Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    বকুলকথা – আশাপূর্ণা দেবী

    লেখক এক পাতা গল্প547 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ৩২. একটা প্রস্তাবের মুখোমুখি

    বকুলকে যে হঠাৎ এমন একটা প্রস্তাবের মুখোমুখি হতে হবে, তা কোনোদিন কল্পনা করে নি সে।

    সেই অকল্পিত অবস্থায় ভাসমান নৌকোয় পা রেখে বকুল তার প্রায় অপরিচিত জ্যাঠতুতো দাদার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।

    একটু আগে বকুল যখন তাদের সাহিত্যচক্রের পুনর্মিলনের অধিবেশন সেরে বাড়ি ফিরেছিল, তখন বড়বৌদির ঝি খবর দিয়ে গিয়েছি, পিসিমা, আপনাদের দর্জিপাড়ায় না কোথায় যেন কে জ্ঞাতি আছে, সেখান থেকে আপনার বুঝি কোন দাদা আপনার সঙ্গে দেখা করবে বলে অনেকক্ষণ বসে আছে।

    খুব ক্লান্ত লাগছিল; আবার এখন কার সঙ্গে কী কথা কইতে হবে, কত কথা কইতে হবে কে জানে! বকুলের সঙ্গে দেখা করবার জন্য যখন তিনি এতক্ষণ বসে আছেন, তখন যে সহজে ছাড়বেন এমন মনে হয় না।

    আর এমনও মনে হয় না বকুলের উপকার হতে পারে বা লাভ হতে পারে, এ রকম কোনো বিষয় নিয়ে এসে বকুলকে সেটুকু উপটৌকন দেবার জন্যে বসে আছেন।

    বাইরের কাপড় ছেড়ে হাত মুখ ধুতে ধুতে ভাবতে চেষ্টা করলো বকুল, কী হতে পারে? ও-বাড়ির সেই ছোটকাকার সেজদার মত কোনো সুবিধেজনক প্রস্তাব নিয়ে আসেননি তো? তাহলেই মুশকিল।

    ও-বাড়ির সেই সেজদা, যাকে অন্য কোথাও দেখলে চট করে চিনে ফেলা শক্ত বকুলের পক্ষে, কারণ সব থেকে যারা নিকটজন তাদের সঙ্গেই সব থেকে দূরত্ব।

    আসা-যাওয়ার পাটই নেই, ছেলে-মেয়ের বিয়ের সময় মহিলাদিগের ‘প্রীতিভোজ’ সম্বলিত কার্ডসহ যে নিমন্ত্রণপত্র এসে পৌঁছয়, তার সূত্রেই যা আসা-যাওয়া।

    তবু বকুলের সেই খুড়তুতো ভাই এসে বলে উঠেছিল, তোমাকে একটা কাজ করে দিতে হবে।

    সেদিনও বকুল বুঝেছিল কাজটা খুব সহজ নয়, হলে সেই ভদ্রলোক এসে এমনি বসে থাকতেন না।

    নরম হয়ে বলেছিল, কি বলুন?

    তিনি খুব অমায়িক গলায় বলেছিলেন, আমাকে আবার “আপনি আজ্ঞে” কেন রে? আমি কি পর? কাকা আলাদা বাড়িতে চলে এসেছিলেন তাই অচেনা, নচেৎ একই বাড়ি। একই ঠাকুমার নাতি-নাতনী আমরা।

    বকুলের তখন মনে পড়েছিল, একই ঠাকুর্দা-ঠাকুমার বংশধর এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ইনি একদা তাঁর কাকাকে যৎপরোনাস্তি যাচ্ছেতাই করে গিয়েছিলেন বকুলের বিয়ে না দেওয়ার জন্যে। এতে নাকি তাদের বংশেও কালি পড়ছে, তাদের মুখেও চুনকালি পড়ছে।

    অথচ বকুলের থেকে তিনি বয়েসে খুব যে বড় তাও নয়।

    সে যাক, সে তো তামাদি কথা, বকুল নম্র হয়ে বলেছিল, আচ্ছা কী করতে হবে শুনি?

    অর্থাৎ তুমি আপনি দুটোকেই এড়িয়েছিল।

    দাদাটি বলে উঠেছিলেন, বিশেষ কিছু না রে ভাই, যৎসামান্য একটু কাজ। আমার ছোট ছেলেটা চাকরির জন্যে দরখাস্ত করছে, তোকে তার জন্যে একটা ক্যারেক্টর সাটিফিকেট লিখে দিতে হবে।

    শুনে অবশ্যই বকুলের মাথা ঘুরে গিয়েছিল।

    বকুল প্রায় থতমত খেয়ে বলেছিল–কিন্তু আমি তো তাকে চিনিই না, হয়তো দেখিওনি–

    দাদা বিগলিত হাস্যে বলেছিলেন, দেখেছো নিশ্চয়ই, বিয়ে-থাওয়া কাজেকর্মে, তবে সে হয়তো তখন হাফপ্যান্ট পরে জল পরিবেশন করে বেড়াচ্ছে। আর চেনার কথা বলছিস? বলি আমাকে তো চিনিস? নাকি চিনিস না?

    এই নিতান্ত অন্তরঙ্গতায়– ‘তুই’ ‘তুই’ শব্দটা কানে খটখট করে বাজছিল, বকুল তাতে মনে মনে লজ্জিত হচ্ছিল। সত্যিই তো নিতান্ত আপনজন। এঁর বাবা আর আমার বাবা একই মাতৃগর্ভজাত।

    বকুল বলেছিল, আপনাকে চিনি না, কী যে বলেন! কিন্তু এখনকার ছেলেদের সম্পর্কে চট করে কিছু বলা তো মুশকিল। কি ধরনের বন্ধুদের সঙ্গে মেশে, হয়তো আপনার নিজের ছেলেকে নিজেই ভাল করে চেনেন না সেজদা!

    সেজদা উদ্দীপ্ত হয়ে বলে উঠেছিল, কেউ এসে কিছু লাগিয়েছে বুঝি? কিন্তু আমি এই তোমায় বলে দিচ্ছি বকুল, রকে বসে বলেই সে রকবাজ ছেলে? নিজের বাড়ির রকে বসে, ছেলেবেলা থেকে যাদের সঙ্গে চেনা সেই ছেলেরা এসে গল্পগাছা করে এই পর্যন্ত। তারা যে যেমন হোক, আমার প্রভাংশু সে জাতেরই নয়।

    সেজদা তার ছেলের জাতি সম্পর্কে নির্ভয়ে যত বড় সার্টিফিকেটই দিন, তাকে ফেরাতে হয়েছিল বকুলকে।

    বলেছিল, একেবারে না চিনে এভাবে লিখতে অসুবিধে বোধ করছি সেজদা।

    সেজদা অপমানাহত হয়েই চলে গিয়েছিলেন এবং বলে গিয়েছিলেন, বাইরের জগতে তোমার একটু নামডাক আছে বলেই বলতে এসেছিলাম, নইলে সেজখুড়িমা আমাদের যে রকম অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখতেন তাতে এ-বাড়িতে পা দেবার কথা নয় আমাদের।

    অনামিকা অবাক হয়ে তাকিয়েছিলেন সেই ক্ৰোধারক্ত মুখের দিকে, আর ক্ষণপূর্বের বিগলিত-হাস্য-মুখটার সঙ্গে মেলাতে চেষ্টা করছিলেন।

    যাক, সেই তো এক ঘটনা ঘটে বসে আছে ও-বাড়ির সঙ্গে। আবার কী?

    সেদিন ছোটবৌদি বলেছিল, লিখে দিলেই হতো বাপু দুলাইন, আপনার লোকের ছেলের একটু উপকার হতো। কোনো উপকারেই তো লাগি না।

    ছোড়দা বলেছিল, না না, ও ঠিক করেছে। জানা নেই কিছু নেই, ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট দিলেই হল? এখনকার ছেলেরা তো দুধে-দাঁত ভাঙবার আগেই পলিটিক্স করছে! কে কোন পার্টিতে ঢুকে বসে আছে কে জানে!

    বন্ধুবিচ্ছেদ হল এই আর কি!

    বলেছিল ছোটবৌদি।

    তখন শম্পা ছিল।

    তখন বিচ্ছেদ শব্দটার মানে জানত না ছোটবৌদি। ওকেই বিচ্ছেদ বলেছিল।

    সে যাক, আজ আবার জ্যাঠামশাইয়ের ছেলে কোন পরিস্থিতিতে ফেলবেন কে জানে!

    তবু এটা ভাবেনি। এটা অভাবনীয়।

    ও-বাড়ির বড়দা প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন, তোমার তো অনেক জানাশোনা, শুনলাম ম্যাজিসিয়ান অধিকারী তোমায় খুব খাতির করে, আমার এই নাতনীটাকে যদি ওদের দলে ঢোকাবার একটু চান্স পাইয়ে দিতে পারো!

    বকুলের মনে হয়েছিল বাংলা কথা শুনছে না, যে ভাষা শুনছে তা বকুলের অবোধ্য। বকুল অবাক হয়ে প্রশ্ন করে, কোন দলে?

    আহা ওই ম্যাজিকের দলে!

    বকুল প্রায় অভিভূতের মত বলে ফেলে, ও ম্যাজিক জানে?

    আহা ম্যাজিক না জানুক, ম্যাজিকের দলে অনেক মেয়েটয়ে নেয় তো। সুন্দরী সুন্দরী মেয়েদের চাহিদা আছে। এই যে বেবির একটা ফটো সঙ্গে এনেছি, এটা তুমি দেখাবে।

    বড়দা পকেট থেকে একটি খাম বার করে তার থেকে সন্তর্পণে একখানি ফটো বার করে টেবিলে রাখেন।

    বকুল তুলে নেয় হাতে করে। চেয়ে থাকে ছবিটার দিকে।

    অনেকটা যেন তার দিদি চাপার মত দেখতে। বংশের গড়ন থাকে, কাছে দূরে কোথাও কোথাও সেটা ধরা পড়ে।

    মেয়েটা যেন বড় বড় চোখে তাকিয়ে রয়েছে, ফটোটা তোলা ভাল হয়েছে।

    বকুল কি বলবে ভেবে না পেয়ে একটা অবাস্তব কথা বলে বসে, কোনখান থেকে তুলিয়েছেন ফটোটা?

    ভারত স্টুডিও থেকে। কেন, ভাল হয়নি?

    ভাল হয়েছে বলেই বলছি।

    বললে তুমি কি মনে করবে জানি না বকুল, দেখতে আরো ভাল। এ ফটো যদি তুমি একবার দেখাও, লুফে নেবে। তাছাড়া অন্য কোয়ালিফিকেশন আছে। সেবার সাইকেলে বাংলা বিজয় করে এলো জানো বোধ হয়। ওদের দলে আরো পাঁচটা ছেলে ছিল, ও সেকেণ্ড হয়েছিল। তাহলেই বোঝ।

    বকুল বুঝতে থাকে। বুঝতে বুঝতে ঘামতে থাকে।

    তারপর আস্তে বলে, কিন্তু এত সুন্দর মেয়ে, বিয়েটিয়ে না দিয়ে

    বড়দা উত্তেজিত হয়ে বলেন, বিয়ে তো আর অমনি হয় না বকুল! আমার অবস্থা তুমি না জানলেও তোমার ভাইয়েরা জানে! ওর বাপ তো চিরকালই নি-রোজগেরে। তাস-পাশা খেলে, পান খায়, ঘুরে বেড়ায়, আর রোজগারের কথা তুললেই বলে আমার হার্টের অসুখ, বুক গেল! তবে? ঘরের কড়ি যেখানে যা আছে খরচা করে বিয়ে না হয় দিলাম, তাতে আমার কী লাভ হলো? উনি মহারানী রাজ্যপাটে গিয়ে বসলেন, আমার হাড়ির হাল আরো হাড়ির হলো। না না, এটি তোমায় করে দিতেই হবে বকুল, খুব আশা নিয়ে এসেছি। ওরা নাকি মাইনেপত্তর ভাল দেয়।

    বকুল আস্তে বলে, তা হলেও শুনতে খারাপ তো! অন্য কোথাও কোনো কাজে যদি

    বড়দা আরো উত্তেজিত হয়ে বলেন, অন্য কোথায় কী কাজ জুটবে ওর বলো? স্কুল ফাইন্যালটাও তো পাস করেনি। কেবল এটা-ওটায় মন! আর শুনতে খারাপের কথা বলছে!… ওসব কথা আজকাল আছে নাকি? নেই। যে যাতে সুবিধে বুঝবে, তাই করবে, ব্যাস! ধিক দিতে সবাই পারে, ভিখ দিতে কেউ পারে না। আমার এক বন্ধুও সেদিন এই কথা বলেছে। বলেছে, দেখ ভাই, আমি ঠিক করেছি মেয়েদের বিয়ের চেষ্টা আর করব না। ওর আবার বুড়ো বয়সের সংসার, এখনো ঘরে আইবুড়ো মেয়ে। তাই বলে, বিয়ের চেষ্টা টেষ্টা করছি না। সারাজীবন ধরে দাতে দড়ি দিয়ে যেটুকু সংস্থান করেছি, তা কি ওই মেয়েটি তিনটের চরণে ঢালতে?…না, ওসবের মধ্যে আমি নেই। বরং মেয়েদের বলি, এতকাল যে বাবার পয়সায় খেলি পরলি, লেখাপড়া শিখলি, এবার বুড়ো বাপকে তার শোধ দে।… তা বড় মেজ দুই মেয়েই যাহোক কিছু করছে, ছোট মেয়েটাই একবগ্গা, বলে, ওসব আমার ভাল লাগে না। আমি বলি, তবে কী ভাল লাগে? বাপের মাথায় কাঁঠাল ভাঙতে? যখন বাইরে থেকে টাকা আহরণ করে আনবার ক্ষমতা রয়েছে, তখন ঘরের টাকা ভেঙে বাইরে যাবি কেন? আমিও তাই ভাবছি, জ্ঞানচক্ষু খুলে দিয়েছে সে। তুমি ভাই নাতনীর জন্যে একটু চেষ্টা করো। বলো খুব চালাক চতুর মেয়ে, যা শেখাবে তাই চটপট শিখে নেবে।

    বকুল হতাশ ভাবে বলে, কিন্তু আমার তো এমন কিছু জানাশোনা নেই।

    এ তোমার এড়ানো কথা বকুল! আমি কি আর ভেতরের খবর না নিয়ে এসেছি? তুমি একবার বলে দিলেই হয়ে যাবে।

    হয়তো হবে। কিন্তু বকুল সেই বলাটা বলবে কী করে?

    অনেকক্ষণ অনুরোধ-উপরোধের পর বড়দা বিরক্ত হয়ে উঠে পড়ে বললেন, তোমার লেখা বইটই আমি অবশ্য পড়িনি তবে বাড়িতে শুনিটুনি, বৌমাও বলেন খুব নাকি সংস্কারমুক্ত তুমি। অথচ এই একটা তুচ্ছ ব্যাপারে কুসংস্কারে তুমি আমাদের ঠাকুমা মুক্তকেশী দেবীর ওপর উঠলে! জীবিকার জন্যে মানুষের কত কীই করতে হয়, ‘পছন্দ নয়’ বলে কি আর বসে থাকলে চলে? আত্মীয়ের একটু উপকার করবে না তাই বলে? যাক, ও তো বলেছে নিজেই ওই অধিকারীর সঙ্গে দেখা করে চেষ্টা করবে। তোমার নিজের ভাইঝিটি তো একটা কারখানার মজুরের সঙ্গে বেরিয়ে গেছে, সেটায় মুখ হেঁট হচ্ছে না?

    চলে গেলেন তিনি। বকুল বসে রইলো।

    ভাবতে লাগলো মানুষ মরে গেলেও কি তার সত্যি কোথাও অস্তিত্ব থাকে? মুক্তকেশী দেবী নামের সেই মহিলাটি কি কোথাও বসে তার বংশের এই প্রগতি দেখছেন তাকিয়ে?

    বকুল কি তাহলে সত্যিই খুব সংস্কারাচ্ছন্ন?

    তবে বকুলের লেখা পড়লে সবাই তাকে একেবারে সংস্কারমুক্ত মনে করে কেন? বকুল কি ভেজাল?

    যা ভাবে তা লেখে না? অথবা যা লেখে তা ভাবে না?

    নাকি বকুলের হিসেবে প্রগতি শব্দটার অন্য মানে? সংস্কার শব্দটার অন্য ব্যাখ্যা?

    বকুল অবাক হয়ে ভাবে, এত সহজে চিরকালীন মূল্যবোধগুলো এমন করে ঝরে পড়ছে কী করে? একদা যারা বংশমর্যাদা, কুলমর্যাদা, পারিবারিক নিয়ম ইত্যাদি শব্দগুলোর পায়ে জীবনের অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা আরাম-আয়েস বিসর্জন দিয়েছে, তারাই কেমন করে সেগুলো ভেঙে তার ভাঙা টুকরোগুলোকে মাড়িয়ে চলে যাচ্ছে?

    তবু বকুল বার বার ওই ‘মুক্তকেশী দেবী’ শব্দটার আশেপাশে ঘুরতে লাগল। একদার প্রতাপ কোথায় বিলীন হয়ে যায়, সম্রাটের রাজদণ্ড শিশুর খেলনা হয়ে ধুলোয় গড়াগড়ি খায়। জীবনের ব্যাখ্যা অহরহ পরিবর্তিত হয়, সত্য অবিরত খোলস বদলায়। অথচ তার মধ্যেই মানুষ অমরত্বের স্বপ্ন দেখে। চিরন্তন শব্দটাকে অভিধান থেকে তুলে দেয় না।

    সুবিধেকে বলে সংসারমুক্তি, স্বার্থকে বলে সভ্যতা।

    আমরা অচলায়তন ভাঙতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমরা হাতুড়ি শাবল গাঁইতির যথাযথ ব্যবহার শিখিনি, তাই আমরা আমাদের সব কিছু ভেঙে বসে আছি।

    আজকের যুগ ওই গাঁইতি শাবল হাতে নিয়ে অনেক বড় বড় কথা বলছে, আর যথেচ্ছ আঘাত বসাচ্ছে। কথাগুলো বাতাসে উড়ে যাচ্ছে আর আঘাতে আঘাতে পায়ের তলার মাটিতে সুদ্ধ ফাটল ধরছে।

    কিন্তু এসব কথা হাস্যকর।

    মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলতে হবে, যা হচ্ছে তাই ঠিক। এই প্রগতি, এই সভ্যতা।

    কলমের আগায় লিখতে হবে, এ কিছু না, এ শুধু সূচনা, আরো চাই। আরো এগোতে হবে, শেষ পর্যন্ত শেষে গিয়ে পৌঁছতে হবে।

    কিন্তু কোথায় সেই শেষ?

    শেষ নাহি যার শেষ কথা কে বলবে?

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleসুবর্ণলতা – আশাপূর্ণা দেবী
    Next Article প্রথম প্রতিশ্রুতি – আশাপূর্ণা দেবী

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }