Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025

    অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025

    আলস্যের জয়গান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    ফ্রানৎস কাফকা গল্পসমগ্র ১ – অনুবাদ : মাসরুর আরেফিন

    ফ্রানজ কাফকা এক পাতা গল্প619 Mins Read0
    ⤶

    পরিশিষ্ট : তিনটি সাহিত্য সমালোচনা – ফ্রানৎস কাফকা

    পরিশিষ্ট
    তিনটি সাহিত্য সমালোচনা – ফ্রানৎস কাফকা

    একটি তারুণ্যের উপন্যাস

    ফেলিক্স স্টারহাইম: তরুণ ওভালডের গল্প (Die Geschichte des jungen oswald) প্রকাশক: হুইপেরিয়নফেরলাগ্‌ হানস্ ফন ভেবার, মিউনিখ, ১৯১০

    এ উপন্যাসটির নিজের অভিপ্রায় এমনটি কিনা জানি না, তবে তরুণেরা পড়ে খুশি হবে এমনই এক লেখা এটি।

    চিঠি আদান-প্রদানের আঙ্গিকে লেখা এই উপন্যাস যখন কোনো তরুণ পড়া শুরু করবে, পাঠককে একধরনের ছলাকলাহীন অনভিজ্ঞতার ভঙ্গি নিতে হবে, কারণ সে যদি শুরুতেই আবেগের স্থির ও অবিচল স্রোতের মধ্যে অত জলদি মাথা ঢুকিয়ে দেয়, তাহলে এ-উপন্যাসের পাঠক হিসেবে তার প্রাপ্তি বেশি হবে না। আর সম্ভবত পাঠকের তরফ থেকে এই অনভিজ্ঞতার কারণেই, একদম শুরুতেই, সকালের পরিষ্কার আলোতে যেমন, তার সামনে ফুটে উঠবে লেখকের দুর্বলতাগুলো: ভেরথার-এর ছায়ার ওপরে ভর করে আছে এক সীমিত শব্দভান্ডার, বারবার ‘সোনামণি’ ও বারবার ‘চমৎকার’ শুনতে কানে যন্ত্রণা লাগে। বারবার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে এক তুরীয় আনন্দের, যার পরিপূর্ণতা কখনোই কমানো হচ্ছে না, যা এই বইয়ের পৃষ্ঠাগুলোর মধ্য দিয়ে চলছে মৃত-অবস্থায়-জন্ম-নেওয়া শিশুর মতো, প্রায়ই দেখা যাচ্ছে কোনোমতে আঁকড়ে আছে শব্দগুলোকে।

    কিন্তু পাঠক একবার সুখী ও স্বচ্ছন্দ বোধ করা শুরু করলে পরে, একবার সেই নিরাপদ ছাউনির নিচে পৌঁছে গেলে পরে (যার নিচের মাটি কাঁপছে গল্পের ভিতের প্রতি সাড়া দিয়ে), আর বুঝতে কষ্ট হয় না কেন উপন্যাসটির চিঠি বিনিময়ের আঙ্গিকটি এত জরুরি ছিল– লেখকের জন্য যতটুকু না দরকার ছিল এই আঙ্গিকের, তার চেয়ে আঙ্গিকটিরই লেখককে দরকার ছিল বেশি। চিঠি চালাচালির এই আঙ্গিকের কারণে দেখা যাচ্ছে কোনো চিরস্থায়ী পরিস্থিতির ভেতরেই কীভাবে আকস্মিক পরিবর্তন ঘটে যাওয়া সম্ভব –তবে তাতে আকস্মিক পরিবর্তনের আকস্মিকতা কিন্তু ব্যাহত হচ্ছে নাঃ প্রকাশ্য প্রতিবাদ জানিয়ে চিরস্থায়ী পরিস্থিতিকে সবার সামনে খোলাসা করে দিচ্ছে তা, আর সেই সঙ্গে এর চিরস্থায়িত্বও বিদ্যমান থাকছে। চিঠি বিনিময়ের এই ধাঁচের কারণে ঘটনাপরম্পরা একটু দেরিতে সংঘটিত হচ্ছে বটে, কিন্তু তাতে ক্ষতি হচ্ছে না কোনো; কারণ, যে মানুষটির ন্যায্য আবেগে আমরা মথিত হচ্ছি সে তার চিঠিগুলো লিখছে (সমস্ত ক্ষমতাশালীরা তাকে রক্ষা করুন) যখন পর্দা নামানো হয়ে গেছে –তার পুরো শরীর তখন শান্ত-স্থির, সে-অবস্থায় চিঠি লেখার কাগজের উপর দিয়ে অবিচল, মসৃণভাবে চলছে তার হাত। গভীর রাতে, আধো-ঘুমেও চলছে তার চিঠি লেখা; চোখ যত বড় করে কেউ তাকিয়ে দেখছে সেটা, তত দ্রুতই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে চোখ। দুটি ভিন্ন ঠিকানায় দুটি চিঠি লেখা হয়েছে পরপর, দ্বিতীয়টি সেই মন নিয়ে লেখা যা শুধু ভাবছে প্রথমটির কথা। চিঠিগুলো লেখা হয়েছে সন্ধ্যায়, রাতে, আর সকালেও; আপনার সকালের চেহারা সামনে তাকাচ্ছে আপনার রাতের চেহারা পেরিয়ে (রাতের চেহারা দেখে আপনাকে এরই মধ্যে আর চেনার উপায় নেই) আপনার সন্ধ্যার চেহারার দিকে– তখনো দৃষ্টি দেখা যাচ্ছে উপলব্ধি ও বোধশক্তিতে পরিপূর্ণ। প্রিয়তম, প্রিয়তম গ্রেটখে!’ এই কথাগুলো দুটি দীর্ঘ বাক্যের মধ্যে দেখা যাচ্ছে লুকানো, দুটি বাক্যকেই হঠাৎ অবাক করে দিয়ে ওখান থেকে বেরিয়ে আসছে তারা, বাক্য দুটি সরিয়ে দিয়েছে এক পাশে আর পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে নিয়েছে।

    আমরা ততক্ষণে সবকিছু পরিত্যাগ করেছি– খ্যাতি, কথাসাহিত্যের রচনারীতি, সংগীত, সব; আর আমরা হারিয়ে গেছি ঐ গ্রীষ্মকালীন গ্রামে, যেখানে মাঠ ও তৃণভূমি জুড়ে ‘ডাচ-ঢঙে বয়ে যাচ্ছে কালো, সরু, নাব্য খালগুলো, যেখানে সাবালিকা মেয়েদের, ছোট শিশুদের এবং এক চতুর মহিলার সঙ্গে বাস করে ওজভাল প্রেমে পড়েছে গ্রেটখেনের, ঘড়ির টিক-টিকের মতো ছোট ছোট বাক্য উচ্চারণের মধ্য দিয়ে চলছে তাদের ভালোবাসা। এই গ্রেটখেন দখল করে আছে উপন্যাসের স্থির কেন্দ্রবিন্দুটি; আমরা তার দিকে অবিরাম, সব দিক থেকে, ছুটে যাচ্ছি। খানিক পরপরই আমরা ওজভালকে হারিয়ে ফেলছি, কিন্তু গ্রেটখে থাকছে আমাদের দৃষ্টির সীমানাতেই; গ্রেটখেকে আমরা দেখছি তার ছোট বন্ধু-আত্মীয় পরিমণ্ডলের সবচেয়ে জোর উচ্চ হাসির মধ্যে, যেন ঝোঁপজঙ্গলের ভেতর দিয়ে আসছে হাসিটা। তার পরও তাকে ভালোমতো দেখার আগেই, তার সহজ-সুন্দর রূপটি ভালোমতো দেখার আগেই আমরা তার এত কাছে চলে আসি যে তাকে আর দেখতেই পাই না; তাকে কাছাকাছি কোথাও ভালোভাবে অনুভব করার আগেই আমাদের যেন তুলে নেওয়া হলো ওখান থেকে, আর আমরা তাকে তখন দূরে দেখতে পাচ্ছি ছোট কোনো বিন্দুর মতো। ‘গ্রেটখে তার ছোট মাথা রাখল বার্চ-কাঠের রেলিংয়ের ওপরে, এতে করে তার মুখের অর্ধেক ভেসে যাচ্ছে চাঁদের আলোয়।

    এই গ্রীষ্মের জন্য পাঠকের হৃদয়ে যে প্রশস্তির বোধ– কে সাহস নিয়ে বলবে (আরো ভালো হয় যদি বলি, কে সাহস নিয়ে দেখাবে) যে এই জায়গা থেকেই বইটি তার নায়ক, প্রেম, বিশ্বস্ততা আর সব সব ভালো জিনিস নিয়ে, এই জায়গা থেকেই বইটি সোজা পতনের পথে নেমে গেছে; শুধু জিতেছে এর নায়কের পত্রসাহিত্যিক কুশলতাটুকু– এটুকু নিয়ে প্রশ্ন তোলার কিছু নেই, তার কারণ শুধু এর নিস্পৃহ-উদাসীন ভঙ্গিমার মধ্যে নিহিত। আর তাই দেখা যায় পাঠক, যতই সে আগায় উপন্যাসটির শেষের দিকে, ততই তার মন কাঁদে সেই গ্রীষ্মকালে ফিরে যাওয়ার জন্য, যেখানে উপন্যাসটি শুরু হয়েছিল; আর সব শেষে, নায়কের আত্মহত্যা করবার খাড়া পাহাড়ের কাছে নায়কের পেছন পেছন না গিয়ে, পাঠক আনন্দের সঙ্গে ফিরে যায় সেই গ্রীষ্মে, সেখানে চিরকাল থাকবে ভেবে পরিতৃপ্ত।

    ক্লাইস্ট-এর ছোট বাস্তব কাহিনিগুলো

    কী খুশি লাগে এটা দেখতে যে কীভাবে মহান রচনাগুলো, এমনকি যখন অযৌক্তিকভাবে ওগুলো কেটে ছোট করা হয়েছে, তখনো কীভাবে তারা তাদের ভেতরকার অবিভাজ্য নির্যাসের বাইরে গিয়েও টিকে থাকে –দেখা যায়, তখনো, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই, সম্পূর্ণ অন্য রকম বিশেষ এক ঢঙে তারা ধাঁধিয়ে চলেছে আমাদের ক্লান্ত-শ্রান্ত দৃষ্টি। কোনো লেখকের সমগ্র সাহিত্যকর্মের সামান্য একটু অংশ নিয়ে বের হওয়া কোনো বিশেষ সংস্করণ যখন পাকাপোক্তভাবে আরো একবার আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে, তার সত্যিকারের ভালো দিকের ব্যাখ্যা ওপরের বাক্যটিতেই পাওয়া যায়। বিশেষ করে যখন ঐ বিশেষ সংস্করণগুলো হয় এরকম, যেমনটি হাইনরিখ ফন ক্লাইসট-এর এই ছোট, বাস্তব কাহিনিগুলোর (anecdotes) সংকলন –এতে তৈরি হয় নতুন এক ঐক্যের, তাই সত্যিকার অর্থে ক্লাইটের সৃষ্টিকর্মের ব্যাপ্তিই আরো বেড়ে যায়। এমন যদি হয় যে আমরা এই বইয়ের সমস্ত কাহিনি জানি, তবু এ ব্যাপ্তি ঠিকই বাড়ে– অবশ্য সবগুলো কাহিনিই যে সেই ব্যাপ্তি বাড়াতে সক্ষম তা বলা যাবে না। গবেষকেরাই বলতে পারবেন যে কেন ক্লাইসট-এর সমগ্র সাহিত্যকর্মের নানা সংস্করণেও এখানকার অনেক কাহিনি নেই, এমনকি টেমপেল সংস্করণেও; সাধারণ পাঠকেরা সেসব অবশ্য ধরতে পারবে না, আর সে কারণেই ফেরলা রোভোল্ট প্রকাশনীর এই সামান্য দুই মার্ক দামের, পরিষ্কার হরফ ও সমীহ জাগানো আকার-আয়তনের –সামান্য রঙের আভাযুক্ত এর কাগজ আমার বিশেষ ভালো লেগেছে –নতুন বইটি তারা আরো জোরে আঁকড়ে ধরবে।

    হুইপেরিয়ন–এক বিগত জার্নাল

    অর্ধেক বাধ্য হয়ে আর অর্ধেক স্বেচ্ছায় হুইপেরিয়ন ম্যাগাজিন তার যবনিকা টানল; এখন যা থাকল তা স্রেফ তার পাথরখণ্ডের মতো বড় বড় বারোটি সাদা ভলিউম। কেবল ১৯১০ এবং ১৯১১-এর হুইপেরিয়ন অ্যালমানাকগুলোই আমাদের সরাসরি মনে করিয়ে দিচ্ছে এর স্মৃতি, মানুষ এখন কাড়াকাড়ি করছে ওগুলো নিয়ে যেন ওরা কোনো বেখাপ্পা মৃতদেহের মনোযোগ-অন্যদিকে-সরানো কোনো পবিত্র স্মৃতিচিহ্ন। এর সত্যিকারের সম্পাদক ছিলেন ফ্রানৎস ব্লাই, এক প্রণম্য মানুষ যিনি তাঁর মেধার অগ্রপশ্চাদ্বিবেচনাহীনতা এবং, আরো বেশি করে বলতে হয়, বিচিত্রতার কারণেই যেন তাড়া খেয়ে ঢুকেছিলেন সাহিত্যের নিবিড় জগতে; কিন্তু সেখানে চালিয়ে যেতে না পেরে কিংবা নিজেকে খুলে দিতে না পেরে তিনি বদলে যাওয়া শক্তি নিয়ে পালিয়ে এলেন সাহিত্যপত্রিকা প্রতিষ্ঠা করবেন, এই আশায়। এর প্রকাশক ছিলেন হানস্ ফন ভেবার, যার প্রকাশনাপ্রতিষ্ঠান (যদিও প্রথমে হুইপেরিয়ন-এর ছায়ায় তা পুরো হারিয়ে গিয়েছিল) আজ জার্মানির প্রকাশনা জগতের অল্প কটি প্রতিষ্ঠানের একটি, যারা জানে তারা কোনদিকে চলেছে, আর সেই জানাটা জানে সাহিত্যের কোনো পাশের গলিপথে নেমে না গিয়ে আর একই সঙ্গে কোনো অতিব্যাপক কর্মসূচির বিরাট হইচই বাধিয়ে না দিয়েই।

    হুইপেরিয়ন-এর প্রতিষ্ঠাতাদের লক্ষ্য ছিল সাহিত্যপত্রিকা জগতের সেই শূন্যতাটুকু পূরণ করবেন, যা প্রথম চেষ্টা করেছিল প্যান (Pan), এরপরে ইজেল (Insel), এবং তার পর থেকে আবার দৃশ্যত যা ফাঁকাই ছিল। সত্যিকার অর্থে হুইপেরিয়ন-এর ভুলগুলোর শুরুও হয়েছিল এখান থেকেই, অবশ্য কোনো সাহিত্যপত্রিকাই মনে হয় কোনো দিন এত মহানভাবে কোনো ভুল করেনি। প্যান পত্রিকাটি তার সময়ে জার্মানিকে দিয়েছিল হতাশার সুফল –ওই হতাশা, ওই আতঙ্ক পত্রিকাটির থেকে অসংখ্য শাখা নিয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল হাজার ধারায়, এটি একত্র করেছিল অনেকগুলো শক্তিকে, যারা সবাই সমকালীন কিন্তু তখনো অপরিচিত; তারা যেন একে অপরকে সহায়তা ও সান্ত্বনা দেয়, সে কাজে তাদের। সক্ষম করে তুলেছিল এই পত্রিকা। ইজেল-এর সময়ে এগুলো আর এত জরুরি প্রয়োজনীয় ছিল না, পত্রিকাটি আমাদের মন ভোলাতে চেয়েছিল আর একটু, হয়তো মানের দিক থেকে নিচু একটু, ধারায়; হুইপেরিয়ন-এর প্রেক্ষাপট এ দুটির থেকেই ছিল ভিন্ন। এ পত্রিকাটি চেয়েছিল যেসব লেখক সাহিত্যজগতের বৃত্তের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে, তাদের জন্য প্রতিনিধির ভূমিকায় নামতে– বিশাল ও অতীব মূল্যবান এক প্রতিনিধিত্ব; কিন্তু কথা হচ্ছে ওই লেখকদের হয় সেই অধিকার পাওয়ার যোগ্যতা ছিল না, কিংবা মনের গভীরে তারা চাচ্ছিলও না যে কেউ তাদের প্রতিনিধিত্ব করুক।

    যেসব লেখকের স্বভাবই হচ্ছে মানুষের ভিড় থেকে একটু দূরে থাকা, তারা যদি কোনো সাহিত্যপত্রিকার পাতায় নিয়মিত হাজির হয়, তাহলে নিজেদেরই ক্ষতি করে তারা– সেখানে সূচিপত্রের অন্য সবকিছুর পাশে তাদের নিজেদের মনে হয় অতিপ্রখর আলোর নিচে দাঁড়িয়ে থাকা কেউ এবং তারা বাস্তবে যতটুকু অচেনা তার চেয়েও অচেনা লাগে নিজেদের। তারা অন্যের কাছ থেকে প্রতিরক্ষাও চায় না, কারণ তাদের না-বুঝতে পারাটাই তাদের বন্ধু, তারা যেহেতু গূঢ় ও রহস্যময়, তাই ভালোবাসা তাদেরকে খুঁজে নেয় যে কোনোখানে। অন্য কারোর উৎসাহেরও কোনো দরকার নেই তাদের, কারণ অকৃত্রিম ও খাঁটি থাকাটাই যেহেতু তাদের বাসনা, সেহেতু নিজেদের যত্ন তাদের নিজেদেরই নিতে হয়, কেউ তাদের কোনো সাহায্য করতে পারে না প্রথমে তাদের ক্ষতি না করে। অন্য সাহিত্যপত্রিকাগুলোর জন্য যে-সম্ভাবনা উন্মুক্ত– প্রতিনিধিত্ব করার, প্রদর্শন করার, রক্ষা করার ও শক্তি জোগানোর সম্ভাবনা –তা হুইপেরিয়ন-এর জন্য কখনোই ছিল না, তবে একই সঙ্গে কিছু বেদনাদায়ক বোঝা ছিল এই পত্রিকার ঘাড়ে; হুইপেরিয়ন-এ যেভাবে নানা সাহিত্যকর্ম ভিড় করত, ওই ধরনের সংকলনের তাতে করে সব সময়েই অসৎ হওয়ার প্রতি সমূহ আকর্ষণ থেকে যায়, অসততাগুলো থেকে নিজেকে রক্ষার ক্ষেত্রে সে হয়ে পড়ে অসহায়, শক্তিহীন; আর, অন্যদিকে, যদিও হুইপেরিয়ন-এ দেখা মিলত সাধারণ সাহিত্য ও শিল্পকলার সেরা কাজগুলোর, তবু বলা যাবে না যে সব সময় সূচিপত্রের সবকিছুর মধ্যে কোনো প্রীতিকর ঐকতান খুঁজে পাওয়া যেত, আর– যেভাবেই হোক –পত্রিকাটি থেকে এমন কোনো বিশেষ প্রাপ্তি মিলত না, যা অন্য কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না।

    তার পরও, এতসব সংশয় মিলেও, এই দুই বছরে আমাদের হুইপেরিয়নকে উপভোগের আনন্দ একটুও কমাতে পারেনি, কারণ এই উদ্যোগের যে উত্তেজনা (যে কোনো বীরোচিত কিছুই যতটা বর্বরসুলভ, ততটুকু বর্বরসুলভই ছিল এই উত্তেজনা) তা অন্য সবকিছু ভুলিয়ে দিয়েছিল; তবে হুইপেরিয়ন-এর জন্য কিন্তু এসব সংশয় ছিল আসলেই বাঁচা-মরার প্রশ্ন, আর আত্মনিন্দা থেকেই তারা নিশ্চিত এর বিলুপ্তি ঘটালেন, আরো আগেই হয়তো ঘটত এটা যদি সাধারণ মানুষের না-বোঝার ব্যাপারটা– সচেতনভাবে তারা অবশ্য এমনটা চায়নি –হুঁইপেরিয়ন-এর উদ্যোক্তাদের আগাম পথরোধ

    করত। তারা হুইপেরিয়ন-এর বিলুপ্তি ঘটিয়েছেন ঠিক কোনো ভূতের মতো, যে-ভূতের জন্য রাত শেষ হয়ে গেছে, আর যে-ভূত আমাদের জীবনের অন্য ভালো ভূতগুলো থেকে কোনোভাবেই কোনো বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূত নয়; আমাদের এ-জীবনকেই হুইপেরিয়ন নামের ভূত, কোনো রকম কোনো অনুমতি না নিয়েই, চেষ্টা করেছে নতুন এক বিভ্রান্তির মাধ্যমে নতুন এক বিন্যাসে নিয়ে আসতে। তবে এর স্মৃতির বিলুপ্তি ঘটা সম্ভব নয়, অন্য সবকিছু বাদ দিলেও শুধু একারণেই যে, নিশ্চিত আর কাউকে সামনের কোনো প্রজন্মে পাওয়া যাবে না যার থাকবে এরকম ইচ্ছাশক্তি, ক্ষমতা, আত্ম-উৎসর্গ করার সাহস এবং প্রবল উৎসাহী আত্মবিভ্রমের এমন স্বভাব নিয়ে এজাতীয় কোনো উদ্যোগ আবার শুরু করার আগ্রহ; অতএব, সে কারণেই, অবিস্মরণীয় হুইপেরিয়ন এরই মধ্যে শুরু করেছে সব ধরনের বৈরিতার ঊর্ধ্বে চলে যাওয়া, এবং আজ থেকে দশ বা বিশ বছরের মধ্যে এটি কোনো বিবলিওগ্রাফিক্যাল ভান্ডারের [bibliographical; লেখক বা বিষয়ের গ্রন্থ ও রচনার তালিকা সম্বন্ধীয়] থেকে কিছু কম হয়ে উঠবে না।

    ⤶
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleক্রাইম এন্ড পানিশমেন্ট – ফিয়োডোর ডস্টয়েভস্কি
    Next Article দ্য মেটামরফসিস – ফ্রানজ কাফকা

    Related Articles

    ফ্রানজ কাফকা

    দ্য মেটামরফসিস – ফ্রানজ কাফকা

    October 28, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025
    Our Picks

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025

    অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025

    আলস্যের জয়গান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }