Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025

    অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025

    আলস্যের জয়গান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞান – মরিস বুকাইলি

    খন্দকার মাশহুদ-উল-হাছান এক পাতা গল্প323 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ৩৭. বিজ্ঞানের আলোকে : মানব-প্রজনন

    বিজ্ঞানের আলোকে : মানব-প্রজনন

    এই আলোচনা অবতারণার উদ্দেশ্য এই যে, এর দ্বারা আমরা নতুন কোন থিওরি বা তত্ত্ব জানাতে চাই। বরং, এই আলোচনার দ্বারা একটি সত্যই তুলে ধরতে চাই, সপ্তম শতাব্দীতে অবতীর্ণ কোরআনে মানব-প্রজনন সম্পর্কে এমন সব তথ্য ও ধারণা প্রদান করা হয়েছে যা সর্বাধুনিক বিজ্ঞানের কষ্টিপাথরেও বাস্তব এবং সঠিক বলে প্রমাণিত হচ্ছে। এ কথা সবারই জানা কোন থিওরি বা তত্ত্ব সাধারণ নিয়মানুসারেই পরিবর্তনশীল। সে কারণে শুধু তত্ত্বগত জ্ঞান সম্বল করে ও শুধু তাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিজ্ঞানের কোন বিষয়ে হাত দেয়ার অর্থ অসংখ্য তত্ত্বের জালে জড়িয়ে পড়ে দিশাহারা হওয়া। তাছাড়া, এখন যে তত্ত্ব সঠিক বলে বিজ্ঞানে পরিগৃহীত হচ্ছে, কাল সেই তত্ত্ব ভিত্তিহীন বা অকেজো বলে প্রমাণিত ও পরিত্যক্ত হওয়া বিচিত্র কিছু নয় বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে।

    মূলত, বিজ্ঞানের তথ্য-উপাত্ত দিয়ে কোনকিছুর তুলনামূলক বিচার-বিশ্লেষণ করতে গেলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন পড়ে এমনসব তথ্য ও উপাত্তের যা অপরিবর্তনীয়। শুধু তাই নয়, সেইসব তথ্য এমন হওয়া আবশ্যক যেন প্রয়োজনে বাস্তবেও সেগুলোর কার্যকর প্রমাণ দাখিল করা যেতে পারে। প্রতিষ্ঠিত তথ্য-প্রমাণের আলোকে কোনকিছু তুলনামূলক বিচার-বিশ্লেষণের এটাই হচ্ছে সর্বোত্তম পদ্ধতি।

    যাহোক, মানুষের জন্ম তথা মানব-প্রজননের কাজটা বিশেষ কতকগুলো দৈহিক প্রক্রিয়া ও পদ্ধতির মাধ্যমে চালু রয়েছে। সর্বাধুনিক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা ও গবেষণায় এসব প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি শনাক্ত ও বিশ্লেষিত করাও সম্ভব হয়েছে। এভাবেই বিজ্ঞান এখন জানিয়ে দিচ্ছে যে, মানব-প্রজননের সূচনা ঘটে নারীর ফেলোফিয়ন টিউবে (ডিম্বাশয় থেকে বহির্গত নালী)–ডিম্বাণুর উর্বরতাপ্রাপ্তির মাধ্যমে।

    এই ডিম্বাণুটি দুই ঋতুস্রাবের মধ্যবর্তী সময়ে নারীর ডিম্বকোষ থেকে স্খলিত হয়। এই ডিম্বাণুটিকে উর্বরতা প্রদান করে থাকে পুরুষের শুক্রকীট–যা মূলত একটি জীবকোষ। যৌনমিলনের কালে পুরুষ কর্তৃক নিঃসৃত এক কিউবিক সেন্টিমিটার পরিমাণ বীর্যে এরকম কোটি কোটি শুক্রকীট অবস্থান করে। কিন্তু নারীর ডিম্বাণুকে উর্বরতা প্রদান করে একটিমাত্র শুক্রকীট। অর্থাৎ, পুরুষ-নিঃসৃত বীর্যের মধ্যস্থিত শুধু একটি একক জীবকোষই নারীকে গর্ভবতী করে থাকে। অন্যকথায়, যৌনমিলনের কালে স্খলিত বীর্যের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এক অণু-ভগ্নাংশই নারীর ডিম্বাণুকে উর্বরতা প্রদানের জন্য তথা নারীকে গর্ভবতী করার জন্য যথেষ্ট।

    এই যে পুরুষের বীর্য, যা থেকে নারীর গর্ভাধারণ হয়ে থাকে, সেই বীর্য তৈরি হয় পুরুষের অণ্ডকোষে। সেখানে এই বীর্য তৈরির ব্যবস্থা যেমন রয়েছে; তেমনি সেখানে সেই বীর্য মওজুদ রাখার জন্যও রয়েছে বিশেষ-ব্যবস্থা। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে সেই বীর্য সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্যও রয়েছে। নির্দিষ্ট নালিপথ। যৌনমিলনের পরিণতিতে পুরুষের বীর্য এই নালিপথ দিয়ে বেরিয়ে আসে তার মওজুদ অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসার পথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গ্ল্যান্ডের বহুবিধ তরল পদার্থের সঙ্গে তা সংমিশ্রিত হয়।

    অবশ্য, এসব গ্ল্যান্ড-নিঃসৃত তরল পদার্থের কোনটাতেই নারীর ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করার বা উর্বরতা প্রদান করার মত কোনও উপাদান থাকে না। নারীর ডিম্বাণু নিষিক্ত হয় শুধু পুরুষের অণ্ডকোষ-নিঃসৃত শুক্রকীটের দ্বারাই। তবে অপরাপর গ্ল্যান্ড-নিঃসৃত পদার্থসমূহ সংশ্লিষ্ট শুক্রকীটটিকে এমনভাবে নারীর ডিম্বাণুর নাগালে পৌঁছাতে সহায়তা করে যার ফলে ডিম্বাণুটি সহজেই নিষিক্ত হয়, হয় উর্বরতাপ্রাপ্ত। প্রকৃতপক্ষে, পুরুষের বীর্য হচ্ছে এমন একটি তরল পদার্থ যাতে রয়েছে শুক্রকীট ছাড়াও অন্যবিধ তরল পদার্থের সংমিশ্রণ। এভাবে পুরুষবীর্যের সহায়তায় উর্বরতাপ্রাপ্তির পর নারীর ডিম্বাণুটি ফেলোপিয়ন টিউবের মাধ্যমে জরায়ুগর্ভে নীত হয়। এই নীত হওয়ার সময় থেকেই শুরু হয় উর্বরতাপ্রাপ্ত ডিম্বাণুতে প্রবেশকারী শুক্রকীট তথা একক জীবকোষের বিভক্তির কর্মধারা। এরপর উর্বরতাপ্রাপ্ত ডিম্বাণুবাহী ওই শুক্রকীটটি আক্ষরিক অর্থেই ‘রোপিত’ হয় জরায়ুগর্ভের শ্লৈষ্মিক ঝিল্লি ও পেশীর মধ্যে। পরবর্তী পর্যায়ে এদেরই সমবায়ে গঠিত হয় গর্ভফুল।

    এভাবে নারীর গর্ভাধানের পর ভ্রণটি যখন খালি চোখে দেখার মত পর্যায়ে পৌঁছায়, তখন তার অবস্থা দাঁড়ায় অতিক্ষুদ্র একখণ্ড মাংসপিণ্ড ৪ আলাদা করে বুঝবার মত আর কোন অঙ্গের অস্তিত্ব তখন সেখানে থাকে না। এই অবস্থায় সেই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র মাংসপিণ্ডটি ক্রমান্বয়ে সেখানে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হতে থাকে। এরপর বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করে সেই আকার-অবয়বহীন মাংসপিণ্ডটি একসময় ধারণ করে মানবাকৃতি।

    অবশ্য, প্রাথমিক পর্যায়ে ভ্রূণের কোন কোন অঙ্গ বিশেষত মাথাটি বাকি দেহের তুলনায় বৃহদায়তন হয়ে থাকে। পরে অবশ্য মাথার আয়তন হ্রাস পায় এবং একসময় সেই ভ্রূণটি প্রাণবাহী দেহ-কাঠামোর রূপ পরিগ্রহ করে। এভাবে ক্রমান্বয়ে সেই প্রাণবাহী ভ্রূণটি একে একে লাভ করে মাথার খুলি, মাংসপেশী, রক্তসংবাহী শিরা-উপশিরা, নাড়ীভূঁড়ি ইত্যাদি।

    মোটামুটিভাবে, এই হচ্ছে মানব-প্রজনন-সংক্রান্ত আধুনিক বিজ্ঞানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণাজাত তথ্য যা একাধারে সুপ্রমাণিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত; এবং মানব-প্রজননের এই ধারা অপরিবর্তনীয়ভাবেই অব্যাহত রয়েছে।

    মানব-প্রজনন সম্পর্কে আধুনিক বিজ্ঞানের সুপ্রমাণিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত তথ্য উপাত্ত উপরে তুলে ধরা হয়েছে। এবারে আমরা ওইসব তথ্য-উপাত্তের সঙ্গে কোরআনে বর্ণিত মানব-প্রজনন-সংক্রান্ত বাণী ও বক্তব্যের তুলনামূলক বিচার পর্যালোচনা শুরু করা যায়।

    কোরআনে মানব-প্রজনন সম্পর্কে যেসব বাণী (আয়াত) রয়েছে, আলোচনার সুবিধার্থে সেগুলোর মূলবক্তব্য প্রথমেই সংক্ষেপে তুলে ধরা হচ্ছে। যথা :

    (১) নারীর ডিম্বাণুকে উর্বরতা প্রদানের জন্য প্রয়োজন পুরুষ-বীর্যের এক ক্ষুদ্র অণু-ভগ্নাংশ;

    (২) পুরুষের বীর্য বিভিন্ন উপাদানে পরিগঠিত এক সংমিশ্রিত তরল পদার্থ

    (৩) উর্বরতাপ্রাপ্ত ডিম্বাণুর রোপণ-প্রক্রিয়ার কাজটি ঘটে জরায়ুতে; এবং

    (৪) জরায়ুগর্ভে ভ্রূণের নানা বিবর্তনক্রিয়া সাধিত হয়।

    .

    সামান্যতম বীর্য : শুক্রকীট

    “(আল্লাহ) গঠন করিয়াছেন মানুষকে সামান্যতম পরিমাণ (শুক্র) হইতে।”–সূরা ১৬ (নহল), আয়াত ৪ :

    এই একই বক্তব্য কোরআনে উচ্চারিত হয়েছে মোট এগারোবার। এসব আয়াতে যে আরবী শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে, সেই ‘নুৎফা’ শব্দের অনুবাদ এখানে করা হয়েছে ‘সামান্যতম পরিমাণ শুক্র’। মূলত, এই আরবী শব্দটি দ্বারা যা বুঝানো হয়েছে, তার সঠিক অর্থ ও ভাবপ্রকাশকারী কোনও শব্দ আমাদের জানা নেই। কোন কোন অনুবাদক এই ‘নুৎফা’ শব্দের অর্থ করেছেন ‘একবিন্দু’। আরবী যে ক্রিয়াপদ থেকে এই শব্দটি (নুৎফা) এসেছে তার মর্মার্থ হল : ফোঁটা ফোঁটা করে চুয়ানো (টু ড্রিবল, টু ট্রিকল)। কোন পাত্র থেকে তরল কিছু ঢেলে ফেলে দেয়ার শেষপর্যায়ে সেই পাত্র থেকে সেই তরল পদার্থের যেমন কিছু চুঁইয়ে পড়ে, তেমনি। অন্যকথায়, ‘নুৎফা’ হল ‘অতি সামান্যতম পরিমাণ তরল পদার্থ’। এই শব্দের দ্বিতীয় অর্থ ‘এক ফোঁটা পানি’। এইক্ষেত্রে এই শব্দটির দ্বারা বুঝানো হয়েছে, বীর্যের এক ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অণু-ভগ্নাংশ’। কেননা, কোরআনের অপর এক আয়াতে এই ‘নুৎফা’ শব্দটিকে ‘বীর্য’ (আরবী ‘মনি’ : চলতি বাংলায়ও ‘মনি’ শব্দটি ‘বীর্য’ অর্থেই চালু রয়েছে) শব্দের সঙ্গে যুক্তভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। যথা :

    “সে (মানুষ) কি সেই অতি সামান্যতম শুক্র ছিল না–যাহা সজোরে নির্গত/নিক্ষিপ্ত হইয়াছিল?”–সূরা ৭৫ (কিয়ামাহ্), আয়াত ৩৭ :

    এখানে কোরআন সুস্পষ্ট ভাষায় ব্যক্ত করছে যে, নারীর ডিম্বাণু নিষিক্ত করার ব্যাপারটা যোনিতে নিক্ষেপিত পুরুষ-বীর্যের পরিমাণের উপরে আদৌ নির্ভরশীল নয়, আধুনিক টেস্ট টিউবে সন্তান উৎপাদনেও বিষয়টা প্রমাণিত। কোরআনের এই বক্তব্য আমাদের আলোচ্য পর্যালোচনার জন্য সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, প্রজননের ক্ষেত্রে কোটি কোটি শুক্রকীটধারী পুরুষ-বীর্যের এই অণু-ভগ্নাংশ অর্থাৎ শুধু শুক্রকীট বা একক জীবকোষ এবং তার ভূমিকা মোটেও খালি চোখে দেখার ব্যাপার নয়। অতীতে পুরুষের বীর্যের এই জীবন্ত জীবকোষ বা শুক্রকীট ও তার ভূমিকা-সম্পর্কে মানুষ আদৌ অবহিত ছিল না। ফলে, এই আয়াতের অর্থ ও ব্যাখ্যায় অনেকে বিষয়টা শুধু যে গুলিয়ে ফেলেছেন, তাই নয়, এ সম্পর্কে তাঁরা যে ধারণা দেয়ার প্রয়াস পেয়েছিলেন, তাও ছিল বিভ্রান্তিকর।

    এ কথা সবার জানা যে, পুরুষ-বীর্যে শুক্রকীটের অস্তিত্ব আবিস্কৃত এবং তার ভূমিকা সনাক্ত করা হয়েছে–এই কিছুদিন আগে, সপ্তদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে। অথচ, তখনও হাজার বছর আগে সপ্তম শতাব্দীর কোরআন এ সম্পর্কে সঠিক তথ্য ঘোষণা করেছে এবং একান্ত আধুনিক যুগে এসে শুধু বিজ্ঞানের গবেষণায় তা সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। মূলত, শুক্রকীট এতই সূক্ষ্ম যে, খালি চোখে তা দেখার আশা করা বাতুলতা মাত্র। শক্তিশালী অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে শুক্রকীটের যে আকার-আয়তন পাওয়া গেছে, তা এক মিলিলিটারের সহস্র ভাগের এক ভাগ মাত্র। এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অতিসূক্ষ্ম শুক্রকীটই হচ্ছে, বীর্যের মূল উপাদান বা সারভাগ।

    এই অণুবিন্দু পরিমাণ শুক্রকীটের সঙ্গে থাকে ডি. এন. এ. টেপ (আধুনিক বিজ্ঞান আবিস্কৃত এক ধরনের এসিড যার ভূমিকা হল কোনকিছু পরিবহন করা)। এই ডি. এন. এ. টেপের দ্বারাই পিতার ‘জিন’ ভ্রূণ তথা সন্তানের মধ্যে চালিত হয়। এবং এভাবে পিতৃ-জিন এবং (ডিম্বাণুর মাধ্যমে পরিবাহিত) মাতৃ জিন সম্মিলিতভাবে গঠন করে শিশুর ভবিষ্যৎ। একেই সাধারণ ভাষায় বলা হয়ঃ ‘বংশগত উত্তরাধিকার’।

    পুরুষের প্রজনন-সেলের (শুক্রকীট) মধ্যস্থিত জিন এবং নারীর প্রজনন কোষের (ডিম্বাণু) মধ্যস্থিত জিন যৌথভাবে নির্ধারণ করে গর্ভস্থ শিশুর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। আমরা জেনেছি, প্রজননের কাজ শুরু হওয়ামাত্রই জিন-বহনকারী শুক্রকীটের মাধ্যমেই নির্ধারিত হয়ে যায় গর্ভস্থ সন্তান ছেলে হবে, না মেয়ে হবে।

    শুক্রকীট যদি হেমিক্রোমোজম ‘ওয়াই’ হয়, তবে সন্তান হবে পুত্র; আর তা যদি ‘এক্স’ হয়, তবে হবে কন্যা। এ পর্যায়ে কারো পক্ষেই নির্ধারণ করার উপায় যে, গর্ভস্থ সন্তান পুত্র হবে না কন্যা হবে। কেননা, বীর্যের সঙ্গে কোটি কোটি শুক্রকীট নিক্ষিপ্ত হয় যোনিগর্ভে। কিন্তু ভাগ্যক্রমে শুধু শুক্রকীট নারীর ডিম্বাণুতে অনুপ্রবেশে সক্ষম হয়, বাকিগুলো বরণ করে ব্যর্থতা বা মৃত্যু। ডিম্বাণুতে অনুপ্রবেশকারী শুক্রকীটটি যদি ‘এক্স’ হেমিক্রোমোজম হয়, তাহলে শিশুটি হবে কন্যা, আর তা যদি ‘ওয়াই’ হয় তাহলে সেই সন্তান হবে পুত্র। সুতরাং, দেখা যাচ্ছে, জন্মসূত্রে ঠিক সেই মুহূর্তেই শিশুর লিঙ্গ নির্ধারিত হয়ে যায়, যে মুহূর্তে পুরুষের বীর্যস্থ কোটি কোটি শুক্রকীটের মধ্যথেকে একটিমাত্র শুক্রকীট নারীর ডিম্বাণুতে অনুপ্রবেশ ঘটে।

    তাছাড়া, যোনিগর্ভে নিক্ষেপিত পুরুষ-বীর্যের পরিমাণের তুলনায় সেই শুক্রকীটটি যে অণুবিন্দু ভগ্নাংশের চেয়ে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সূক্ষ্ম, সে কথা তো আগেই বলা হয়েছে। অবশ্য, ভ্রূণ-সৃষ্টির পর নির্ধারিত একসময় আন্দ্রা সোনোগ্রাফিক স্ক্যানিং-এর মাধ্যমে গর্ভস্থ সন্তান পুত্র না কন্যা? বিজ্ঞান তা এখন জানাতে সক্ষম। তবুও, শুক্রকীট কর্তৃক ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার আগেপর্যন্ত কারোপক্ষেই সন্তানের লিঙ্গ-পরিচয় জানা সম্ভব নয়। এই পটভূমিকায়ই কোরআন চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে যে, গর্ভের সন্তান পুত্র হবে না কন্যা হবে, একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া তা আর কেউ জানে না। এদিকে এই অণুবিন্দু ভগ্নাংশের চেয়েও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র শুক্রকীটের সঙ্গে পরিবাহিত হয়ে থাকে সেই জিন–যা সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণের পাশাপাশি নির্ধারণ করে দেয় সেই সন্তানের গড়ন, ভবিষ্যৎ চেহারা এবং তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও! এই কথাটাই কোরআনের নিমোক্ত আয়াতে অত্যন্ত পরিষ্কার করে বলে দেয়া হয়েছেঃ

    “এক অণুবিন্দু পরিমাণ তরল পদার্থ হইতে (আল্লাহ) তাহাকে গঠন করেন (সুষম মাত্রায়), এবং নির্ধারণ করিয়া দেন তাহার নিয়তি।”।–সূরা ৮০ (আবাসা), আয়াত ১৯ :

    “খালাকা” শব্দের সাধারণ প্রচলিত অর্থ ‘সৃষ্টি করা’। কিন্তু তার আদি-অর্থ ধরে নিয়েই এখানে ‘খালাকা’ শব্দের তরজমা করা হলো—’সুষম মাত্রায় গঠন করা’ কিংবা ‘নির্মাণ করা’ অথবা ‘সৌষ্ঠব দান করা’।

    কোরআনের এই আয়াতে বলা হয়েছে যে, পিতৃবীর্যের মধ্যস্থিত শুক্রকীটের দ্বারা ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার মুহূর্তেই শিশুর নিয়তি বা ভাগ্য নির্ধারিত হয়। বিজ্ঞানও জানাচ্ছে, পিতৃবীর্যের মধ্যস্থিত শুক্রকীট নির্ধারণ করে সন্তানের লিঙ্গ এবং ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার মুহূর্ত থেকে পিতৃ ও মাতৃ জিন-এর ক্রিয়া-প্রক্রিয়ায় পরিগঠিত হতে শুরু করে সন্তানের চেহারা, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রভৃতি। এভাবেই সন্তান লাভ করে তার বংশগত উত্তরাধিকার। আর একইভাবে জিন-এর মাধ্যমে প্রাপ্ত জীবাণীশক্তি, আয়ুষ্কাল, স্বাস্থ্য, ভালমন্দ, গুণাগুণ সবমিলিয়ে নির্ধারিত হয় সন্তানের নিয়তি অর্থাৎ তার ভাগ্য বা ভবিষ্যৎ। সুতরাং, স্বীকার করতেই হবে, আধুনিক বিজ্ঞানের সর্বাধুনিক আবিষ্কার বিশেষত জিন–সম্পর্কিত প্রাপ্ত-তথ্য আর কোরআনের বাণীতে উপস্থাপিত বক্তব্যের মিল-মিছিল শুধু বিস্ময়কর নয়, অনুসন্ধিৎসু সকলের জন্য দৃষ্টি আকর্ষণীয়ও বটে।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleপদবীর উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস – খগেন্দ্রনাথ ভৌমিক
    Next Article ইট’স কমপ্লিকেটেড – খাদিজা মিম
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025
    Our Picks

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025

    অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025

    আলস্যের জয়গান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }