Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    পৃথিবীর ইতিহাস ২ – সুসান ওয়াইজ বাউয়ার

    ইশতিয়াক খান এক পাতা গল্প641 Mins Read0

    ৩৫. ট্রয়ের যুদ্ধ

    অধ্যায় ৩৫ – ট্রয়ের যুদ্ধ

    ১২৬০ থেকে ১২৩০ সালের মধ্যে কোনো এক সময় মাইসেনীয়রা ট্রয় শহরে আক্রমণ করে। এই যুদ্ধে জয়ী হলেও তারা দুর্দশায় পড়ে।

    এশিয়া মাইনরের একেবারে উত্তর-পশ্চিম উপকূলে, এমন এক জায়গায় ট্রয় শহরটি দাঁড়িয়ে ছিল, যেখানে হিট্টিটরা কখনোই পৌঁছাতে পারেনি। এমনকি, তাদের শক্তিমত্তার সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকাকালীন সময়েও নয়।

    ব্যাবিলন ও অ্যাসিরীয়া, ওয়াশুক্বানি ও হাটুসাস যখন উপসাগরের মাথা থেকে ভূমধ্যসাগরের তীর পেরিয়ে কৃষ্ণসাগর পর্যন্ত অঞ্চলের দখলদারিত্ব নিয়ে লড়ছে, তখন অসংখ্য পার্বত্য গোত্র, মরুভূমির যুদ্ধ-নেতা ও প্রাচীন শহর তাদের স্বাধীনতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়। ট্রয় ছিল এরকমই একটি শহর। প্রায় ২ হাজার বছর আগে একজন রাজা এ শহরের গোড়াপত্তন করেন। তিনি একটি ছোট গ্রামের চারপাশে প্রাচীর তৈরি করে একে দুর্ভেদ্য করে তোলেন। কয়েক শতকের ব্যবধানে এই গ্রাম থেকে শহরে রূপান্তরিত হওয়া জায়গাটি পুড়িয়ে দিয়ে আবার নতুন করে গড়ে তোলা হয়। কয়েক দফা সংস্কারও করা হয় একে।

    রামসেস দ্বিতীয় ও হাউসিলিস তৃতীয় যখন নিজেদের মধ্যে শান্তিচুক্তি সাক্ষর করলেন, তখন ট্রয় নগরের ৭ম রূপ তৈরি হয়েছে, যাকে প্রত্নতত্ত্ববিদরা ‘ট্রয় ভিলা’ নাম দিয়েছেন। এটি একটি ধনাঢ্য ও স্বয়ংসম্পূর্ণ শহর ছিল। তাদের বাইরে থেকে তেমন কিছু আমদানি করা লাগত না। শহরটি একটি সমতলভূমির উপর অবস্থিত ছিল এবং এর চারপাশে ছিল প্রচুর পরিমাণে আবাদযোগ্য, উর্বর জমি। কাছাকাছি নদ-নদীতে ছিল প্রচুর পরিমাণে মাছ, তৃণভূমিতে অসংখ্য ভেড়া। এছাড়াও, ঘোড়ার জন্য সেখানে ছিল বাড়তি ঘাস ও শস্যদানা।

    ১২৬০ থেকে ১২৩০ সালের মধ্যে যুদ্ধের আগুনে ট্রয় ছারখার হয়ে যায়। শহরের প্রাচীরগুলো ভেঙে পড়ে এবং শহরের ভেতর নির্বিচারে গণহত্যা চালানো হয়। কবর না-দেওয়া লাশ ও হাড়গোড় পড়ে থাকে সড়কের ওপর।

    এই যুদ্ধের শুরুর উপাখ্যানটি ৫ হাজার বছর পরে ইলিয়াডে ধারণ করা হয়। আমরা অনেকেই ঐতিহাসিক এই গল্পের সারমর্ম-সারাংশ জানি। গ্রিক শহর স্পার্টার রাজা মেনেলাউস আরগোস শহরের এক রাজকুমারীকে বিয়ে করেন। মেনেলাউসের স্ত্রী, রাজকন্যা হেলেন ট্রয়ের রাজা প্যারিসের নজরে পড়েন। লড়াকু যোদ্ধা হিসেবে তিনি যতটুকু পরিচিত, তারচেয়ে অনেক বেশি পরিচিত ছিলেন নারীদের মন জয়ের ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার জন্য। প্যারিস হেলেনের মন জয় করলেন এবং তাকে ট্রয় শহরে ‘ভাগিয়ে নিয়ে গেলেন। হেলেনের বৈধ স্বামী মেনেলাউস তার ভাই আগামেমননকে দায়িত্ব দিলেন ট্রয় নগরীতে আক্রমণ করে প্রতিশোধ নিতে। এ গল্পের আরও কিছু সংস্করণ চালু আছে, তবে এটাই মোটামুটি সর্বজনবিদিত।

    আগামেমননকে ইলিয়াডের রচয়িতা হোমার ‘গ্রিকদের সর্বোৎকৃষ্ট রাজা হিসেবে অভিহিত করেন।

    আগামেমনন গ্রিসের সব শহরকে একটি যৌথবাহিনী তৈরির আহ্বান জানালেন। উদ্দেশ্য, নৌবহর নিয়ে ট্রয়ের উদ্দেশে যাত্রা করা এবং ভাইয়ের অপমানের শোধ নেওয়া। সব প্রস্তুতি শেষে তারা এশিয়া মাইনরের উপকূলে এসে পৌঁছালেন, কিন্তু ট্রয়ের বীর যোদ্ধাদের দক্ষতা ও ট্রয়ের উঁচু প্রাচীর তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াল। সেখানে অবস্থান নিয়ে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে তারা শহরের প্রতিরক্ষা ভঙ্গের চেষ্টা চালালেন।

    এই যুদ্ধের মূল চরিত্র হচ্ছেন ইলিয়াডের অমর নায়ক একিলিস। উত্তরাঞ্চলের গ্রিক উপদ্বীপের থেসালি অঞ্চলের বাসিন্দা এই মহান যোদ্ধাই এই মহাকাব্যের নাটকীয় সব ঘটনার কেন্দ্রে। ইলিয়াডের শেষে আমরা অ্যাকিলিস সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারি। কিন্তু তখনও গ্রিক সেনাদল ট্রয়ের প্রাচীরের বাইরে বসে আছে এবং ট্রয়ের রাজা প্রিয়াম তখনও বহাল তবিয়তে সিংহাসনে বসে আছেন। যুদ্ধের পুরো কাহিনি ইলিয়াড বা এর পরের পর্ব হিসেবে বিবেচিত, অডিসিতে পুরোপুরি লেখা নেই। অডিসির শুরুতে জানা যায়, যুদ্ধ শেষ হয়েছে। ততদিনে ট্রয় ছারখার ও লুটপাট করে গ্রিকরা বাড়ির পথে দীর্ঘ যাত্রা শুরু করেছে।

    ট্রয়ের পতনের প্রকৃত উপাখ্যানটি বেশ কয়েকজন গ্রিক কবি বিচ্ছিন্নভাবে লিখেছেন। তবে এ বিষয়ে সবচেয়ে গোছানো বর্ণনা পাওয়া যায় আরও অনেকদিন পরে প্রকাশিত রোমান কবি ভার্জিলের আইনিদের ২য় বইতে, যার নাম ‘ব্রোকেন ইন ওয়ার অ্যান্ড ফয়েলড বাই ফেট’।

    কবিতার বর্ণিত গল্পটি আমরা অনেকেই জানি। গ্রিকরা একটি ঘোড়া বানালেন। পাহাড়ের মতো উঁচু এবং পাইনউড গাছের তক্তা দিয়ে তৈরি এ ঘোড়াটিই ‘ট্রোজান হর্স’ বা ট্রয়ের ঘোড়া নামে পরিচিত। ঘোড়াটির পেটের ভেতরে প্রচুর পরিমাণে সশস্ত্র যোদ্ধা ঢোকানো হল। যোদ্ধার সংখ্যা এত বেশি হল যে সেখানে আর তিল ধারণের জায়গাটিও রইল না।

    গ্রিকরা বেশ সাড়াশব্দ করে সদলবলে ট্রয় থেকে চলে যাওয়ার অভিনয় করলেন। সব মালামাল জাহাজে ওঠানো হল, তাঁবুগুলো খুলে ফেলে অস্ত্রশস্ত্র ও রসদসহ গ্রিকরা জাহাজ নিয়ে দূরে সরে গেল। রেখে গেল শুধু ঘোড়াটি।

    ট্রোজানরা ধরেই নিলেন গ্রিকরা দীর্ঘদিন চেষ্টা করে যুদ্ধ জয় করতে না পেরে রণে ভঙ্গ দিয়েছে। যাওয়ার আগে প্রাচীরের বাইরে রেখে গেছে রোমান যুদ্ধদেবী মিনার্ভার প্রতি উপঢৌকন—এই কাঠের তৈরি ঘোড়াটি। তারা খুশিমনে, অনেক অশুভ চিহ্নকে অবজ্ঞা করে সেই কাঠের ঘোড়া টেনে প্রাচীরের ভেতরে নিয়ে এলেন।

    রাতভর চলল ‘যুদ্ধজয়ের’ উল্লাস ও মদ্যপান। ট্রয়ের সেনাদলের বেশিরভাগ সদস্যই মদ্যপ অবস্থায় সে-রাতে ঘুমের কোলে ঢলে পড়লেন, এবং ঠিক তক্ষুনি মৃত্যুদূতের মতো কাঠের ঘোড়ার পেট থেকে বেরিয়ে এল দলে দলে গ্রিক যোদ্ধারা।

    অল্প কয়েকজন রক্ষী জেগে ছিলেন। অল্প সময়ের মধ্যে গ্রিকরা তাদেরকে হত্যা করলেন এবং শহরে প্রবেশের সব ফটক খুলে দিলেন।

    চলে যাওয়ার ভান করে অল্পদূরে নোঙর করে রাখা বিশাল নৌবহর ফটক খোলার সংকেত পেয়ে আবারো শহরের দিকে এগিয়ে এল। পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রিক সেনাদলের বাকি সদস্যরা পূর্ণ সামর্থ্য নিয়ে ঘুমন্ত ট্রয় শহরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল।

    অবশেষে শতবর্ষ পুরনো, প্রাচীর ঘেরা ট্রয় নগরীর পতনের পথ উন্মুক্ত হল। ‘শহর জ্বলছে আগুন; গ্রিকরাই এখন সবকিছুর অধিপতি’, বলেন কবি

    ভার্জিল ও হোমার ১৩শ শতাব্দীর এই যুদ্ধের বর্ণনা দিয়েছেন তাদের নিজ ভাষা, সে আমলের অস্ত্র ও শিরস্ত্রাণের ভাষায়। তবে দুইজনের বর্ণনায় একটি কথাই পরিষ্কার, ট্রয় জ্বলেছিল এবং শহরের বাসিন্দারা কচুকাটা হয়েছিলেন।

    তবে হোমারের জীবদ্দশায়-যে ট্রয়ের পতন হয়নি, এটি মোটামুটি নিশ্চিত। খ্রিস্টপূর্ব ৮০০ সালের আশেপাশে হোমার বেঁচে ছিলেন বলে ইতিহাসবিদরা একমত হয়েছেন। আরও ৫০-১০০ বছর এদিক-ওদিকও হতে পারে, তবে ১২৩০ সালে তার বেঁচে থেকে ট্রয়ের কাহিনি নিজ চোখে দেখা এক অসম্ভব ব্যাপার। প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতে, ১২৩০ সালের আশেপাশে কোনো সময় ট্রয়নগরী জ্বলেছিল। হোমার নিঃসন্দেহে পুরাকালের কাহিনি শুনিয়েছেন আমাদের। লেখার ধরনের বিষয়টা পরিষ্কার, হোমার এক ইতিহাসনির্ভর কল্পকাহিনি রচনা করেছিলেন। হোমারের লেখার অনুবাদক ই.ভি. রিইউ উল্লেখ করেন, হোমারের বর্ণনা অনুযায়ী, ট্রয়-বিরোধী অভিযানে ৬০টি যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর জন্য খ্যাতি লাভ করা পাইলোসের রাজা নেস্তর একটি কাপে করে পানীয় পান করতেন, যার ওপরে ২টি ঘুঘুপাখির আকৃতি খোদাই করা ছিল। মাইসেনীয়ার ধ্বংসাবশেষ থেকে ঠিক এরকমই একটি কাপ অবিকৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

    মাইসেনীয়ার রাজা ১২৬০ সালে যখন এই ঘুঘুর নকশা-সম্বলিত কাপ ব্যবহার করছিলেন, তখন থেবেস, অ্যাথেন্স ও পাইলোস তাদের শহরগুলোকে প্রাচীরে ঘেরা ছোট ছোট রাজত্বে পরিণত করে নিয়েছিল। এই শহরগুলো সড়ক দিয়ে সংযুক্ত ছিল, যেগুলোর ওপর দিয়ে রথ চলতে পারত। হয়তো কোনো এক কালে নসোস শাসন করতেন মাইসেনীয় শাসকরা, তবে ১৩৫০ সাল নাগাদ এ শহরটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। মাইসেনী শহর এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় অংশটির দখল নিয়ে নিল। থেবেস, পাইলোস ও এথেন্সও পিছিয়ে থাকেনি। পাইলোসের রাজার অধীনে এত বেশি ভূখণ্ড ছিল যে তিনি তার পুরো রাজ্যকে ১৬টি জেলায় ভাগ করে নেন। প্রতি জেলার একজন করে গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নরের নিয়োগ দেন তিনি, এবং তাদের কাছ থেকে নিয়মিত খাজনা আদায় করার প্রক্রিয়া চালু করেন। এই খাজনা পরিশোধ করতে হত ব্রোঞ্জে। এই জেলাগুলো হিট্টিট ও মিশরীয়দের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল। ফলে এই দুই জাতির কেউই গ্রিক উপদ্বীপের শহরগুলো দখলের চেষ্টা চালায়নি। হিট্টিটরা নাবিক হিসেবে একেবারেই পটু ছিল না। মিশরীয়রা নীলনদে নৌকা চালাতে অভ্যস্ত হলেও তারা সমুদ্রকে ঘৃণা করত।

    মাইসেনীয় শহরগুলোর সঙ্গে ট্রোজানদের যুদ্ধ কীভাবে বেধেছিল, তা পরিষ্কার নয়। হয়তোবা সেটি হোমারের বর্ণনার মতো কোনো বন্দি রাজকন্যাকে নিয়েই হয়েছিল। সে আমলে সারা বিশ্বজুড়ে কূটনীতিক কারণে অনেক বিয়ে-শাদি হত এবং এ-ধরনের সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে খুব স্পর্শকাতর আলোচনা হত। সাধারণত নিম্নক্ষমতার রাজ্য থেকে রাজকন্যাদের নিয়ে আসা হত, আর ক্ষমতাধর রাজ্যের পুরুষরা তাদের ক্ষমতার নিদর্শন রাখতে তাদের বিয়ে করতেন।

    পরবর্তীতে হেরোডোটাস তার লেখায় হেলেনকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার বর্ণনা দেন। খলনায়ক হিসেবে প্রিয়ামের কথা বলেন তিনি। তার দাবি, নিরপেক্ষ একটি উৎস থেকে এ গল্প শুনেছেন। পারস্যের বাসিন্দারা হেরোডোটাসকে এই গল্প শোনান। তবে তাদের মতে, গ্রিকরা অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।

    প্রাচীন পারস্যবাসীরা একজন নারীকে অপহরণ করাকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করতেন, তবে একইসঙ্গে তারা এটাও দাবি করতেন যে এ- ধরনের ঘটনায় বেশি প্রতিক্রিয়া দেখানোর বা প্রতিশোধ নেওয়ার কিছু নেই, বিশেষত অপহরণের ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর! তাদের মতে, এসবকে পাত্তা দেওয়ারই কিছু নেই, কেননা এটা খুবই পরিষ্কার যে-কোনো নারীকে অপহরণ করার অর্থ হচ্ছে, এতে তারও সায় ছিল। স্বেচ্ছায় ধরা না দিলে কোনো নারীকেই অপহরণ করা সম্ভব নয়;—এমনটাই ভাবতেন প্রাচীন পারস্যবাসীরা, যারা আধুনিক যুগে ইরানী হিসেবে পরিচিতি পান।

    নারীদের সম্পর্কে এত উচ্চ(!) ধারণা নিয়ে পারস্যের মানুষ কীভাবে চলতেন, সে-প্রসঙ্গে লিখতে যেয়ে হেরোডোটাস গ্রিক ও পারস্যবাসীদের মধ্যে বৈরী সম্পর্কের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন।

    তার ভাষায়, এক নারীর কারণে গ্রিকরা একটি বড় আকারের সেনাবাহিনী গঠন করল এবং তারপর এশিয়ায় আক্রমণ চালাল। তারা প্রিয়াম ও তার বাহিনীকে ধ্বংস করল। এরপর থেকে পারস্যবাসীরা গ্রিকদের শত্রু হিসেবে বিবেচনা করতে শুরু করল। তারা ‘ইলিয়ামের’ (ট্রয় শহরের গ্রিক নাম) পতনের পর থেকে এই বৈরীতার দিনক্ষণ নির্ধারণ করতে লাগল।

    এটা আরও একটি অ্যানাক্রোনিসম (পরের কোনো ঘটনাকে আগে ঘটেছে বলে বর্ণনা দেওয়া), কারণ ট্রয় যখন লুটপাটের মধ্যদিয়ে যায়, তখনও পারস্য রাজ্যের গোড়াপত্তন ঘটেনি। তারপরেও, এটুকু নিশ্চিতভাবে বলা যায়, গ্রিক উপদ্বীপের শহরগুলোর সঙ্গে এশিয়া মাইনরের বিশেষ ঘৃণার সম্পর্ক ছিল, এবং তা দীর্ঘদিন ধরে বজায় থেকেছে। আরেক ইতিহাসবিদ রবার্ট গ্রেভসও ধারণা করেন, অপহরণের ঘটনাটি সত্য ছিল। কিন্তু এর পেছনে কারণ ছিল ট্রোজানদের ভূমিতে মাইসেনীয়দের হামলার প্রতিশোধ নেওয়া। হেলেনকে অপহরণ করায় নতুন কোনো বৈরীতা তৈরি হয়নি, বহুবছর ধরে চলতে থাকা পুরনো বিবাদকে এই ঘটনা আরও উসকে দেয়।

    ঘটনার সূত্রপাত যেভাবেই হোক না কেন, মাইসেনীয়রা এই সংঘর্ষে জয়লাভ করে এবং ট্রয়ের পতন হয়। তবে অল্পদিনের মধ্যে মাইসেনীয়দের জীবনে ছন্দপতন ঘটে। তাদের শহরগুলোর আকার ছোট হতে শুরু করে। দেশের জনগণ দুর্দশায় আক্রান্ত হয় এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতিরও অবনতি ঘটে।

    খুব সম্ভবত আক্রমণ শুরুর অনেক আগে থেকেই এই পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল। থুসিদিদেস জানান, যুদ্ধ অনেক বছর ধরে চলেছিল, কারণ মাইসেনীয় আক্রমণকারীদের যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ ছিল না। তাদের খাবার ফুরিয়ে গেছিল, যার ফলে তারা যুদ্ধ থামিয়ে চাষবাসে মন দেয় এবং এইজিয়ান অঞ্চলে জলদস্যুদের মতো হামলা চালিয়ে রসদ জোগাড় করতে বাধ্য হয়।

    ট্রয়ের যুদ্ধের কারণে তাদের পরিস্থিতির আরও দ্রুত অবনতি হতে শুরু করে। ওডিসিতে আমরা জানতে পারি, ট্রয়ের যুদ্ধ এমন এক সংগ্রাম ছিল, যেখানে জয়ী ও পরাজিত, উভয় পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অডিসির পুরো সুরটাই দুঃখে ভরা। পাইলোসের রাজা নেস্টরের ভাষায়, মাইসেনীয়রা জয়ী হলেও তাদের উপাখ্যানটি ছিল বিষাদের।

    নেস্টর বলেন, তাদের ভূমিতে আমরা যে দুঃখ ও কষ্ট সহ্য করেছি, এটি তারই গল্প। আমাদের সেরা যোদ্ধারা যুদ্ধের উদ্দামতায় প্রাণ হারিয়েছেন এবং অনেকে অসুস্থ হয়েছেন। তারা যেমন কষ্ট সহ্য করেছেন, তেমনি আমরাও দুর্দশায় পড়েছি। প্রিয়ামের শহরে লুটপাট চালিয়ে আমরা যখন জাহাজ নিয়ে দেশের উদ্দেশে রওনা হলাম, এমনকি তখনও, জিউস (বজ্রদেবতা) আমাদের জন্য বিপদসংকুল ভবিষ্যৎ তৈরি করেছিলেন। মাইসেনীয় বীরেরা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বাড়িতে ফিরলেন। এসে দেখলেন, তাদের উত্তরসূরিদের হত্যা করা হয়েছে, অভিজাত বংশের লোকেরা তাদের সম্পদ ও শস্য লুটে নিয়েছে এবং তাদের স্ত্রীদের অন্যেরা নিজের করে নিয়েছে।

    থুসিদিদেস আমাদেরকে আরও জানান, দীর্ঘদিন পর ‘মাইসেনীয় বীররাত দেশে ফিরে আসায় দেশের বিভিন্ন অংশে অস্থিতিশীলতা ও বিদ্রোহের সূত্রপাত ঘটে। তুমুল গোলযোগের মাঝে মাইসেনীয়দের গর্বিত যুদ্ধজয় চাপা পড়ে যায়, এবং তাদের সভ্যতার সূর্যও ধীরে ধীরে অস্তমিত হতে শুরু করে।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleপদ্মজা – ইলমা বেহরোজ
    Next Article পৃথিবীর ইতিহাস ১ – সুসান ওয়াইজ বাউয়ার

    Related Articles

    ইশতিয়াক খান

    পৃথিবীর ইতিহাস ১ – সুসান ওয়াইজ বাউয়ার

    July 11, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.