Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    সক্রেটিসের আগে – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025

    পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025

    দ্য মেটামরফসিস – ফ্রানজ কাফকা

    October 28, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞান – মরিস বুকাইলি

    খন্দকার মাশহুদ-উল-হাছান এক পাতা গল্প323 Mins Read0
    ⤷

    ০১. ভূমিকা নয়, সূচনা

    বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞান / মূল : ড. মরিস বুকাইলি / রূপান্তর : খন্দকার মাশহুদ-উল-হাছান

    প্রকাশক : জ্ঞান বিতরণী
    প্রথম প্রকাশ : একুশে বইমেলা-২০১২

    .

    অনুপ্রেরণার প্রয়াসে
    শামীমা হাছান নিম্নি

    .

    ভূমিকা

    প্রকৃতপক্ষে, পাঠকদের উদ্দেশে আমার প্রথমেই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি কামনা করা উচিত। কেননা, “ভূমিকার বদলে” এই গ্রন্থে আমি একটি ভূমিকার স্বরূপ সন্নিবেশিত করেছি কিন্তু তবুও “প্রথা” বলে কথা। বইতে যেন ভূমিকা একটি দিতেই হবে, এ না হলে আমাদের দেশের পাঠক-প্রকাশকদের একটি বদ্ধমূল ধারণা জন্মে গেছে যা ভেঙে দেবার সাহস, সাধ আমার থাকলেও সাধ্য নেই।

    যাহোক কথা বাড়িয়ে লাভ নেই; এখানে এখন শুধু এটুকুই বলবো, এই গ্রন্থ গ্রন্থিত হয়েছে ড. মরিস বুকাইলির বাইবেল কোরআন বিজ্ঞান গ্রন্থকে উপলক্ষ করে। আর তাই এই বইয়ের নাম দেয়া হয়েছে “বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞান”।

    এক্ষেত্রে, ড. মরিস বুকাইলির বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞান বইতে যা পাঠনীয় রয়েছে, উপরন্তু আরও বেশিকিছু নতুন তথ্য সন্নিবেশিত হয়েছে। ফলে, এই বইয়ের পাঠক বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞান বইতে পঠনীয় পাঠসহ আরও বেশকিছু নতুন তথ্য পাবেন। এই গ্রন্থকারের এই গ্রন্থনার উদ্দেশ্য তিনি মনে করেন, ড. মরিস বুকাইলি এখন যদি তার বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞান বইটি লিখতেন, সম্ভবত তিনি এ সকল তথ্য সন্নিবেশিত করতেন। এমনকি আরও বেশিকিছু।

    যাহোক, অনেকে হয়তো ভাবতে পারেন কলেবরে কম অথচ তথ্যেসমৃদ্ধ এ আবার কেমন দাবি? উত্তরে বলবো, বইটি পড়ে দেখুন।

    শেষোক্ত, গ্রন্থকার নিজের সকল ঔদ্ধত্যপনা এবং পুনর্ব্যক্ততার জন্য পরীক্ষা প্রার্থনীয় হয়ে সকলের ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি প্রার্থনা করে আমার একমাত্র পুত্র খন্দকার শামস্ ইবতেহাজ জাহানের প্রজন্মের হাতে বইটি তুলে দেয়া হলো যেন বইটি সর্বপঠনীয় হয়ে ওঠে এই কামনায়। প্রকাশকসহ প্রকাশনার কাজে যারা নিরলস কাজ করেছেন তাঁদের ধন্যবাদ জানাবার দুঃসাহস আমার না থাকলেও জানালাম, পাঠকদের নিকট পরীক্ষা প্রার্থনীয় থেকে বিদায় নিলাম।

    –খন্দকার মাশহুদ-উল-হাছান

    ভূমিকা নয়, সূচনা

    নিজ নিজ ধর্মগ্রন্থ রয়েছে, একত্ববাদী এমন তিনটি ধর্ম-ইহুদি, খ্রিস্টান ও ইসলাম। এ সকল ধর্মে বিশ্বাসীদেরকে তাদের ইহুদি, খ্রিস্টান ও মুসলমান। যে ধর্মে যে বিশ্বাসী তাদের কাছে তিনি যে-ই হোন-না-কেন, তাঁর ধর্মগ্রন্থ তাঁর বিশ্বাসের বুনিয়াদ, নিজ নিজ ধর্মগ্রন্থকে আসমানী ওহীর লিপিবদ্ধ রূপ বলে বিবেচনা করেন। তাঁদের বিশ্বাস, এ ধরনের ওহী হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এবং হযরত মুসা (আঃ) সরাসরি আল্লাহর কাছ থেকে পেয়েছিলেন এবং ওহী হযরত ঈসা (আঃ) লাভ করেন ফাদার বা পিতার নামে আর হযরত মোহাম্মদ (দঃ) লাভ করেছিলেন প্রধান ফিরিস্তা জিব্রাইলের মাধ্যমে।

    ধর্মীয় ইতিহাসের নিরপেক্ষ বিচারে তাওরাত, জবুর, ইঞ্জিল অর্থাৎ বাইবেলের পুরাতন ও নতুন নিয়ম এবং কোরআন একই ধরনের ওহী বা প্রত্যাদেশপ্রাপ্ত ধর্মগ্রন্থ।

    যদিও বর্তমান সভ্য-জগতের সাল-গণনার প্রথম শতকে এবং আরও অনেক আগেও ‘বাইবেল’ শব্দটি কারও জানা ছিল না। অর্থাৎ কোন পুস্তককে, নাম বাইবেল ছিল না। অবশ্য, চতুর্থ শতকে কনস্টান্টিপোলের (বর্তমানে যে-স্থান ইস্তাম্বুল) একজন গোষ্ঠীপতি জন ক্রাইসোটর ইহুদিদের দ্বারা সংগৃহীত পুঁথিগুলোকে ‘বিবলিয়া’ অর্থাৎ ‘বুকস’ (গ্রন্থমালা) বলে উল্লেখ করেছেন।

    বাইবেলের দুটি অংশ : প্রথম অংশকে বলা হয় ‘পুরাতন নিয়ম’ (The old Testament)। এতে রয়েছে, যীশুর অবর্তমানে বিভিন্ন লেখক কর্তৃক যীশুর জীবনী, উপদেশাবলী এবং প্রতি প্রত্যাদিষ্ট ঐশীবাণীসমূহের অংশবিশেষ প্রসঙ্গক্রমে বিক্ষিপ্ত বিচ্ছিন্নভাবে।

    এখন থেকে সোয়াশ’ বছর আগে থেকে আরম্ভ করে এখনপর্যন্ত অনেক জ্ঞানীব্যক্তি বিশুদ্ধ খ্রিস্টান হয়েও বাইবেলের উক্তিগুলোকে ঠিক আপ্তবাক্য বলে মেনে না নিয়ে, নিজেদের বিচার-বুদ্ধির আলোকে ক্রমাগত তথ্য অনুসন্ধান করতে করতে সুসমাচার সম্বন্ধে অনেক নতুন নতুন তত্ত্ব আবিষ্কার করেছেন। যা আপ্তবাক্যের চেয়েও নির্ভরযোগ্য।

    তাঁদের সকলের সিদ্ধান্ত সবসময় একইরকম না হলেও তা থেকে মোটামুটি ধারণা জন্মে যে, বাইবেলের নতুন নিয়ম ‘পুরাতন নিয়ম’-এর বৈপরীত্য ছাড়াও নানারকম তর্ক-বিতর্ক বাক-বিতণ্ডার সৃষ্টি করে।

    এই পুস্তকে কোনো ধর্মগ্রন্থ বা ধর্মাবলম্বীকে বা তাঁর বা তাদের বিশ্বাসকে আঘাত হানার প্রয়াস চালানো হয়নি বরং বিশ্বাস করে নিতে দ্বিধা নেই একত্ববাদী ধর্মাবলম্বীদের নিকট অবশ্যই অনেক ঐশ্বরিক প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন প্রত্যাদেশপ্রাপ্ত ধর্মগ্রন্থ এসেছে।

    যদিও মুসলমানেরা এই নীতি মেনে চলেন, কিন্তু কোরআনকে পাশ্চাত্যের ইহুদী-খ্রিস্টান সংখ্যাগুরু সমাজ প্রত্যাদেশপ্রাপ্ত ধর্মগ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চান না। ধর্মগ্রন্থ সম্পর্কে পরস্পরের এই যে দৃষ্টিভঙ্গি, খুব সম্ভবত এ থেকেই কারো বুঝতে কষ্ট হওয়ার কথা নয়, একটি ধর্মীয় সমাজ অপর ধর্মীয় সমাজ সম্পর্কে কি ধরনের মনোভাব পোষণ করেন। ইহুদিদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ হিব্রু ভাষার বাইবেল। উল্লেখ্য, হিব্রু বাইবেল খ্রিস্টানদের বাইবেলের অন্তর্ভুক্ত ‘ওন্ড টেস্টামেন্ট বা পুরাতন নিয়ম’ থেকে আলাদা।

    খ্রিস্টানরা এই ‘ওল্ড টেস্টামেন্টে’ বেশ কয়েকটি অধ্যায় সংযোজন করেছেন যা হিব্রু বাইবেলে অনুপস্থিত। এই সংযোজনা কিন্তু বাস্তবে ইহুদি মতবাদে তেমন কোন পরিবর্তন ঘটিয়েছে বলে মনে করার কোনো কারণ নেই। কেননা, ইহুদিরা নিজস্ব হিব্রু বাইবেলের পরে আর কোনো ধর্মগ্রন্থ অবতীর্ণ হওয়ার কথা অস্বীকার করেন। হিব্রু বাইবেল যেমনটি ছিল তেমনইভাবে তাকে গ্রহণ করা হলেও এরসঙ্গে খ্রিস্টানরা আরও কিছু নতুন অধ্যায় সংযোজন করেছেন। যদিও খ্রিস্টানরা যীশুর ধর্মপ্রচারের সাথে পরিচিত সবগুলো রচনাকে ধর্মগ্রন্থ হিসেবে গ্রহণ করেননি। যীশুর জীবনী ও শিক্ষা-সংক্রান্ত পুস্তকের সংখ্যা কম ছিল না, তবুও নিজেদের ধর্মগ্রন্থ হিসেবে গির্জার পুরোহিত-অধিকারীরা এসব থেকে যাচাই-বাছাই ও কাট-ছাঁট করে শুধু কয়েকটি রচনাকে ধর্মগ্রন্থের মর্যাদা দিয়েছেন। এভাবে, কিছুসংখ্যক রচনা বাইবেলের নিউ টেস্টামেন্টে স্থান পেয়েছে। এরমধ্যে প্রামাণ্য ও গুরুত্বপূর্ণ বলে পরিচিত চারটি গসপেল বা সুসমাচার। খ্রিস্টানরাও যীশু এবং তাঁর প্রেরিতদের পর আর কোনো প্রত্যাদেশের অস্তিত্ব অস্বীকার করেন। তাই কোরআন তাদের কাছে বাতিল বলে গণ্য।

    যীশুখ্রিস্টের ছশ বছর পর কোরআনের বাণীসমূহ অবতীর্ণ হয়, তাওরাত ও গসপেলের (ইঞ্জিল) বহু তথ্য ও পরিসংখ্যানের উল্লেখ ছাড়াও কোরআনে তাওরাত ও ইঞ্জিলের বহুল উদ্ধৃতি বিদ্যমান। কোরআন : ৪ : ১৩৬-এর মাধ্যমে ইতিপূর্বেকার সবগুলো আসমানী কিতাবের উপর বিশ্বাস স্থাপনের জন্য মুসলমানদের প্রতি নির্দেশ রয়েছে। তাছাড়াও, কোরআন অন্যান্য পয়গম্বর যেমনঃ যীশু বা হযরত ঈসা, হযরত মুসা ও তার পরবর্তী নবীদের এবং তাঁদের ওপর অবতীর্ণ হওয়া আল্লাহর বাণী সম্পর্কে সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে। বিশেষ এক মর্যাদা দেয়া হয়েছে যীশু বা হযরত ঈসা (আঃ)-কে। বাইবেলের মতো কোরআনও তাঁর জন্মকে অতি-প্রাকৃতিক ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেছে। কোরআনে যীশুমাতা মেরী বা হযরত মরিয়ম বিশেষ মর্যাদার আসনে আসীন। এমনকি কোরআনের ১৯নং সূরার নামকরণ করা হয়েছে যীমাতার নামানুসারে ‘মরিয়ম’।

    সাধারণভাবে পূর্ববর্ণিত তথ্যসমূহ পাশ্চাত্যের লোকজনের অজানা। যদিও, তাই বলে বিস্ময়ের কিছু নেই, পাশ্চাত্য জগতে পুরুষানুক্রমে এমনভাবে এই শিক্ষাই দিয়ে আসা হচ্ছে। এক্ষেত্রে, তাঁদের অন্যতম প্রচারণা ইসলাম ধর্ম সম্পূর্ণভাবে একজন মানুষের সৃষ্টি এবং এই ধর্মের প্রবর্তনায় গড বা বিধাতার (খ্রিস্টীয় অর্থে) কোনো ভূমিকা নেই।

    এখন বহু ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি ইসলামের দার্শনিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ভূমিকা সম্পর্কে আগ্রহী হলেও তারা কখনো ইসলামের ওহী বা প্রত্যাদেশপ্রাপ্ত বাণী-সম্পর্কে তথ্যানুসন্ধানের তেমন কোনো আগ্রহ অনুভব করেননি। অথচ, তা করা তাদের উচিত।

    ড. মরিস বুকাইলি বলেন, “যখন আমি বাইবেল ও কোরআনের তুলনামূলক বিচার-বিশ্লেষণের জন্য খ্রিস্টান মহলের সাথে মত বিনিময়ের চেষ্টা চালিয়েছিলাম, তখন এই অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে, মুসলমানদের কী ঘৃণার চোখেই না দেখে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীগণ।”

    ড. মরিস বুকাইলি বুঝতে পেরেছিলেন তাঁরা চিরাচরিত পদ্ধতিতেই কোরআনের প্রতি অনীহা প্রকাশ করেছেন। বিভিন্নবিষয়ে কোরআনের যে বক্তব্য, তা গ্রহণ করা তো দূরের কথা, এতদসংক্রান্ত কোনো বিষয়ে কোরআনের প্রতি সামান্য আকার-ইঙ্গিতও তারা আমলে নিতে রাজি হননি। কোরআনের কোনো উদ্ধৃতি তাঁদের কাছে দেয়া যেন শয়তানের বরাত দিয়ে কথা বলার সমান।

    যাহোক, এখন খ্রিস্টান-জগতের সর্বোচ্চ পর্যায়ে এ-বিষয়ে বেশকিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। ভ্যাটিক্যানের নন-ক্রিশ্চিয়ান অ্যাফেয়ার্স দফতর থেকে দ্বিতীয় ভ্যাটিক্যান কাউন্সিলের পর একটি তথ্যমূলক পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এর ফরাসি নামের বাংলা হচ্ছে ‘মুসলিম-খ্রিস্টান আলাপ আলোচনায় দিক-নির্দেশিকা’। ১৯৭০ সনে ফরাসি ভাষায় এর তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় রোমের “আনকোরা” নামের এক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান থেকে।

    এই পুস্তকে মুসলমানদের ব্যাপারে ভ্যাটিক্যানের দৃষ্টিভঙ্গি যে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে তার পরিচয় পাওয়া যায়। কারণ, এই পুস্তকে ইসলাম সম্পর্কে খ্রিস্টানদের প্রতি অতীত থেকে পাওয়া যাবতীয় বাতিল ধারণা ও কুসংস্কার এবং বিদ্বেষপ্রসূত বিকৃত মতামত পরিহারের জন্য বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ভ্যাটিক্যান থেকে সম্প্রচারিত এই দলিলে স্বীকৃত হয়েছে:

    “অতীতে মুসলমানদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে এবং সেজন্য খ্রিস্টবাদী শিক্ষায় শিক্ষিত পাশ্চাত্য সমাজই দায়ী।

    তাছাড়া, খ্রিস্টানদের মধ্যে যে-সব ভুল ধারণা রয়েছে মুসলমানদের অদৃষ্টবাদ, ইসলামিক বিধি-বিধান, তাঁদের রক্ষণশীলতা সম্পর্কে সে সব নিয়েও এই বইয়ে সমালোচনা করা হয়েছে। এই পুস্তকে স্রষ্টার একত্বের ভিত্তিতে ঐক্য গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব আরোপসহ তথ্য পরিবেশিত হয়েছে যে, ১৯৬৯ সনের মার্চ মাসে কার্ডিনাল কোয়েনিং এক সরকারি বৈঠকে যোগদানের জন্য কায়রো শহরে গিয়ে আল আজহার মুসলিম ইউনিভার্সিটির জামে মসজিদে এই ঐক্য গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন। উল্লেখ্য যে, তাঁর সেই আহবানে শ্রোতারা অবাক হয়ে গিয়েছিল। এই পুস্তকে এও বলা হয়েছে যে, ১৯৬৭ সনে ভ্যাটিক্যান দফতর থেকে রমজান শেষে যথাযথ ধর্মীয় গুরুত্ব সহকারে মুসলমানদের প্রতি পবিত্র ঈদের শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের জন্য খ্রিস্টানদের প্রতি আহবান জানানো হয়েছিল।

    রোমান ক্যাথলিক বিশ্বাস ও ইসলামের মধ্যে ঘনিষ্ঠতর সম্পর্ক গড়ে তোলার ব্যাপারে এই যে পদক্ষেপ, তা কিন্তু এখানেই থামেনি, বরং পরবর্তীতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও যৌথ বৈঠকের মাধ্যমে তা আরো গতিশীল ও আরো সুদৃঢ় করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অবশ্য, সংবাদপত্র, রেডিও-টেলিভিশনের দ্বারা তো বটেই অন্যান্য প্রচারমাধ্যমের সকল সুযোগ-সুবিধা সত্ত্বেও পাশ্চাত্য জগতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এইসব ঘটনা তেমন কোনো প্রচার পায়নি।

    ভ্যাটিক্যানের নন-ক্রিশ্চিয়ান এ্যাফেয়ার্স দফতরের প্রেসিডেন্ট কার্ডিনাল পিগনোডেলি ১৯৭৪ সনের ২৪ এপ্রিল সরকারি সফরে সৌদি আরব যান এবং বাদশাহ ফয়সালের সাথে সাক্ষাৎ করেন, এই সংবাদটিও পত্র-পত্রিকায় তেমন কোনো প্রচার পায়নি। এ সম্পর্কে ফরাসি সংবাদপত্র লে মডেতে কয়েক ছত্র সংবাদ প্রকাশ করেছিল, তারিখটি ২৫শে এপ্রিল ১৯৭৪। ওই সংবাদসূত্রে জানা যায়, ইসলামী বিশ্বের প্রধানতম নেতা মহামান্য বাদশাহ ফয়সালের নিকট মহামান্য পোপ ৪র্থ পল এই মর্মে এক বাণী পাঠিয়েছিলেন যে, তিনি গভীরভাবে বিশ্বাস করেন, এক আল্লাহর আনুগত্যের ভিত্তিতে ইসলামী বিশ্ব ও খ্রিস্টান-জগৎ ঐক্য গড়ে তুলতে পারে।”

    ঘটনার গুরুত্ব এই বাণীর মর্ম থেকেই উপলব্ধি করা যায়।

    উল্লেখ্য, এর কয়েক মাস পর সৌদী আরবের গ্র্যান্ড উলেমা এক সরকারি সফরে ভ্যাটিক্যানে আসেন এবং পোপ তাকে সাদর অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করেন। এই উপলক্ষে খ্রিস্টান ও মুসলমানদের মধ্যে এক আলোচনা-বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার শিরোনাম ছিল ‘ইসলামে মানুষের সাংস্কৃতিক অধিকার’। ভ্যাটিক্যানের সংবাদপত্র ‘অবজারভেটর রোমানো’ ১৯৭৪ সনের ২৬ অক্টোবর প্রথম পৃষ্ঠায় এই ঐতিহাসিক বৈঠকের বিবরণ প্রকাশ করে।

    উল্লিখিত বৈঠকের সমাপ্তি অধিবেশনে রোমের সাইনড অব বিশপবর্গ উপস্থিত ছিলেন কিন্তু এই সমাপ্তি অধিবেশনের সংবাদটি প্রথম অধিবেশনের তুলনায় ছোট করে ছেপেছিল।

    সৌদি আরবের গ্রান্ড ওলেমাকে এরপর সংবর্ধনা জানান, জেনেভা গির্জাসমূহের এডুমেনিকাল কাউন্সিল এবং স্ট্রাসবুর্গের লর্ড-বিশপ মহামতি এলাচিংগার। বিশপ তাঁর উপস্থিতিতেই গ্রান্ড উলেমাকে গির্জাতে জোহরের নামায আদায় করার জন্য আমন্ত্রণ জানান। অনুমান করা চলে, ধর্মীয় গুরুত্ব হিসেবে নয় বরং বৈচিত্র্যপূর্ণ ঘটনার বিবরণী হিসেবে সংবাদপত্রগুলোতে ওইসব সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। কেননা, এসব ঘটনার মধ্যে ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো সম্পর্কে ড. মরিস বুকাইলি যাদেরই প্রশ্ন করেছেন, জেনেছেন, তাঁদের অনেকেই এর গুরুত্ব সম্পর্কে তেমন সচেতন নন।

    ইসলাম সম্পর্কে পোপ চতুর্থ পল এই যে উদার দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়েছেন, নিঃসন্দেহে তা দুই ধর্মের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার পথে এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে যা দৃষ্টান্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।

    পোপ নিজেই এ ব্যাপারে বলেন যে, “এক আল্লাহর উপাসনার ভিত্তিতে খ্রিস্টান ও মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার ব্যাপারে এক সুগভীর বিশ্বাস তাকে পরিচালিত করেছিল।”

    ক্যাথলিক চার্চের প্রধানের কাছ থেকে মুসলমানদের জন্য এরকম মানসিক ভাবাবেগের সত্যি প্রয়োজন রয়েছে। কেননা, বেশিরভাগ খ্রিস্টানই বড় হয়ে থাকেন ইসলাম-বিরোধিতার বিদ্বেষপূর্ণ এক উদ্দীপনার মধ্যে। ফলে, তাঁরা আদর্শের প্রশ্নে ইসলামের নামগন্ধ পর্যন্ত বরদাশত করতে রাজি নন। ভ্যাটিক্যান থেকে প্রকাশিত উল্লিখিত পুস্তকে এ জন্যে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।

    এ কথা অনস্বীকার্য নয়, উল্লিখিত বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাবের জন্যেই সত্যিকারার্থে ইসলাম যে কি, তা বেশিরভাগ খ্রিস্টান সম্পূর্ণভাবেই অজ্ঞাত থাকেন। একই কারণে ইসলামী-প্রত্যাদেশ সম্পর্কে তাদের ভ্রান্তিপূর্ণ ধারণা রয়ে গেছে।

    যাহোক, স্বাভাবিকভাবেই একত্ববাদী কোনো একটি ধর্মের প্রত্যাদেশ সংক্রান্ত কোনো বিষয় যখন পর্যালোচিত হয় তখন এ বিষয়ে অপর দুই একত্ববাদী ধর্মের বক্তব্য কি, তার তুলনামূলক আলোচনাও এসে পড়ে।

    তাছাড়া, যেকোনো সমস্যার সার্বিক বিচার-পর্যালোচনা বিচ্ছিন্ন কোনো আলোচনার চেয়ে অনেক বেশি আকর্ষণীয় হয়। এ কারণে ড. মরিস বুকাইলি মন্তব্য করেন,

    “যেসব বিশেষ বিষয়ে ধর্মীয় গ্রন্থসমূহের বক্তব্যের সাথে বিশ-শতকের বৈজ্ঞানিক সত্যের বিরোধ রয়েছে বলে মনে করা হয়, সেসবের পর্যালোচনায়ও উল্লিখিত তিন ধর্মের কথা এসে যায়। সকলের এই সত্যও অনুধাবন করা প্রয়োজন যে, বস্তুবাদের সুতীব্র অভিযানের মুখে তিন ধর্মই আজ হুমকির সম্মুখীন, এই যখন অবস্থা, তখন পারস্পরিক ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের গুণে ধর্ম তিনটি সহজেই সমবেতভাবে একটি সুদৃঢ় প্রতিরোধ-প্রাচীন গড়ে তুলতে পারে। বিজ্ঞান এবং ধর্ম পরস্পরবিরোধী বলে যে ধারণা, তা ইহুদী ও খ্রিস্টান-অধ্যুষিত দেশগুলোতে যেমন, তেমনি মুসলিম বিশ্বের কোনো কোনো মহলে বেশ জোরদার। কেন এই অবস্থা–সে প্রশ্নের সার্বিক জবাব খুঁজে পাওয়ার জন্য দীর্ঘতর আলোচনা প্রয়োজন।

    প্রকৃতপক্ষে, এই পর্যালোচনা তথা পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজে অগ্রসর হওয়ার আগে একটি মৌলিক প্রশ্নের সঠিক উত্তর খুঁজে নিতে হবে। সেই প্রশ্নটি হচ্ছে, ধর্মগ্রন্থের লিপিবদ্ধবাণীসমূহ কতোটা সঠিক? এ প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে যে অবস্থা ও যে পরিবেশে এসব বাণী লিপিবদ্ধ হয়েছিল তা যেমন পরীক্ষণীয়; তেমনি এও পরীক্ষণীয় যে, কার মাধ্যমে বা কোন পথে এসব বাণী মানুষের কাছে পৌঁছেছে।

    পাশ্চাত্য জগতে বাইবেলের সমালোচনামূলক গবেষণা একদম হালের ঘটনা। শত শত বছর ধরে সেখানকার মানুষ নতুন ও পুরাতন নিয়ম তথা বাইবেলকে যখন যে অবস্থায় পেয়েছে, তখন সে অবস্থায় তা গ্রহণ করে পরিতৃপ্ত থেকেছে। এই ধর্মগ্রন্থ তারা যেমন ভক্তিভরে পাঠ করেছে, তেমনি টীকা-টিপ্পনী সংযোজন করে সে গ্রন্থের যাবতীয় ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধনেরও প্রয়াস চালিয়েছে। শুধু তাই নয়, ধর্মগ্রন্থের বিরুদ্ধে সামান্যতম সমালোচনাকেও তারা ‘পাপ’ বলে গণ্য করতে ছাড়েননি। এই বিষয়ে, পুরোহিতেরা ছিলেন সবসময়ই সবার উপরে। কেননা, তাঁদের পক্ষে সম্পূর্ণ বাইবেল ভালোভাবে জানার সুযোগ ছিল বেশি। পক্ষান্তরে, বেশির ভাগ সাধারণ মানুষ ধর্মীয় ভাষণ কিংবা বিভিন্ন উপাসনা উপলক্ষে বাইবেলের নির্বাচিত অংশের পাঠ শুনেই নিজেদের ধন্য মনে করেছেন।

    কোনো ধর্মগ্রন্থের উপর বিশেষভাবে কোনো গবেষণা পরিচালনাকালে দেখা গেছে যে, এতদ্‌সংক্রান্ত কোনো সমস্যা যা কখনো কখনো জটিল হয়ে দাঁড়ায়, তার মূল উদ্ঘাটন ও প্রকৃতি বিশ্লেষণের জন্য সেই গ্রন্থের পাঠ বা বাণীর দোষ গুণ বিচারের প্রয়োজন সর্বাধিক। কিন্তু বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থের গুণাগুণ বিচারের নামে তথাকথিত গবেষণামূলক যেসব পুঁথি-পুস্তক বাজারে রয়েছে সেগুলো পাঠ করলে নিরাশ হতে হয়।

    কারণ, সংশ্লিষ্ট কোনো সমস্যার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে এইসব পুস্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনে এমনভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়, লেখক যেন সেই সমস্যা এড়িয়ে যেতে পারলেই বাঁচেন। এসব ক্ষেত্রে যারা ভাবনা-চিন্তার ক্ষমতা রাখেন ও নিরপেক্ষ রায় প্রদানের সাহস দেখাতে পারেন, তারাও কিন্তু নিজেদের আজগুবি ধারণা ও স্ববিরোধিতা ঢেকে রাখতে পারেন না। আরো দুঃখ ও পরিতাপের বিষয়, যতো তর্কই হোক আর যতো যুক্তিই দেখানো হোক, সেসবের মোকাবেলায় অনেকেই নির্দ্বিধায় বাইবেলের অংশবিশেষকেই প্রামাণ্য দলিল হিসেবে পেশ করেন। তাঁরা বুঝতেও চান না যে, বাইবেলের এইসব বক্তব্য কতোটা ভ্রান্ত ও ধাঁধায় পূর্ণ। তাছাড়া, এইসব লেখক একবারও ভেবে দেখেন না যে, তাদের এই ধরনের যুক্তিহীনতা স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাসী শিক্ষিত লোকদের মনোভাবে কি বিরূপ ও ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

    বরং, এমনও দেখা গেছে, সামান্য কিছুসংখ্যক লোকই এ যাবত বাইবেলের এসব গোলকধাঁধা চিহ্নিত করে নিতে সক্ষম হয়েছেন। পক্ষান্তরে, বেশির ভাগ খ্রিস্টান তাঁদের ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা সত্ত্বেও বাইবেলের ওইসব অসঙ্গতির ব্যাপারে নির্বিকার থাকেন।

    যদিও, সেসব অসঙ্গতি একেবারেই মৌলিক বিষয়-সংক্রান্ত। উল্লেখ্য, বাইবেলের নতুন নিয়মের অন্তর্ভুক্ত সুসমাচারসমূহের সাথে তুলনীয় হতে পারে, এমন ধর্মগ্রন্থ মুসলমানদেরও রয়েছে, তাহলে ও হাদীস গ্রন্থ। হাদীস হলো, মোহাম্মদের (দঃ) বক্তব্য ও কার্যবিবরণীর সংকলন। যীশুর বাণী ও কর্মবিবরণীর সংকলন হিসেবে বাইবেল। অর্থাৎ, নতুন নিয়মের সুসমাচারসমূহ : ইঞ্জিল হলো খ্রিস্টানদের অনুরূপ ধর্মগ্রন্থ। যীশুর আবির্ভাবের কয়েক দশক পরে যেমন বাইবেলের সুসমাচারসমূহ লিপিবদ্ধ হয়েছিল, তেমনি হাদীসও লিপিবদ্ধ হয়েছিল। মোহাম্মদের (দঃ) মৃত্যুর কয়েক দশক পর হাদীস ও বাইবেল উভয়ের মধ্যেই রয়েছে অতীতের ঘটনাবলীর মানবীয় সাক্ষ্য। পক্ষান্তরে, অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে যে, প্রামাণ্য বাইবেলের (সুসমাচারসমূহ) রচয়িতারা নিজেরা কিন্তু লিপিবদ্ধ ঘটনার কিংবা কোনো বিবরণের প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন না। এই পুস্তকে আলোচিত হাদীসের সংকলকদের ব্যাপারেও একথা প্রযোজ্য।

    এখানেই হাদীস ও বাইবেলের তুলনামূলক আলোচনার শেষ। হাদীসসমূহের সঠিকত্ব বা নির্ভুলতা নিয়ে অতীতে বহু বিচার, বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। পক্ষান্তরে, খ্রিস্টীয় প্রথম শতকেই গির্জার অধিকারীবৃন্দ বহুসংখ্যক সুসমাচার থেকে যাচাই-বাছাই করে শুধু চারটি সুসমাচারকে প্রামাণ্য বলে চূড়ান্তভাবে রায় দিয়েছেন। অথচ, বাইবেলের নতুন নিয়মে সংকলিত সেই চারটি প্রামাণ্য সুসমাচারে বর্ণিত বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে অনেক বিষয়ে তেমন কোনো ঐকমত্য সৃষ্টি হয় না। তবুও, ওই চারটিকে ‘প্রামাণ্য’ বলে গ্রহণ করে বাদবাকি সুসমাচারকে ‘বাতিল’ বলে রায় দেয়া হয়। এভাবে বাতিলকরণের এই প্রক্রিয়া থেকেই ‘এ্যাপোক্রাইফা’ টার্মের উৎপত্তি।

    ধর্মগ্রন্থের ব্যাপারে খ্রিস্টধর্ম ও ইসলামের মধ্যে আর একটি মৌলিক পার্থক্য বিদ্যমান ও খ্রিস্টানদের এমন কোনো ধর্মগ্রন্থ নেই যার বাণীসমূহ সরাসরি ওহী বা প্রত্যাদেশের মাধ্যমে প্রাপ্ত এবং যে গ্রন্থে বাণীসমূহ হুবহু লিপিবদ্ধ। পক্ষান্ত রে, ইসলামের কোরআন এই চরিত্রের ধর্মগ্রন্থ, এই গ্রন্থ সরাসরিভাবে প্রত্যাদেশের মাধ্যমে প্রাপ্ত।

    রআন প্রধান ফিরিশতা জিব্রাঈলের মাধ্যমে মোহাম্মদ (দঃ) কর্তৃক প্রাপ্ত ওহী তথা আল্লাহর বাণী। প্রত্যাদেশপ্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে ওহীর বাণীসমূহ লিখে রাখা হত; বিশ্বাসীরা তা কণ্ঠস্থ করে ফেলতেন এবং নামাজে সেইসব বাণী বা আয়াত তেলাওয়াত করা হত যা এখনো হয়। বিশেষত, প্রাপ্ত বাণীসমূহ রমজান মাসে অবশ্যই সম্পূর্ণভাবে তেলাওয়াতের ব্যবস্থা থাকতো। এখনো সেই ধারা চালু রয়েছে। মোহাম্মদ (দঃ) নিজেই প্রাপ্ত বাণীসমূহ বিভিন্ন সূরায় ভাগ করে গেছেন। তাঁর মৃত্যুর পরে এইসব সূরা সংগ্রহ করে তা গ্রন্থাকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

    এখন যে কোরআন, এই হলো সেই গ্রন্থ। অপরপক্ষে, খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ সম্পূর্ণ ভিন্ন পদ্ধতিতে সংকলিত হয়েছে। তাদের ধর্মগ্রন্থের বাণীসমূহ সরাসরি প্রত্যাদেশপ্রাপ্ত নয়; বরং তা বহুজনের বর্ণিত পরোক্ষ বিবরণী।

    মূলত, যীশুর জীবন-বৃত্তান্ত কোনো প্রত্যক্ষদর্শীর চাক্ষুষ বিবরণী থেকে পাওয়া যায় না। যদিও অনেক খ্রিস্টানই মনে করেন, বাইবেলে বর্ণিত ঘটনাবলী প্রত্যক্ষদশীর বিবরণ। খ্রিস্টধর্ম ও ইসলামের ধর্মগ্রন্থের বাণীর সঠিকত্ব ও নির্ভুলতা নিয়ে যেসব প্রশ্ন ওঠে, এই তার মূল পটভূমি।

    যে দ্বন্দ্ব আধুনিক বৈজ্ঞানিক তথ্যাবলীর সাথে প্রত্যাদেশপ্রাপ্ত বলে কথিত ধর্মগ্রন্থসমূহের, তা সবসময় মানুষের চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে। প্রথমে মনে করা হত, বিজ্ঞানের আবিস্কৃত সত্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়াটাই বুঝি কোনো ধর্মগ্রন্থের বাণীর সঠিকত্ব ও নির্ভুলত্বের প্রয়োজনীয় প্রমাণ। সেন্ট অগাস্টাইন তার ৮২নং পত্রে ধর্মগ্রন্থের সঠিকত্ব-বিচারের এই নিয়ম প্রবর্তন করেন। কিন্তু পরবর্তীকালে বিজ্ঞানের আরো অগ্রগতি সাধিত হলে দেখা যায়, বিজ্ঞানের সাথে বাইবেলোক্ত সুসমাচারসমূহের অসঙ্গতি খুবই স্পষ্ট। পরিশেষে, এই মর্মে সিদ্ধান্ত হয় যে, অতঃপর বাইবেলের তুলনামূলক বিচার-পর্যালোচনার ধারা স্থগিত থাকবে। এই সিদ্ধান্তের ফলেই এখন এমন এক পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে, যেখানে এসে বাইবেলের ভাষ্যকার ও বিজ্ঞানীরা একে অপরের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছেন। যাহোক, যে গ্রন্থের বাণী সম্পূর্ণভাবে নির্ভুল নয়, তাকে ধর্মগ্রন্থ হিসেবে স্বীকার করে নেয়া যায় না।

    এক্ষেত্রে যদিও সামঞ্জস্য বিধানের একটা পথ খোলা থাকে। তা হলো, ধর্মগ্রন্থের যেসব বক্তব্য বিজ্ঞানের আলোকে গ্রহণযোগ্য নয়, সেসব বক্তব্যকে অসত্য বলে বিবেচনা করে সান্ত্বনা লাভ করা। কিন্তু এ পন্থাও ধর্মীয় নিয়ম বলে গ্রহণ করা হয়নি।

    পক্ষান্তরে, ধর্মগ্রন্থের অখণ্ডতা ও তার প্রতিটি বাণীর সত্যতার উপর সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা এবং ধর্মীয় বিশেষজ্ঞরা বাইবেলের সুসমাচারসমূহের প্রতিটি বাণীকে সত্য বলে চালানোর জন্য কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। অথচ, কোনো বিজ্ঞানীর পক্ষেই এ ধরনের অযৌক্তিক কোনো বিষয়কে সমর্থন করা অসম্ভব।

    বাইবেলের ক্ষেত্রে সেন্ট অগাস্টাইন যেভাবে মনে করতেন, সেভাবে ইসলামের অনুসারীরাও সবসময় মনে করে আসছেন যে, আসমানী কিতাবের বক্তব্য বৈজ্ঞানিক সত্যের সমর্থক। এমনকি, আধুনিককালে ইসলামের ধর্মগ্রন্থ কোরআন সম্পর্কে পরীক্ষা-নিরীক্ষা পরিচালনার পরেও এ মনোভাব পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন দেখা যাচ্ছে না। এই গ্রন্থপাঠে দেখা যাবে, বৈজ্ঞানিক কৌতূহলের বহু বিষয় কোরআনে উল্লিখিত রয়েছে এবং কোরআনের বাণীসমূহ বাইবেলের বাণীর তুলনায় নির্ভুল। বাইবেলে বিজ্ঞান-সংক্রান্ত বক্তব্য অল্প কিছুসংখ্যক; কিন্তু সেগুলো বৈজ্ঞানিক সত্যের বিরোধী।

    পক্ষান্তরে, বিজ্ঞান-সংক্রান্ত বক্তব্য কোরআনে প্রচুর এবং তার সবগুলোই সত্যনিষ্ঠ। বস্তুত, কোরআনে বিজ্ঞান-সংক্রান্ত একটি বক্তব্যও খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেটি বৈজ্ঞানিক সত্যের বিরোধী। ড. মরিস বুকাইলির আলোচ্য গবেষণায় কোরআন সম্পর্কে এই মূল সত্যটি সুস্পষ্ট হয়ে ধরা পড়েছে।

    হাদীস হল, মোহাম্মদের (দঃ) বাণীর সংকলন। হাদীসের পুস্তকগুলোতে এমন কিছু কিছু বক্তব্য দেখা যায় যেগুলো বৈজ্ঞানিক দিকথেকে অগ্রহণযোগ্য।

    উল্লেখ্য, ইসলামের সুনির্দিষ্ট নীতির আলোকেই হাদীসগ্রন্থসমূহের উপর এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়েছে। অজানা নয়, কোনো বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোরআনের সুস্পষ্ট নীতি ও নির্দেশঃ

    বিজ্ঞান তথা যুক্তির নিরিখে কোনো বক্তব্য যদি অসঙ্গত বিবেচিত হয়, তবে সে বক্তব্যের সূত্র যতো সঠিকই হোক না কেন, তা বাতিল বলে গণ্য হবে।

    ধর্মগ্রন্থের কোনো বক্তব্যকে বৈজ্ঞানিক সত্যের দিক থেকে গ্রহণযোগ্য কিংবা অগ্রহণযোগ্য বলে সাব্যস্ত করার আগে বৈজ্ঞানিক সত্য সম্পর্কে কিছু ব্যাখ্যা প্রদান জরুরি।

    এ বিষয়ে একটি কথার উপর ড. মরিস বুকাইলি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

    তিনি বলেন,

    “বৈজ্ঞানিক তথ্য-পরিসংখ্যান বলতে সেই সত্যকে বোঝাতে চেয়েছি, যা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা দ্বারা সন্দেহাতীতভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত। এই বিবেচনায় ব্যাখ্যামূলক সেইসব থিওরি বা সিদ্ধান্ত বাদ দেয়া হয়েছে যেসব থিওরি একসময় কোনো প্রাকৃতিক বিষয়ের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে প্রয়োজনীয় বলে বিবেচিত হত, কিন্তু বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে সেগুলোর উপযোগিতা হারিয়ে গেছে।“

    এ কথার মাধ্যমে যা বলতে চাওয়া হচ্ছে, তা হলো, ড. বুকাইলি শুধু সেই বৈজ্ঞানিক সত্যকেই বিচারের মাপকাঠি হিসেবে গ্রহণ করেছেন যা অখণ্ডনীয় এবং অবিসম্বাদিতভাবেই সত্য। আর যেসব বিষয়ে বিজ্ঞান এ যাবত কিছু আংশিক বা অসম্পূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছে, সেসব ক্ষেত্রে শুধু ততোটুকু গ্রহণ করা হয়েছে যতোটুকু বৈজ্ঞানিকভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত এবং যতোটুকুর ব্যবহারে ভুলের কোনো আশঙ্কা নেই।

    এখানে একটি উদাহরণ তুলে ধরে ড. মরিস বুকাইলি বলেন,

    “যদিও পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাবের কোনো সন-তারিখ বিজ্ঞানীদের হাতে নেই, তবু সুদূর অতীতের মানুষের নানাকীর্তির ধ্বংসাবশেষ ও বিভিন্ন নিদর্শন আবিস্কৃত হয়েছে। এসব আবিষ্কার থেকে আমরা মোটামুটিভাবে মানুষের আবির্ভাবের একটা সময়কাল পাচ্ছি। আর সেই সময়টা হচ্ছে–খ্রিস্টপূর্ব এক কোটি বছর আগে (টেন্থ মিলিয়ন বি. সি.)। এ বিষয়ে বাইবেলে যে তথ্য পাওয়া যায়, তাকে কিছুতেই বিজ্ঞানের সত্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বলে বিবেচনা করতে পারি না। বাইবেলের আদিপুস্তকে (টেক্সট অব জেনেসিস) আদি মানুষের আবির্ভাবের অর্থাৎ আদম সৃষ্টির সময় যে বংশ-তালিকা দেয়া হয়েছে, সে সময়টা হচ্ছে মোটামুটিভাবে খ্রিস্টপূর্ব সাইত্রিশ শতাব্দীর।। ভবিষ্যতে বিজ্ঞান হয়তো এ বিষয়ে আরো তথ্য আবিষ্কার ও সরবরাহ করতে সক্ষম হবে এবং তার মাধ্যমে আমরা অনায়াসেই মানুষের আবির্ভাবের প্রশ্নে এ পর্যন্ত আবিস্কৃত সময়কালের তুলনায় অনেক সঠিক সময় তথা তারিখ পেয়ে যাব। কিন্তু এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে, ভবিষ্যতের সেই বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার হবে আধুনিক বিজ্ঞানের ইস্পাতকঠিন সত্যের সম্পূর্ণ বিপরীত।”

    অন্যদিকে, তিনি বলেন,

    “এ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় বাইবেলের সুসমাচার-পুস্তকের সূচনাপর্বের পর্যালোচনায় আমাকে কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। প্রথম পৃষ্ঠাতেই রয়েছে যীশুর বংশলতিকা কিন্তু এ বিষয়ে মথি-লিখিত সুসমাচারের বক্তব্য স্পষ্টভাবে লুক-রচিত সুসমাচারের বক্তব্যের বিপরীত। শুধু তাই নয়, বাইবেলের এই নতুন নিয়মে অর্থাৎ প্রচলিত ইঞ্জিলের ক্ষেত্রে পরবর্তী সমস্যা দেখা দেয়, পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাবের কাল নিয়ে। এ বিষয়ে লুক-লিখিত সুসমাচারের যে তথ্য, তা আধুনিক তথ্য-জ্ঞানের সাথে সম্পূর্ণ অসঙ্গতিপূর্ণ।

    অবশ্য, বাইবেলের বক্তব্যের মধ্যে এই যে পারস্পরিক বৈপরীত্য, এই যে অবাস্তবতা ও অসঙ্গতি, তা কিন্তু স্রষ্টার উপর আমার বিশ্বাসকে কখনো চিড় ধরাতে পারেনি। বরং, আমার মনে হয়েছে বাইবেলের এই অসঙ্গতির জন্য মানুষই দায়ী। প্রকৃতপক্ষে, আর কারোপক্ষেই বলার উপায় নেই, বাইবেলের বাণীর প্রাথমিক বা আদিরূপ কি ছিল! কে জানে, সুদূর অতীতে কে কিভাবে বাইবেল সম্পাদনা করে গেছেন। আর কতোজন যে ইচ্ছাকৃতভাবে এর উপর কলম চালিয়ে গেছেন, কে তা বলতে পারে? এভাবে কতোজন যে নিজ ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় বাইবেলকে তার বর্তমান আকার দিয়ে গেছেন, তার খোঁজ কে দেবে? কিন্তু তাঁরা যারাই হোন, তারা কি কোনোদিন ভেবেছিলেন যে, এমন একদিন আসবে, যেদিন বিজ্ঞানের সুপ্রতিষ্ঠিত সত্যের নিরিখে বাইবেলের ওইসব বৈপরীত্য ও অসঙ্গতি প্রকট হয়ে ধরা পড়বে?

    মূলত, বাইবেলের এই ধরনের রদবদল সাধন করে সেকালে ওইসব ব্যক্তি ভালো কাজ করেছেন বলে যতোই মনে করে থাকুন-না-কেন, বিশেষজ্ঞ ও গবেষকের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে তারা ছিলেন একদম অনবহিত। অথবা, নিজেদের এসব কাজের ত্রুটি-বিচ্যুতির প্রতি দৃষ্টি পড়লেও তারা সম্ভবত দক্ষতার সাথে সবার চোখে ধুলো দিয়ে পার পেতে চেয়েছিলেন। বাইবেলের মথি ও যোহন-লিখিত সুসমাচারের আলোচনায় প্রমাণ তুলে ধরে দেখানোর চেষ্টা করা হবে যে, খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞ ও আঁদরেল ভাষ্যকারেরা পর্যন্ত এসব ত্রুটি-বিচ্যুতির ব্যাপারে কিভাবে শব্দের মারপ্যাঁচে আত্মপক্ষ সমর্থনের প্রয়াস পেয়ে গেছেন।

    পক্ষান্তরে, বাইবেলের কোনো বক্তব্যের অবাস্তবতা কিংবা স্ববিরোধিতা ধামাচাপা দিতে কেউ কেউ অতি বিস্ময়করভাবে সংশ্লিষ্ট বিষয়কে আরো বেশি দুর্বোধ্য করে তুলেছেন। এভাবে তারা কখনো-সখনো বাইবেলের এসব ত্রুটি-বিচ্যুতি ধামাচাপা দেয়ার কাজে ব্যর্থও হননি। বাইবেলের পুরাতন নিয়মের এতোসব মারাত্মক ত্রুটি-বিচ্যুতির ব্যাপারে এতো বিপুলসংখ্যক খ্রিস্টান কেন যে এরকম অনবহিত কিংবা কেন যে এত নীরব, তার ব্যাখ্যা ও কারণ বোধ করি, পূর্বোক্ত বিষয় বৈ অন্য কিছু নয়।

    এ গ্রন্থে প্রত্যাদেশপ্রাপ্ত ধর্মগ্রন্থের মর্ম উপলব্ধির ব্যাপারে বিজ্ঞানের ব্যতিক্রমধর্মী প্রয়োগ ও অবদানের বিশদ উদাহরণ রয়েছে। সেখানে দেখা যাবে, কোরআনে এমন কিছুসংখ্যক বাণী রয়েছে যেসব বাণীর অর্থ এতকাল ধারণা-শক্তির অতীত না হলেও সর্বসাধারণের কাছে অনেকটা দুর্বোধ্য হয়েই বিরাজ করছিল।

    কিন্তু এখন সেইসব দুর্বোধ্য বাণী আধুনিক সেকুলার-জ্ঞানের আলোকে ক্রমশ অধিকতর স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এই অবস্থায় ইসলাম সম্পর্কে যখন বলা হয়, এই ধর্ম সবসময়ই বিজ্ঞানকে তার যমজ বোন হিসেবে বিবেচনা করে থাকে, তখন বিস্ময়ের কি থাকতে পারে? আবির্ভাব পর্বের সূচনা থেকেই ইসলাম তার অনুসারীদের প্রতি বিজ্ঞানচর্চার নির্দেশ দিয়ে আসছে। এই নির্দেশ পালনের ফলে ইসলামী সভ্যতার সেই মহান যুগে মুসলমানেরা জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উৎকর্ষ সাধন হয়েছিল এবং তা থেকে রেনেসাঁর পূর্বপর্যন্ত পাশ্চাত্য জগৎ হয়েছিল বিশেষ লাভবান। এখন ধর্মগ্রন্থ ও বিজ্ঞানের সংঘাত জোরদার হওয়ার কারণে আধুনিক বিজ্ঞানের সন্ধানী-আলোকে নতুন করে কোরআনের বিভিন্ন বক্তব্যর উপরে দৃষ্টি নিপতিত হচ্ছে। আর এ কারণেই গড়ে উঠছে কোরআন ও বিজ্ঞানের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের একটা সমঝোতা।

    ইতিপূর্বে কোনো কোনো বিষয়ে সম্যক-জ্ঞানের অভাব থাকায়, কোরআনের বিভিন্ন বক্তব্যকে অস্পষ্ট বা দুর্বোধ্য বলে আখ্যায়িত করা হত। বর্তমানে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান কোরআনের ঐসব বক্তব্যের ব্যাখ্যায় প্রভূত সহায়তা জুগিয়ে যাচ্ছে।”

    ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleপদবীর উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস – খগেন্দ্রনাথ ভৌমিক
    Next Article ইট’স কমপ্লিকেটেড – খাদিজা মিম
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    সক্রেটিসের আগে – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    সক্রেটিসের আগে – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Our Picks

    সক্রেটিসের আগে – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025

    পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025

    দ্য মেটামরফসিস – ফ্রানজ কাফকা

    October 28, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }