Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    কাঙাল মালসাট – নবারুণ ভট্টাচার্য

    September 1, 2025

    লুব্ধক – নবারুণ ভট্টাচার্য

    September 1, 2025

    হারবার্ট – নবারুণ ভট্টাচার্য

    September 1, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    পৃথিবীর সেরা ভৌতিক গল্প – অনীশ দাস অপু

    লেখক এক পাতা গল্প330 Mins Read0

    আতশবাজির রাত

    পান্ডা সেভেন, তুমি কি একবার ওক কটেজে যেতে পারবে? ওখানকার একজন বাসিন্দা নালিশ করছেন তাকে কিছু বাচ্চাকাচ্চা নাকি খুব জ্বালাতন করছে।

    রজার।

    কনেস্টবল ওয়ারলেস তার রেডিওটি পুলিশ কারের প্যাসেঞ্জার সিটে ফেলে দিল। চালু করল ইঞ্জিন। সে এতক্ষণ বড় রাস্তার ধারে গাড়ি থামিয়ে কিছু জরুরি কাগজপত্রে চোখ বুলাচ্ছিল। ভোরবেলার শিফটে খুব একটা কোলাহল থাকে না, অন্তত এখন পর্যন্ত তেমন কিছু চোখে পড়েনি, তাই সে গন্তব্যহীনভাবে এদিক সেদিক গাড়ি চালিয়ে বিরক্তই হচ্ছিল। আর এখন, যে মুহূর্তে সে গাড়ি থামিয়ে, কাগজপত্র বের করে কলমটা হাতে নিয়েছে, বেজে উঠল রেডিও।

    ওক কটেজ হাফএকর লেনে। জায়গাটা ভালোই চেনা আছে ওয়ালেসের। ওদিকে শিল্প কারখানা গড়ে ওঠার আগে কৃষিকাজ হতো। বেশ কিছু কুটির তৈরি করা হয়েছিল। তবে সে সব কটেজের বেশিরভাগ ভেঙে কৃষিজমিতে আধুনিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। দুএকটি যে ভগ্নদশা নিয়ে এখনও টিকে রয়েছে তারই একটি ওক কটেজ। ওক মিডো নামে মস্ত একটা মাঠের পাশেই জরাজীর্ণ কুটিরখানা।

    গাড়ি চালাতে চালাতে ওয়ালেসের চোখে পড়ল পোলাপান লাকড়ি জোগাড় করছে। এক মিডোতে জ্বালানি কাঠের অভাব নেই। আর পাঁচ নভেম্বর এক সপ্তাহ পরেই। বাচ্চাদেরকে দেখা গেল সব জায়গায়। কেউ লাকড়ি আনছে, কেউ বা পুরানো কার্ড বোর্ডের বাক্স সংগ্রহে ব্যস্ত। এসব জিনিসপত্রের বিশাল স্তূপ গড়ে তুলছে তারা মাঠের মাঝখানে।

    হাফএকর লেনে মোড় নিল ওয়ালেস। পাশ কাটাল আধুনিক স্থাপত্যের কয়েকটি বাড়িঘর। সবুজ রঙের বিরাট ঝোঁপের ধারে থামাল গাড়ি। এ ঝোঁপটি বিরাট ঝোঁপের ধারে থামাল গাড়ি। এ ঝোঁপটি ওক কটেজকে পথচারীদের নজর থেকে আড়াল করে রেখেছে। সে কাঠের পুরানো একটি গেট খুলল কাঁচকোচ শব্দে এবং নিজেকে আবিষ্কার করল অন্য এক ভুবনে।

    সামনের বাগানের ঘাস কোমর ছুঁয়েছে, তাতে আগাছা ভর্তি। ঝোঁপঝাড়গুলো বাড়িটিকে বাইরের পৃথিবী থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে, এমনকী গাড়ি ঘোড়ার শব্দও শোনা যায় দূরাগত এবং ক্ষীণ।

    শান্তিময় এলাকা, মনে মনে বলল পুলিশম্যান, ভাঙা পাথর বেছানো পথ ধরে কদম বাড়াল। দরজার কড়া নাড়াল। বহুদিন রঙ করা হয়নি দরজায়।

    এক মুহূর্ত চুপচাপ, তারপর খসখস আওয়াজ। কেউ হেঁটে আসছে বাড়ির ভেতর থেকে। এ সেকেন্ড পরে ফটকের সেই ক্যাচক্যাচ শব্দ তুলে অল্প ফাঁক হলো কপাট।

    ডাইনি। প্রথম দর্শনে তাই মনে হলো কনেস্টবলের। তার সামনে দাঁড়ানো বৃদ্ধা খুব একটা লম্বা নন, জরাগ্রস্ত চেহারার, তবে যেভাবে ঝুঁকে আছেন এবং অসংখ্য বলিরেখায় কুঞ্চিত মুখ দেখে ছেলেবেলার ছবির বইয়ের ডাইনির সঙ্গে একদম মিলে গেল। এবং রূপকথার ডাইনির মতো এরও পরনে কালো পোশাক।

    ওহ, আসুন, অফিসার। বৃদ্ধা পেছনে সরে নিয়ে পুরোপুরি মেলে ধরলেন দরজা। গলার স্বরও, যেমনটি আশা করেছিল ওয়ালেস, খনখনে এবং কর্কশ।

    ধন্যবাদ, বাড়িতে ঢুকল ওয়ালেস।

    আপনি এত তাড়াতাড়ি চলে আসবেন ভাবিনি, ওকে নিয়ে বাসিগন্ধযুক্ত হলওয়ে ধরে হাঁটতে হাঁটতে বললেন তিনি। বাড়ির পেছন দিকের একটি কামরায় প্রবেশ করলেন। ওদেরকে আপনি ধরতে পারবেন।

    ওদেরকে ধরতে পারব?

    পোলাপানগুলো, জবাব দিলেন বৃদ্ধা। আমি তো ফোনে বলেছি। স্থানীয় বাচ্চাকাচ্চারা যখন তখন এসে আমার পেছনের বাগানে হামলা করে, বাড়িতে ঢুকে পড়ে। ওরা ওখানে খেলা করুক তাতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু ওরা বোনফায়ারের জন্য কাঠকুটো সংগ্রহ করতে লেগেছে।

    গাছপালা কেটে ফেলছে? জিজ্ঞেস করল ওয়ালেস। মাথা নাড়লেন বৃদ্ধা।

    আমার পুরানো গোলাঘরের সমস্ত লাকড়ি ওরা নিয়ে যাচ্ছে। জবাব দিলেন তিনি। ওই যে দেখুন। তিনি কাঠের তৈরি বিরাট একটি কাঠামোর দিকে ইঙ্গিত করলেন আঙুল তুলে। এ ঘরের জানালা দিয়ে দেখা যাচ্ছে। গোলাঘরের অর্ধেকটা ঢাকা পড়েছে গাছপালা আর লম্বা ঝোঁপঝাড়ের আড়ালে।

    কান খাড়া করলেই ওদের কথা শুনতে পাবেন। আগুন জ্বালাবার জন্য ওরা ওখানে ঢুকে লাকড়ি নিয়ে যাচ্ছে। তা নিয়েও আমার মাথাব্যথা নেই। যা লাকড়ি লাগে নিয়ে যাক না কিন্তু আমি উদ্বিগ্ন গোলাবাড়িটি বিপজ্জনক বলে। ওটা বেশ কয়েক বছর ধরেই ভেঙে পড়ছে। পুরো ঘরটা যদি ওদের মাথার ওপর হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে তাহলে আমি নিজেকে কোনোদিন ক্ষমা করতে পারব না।

    আপনি চাইছেন ওদেরকে যেন আমি কষে একটা ধমক দিই? বলল ওয়ালেস।

    যদি পারেন তো খুব ভালো হয়, প্রত্যুত্তর এল।

    বাড়ির পেছন দিক দিয়ে যাওয়ার কোনো রাস্তা আছে?

    বৃদ্ধা কিচেনে ঢুকে খিড়কির দোর খুললেন। ওয়ালেস ঝোঁপঝাড়ে ভরা বাগানে উঁকি দিল।

    দেখবেন! ঝাড়তে উল্টে যেন পড়ে না যান!

    ওয়ালেস দরজা থেকে অর্ধেকটা শরীর বের করেছে, এমন সময় প্রতিবন্ধকতাটি চোখে পড়ল। মুখ টিপে হাসল সে। বৃদ্ধাকে প্রথম দর্শনের অনুভূতির সঙ্গে ঝাড়ুর সংযোগটি বেশ খাপে খাপ মিলে যাচ্ছে। ঝাড়র হাতলটি লম্বা কাঠের, শলাগুলো রশি দিয়ে বাঁধা।

    ধন্যবাদ, সে ঝাড় ডিঙিয়ে ঝোঁপঝাড়ের জগতে পা বাড়াল। রেডিওর ভলুম কমিয়ে দিল একদম। গোলাঘরের দিকে এগোতে বাচ্চাদের গলার আওয়াজ শুনতে পেল। হো হো হিহি হাসির শব্দ। হঠাৎ কান ফাটানো শব্দে লাকড়ির বড় একটা স্তূপ দুড়ুম করে পড়ল মাটিতে।

    এটা দিয়ে দারুণ আগুন জ্বালানো যাবে। আমরা এটাকে…

    ওয়ালেস গোলাবাড়ির দরজা দিয়ে ঢুকে পড়ল ভেতরে।

    ওরা পাঁচজন। তার দিকে পেছন ফিরে আছে। কারোরই বয়স দশ এগারোর বেশি হবে না। ওদের সমস্ত মনোযোগ ষষ্ঠ ছেলেটির দিকে, সে লাকড়ির একটি স্তূপ বাঁধছে রশি দিয়ে।

    হচ্ছেটা কী এখানে? হাউ করে উঠল ওয়ালেস।

    চরকির মতো ঘুরল বাচ্চাগুলো এবং উর্দিধারী ওয়ালেসকে দেখে জায়গায় জমে গেল। সব কটার চেহারায় অপরাধীর ছাপ। কাঠ বিছানো মেঝেতে পা ফেলে ওদের দিকে এগিয়ে গেল ওয়ালেস। তাকাল ছাদের দিকে। নিঃসন্দেহে বিপজ্জনক অবস্থা। বড় বড় বিমগুলো ঝুলছে। যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে।

    তো? কঠোর গলায় বলল ওয়ালেস। এখানে কী করছ তোমরা?

    আমরা কাঠকুটো জোগাড় করছিলাম, মিস্টার, বলল একটা বাচ্চা।

    তোমরা অনুপ্রবেশ করেছ, বলল ওয়ালেস। আশা করল অনুপ্রবেশ কথার অর্থ বাচ্চাগুলো বুঝতে পারবে। অবশ্য অনুপ্রবেশ নিয়ে বাচ্চাদের কখনো মাথা ব্যথা থাকে না, গোলাবাড়িটি খুবই বিপজ্জনক দশায় রয়েছে তা বুঝিয়ে বললেও এরা তা গ্রাহ্য করবে কিনা সন্দেহ। সে কটমট করে ওদের দিকে তাকিয়ে রইল। হয়তো ওর অগ্নিদৃষ্টি দেখে ওরা ভয় পাবে।

    হঠাৎ করেই বুদ্ধিটি মাথায় এল ওয়ালেসের। যদিও সন্দেহ জাগল মনে এতে কাজ হবে কিনা ভেবে। তার কথা ওরা বিশ্বাস নাও করতে পারে। কারণ আজকালকার বাচ্চারা কম বয়সেই পেকে যাচ্ছে।

    তোমাদের জায়গায় আমি হলে এ বাড়ির ত্রিসীমানাতেও ঘেঁষতাম না, গম্ভীর গলায় বলল সে।

    ওরা কথা শুনে আগ্রহের ছাপ পড়ল বাচ্চাগুলোর চোখে মুখে।

    কেন ঘেঁষতেন না? একটু আগে যে ছেলেটি কথা বলেছিল সে জিজ্ঞেস করল।

    ওই বৃদ্ধা মহিলা, বাড়ির দিকে মাথা ঝাঁকিয়ে ইঙ্গিত করল ওয়ালেস। উনি কে তোমরা নিশ্চয় জানো, জানো না?

    উনি কে? সমস্বরে উচ্চারিত হলো প্রশ্নটি।

    উনি একজন ডাইনি, সবার দিকে কটমটিয়ে তাকাল ওয়ালেস দেখতে কারও চেহারায় অবিশ্বাসের ছাপ ফুটে ওঠে কিনা। নাহ, সেরকম কোনো লক্ষণ তো লক্ষ করা যাচ্ছে না। বেশ, বেশ। তিনি পছন্দ করেন না তাঁর বাগানে কেউ আসুক। তাই তোমাদেরকে আমি সাবধান করে দিতে এসেছি। তিনি বলেছেন, আবার যদি তিনি তোমাদেরকে এদিকে আসতে দেখেন… থেমে গিয়ে মাথা নাড়ল সে। ঈশ্বর জানেন কী ঘটবে?

    ডাইনি বলে কিছু নেই, যে ছেলেটি লাকড়ির বোঝা রশি দিয়ে বাঁধছিল সে চ্যালেঞ্জের সুরে বলল।

    বিশ্বাসীদের দলে কেউ না কেউ অবিশ্বাসী থাকেই, ভাবল ওয়ালেস। ভাবছে কী জবাব দেয়া যায়। তবে তার সমস্যার সমাধান করে দিল বিশ্বাসীদের একজন।

    অবশ্যই ডাইনি আছে, বলল একটি ছেলে। আমার ভাই ডাইনিদের নিয়ে লেখা বই পড়েছে এবং গত রোববার খবরের কাগজে ছাপা হয়েছে এই ইংল্যান্ডেই ডাইনি আছে।

    তাই নাকি? চ্যালেঞ্জারের গলার স্বরে সন্দেহ।

    তোমার বন্ধু ঠিকই বলেছে, বলল ওয়ালেস। কাজেই তোমাদের এখানে আবার আসা উচিত হবে না।

    আপনি ওকে গ্রেপ্তার করতে পারেন না? জানতে চাইল চ্যালেঞ্জার। ডাইনি হিসেবে ধরে নিয়ে গিয়ে জেলে পুরে দিলেন?

    ওঁকে গ্রেপ্তার করতে যাব আমি? বলল ওয়ালেস। তাহলে তিনি হয়তো আমার গাড়িটাকে ব্যাঙ বা অন্য কিছু বানিয়ে দেবেন।

    সবাই চুপ হয়ে গেল। তাহলে যাও সবাই, বলল ওয়ালেস। কেটে পড়ো এখন।

    গোলাঘর থেকে সারি বেঁধে বেরিয়ে গেল ছেলের দল।

    তোমাদেরকে বলেছিলাম, একজনকে বলতে শুনল ওয়ালেস। ওই ঝাড়টা দেখেই আমার সন্দেহ হয়েছিল মহিলা ডাইনি। কিন্তু তখন তোমরা আমরা কথা বিশ্বাস করনি। এখন?

    আপন মনে হাসল পুলিশম্যান, পা বাড়াল বৃদ্ধার বাড়ির দিকে। চলে গেছে ওরা? জিজ্ঞেস করলেন তিনি।

    হ্যাঁ, জবাব দিল ওয়ালেস। মনে হয় না আর আপনাকে জ্বালাতন করবে।

    আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, বললেন বৃদ্ধা। এক কাপ চা দিই? সঙ্গে এক পিস কেক?

    চা খেতে কোনো আপত্তি নেই আমার।

    .

    চা আর কেক খেয়ে আধঘণ্টা পরে ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে এল ওয়ালেস। বৃদ্ধাকে কথা দিল ফোন করে খোঁজখবর নেবে জানতে ছেলেপিলেরা তাঁকে আবার বিরক্ত করছে কিনা। ভাবল ওদেরকে কী বলে ভাগিয়ে দিয়েছে যদি জানতেন বৃদ্ধা তাহলে তাঁর প্রতিক্রিয়া কী হতো!

    সে কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করল রেডিওতে।

    ওক কটেজ থেকে বাচ্চাগুলোকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে, বাড়ির বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয়েছে।

    .

    নভেম্বরের পাঁচ তারিখ বিকেলের শিফটে ডিউটি পড়ল ওয়ালেসের। বেলা তিনটা থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত। বিশেষ এই দিনটিতে এরকম শিফটে কাজ করতে মোটেই পছন্দ করে না সে। আজকের দিনটাতে সবাই বোন ফায়ার নিয়ে উন্মাদ হয়ে উঠবে, যথেচ্ছভাবে আতশবাজি জ্বালাবে… গত বছর এক পাগলা দুধের বোতলে পেট্রল ভরে বোনফায়ার করতে গিয়ে কেলেংকারির একশেষ করেছিল। ট্ৰেল ভর্তি বোতল বিস্ফোরিত হয়ে সেবার চারজন লোক আহত হয়।

    রাতে নটা নাগাদ টহল দিতে দিতে বেজায় ক্লান্ত হয়ে পড়ল ওয়ালেস। সে চারটে বোনায়ারের আগুন নেভাতে গিয়েছিল। দমকল বাহিনীকে খবর দিলে তারা এসে আগুন নেভায়। ওয়ালেসের ইউনিফর্ম থেকে এখন বিশ্রী ধোঁয়ার গন্ধ আসছে। আগুন জ্বালানো হয়েছিল বাড়িঘরের খুব কাছে। একটি বাড়িতে আগুন ধরলে আর দেখতে হতো না। পাশাপাশি সবগুলো বাড়িকে ছোবল দিত সর্বনাশা আগুনের জিভ। তাকে লোকজন নালিশ করেছে পোলাপান নাকি আতশবাজি জ্বালিয়ে তাদের লেটারবক্সে ছুঁড়ে মেরেছে।

    বড় রাস্তার পাশে গাড়িটি দাঁড় করিয়ে একটি সিগারেট ধরাল ওয়ালেস। এমন সময় কড়মড় করে জ্যান্ত হয়ে উঠল রেডিও।

    পান্ডা সেভেন?

    বলো, ক্লান্ত গলায় সাড়া দিল ওয়ালেস।

    একবার ওক কটেজে যেতে পারবে? একজন ফোন করে বলল ওখানে নাকি কী একটা গোলমাল হয়েছে।

    রজার।

    দ্রুত ওক কটেজের উদ্দেশে গাড়ি ছোটাল ওয়ালেস। ভাবছে বৃদ্ধা মহিলা ঠিক আছেন কিনা। ছেলের দলকে সেদিন বুঝিয়ে সুঝিয়ে ওখান থেকে সরিয়ে দেয়ার পরে সে বার কয়েক ও বাড়িতে গেছে। প্রতিবারই চা এবং কেক সহযোগে আপ্যায়িত হয়েছে ওয়ালেস। বৃদ্ধা জানিয়েছেন দুষ্টু ছেলের দল সেদিনের পরে তাঁকে আর বিরক্ত করেনি।

    ওক কটেজের বাইরে গাড়ি থামাল ওয়ালেস। এক মুহূর্ত দাঁড়িয়ে থাকল উৎকর্ণ হয়ে। নাহ্, অস্বাভাবিক কিছু শোনা গেল না। শুধু ওক মিডো বা বড় ওই মাঠটি থেকে বাচ্চাদের চিৎকার চেঁচামেচি ভেসে আসছে। তারা বোনায়ার আনজাম করছে।

    কটেজের পথ ধরে হেঁটে গিয়ে দরজার কড়া নাড়ল ওয়ালেস। হয়তো বৃদ্ধা এমন কিছু শুনেছেন যেজন্য পুলিশে ফোন করেছিলেন। ওয়ালেসকে দেখলে খুশিই হবেন তিনি। আর এ মুহূর্তে এক কাপ চা খেতে পেলে মন্দ হয় না।

    কিন্তু দরজায় কড়া নাড়ার পরেও কোনো সাড়া মিলল না। ওয়ালেস বাড়ির পেছন দিকটাতে চলে এল। খিড়কির দুয়ার খোলা এবং পেছনের ঘরে আলো জ্বলছে।

    জানালার আলোয় সে দেখতে পেল পেছনের বাগানের ঘাসগুলো সব দোমড়ানো মোচড়ানো। টর্চ জ্বেলে নিয়ে ট্রেইল ধরে এগোল ওয়ালেস। দেখে মনে হচ্ছে একদল বুনো জন্তু দাপিয়ে বেড়িয়েছে ঝোঁপের জঙ্গলে, সব লন্ডভন্ড করে ছেড়েছে। মাটির সঙ্গে প্রায় মিশে আছে বেশ কিছু ঝোঁপঝাড়।

    ট্রেইলের সমাপ্তি ঘটেছে একটি মস্ত ঝোঁপের ধারে। ঝোঁপ পার হতেই ওয়ালেস দেখে সে ওক মিডোতে হাজির হয়ে গেছে। দাউদাউ জ্বলছে বোনায়ার বা বহূৎসব। দূর থেকে কতগুলো কালো কালো ছায়ামূর্তি দেখা গেল আগুনটাকে ঘিরে বৃত্তাকারে ছোটাছুটি করছে। কালো আকাশে হুউশ করে উড়ে গেল একটা হাওয়াই রকেট, আলোর ঝর্ণাধারা ছড়িয়ে দিল।

    ওয়ালেস সামনে কদম বাড়াতে গিয়ে কীসে যেন হোঁচট খেল।

    টর্চের আলোয় একটি মনুষ্য মূর্তি দেখতে পেল ওয়ালেস। যেনতেনভাবে তৈরি মূর্তি। মুখটা আঁকা হয়েছে কাঠকয়লা দিয়ে।

    ওরা এটাকে পোড়াবে না?

    অ্যাই, মিস্টার, ওর পাশ থেকে একটা বাচ্চা কণ্ঠ তীক্ষ্ণ সুরে বলে উঠল। ওয়ালেস তাকিয়ে দেখে এ ছেলেটিকে সে গোলাঘরে দেখেছিল। দারুণ, না?

    হ্যাঁ, দারুণ বানিয়েছ, সায় দেয়ার ভঙ্গিতে মাথা ঝাঁকাল ওয়ালেস। তোমরা এই মূর্তিটাকে পোড়াবে না?

    আমরা এর চেয়েও ভাল জিনিস পেয়ে গেছি। ওই দেখুন।

    বিশাল অগ্নিকুণ্ডের দিকে চোখ কুঁচকে তাকাল ওয়ালেস। দাউ দাউ অগ্নিশিখার মাঝে কোনো মতে একটা মানুষের কাঠামো বোঝা যায়। আগুনের ছোবল খেয়ে ওটা যেন নড়াচড়াও করছে।

    এখন আর চিন্তার কিছু নেই, ওয়ালেসের পাশে দাঁড়ানো বাচ্চাটি ব্যগ্র কণ্ঠে বলল। আমরা এখন নিরাপদ। আমার ভাইয়ের বইতে পড়েছি কী করতে হবে– শুধু জোন অব আর্কের মতো…

    জোন অব আর্ক?

    ওই বিরাট কাঠের ঘোঁজে?

    ওয়ালেস আগুনের কাছে এগিয়ে গেল। দূর থেকে মনে হচ্ছিল অগ্নিশিখা মূর্তিটাকে নড়াচড়া করাচ্ছে কিন্তু এখন কাছে এসে দেখতে পাচ্ছে ওটা সত্যি নড়ছে, তীব্র আক্ষেপে মোচড় খাচ্ছে কিন্তু এ হতে পারে

    — ও অসুস্থ বোধ করল, ঝিমঝিম করছে মাথা।

    গভীর দম নিল ওয়ালেস ঝিমঝিমানি থেকে রক্ষা পেতে কিন্তু গা ভীষণ গুলিয়ে উঠল মাংস পোড়র গন্ধে।

    অগ্নিশিখার ক্রমাগত পটপট আওয়াজ ছাপিয়ে কানে এল বাচ্চাগুলোর গানের ছন্দে বলা কথাগুলো।

    আমরা ডাইনিটাকে পুড়িয়ে মেরেছি, আমরা ডাইনিটাকে পুড়িয়ে মেরেছি…

    –সেন্ট জন বার্ড

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleঅশুভ ছায়া – অনীশ দাস অপু
    Next Article ভূত প্রেত রক্তচোষা – অনীশ দাস অপু

    Related Articles

    তসলিমা নাসরিন

    সেইসব অন্ধকার – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    আমার প্রতিবাদের ভাষা – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    অগ্রন্থিত লেখার সংকলন – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    বন্দিনী – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    নির্বাসন – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    নেই, কিছু নেই – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    কাঙাল মালসাট – নবারুণ ভট্টাচার্য

    September 1, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    কাঙাল মালসাট – নবারুণ ভট্টাচার্য

    September 1, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    কাঙাল মালসাট – নবারুণ ভট্টাচার্য

    September 1, 2025

    লুব্ধক – নবারুণ ভট্টাচার্য

    September 1, 2025

    হারবার্ট – নবারুণ ভট্টাচার্য

    September 1, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.