Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025

    অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025

    আলস্যের জয়গান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞান – মরিস বুকাইলি

    খন্দকার মাশহুদ-উল-হাছান এক পাতা গল্প323 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ০৪. ভূমিকার বদলে

    ভূমিকার বদলে

    ড. মরিস বুকাইলি তাঁর গবেষণা ও পর্যালোচনা শেষে একটি সুস্পষ্ট সত্য বের করে এনেছেন, আর তা হল : এখন আমাদের নিকট আসমানী কিতাব হিসেবে যে-কয়টি ধর্মগ্রন্থ বিদ্যমান, সেসব ধর্মগ্রন্থ সম্পর্কে পাশ্চাত্য জগৎ অথবা পাশ্চাত্য-শিক্ষিত কোনো কোনো মহল যে ধারণা বা মনোভাব পোষণ করেন, তাদের সেই ধারণা এবং মনোভাব তাঁদের অজ্ঞতারই প্রকাশ। কারণ, তাদের সেই ধারণা ও মনোভাব আদৌ সত্যতো নয়ই, বরং তাদের পূর্ণধারণাই ভিত্তিহীন বা অলীক।

    বাইবেলের পুরাতন নিয়ম ও সুসমাচারসমূহ অর্থাৎ তাওরাত, জবুর ও ইঞ্জিল প্রভৃতি এবং প্রত্যাদেশপ্রাপ্ত কোরআন কোন অবস্থায় কিভাবে ও কখন সংগৃহীত ও সংকলিত হয়, তা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পর্যালোচনা করে দেখা হয়েছে। সেই পর্যালোচনায় এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, ওইসব ধর্মগ্রন্থের সংকলন-ব্যবস্থা ও পরিস্থিতি ছিল আলাদা আলাদা একটা থেকে আরেকটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিনটি ধর্মগ্রন্থের সংকলনের ক্ষেত্রে পার্থক্যপূর্ণ এই ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতি, এটাই হল ড. মরিস বুকাইলির গবেষণার সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ দিক। কেননা, পরিস্থিতির এই ভিন্নতার উপরেই নির্ভরশীল রয়েছে উল্লিখিত তিন ধর্মগ্রন্থের বাণী ও বিষয়বস্তুর সত্যতা ও সঠিকত্ব।

    বাইবেল পুরাতন নিয়মে অর্থাৎ তাওরাত, জবুর ইত্যাদিতে সঙ্কলিত হয়েছে সাহিত্যগুণসম্পন্ন এমনসব রচনা যেগুলো দীর্ঘ নয়শ’ বছর ধরে রচিত হয়েছিল। বাইবেলের এই পুরাতন নিয়ম তথা ‘ওল্ড টেস্টামেন্ট’ বস্তুতই এমনসব বৈচিত্র্যপূর্ণ কারুকাজসম্পন্ন রচনার সমাহার। যার একটি থেকে আরেকটি বিচ্ছিন্ন তো বটেই, সেইসাথে ওসব রচনার নকশা, রং ও রূপ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষের হাতে বহুবার পরিবর্তিত হয়েছে। মূলগ্রন্থের সাথে নতুন নতুন রচনা এমনভাবে মিশিয়ে দেয়া হয় যে, কোথা থেকে কোনটা এনে কার সাথে কিভাবে জুড়ে দেয়া হয়েছিল, তা এখন নির্ধারণ করা বাস্তবিকই মুশকিল।

    নিউ টেস্টামেন্ট বা প্রচলিত ইঞ্জিল শরীফ অর্থাৎ ‘বাইবেলের নতুন নিয়ম’ বিশেষত সুসমাচারসমূহ সংকলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল যীশুখ্রিস্ট বা হযরত ঈসা (আঃ) তাঁর ধর্মপ্রচারের মাধ্যমে মানুষের জন্য যেসব বাণী ও বক্তব্য রেখে যান এবং তার বিভিন্ন কাজকর্মের যেসব বিবরণী জানা ছিল, সেগুলো একত্রিত করে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করা। দুর্ভাগ্যের বিষয়, যাদের দ্বারা এসব বাণী, বক্তব্য ও বিবরণী সংকলিত হয়েছিল, তারা কেউই সেসব বাণীর ও কর্মের প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী ও শ্রোতা ছিলেন না। বরং, তখন সমাজে বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় সম্প্রদায়ের (যেমন জুডিও ক্রিশ্চিয়ানিটি) প্রাদুর্ভাব ছিল বেশি। ওইসব সম্প্রদায়ের মধ্যে যীশুখ্রিস্টের জীবনী ও ধর্মপ্রচার সম্পর্কে নানাধরনের কাহিনী প্রচলিত ছিল। বাইবেলের সুসমাচার তথা ইঞ্জিল শরীফের লেখকবৃন্দ ছিলেন তদানীন্তন আমলের এক-একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মুখপাত্রস্বরূপ। সুতরাং সেই অবস্থানে থেকেই তারা নিজ নিজ সমপ্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত বা লিখিত কাহিনীসমূহ সংকলন করে যান, কিন্তু ওইসব কাহিনী বা রচনা এক পুরুষ থেকে আরেক পুরুষে সঞ্চারিত হওয়ার সময় মধ্যবর্তী যেসব স্তর বা পর্যায় অতিক্রম করে সেসব পর্যায়ের রচনাবলী বিলুপ্ত হয়ে যায় অনেক আগেই। শুধু তাই নয়, সেই সাথে বিলুপ্ত হয় সেই আদি কাহিনী বা মূল রচনাগুলোও। সুতরাং, এখন বাইবেলের নতুন নিয়ম তথা ইঞ্জিল শরীফ বলে যে কিতাবটা পাওয়া যায়, তা মূল আসমানী কিতাব ইঞ্জিলের সাথে যে কতটা সঙ্গতিপূর্ণ, তা নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই।

    অতএব, এখন যদি নিরপেক্ষভাবে বিচার করতেই হয়, তবে ইহুদী ও খ্রিস্টানদের মধ্যে প্রচলিত ধর্মীয় গ্রন্থ তথা বাইবেলের পুরাতন ও নতুন নিয়মের অর্থাৎ তাওরাত, জবুর ও ইঞ্জিলের বিচার-পর্যালোচনা করতে হবে সেই পরিস্থিতির আলোকেই। শুধু তাই নয়, সেই বিচার-পর্যালোচনাকে যদি নিরপেক্ষ রূপ দিতে হয় তবে বাইবেল-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বলে পরিচিত পণ্ডিত পুরোহিত ধর্মতত্ত্ববিদগণ কে কি বললেন বা না বললেন, তার প্রতি ক্ৰক্ষেপ করা চলবে না।

    প্রকৃতপক্ষে, বাইবেলের মধ্যে রয়েছে নানাবিধ স্ববিরোধিতা ও বৈপরিত্য। কারণ, এসব কাহিনী ও রচনা গ্রহণ করা হয়েছে নানাভাবে, নানা উৎস থেকে। এই গ্রন্থে যে ধরনের স্ববিরোধিতা ও বৈপরিত্যের ভুরিভুরি দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে। ফ্রান্সের মধ্যযুগের গাথা-কবিতার লেখকগণ তাঁদের বর্ণনাকে যেভাবে ফেনিয়ে-ফাঁপিয়ে পরিবেশন করতেন, বাইবেলের সুসমাচার-লেখকগণও যীশুর কথা বলতে গিয়ে ঠিক তেমনিভাবে বিভিন্ন ঘটনাকে ফেনিয়ে-ফাঁপিয়ে বড় করে তুলে ধরেছেন। এর কারণ, লেখকবৃন্দ নিজ নিজ অবস্থান ও দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ঘটনাগুলো উপস্থাপন করেছেন। তাই অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায়, তাদের বর্ণিত কোনো কোনো ঘটনা এত অস্পষ্ট যে, সেসবের সত্যতা ও সঠিকত্ব সম্বন্ধে সন্দেহের অবকাশ থেকেই যায়। আর এ কারণেই ইহুদী ও খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ তথা গোটা বাইবেলের জ্ঞান-বিজ্ঞান-সংক্রান্ত বিষয়ের বিচার-বিশ্লেষণে সতর্কতা অপরিহার্য।

    এ পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে নানা তথ্যজ্ঞানের আলোকে যেসব আলোচনা ও পর্যালোচনা তুলে ধরা হয়েছে, তা থেকে স্পষ্ট হয় বাইবেলের বর্ণনার মধ্যে কেন এতটা বৈপরিত্য, কেন সেখানে এতরকম অসম্ভব ঘটনার সমাবেশ এবং কেনই বা বাইবেলের প্রতিটি বর্ণনার পরতে-পরতে এতটা অসঙ্গতি। কোনো সচেতন খ্রিস্টান যখন এসব উপলব্ধি করেন, তখন তিনি বিস্ময়ে অবাক না হয়ে পারেন না। এ কারণেই ধর্মীয় দিকদিয়ে স্বীকৃত ভাষ্যকারবৃন্দ বাইবেল-সংক্রান্ত আধুনিক গবেষণার ফলাফল ধামাচাপা দেয়ার জন্য গোড়া থেকেই এত প্রয়াস প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। এজন্য তারা নানা বাগাড়ম্বরে কথার ফুলঝুরি ছড়িয়ে কখনো বা ইনিয়ে-বিনিয়ে অত্যন্ত চালাকির সাথে একযোগে আত্মপক্ষ সমর্থনের এমন একখানা আবহাওয়া সৃষ্টি করেন যে, মূলবিষয় থেকে দৃষ্টি সহজেই অন্যদিকে স্থানান্তরিত হয়ে যায়। মথি ও লুকের সুসমাচারে বর্ণিত যীশুখ্রিস্টের বংশাবলীপত্র এ বিষয়ের একটি চমৎকার উদাহরণ।

    যীশুখ্রিস্টের পরস্পর বিপরীত এই দুই বংশাবলীপত্র বৈজ্ঞানিক বিচারে গ্রহণেরও অযোগ্য। খ্রিস্টীয় ধর্মতত্ত্ববিদগণের এই রাখঢাকের মনোভাব পরিষ্কারভাবে ধরা পড়ে। যোহন-লিখিত সুসমাচারের পর্যালোচনায় বিশেষ মনোযোগ দেয়া হয়েছে। এর কারণ, এই সুসমাচারটি বাদবাকি তিনটি সুসমাচার থেকে বিশেষভাবে আলাদা। যেমন—’ইউকেরিস্ট’ বা ‘প্রভুর ভোজস্থাপন’ পর্বটির কথা। যোহনের সুসমাচারে (বাংলা ইঞ্জিল শরীফের ইউহোন্না অধ্যায়) এ ধরনের একটি গুরুত্বপূর্ণ খ্রিস্টীয়-অনুষ্ঠান সম্পর্কে আদৌ কোনো বর্ণনা যে নেই, তা অনেক খ্রিস্টানই জানেন না।

    ঐশীগ্রন্থ হিসেবে কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার যে ইতিহাস, তার সাথে অপর দুই ধর্মগ্রন্থের অর্থাৎ বাইবেলের পুরাতন নিয়ম ও বাইবেলের নতুন নিয়ম-এর রচনা ও সংকলন-ইতিহাসের পার্থক্য একদম মৌলিক। কোরআন প্রায় সুদীর্ঘ। বিশবছর ধরে অবতীর্ণ হয়েছে এবং যে মুহূর্তে কোরআনের যে অংশ প্রধান ফিরিশতা জিবরাঈলের মাধ্যমে মোহাম্মদের (দঃ) নিকট পৌঁছানো হয়েছে, সেই মুহূর্তেই ঈমানদার মুসলমানগণ তা কণ্ঠস্থ করে নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, মোহাম্মদের (দঃ) জীবদ্দশাতেই কোরআনের অবতীর্ণ বাণীসমূহ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এরইভিত্তিতে কোরআনের সর্বশেষ সংকলনের কাজ শুরু হয় মোহাম্মদের (দঃ) মৃত্যুর পরেপরেই এবং খলিফা উসমানের (রাঃ)-এর আমলে দীর্ঘ বারো বছরের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় মোহাম্মদের (দঃ) মৃত্যুর চব্বিশ বছরের মধ্যে কোরআনের চূড়ান্ত সংকলনের কাজ সমাপ্ত হয়। মোহাম্মদের (দঃ)-এর আমলের লিপিবদ্ধ কোরআন তো ছিলই। তাছাড়াও ঈমানদার মুসলমান হাফেজগণের সহায়তায় সংকলিত কোরআনের প্রতিটি আয়াত ও পাঠ যাচাই বাছাই করে নেয়া হয়। এইসব হাফেজ কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার সময়ই তা মুখস্থ করে নেন। উল্লেখ্য, এভাবে সেই গোড়া থেকেই কোরআন হেফজ করার এবং তা অব্যাহতভাবে তেলাওয়াত করার ধারা জারি হয়ে গেছে। সেই থেকে কোরআনের প্রতিটি আয়াত সর্বাধিক যত্ন ও সতর্কতার সাথে সংরক্ষণ করে আসা হচ্ছে। এ কারণে কোরআনের অকৃত্রিমত্ব এবং সঠিকত্ব নিয়ে কখনোই কোনো সমস্যা হয়নি।

    কোরআন গোটা বাইবেলের অর্থাৎ তাওরাত, জবুর ও ইঞ্জিলের পর আসমানী কিতাব হিসেবে অবতীর্ণ হয়। কোরআনের বাণীসমূহ স্ববিরোধিতা ও বৈপরিত্য থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। শুধু তাই নয়, বাইবেলের বাণীগুলোতে যেখানে মানুষের হস্তক্ষেপের অনেক অনেক নজির বিদ্যমান; সেখানে কোরআনের কোনো বাণীতে মানুষের হস্তক্ষেপের কোনো প্রমাণ নেই। সবচেয়ে বড় কথা, সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে বৈজ্ঞানিক তথ্য ও আধুনিক জ্ঞানের আলোকে কেউ যদি কোরআনের বাণীসমূহ বিচার-বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করেন, দেখতে পাবেন, বিভিন্ন বিষয়ে বর্ণনার সঠিকত্বের দিকথেকে কোরআন অনন্য। তদুপরি, কোরআনে এমনসব বাণী ও বক্তব্য রয়েছে যেসব বাণী ও বক্তব্য আধুনিক বিজ্ঞানের সাথে নানাভাবে সংশ্লিষ্ট। এখানেই যে কথাটা সবচেয়ে বড় হয়ে ধরা পড়ে, তাহলো, আধুনিক যুগের বিজ্ঞানের আবিষ্কার, বিশ্লেষণ ও গবেষণার দ্বারা সুপ্রতিষ্ঠিত ও সুপ্রমাণিত এতসব বিষয়ের সাথে বিশেষভাবে সংশ্লিষ্ট এই যে কোরআন, তা মোহাম্মদের (দঃ) দ্বারা কিংবা তার সময়ের কোনো মানুষের দ্বারা রচিত হয়েছিল–সেকথা কিভাবেই বা চিন্তা করা যায়? বস্তুত, কোরআনে এমনসব আয়াত রয়েছে, এতকাল যাবত সেসব আয়াতের অর্থ কিংবা ব্যাখ্যা আদৌ সম্ভব ছিল না। একান্ত আধুনিক যুগে এসে, শুধু অত্যাধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা, আবিষ্কার ও তথ্যজ্ঞানের আলোকেই ওইসব আয়াতের অর্থ, ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ সম্ভব হয়েছে।

    তুলনামূলক বিচার-বিশ্লেষণে আরো দেখা যায়, কোনো কোনো বিষয়ে বাইবেলের বর্ণনার সাথে কোরআনের বর্ণনার পার্থক্য একান্ত মৌলিক। বাইবেলের বর্ণনা যেখানে বৈজ্ঞানিক বিচার-বিশ্লেষণে অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হচ্ছে, সেখানে একইধারার বৈজ্ঞানিক বিচার-বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, কোরআনের বর্ণনা আধুনিক তথ্যজ্ঞানের সাথে সম্পূর্ণ সঙ্গতিপূর্ণ : সৃষ্টিতত্ত্ব ও মহাপ্লাবন-সংক্রান্ত এই গবেষণা-পর্যালোচনায় এই সত্যই ধরা পড়েছে যে, ইহুদীদের মিসরত্যাগের ঘটনাবলীর পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কোরআনের বর্ণনা সেখানে উল্লেখযোগ্যভাবে বাইবেলের বর্ণনার সম্পূরক। শুধু তাই নয়, প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় হযরত মুসার আমলের যেসব নির্দশন আবিষ্কৃত হয়েছে, সেসবের ব্যাপারে উভয় ধর্মগ্রন্থের বর্ণনায় মিল রয়েছে প্রচুর। এছাড়া, অন্যসব বিষয়ে বাইবেল ও কোরআনের বর্ণনায় পার্থক্য বিরাট। মূলতঃ উভয় ধর্মগ্রন্থের মধ্যে বর্ণনার এই যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য, তা শুধু একটি সত্যকেই প্রমাণ করে। আর তা হলো :

    “বিনাপ্রমাণে যাঁরা অভিযোগ আনেন এবং বিশ্বাসও করেন যে, ‘মোহাম্মদ (দঃ) বাইবেল থেকে নকল করে কোরআনের বাণী রচনা করেছিলেন’–তাঁদের সেই অভিযোগ ও বিশ্বাস পুরোপুরিভাবে অসার, অসত্য ও ভিত্তিহীন।”

    অন্যদিকে, কোরআন ও হাদীসের বিজ্ঞান-সংক্রান্ত বাণীর মধ্যে যখন তুলনামূলক বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়, তখন দেখা যায়, কোরআনের বর্ণনার সাথে হাদীসের বর্ণনার পার্থক্য দুস্তর। অথচ, হাদীস হচ্ছে মোহাম্মদেরই (দঃ) বাণী। কোনো কোনো হাদীসের বাণীতে বৈজ্ঞানিক বিষয়ের যথার্থতা ও প্রামাণিকতা খুবই অস্পষ্ট যদিও সেসব বাণীতে সে আমলের ধারণাই প্রতিফলিত হয়েছে। পক্ষান্তরে, কোরআনের বিজ্ঞান-বিষয়ক বর্ণনা সুস্পষ্ট এবং আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিচারেও সেসব বর্ণনা সুপ্রমাণিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত।

    সুতরাং, কোরআন ও হাদীসের বাণীর মধ্যে বিরাজমান স্বাভাবিক এই পার্থক্যের দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, হাদীস মোহাম্মদের (দঃ) ব্যক্তিগত বাণী ও বক্তব্য হলেও কোরআন আদৌ মোহাম্মদের (দঃ) নিজস্ব ও ব্যক্তিগত বাণী নয় : এ বাণী নিঃসন্দেহে ঐশীবাণী। অন্যকথায় : কোরআন ও হাদীস মোহাম্মদের (দঃ) নিজস্ব রচনা অর্থাৎ উভয়ের উৎস এক ও অভিন্ন, এই ধারণা ও প্রচারণা আদৌ ধোপে টেকে না।

    মোহাম্মদের (দঃ) আমলে জ্ঞান-বিজ্ঞানের যতটা উৎকর্ষ সাধিত হয় তার নিরিখে বিচার করলেও দেখা যায়, কোরআনের বাণীতে বিজ্ঞান-বিষয়ক যেসব বক্তব্য ও বর্ণনা বিদ্যমান–সেসব বৈজ্ঞানিক বিষয় আদৌ সে সময়কার কোনো মানুষের রচনা হতে পারে না। সুতরাং, তথ্যগত যুক্তির বিচারে এই সত্য স্বীকার করে নিতে আপত্তির কোনো কারণ থাকে না যে, কোরআন অবতীর্ণ এক আসমানী কিতাব ছাড়া আর কিছুই নয়।

    একদিকে, কোরআন তার সঠিকত্বের প্রামাণিকতায় অবতীর্ণ ধর্মগ্রন্থসমূহের মধ্যে যেমন একক, তেমনি অন্যদিকে বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠিত ও প্রামাণিক বিষয়ের বর্ণনায়ও কোরআনের বৈশিষ্ট্য অনন্য। এখন যখন আমরা কোরআনের এই বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনা হচ্ছে এবং সেই সাথে তার বৈজ্ঞানিক বাণী ও বক্তব্যের উপরে চলছে গবেষণা ও বিশ্লেষণ, তখন একটা সত্য-চ্যালেঞ্জ হিসেবে ফুটে না ওঠে পারে না। আর সেই সত্যটা হল : “কোরআনের কোনো মানবিক ব্যাখ্যা অসম্ভব। অর্থাৎ কোরআন কোনো মানুষের রচনা নয়; বরং এই কোরআন সত্যসত্যই অবতীর্ণ এক আসমানী কিতাব।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleপদবীর উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস – খগেন্দ্রনাথ ভৌমিক
    Next Article ইট’স কমপ্লিকেটেড – খাদিজা মিম
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025
    Our Picks

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025

    অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025

    আলস্যের জয়গান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }