাশ পেয়েছে সেটা ছাড়াও অন্য একটি তন্ত্র আছে- সেটা অনেক সরল কিন্তু সে বিষয়ে তিনি নিজে বিশেষ সচেতন নন। সচেতন হলে বুঝতে পারেন এতে ঠিক কাজ হবে না, সুতরাং তাকে আড়ালে রেখে আরও পরিশীলিত (sophisticated) কিছু প্রকাশ করেন। এতে তিনি বিশ্বাসী, কারণ, এটা তাঁর অপরিশীলিত (crude) তন্ত্রের মতো কিন্তু সেটাকেই তিনি অন্যদের গ্রহণ করতে বলেন, কারণ, তার ধারণা এটাকে তিনি এমনভাবে তৈরি করেছেন যে, সেটা অপ্রমাণ করা অসম্ভব। পরিশীলন এসেছে খণ্ডনকে খণ্ডন করে কিন্তু শুধুমাত্র এই পদ্ধতি কখনোই একটা যথার্থ ফল দেবে নাঃ সবচাইতে বেশি যা এটা বলতে পারে তা হলো একটি তত্ত্ব সত্য হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিন্তু সত্য হতেই হবে এরকম বলতে পারে না। কিন্তু এ সম্পর্কে দার্শনিকের বোধ যত স্বল্পই হোক না কেন, যথার্থ ফল আসে তার কল্পনাজাত পূর্ব সংস্কার থেকে কিংবা আসে তা থেকে- যাকে সান্তায়ন (santayana) বলেছেন জান্তব বিশ্বাস।

    পদার্থ বিদ্যা সাপেক্ষ আরিস্ততেলেসের কল্পনার পশ্চাৎপট ছিল আধুনিক একজন ছাত্রের পশ্চাৎপটের চাইতে অনেক পৃথক। আজকালকার দিনে একটি ছাত্র শুরু করে বলবিদ্যা (mechanics) দিয়ে, এই নামই ইঙ্গিত দেয় যন্ত্রের। সে মোটরগাড়ি ও বিমানে অভ্যস্ত, সে তার অবচেতন মনের কল্পনায় সবচাইতে স্বল্পালোলাকিত নিভৃতেও ভাবে না মোটরগাড়ির ভিতরে এক ধরনের ঘোড়া আছে কিংবা বিমান ওড়ার কারণ তার জাদুশক্তিসম্পন্ন পাখির পাখার মতো পাখা আছে। বিশ্ব সম্পর্কে আমাদের কাল্পনিক মানসচিত্রে পশুরা তাদের গুরুত্ব হারিয়েছে, এ বিশ্বে মানুষ তুলনামূলকভাবে নিঃসঙ্গ প্রভু-সে প্রভু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে প্রধানত জীবনহীন এবং অনেকটাই চিন্তাহীন আনুগত্যের জড় পরিবেশে।

    গ্রিকদের চিন্তনে গতির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রচেষ্টায় শুধুমাত্র যান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির ইঙ্গিত প্রায় আসতই না বলা যায়, ব্যতিক্রম ছিলেন দেমক্রিতস এবং আর্থিমিদেস (Archimedes)-এর মতো কয়েকজন অতি প্রতিভাশালী পুরুষ। দুই কেতা পরিঘটনা গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছিল ও পশুদের চলাচল এবং মহাকাশের বস্তুপিণ্ডগুলোর চলাচল। আধুনিক বৈজ্ঞানিকের দৃষ্টিতে পশুর দেহ একটি বিশদ ও জটিল যন্ত্র, তাতে রয়েছে অত্যন্ত জটিল ভৌতরাসায়নিক গঠন। প্রতিটি নতুন আবিষ্কারই পশু ও যন্ত্রের ভিতরকার আপাতদৃষ্ট পার্থক্য হ্রাস করে। গ্রিকদের পক্ষে আপাত জীবনহীন গতিকে পশুতে আরোপ করাকে মনে করা হয়েছিল অনেক সহজ। শিশু এখনও সজীব পশুদের সঙ্গে অন্য বস্তুর পার্থক্য করে সজীব পশুদের নিজস্ব গতি দিয়ে। বহু গ্রিকদের কাছে, বিশেষ করে আরিস্ততেলেসের কাছে এই বিশেষত্বই পদার্থবিদ্যার সাধারণ তত্ত্বের একটি ইঙ্গিত দিয়েছিল।

    কিন্তু মহাকাশের বস্তুপিণ্ডগুলো সম্পর্কে কী বক্তব্য? নিয়মনিষ্ঠ গতির জন্য পশুদের সঙ্গে তাদের পার্থক্য আছে কিন্তু এটা সম্ভব হতে পারে তাদের অনেক বেশি নিখুঁত হওয়ার জন্য। প্রাপ্ত বয়স্ক হলে তাঁর চিন্তন যাই হোক না কেন, প্রত্যেক গ্রিক দার্শনিককে বাল্যকালে সূর্য ও চন্দ্রকে দেবতা হিসেবে ভাবতে শেখানো হয়েছে। তারা জীবন্ত নন- একথা ভাবার জন্য আনাক্সাগরসকে অধর্মের অপরাধে আদালতে অভিযুক্ত করা হয়। যে সমস্ত দার্শনিক মহাকাশের এই বস্তুপিণ্ডগুলোকে দেবতা বলে ভাবতে পারতেন না তাদের পক্ষে স্বাভাবিক চিন্তন ছিল এঁরা কোনো দৈব অস্তিত্বের ইচ্ছাতেই চলমান- সে দেবতার নিয়মনিষ্ঠা ও জ্যামিতিক সারল্যের প্রতি ভালোবাসা হেলেনীয়দেরই মতো। সেইজন্য প্রতিটি গতির চূড়ান্ত উৎস ইচ্ছা : পৃথিবীতে এই ইচ্ছা মানুষ এবং পশুদের খেয়ালখুশি কিন্তু মহাবিশ্বে এর কারণ পরম শিল্পীর অপরিবর্তনীয় অভীপ্সা।

    আরিস্ততেলেসের বক্তব্যের প্রতিটি খুঁটিনাটি সম্পর্কে এ কথা প্রযোজ্য- এই ইঙ্গিত দেওয়া আমার অভীষ্ট নয়। তাঁর কল্পনের পশ্চাৎপট যে এগুলো সেই ইঙ্গিত আমি দিতে চাই, তাছাড়া তাঁর অনুসন্ধান শুরু করার পর তিনি সত্য বলে যে ধরনের জিনিস পাবেন বলে আশা করেছেন এগুলো তারই প্রতিনিধি।

    এই গৌরচন্দ্রিকার পর দেখা যাক তিনি সত্যিই কি বলেছেন।

    আরিস্ততেলেসের পদার্থবিদ্যা ছিল গ্রিকরা যাকে বলতেন ফুসিস (phusis) (কিংবা ফিসিস-Physis)-সেই বিজ্ঞান, অনুবাদে একে বলা হয় প্রকৃতি কিন্তু এ শব্দের যে অর্থ আমরা করি অর্থটা ঠিক তা নয়। আমরা এখনও প্রকৃতি বিজ্ঞান কিংবা প্রাকৃতিক ইতিহাস বলি কিন্তু প্রকৃতি বলতে স্বকীয়ভাবে যা বোঝায় সেটা যদিও খুব দ্ব্যর্থবোধক শব্দ, তবুও ফুসিস বলতে যা বোঝাত, সেটা কৃচিৎ এ অর্থ বহন করত। ফুসিস শব্দটি বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত, বলা যেতে পারে অ্যাকর্ন (acom-ওক গাছের ফল)-এর স্বভাব বড় হয়ে ওক গাছে পরিণত হওয়া এবং সেক্ষেত্রে শব্দটি আরিস্ততেলেসীয় অর্থে ব্যবহৃত হলো। আরিস্ততেলেস বলেন, একটি বস্তুর স্বভাব হচ্ছে তার লক্ষ্য, সেইজন্যই তার অস্তিত্ব। সেজন্য শব্দটির একটি উদ্দেশ্যমূলক নিহিতার্থ আছে। কিছু কিছু জিনিসের অস্তিত্ব স্বভাবজ, কোনো জিনিসের অস্তিত্বের কারণ অন্য। পশু, উদ্ভিদ এবং সরল বস্তুপিণ্ডগুলোর (উপাদান) অস্তিত্বের কারণ তাদের স্বভাব। তাদের একটা অন্তর্নিহিত গতীয় নীতি আছে (যে শব্দটির অনুবাদ করা হয়েছে গতি কিংবা চলাচল, এই শব্দের অর্থ চলনশীলতার চাইতে ব্যাপক। চলনশীলতা ছাড়াও এর অন্তর্ভুক্ত গুণগত কিংবা আকারগত পরিবর্তন)। চালিত হওয়ার অবস্থা কিংবা স্থিরাবস্থার উৎস স্বভাব। এই ধরনের একটা অন্তর্বর্তী নীতি যদি থাকে তাহলে জিনিসগুলোর একটা স্বভাব আছে। স্বভাব অনুযায়ী শব্দটি প্রয়োগ করা হয় এই জিনিসগুলো সাপেক্ষ এবং তাদের অপরিহার্য গুণ সাপেক্ষ। (এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই অস্বাভাবিক কথাটি দোষ প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে)। স্বভাব আকারগত, পদার্থগত নয়। যা সম্ভাব্য অস্থি অথবা মাংস তা এখনও নিজস্ব স্বভাব লাভ করেনি এবং একটি বস্তু তার পূর্ণতা লাভ করলে যা হয় সেটা আরও বেশি করে তার নিজস্বতা প্রাপ্ত হয়। এই সম্পূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গিটি জীববিদ্যা থেকে প্রাপ্ত ইঙ্গিত মনে হয়ঃ অ্যাক-একটি সম্ভাব্য ওক গাছ।

    কোনো উদ্দেশ্যের নিমিত্ত কার্যরত যে কারণসমূহ, স্বভাব তার অন্তর্গত। এর ফলে আমরা সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে উপনীত হই যে দৃষ্টিভঙ্গি বলে স্বভাব প্রয়োজনের জন্য কাজ করে, তার কোনো উদ্দেশ্য নেই। এ প্রসঙ্গে আরিস্ততেলেস উপযুক্তমতই বাঁচবার অধিকার-এই তত্ত্ব আলোচনা করেছেন, আলোচনার আকার এমপেদক্লেস-এর তত্ত্ব অনুসারে। তিনি বলছেন, এ তত্ত্ব সত্য হতে পারে না, কারণ, জিনিসগুলো ঘটে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে এবং যখন একটি মালিকা সম্পন্ন হয় তখন পূর্ববর্তী প্রতিটি পদক্ষেপই সেই সম্পূর্ণতার জন্য। সেই জিনিসগুলো স্বাভাবিক, যেগুলো একটি অবিচ্ছিন্ন গতিতে, কোনো একটি অন্তর্বর্তী তত্ত্ব থেকে উদ্ভূত হয়ে কোনো পূর্ণতায় পৌঁছায় (১৯৯৮)।

    স্বভাব সম্পর্কে এই কল্পনের সম্পূর্ণতা পশু ও উদ্ভিদের বৃদ্ধি ব্যাখ্যা করতে খুব প্রশংসনীয়ভাবে সক্ষম মনে হতে পারে কিন্তু ঘটনাক্রমে হয়ে দাঁড়াল বিজ্ঞানের অগ্রগতির পক্ষে বিরাট বিঘ্নস্বরূপ এবং নীতিশাস্ত্রে যা মন্দ তার অনেকাংশের উৎস। শেষোক্ত প্রসঙ্গে ব্যাপারটি এখনও ক্ষতিকারক।

    বলা হয়েছে, গতি হলো যা সুপ্তভাবে রয়েছে তার পূর্ণতা প্রাপ্তি। অন্যান্য ত্রুটি ছাড়াও এই দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে গতির আপেক্ষিকতার সঙ্গতি নেই। A যখন B সাপেক্ষ চলমান, Bতখন A সাপেক্ষ চলমান এবং তখন এ কথা বলার অর্থ হয় না যে, দুটির একটি চলমান অন্যটি স্থিতিশীল। কুকুর যখন একটা হাড় ধরে তখন স্বাভাবিক বুদ্ধিতে বলা যায় কুকুরটি চলমান এবং হাড়টি স্থিতিশীল (না ধরা পর্যন্ত) এবং গতির একটা উদ্দেশ্য আছে, তা হলো কুকুরের স্বভাবধর্ম পালন করা। কিন্তু দেখা গেছে প্রাণহীন বস্তু সাপেক্ষ এই দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োগ করা চলে না এবং বৈজ্ঞানিক পদার্থবিদ্যার উদ্দেশ্য পালনে লক্ষ্যের কোনো কল্পন কার্যকর নয়। বৈজ্ঞানিক নিয়মনিষ্ঠা কোনো গতিকেই আপেক্ষিক ছাড়া অন্য কোনো রূপ বিচার করা চলে না।

    লেউকিপ্পস এবং দেমক্রিতস-এর শূন্যতার তত্ত্ব আরিস্ততেলেস খারিজ করেছেন। তারপর তিনি কাল সম্পর্কে একটা অদ্ভুত আলোচনায় এসে উপস্থিত হন। তাঁর মতে, বলা যেতে পারে কালের কোনো অস্তিত্ব নেই, কারণ, কাল অতীত ও ভবিষ্যৎ দিয়ে গঠিত- তার ভিতরে একটার অস্তিত্ব এখন আর নেই, অন্যটি এখনও বর্তমান নয়। এই দৃষ্টিভঙ্গি তিনি কিন্তু বাতিল করেছেন। তাঁর মতে কাল হলো গতি এবং সেটা গণনা করা যায়। (গণনাকে কেন তিনি অপরিহার্য ভেবেছিলেন সেটা স্পষ্ট নয়)। তিনি বলে চলেন, আমরা ন্যায়সঙ্গতভাবে প্রশ্ন করতে পারি আত্মা ছাড়া কালের অস্তিত্ব সম্ভব কি না, কারণ, গণনা করার গণক না থাকলে গণনা করার কিছুই থাকতে পারে না এবং কালের সঙ্গে গণনা সম্পৃক্ত। মনে হয় কাল বলতে তিনি বুঝতেন কিছুসংখ্যক ঘণ্টা, দিন কিংবা বছর। তিনি আরও বলছেন, কিছু জিনিস চিরন্তন অর্থাৎ তারা কালাতীত। মনে হয় তিনি সংখ্যাজাতীয় জিনিসের কথা ভাবছিলেন।

    গতি সবসময়ই ছিল এবং সবসময়ই থাকবে, কারণ, গতি ছাড়া কাল হতে পারে না এবং প্লাতন ব্যতীত সবাই স্বীকার করেন কাল সৃষ্টি হয়নি। এ ব্যাপারে আরিস্ততেলেসের খ্রিষ্টান অনুগামীরা সানন্দে তাঁর সঙ্গে মতপার্থক্য ঘোষণা করেছেন, কারণ, বাইবেলে বলে মহাবিশ্বের একটা শুরু ছিল।

    পদার্থবিদ্যা শেষ হয়েছে অবিচল চালকের সপক্ষে যুক্তি দিয়ে, অধিবিদ্যা সম্পর্কিত আলোচনায় আমরা এ বিষয়ে বিচার করেছি। একজন অবিচল চালক আছেন, তিনি প্রত্যক্ষভাবে চক্রাকার গতি সৃষ্টি করেন। চক্রাকার গতি প্রাথমিক গতি এবং একমাত্র এই গতি অবিচ্ছিন্ন ও অসীম হতে পারে। প্রথম চালকের কোনো অংশ কিংবা বিস্তার নেই এবং তাঁর অবস্থান বিশ্বের পরিধিতে।

    এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর পর আমরা মহাকাশ সম্পর্কে আলোচনায় প্রবেশ করব।

    মহাকাশ সম্পর্কে বইটি একটি মনোরম,ও সরল তত্ত্ব উপস্থিত করেছে। চাঁদের নিচের বস্তুসমুহের জন্ম এবং ক্ষয় আছে, চাঁদের উর্ধ্বে কোনো জিনিসেরই জন্ম হয় না এবং তারা ধ্বংসও হয় না। পৃথিবীর আকার গোলীয়, এর অবস্থান মহাবিশ্বের কেন্দ্রে। চাঁদের নিম্নবলয়ে সবকিছুই চারটি উপাদান-ক্ষিতি, মরুৎ, অপ ও অগ্নি দিয়ে গঠিত কিন্তু পঞ্চম একটি উপাদান আছে, যে উপাদান দিয়ে মহাবিশ্বের বস্তুপিণ্ডগুলো গঠিত। জাগতিক উপাদানগুলোর স্বাভাবিক গতি ঋজুরেখ কিন্তু পঞ্চম উপাদানের গতি চক্রাকার। মহাবিশ্ব নিখুঁতভাবে গোলীয় এবং উচ্চতর অঞ্চল নিম্নতর অঞ্চলের তুলনায় অধিক ঐশ্বরিক। নক্ষত্র এবং গ্রহগুলো অগ্নিনির্মিত নয় কিন্তু পঞ্চম উপাদান দিয়ে গঠিত। তাদের গতির কারণ যে গোলকের সঙ্গে তারা যুক্ত, সেই গোলকগুলো। [এই সমস্তই কাব্যরূপে পাওয়া যায় দান্তের প্যারাডাইসো (Paradiso)- তে।

    চারটি পার্থিব উপাদান চিরন্তন নয় কিন্তু এগুলো সৃষ্টি হয় পরস্পর থেকে অগ্নি পরম লঘুভার, এই কারণে যে, এর স্বাভাবিক গতি ঊর্ধ্বমুখী; ক্ষিতি পরম গুরুভার। মরুৎ তুলনায় লঘুভার এবং অপু তুলনায় গুরুভার।

    পরবর্তী যুগে এই তত্ত্ব থেকে অনেক অসুবিধার উদ্ভব হয়। ধূমকেতুগুলো ক্ষয়িষ্ণু স্বীকৃত হলো, সেগুলোকে আরোপ করা হলো চাঁদের নিচের গোলকে কিন্তু সপ্তদশ শতাব্দিতে দেখা গেল তারা সূর্যকে কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করে এবং তারা চাঁদের মতো নিকটবর্তী কদাচিৎ হয়। যেহেতু অতিজাগতিক বস্তুপিণ্ডগুলোর গতি ঋজুরেখ সেইজন্য মনে করা হতো অনুভূমিকভাবে নিক্ষিপ্ত একটি বস্তুপিণ্ড কিছুকাল অনুভূমিক গতিতে থাকে এবং তারপর সহসা উল্লম্ব গতিতে নামতে শুরু করে। একটি নিক্ষিপ্ত বস্তু অধিবৃত্তাকার পথ গ্রহণ করে- গ্যালিলিও-র এই আবিষ্কার তাঁর আরিস্ততেলেসীয় সহকর্মীদের উপর এক বিরাট অভিঘাত। পৃথিবী মহাবিশ্বের কেন্দ্র নয়, কিন্তু দিনে একবার ঘূর্ণিত হয় এবং বছরে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে- এই কল্পন প্রতিষ্ঠা করার জন্য কোপারনিকাস, কেপলার এবং গ্যালিলিওকে আরিস্ততেলেস এবং বাইবেল উভয়ের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে।

    আরও সাধারণ ব্যাপারে এলে বলতে হয়ঃ আরিস্ততেলেসীয় পদার্থবিদ্যা নিউটনের গতির প্রথম সূত্রের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, এই সূত্র প্রথম গঠন করেছিলেন গ্যালিলিও। এই সূত্রের বক্তব্য- যে কোনো বস্তুপিণ্ড পূর্ব থেকে গতিশীল থাকলে তাকে যদি নিজের উপর ছেড়ে দেওয়া যায় তাহলে সেটা সমরূপ গতিতে ঋজুপথে চলতে থাকবে। এই বহিরাগত কারণের প্রয়োজন গতির কারণ নির্ণয় করার জন্য নয় কিন্তু এর প্রয়োজন গতির বেগ কিংবা গতির অভিমুখ পরিবর্তনের কারণ দর্শানোর জন্য। আরিস্ততেলেস ভেবেছিলেন চক্রাকার গতি মহাকাশের বস্তুপিণ্ডগুলোর পক্ষে স্বাভাবিক, এই গতিতে অবিচ্ছিন্নভাবে গতির অভিমুখ পরিবর্তিত হয়, সুতরাং প্রয়োজন হয় বৃত্তের কেন্দ্রমুখী একটা বল (corce), এ কথা বলা হয়েছে নিউটনের মহাকর্ষীয় সূত্রে।

    অন্তিমেঃ মহাকাশের বস্তুপিণ্ডগুলো চিরন্তন এবং অপরিবর্তনীয়- এই দৃষ্টিভঙ্গি পরিত্যাগ করতে হয়েছে। সূর্য এবং তারকাগুলোর জীবন দীর্ঘ কিন্তু তারা চিরজীবী নয়। তাদের জন্ম একটি ছায়া পথ থেকে এবং অন্তিমে তাদের বিস্ফোরণ হয় কিংবা ঠাণ্ডায় তাদের মৃত্যু হয়। দৃশ্যমান জগতের কোনো কিছুই পরিবর্তন এবং ক্ষয় থেকে মুক্ত নয়। আরিস্ততেলেসীয় বিপরীত বিশ্বাস যদিও মধ্যযুগীয় খ্রিষ্টানরা গ্রহণ করেছিলেন, সেই বিশ্বাস ছিল পৌত্তলিকদের (pagan- পৌত্তলিক, ইহুদি, খ্রিষ্টান এবং মুসলমান ছাড়া অন্যান্য ধর্মাবলম্বী) চন্দ্র, সূর্য এবং গ্রহ-নক্ষদের পূজার ফসল।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleদ্য মেটামরফসিস – ফ্রানজ কাফকা
    Next Article সক্রেটিসের আগে – বার্ট্রান্ড রাসেল

    Related Articles

    বার্ট্রান্ড রাসেল

    অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    আলস্যের জয়গান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    প্লেটোর ইউটোপিয়া ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    সক্রেটিসের আগে – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025
    Our Picks

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025

    অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025

    আলস্যের জয়গান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }