Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    বাগানবাড়ি রহস্য – আনিসুল হক

    লেখক এক পাতা গল্প63 Mins Read0
    ⤷

    ১. চপল ভয়-পাওয়া গলায় বলল

    চপল ভয়-পাওয়া গলায় বলল, কী হলো কাদের ভাই?

    কাদের মৃধা গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসে আছে, চাবি ঘুরিয়ে বারবার গাড়ি স্টার্ট দেওয়ার চেষ্টা করছে, ঘর্ঘর শব্দ হচ্ছে, কিন্তু গাড়ি স্টার্ট নিচ্ছে না।

    চপলের গলা আরও মিইয়ে গেল, এখান থেকে তাড়াতাড়ি সরেন। জায়গাটা ভালো না।

    সন্ধ্যা সময়টা আসলেই রহস্যময়। সন্ধ্যা মানে না দিন, না রাত। দিন আর রাতের মিলনক্ষণ। কিন্তু ভোরের সঙ্গে সন্ধ্যার একটা পার্থক্য আছে। ভোরের মধ্যে আশা আছে, একটা আলোকিত দিনের প্রতিশ্রুতি আছে। সন্ধ্যার মধ্যে আছে অনিশ্চয়তা, সে সংকেত দিচ্ছে, সামনের সময়টা ঘোরতর অন্ধকার।

    এমনকি নিজের বাড়িতেও সন্ধ্যাবেলা একা থাকলে মন খারাপ লাগে।

    আর বনজঙ্গলের মধ্যে সন্ধ্যা নেমে এলে ভয় না পেয়ে উপায় আছে? তাও যদি অনিশ্চিত যাত্রাপথের মাঝামাঝি কোনো অজানা জঙ্গলের ধারে নির্জন রাস্তায় ঠিক সন্ধ্যার মুখে গাড়ির স্টার্ট বন্ধ হয়ে যায়, তখন গা ছমছম তো করবেই।

    একটু আগে চপল গান ধরেছিল, ‘চলো না ঘুরে আসি, অজানাতে, যেখানে নদী এসে থেমে গেছে।’ চপলের সঙ্গে গলা মিলিয়েছিল তার দুই বন্ধু জাহিন আর স্বাধীন। এখন তাদের দুজনের গলা দিয়েও যেন কোনো স্বর বেরুতে চাইছে না।

    তবু ফিসফিস কণ্ঠে জাহিন জিজ্ঞেস করল, জায়গাটা ভালো না মানে কী, চপল ও চপল!

    চপল সে কথার জবাব না দিয়ে ড্রাইভারের উদ্দেশে কাতর স্বরে বলল, কাদের ভাই, স্টার্ট দেন তাড়াতাড়ি। আপনার গাড়ি নষ্ট হওয়ার জায়গা পেল না। যেখানে বাঘের ভয়, সেখানে রাত হয়।

    জাহিন আর্তস্বরে বলল, কী বলিস চপল! এখানে বাঘের ভয় আছে নাকি!

    স্বাধীন বলল, না, ঠিক বাঘের ভয় না। তাই নারে চপল?

    চপল বলল, হ্যাঁ বাঘের ভয় না। অন্য কিছু। তুই ভয় পাস না। আমরা আছি না? আর গাড়ি তো স্টার্ট নেবেই। কাদের ভাই দেখেন না কী হলো।

    কাদের গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির ইঞ্জিনের ঢাকনা খুলে দেখতে লাগল। হাতের মোবাইল ফোনটাকে টর্চ বানিয়ে আলো জ্বালল। গভীর অভিনিবেশ-সহকারে ইঞ্জিন পরীক্ষা করে এসে বলল: বুঝতাছি না কী হইল। সবকিছু ঠিক আছে। স্টার্ট নেয় না ক্যান?

    চপল বিস্ময়মাখা কণ্ঠে জিগ্যেস করল, সব ঠিক আছে?

    কাদের ড্রাইভার বিজ্ঞের মতো ভঙ্গি করে বলল, জি। সব ঠিক আছে।

    চপল বলল, স্টার্ট নিচ্ছে না?

    কাদের মাথা নাড়ল, জি না।

    চপল দীর্ঘশ্বাস ফেলে শরীর ছেড়ে দিয়ে বলল, যা ভেবেছিলাম তাই।

    জাহিন মিহি স্বরে বলল, কী ভেবেছিলি চপল?

    স্বাধীন সবজান্তার ভঙ্গি করে বলল, চপল ভেবেছিল, এই জায়গাটা ভালো না। রহস্যময় ঘটনা ঘটে। অনেকটা বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের মতো। ভূত-প্রেত কিছু একটা থাকতে পারে।

    জাহিন যুক্তি খোঁজার চেষ্টা করছে। ভূত বলতে কিছু নেই। তবে বাঘ-ভালুক, সাপখোপ তো থাকতেই পারে। সে বলল, এই কী বলিস। বাঘ নাকি ভূত-প্রেত?

    স্বাধীন বলল, দুইটাই থাকতে পারে।

    কাদেরও মাথা নাড়ছে, হ। দুইটাই থাকবার পারে। এই জায়গায় গতবার আমি তিনটা লাশ পইড়া থাকতে দেখছিলাম। কাফনের কাপড় পরা লাশ।

    জাহিন কান্নামাখা স্বরে বলল, এসব কী বলছেন কাদের ভাই!

    কাদের আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল, আল্লাহর নাম নেন। আমার মনে হয় কিছু একটা আমগো ওপরে ভর করছে। নাইলে গাড়ি স্টার্ট লয় না ক্যান?

    চপল বলল, কাদের ভাই। আপনার দুটো পায়ে পড়ি। গাড়ি স্টার্ট দেন। একটা কিছু করেন।

    কাদের মুখে রহস্যময় হাসি ফুটিয়ে বলল, গাড়ি ঠেলতে হইব। আপনেরা তিনজন নামেন।

    জাহিন বলল, আমি গাড়ি থেকে নামতে পারব না।

    কাদের বলে, জাহিন ভাইজান। সমস্যা কী? তিনজন একসাথে থাকেন। বাঘ, ভূত-প্রেত যাই আসুক। তিনজন একসাথে থাকলে বল পাইবেন।

    স্বাধীন জাহিনের পিঠে চাপড় দিয়ে বলল, আরে নাম, নাম, কী হবে! ভূত তো গাড়ির ভেতরেও ঢুকতে পারে, তাই না?

    জাহিন চোয়াল শক্ত করে বলল, নারে স্বাধীন। তোরা নাম। কাদের ভাই আপনার কাছে দিয়াশলাই হবে?

    কাদের বলল, ক্যান ভাইজান?

    জাহিন বলল, আগুন জ্বালব। আগুন দেখলে নাকি ভূত কাছে আসতে সাহস পায় না।

    কাদের বলল, দিয়াশলাই নাই। লাইটার আছে। লন।

    জাহিন লাইটার নেয়। আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করে। পারে না। আশ্চর্য। লাইটারের খাপটা খুলছে। স্ফুলিঙ্গ উঠছে। কিন্তু আগুন ধরছে না।

    জাহিন কাঁদ কাঁদ গলায় বলে, আগুন জ্বলে না তো কাদের ভাই?

    চপল আর স্বাধীন গাড়ির পেছনে যায়। তাদের চোখে-মুখে দুষ্টুমিভরা হাসি।

    তারা গাড়ি ঠেলার চেষ্টা করে। কাদের স্টিয়ারিং ধরে বসে আছে।

    গাড়ি স্টার্ট নেয় এবং সবেগে চলতে শুরু করে।

    স্বাধীন মুখ থুবড়ে পড়ে যায় রাস্তায়। ব্যথাও পায়।

    আস্তে আস্তে ঠেস দিয়ে বসে। তারপর উঠে দাঁড়ায়। দেখে চপল দৌড়ে গিয়ে গাড়িতে উঠে বসেছে।

    স্বাধীন বলে, এই এই, আমাকে ছেড়ে কই যাস তোরা। কাদের ভাই ও কাদের ভাই। গাড়ি থামান।

    গাড়ির পেছনে পেছনে ছুটছে স্বাধীন। একটা মোড় ঘুরতেই যা ঘটে তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না স্বাধীন।

    সূর্য ডুবে গেছে। আকাশে লাল আভা। শরতের আকাশে মেঘের গায়ে অনেক রং।

    ফাঁকা রাস্তা। আঁঁকাবাঁকা। এক পাশে ঘন জঙ্গল। আরেক পাশে সবুজ খেত। জলা, জংলা। হঠাৎই একটা ছায়ামূর্তি এসে স্বাধীনের পথ রোধ করে দাঁড়ায়।

    স্বাধীন চমকে ওঠে। তার বুকের মধ্যে দুন্দুভি বাজে।

    একটা লোক, তার মাথার চুল এলোমেলো, গালভরা অযত্নে বড় হওয়া দাড়ি, লোকটার গায়ে একটা ছেঁড়া কোট, পরনে কালো ঢোলা প্যান্ট, তার সামনে হাত বাড়িয়ে বলে, দে। দে। পাগলকে হেলা করিস না। বিশটা টাকা দে। ভাত খামু।

    স্বাধীন উল্টা দিকে দৌড় ধরে। সে সত্যি ভীষণ ভয় পেয়ে গেছে। তার বুক ধড়াস ধড়াস করে কাঁপছে।

    খানিকক্ষণ দৌড়ানোর পরে স্বাধীনের হুঁশ হয়। তার বন্ধুরা মাইক্রো নিয়ে যেদিকে চলে গেছে, সে দৌড় ধরেছে তার বিপরীত দিকে। এখন এই নির্জন জংলি রাস্তায় সে একা। আশেপাশে কোনো জনবসতির চিহ্নও দেখা যাচ্ছে না।

    অন্ধকার ঘন হয়ে আসছে। সন্ধ্যাতারা জ্বল জ্বল করছে আকাশে। চপলটা যা চপল প্রকৃতির আর জাহিনটা যা বোকাসোকা, তাতে তারা তাকে ফেলে রেখেই চলে যেতে পারে। আর পরে হয়তো চপল ফোন করে বলবে, দোস্ত, রাতটা কোনোরকমে গাছের নিচে শুয়ে-বসে কাটিয়ে দে, কাল দিনের বেলা তোকে নিতে গাড়িটা পাঠাচ্ছি। স্বাধীন ফোন করে চপলের নম্বরে।

    চপল ফোন ধরে—চপল: হ্যালো…স্বাধীন বল।

    ওপাশ থেকে স্বাধীন ভয়ার্ত কণ্ঠে বলে, এই আমাকে ফেলে রেখে কই গেলি তোরা। আমি মারা যাচ্ছি ভয়ে। তোরা গাড়ি ঘোরা। আমাকে তুলে নিয়ে যা।

    ওদিকে গাড়ি আবার থেমে যায়।

    কাদের বলে, আবার স্টার্ট বন্ধ হইয়া গেল। জায়গাটা ভালো না। তেনারা এইহানে নানা কাণ্ডকীর্তি করেন।

    জাহিন মিনমিন করে জিগ্যেস করে, ওনারা কারা।

    কাদের ফিসফিস করে বলে, রাতের বেলা তাগো নাম নেওয়া বারণ।

    চপল ফোনে বলে, গাড়ির স্টার্ট আবার বন্ধ হয়ে গেছে।

    স্বাধীন আকুল স্বরে বলে, তাহলে তোরা এসে আমাকে নিয়ে যা।

    চপল বলে, আরে আমরা তো ওইখানেই আছি। বেশি দূর আগাইনি। তুই আয় না বাবা।

    স্বাধীন বলে, না। আমি পারব না। এই রাস্তায় আমি একটা…

    চপল বলে, একটা কী?

    স্বাধীন বলে, একটা ভয়ংকর লোক রাস্তার মাঝখানে…চপল, ভাই বলে ডাকছি, সারা জীবন তোর গোলাম হয়ে থাকব। ভাই, এসে নিয়ে যা।

    চপল বলে, আচ্ছা আসছি। সে ফোন রেখে গাড়ি থেকে নেমে পড়লে জাহিন তাকে টেনে ধরে, এই কই যাস। আমাকে একা ফেলে রেখে যাবি না বলে দিচ্ছি।

    চপল বলে, স্বাধীন বিপদে পড়েছে। ওকে উদ্ধার করে আনতে হবে। তুইও চল।

    জাহিন বলে, বিপদ? না না। আমি যাব না। তুইও যাস না। স্বাধীনকে চলে আসতে বল।

    চপল বলে, না। ও ভয় পাচ্ছে। কী যেন একটা ভয়ংকর জিনিস ও দেখেছে। ওকে নিয়ে আসি।

    চপল নেমে যায় গাড়ি থেকে। স্বাধীনের সন্ধানে হাঁটতে থাকে। মোড়ে ঘুরতেই তার সামনেও আচমকা এসে পড়ে একজোড়া হাত। নোংরা কোট পরা দুটো হাত। ক্যান আই গেট টাকা টোয়েন্টি অনলি?

    এই নির্জন পথে অদ্ভুত পোশাক পরা উসকোখুসকো দাড়ি-গোঁফসমেত একটা মানুষ কোত্থেকে এল? চপল এমনিতেই সাহসী ছেলে। কিন্তু তারও পিলে চমকে যায়।

    লোকটা তার পথ আটকে দাঁড়ালে সে বিপন্ন বোধ করে।

    কিন্তু এত সহজেই ভেঙে পড়ার পাত্র তো নয় চপল। সে একটু পিছিয়ে যায়। তারপর বলে, গেট আউট অফ মাই ওয়ে, সরে দাঁড়াও।

    লোকটা খানিকটা ভড়কে যায় বলেই মনে হয়। চপল তাকে পাশ কাটিয়ে দ্রুত চলে যায় স্বাধীনের সন্ধানে।

    জাহিন গাড়িতেই বসে ছিল।

    গাড়ির ইঞ্জিনের ওপরের ঢাকনা খুলে কাদের কী যেন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে।

    তারপর সে বলে, জাহিন ভাই, আপনি থাকেন। আমি একটু ঘুইরা আসি।

    জাহিন আকুতি জানায়, না-না, কাদের ভাই। আপনি যাবেন না।

    কাদের বলে, আরে আমারে যাইতেই হইব। জরুরি কাম আছে। বুঝেন না ক্যান।

    কাদের হনহন করে হেঁটে চোখের আড়ালে চলে গেলে জাহিন ভয়ে মরমর হয়ে পড়ে।

    রাত ঘন হয়ে আসছে। দূরে শেয়াল ডাকছে। আর নানা রকমের পোকার ডাক। জোনাকি জ্বলছে।

    জাহিন খানিকক্ষণ দমবন্ধ করে গাড়িতে বসে থাকে। আশায় আশায় থাকে, হয়তো এখনি কাদের কিংবা চপল বা স্বাধীন এসে যাবে। তাদের ফেরার নাম নেই।

    জাহিন গাড়ি থেকে নামে।

    যতদূর পারা যায়, গলায় জোর এনে ডাকে, চপল, চপল, স্বাধীন, স্বাধীন…

    তার সেই ডাক প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরে আসে।

    এই সময় হঠাৎ গাড়ির ওপরে একটার পর একটা ঢিল পড়তে থাকে। জাহিন এদিক-ওদিক দেখে।

    ঢিল কে ছোড়ে?

    এই সময় পায়ের শব্দ। কে যেন আসছে।

    পেছনে ঢিল পড়লে সে সেদিকে তাকায়।

    তখন কে যেন ফিসফিস করে কানের কাছে বলে ওঠে, বিশটা টাকা দেন। ভাত খামু। প্লিজ গিভ মি টাকা টোয়েন্টি অনলি। প্লিজ…

    জাহিন গাড়ির দিকে দৌড় ধরে। তখন তার সামনে ঢিল পড়তে থাকে। সে ফেরার চেষ্টা করে। রহস্যময় ভয়ংকর দর্শন ফকিরটা সামনে এসে দাঁড়ায়।

    জাহিন বুঝতে পারে না সে কী করবে, তার কী করা উচিত। একটা শেয়াল দৌড়ে রাস্তা পার হয়। একঝাঁক বাদুড় আকাশ দিয়ে উড়ে যেতে থাকে।

    জাহিনের মনে হতে থাকে, সে এখনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলবে।

    তখন দূরে মুণ্ডুহীন দুটো শরীর নড়তে থাকে। জাহিনের সেদিকে চোখ চলে যায়। সে এক দৌড়ে গাড়ির কাছে যায়, দরজা খোলে, আর ভেতরে ঢুকে গাড়ি লক করে দেয়। বাইরে হিহি করে কারা যেন হাসছে। আর জঙ্গলের ভেতরে একটা গাছের ডালে ডালে কারা যেন নৃত্য করতে থাকে।

    জাহিন চোখ বন্ধ করে কানে হাত দেয়। সে যত দোয়া জানে সব পড়তে আরম্ভ করে। বাইরে প্রচণ্ড শব্দ, গাছের ডালে তোলপাড়, ওইখানে নাচছে দুটো মুণ্ডুবিহীন মানব শরীর, ঢিল পড়ছে ধুপধাপ, আর একটা ভয়ানকদর্শন মানুষ ইংরেজিতে বলে যাচ্ছে, ডেঞ্জার, ডেঞ্জার…দে আর কামিং…ডেঞ্জার ডেঞ্জার…

    তখন গাড়ির ভেতরে একটা মানব শিশু ওঁয়া ওঁয়া শব্দে কেঁদে ওঠে।

    গাড়ির মধ্যে বাচ্চা এল কোত্থেকে।

    জাহিন জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

    গাড়িটা একা পড়ে আছে রাস্তার ধারে। গাড়িতে আর কেউ নেই।

    জাহিন একা এবং অচেতন।

    কোট পরা লোকটা তখন তার কোটের পকেট থেকে একটা ছোট্ট চাকু বের করে।

    কাদের সেই সময় এদিকটাতেই আসে। তার হাতে মোবাইল ফোন কাম টর্চ। সেই টর্চের আলো সে সামনে ফেলতেই কোটপরা লোকের চাকুতে আলো পড়ে ঝিলিক দেয়।

    কাদের ভয় পেয়ে পিছিয়ে যায়। লোকটা তখন চিৎকার করে ওঠে, অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট। বহুদিন মাংস খাই না। আজকে মাংস খাব। ক্যান ইউ লেন্ড মি টাকা ফিফটি অনলি।

    আবার ঢিল পড়তে থাকে।

    আর গাড়ির ভেতর থেকে বাচ্চা মানুষের কান্না ভেসে আসে আবারও। কাদেরের কানে সেই কান্নার আওয়াজ গেলে সে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু বলে উল্টো দিকে দৌড় ধরে।

    কোটপরা লোকটা হাসতে থাকে হো হো শব্দে।

    গাছের ডালে তখন যেন ডাইনির মাতম। সমস্ত বনভূমিতে যেন ঝড় বয়ে যায়। দূরে জলাভূমির ওপরে আগুন জ্বলে ওঠে। বাগানবাড়ি যাত্রাপথটা যেন হাইওয়ে টু হেল হয়ে ওঠে।

    ⤷
    1 2 3 4 5
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleরক্তে আঁকা ভোর – আনিসুল হক
    Next Article মা – আনিসুল হক

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }