Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025

    ওডিসি – হোমার

    October 13, 2025

    প্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    October 13, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    পোকা-মাকড় – জগদানন্দ রায়

    জগদানন্দ রায় এক পাতা গল্প239 Mins Read0

    ৬.২.৫ ঝিল্লীপক্ষ পতঙ্গ : মৌমাছি

    মৌমাছি

    এইবার তোমাদিগকে মৌমাছির কথা বলিব। ইহারা বোল্‌তা-জাতীয় পতঙ্গ। বোল্‌তাদের মত ইহাদের চারিখানি ডানা, ছয়খানি পা, মাথার উপরে তিনটা ছোট চোখ, এবং দুই পাশে দুইটা বড় চোখ আছে। কিন্তু ইহাদের মুখ ঠিক বোল্‌তাদের মুখের মত নয় এবং গায়ের রঙ্ বোল্‌তার রঙের মত উজ্জ্বল নয়।

    এখানে মৌমাছির মুখের একটা ছবি দিলাম। দেখ, মুখে এক জোড়া দাঁত আছে। ইহা দিয়া মৌমাছিরা কাটাকুটির ও চিবাইবার কাজ চালায়। ইহার নীচে যে আঙুলের মত অংশ রহিয়াছে তাহা দিয়া ইহারা খাবার আঁক্‌ড়াইয়া ধরে। সকলের নীচে শুঁড়ের মত জিনিসটা ইহাদের জিভ্। মৌমাছির ওষ্ঠ লম্বা হইয়া এই জিভের সৃষ্টি করিয়াছে। সুতরাং দেখা যাইতেছে, বোল্‌তার মুখের চেয়ে মৌমাছির মুখ কতকটা উন্নত। ইহাদের মাজা বোল্‌তার মাজার মত সরু নয়।

    মৌমাছির সর্ব্বাঙ্গ—বিশেষতঃ পেটের তলার আগা-গোড়া বুরুসের মত ছোট লোমে ঢাকা থাকে। ফুলে মধু থাইতে বসিলে ঐ লোম দিয়া উহারা ফুলের রেণু সংগ্রহ করে। কুকুর ও ঘোড়া ছাই-গাদা ও ধূলায় গড়াগড়ি দিয়া কি-রকমে গায়ে ধূলামাটি মাথে, তোমরা তাহা নিশ্চয়ই দেখিয়াছ। মৌমাছিরা সুন্দর ফুল দেখিলেই ফুলের কেশরের উপর পড়িয়া লুটাপুটি খায়। ইহাতে উহাদের গায়ে ফুলের রেণু ধূলার মত আট্‌কাইয়া যায়। কিন্তু কুকুর যেমন গা-ঝাড়া দিয়া ধূলা ফেলিয়া দেয়, মৌমাছিরা তাহা করে না। মাথার চুলে ধূলা-বালি বা কাটাকুটা লাগিলে আমরা তাহা বুরুস বা চিরুণী দিয়া ঝাড়িয়া ফেলি। উহারাও সেই রকমে পায়ের-গায়ে-লাগানো চিরুণীর মত কাঁটাগুলি দিয়া সর্ব্বাঙ্গের রেণু ঝাড়িতে আরম্ভ করে, কিন্তু সেগুলিকে ফেলিয়া দেয় না। যেমন এক একটু রেণু জড় হয়, তেমনি তাহারা উহা মুখের মধ্যে জমা করিতে আরম্ভ করে এবং শেষে মুখের লালার সহিত মিশাইয়া তাহা দিয়া ছোট ছোট বড়ি পাকাইতে সুরু করে। বড়ি তৈয়ারি হইলে তাহা আর মুখে রাখে না। মুখ হইতে তাহা প্রথমে সম্মুখের পায়ে, তার পরে মাঝের পায়ে এবং শেষে পিছনের পায়ে চালান করে। এই পা দুটির মাঝামাঝি অংশে লোমে-ঢাকা কৌটার মত দুইটি খাঁজ কাটা থাকে। মৌমাছিরা পিছনের পা হইতে রেণুর বড়িগুলিকে ঐ কৌটায় জড় করিতে আরম্ভ করে।

    ফুলের রেণুর বড়ি পাকাইয়া মৌমাছিরা কি করে, তাহা বোধ হয় তোমরা জান না। উহাই মৌমাছির বাচ্চাদের প্রধান খাদ্য। আমরা ভাত ডাল দুধ খাইয়া বাঁচিয়া থাকি। মৌমাছির বাচ্চারা ফুলের রেণু না খাইলে বাঁচে না। ফুলের রেণুর বড়ির সঙ্গে একটু মধু এবং একটু জল মিশাইয়া মৌমাছিরা বাচ্চাদের জন্য উপাদেয় খাদ্য তৈয়ার করে। দেখ—ইহারা কত সৌখীন্ প্রাণী। ভালো খাবার ভিন্ন অন্য কিছু ইহাদের মুখে ভালোই লাগে না। ইহাদের খাওয়া দাওয়ার আরো অনেক কথা তোমরা পরে জানিতে পারিবে।

    এখানে মৌমাছির পিছনের পায়ের একটা ছবি দিলাম। ছবি দেখিলেই বুঝিবে, ফুলের রেণু রাখিবার জন্য পায়ে কেমন সুন্দর কৌটা রহিয়াছে! মৌমাছির সম্মুখের বা মাঝের পায়ে এই রকম কৌটা থাকে না।

    বোল্‌তার মধ্যে যেমন স্ত্রী, পুরুষ এবং কর্ম্মী এই তিন রকমের পতঙ্গ দেখা যায়, মৌমাছির মধ্যেও ঐ রকম তিনটি পৃথক্ জাতি আছে। এই তিন জাতি প্রাণী একই চাকে বাস করিলেও তাহাদের চেহারা সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের।

    আমরা এখানে কর্ম্মী মাছির ছবি দিলাম। স্ত্রী ও পুরুষ মৌমাছির মুখে লম্বা জিভ্ থাকে না। ইহাদের কেহই মধু সংগ্রহ করিতে বাহির হয় না, এজন্য লম্বা জিভের দরকারও থাকে না। স্ত্রী-মাছিরা একটু লম্বা এবং তাহাদের গায়ের রঙ বেশ উজ্জ্বল, কিন্তু ডানা লম্বা নয়। পুরুষদের শরীর বেশ মোটা ও তাহাদের গায়ে লোমের পরিমাণ যেন বেশি। স্ত্রী ও পুরুষের লেজে হুল থাকে না। স্ত্রীদের লেজে হুলের মত যে একটা অংশ থাকে, তাহা দিয়া উহারা ডিম পাড়ে। মাথায় কিরকমে চোখ লাগানো আছে তাহা দেখিয়াও পুরুষ-স্ত্রী ও কর্ম্মী মৌ-মাছিদের চিনিয়া লওয়া যায়। পুরুষের বড় চোখ দুটি প্রায় গায়ে-গায়ে মাথার খুব উপর দিকে থাকে। কর্ম্মী ও স্ত্রী মাছির চোখ মাথার এত উপর দিকে থাকে না।

    মৌমাছির চাক

    তোমরা নিশ্চয়ই মৌমাছির চাক দেখিয়াছ। যেখানে বেশ আলো বাতাস লাগে, অথচ রৌদ্র বা বৃষ্টির উৎপাত নাই, এমন জায়গায় ইহারা চাক বাঁধে। বাগানের গাছের ডালে বা বাড়ীর বারান্দা বা কড়ি বরগার গায়ে মৌচাক প্রায়ই দেখা যায়। হিমালয় পর্ব্বতের জঙ্গলে বুনো-মৌমাছিরা খুব বড় চাক প্রস্তুত করে। লোকে তাহা ভাঙিয়া মধু সংগ্রহ করে এবং তাহা বিক্রয় করে। তোমরা মৌচাকের সন্ধান পাইলে দূরে দাঁড়াইয়া চাকখানিকে ভালো করিয়া দেখিয়ো। দেখিবে, হাজার হাজার মাছি জটলা পাকাইয়া চাকের উপরে বিজ্-বিজ্ করিতেছে। হয় ত দেখিবে, তাহাদের মধ্যে কতকগুলি একের পায়ে অপরের পা বাধাইয়া শিকলের মত ঝুলিতেছে। খানিক দাঁড়াইয়া থাকিলে দেখিতে পাইবে, হঠাৎ কতকগুলি ভোঁ করিয়া চাক হইতে কোথায় উড়িয়া গেল এবং আবার কতকগুলি হয় ত কোথা হইতে তাড়াতাড়ি উড়িয়া আসিয়া চাকের উপরে বসিল। কিন্তু এত আনাগোনা, এত যাওয়া-আসা এবং এত জটলার মধ্যে মাছিরা পরস্পর বাগড়া-ঝাঁটি বা মারামারি করে না। ইহা খুব আশ্চর্য্যের কথা নয় কি? আমাদের এক একটা সহরে বিশ হাজার বা ত্রিশ হাজার লোক বাস করে, ইহারা পরস্পর কত হানাহানি মারামারি করে, তাহা তোমরা দেখা নাই কি? একজন কিছু টাকা উপার্জ্জন করিলে, আর একজন তাহা চুরি করিবার ফন্দি করে। এই রকমে আমাদের গ্রামে নগরে নানা উৎপাতের সৃষ্টি হয়। ইহা নিবারণ করিবার জন্য কত চৌকিদার ও পুলিশের লোক দিবারাত্রি গলিতে গলিতে ঘুরিয়া বেড়ায় এবং কত আইন করিয়া অপরাধীদিগকে দণ্ড দিতে হয়। এক একটা চাকে কুড়ি বা ত্রিশ হাজার মাছি বাস করে, কিন্তু ইহারা কখনই পরস্পরের উপরে অত্যাচার করে না। ইহা বড়ই আশ্চর্য্য!

    তোমরা হয় ত ভাবিতেছ, মৌমাছিরা খুব কড়া আইন মানিয়া চলে এবং ইহাদের যে রাজা আছে সে-ও বুঝি খুব কড়া; তাই চাকের মধ্যে ঝগ্‌ড়া বা মারামারি হয় না। এই কথাটা খুবই সত্য। চাকের প্রত্যেক মাছিকে খুব কড়া নিয়ম মানিয়াই চলিতে হয়, কিন্তু নিয়মগুলি কেহ ভাঙিতেছে কি না দেখিবার জন্য পাহারা-ওয়ালা নাই। শরীরে যত দিন বল থাকে, তত দিন প্রত্যেকেই আপনার কাজ করিয়া যায়। কাজে লাগাইবার জন্য বা কাজ আদায় করিবার জন্য ইহাদের মধ্যে তাগিদ দিবার কেহ নাই। ইহাদের রাজা বা শাসনকর্ত্তাও নাই। প্রত্যেক চাকে একটিমাত্র স্ত্রী-মাছি থাকে, তাহাকেই মাছিরা রাণী বলিয়া মানে। সকলে মিলিয়া রাণীকে যত্ন করে। কিন্তু সে কখনো কাহাকেও শাসন করে না; শান্ত প্রজাদিগকে শাসন করিবার দরকারও হয় না।

    আমরা এখন মৌচাকের পত্তনের সময় হইতে তাহার শেষ অবস্থা পর্য্যন্ত সকল কথা তোমাদিগকে বলিব।

    কি রকমে নূতন চাকের পত্তন হয়, তাহা বোধ হয় তোমরা দেখ নাই। আমরা অনেক দেখিয়াছি। এক দিন হঠাৎ কোথা হইতে শত শত মাছি ভয়ানক বন্-বন্ শব্দে ঘুরিতে ঘুরিতে, হয় ত বারান্দায়, কড়ি-কাঠে বা বাগানের কোনো গাছের ডালে আাসিয়া বসে। তখন সেখানে চাক থাকে না। কিন্তু তাহারা এমন জটলা করিয়া থাকে যে দেখিলে মনে হয় যেন সকলেই চাকের উপরে বসিয়া আছে। তোমরা যদি এই সময়ে মৌমাছিদিগকে পরীক্ষা কর, তবে হাজার হাজার মাছির মধ্যে কেবল একটিমাত্র স্ত্রী-মাছি দেখিতে পাইবে। পুরুষ-মাছি হয় ত খুঁজিয়াই পাইবে না। সুতরাং বলিতে হয়, আমরা সর্ব্বদা চাকে যে-সকল মাছি দেখিতে পাই, সেগুলির প্রায় সকলেই কর্ম্মী মাছি।

    কর্ম্মী মৌমাছি

    চাকের জায়গা ঠিক হইলেই কর্ম্মী মাছির দল চাক গড়িতে লাগিয়া যায়। বোল্‌তারা কি-রকমে দাঁতে কাঠ গুঁড়া করিয়া কাগজের মত জিনিসে চাক তৈয়ারি করে, তাহা তোমরা শুনিয়াছ। মৌমাছিরা সে-রকম জিনিস চাকে ব্যবহার করে না। ইহাদের চাক মোম দিয়া প্রস্তুত। কিন্তু এই মোম তাহারা অন্য জায়গা হইতে সংগ্রহ করিয়া আনে না; কর্ম্মী মাছিরা নিজেদের দেহেই উহা প্রস্তুত করে। ইহাদের পেটের তলায় যে আংটির মত কঠিন আবরণ থাকে, তাহারি পাশে পাশে মোম জড় হয়। আমাদের গা হইতে যেমন ঘাম বাহির হয়, কৰ্ম্মী মাছিদের শরীর হইতে সেই রকমে মোম বাহির হয়। মধু খাইয়া হজম করিলেই পাত্‌লা আঁইসের মত উহা পেটের তলায় জমে। মাছিরা তাহাই সম্মুখের পা দিয়া খুঁটিয়া খুঁটিয়া মুখে পূরিয়া দেয় এবং দাঁতে চিবাইয়া ও লালার সঙ্গে মিশাইয়া জিনিসটাকে কাদার মত করিয়া ফেলে। ইহা দিয়াই চাকের ভিত পত্তন হয়। যে কর্ম্মীরা ভিত পত্তন করে, তাহারা ঠিক জায়গায় মুখের মোম রাখিয়া উড়িয়া অন্য কাজে চলিয়া যায়। মোম জমা হইয়াছে দেখিলেই আর এক দল কর্ম্মী মাছি দাঁত, মুখ ও পা দিয়া তাহা ছড়াইয়া চাক গড়িতে সুরু করে।

    আমাদের বড় বড় কলকারখানায় কি-রকমে কাজ চলে, তোমরা হয় ত দেখিয়াছ। কুলি-মজুরেরা এলোমেলো ভাবে কাজ করে না। সমস্ত কাজকে ভাগ করিয়া লইয়া এক-এক দল কুলি একএকটা কাজে লাগিয়া যায়। মৌমাছিরাও ঠিক এই রকমে ভাগাভাগি করিয়া চাকের কাজ চালায়। যাহারা মোম তৈয়ারি করে, তাহারা ঐ কাজটি ছাড়া প্রায়ই অন্য কাজ করে না। যাহারা ঘরে মোম বিছাইয়া দেয়, তাহারাও ঐ কাজেই দিবারাত্রি কাটায়। এই রকমে ঘরে ছিদ্র করা, ছিদ্রগুলিকে ঠিক ছয়-কোণা করিয়া গড়িয়া তোলা এবং সেগুলিকে পালিস করা ইত্যাদি সকল কাজই এক-এক দল পৃথক্ কর্ম্মীরা করে। এই রকমে চাকের কাজ খুব শীঘ্রই শেষ হইয়া যায়।

    এখানে মৌচাকের একটা ছবি দিলাম। কর্ম্মী মাছিরা কত কৌশলে চাক তৈয়ার করিয়াছে, ছবিখানি দেখিলেই তোমরা বুঝিতে পারিবে। চাকের প্রত্যেক ছিদ্রটি বোল্‌তার চাকের ছিদ্রের মত ছয়-কোণা।

    চাক প্রস্তুত হইলে কর্ম্মী মাছিদের খুব কাজ বাড়িয়া যায়। তখন খাওয়ার জন্য যাহা দরকার তাহা ছাড়া আরো মধু সংগ্রহ করিবার জন্য তাহারা চেষ্টা করে। উদ্বৃত্ত মধু না খাইয়া মাছিরা তাহা গলার থলিতে বোঝাই করে ও চাকে ফিরিয়া আসে এবং সঙ্গে সঙ্গে পিছনের পায়ের সেই কৌটার মত পাত্রে ফুলের রেণু সংগ্রহ করিয়া আনে। ফুলের রেণুর সহিত মধু মিশাইলে যে কাদার মত জিনিস হয়, ইহাই মাছির বাচ্চাদের খাদ্য। কর্ম্মী মাছিরাই চাকে আসিয়া ঐ দুই দ্রব্য মিশাইয়া বাচ্চাদের খাওয়ায়। এই রকমে খাওয়ানো শেষ হইলে, যে মধু বাকি থাকে, তাহা উহারা চাকের শূন্য ছিদ্রে জমা রাখে। ফুলের টাট্‌কা মধু কি রকম, তাহা বোধ হয় তোমরা দেখিয়াছ। এই মধু জলের মত পাত্‌লা ও পরিষ্কার। এই জিনিসই চাকের ছিদ্রের মধ্যে কিছুদিন থাকিয়া বাদামী রঙের গাঢ় মধু হইয়া দাঁড়ায়। ছিদ্রের মধুর এই পরিবর্ত্তন হইলে কর্ম্মী মাছির মোমের পাত্‌লা ঢাক্‌নি দিয়া ছিদ্রগুলি ঢাকিয়া ফেলে। ইহাই চাকের মাছিদের ভবিষ্যতের খাবার। বর্ষার দিনে যখন টাট্‌কা মধু সংগ্রহ করা যায় না, তখন মাছিরা ঐ-সকল ছোট ছোট ভাণ্ডারের দরজা খুলিয়া খাওয়া-দাওয়া করে।

    কর্ম্মী-মাছি সম্বন্ধে অনেক কথা বলিলাম। ইহা ছাড়া কর্ম্মীদের আরো অনেক কাজ করিতে হয়। ডিম হইতে সদ্য সদ্য যে-সকল বাচ্চা বাহির হয়, তাহারা ফুলের রেণু ও মধু খাইতে পারে না। দুধের মত এক রকম জিনিস ছোট বাচ্চাদের একমাত্র খাদ্য। কর্ম্মী মাছিরাই শরীর হইতে এই দুধ বাহির করিয়া বাচ্চাদের খাওয়ায়। তা ছাড়া মৌ-চাকে বেশি গরম হইলে ডানা নাড়িয়া বাতাস দেওয়া, চাকে বাচ্চা বা বড় মাছি মরিলে সে-গুলিকে ফেলিয়া দেওয়া এবং রাণী যখন ডিম পাড়ে তখন ডিম গুলিকে যত্ন করা—এই সকল কাজ কর্ম্মী মাছিদিগকেই করিতে হয়। রাণী প্রতিদিন হাজার হাজার ডিম প্রসব করে। সুতরাং জোরালো খাবার না খাইলে সে বাঁচে না। কর্ম্মী মাছিরাই নিজের শরীর হইতে দুধ বাহির করিয়া রাণীকে খাওয়ায়।

    যে মাছিদের উপরে এত কাজের ভার তাহাদের কত পরিশ্রম করিতে হয় একবার ভাবিয়া দেখ। এই প্রকার খাটিয়া কর্ম্মী মাছিরা বেশি বাঁচে না,—জন্মের পর প্রায়ই দুই মাসের মধ্যে ইহারা মারা যায়। কিন্তু ইহাতে চাকের কাজের ক্ষতি হয় না। বড় বড় চাকে যেমন প্রতিদিন শত শত কর্ম্মী মারা যায়, তেমনি শত শত নূতন কর্ম্মী জন্মিয়া তাহাদের জায়গায় কাজ চালায়।

    রাণী-মাছি ও পুরুষ-মাছি

    কর্ম্মী মাছিদের কথা বলিতে অনেক সময় কাটিয়া গেল। এখন তোমাদিগকে স্ত্রী-মাছি অর্থাৎ রাণী এবং পুরুষ-মাছির কাজ-কর্ম্মের কথা বলিব। ইহাদের চলাফেরা সকলি বড় মজার।

    চাক প্রস্তুত হইলে রাণী বড় চঞ্চল হইয়া পড়ে এবং এক-একবার চাক ছাড়িয়া পলাইবার চেষ্টা করে। কিন্তু কর্ম্মী মাছিরা সাধ্য-সাধনা করিয়া তাহাকে আট্‌কাইয়া রাখে। শেষে একদিন হঠাৎ সে উড়িয়া পলাইয়া যায় এবং চাকে যে দুই একটি পুরুষ মাছি থাকে, তাহারাও রাণীর পিছনে ছুটিয়া যায়। রাজা রাস্তায় বাহির হইলে যেমন অনেক সিপাহী ও পাহারা-ওয়ালা তাঁহার সঙ্গে চলে, রাণী বেড়াইতে বাহির হইলে তেমনি পুরুষ-মাছিরা তার সঙ্গে যায়। এক ঘন্টার মধ্যে রাণীর বেড়ানো শেষ হয় এবং সে আবার চাকে ফিরিয়া আসে। কিন্তু পুরুষদের আর দেখা পাওয়া যায় না। তাহারা রাণীর সঙ্গে একটু এদিক্ ওদিক্ আনন্দে বেড়াইয়া প্রায়ই মারা যায়।

    ইহার দুই-তিন দিন পরে রাণীর ডিম পাড়িবার সময় উপস্থিত হয়। সময় আসিতেছে বুঝিয়া কর্ম্মী-মাছিরা আগেই চাকে অনেক ঘর তৈয়ার করিয়া রাখে। কয়েকটি কর্ম্মীকে সঙ্গে লইয়া রাণী প্রত্যেক ছিদ্রে এক-একটি ডিম প্রসব করিতে থাকে। এই রকমে প্রতিদিন প্রায় দুই-তিন শত ছিদ্রে ডিম জমা হয়।

    মৌমাছির ডিম ফুটিতে দেরি হয় না। দুই তিন দিনের মধ্যেই ছিদ্রের ডিম হইতে এক একটি শুঁয়ো-পোকার মত বাচ্চা বাহির হয়। এই সময়ে কর্ম্মীদের খুব পরিশ্রম করিতে হয়। কিন্তু ডিম প্রসব করিয়া রাণী তাহার সন্তানদের দিকে ফিরিয়াও চায় না। কর্ম্মী-মাছিরাই বাচ্চাদের পালন করে। ফুলের রেণু ও মধু মিশাইয়া যে মিষ্ট খাদ্য তৈয়ারি করা হয়, তাহা উহারাই প্রত্যেক বাচ্চার মুখের কাছে রাখিয়া খাওয়ায়। এই রকমে আট দশ দিনের মধ্যে বাচ্চারা বেশ বড় হইয়া পড়ে।

    ইহার পরে বাচ্চারা পুত্তলি-অবস্থায় আসিয়া পড়ে। তখন ইহারা একেবারে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করিয়া দেয় এবং কর্ম্মী-মাছিরা সেই সময়ে মোমের খুব পাত্‌লা পর্‌দা দিয়া ছিদ্রের মুখ বন্ধ করিয়া দেয়। ছিদ্রের মধ্যে বাচ্চারা এই রকমে দশ বারো দিন নিরিবিলি বাস করে এবং মুখের লালা দিয়া এক রকম সূতা প্রস্তুত করিয়া নিজেদের দেহগুলিকে ঢাকিয়া ফেলে।

    এই রকমে নিভৃত-বাস শেষ হইলে, সেই শুঁয়ো-পোকা আকারের বাচ্চারা ডানা পা এবং মুখওয়ালা মৌমাছি হইয়া দাঁড়ায়। শেষে দাঁত দিয়া ছিদ্রের ঢাক্‌নি কাটিয়া চাকের উপরে আসিয়া উপস্থিত হয়। বিড়াল, কুকুর, মানুষ, গোরু ইত্যাদি প্রাণীরা অল্প বয়সে আকারে ছোট থাকে। তার পর বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বাড়িয়া তাহারা বড় হয়। বোল্‌তা ও মৌমাছিদের মধ্যে ইহা দেখা যায় না। শুঁয়ো-পোকার আকারের চেহারা বদ্‌লাইয়া মৌমাছি ও বোল্‌তারা যে আকার পায়, তাহা আর বয়সের সঙ্গে বাড়ে না।

    যাহা হউক, ছিদ্র হইতে ডানাওয়ালা বাচ্চারা বাহির হইতেছে দেখিলেই, কর্ম্মী-মাছিরা তাহাদের নিকটে ছুটিয়া যায় এবং দুই দিন ধরিয়া তাহাদিগকে টাট্‌কা মধু ও ফুলের রেণু খাওয়াইতে থাকে। ইহাতে বাচ্চারা গায়ে বল পাইয়া বেশ উড়িতে ও কাজকর্ম্ম করিতে শিখিয়া ফেলে। তৃতীয় দিনে ইহাদিগকে আর যত্ন করার দরকার হয় না। তখন ইহারা অন্য কর্ম্মী-মাছিদেরই মত চাকের কাজে লাগিয়া যায়।

    এখানে মৌমাছির ভিন্ন ভিন্ন অবস্থার ছবি দিলাম। ডিম, বাচ্চা ও পুত্তলি কি রকম, ছবিটি দেখিলেই তোমরা বুঝিতে পারিবে।

    চাক বাঁধার পরে দুই মাসের মধ্যে মৌমাছিদের রাণী যে-সকল ডিম পাড়ে, তাহা হইতে কেবল কর্ম্মী-মাছিই জন্মে। কাজেই অনেক মাছিতে চাক বড় হইয়া পড়ে এবং অনেক ছিদ্রে মধু জমা হয়। এই সময়ে মাছিদের কাহারো কোনো অভাব থাকে না। চাকের কাজ বেশ ভালোই চলে। কিন্তু এই সুখের অবস্থা বেশি দিন থাকে না। তোমরা যদি কখনো মৌমাছির বড় চাক পরীক্ষা করিবার সুযোগ পাও, তবে দেখিবে, চাকের এক প্রান্তে কতকগুলি বড় ছিদ্রযুক্ত ঘর আছে। কর্ম্মী মাছিরা চাক বাঁধার দুই তিন মাস পরে এই সকল বড় ছিদ্র প্রস্তুত করে। চাক বড় হইয়া পড়িলে রাণী যে-সকল ডিম পাড়ে, তাহা হইতে প্রায়ই পুরুষ ও স্ত্রী মাছি জন্মে। ঐ বড় ঘরগুলি পুরুষ ও স্ত্রীদের জন্যই প্রস্তুত থাকে।

    চাকের ঐ-সকল ছিদ্রে রাণী ডিম পাড়িতে আরম্ভ করিলেই কর্ম্মী মাছিদের আহার নিদ্রা বন্ধ হইয়া যায়। তাহারা তখন দিবারাত্রি স্ত্রী ও পুরুষ বাচ্চাদের যত্ন করিতে সুরু করে। এই সময়ে বাচ্চাদের মুখের গোড়ায় ভারে-ভারে খাবার ঢালিয়া দিতে হয়। স্ত্রী-বাচ্চারা বেশি পেটুক হইয়া জন্মে। কর্ম্মী-মাছিরা নিজের শরীর হইতে দুধ বাহির করিয়া তাহাদের খাওয়ায়। ইহাতে বাচ্চারা শীঘ্র সবল হইয়া উঠে।

    এক রাজার রাজ্যে আর এক রাজা রাজত্ব করিতে ইচ্ছা করিলে, রাজায় রাজায় লড়াই বাধে। তখন রাজা-প্রজা সকলকেই অস্থির হইয়া পড়িতে হয়—দেশে একটুও শান্তি থাকে না। পুরাতন রাণীর ডিম হইতে যখন বাচ্চারা নূতন রাণী সাজিয়া বাহির হইতে চায়, তখন চাকে ঠিক সেই রকম অশান্তি দেখা দেয়। পুরানো রাণী নূতনদের ভয়ে কাঁপিতে থাকে এবং চাক ছাড়িয়া পলাইবার চেষ্টা করে। কর্ম্মী-মাছিরা পুরানো রাণীকে অনেক সাধ্যসাধনা করিয়া চাকে আট্‌কাইয়া রাখে এবং নূতন রাণীরা যাহাতে বাহির না হয়, তাহার জন্য ছিদ্রের মুখে ক্রমাগত মোম চাপাইতে থাকে। কিন্তু সকল চেষ্টা বিফল হইয়া যায়; নরম মোমের ঢাক্‌নি নূতন রাণীকে আট্‌কাইয়া রাখিতে পারে না। হঠাৎ একদিন নূতন রাণী ঢাক্‌নি কাটিয়া ছিদ্রের বাহিরে আসিয়া দাঁড়ায় এবং পুরানো রাণী কয়েকটি পুরুষ ও কয়েক হাজার কর্ম্মীকে সঙ্গে লইয়া চাক ছাড়িয়া আর এক জায়গায় চাক বাঁধিবার চেষ্টা করে।

    নূতন রাণী বুড়ো-রাণীকে তাড়াইয়া কয়েকদিন বেশ আনন্দেই কাটায়। চাকের কর্ম্মীরা ইহাকেই রাণী বলিয়া মানে ও তাহার মুখে ভালো ভালো খাবার গুঁজিয়া দেয়। কিন্তু নূতন রাণীরও এই সুখ বেশি দিন থাকে না। চাকের আর এক ছিদ্র হইতে আার একটি রাণী বাহির হইতেছে দেখিয়া সে বুড়ো-রাণীর মতই বিপদে পড়ে এবং কতকগুলি সঙ্গী লইয়া চাক ছাড়িয়া পলাইয়া যায়। যদি কোন গতিকে দুই রাণী মুখোমুখী হইয়া পড়ে, তবে আর রক্ষা থাকে না। দু’জনের মধ্যে ভয়ানক লড়াই বাধিয়া যায় এবং যতক্ষণ দুইয়ের মধ্যে একটি মারা না যায়, ততক্ষণ ঘোরতর যুদ্ধ চলিতে থাকে।

    যাহা হউক, এই রকমে এক-একটি রাণী এক এক দল মাছিকে সঙ্গে লইয়া পলাইলে, চাক বেশ খালি হইয়া পড়ে। কখনো কখনো এই রকমে চাকে একটি মাছিও থাকে না। কর্ম্মী-মাছিরা ডিম ও বাচ্চাদের মুখে লইয়া রাণীর সঙ্গে নূতন চাক বাঁধিবার চেষ্টায় বাহির হয়। কিন্তু সকলেই নূতন চাকে পৌঁছিতে পারে না। কতক কর্ম্মী জলে ডুবিয়া মরে, কতক হয় ত আগুনে বা রৌদ্রে পুড়িয়া মারা যায়। যদি পুরাতন চাকে বাস করার সুবিধা থাকে, তবে নূতন রাণী রণমূর্ত্তি ধরিয়া ভয়ানক মারামারি আরম্ভ করে। রাণীর এই সময়ের চেহারা দেখিলে ভয় হয়। সে ডানা মেলিয়া প্রত্যেক ছিদ্রে ঘুরিয়া বেড়ায় এবং সেখানে যে স্ত্রী ও পুরুষ বাচ্চা থাকে তাহাদিগকে মারিয়া ফেলে। এই হত্যাকাণ্ডে কর্ম্মী মাছিরাও যোগ দেয়। এই রকমে স্ত্রী ও পুরুষেরা মরিয়া গেলে নূতন রাণী পুরানো চাকের একমাত্র অধীশ্বরী হইয়া পড়ে। পুরুষ মাছিরা মরিয়া যাওয়ায় কর্ম্মীদের কাজ অনেক কমিয়া আসে, কারণ তখন ভারে-ভারে খাবার আনিয়া পুরুষদের খাওয়াইতে হয় না। তখন কর্ম্মীরা নিশ্চিন্ত হইয়া নূতন করিয়া ঘর তৈয়ারি সুরু করিতে পারে এবং নানা প্রকার গাছ হইতে আঠা সংগ্রহ করিয়া ভাঙা ঘর জোড়া দিতে থাকে। মারামারি ও হানাহানির পরে এই রকমে চাকে আবার শান্তি ফিরিয়া আসে।

    মৌমাছির আয়ু

    মৌমাছিরা বেশি দিন বাঁচে না। কর্ম্মী মাছিদের খুব বেশি পরিশ্রম করিতে হয়। এই কারণে দেড় মাসের মধ্যে ইহারা মারা যায়। যখন পরিশ্রম বেশি না থাকে, তথন ইহারা তিন মাস পর্য্যন্ত বাঁচে। পুরুষ-মাছিরা কখনো কথনো দু’মাস পর্য্যন্ত বাঁচে। কিন্তু প্রায়ই ইহারা রাণীর সঙ্গে বেড়াইতে বাহির হইয়া মারা যায়। পুরুষ-মাছি একবার চাক ছাড়িয়া উড়িয়া গেলে, সে আর প্রায়ই চাকে ফিরিয়া আসে না। স্ত্রী-মাছিদেরই আয়ু বেশি। কখনো কখনো ইহাদিগকে দুই হইতে তিন বৎসর পর্য্যন্ত বাঁচিয়া থাকিতে দেখা যায়।

    মৌমাছির দল

    প্রত্যেক দলে হাজার হাজার মাছি থাকে, কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয়, কোনো মাছি নিজের দল ছাড়িয়া অন্য দলের চাকে যায় না এবং গেলেও সেখানে জায়গা পায় না। তোমাদের গ্রামে যদি তিন হাজার লোক বাস করে, তবে প্রত্যেক লোককে চিনিয়া রাখা কত কঠিন, তাহা মনে করিয়া দেখ। কিন্তু মৌমাছিরা নিজের দলের সকল মাছিকেই চিনিয়া রাখে। যদি অপর চাকের মাছি ভুল করিয়া তাহাদের চাকে আসিতে চায়, তবে পাহারাওয়ালা মাছিরা নূতন মাছিকে তাড়াইয়া দেয়। মাছিরা দলের সকলকে কি-রকমে চিনিয়া রাখে, তাহা বোধ হয় তোমরা জান না। যাঁহারা মৌমাছির চলা-ফেরা অনুসন্ধান করিয়াছেন, তাঁহারা বলেন, প্রত্যেক চাকের মৌমাছিদের গায়ে এক-এক রকম গন্ধ আছে। এই গন্ধ শুঁকিয়া মাছিরা আপনার দলের মাছিদিগকে চিনিয়া লয়। পরীক্ষা করিয়া দেখা গিয়াছে, যদি কোনো চাকের কতকগুলি মাছিকে তিন-চারি ঘন্টা ধরিয়া রাখা যায়, তাহা হইলে উহাদের গায়ের গন্ধ লোপ পায়। তখন সেই মাছিদিগকে ছাড়িয়া দিলে, তাহারা মহা বিপদে পড়ে। গায়ের গন্ধ না থাকায় নিজের চাকের মাছিরা তাহাদিগকে চিনিতে পারে না। কাজেই অনেক সাধ্যসাধনা করিয়াও তাহারা চাকে জায়গা পায় না।

    তোমাদিগকে এ-পর্য্যন্ত কেবল চাকের মাছিদের কথাই বলিলাম। ইহা ছাড়া আরো অনেক রকম মৌমাছি আছে। কিন্তু ইহাদের মধ্যে কেহই চাক বাঁধিয়া একত্র বাস করে না। অনেকেই কুমরে-পোকাদের মত পৃথক্ বাসা বাঁধিয়া বাচ্চাদের লালন-পালন করে। এক রকম মাছি গাছের আঠা জোগাড় করিয়া বইয়ের আলমারির গায়ে বাসা বাঁধে,—ইহারাও মৌমাছি-জাতীয় প্রাণী। আবার এক জাতি মৌমাছিকে গাছের পাতা কাটিয়া বাসা তৈয়ার করিতে দেখা যায়।

    যাহা হউক, মৌমাছির জীবনের সকল কথাই বড় আশ্চর্য্যজনক। এ-রকম ছোট প্রাণী যে এত বুদ্ধি খাটাইয়া চাক বাঁধিয়া বাসা করিতে পারে, ইহা যেন আমাদের বিশ্বাসই হয় না। কিন্তু ইহার সকলি সত্য।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল – চিত্রা দেব
    Next Article অসাধু সিদ্ধার্থ – জগদীশ গুপ্ত
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    Our Picks

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025

    ওডিসি – হোমার

    October 13, 2025

    প্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    October 13, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }