Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প – জুবায়ের আলম

    জুবায়ের আলম এক পাতা গল্প23 Mins Read0

    পূর্বাভাস

    পূর্বাভাস

    আকাশে মেঘ জমেছে। সন্ধ্যা নামতে এখনও মিনিট বিশেক দেরি আছে। কিন্তু সন্ধ্যা নামার আগেই চারপাশ অন্ধকার হতে শুরু করেছে। হঠাৎ বাতাসের স্তব্ধতাই বলে দিচ্ছে যে বৃষ্টি নামবে। আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামবে।

    মেঘলা আকাশের দিকে কায়জুদ্দিনের মনযোগ নেই। হাতের নিড়ানিটা দিয়ে সে বাগানের মাটি খুঁড়ছিল। কপাল আর শরীরের চুঁইয়ে চুইয়ে পড়া ঘামে মাটি ভিজে যাচ্ছিলো। মাটি এর আগেও সে অনেক খুঁড়েছে। নিজ হাতে আড়াই পৌঁচে মানুষ জবাই দিয়েছে। চোখ ভরে দেখেছে সেই তাজা লাশের ছটফটানি। রক্তমাখা কিরিচটা লুঙ্গিতে মুছে কবর খুঁড়েছে। নিজ হাতে লাশটাকে দাফন করেছে। এখন সেইসব কথা মনে হলে কায়জুদ্দিন অবচেতন মনেই আত্মপক্ষ সমর্থনের যুক্তি খোঁজে, সান্ত্বনা খোঁজে। মনে প্রাণে চায়, কেউ এসে বলুক, ইচ্ছা করে কি কেউ অপরাধী হয়? হয় না।

    দগদগে ক্ষতর মত অতীত ফুটে ওঠে কায়জুদ্দিনের চোখে।

    কায়জুদ্দিন একসময় কসাইয়ের কাজ করত। ‘কায়জু কসাই’ নামে সবাই চিনত তাকে। মিউনিসিপিউলিটি বাজারে মাংস বানানোর আড়ালে সে ছিল নিষিদ্ধ অপরাধী দল ‘কংসচক্র’-এর প্রধান। কংসচক্রের নাম শুনলে এখনও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কপাল ঘেমে ওঠে। এই দলটার নাম সহজে কেউ নিতে চায় না। কারণ এই দলের নাম যে নিয়েছে, আর এই দলের কাজে ব্যাঘাত যারা ঘটানোর চেষ্টা করেছে, তাদের মৃত্যু হয়েছে অস্বাভাবিক রকমের মর্মান্তিক। মাদক চোরাচালান, অপহরণ, খুন, গুম-অন্ধকার জগতের এমন কোন কাজ নেই যা এই দলটা করেনি। নিজেদের দল ভারী করার জন্য কংসচক্রের লোকেরা হাসপাতাল থেকে নবজাতক শিশুদেরকেও চুরি করত। কায়জুদ্দিন ধরা পড়ে যাওয়ার পরে দলটার তৎপরতা হঠাৎ করেই কমে গেল। দুর্বল হতে শুরু করল কংসচক্র। প্রধানমন্ত্রী তফিসুল বারীর নেতৃত্বে প্রশাসন একেবারে ক্ষুধার্ত বাঘের মত কংসচক্রের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ল। শহরের ড্রেনে ড্রেনে পাওয়া যেতে লাগল কংসচক্রের সদস্যদের লাশ। কায়জুদ্দিনের অনুপস্থিতিতে একরকম নিশ্চিহ্নই হয়ে গেল কংসচক্র।

    আর কায়জুদ্দিন থেকে গেল প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্পের একজন হয়ে। অনেকে বিশ্বাস করে, কংসচক্রের এই পতনের পেছনে কায়জুদ্দিনের অন্তৰ্ধান না, বরং একটা ডায়েরির অন্তর্ধান দায়ী। অনেকের ধারণা ছিল, কায়জুদ্দিনের কাছেই ডায়েরিটা আছে, কিন্তু সেই ডায়েরিতে কি আছে, কেন কংসচক্রের কাছে ডায়েরিটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ সেই ব্যাপারে কেউ কিছু বলতে পারেনি। এটার অতীত সম্পর্কে কেউ কিছুই জানে না। শুধু এইটুকু জানে কংসচক্রের সব থেকে বড় দুর্যোগের সময়ে এই ডায়েরিটা কংসচক্রের কাজে আসবে।

    কিন্তু কংসচক্রের সেই বিপদের সময় কায়জুদ্দিন আর সেই ডায়েরি, কেউই কংসচক্রের পাশে দাঁড়াতে পারেনি।

    যাই হোক, প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প কী তা জানে না কায়জুদ্দিন। এই প্রকল্পের প্রধান, ডঃ বশির জামানকে বারবার জিজ্ঞাসা করেছে সে। কিন্তু বশির জামান কোন উত্তর দেননি। শুধু বলেছেন, “বেশ তো আছ কায়জুদ্দিন। খাচ্ছো দাচ্ছো, সমস্যা কি? কৌতূহল খুব খারাপ জিনিস কায়জুদ্দিন। খুব খারাপ জিনিস।”

    কায়জুদ্দিন হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে কপালের ঘাম মুছল। বাগানের ভেতরের ল্যাম্পপোস্টগুলো জ্বলে উঠল একে একে। প্রতি সন্ধ্যাতেই এই লাইটগুলো জ্বলে ওঠে। কিন্তু কায়জুদ্দিনের মনে হল, আজকের সন্ধ্যাটা একটু অন্যরকম। কেন অন্যরকম লাগছে তা কায়জুদ্দিন জানে না।

    গুড়গুড় করে মেঘ ডেকে উঠল। আকাশে জমাট কালো মেঘগুলো পাক খাচ্ছে। যেন একটা কালো সাপ হা করে তাকিয়া মহলকে গিলতে নেমে আসছে আকাশ থেকে। অন্ধকারটা আরও ঘন হচ্ছে।

    কলাবতী গাছের সারিটা পার হলেই করিডোর। কায়জুদ্দিন প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্পের আরও দুজনকে দেখতে পেল। তপন আর সুমিত। ওরাও একসময় কায়জুদ্দিনের মত অপরাধ জগতের বাসিন্দা ছিল। এমন আরও অনেকে আছে এই তাকিয়া মহলে। সব মিলিয়ে মোট তেরোজন। প্রথম গ্রুপে আছে সাতজন, দ্বিতীয় গ্রুপে ছয়জন। তাকিয়া মহলের দুটো অংশে দুটো গ্রুপ আলাদা রাখা হয়েছে। আজ পাঁচ বছর হতে চলল, কোন গ্রুপকেই কোন গ্রুপের সাথে দেখা করতে দেওয়া হয় না। কেন হয় না, কেউ জানে না। কায়জুদ্দিনও না। কখনও জানতেও চায়নি সে। প্রথম প্রথম মনে হত, গ্রুপ দুইয়ের ওরা কেমন আছে? কী করছে?

    কিন্তু পাঁচ বছরে কায়জুদ্দিনের ভেতরের আগুনটা যেন নিভে গেছে। সেই উন্মত্তের মত মানুষের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়া, রাতের অন্ধকারে অন্ধকার হয়ে ‘মাল’ সরানো, খালাসিদের ঠেকে গিয়ে ঢক ঢক করে তিন নাম্বার কেরু গেলা গ্লাসের পর গ্লাস। সেই বেয়াড়া জীবনটা নিয়মতান্ত্রিকতার বাক্সে বন্দী হয়ে গিয়েছে। যে হাতে সে মানুষের চোখ গেলে দিত, সেই হাতে সে এখন বাগানে ফুল ফোটায়। এই কি প্রায়শ্চিত্ত? কখনও যদি এখান থেকে ছাড়া পায় কায়জুদ্দিন, আবার কি ফিরে যাবে তার পুরনো পৃথিবীতে? যেখানে তার এক একটা নিঃশ্বাসের দাম কোটি টাকা। ডঃ বশির জামানকে সে অনেকবার প্রশ্ন করেছে কবে এই তাকিয়ে মহল থেকে ছাড়া পাবে? বশির জামান মাথা নেড়ে আশ্বাস দিয়েছেন- “হবে হবে, সময় হলেই ছাড়া পাবা অত তাড়া কিসের কায়জুদ্দিন? ধৈর্য্য ধরো।”

    কায়জুদ্দিন প্রথম প্রথম খুব কষ্ট করে ধৈর্য্য ধরার চেষ্টা করত। হাত নিশপিশ করত এক ফোঁটা রক্ত দেখার জন্য। মানুষকে হায়েনার মত ছিঁড়ে ছিন্নভিন্ন করতে ইচ্ছা করত। এখন আর কিছু মনে হয় না। আসলেই তো, বেশ তো আছে। রোজ খাওয়াদাওয়া পাচ্ছে। লাইব্রেরি আছে। বই পড়ার অভ্যাস হয়েছে কিছুটা। বাগানে কাজ করছে। সপ্তাহে একটা করে চমৎকার সিনেমা দেখতে পাচ্ছে। খারাপ কি? বয়স তো কম হল না। বাইরে গিয়ে কি করবে কায়জুদ্দিন? আবার মানুষ শিকার করতে নামবে? নাহ! কায়জুদ্দিন এখানেই ভালো আছে।

    করিডোরের প্রবেশ পথে লাগানো মাইকটার দিকে তাকালো কায়জুদ্দিন। একটু পরেই মাগরিবের আজান দেবে। সবগুলো দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে আজানের পরে। গত পাঁচ বছরের পুরনো নিয়ম। কায়জুদ্দিন নিড়ানিটা টুলবক্সে রেখে করিডোরের দিকে হাঁটা শুরু করল। আগে গার্ডরা সন্ধ্যা হলেই সবাইকে মুরগির মত খোয়াড়ে ঢুকাতো। এখন অভ্যাস হয়ে গেছে।

    গুড়গুড় করে মেঘ ডাকল। ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পড়তে শুরু করেছে। অন্ধকার হয়ে আসছে চারপাশ। কায়জুদ্দিন তখনও করিডোর পর্যন্ত পৌঁছায়নি, মাগরিবের আজানের বদলে মাইকে একটা কণ্ঠ শোনা গেল।

    “অতি সত্বর সবাইকে নিজ নিজ সেলে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। অতি সত্বর সবাইকে নিজ নিজ সেলে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সবাইকে নিজ নিজ সেলে থাকার জন্য আদেশ করা যাচ্ছে।”

    এখন তো সেলে যাওয়ার সময় না! রাত আটটা তো এখনও বাজেনি। কায়জুদ্দিন এদিক ওদিক তাকাতে লাগল কি হচ্ছে বোঝার জন্য। কয়েকজন গার্ডকে দৌড়ে যেতে দেখল সে। করিডোরে তপন আর সুমিতকে দেখা গেল না।

    মাইকে তীক্ষ্ণ অ্যালার্ম বেজে উঠল। এক টানা বিরতি দিয়ে বাজতে থাকল অ্যালার্মটা। বঁ বঁ বঁ বঁ।

    কায়জুদ্দিন করিডোর ধরে নিজের সেলের দিকে যেতে থাকল। হঠাৎ একটা গার্ডকে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করল, “কি হয়েছে? কিছু হয়েছে নাকি? শুনছেন?” গার্ডটার চোখে-মুখে আতঙ্ক। কায়জুদ্দিনকে পাশ কাটিয়ে দৌড়ে চলে গেল গার্ডটা। অ্যালার্মের শব্দ করিডোরে করিডোরে প্রতিধ্বনিত হতে লাগল।

    কায়জুদ্দিন আরও কয়েকজন গার্ডকে দেখতে পেল। তাদেরকেও একই প্রশ্ন করল। একটা গার্ড তাকে বলল তাড়াতাড়ি সেলে যেতে। খটখট করে এলোমেলো বুটের শব্দগুলো হারিয়ে গেল।

    সবার চোখে-মুখে আতঙ্ক দেখতে পেল কায়জুদ্দিন। কিন্তু সেই আতঙ্কের কারণ কি সেটা জানতে হবে তাকে।

    বাইরে ঝমঝম করে বৃষ্টি নেমেছে।

    কায়জুদ্দিন দ্রুত পায়ে নিজের সেলের দিকে হাঁটা শুরু করল। ওখানে নিশ্চয় বাকিরা আছে। তারা হয়ত কিছু বলতে পারবে। কায়জুদ্দিন নিজের সেলে পৌঁছানোর সাথে সাথে পাশের সেল থেকে মুনশী মোস্তাক তাকে প্ৰশ্ন করল, “কি হয়েছে?” কায়জুদ্দিনেরও তো একই প্রশ্ন। কেউ জানে না কি হয়েছে।

    বঁ বঁ বঁ বঁ

    অ্যালার্মের শব্দ ছাপিয়ে দূর থেকে এলোমেলো গুলির শব্দ কানে আসতেই কায়জুদ্দিনের সারা শরীর বরফের মত জমে গেল। গার্ডরা গুলি চালাচ্ছে নাকি? এই পাঁচ বছরে তো এই তাকিয়া মহলে কখনও গুলি চলেনি।

    হঠাৎ ডায়েরিটার কথা মনে পড়ল তার। তাড়াতাড়ি নিজের সেলে গিয়ে ডায়েরিটা খুঁজতে লাগল সে।

    আশেপাশের সেলগুলোতে হৈচৈ শুরু হয়ে গিয়েছে। আস্তে আস্তে গুলির শব্দ বাড়ছে। ঝম ঝম করে বৃষ্টি পড়ছে। সাথে মেঘের গুরুগম্ভীর গর্জন। সবকিছু ছাপিয়ে বেজে চলেছে কক অ্যালার্ম।

    বঁ বঁ বঁ বঁ

    ডায়েরিটা বাঁচাতে হবে, ওটা যেন ভুল কারও হাতে না পড়ে। ডায়েরিটা খুঁজতে থাকে সে। যেভাবেই হোক ওটাকে নিরাপদ জায়গায় রাখতে হবে। চিন্তার ঝড় বয়ে যাচ্ছে কায়জুদ্দিনের মাথার ভেতরে। এই পাঁচ বছরে এমন কিছুই হয়নি যার জন্য গার্ডদেরকে গুলি চালাতে হবে। আজ কী এমন হল যে গুলি চলছে?

    ডায়েরিটা কোথায় রেখেছিল কায়জুদ্দিন মনে করতে পারল না। বালিশের নিচটা দেখল। তোষকের নিচটা দেখল। নাহ, কোথাও নেই। কায়জুদ্দিন হাঁটু গেড়ে বসে খাটের নিচে উঁকি দিতেই ডায়েরিটাকে পেয়ে গেল। নেভি ব্লু মলাটের সেই ডায়েরি। পাঁচ বছর ধরে সে এই ডায়েরিটা আগলে রেখেছে যক্ষের ধনের মত।

    হঠাৎ কায়জুদ্দিনের নাম ধরে কে যেন ডাকল। কায়জুদ্দিন ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল, সেলের দরজার কাছে সুমিত দাঁড়িয়ে আছে। তাকে ডাকছে।”তাড়াতাড়ি কায়জুদ্দিন ভাই। আমাদেরকে পালাতে হবে,” সুমিত বলল।

    কায়জুদ্দিন বলল, “কেন? কোথায় পালাব?”

    সুমিত বলল, “আসেন তো তাড়াতাড়ি। সবাই সেল ছেড়ে বের হয়ে গেছে। জানি না কি হয়েছে। গোলাগুলি হচ্ছে।”

    কায়জুদ্দিন কপালের ঘাম মুছতে মুছতে বলল, “তুমি এগোও, আমি আসছি।”

    সুমিত চলে গেল। তার পায়ের শব্দটা করিডোরে প্রতিধ্বনিত হতে হতে অ্যার্লামের শব্দে চাপা পড়ে গেল। কায়জুদ্দিন হঠাৎ খুব কাছে একটা আর্তনাদ শুনতে পেল। এমন আর্তনাদ অনেক শুনেছে কায়জুদ্দিন। কিন্তু নিজেকে সেই আর্তনাদের বিপরীত দিকে দেখে অভ্যস্ত সে। একটা সময় ছিল তড়িৎ বেগে সিদ্ধান্ত নিত। কিন্তু এতদিন ‘নিশ্চয়তার ভেতরে থেকে থেকে তার পাঁচটা ইন্দ্রিয় ভোঁতা হয়ে গিয়েছে। অনিশ্চয়তা মানুষের টিকে থাকার সামর্থ্য বাড়ায়। খাদ্যের অনিশ্চয়তা, জীবনের অনিশ্চয়তা, মৃত্যুর অনিশ্চয়তা। ‘নিশ্চয়তা’ কায়জুদ্দিনের টিকে থাকার সামর্থ্য কমিয়ে দিয়েছে। কায়জুদ্দিন বুঝতে পারল না এখন তার কি করা উচিত।

    অনেকগুলো পায়ের শব্দ শুনতে পেল সে। আস্তে আস্তে পায়ের শব্দগুলো কাছে আসছে। আরও কাছে আসছে।

    কায়জুদ্দিন সেলের ছোট্ট জানালার দিকে তাকাল। তারপর খাটটা টেনে নিয়ে জানালা বরাবর রেখে খাটের ওপরে উঠে দাঁড়ালো। জানালা দিয়ে ডায়েরিটা ছুঁড়ে ফেলে দিল বাইরে।

    আরও কয়েকটা আর্তনাদ শুনল কায়জুদ্দিন।

    এলোমেলো পায়ের শব্দগুলো কায়জুদ্দিনের সেলের দিকে এগিয়ে আসছে। কায়জুদ্দিন নিঃশ্বাস বন্ধ করে খাটের ওপরে দাঁড়িয়ে থাকল পাথরের মূর্তির মত। তার কালো অতীতের পাপগুলোই যেন তার সেলের দিকে এগিয়ে আসছে আস্তে আস্তে।

    বিকট শব্দে আশেপাশে কোথাও বজ্রপাত হল। চাপা পড়ে গেল এক তীক্ষ্ণ আর্তনাদ।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleশব্দযাত্রা লেখক সংঘ – জুবায়ের আলম
    Next Article জুল ভের্ন অমনিবাস ৫ (পঞ্চম খণ্ড) – অনুবাদ : মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়

    Related Articles

    জুবায়ের আলম

    শব্দযাত্রা লেখক সংঘ – জুবায়ের আলম

    August 14, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.