Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025

    ওডিসি – হোমার

    October 13, 2025

    প্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    October 13, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    পোকা-মাকড় – জগদানন্দ রায়

    জগদানন্দ রায় এক পাতা গল্প239 Mins Read0

    ৬.৯.১ মাকড়সা

    মাকড়সা

    তোমরা সকলেই মাকড়সা দেখিয়াছ। ইহারা ঘরের কোণে, বাগানের গাছে এবং কখনো কখনো ঘাসের উপরে জাল বুনিয়া চুপ করিয়া বসিয়া থাকে। তার পরে মশা, মাছি প্রভৃতি ছোট পোকা জালে আট্‌কাইলে শিকারগুলিকে আক্রমণ করে। কি বিশ্রী চেহারা! উহাদের কয়খানি পা দেখিলেই ভয় করে। মাকড়সা গায়ের উপরে লাফাইয়া পড়িলে কি রকম অশান্তি হয়, তাহা তোমরা জান।

    তোমাদের ঘরের কোণে যে মাকড়সাটি শিকার ধরিবার জন্য বসিয়া আছে, একবার সেটিকে ভালো করিয়া দেখিয়ো। তখন দেখিবে, তাহার দেহ দুই ভাগে বিভক্ত। সম্মুখের ভাগে মুখ ও আটখানা পা আছে। পিছনের ভাগে কেবল জাল বুনিবার জন্য সূতা প্রস্তুতের যন্ত্র আছে। পতঙ্গদের শরীর যেমন কতকগুলি আংটির মত নরম হাড় দিয়া প্রস্তুত, ইহাদের দেহ সে-রকম নয়। সমস্ত দেহ খুঁজিলেও মাকড়সার দেহে আংটির সন্ধান পাওয়া যায় না। ইহাদের দেহ খুব ছোট সরু লোমে ঢাকা থাকে; পায়েও লোম দেখা যায়। আতসী কাচ দিয়া পরীক্ষা করিলে তোমরা মাকড়সার গায়ের ও পায়ের লোম এবং লেজের দিকে সূতা প্রস্তুতের যন্ত্র দেখিতে পাইবে। কিন্তু দেহের কোনো জায়গায় ডানা খুঁজিয়া পাইবে না।

    আমরা এখানে মাকড়সার একটি ছবি দিলাম। দেখ, ইহার দেহ সত্যই দুই ভাগে ভাগ করা আছে। সম্মুখের মুখের কাছে আরো দুখানি পায়ের মত যে অঙ্গ দেখিতেছ, তাহা পায়ের মত দেখাইলেও, পা নয় বা শুঁয়ো নয়। ইহাদের মুখের চোয়াল লম্বা হইয়া এই রকম হইয়াছে। মাকড়সারা যখন পোকা-মাকড় খায়, তখন ঐ চোয়াল দিয়া শিকারকে চাপিয়া ধরে এবং গায়ে দাঁত বসাইয়া তাহাদিগকে মারিয়া ফেলে। ইহাদের মুখের দাঁত ভয়ানক অস্ত্র। ভীমরুলের মত বলবান্ প্রাণীরাও এই দাঁতের আঘাতে মারা যায়। কেবল ইহাই নয়, মাকড়সাদের মুখে বিষের থলি থাকে। তাহাতে আপনা হইতেই বিষ জমা হয়। মাকড়সারা কোনো প্রাণীর গায়ে দাঁত ফুটাইবার সময় একটু বিষও ঢালিয়া দেয়। দাঁতের আঘাত ও বিষের জ্বালা সহ্য করিতে না পারিয়া সকল রকম পোকাই মারা যায়।

    মাকড়সার চোখের কথা এখনো বলা হয় নাই। শরীর পরীক্ষা করিলে ইহাদের মাথার উপরে যে আটটি দাগ থাকে, সেইগুলিই উহার চোখ। পতঙ্গদের দুইটা চোখে যেমন হাজার হাজার ছোট চোখ থাকে, ইহাদের চোখে তাহা দেখা যায় না। মাকড়সাদের যে আটটি ছোট চোখ থাকে তাহা দিয়াই ইহার দেখার কাজ চালায়।

    মাকড়সার লেজের কাছে যে কয়েকটি কালো দাগ দেখা যায়, সেই গুলিই মাকড়সার সূতা প্রস্তুতের ছিদ্র। এইগুলির তলায় সর্ব্বদাই এক রকম লালার মত জিনিস জমা থাকে। মাকড়সারা ঐ সকল ছিদ্র দিয়া সূতার মত করিয়া লালা বাহির করে। পরে বাতাসে শুকাইয়া শক্ত হইলেই তাহা দিয়া মাকড়সারা জল বোনার কাজ চালাইতে থাকে। এই ছিদ্রগুলির আকৃতি খালি চোখে ভালো দেখা যায় না। অণুবীক্ষণ বা বড় আতসী কাচে সেগুলিকে গোরুর বাঁটের মত দেখায়। মাকড়সার শরীরের তলায় এই রকম ছয়টা বাঁট থাকে। গোরুর প্রত্যেক বাঁটে একটার বেশি ছিদ্র থাকে না, কিন্তু মাকড়সার ছয়টা বাঁটের প্রত্যেকটিতে ঝাঝরির মত শত শত ছিদ্র থাকে। এই সকল ছিদ্র দিয়া মাকড়সারা অনেক সরু সূতা বাহির করে এবং সেগুলি একত্র করিয়া যে একটি সূতা হয়, তাহা দিয়া জাল বোনে। সুতরাং বুঝা যাইতেছে, মাকড়সার জালের সূতাগুলি একএকটি সূতা নয়,—অনেক সরু সূতা একত্র করিয়া এগুলি প্রস্তুত।

    এখানে মাকড়সার একখানি পায়ের ছবি দিলাম। দেখ,—পায়ে যেন বাঘের নখের মত নখ রহিয়াছে। জালে শিকার পড়িলেই আটখানা পায়ের ঐরকম ধারালো নখ দিয়া তাহারা শিকারকে চাপিয়া ধরে। প্রত্যেক নখে যে চিরুণীর মত দাঁত লাগানো আছে, সেগুলি দিয়া ইহারা অনেক কাজ করে। কয়েকগাছি লম্বা সূতা জড়াইতে গেলে কি রকম বিপদে পড়িতে হয়, তাহা তোমরা জান। প্রায়ই সূতায় সূতায় গিঁট বাধিয়া যায়, কখনো আবার খেই খুঁজিয়া পাওয়া যায় না। তখন ভয়ানক বিরক্তি লাগে এবং শেষে টানাটানি করিতে করিতে সূতায় সূতায় এমন জড়াজড়ি বাধিয়া যায় যে, সেগুলিকে আর পৃথক করা যায় না। মাকড়সারা যে-সকল সরু সূতায় জাল বোনে, তাহাতে জড়াজড়ি বাধার খুবই সম্ভাবনা থাকে। তাই উহারা নখের দাঁতগুলির ফাঁকে ফাঁকে সূতা বাধাইয়া জাল বোনে। ইহাতে সূতায় সূতায় গিঁট বাঁধিতে পায় না।

    আমাদের মধ্যে অনেক রকম কারিগর আছে। কেহ কাঠের কাজ, কেহ কামারের কাজ, কেহ রাজমিস্ত্রির কাজ করে। কিন্তু সকলেরই কাজ যে ভালো হয়, তাহা নয়। যে ছুতার কেবল ঢেঁকি তৈয়ারি করে, তাহার কাজের চেয়ে, যে চেয়ার-টেবিল তৈয়ারি করে, তাহার কাজ ভালো। কাজেই, ঢেঁকি-ওয়ালা ছুতারের চেয়ে চেয়ার-ওয়ালা ছুতার বেশি ওস্তাদ্। মাকড়সার মধ্যে এই রকম কাঁচা ও পাকা কারিগর দেখা যায়। আমাদের ঘরের কোণে ও কড়ি কাঠে যে মাকড়সারা জাল বোনে, তাহারা নিতান্ত কাঁচা কারিগর। কোনো-গতিকে কতকগুলি সূতা এদিকে ওদিকে আট্‌কাইয়া ইহারা জাল প্রস্তুত করে। এই সকল জালে কোনো কারিগুরি নাই। ঘাসের উপরে বা গর্ত্তের ভিতরে থাকিয়া এক রকম ছোট মাকড়সা যে জাল প্রস্তুত করে, তাহা তোমরা বোধ হয় দেখিয়াছ। রাত্রির শিশিরের জল সূতার উপরে জমা হইলে, এই জালগুলিকে প্রাতঃকালে মাটির উপরে স্পষ্ট দেখা যায়। ইহাতেও বিশেষ কারিগুরির পরিচয় পাওয়া যায় না। কিন্তু বাগানের গাছের ডালে মাকড়সারা চাকার মত যে ছোট-বড় জাল বোনে, তাহা দেখিলে বাস্তবিকই অবাক্ হইতে হয়। এই জালগুলিই মাকড়সার মধ্যে যাহারা পাকা কারিগর তাহারা প্রস্তুত করে।

    পর পৃষ্ঠায় বাগানের মাকড়সাদের জালের একটা ছবি দিলাম। তোমরা একদিন ভোরে উঠিয়া বাগানে বেড়াইতে যাইয়ো। তখন দেখিবে, এক গাছ হইতে আর এক গাছে, বা এক ডাল হইতে আর এক ডালে, এই রকম জাল বাঁধিয়া ছোট মাকড়সা জালের ঠিক্ মাঝখানে বা বাহিরে বসিয়া আছে।

    এই মাকড়সারা কি-রকমে জাল বোনে, তোমরা বোধ হয় তাহ৷ দেখ নাই। ইহারা এত তাড়াতাড়ি কাজ করে যে, তাহা দেখিলে অবাক্ হইতে হয়। দেড় হাত বা দুই হাত চওড়া জাল বুনিতে ইহারা কখনই এক ঘণ্টার বেশি সময় লয় না। উই পিঁপ্‌ড়ে বা মৌমাছির মত দলবদ্ধ হইয়া মাকড়সারা বাস করে না। কাজেই প্রত্যেক মাকড়সাকেই তাহার নিজের জাল নিজেই বুনিতে হয়। জাল বুনিবার সময়ে মাকড়সার বেশ একটি ভালো জায়গা বাছিয়া প্রথমে পেটের তলা হইতে একগাছি সূতা বাহির করে। হাল্‌কা সূতা দেহ হইতে বাহির হইয়া স্থির থাকে না। কিছুক্ষণ বাতাসে এদিকে ওদিকে নাড়াচাড়া করিয়া শেষে গাছের ডালে বা পাতায় লাগিয়া যায়। এই সূতায় জালের ভিত্ পত্তন হয়। মাকড়সারা ইহারি উপর দিয়া এক ডাল হইতে অন্য ডালে যাতায়াত আরম্ভ করে এবং সঙ্গে সঙ্গে আরো অনেক লম্বা সূতা ডালে ডালে যোগ করিতে থাকে। তার পরে এই সকল ফাঁক্ ফাঁক্ সূতার মাঝ-জায়গাটিকে কেন্দ্র করিয়া তাহারা চাকার মত গোলাকার জাল বুনিয়া ফেলে। তোমরা যদি পরীক্ষা কর, তবে দেখিবে, জালের টানা সূতাগুলি যত মোটা, গোলাকারে ঘুরানো সূতা সে রকম মোটা নয়; এইগুলিই সকলের চেয়ে সরু। মাকড়সারা পেটের তলার সেই ছিদ্র দিয়া ইচ্ছামত মোটা ও সরু সূতা তৈয়ার করিতে পারে।

    কয়েকজাতীয় মাকড়সা আবার জালের সূতার গায়ে এক রকম আঠার মত জিনিস বিন্দু বিন্দু লাগাইয়া রাখে। এগুলি শীঘ্র শুকায় না। মশা মাছি প্রভৃতি জালে পড়িয়া ছট্‌ফট্ করিতে থাকিলে সেই আঠা পোকাদের পায়ে ও ডানায় লাগিয়া যায়। কাজেই তাহারা আর পলাইতে পারে না।

    মাকড়সারা কি-রকমে পোকা শিকার করে, তোমরা কোনো জালের কাছে দাঁড়াইয়া দেখিয়ো। ইহারা শিকারের জন্য প্রায়ই জালের ঠিক্ মাঝখানটিতে চুপ করিয়া বসিয়া থাকে। কখনো কখনো আবার জাল ছাড়িয়া কোনো পাতার আড়ালে লুকাইয়া অপেক্ষা করে। জাল হইতে দূরে থাকিলে জালের একটি সূতা প্রায়ই তাহাদের পায়ে লাগানো দেখা যায়। জালে পোকা পড়িয়া ছট্‌ফট্ করিতে থাকিলে, সেই পায়ের সূতায় টান্ পড়ে। তখন মাকড়সারা বাঘের মত লাফাইতে লাফাইতে শিকারের ঘাড়ে চাপিয়া বসে।

    পেটে ক্ষুধা থাকিলে মাকড়সাদের দিগ্‌বিদিক্ জ্ঞান থাকে না। তথন শিকারের ঘাড়ে চাপিয়াই তাহারা লম্বা দাঁত দিয়া শিকারকে মারিয়া ফেলে এবং দেহের ভিতরকার সারবস্তু শুষিয়া খাইয়া খোলাটা ফেলিয়া দেয়। যাহা দরকার তাহার চেয়ে বেশি কিছু পাইলে, আমরা তাহা ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করিয়া রাখি। যাহারা বেশি টাকা উপার্জ্জন করে, তাহারা এই রকমে অনেক টাকা জমায় এবং চাষ-আবাদ করিয়া যাহারা বেশি ফসল পায়, তাহারাও এই রকমে গোলা গোলা ধান জমা করিয়া রাখে। পেট ভরা থাকিলে মাকড়সারা জালের পোকা-মাকড়দিগকে ঠিক্ ঐ-রকমেই জ্যান্ত অবস্থায় সঞ্চিত করিয়া রাখে। কুমরে-পোকা ও কাঁচপোকারা কি রকমে বাচ্চাদের জন্য পোকা-মাকড় ধরিয়া রাখে তাহা তোমরা জান। মাকড়সারা কতকটা সেই রকমেই ভবিষ্যতের জন্য জীবন্ত পোকা ধরিয়া রাখে। কিন্তু কুমরে-পোকাদের মত ইহারা শিকারের গায়ে হুল ফোটায় না। পেটের তলা হইতে সূতা বাহির করিয়া মাকড়সারা বড় বড় মাছি বা বোল্‌তার সমস্ত দেহটাকে এমন জড়াইয়া ফেলে যে, সেই সূতার বাঁধন ছিঁড়িয়া কেহই পলাইতে পারে না। তার পর যখন জালে পোকা আট্‌কায় না, তখন মাকড়সারা ঐ-সকল সূতা-জড়ানো বন্দী পোকাদের খাইতে আরম্ভ করে।

    তোমরা কোনো মাকড়সার বড় জাল পরীক্ষা করিয়া দেখিয়ো। তখন দেখিবে, সাদা সূতা-জড়ানো দুই-একটি পোকার খোলা বা জীবন্ত পোকা জালের গায়ে লাগানে আছে। আমাদের ঘরের ভিতরে যে মাকড়সারা জাল বোনে, তাহারাও ভবিষ্যতের জন্য খাবার সঞ্চয় করে। ইহাদের জালে খোঁজ করিলেও তোমরা সূতা-জড়ানো পিঁপ্‌ড়ে বা মাছি দেখিতে পাইবে।

    পিঁপ্‌ড়ে, মৌমাছি প্রভৃতি পতঙ্গদের পুরুষেরা কি রকম অকর্ম্মা তাহা তোমরা আগেই শুনিয়াছ। মাকড়সাদের পুরুষেরাও ঠিক্ সেই রকম অকেজো। ইহারা আকারে ছোট হইয়া জন্মে এবং প্রায়ই জাল বুনিতে পারে না। স্ত্রীরা যদি খাবার মুখের কাছে দেয়, তবেই ইহারা খাইতে পায়, নচেৎ ক্ষুধায় মরিয়া যায়। সুতরাং বুঝা যাইতেছে, আমরা জালের উপরে যে-সকল মাকড়সা দেখিতে পাই, তাহাদের মধ্যে প্রায়ই পুরুষ থাকে না। স্ত্রী-মাকড়সারাই জাল বোনে ও মশা-মাছি শিকার করে। যাহারা সংসারে কোনো কাজ না করিয়া কেবল পরের উপরে নির্ভর করে, ভবিষ্যতে তাহাদিগকে অনেক কষ্ট পাইতে হয়। পুরুষ-মাকড়সারা স্ত্রীদের উপরে নির্ভর করে বলিয়া ইহারাও শেষে বড় কষ্ট পায়। কিছুদিন একত্র থাকার পরে স্ত্রী-মাকড়সারা পুরুষদের উপরে এমন বিরক্ত হইয়া পড়ে যে, তাহাদিগকে আর কাছে ঘেঁসিতে দেয় না। কিন্তু পেটের জ্বালা বড় জ্বালা, তাই পদে পদে অপমানিত হইয়াও একটু খাবার পাইবার জন্য পুরুষেরা স্ত্রীর কাছ ছাড়া হইতে চায় না। তখন স্ত্রীরা পুরুষদের উপরে এত বিরক্ত হইয়া পড়ে যে, তাহারা একএকটি পুরুষকে ধরিয়া খাইতে আরম্ভ করে। এই রকমে পুরুষ-মাকড়সারা নিজেদেরি স্ত্রীর হাতে প্রাণ বিসর্জ্জন করে।

    এখন আমরা মাকড়সার বাচ্চাদের কথা বলিব। পতঙ্গদের মত মাকড়সারাও ডিম পাড়ে এবং সেই ডিম হইতে বাচ্চা হয়। ইহারা যে-রকমে ডিম পাড়ে, তাহা বড় মজার। প্রসবের সময় হইলে, স্ত্রী-মাকড়সারা শরীর হইতে সূতা বাহির করিয়া একএকটা থলি প্রস্তুত করে এবং তাহা পেটের তলায় রাখিয়া দেয়। শেষে প্রসবের পর ডিমগুলিকে সেই থলির মধ্যে রাখিয়া দেয়। একএকটা থলিতে কখনো কখনো ছয়-সাত শত ডিম জমা থাকে। আমাদের ঘরের ভিতরে যে-সকল মাকড়সা জাল বোনে, তাহাদের পেটের তলায় ঐ-রকম ডিমের থলি প্রায়ই দেখা যায়। কিন্তু বাহিরের ছোট মাকড়সারা এই রকম থলি পেটের তলায় রাখিয়া বিব্রত হইতে চায় না। তাহারা দেওয়ালের ফাটালে বা গাছের ছালের তলায় ডিমের থলি লুকাইয়া নিশ্চিন্ত থাকে।

    মাকড়সাদের ডিম ফুটিয়া বাচ্চা বাহির হইতে অনেক সময় লাগে। কখনো কখনো তিন চারি মাস না গেলে ডিম হইতে বাচ্চা হয় না। পতঙ্গের বাচ্চারা নানা পরিবর্ত্তনের পরে সম্পূর্ণ আকার পায়। ইহা তোমরা জান। কিন্তু মাকড়সাদের ডিম হইতে যে বাচ্চা বাহির হয়, তাহা ছোট মাকড়সার আকারেই জন্মে। সুতরাং বলিতে হয়, ডিম হইতে বাহির হওয়ার পরে, ইহাদের চেহারার বিশেষ পরিবর্ত্তন হয়। না। কেবল বার বার গায়ের খোলস ছাড়িয়া ইহার আকারে বড় হয় মাত্র।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল – চিত্রা দেব
    Next Article অসাধু সিদ্ধার্থ – জগদীশ গুপ্ত
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    Our Picks

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025

    ওডিসি – হোমার

    October 13, 2025

    প্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    October 13, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }