Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    পিশাচ দেবতা – অনীশ দাস অপু

    লেখক এক পাতা গল্প212 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ভ্যাম্পায়ারের প্রতিহিংসা

    গরম! প্রচণ্ড গরম পড়েছে রাজধানীতে। ঢাকা শহরে গ্রীষ্মের সময় এমনিতেও বেশি তাপমাত্রা থাকে। তবে গত কয়েক বছরে এত গরম পড়েনি। তাপমাত্রা পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রীতে উঠে গেছে। ভয়াবহ গরমে ইতিমধ্যে মারা গেছে দশ জন। সকাল নটার পরে রাস্তায় বেরুনোর কথা ভাবলেই শুকিয়ে যায় কলজে। রাস্তার পিচ গলতে শুরু করে দশটা থেকে। এগারোটার পরে ঢাকা প্রায় ভুতুড়ে নগরীতে পরিণত হয়। লোকজন মগজ ফোটানো গরমে একান্ত বাধ্য না হলে বেরুতেই চায় না। রাস্তা দিয়ে তীব্র ভাপ ওঠে, গায়ে জ্বালা ধরিয়ে দেয়। শুয়োরের মত দরদর করে ঘামে শরীর। যতই পানি খাও, কিছু লাভ নেই। চোষ কাগজের মত পানিটুকু শুষে নেবে গা, জিভ শুকনো, খরখরেই থাকে। আর কুঁকড়ে যায় ঠোঁট। সারাক্ষণ সাহারা মরুর তেষ্টা বুকের ভেতর। তীব্র উত্তাপ শরীর থেকে শুষে নেয় শক্তি। কুকুরের মত হ্যা-হ্যাঁ করে হাঁপাতে থাকে মানুষ।

    পাগল করা গরমের সঙ্গে যোগ হয়েছে ধুলো। ধুলোময় বাতাসে শ্বাস না নিয়ে উপায় নেই। নাক-মুখ দিয়ে ঢুকে পড়ে ধুলো, বন্ধ হয়ে আসে দম।

    গরম এবং ধুলো দুই প্রবল প্রতাপশালী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করা মুশকিল। মাথা ঘুরে পড়ে যাবার সম্ভাবনা প্রবল, তবুও এমন দাবদাহের মাঝে বেরুতে হয়েছে। বিশেষ কাজে। ঘামে ভিজে পিঠের সঙ্গে লেগে রয়েছে জামা। জিভ শুকিয়ে খরখরে। নাকে ধুলোর সমুদ্র, হাজারটা সূর্য যেন একযোগে তাপ আর আলো ছড়াচ্ছে, তাকানো। যায় না।

    চোখে সানগ্লাসটা ভাল মত এটে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের দিকে পা বাড়ালাম আমি। ভেতরটা অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা। তবে খুব বেশি নয়। প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে আছে তূর্ণা। চারদিকে একবার চোখ বুলালাম। প্লাটফর্ম যথারীতি জনারণ্য। জীবিকা আর প্রয়োজনের তাগিদে বেরুতেই হয় মানুষকে। যাত্রীদের কেউ কেউ ভাড়া নিয়ে বচসা করছে কুলিদের সঙ্গে, হকারদের হাঁকডাক, সব মিলে নরক শুলজার। বুকিং অফিস থেকে টিকেট কিনলাম একটা, এগোলাম ট্রেনের দিকে।

    সেকেন্ড ক্লাস কম্পার্টমেন্টগুলো এরই মধ্যে ভরে গেছে। ওদিকে আর দ্বিতীয়বার তাকালাম না। ফার্স্টক্লাস কম্পার্টমেন্টের টিকেট কিনেছি। ফাঁকা দেখে উঠে পড়লাম একটা কৃপে-তে।

    না, কম্পার্টমেন্টটা সম্পূর্ণ খালি নয়। একজন সঙ্গী পেয়েছি আমি। এই গরমেও নীল সাফারি সুট পরা। লোকের বয়স ত্রিশবিত্রিশ হবে। মাসুদ রানার লেটেস্ট সিরিজে তার এ মুহূর্তে মনোযোগ।

    জানালার ধারে বসে পড়লাম আমি। ভদ্রলোক বই রেখে ভুরু কুঁচকে তাকাল আমার দিকে। সম্ভবত জানালার পাশের সিট দখল করার ব্যাপারটি পছন্দ হয়নি তার।

    মাফ করবেন, বিনীত গলায় বললাম আমি। এখানে কি কেউ বসবে?

    না, সংক্ষেপে জবাব দিল সে।

    লোকটির দিকে আর তাকালাম না। জানালা দিয়ে বাইরে চেয়ে রইলাম। একটু পরে আড়চোখে লোকটিকে লক্ষ করতে লাগলাম। আবার বইয়ে মনোনিবেশ করেছে সে। যাক, এখানে বসেছি বলে কোন আপত্তি করছে না। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। চা-অলার কাছ থেকে এক কাপ চা কিনে চুপচাপ চায়ের কাপে চুমুক দিতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পরে একজন কেরানী গোছের লোক ঢুকল আমাদের কম্পার্টমেন্টে। টিকেট চেক করবে। টিকেট চেকার প্রথমে ভদ্রলোকের কাছে গেল। দুজনের সংক্ষিপ্ত আলোচনা শুনে বুঝলাম ওই লোকের নাম মি. চৌধুরী, রাজশাহী যাচ্ছে। টিকেট চেকার এবার ফিরল আমার দিকে।

    আপনিও রাজশাহী যাচ্ছেন দেখছি, বলল চেকার।

    আমি আসলে যাব নওগাঁ, জানালার বাইরে চোখ রেখে জবাব দিলাম। রাজশাহী পর্যন্ত টিকেট কিনেছি। তবে তাড়াহুড়োর কারণে রিজার্ভেশন করতে পারিনি। আমার নামটা লিখে রাখবেন এ কম্পার্টমেন্টের জন্যে?

    অবশ্যই, স্যার, বিনয়ের সাথে বলল সে। আপনার নামটা বলুন? জি, এস শিকদার, বললাম আমি।

    রেজিস্ট্রেশন চার্টে আমার নাম লিখে নিল টিকেট চেকার, সই করে চলে গেল। কয়েক মিনিট পরে হুইশল শোনা গেল ট্রেনের, দুলে উঠল দানবটার শরীর। চলতে শুরু করেছে তুর্ণা। কিছুক্ষণের মধ্যে শহর থেকে বেরিয়ে এল ট্রেন, দুপাশে দিগন্ত বিস্তৃত ধানক্ষেত রেখে ছুটছে। আপনি নওগা থাকেন? হঠাৎ প্রশ্ন করে বসল আমার সঙ্গী।

    ফিরলাম ভদ্রলোকের দিকে। মাসুদ রানা রেখে দিয়েছে সে, আগ্রহ নিয়ে চেয়ে আছে আমার দিকে। মৃদু গলায় বললাম, না। ওখানে ব্যবসার কাজে যাচ্ছি।

    ফ্যান ঘুরছে ফুল স্পীড়ে, জানালা দিয়ে বাতাস আসছে, তারপরও দরদর করে ঘামছে লোকটি। বহুরঙা একটা রুমাল দিয়ে মুখ আর ঘাড় মুছল সে।

    খোদাকে শুকরিয়া। ট্রেন ছাড়ল অবশেষে, নীরবতা ভেঙে বলল সহযাত্রী।

    খোদাকে শুকরিয়া কেন? বললাম আমি। এ দেশে ট্রেন লেট হবার কথা সবাই জানে। তবে খুব বেশি লেট কখনোই করে না।

    না! বলল সে। আমি রেলওয়ের পাংচুয়ালিটি নিয়ে ভাবছি না। ভাবছি নিজের জীবন নিয়ে।

    আপনার জীবন নিয়ে? অবাক হলাম আমি।

    হ্যাঁ, নিজের জীবন নিয়ে, নাটকীয় ভঙ্গিতে বলল সে।

    উঠে দাঁড়াল আমার সহযাত্রী, দরজার কাছে গেল। খুলল কপাট। করিডরের চারপাশে একবার চোখ বুলাল। তারপর সন্তষ্টচিত্তে ফিরে এল নিজের জায়গায়। চারদিকে একবার তাকালাম আমি, তারপর চোখ ফেরালাম জানালায়।

    লোকটি বোধহয় ভেবেছিল তার জীবন সঙ্কটের কথা শুনে খুব বেশি প্রভাবিত হইনি আমি, হয়তো তার কথা বিশ্বাসই করিনি। তাই এবার সেধে নিজের পরিচয় দিল সে।

    আমার নাম জীবন, বলল সে। জীবন চৌধুরী।

    আচ্ছা, জানালা থেকে মুখ না ঘুরিয়েই বললাম।

    আমি একজন শখের গোয়েন্দা, বলে চলল সে, ঢাকার একটি নামকরা প্রাইভেট এজেন্সিতে আছি।

    বেশ, এ ছাড়া আর কিছু বলার মত খুঁজে পেলাম না আমি।

    শার্লক হোমসের মত কাজ-কারবার আমাদের। গোয়েন্দা শার্লক হোমসের নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই?

    হুঁ, বললাম আমি। কে না শুনেছে?

    দ্য সাসেক্স ভ্যাম্পায়ার গল্পে শার্লক হোমস যেভাবে একটি চিঠি পায়, ওরকম একটি চিঠি সম্প্রতি পাই আমি এক প্রাক্তন জমিদারের কাছ থেকে। তার আসল নামটা বিশেষ কারণে গোপন রাখছি। ধরুন, তার নাম মি. অরিন্দম গুহ।

    এ লোক গোয়েন্দা হোক বা না হোক তবে মাসুদ রানা যে খুব পড়ে তাতে সন্দেহ নেই, মনে মনে ভাবলাম আমি।

    যমুনা ব্রিজ পার হচ্ছে ট্রেন, শব্দের জন্যে চুপ করে থাকল চৌধুরী। ব্রিজ পার হবার পরে বলল, চিঠির প্রথম কয়েকটি লাইন ছিল অবিকল সাসেক্স ভ্যাম্পায়ার গল্পের মত। গুহ জানালেন তার পরিবার এক ভ্যাম্পায়ারের আতঙ্কে অস্থির। ভ্যাম্পায়ারের কারণে তাদের জীবন থেকে শান্তি উধাও। রাতের ঘুম হারাম হয়ে। গেছে। মি. গুহ আমাদের এজেন্সির কাছে একজন গোয়েন্দা ভাড়া করতে চাইলেন। বললেন সবচে সেরা গোয়েন্দাকে যেন তাদের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কারণ তারা ভয় পাচ্ছেন ভ্যাম্পায়ার আবার হামলা করতে পারে।

    থামল জীবন চৌধুরী, কপালের ঘাম মুছে আবার শুরু করল, চিঠির বিষয়বস্তু নিয়ে বস্ আমাদের কয়েকজন গোয়েন্দাকে নিয়ে আলোচনায় বসলেন। মি. অরিন্দম গুহর ব্যাকগ্রাউন্ড ঘেঁটে জানা গেল, ওটা ফালতু কোন চিঠি নয়। শেষে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো, একজন গোয়েন্দাকে পাঠানো হবে মি. গুহর বাড়িতে। বস্ শরাফত আলি এজেন্সির সবচে করিল্কর্মা লোক হিসেবে আমাকে বিশেষ স্নেহ করেন বলেই হয়তো রহস্য অনুসন্ধানের দায়িত্ব চাপিয়ে দিলেন আমার কাঁধে। গর্বের হাসি ফুটল চৌধুরীর ঠোঁটে।

    আমি চুপ করে তার কথা শুনছি। তবে দৃষ্টি জানালার বাইরে।

    যাক, আমি পরদিনই বাসে চেপে গেলাম সোনারগা শুরু করল শখের গোয়েন্দা। টার্মিনালে আমার জন্য গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন মি. গুহ। গাড়িতে চড়ে পৌঁছে গেলাম তার প্রাসাদোপম বাড়িতে।

    শহরের উপকণ্ঠে মি. গুহের প্রাসাদ। তিনতলা বাড়ি। ত্রিশটিরও বেশি রুম, কমপক্ষে পঞ্চাশ বিঘা জমির ওপর বাড়িটি। তবে বোঝাই যাচ্ছিল বহু পুরানো বাড়ি, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রায় জরাজীর্ণ অবস্থা। অবশ্য আজকালকার যুগে এতবড় বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ করা মুখের কথা নয়। প্রচুর খরচের ব্যাপার। আর যদ্র জানতাম গুহদের আর্থিক অবস্থাও ইদানীং ভাল যাচ্ছে না। বিশাল সদর দরজার সামনে এসে হঠাৎ ধাক্কা খেলাম। দরজায় মানুষের একটা কঙ্কাল ঝুলছে। ধাক্কাটা হজম করে নিলাম মনে মনে। পরিচয় হলো মি. গুহর সাথে। সুদর্শন, মাঝারী গড়নের এক ভদ্রলোক। মাথার চুল রাতের মত কালো, কোঁকড়ানো। বয়স বত্রিশ/তেত্রিশ হবে। মি, গুহই তার পরিবারের অন্যান্যদের সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিলেন। সকলে যেন আমার অপেক্ষাতেই ছিল।

    মি. গুহর পরিবারের সদস্যদেরকে দেখলাম আগ্রহ নিয়ে। প্রথমে পরিচয় হলো গুহর মার সাথে। লম্বা, হাড্ডিসার চেহারার ভদ্রমহিলা। মাথার চুল প্রায় সবটাই পেকে গেছে। অথচ বয়স পঞ্চাশের বেশি হবে না। বয়সের তুলনায় অনেক বুড়ি লাগছিল তঁাকে, চামড়ায় ভঁজ পড়ে গেছে। শুধু চোখজোড়া, ঝকঝকে, কালো তারা থেকে যেন বিচ্ছুরিত হচ্ছিল শক্তি।

    অরিন্দম গুহ এরপর তার স্ত্রীর সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। বেশ সুন্দরী মহিলা। এককালে হয়তো মডেলিং করতেন। ধারাল, কাটাকাটা চেহারা! মেকআপ ছাড়াই তার ঝলমলে তুক থেকে দ্যুতি ছড়াচ্ছিল। বনেদী ঘরের বউরা এরকমই হয়। তবে মিসেস গুহর চোখের তারায় কালি দেখে বুঝলাম ঠিকমত ঘুম হয় না তার। দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। ভ্যাম্পায়ারের ভয়েই হয়তো।

    গুহর কিশোর দুটি ভাই-বোনও আছে। ছেলেটির ১৬/১৭ হবে বয়স, মেয়েটি ভাইয়ের চেয়ে ২/৩ বছরের ছোট। বড় ভাইয়ের রূপ পেয়েছে তারাও। ওদেরকেও খুব দুশ্চিন্তাগ্রস্ত লাগছিল।

    এখানে আমার মেয়েটি শুধু নেই, বললেন অরবিন্দ গুহ! ও হাসপাতালে। হপ্তাখানেক আগে ভ্যাম্পায়ারের হামলার শিকার হয়েছে আমার পাঁচ বছরের রূপা। এ কথা আপনার এজেন্সিকে জানিয়েছিও চিঠিতে। তবে প্রাণে বেঁচে গেছে আমার মেয়ে। ওই মোতির জন্যে, বিশালকায় একটা ডোবারম্যানের দিকে ইঙ্গিত করলেন তিনি, কুকুরটা আমার পেছনেই দাঁড়িয়ে ছিল। নিঃশব্দে। দেখে লাফ মেরে উঠলাম। ওটা কখন চলে এসেছে খেয়ালই করিনি।

    ঘটনাটা পরে বললেও হবে, দ্রুত বলে উঠলাম আমি। ভ্যাম্পায়ারের কথা উচ্চারণ করা মাত্র মিসেস গুহর মুখ সাদা হয়ে গেছে। শুধু মিসেস গুহ নয়, উপস্থিত। সবার চেহারায় ভয়ের ছাপ ফুটে উঠল। কিছু একটা ঘটার আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে আছে যেন সবাই। ভ্যাম্পায়ারের শিকার হবার ভয়? ভাবলাম আমি।

    পরিচয় পর্ব শেষে দেখিয়ে দেয়া হলো আমার ঘর। বেশ বড় রুম, অনেক উঁচতে ছাদ, বিছানাটা ছোটখাট ফুটবল খেলার মাঠের মত। তিনতলার এই ঘরের বিরাট জানালা দিয়ে গুদের জমিদারির অনেকখানি দেখা যায়।

    হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। পোশাক পাল্টে নিচে চললাম আমার নিমন্ত্রণকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। প্রকাণ্ড বৈঠকখানায় আমার জন্যে অপেক্ষা করছিলেন মি. গুহ। ভজনখানেক সোফা সুবিন্যস্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা, চারটে অপূর্ব সুন্দর ঝাড়বাতি ঝুলছে ছাদ থেকে। একেকটা ছোটখাট গাছের মত।

    আরাম করে গা এলিয়ে দিলাম তুলতুলে সোফায়। সূর্য অস্ত যাচ্ছে গোধূলি বেলার আবিরে শেষবারের মত পৃথিবীকে রাঙিয়ে। এক চাকরকে ড্রিংকস আনতে হুকুম দিলেন গুহ। তারপর শুরু করলেন তার গল্প।

    আপনি শুনেছেন নিশ্চয়ই এক সময় সোনারগাঁয়ে আমাদের বিশাল জমিদারী ছিল। এ বাড়িটি আমার প্রপিতামহের। অনেকদিন এ বাড়িতে কেউ ছিল না। আমরা গত বছর থেকে থাকতে শুরু করেছি এখানে। আমাদের জমিদারী খতম হয়ে যায় আমার প্রপিতামহের আমলে। সোনারগাঁয়ের প্রায় অর্ধেকটাই আমাদের ছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বেশিরভাগ সম্পত্তি বেদখল হয়ে যায়। আমার বাবা এ দুঃখ সইতে না পেরে হার্ট-অ্যাটাক করে বসেন। বাবাকে নার্সিংহোমে ভর্তি করে আমরা এখানেই থাকতে শুরু করি। বাবা অবশ্য চাননি আমরা এ বাড়িতে থাকি। তিনি বারবার অন্য কোথাও থাকার কথা বলছিলেন আমাদেরকে। আমার মনে হচ্ছিল তিনি কিছু একটা গোপন করছেন।

    এ সময়ে ড্রিংকস নিয়ে এক চাকর ঢুকল, চুপ হয়ে গেলেন মি. গুহ। গ্লাসে ঠকে আমরা চিয়ার্স বলে ড্রিংকস পান করলাম। এত চমৎকার মদ বহুদিন পান করিনি।

    চাকর চলে যাবার পরে আবার শুরু করলেন গুহ। আমি বাবাকে বহুবার জিজ্ঞেস করেছি কেন তিনি আমাদেরকে পূর্ব-পুরুষের বাড়িতে বাস করতে দিতে নারাজ। কেন বলছেন এ শহর ছেড়ে অন্য কোথাও গিয়ে থাকতে। কিন্তু বাবা জবাব দেননি। বাবার জেদের কারণে আমরা সোনারগা ছেড়ে ঢাকা চলে আসি।

    তবে বাবার সঙ্গে তর্ক করা উচিত হয়নি আমার। রাগারাগি করে দ্বিতীয়বার হার্ট-অ্যাটাক করে বসেন তিনি। আর এবারের অ্যাটাকে বাবা ভয়ানক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিন দিন পরে মারা যান তিনি।

    মৃত্যুর আগের দিন বাবা ডেকে পাঠিয়েছিলেন আমাকে। ডাক্তারদের নিষেধ সত্ত্বেও দরজা বন্ধ করে কথা বলেছেন আমার সঙ্গে। ফিসফিস করে ভয়ানক এক গল্প শুনিয়েছেন। গায়ের সমস্ত রোম খাড়া হয়ে গিয়েছিল গল্পটা শুনে।

    বাবার কাছে জানলাম আমার প্রপিতামহ বিক্রান্ত গুহ চৌধুরী এক সময় প্রবল প্রতাপে সোনারগাঁয়ে জমিদারী চালাতেন। তিনি ছিলেন প্রচণ্ড বদরাগী এবং কুটিল স্বভাবের অত্যন্ত নিষ্ঠুর একজন মানুষ। সোনারগাঁয়ের মানুষের জীবন, তাদের মধ্যে বিক্রান্তের স্ত্রী-পুত্র-কন্যারাও রয়েছেন, নরক করে তুলেছিলেন তিনি। সবাই তাকে যেমন ভয় পেত ঘৃণাও করত তেমন। বেশ কয়েকবার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। প্রতিবারই অলৌকিকভাবে বেঁচে যান আমার প্রপিতামহ।

    আমার প্রপিতামহ কেমন নিষ্ঠুর ছিলেন তার একটা উদাহরণ দিই। একদিন তিনি বসে আছেন, তার নায়েবকে হুকুম করেছেন গরম জল আনতে। পায়ে বাত হয়েছিল। গরম জলের সেঁক দেবেন। এখানে একটা কথা বলি, নায়েবের পদমর্যাদা উঁচু ধরনের হলেও বিক্রান্ত গুহ চৌধুরীর কাছে তিনি চাকরের চেয়ে বেশি কিছু ছিলেন না। নায়েব মশাইকে দিয়ে তিনি নান্স ফাইফরমাশ খাটাতেন। যা হোক, নায়েব জল নিয়ে এসেছেন গামলা ভর্তি করে। বুড়ো মানুষ। হাত কাঁপছিল। গরম জল খানিকটা লকে বিক্রান্ত গুহ চৌধুরীর পায়ে পড়ে যায়। সাথে সাথে তারস্বরে চিৎকার দিয়ে ওঠেন তিনি। রাগে উন্মাদ হয়ে চাকরদেরকে হুকুম করেন নায়েবকে বেঁধে ফেলার জন্যে। তারপর নায়েবকে ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপ দিতে শুরু করেন প্রপিতামহ। রক্তক্ষরণে মারা যান নায়েব মশাই। আপনিই বলুন-এরচে নিষ্ঠুরতা হতে পারে? আবার বিরতি পড়ল চাকর ঘরে ঢোকায় গ্লাস ভরে দিয়ে চলে গেল সে। গল্প ক করলেন প্রহ, নায়েব মশাই হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে প্রাণভিক্ষা চাইছিলেন তার মনিবের কাছে। কিন্তু অসহায়ের সে ফরিয়াদ কানে তোলেননি বিক্রান্ত। মারা যাবার আগ মুহূর্তে নায়েব শিকদার অভিশাপ দিয়ে গেলেন আমার প্রপিতামহকে। শপথ করলেন আবার ফিরে আসবেন তিনি ভ্যাম্পায়ার রূপে। তখন প্রতিশোধ নেবেন বিক্রান্ত এবং তার পরিবারের ওপরে। তারপর মারা গেলেন তিনি। এ ঘটনার মাস ছয়েক পরে, একদিন সকালে বিক্রান্ত গুহ চৌধুরীকে তার শোবার ঘরে পাওয়া গেল মৃত অবস্থায়। গলা ফালাফালা করে ছেড়া, রক্তে ভেসে যাচ্ছে শরীর। কে বা কারা এই নৃংশংস কাণ্ড ঘটিয়েছে বোঝা গেল না। তবে ঘরের দরজা-জানালা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। হত্যাকারী দরজা-জানালা না ভেঙে ভেতরে ঢুকল কি করে? চুপ হয়ে গেলেন অরিন্দম। স্মৃতিগুলোকে মনে করার চেষ্টা করছেন। প্রপিতামহের মৃত্যুর ত্রিশ বছরের মধ্যে পরিবারের তিন সদস্যের একই রকম মৃত্যু ঘটে এ বাড়িতে। প্রত্যেকেরই গলা ছিল ফালা ফালা করে ভেঁড়া, যেন কেউ তীব্র আক্রোশে ছিঁড়ে নিয়েছে কণ্ঠনালী। আর প্রত্যেকের মৃত্যু ঘটেছে বন্ধ ঘরের মধ্যে দুটি ক্ষেত্রে অজানা হত্যাকারীর শিকার হয়েছে দুই শিশু। শেষজন ছিল মহিলা! এদের শরীর ছিন্নভিন্ন করে ফেলা হয়েছিল। কেউই হত্যাকারীকে দেখেনি বা ঘটনা কখন ঘটেছে বলতে পারেনি। কারণ ঘটনা যে ঘটছে তা টেরই পায়নি কেউ।

    স্বাভাবিকভাবেই ছড়িয়ে পড়ল আতঙ্ক। আমাদের বাড়িটাকে সভয়ে এড়িয়ে চলতে শুরু করল মানুষজন। পালিয়ে গেল চাকর-বাকররা। পরিবারের সদস্যরাও এ বাড়ি বর্জন করলে এটি ভূতুড়ে বাড়িতে পরিণত হলো। একজন কেয়ারটেকার রেখে দেয়া হলো বাড়ি দেখাশোনার জন্যে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় প্রাণভয়ে আমর ভারত চলে যাই। ওখান থেকে অন্য দেশ। অনেকদিন বিদেশে ছিলাম। বিদেশ থেকে ফেরার পরে দেখি, এ বাড়ি ছাড়া আমাদের বেশিরভাগ সম্পত্তি বেদখল হয়ে গেছে। বাবা এতে শর্ড হয়ে হার্ট অ্যাটাক করে বসেন আগেই বলেছি। তবে বাড়ির পূর্বইতিহাস জানতেন বলে তিনি চাননি এখানে কেউ বাস করুক।

    সত্যি বলতে কি বাবার কথা পুরোপুরি বিশ্বাস হয়নি আমার। এ যুগে ভ্যাম্পায়ারের অস্তিত্ব বিশ্বাস করাটাই তো পাগলামি। কিন্তু ভুল ভেবেছিলাম। আর সে ভুলের খেসারত আমাকে দিতে হয়েছে ভয়ঙ্করভাবে।

    থামলেন মি. গুহ। কৌতূহল নিয়ে তাকালাম তার দিকে। উনি কি বলতে চাইছেন ভ্যাম্পায়ারের সত্যি অস্তিত্ব রয়েছে? গ্লাসে ড্রিংকস ঢেলে কিছুক্ষণ চুপচাপ পান করে চললাম। ইতিমধ্যে দ্বিতীয় ঝাড়বাতি জ্বালিয়ে দিয়ে গেছে এক চাকর। আমাদের পরিবারের গোপন ইতিহাস বলার কয়েক ঘণ্টা পরে মারা গেলেন বাবা। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে কথা বললাম আমার মা এবং স্ত্রীর সাথে। মা বললে এ ধরনের গুজব তিনিও শুনেছেন। তবে বাবা কখনও এ বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেননি। মার ধারণা এটা স্রেফ গুজবই, এ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু  নেই। মার কথায় সায় দিলাম। তবে আমার স্ত্রীর চেহারা দেখে মনে হলো গুজবটা সে বিশ্বাস করতে শুরু করেছে।

    ঢাকায় আমাদের পারিবারিক স্ট্যাটাস অনুযায়ী থাকতে গেলে প্রচুর অর্থের দরকার ছিল। আর অত টাকাও আমার ছিল না। তাই বাবার প্রবল নিষেধাজ্ঞা মাথা থেকে দূর করে দিয়ে আমরা পিতৃ-পুরুষের বাড়িতেই বসবাস শুরু করে দিই।

    শুরুতে অবশ্য কোন সমস্যা ছিল না। ভালই কাটছিল দিনকাল। একটা সময় আমরা বিশ্বাস করতে শুরু করি ভ্যাম্পায়ারের গল্প আসলে গল্পই। এ জায়গায় নাটকীয় ভঙ্গিতে বিরতি দিলেন গুহ। গ্লাসে বড় একটা চুমুক দিয়ে বললেন, ঠিক তখন হামলা চালাল ভ্যাম্পায়ার। এক রাতে, বলে চললেন তিনি, দেরী করে ফিরেছি পার্টি থেকে। অধিক ভোজনের ক্লান্তিতে বিছানায় শোয়ামাত্র ঘুম। হঠাৎ কেমন একটা অস্বস্তি নিয়ে ভেঙে গেল ঘুম। চেয়ে দেখি এক লোক দাড়িয়ে আছে আমার বিছানার পাশে। সাধার চেহারার মানুষটির বেশভূষাও সাধারণ, শুধু চোখ জোড়া ছাড়া। টকটকে লাল চোখ থেকে আগুন যেন ঠিকরে বেরুচ্ছিল। এমন ভয়ানক চাউনি, শরীর অবশ হয়ে গেল আমার মুখ হা করলাম, শব্দ বেরুল না গলা থেকে।

    নিচু, কাঁপা গলায় কথা বলে উঠল আগন্তুক, চলে যাও ? তোমাকে সাবধান করে দিচ্ছি, এখান থেকে চলে যাও। তোমার সঙ্গে আমার কোন শত্রুতা নেই। কিন্তু আমার সাবধান বাণীর পরেও যদি এ বাড়িতে থাকো, আক্রান্ত হবে তোমরা। কারণ এ পরিবারের রক্ত খাওয়ার শপথ নিয়েছিলাম আমি। কাজেই আমার হাত থেকে বাঁচতে চাইলে এক্ষুণি কেটে পড়ো।

    কথা শেষ করেই অদৃশ্য হয়ে গেল লোকটা। আমি হতবুদ্ধির মত শুয়ে রইলাম বিছানায়। সারা গা কাঁপছে। ঘুম থেকে জাগালাম আমার স্ত্রী বীনাকে। ঘটনাটা খুলে বললাম ওকে। বীনা অভয় দিয়ে বলল ও কিছু না। পার্টিতে বেশি খেয়ে ফেলেছি বলে উল্টোপাল্টা স্বপ্ন দেখছি। গুরুপাক ভোজনে অমন হতেই পারে। তবে বীনার যুক্তি মেনে নিতে পারলাম না। স্বপ্ন নয়, সত্যি কেউ একজন এসেছিল আমাদের ঘরে। শাসিয়ে গেছে আমাকে।

    দরজা-জানালা পরীক্ষা করে দেখলাম! সব বন্ধ। আমার ছোট্ট মেয়েটা নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। বীনা তাগাদা দিল ঘুমিয়ে পড়তে। শুয়ে পড়লাম। তবে সে রাতে আর ঘুম এল না। আগন্তুকের কথা মনে পড়ল বারবার।

    পরদিন সকালেই চলে এলাম শহরে। বাড়ি খুঁজতে। আর্গের বাড়িতে থাকতে ভয় করছিল। তবে মা কিংবা বীনাকে জানাইনি ভয়ের কথা। ওদেরকে জত করে তুলতে চাইনি। তবে সারা দিন বাড়ি খোজাই সার হলো। পেলাম না মনের মত বাড়ি। সন্ধ্যাবেলায় বাসায় ফিরলাম ক্লান্ত এবং হতাশ হয়ে। দুশ্চিন্তাও হচ্ছিল বেশ। তবে চেহারা ভাবলেশশূন্য রেখে রাতের খাবার খেলাম সবার সাথে। সে রাতে একটু তাড়াতাড়িই গেলাম বিছানায়।

    আমাদের কুকুর মোতি সাধারণত বারান্দায় ঘুমায়। সে রাতে সৌভাগ্যক্রমে ও খেলা করছিল আমার মেয়ে রূপার সঙ্গে। আমার খাটের নিচেই খেলা শেষে শুয়ে পড়েছিল জানোয়ারটা।

    রাত আনুমানিক দুটোর দিকে মোতির ঘেউ ঘেউ ডাকে ঘুম ভেঙে গেল আমার। বীনাও জেগে গেছে। সাথে সাথে চিৎকার শুরু করে দিল ও।

    ভ্যাম্পায়ারটা আবার ঢুকে পড়েছে ঘরে। টকটকে লাল চোখে, প্রতিহিংসার দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে। ধীরে ধীরে, ফ্যাঁসফেঁসে গলায় কথা বলতে শুরু করল সে।

    তোমাকে বলেছিলাম এ বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে। আমার আদেশ অমান্য করেছ। এ জন্যে এখন শাস্তি পেতে হবে তোমাকে। তোমার মেয়ের রক্ত খাব আমি। ও মারা যাবে।

    মোতি ভ্যাম্পায়ারের সামান্য দূরে দাঁড়িয়ে সমানে ঘেউ ঘেউ করে চলছিল। ভ্যাম্পায়ার ওকে গ্রাহ্যই করছিল না। মোতির চিৎকার ছাপিয়েও তার কণ্ঠ পরিষ্কার শুনতে পাচ্ছিলাম আমরা।

    আমি ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করার জন্যে বিছানা থেকে নামতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু তার আগেই ঘুরে দাঁড়াল ভ্যাম্পায়ার, বিদ্যুৎগতিতে পৌঁছে গেল আমার বিছানার পাশে। আর ঠিক তখুনি একটা ভেল্কি দেখলাম আমরা। রূপার গায়ে থাবা চালিয়েছে ভ্যাম্পায়ার, একই সঙ্গে বিদ্যুত্তমকের মত লাফিয়ে উঠেছে মোতি, ঝাঁপিয়ে পড়ল পিশাচটার গায়ে। কিন্তু চোখের পলকে অদৃশ্য হয়ে গেল ভ্যাম্পায়ার মোতিকে বোকা বানিয়ে।

    বীনা লাফিয়ে নামল খাট থেকে। এক দৌড়ে রূপার বিছানায়। ভয়ানক দৃশ্যটা দেখে মাথা ঘুরে গেল আমার। ভ্যাম্পায়ারটার থাবার আঘাত লেগেছে রূপার ঘাড়ে, স্রোতের বেগে রক্ত পড়ছে। ভয়ে, যন্ত্রণায় অজ্ঞান হয়ে গেছে আমার মেয়ে। রূপার ঘাড়ে কোন মতে ব্যান্ডেজ বেঁধে তক্ষুণি ওকে নিয়ে ছুটলাম হাসপাতালে। আর আধাঘণ্টা দেরী হয়ে গেলে মেয়েকে বাঁচানো যেত না, এতই রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।

    যমে-মানুষে লড়াই চলল টানা দুই দিন। এই দুই দিন অজ্ঞান হয়ে রইল রূপা। তিন দিনের দিন জ্ঞান ফিরল ওর। এখন আগের চেয়ে সুস্থ। তবে বেচারীর শরীরে একটুও শক্তি নেই। অবশ্য কয়েকদিনের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবে রূপা।

    এ ঘটনার পরে আপনার এজেন্সিতে চিঠি লিখি আমি। প্রথমে পুলিশের কাছে যাব ভেবেছিলাম। কিন্তু ভ্যাম্পায়ারের কথা হয়তো বিশ্বাসই করবে না তারা। উল্টো হাসাহাসি করবে আমাকে নিয়ে। পাগল ঠাওড়াবে। আর ডাক্তারদেরকে বলেছি খেলতে গিয়ে সিঁড়ি থেকে পড়ে ব্যথা পেয়েছে রূপা।

    ওই ঘটনার পর থেকে আমাদের জীবনে শান্তি বলে কিছু নেই। সেদিনের পরে ভ্যাম্পায়ারের চেহারা আর দেখিনি বটে। তবে আমার বিশ্বাস আবার ফিরে আসবে সে। আমার মা ওঝা ডেকে এনেছিলেন। কে জানে হয়তো তার মন্ত্রের জোরে সাময়িকভাবে পালিয়েছে ভ্যাম্পায়ার। ওঝা সদর দরজায় কঙ্কাল টাঙিয়ে রেখেছে। বলেছে মন্ত্রপূত এ কঙ্কাল ঠেকিয়ে রাখবে ভ্যাম্পায়ারকে। ওঝার কথা বিশ্বাস হয়, আবার হয়ও না। জানি না শেষ পর্যন্ত ভাগ্যে কি আছে।

    গল্প শেষ হলো মি. গুহর। রাতের খাবারের আগে আরও কিছুক্ষণ ড্রইংরুমে কাটিয়ে দিলাম দুজনে নানা বিষয়ে আলোচনা করে। ডিনার সারতে হলো পরিবারের সকল সদস্যদের নিয়ে। ভ্রমণে ক্লান্ত ছিলাম বলে তাড়াতাড়ি বিছানায় গেলাম। কিন্তু ঘুম এল না সহজে। বারবার ভ্যাম্পায়ারের কথা মনে পড়ছে।

    ভ্যাম্পায়ার? রক্তচোষা ভ্যাম্পায়ার, সত্যি সম্ভব এ যুগে? কিন্তু কি করে সম্ভব? অথচ মি. গুহর চেহারা দেখে এবং কথা শুনে মনে হয়েছে ভ্যাম্পায়ারের অস্তিত্ব প্রবলভাবে বিশ্বাস করেন তিনি। আর এমন গণ্যমান্য একজন ব্যক্তির কথা হালকাভাবে নেয়ার কোন অবকাশ নেই। আমি আমার হেভী-ক্যালিবারের রিভলভারটা বালিশের তলায় গুজে ঘুমাবার চেষ্টা করলাম। কখন ঘুমিয়ে পড়েছি এবং কতক্ষণ ঘুমিয়েছি জানি না। হঠাৎ জেগে উঠলাম। চোখ মেলে চাইতেই হিম হয়ে গেল গা। ডিম বাতির নীলচে আলোয় দেখলাম এক লোক দাঁড়িয়ে আছে আমার বিছানার পাশে। অতি সাধারণ বেশভূষা তার, চেহারায়ও কোন বিশেষত্ব নেই। শুধু চোখজোড়া ছাড়া। ভয়ানক জ্বলছে তার চোখ লাল টকটকে। আমি কিছু বলার আগেই সে মুখ খুলল।

    আমিই সেই ভ্যাম্পায়ার, ফাসফেঁসে, কঁপা কণ্ঠ তার। তুমি বোকা, তাই এখানে এসেছ। এখান থেকে চলে যাও। নইলে তুমিও মারা পড়বে। কাল যেন তোমাকে আর এ বাড়িতে না দেখি। বলে ঘুরে দাড়াল সে।

    ভয়ে আমার শরীর প্রায় অসার হয়ে গিয়েছিল। বহু কষ্টে বালিশের নিচে হাত ঢুকিয়ে বের করে আনলাম রিভলভার। ভ্যাম্পায়ার ঘুরে দাঁড়াতেই তাকে লক্ষ্য করে গুলি করলাম। বন্ধ ঘরে বিকট শোনাল গুলির আওয়াজ। মনে হলো গুলি লেগেছে। ভ্যাম্পায়ারের গায়ে। কারণ ঝাঁকি খেতে দেখেছি ওকে গুলি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে। উল্লসিত হয়ে উঠলাম আমি। ওটা ভ্যাম্পায়ার নয়, মানুষ, ভাবলাম আমি। তাই গায়ে গুলি লেগেছে।

    ধীরে ধীরে শরীরটা ঘুরে দাড়াল আমার দিকে। পরপর আরও দুবার গুলি করলাম। দুবারই ঝাঁকি খেল ভ্যাম্পায়ার। বারুদের গন্ধে ভরে গেল ঘর। গুলির শব্দে কানে তালা লাগার জোগাড়।

    আমি তোমাকে শেষ করব, আশ্চর্য ঠাণ্ডা গলায় বলল ভ্যাম্পায়ার। তারপর পা বাড়াল ঘরের অন্ধকার কোণের দিকে। অদৃশ্য হয়ে গেল। বিছানা থেকে নেমে পড়লাম আমি। স্ত হাতে আলো জ্বালালাম। ডান হাতে রিভলভার বাগিয়ে ধরে একে একে পরীক্ষা করে দেখলাম বাথরুম, কাপবোর্ড এমনকি বিছানার তলাও। কোথাও ভ্যাম্পায়ারের চিহ্ন নেই। দরজা-জানালা বন্ধ করেই শুয়েছিলাম। তাহলে কোখেকে ঢুকল ওটা? এরকম জিনিসের সঙ্গে মোকাবিলা আমার এই প্রথম। ভ্যাম্পায়ারের কথা ভাবছি, এমন সময় দরজায় দমাদম বাড়ি। গুহর কণ্ঠ শুনতে পেলাম। দরজা খুলতে বলছেন।

    রিভলভার হাতে নিয়েই সাবধানে খুলে দিলাম দরজা। গুহই। ড্রেসিং গাউন পরনে, চুল এলোমেলো, এক চাকরকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন। আমার হাতে অস্ত্র দেখে আঁতকে উঠলেন, এক লাফে পিছু হটলেন। অবশ্য পরের মুহূর্তে ঘরে ঢুকলেন।

    কি হয়েছে? জানতে চাইলেন মি. গুহ। গুলির আওয়াজ শুনলাম যেন!

    ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করলাম তার কাছে। মাই গড! শিউরে উঠলেন মি. গুহ। অল্পের জন্যে প্রাণে বেঁচে গেছেন। সত্যি কি ভ্যাম্পায়ারটার গায়ে গুলি লেগেছে?

    হয়তো, বললাম আমি। আপনার কাছে ভ্যাম্পায়ারের গল্প শুনে প্রথমে বিশ্বাস করিনি আমি। পরে ভেবেছি সাবধানের মার নেই। তাই রিভলভারে সিলভার বুলেট ভরে রেখেছিলাম। এখানে আসার আগে ভ্যাম্পায়ারের ওপর প্রচুর পড়াশোনা করি আমি। দুটো ব্যাপারে নিশ্চিত হই-এক ভ্যাম্পায়ার বলে যদি সত্যি কিছু থাকে হলে ওরা মানুষের রক্ত পান করে। দুই. ওদেরকে শুধু সিলভার বুলেট দিয়েই প্রস করা স্থল। তাই বিশেষ প্রক্রিয়ায় সিলভার বুলেট তৈরি করি নিজেই।

    বাহ, দারুণ! আমার বুদ্ধিমত্তায় খুশি হন ওই। এমন সময় হাঁপাতে হাঁপাতে এক চাকর এসে হাজির। জয়ে চোখ বিস্ফারিত। স্যার! উত্তেজিত গলায় বলল সে। জলদি চলেন। মেমসাব আপনেরে বোলায়। আপনের ভাই, বিজয় সাবের কোন সাড়া শব্দ নাই। হের কিছু একটা হইছে-মনে লয়।

    দ্রুত সিঁড়ি ভেঙে নিচে নেমে এলাম আমরা। বিজয়ের ঘরের সামনে ছোটখাট জটলা। বীনা দেবীর মুখ কালো, আমাদের দেখে বললেন, অনুরাধারও কোন সাড়া পাচ্ছি না, বিজয়ের পাশের ঘরে ইঙ্গিত করলেন তিনি। মি. গুহর ছোটবোন থাকে ও ঘরে।

    দরজা ভাঙো, আদেশ দিলেন গুহ। চাকররা একযোগে কঁধ দিয়ে ধাক্কা মেরে ভেঙে ফেলল বিজয়ের ঘরের দরজা। হুড়মুড় করে ভেতরে ঢুকল সবাই। যা দেখল তাতে ভয়ে ছানাবড়া হয়ে উঠল চোখ।

    ঘরে আলো জ্বলছে। বিজয় তার বিছানায়, রক্তের পুকুরের মধ্যে ভাসছে। দেখেই বুঝেছি আসতে দেরী করে ফেলেছি আমরা। ভ্যাম্পায়ার তার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করে চলে গেছে। কণ্ঠনালী ছেড়া হতভাগ্য বিজয়ের!

    এক চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান বীনা দেবী! মি, গুহর মনের জোর সাংঘাতিক। নিহত ভাইয়ের দিকে এক পলক তাকিয়েই মুখ ঘুরিয়ে নিলেন। বজ্র নির্ঘোষে বললেন, পাশের রুমে, জলদি।

    অনুরাধার ঘরের দরজাও ভাঙা হলো। এখানেও সেই একই দৃশ্য। চতুর্দশী কিশোরীর ছিন্নভিন্ন শরীর দেখে আর সন্দেহের অবকাশ রইল না ভ্যাম্পায়ার কল্পনাশ্রয়ী কোন বস্তু নয়।

    সে রাতটা যে কি বিভীষিকার মধ্যে কেটেছে! বীনা দেবী অজ্ঞান। গুহর মা প্যারালাইজড় রোগীর মত বসে আছেন। চোখে ফ্যালফেলে চাউনি। ডাক্তার এল, পুলিশে খবর দেয়া হলো, আমার সঙ্গে কথা বলল পুলিশ অফিসাররা। রিভলভার পরীক্ষা করল, লাইসেন্স খুঁটিয়ে দেখল। তারপর বলল আমি যেতে পারি।

    নিজের ঘরে এসে পাথর হয়ে বসে রইলাম। চিন্তা-ভাবনাগুলো সব জট পাকিয়ে যাচ্ছিল। আশপাশে কি ঘটছে সে ব্যাপারে যেন সচেতন ছিলাম না ওই সময়।

    তবে এই খুনের ঘটনা খবরের কাগজের কাছে সযত্নে গোপন রাখা হলো। ভ্যাম্পায়ার প্রতিহিংসার বশে খুন করেছে বিশ্বাস করবে কেউ? পুলিশী তদন্ত শুরু হলো বটে, তবে তারাও ব্যাপারটা যেন বিশ্বাস করতে চাইছিল না।

    যা হোক, কয়েকদিন পরে অর্থাৎ আজ সকালে মি. গুহর বাড়ি থেকে ছাড়া পাই। আমি। আমাকে পইপই করে বলে দেয়া হয়েছে এ বিষয়ে যেন মুখ না খুলি কারও কাছে। মি. গুহ তার মা, স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ঢাকা চলে গেছেন। ও বাড়ির আর ছায়াও মাড়াবেন না বলেছেন। পুলিশের অনুমতি ছাড়া এ খুনের বিষয়ে কারও সঙ্গে কথা বলা তাদেরও নিষেধ। আমি শুধু ফোনে তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছি। তারপর ব্যাগ-ব্যাগেজ নিয়ে সোজা ট্রেনে। আপাতত রাজশাহীতে থাকব কয়েকদিন। তারপর ফিরব।

    চৌধুরীর দীর্ঘ গল্পের মাঝে আমি কোন প্রশ্ন করিনি। শুধু হুঁ হ এবং কি অদ্ভুত ধরনের মন্তব্য করে গেছি। আর বেশ কয়েক কাপ চা গিলেছি।

    শখের গোয়েন্দার কথা শেষ হলে বললাম, এমন অদ্ভুত গল্প জীবনেও শুনিনি। তবে আপনি ভাগ্যবান। আপনার আয় রেখা বেশ লম্বা মনে হচ্ছে।

    সত্যিই তাই, ডান হাতের তাল দেখতে দেখতে বলল জীবন চৌধুরী। আপনার সঙ্গে আমি একমত। রিভলভারে আগেভাগে সিলভার বুলেট ভরে না রাখলে এ মুহূর্তে আমাকে এ জায়গায় দেখতে পেতেন না।

    সাঁঝের আঁধার ঘনিয়ে এসেছে! কম্পার্টমেন্টে অন্ধকার নামছে। জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।

    আলোটা জ্বেলে দিন না, বলল চৌধুরী।

    জ্বালছি। এক মিনিট, বললাম বটে তবে আলো জ্বালানোর জন্য ব্যস্ত ইলাম না। জিজ্ঞেস করলাম, আচ্ছা, একটা কথা খোলাসা করুন তো। আপনি বলেছেন ভ্যাম্পায়ারটার চেহারা সাধারণ মানুষের মত, পরেও সাধারণ পোশাক, তাহলে আপনি কি করে বুঝলেন সে ভ্যাম্পায়ার ছিল?

    সেই ভয়ঙ্কর লাল চোখ দেখে, বলল চৌধুরী। কোন সাধারণ মানুষের চোখ অমন হতে পারে না।

    এই প্রথম গাঢ় সানগ্লাসটা চোখ থেকে খুললাম আমি। সরাসরি তাকালাম লোকটার দিকে।

    এরকম চোখ কি?

    আমার চোখের দিকে তাকিয়ে ভয়ানক আঁতকে উঠল সে। মুখ হাঁ করল, চিৎকার দেবে। তার আগেই আমি ঝাপিয়ে পড়লাম তার ওপর। এক কামড়ে ছিঁড়ে ফেললাম কণ্ঠনালী।

    [রাজেন্দ্র সিং ও রাজেশ্বরী সিং-এর দ্য ভ্যাম্পায়ার-এর ছায়া অবলম্বনে]

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleদুনিয়া কাঁপানো ভূতের গল্প – অনীশ দাস অপু
    Next Article খুনির রং – অনীশ দেব

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }