Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    পুরোনো স্পর্শ

    ছোটগল্প সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এক পাতা গল্প8 Mins Read0

    পুরোনো স্পর্শ

    প্রথম দর্শনে বুকটা খুব দমে যায়। মনে হয় যেন সম্পূর্ণ একটা অচেনা বাড়ি! লোহার গেটের দু পাশে দোকান ঘর, তারপর সরু এক চিলতে বাগান, তাতে কিছু চন্দ্রমল্লিকা নেতিয়ে আছে। একজন ছুতোর মিস্ত্রি চেয়ার সারাচ্ছে এক পাশে বসে। বাড়ির ভেতর থেকে একটি চোদ্দো পনেরো বছরের ছেলে বেরিয়ে এসে প্রায় ছুটতে-ছুটতে চলে গেল গেটের বাইরে।

    ভদ্রলোকটি বললেন, আসুন, ভেতরে আসুন।

    বিকাশ থমকে দাঁড়িয়ে আছে। চার পাশ দেখছে। ঠিকানা ভুল হয়নি তো? সে কিছুই চিনতে পারছে না। এ বাড়িটাকেও তো খুব নতুন বলে মনে হয় না।

    বিকাশ আপন মনে বলল, অনেক বড় বাগান ছিল, অনেক গাছপালা, দুটো পুকুর ছিল…ভদ্রলোক বললেন, একটা পুকুর অবশ্য এখনও আছে। সেরকম বড় কোনও বাগানের কথা আমার মনে পড়ে না।

    বিকাশ লোকটিকে মনোযোগ দিয়ে দেখল। বিকাশের থেকে অন্তত পনেরো-ষোলো বছরের ছোট

    তো হবেই। সদ্য পাট ভাঙা ক্রিম সাফারি স্যুট পরা, মাথার চুল নিখুঁতভাবে আঁচড়ানো, চোখে ফ্রেম ছাড়া চশমা, একটু বেশি-বেশি ভদ্র ব্যবহার।

    বিকাশ বলল, চলুন তো পুকুরটা একবার দেখি। বাড়ির ডান পাশটায় কীসের যেন ছোটখাটো একটা কারখানা। ভেতরে লোহার সঙ্গে লোহা ঘষার কর্কশ শব্দ হচ্ছে।

    হাঁটতে হাঁটতে বিকাশ জিগ্যেস করল, আপনার নামটা যেন কী বললেন?

    ইউসুফ রেজা। আপনি বোধহয় আমার বাবাকে চিনবেন। মাহবুব খান, দশ বছর আগে তাঁর ইন্তেকাল হয়েছে। তিনি কলকাতায় থাকতেন। তিনিই এই বাড়ি…

    অনেক কাল আগের কথা। আমারও ভালো মনে নেই সব কথা। কিন্তু কী জানেন। এই বাড়ির ছবি আমার চোখে যেন জ্বলজ্বল করত। গোলাপ বাগান, আম বাগান, একটা দোতলা বাড়ি, একটা পেয়ারা গাছের ডাল ভেঙে আমি পড়ে গিয়েছিলাম…সেসব কিছুই মিলছে না।

    অনেক কিছুই বদল হয়ে গেছে। বেশ কিছু জমি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। আমার আব্দুরা ছিলেন তিন ভাই।

    আপনি কলকাতায় আসেন না?

    সেভেন্টি টুতে একবার গিয়েছিলাম। তাও দুই-তিন দিনের জন্য।

    আমি ঢাকা থেকে এলাম, প্রায় তিরিশ বছর বাদে। এত কাছে, কলকাতা থেকে প্লেনে মাত্র আধ ঘণ্টা লাগে, ইচ্ছে করলেই তো আসা যায়। তবু আসা হয়নি!

    আপনি হোটেলে উঠেছেন? ইচ্ছে করলে এখানে এসেও থাকতে পারেন। একটা গেস্টরুম আছে আমাদের বাড়িতে। এটা আপনারও বাড়ি বলে মনে করতে পারেন।

    ধন্যবাদ। ধন্যবাদ। আমি এসেছি অফিসের কাজে, হোটেলে আমার সঙ্গে আরও দুজন কলিগ আছেন। আমার খুব শখ ছিল জন্মভিটেটা একবার দেখে আসব। এখানে জন্মেছি, খেলা করেছি! রেজা সাহেব, আপনার কলকাতার বাড়িটা দেখতে ইচ্ছে করে না।

    আমি তো কলকাতায় জন্মাইনি। আমার জন্ম এই ঢাকা শহরেই। শুনেছি, কলকাতায় আমাদের প্রপার্টি ছিল, আমার বাপ-দাদারা কোন হিন্দু ভদ্রলোকের সঙ্গে এক্সচেঞ্জ করেছিলেন।

    আমাদেরও ঢাকায় বিরাট প্রপার্টি ছিল, একান্নবর্তী পরিবার তো।

    হঠাৎ কথা থামিয়ে বিকাশ প্রায় চিৎকার করে উঠল, আরে, এই তো সেই পুকুর!

    ইউসুফ রেজা মৃদু হেসে বলল, তাহলে একটা কিছু চিনতে পেরেছেন।

    বিকাশ দ্রুত এগিয়ে গিয়ে বলল, হ্যাঁ, হ্যাঁ, এই সেই ঘাটটা। এই আমগাছটা আমার বাবা নিজের হাতে লাগিয়েছিলেন। আমি গাছটাকে বেশ বড় অবস্থাতেই দেখে গেছি। খুব মিষ্টি আম হত।

    এটা বোধহয় সে গাছটা নয়। এ গাছের আম বেশ টক।

    তাই নাকি! সেই গাছটা নয়? তার জায়গায় অন্য গাছে হয়েছে, কিন্তু টক আম হবে কেন?

    আমি দাদা আম খাই না। আমের মর্ম বুঝি না?

    এই পুকুরে আমি সাঁতার শিখেছি। এখানে মাছ ধরেছি কত। বড়-বড় কালিবউস মাছ ছিল।

    এই পুকুরটাও বুজিয়ে ফেলা হবে। এখানে একটা মাল্টিস্টোরিড বাড়ি উঠবে!

    বিকাশ আঁতকে উঠে বলল, অ্যাঁ? এই পুকুরটাও থাকবে না।

    কতকালের পুকুর! এখানে একদিন আমার মা…

    ইউসুফ বলল, ঢাকা শহর এখন কত বড় হয়ে গেছে, জমির দাম বেড়ে গেছে সাংঘাতিক ভাবে। কলকাতায় কি অনেক বাড়িতে এখনও প্রাইভেট পুকুর আছে?

    সে প্রশ্নই ওঠে না।

    আপনারা যদি ঢাকায় থাকতেন, তাহলে আপনারাও এখন পুকুর বুজিয়ে বাড়ি তুলতেন।

    হয়তো তাই। পুরোনো দোতলা বাড়ি ভেঙে পাঁচতলা বাড়ি হত। আচ্ছা রেজা সাহেব, বাড়িটার পেছন দিকটা বেশি পুরোনো মনে হচ্ছে না? বটের চারা গজিয়ে গেছে, একটা জায়গা ভাঙা!

    ঠিক বলেছেন। এই অংশটা পুরোনো। আমার ঠাকুমা থাকেন। এদিকটায় নতুন কনস্ট্রাকশন হয়নি।

    তার মানে এই দিকটায় এখনও অরিজিনাল বাড়ি রয়েছে?

    খুব সম্ভবত।

    বিকাশ একটা দীর্ঘশ্বাস গোপন করে পুকুরটার চারপাশে একবার ঘুরে এল। তার বাল্যকালের স্মৃতিতে পুকুরটাকে যেন আরও অনেক বড় মনে হত। এখন আর সেরকম কিছু লাগছে না।

    নিজেদের বসতবাড়ির ছবিটাও যেন ভেঙে টুকরো-টুকরো হয়ে যাচ্ছে। যেখানে গোলাপের বাগান ছিল, সেখানে কারখানা!

    এক সময় বিকাশ দেখল, ইউসুফ পাশে নেই। তাকে নস্টালজিয়ার সুখ ভোগ করতে দিয়ে সে কোথায় যেন চলে গেছে।

    এখানে এলে যত রোমাঞ্চ হবে ভেবেছিল বিকাশ, তেমন যেন হচ্ছে না। একসময় এখানে তাদের বাড়ি গমগম করত, নিজেদের পরিবারেই দশ-বারোজন মানুষ, তা ছাড়া বেশ কয়েকজন আশ্রিত ও দাসদাসী। পাড়া প্রতিবেশীরা আসত যখন-তখন।

    বিকাশ এখন একা পুকুরধারে দাঁড়িয়ে আছে, কাউকেই চেনে না, বাড়ি-ঘর সব অন্যরকম,

    একমাত্র এই পুকুরটাকেই আপন বলে মনে হয়। জলের রং কালো হয়ে গেছে। এই জলের কাছে মুখ ঝোঁকালে কি সে তার বাল্যকালের মুখচ্ছবিটা দেখতে পাবে?

    ইউসুফ আবার ফিরে এসেছে।

    বিকাশ বলল, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, রেজা সাহেব। আপনি আমার জন্য এতখানি সময় নষ্ট করলেন। এবার আমি চলি!।

    ইউসুফ বলল, এর মধ্যে যাবেন কি? বাড়ির ভিতরে আসেন, একটু চা খেয়ে যাবেন।

    বিকাশ বলল, থাক, এখন আর চা খাব না। এরপর সন্ধে হয়ে যাবে। আমি তো এতকাল পরে এসে ঢাকার রাস্তাঘাটও চিনতে পারছি না। সন্ধের পর হোটেলে পৌঁছতে অসুবিধে হবে।

    ইউসুফ বলল, তার কোনও সমস্যা নেই। আমার গাড়ি আপনাকে ছেড়ে দিয়ে আসবে। চায়ের ব্যবস্থা হয়ে গেছে।

    বসবার ঘরটি অত্যন্তই সুসজ্জিত। দেওয়ালে বিদেশের আধুনিক শিল্পীদের ছবির কয়েকটি প্রিন্ট।

    ইউসুফ রেজার অবস্থা বেশ সচ্ছল বোঝা যায়। ব্যবহারও অত্যন্ত মার্জিত ও ভদ্র। সোফায় বসার পর বিকাশের ক্ষীণ মনে পড়ল, তাদের বাড়ির বৈঠকখানায় তক্তাপোষ আর তাকিয়া থাকত।

    একটু পরে একজন মহিলা ঢুকে বললেন, আসসালাম আলাইকুম।

    বিকাশ তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়িয়ে বলল, নমস্কার।

    মহিলাটিকে দেখলে প্রথমেই মনে হয়, এত সুন্দরী?

    এরকম সুন্দরীকে যেন শুধু সিনেমা-টিনেমাতেই দেখা যায়। যেমন রং, তেমন শরীরের গড়ন। মুখে-চোখে সপ্রতিভ ভাব। দেখলেই বোঝা যায়, লেখাপড়া ভালোই জানেন।

    ইউসুফ বলল, আমার স্ত্রী হেনা।

    হেনা একটু দূরে বসে বলল, এই বাড়ি, বাগান সব আপনাদের ছিল? এতসব সম্পত্তি ফেলে রেখে কলকাতায় চলে গেলেন।

    বিকাশ কিছু বলার আগেই ইউসুফ বললেন, না, না, ফেলে রেখে যাননি। ওনারা আমাদের কলকাতার একটা প্রপার্টির সঙ্গে এক্সচেঞ্জ করেছেন। সেটা বোধহয় উনিশ শো পঞ্চান্ন-বাহান্ন সালে, তাই না?

    বিকাশ বলল, অনেককাল আগের ব্যাপার, আমাদের বাবা-জ্যাঠারা এসব করেছিলেন। আমার সেসব কিছুই মনে নেই। শুধু আমি এখানে জন্মেছিলাম, ছোটবেলায় এখানে খেলাধুলো করেছি। সেইসব একটু-একটু মনে আছে।

    হেনা বলল, নিজের জন্মস্থান অপরের হয়ে গেছে, এর জন্য কষ্ট হয় খুব, তাই না?

    বিকাশ হেসে ফেলে বলল, আমার বাবা, জ্যাঠামশাইদের কষ্ট হয়েছিল নিশ্চয়ই। কিন্তু এতদিন পরে…আমার যদি কষ্ট হয়, তবে সেটা নিছক মনগড়া। লোকেরা নিজেদের বাড়ি বিক্রি করে অন্য কোথাও আবার নতুন বাড়ি বানায় না? আমার কত বন্ধু উত্তর কলকাতা ছেড়ে দক্ষিণ কলকাতায়। চলে এসেছে।

    ইউসুফ বলল, হেনার বাপের বাড়ি টাঙ্গাইল। সেখানকার প্রপার্টি বেচে আমার শ্বশুর ধানমুন্ডিতে নতুন বাড়ি করেছেন। হেনা, তোমার জন্মস্থানও তো এখন পরের হয়ে গেছে।

    হেনা হেসে বলল, আমার জন্মস্থান একটা হাসপাতালের কেবিনে!

    বিকাশ মনে-মনে বেশ অবাক হচ্ছে। ছোটবেলায় তাদের বাড়িতে সবচেয়ে সুন্দরী ছিল জ্যাঠতুতো দাদার স্ত্রী। তাকে বিকাশ বলত, নতুন বউদি। তার সঙ্গে এই মহিলার খানিকটা মিল আছে।

    কিন্তু নতুন বউদি বাইরের লোকের সামনে বেরুতেন না। অচেনা কোনও লোকের সঙ্গে কথা বলার প্রশ্নই ছিল না।

    বিকাশের ধারণা ছিল, মুসলমান বাড়ির মেয়েরা পরদানশিন হয়।

    কিন্তু হেনা কত সহজভাবে তার সঙ্গে আলাপ করছে, হাসছে। সময় কত বদলে গেছে।

    শুধু চা নয়, তার সঙ্গে খাবার দাবারের এলাহি ব্যবস্থা। মস্ত বড়-বড় সন্দেশ, অমৃতি, কচুরি।

    বিকাশ বলল, এত! না, না, আমি পারব না।

    হেনা বলল, আপনি নিজের বাড়িতে এসেছেন, একটু মিষ্টি মুখ করবেন না?

    বিকাশ বলল, নিজের বাড়ি? যাদের সত্যিকারের এ-বাড়িটা নিজের বাড়ি ছিল, তারা কবে এ পৃথিবী থেকে চলে গেছে।

    ইউসুফ বলল, আমার বাবাও বেঁচে নেই। তিনি গেছেন অনেকদিন, আমার মা-ও চলে গেলেন গত বছর।

    বিকাশ বলল, আমার ছেলেমেয়েরা আমার মুখে ঢাকার গল্প শুনলে হাসে! তারা বলে, বাবা তুমি কতবার ওই একই গল্প বলবে! এখানে এসে বুঝতে পারছি, তাদের আমি মিথ্যে গল্প বলি। সে তো আমার একটা কল্পনার বাড়ির গল্প, সেরকম বাড়ি এখন ঢাকাতে কোথাও নেই। রেজা সাহেব, আপনিও কলকাতায় গেলে আপনার বাড়িটা চিনবেন না।

    ইউসুফ বলল, আমি সেখানে জন্মাইনি, সে বাড়ি কখনও দেখিনি, আমার চেনার কোনও প্রশ্নই ওঠে না!

    চা শেষ করার পর বিকাশ বলল, শুধু আর একটা অনুরোধ। এ-বাড়ির পেছন দিকটায় পুরোনো খানিকটা অংশ রয়ে গেছে। সে জায়গাটা একটু দেখতে পারি? যদি কিছু মনে পড়ে।

    হেনা আর ইউসুফ দুজনেই একসঙ্গে বলে উঠল, নিশ্চয়ই! নিশ্চয়ই!

    নতুন বাড়ির পর একটা উঠোন, তারপর পুরোনো মহল। একতলার ঘরগুলো ঘুরে বিকাশ উঠে এল দোতলায়। এখনও সে কিছু চিনতে পারছে না। এই দিকটা কি ছিল জ্যাঠামশাইয়ের অংশ! তার স্মৃতির বাড়ির দোতলায় যেন একটা টানা বারান্দা ছিল, এখানে তো বারান্দার কোনও অস্তিত্বই নেই। আগেকার কালের মতন খুপরি-খুপরি ঘর।

    একটা বেশ দরজাওয়ালা ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে বিকাশ বলল, হ্যাঁ, এইটা, মনে আছে। স্পষ্ট মনে আছে। আমার ঠাকুমা থাকতেন। আমি এখানে দুপুরবেলা এসে ঠাকুমার কোলে মাথা রেখে ঘুমাতাম। ঠাকুমা আমাকে নারকোল নাড়ু খাওয়াতেন! এই ঘরের ভেতরটা একবার দেখা যায় না?

    দরজার একটা পাল্লা খোলা, অন্য পাল্লাটাও ঠেলে খুলে দিল হেনা।

    সঙ্গে-সঙ্গে বিকাশের বুকের মধ্যে ধক করে উঠল। মনে হল, সে চোখে ভুল দেখছে। রোমাঞ্চ হল তার সমস্ত শরীরে।

    ঘরের মাঝখানে জোড়াসন করে বসে আছেন একজন বৃদ্ধা। সাদা ধপধপে কাপড় পরা, চক্ষু। বোজা। ঠিক যেন বিকাশের নিজের ঠাকুমা। ওই ভাবে বসে ঠাকুমা প্রত্যেক সন্ধেবেলা পুজো

    আহ্নিক করতেন। চল্লিশ বছর ধরে তিনি কি সেই একই জায়গায় বসে আছেন।

    ইউসুফ ফিসফিস করে বলল, আমার ঠাকুমা। নামাজ পড়ছেন।

    এখন আর হাঁটু গেড়ে বসতে পারেন না। তবে স্মৃতিশক্তি খুব ভালো আছে। সবাইকে চিনতে পারেন।

    বিকাশ জিগ্যেস করল, আমায় চিনতে পারবেন?

    ইউসুখ আর হেনা উত্তর দিল না।

    বিকাশের মনে হল, সে যদি এখন ওই বৃদ্ধার পাশে গিয়ে বসে পড়ে, তাহলে উনি তাঁর মাথায় হাত বুলিয়ে দেবেন। পুরোনো স্নেহের স্পর্শে বিকাশের শরীর জুড়িয়ে যাবে।

    ওই বৃদ্ধা তাঁকে আদর করতে-করতে জিগ্যেস করবেন, এতদিন পরে এলি? তুই কেমন আছিস, বিকাশ?

    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleশিল্পী
    Next Article প্রথম নারী

    Related Articles

    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    ছোটগল্প বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

    কাদা kada

    August 11, 2025
    আশাপূর্ণা দেবী ছোটগল্প

    আসল বেনারসী ল্যাংড়া

    April 5, 2025
    ছোটগল্প বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

    অসাধারণ | Ashadharon

    April 3, 2025
    ছোটগল্প মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

    জুয়াড়ির বউ

    March 27, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }