Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    বিচিত চিন্তা – আহমদ শরীফ

    আহমদ শরীফ লেখক এক পাতা গল্প450 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    জেহাদের স্বরূপ

    কী করে কখন থেকে যে জেহাদ কথাটির অর্থ অমুসলমানের কাছে বিকৃত হয়ে গেছে, তার দিন ক্ষণ নির্ণয় করা সহজ নয়। জেহাদ বলতে তারা বিধর্মী-বিধ্বংসী মুসলিম বর্বরতাই বোঝে। এ বিরূপতা আজকের উন্নতমনা সংস্কৃতবান তরুণ-মনেও কিছুটা জেগেছে, বিজাতি প্রভাবে তারাও মুজাহিদ বলতে আসুরিক উত্তেজনা-সর্বস্ব ধর্মোন্মত্ত খুনীই বোঝে। এ নিশ্চিতই দুর্ভাগ্যের কথা।

    কেননা  জেহাদ মুসলিম জীবনের অপরিহার্য অংশ। সেজন্যে জীবনের আর আর ব্রতের মতো জেহাদও তাদের সময়োচিত ব্রত। কথাটা ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন।

    ইসলাম হচ্ছে প্রথমত এবং প্রধানত মানুষের পার্থিব জীবনের ব্যবহার বিধি। এর মধ্যে কোনো জটিলতা কিংবা অধ্যাত্ম-রহস্য নেই। দ্বৈতবাদই ইসলারে শিক্ষা : স্রষ্টা ও সৃষ্টি কেবল যে আলাদা তা-ই নয়, মানুষ ও আল্লাহর সম্পর্কও হচ্ছে বান্দা-মনিরে। বান্দার কাছে মনিবের নিজের জন্যে কিছুই কাম্য নেই। তিনি চান মানুষের পারস্পরিক ব্যবহার এমন হবে, যাতে কেউ কারো দুঃখ-বেদনা ও ক্ষতির কারণ হয়ে না দাঁড়ায়। কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে যদি কোনো মর্ত্য-মানবের কোনো নালিশ না থাকে, তাহলে সে নিপাপ। আল্লাহর কাছে তার জবাবদিহির আর কিছুই থাকে না। ইসলামে বিশ্বাসের (ইমানের) সঙ্গে সঙ্কর্ম অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত। যা তোমার নিজের জন্যে কাম্য নয়, তা তোমার ভাইয়ের জন্যেও কামনা করো না। বেঁচে থাকো বাঁচতে দাও, ভালো চাও, ভাল কর–এই হচ্ছে ইসলামের শিক্ষা। কোরআনের সর্বত্র পার্থিব জীবনে মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পারস্পরিক ঘরোয়া ও সামাজিক ব্যবহারের বিধিনিষেধই নির্দেশিত হয়েছে। অতএব ইসলাম মুখ্যত ব্যক্তিক ও সামাজিক জীবনবিধি (code of life)। জেহাদও এ বিধির অন্যতম অঙ্গ। পার্থিবতাই ইসলামের বৈশিষ্ট্য এবং অন্যান্য ধর্মের তুলনায় এর শ্রেষ্ঠত্বও এখানেই।

    এবার আমরা জেহাদের গুরুত্ব ব্যাখ্যার চেষ্টা করব। যে-কোনো আদর্শবাদের জন্যে সংগ্রামই জেহাদ। এ যুগে ism–গুলো যেমন এক-একটি রাষ্ট্রনৈতিক ও সামাজিক জীবনাদর্শ, পার্থিবতা প্রধান ইসলামও তেমনি রাষ্ট্র ও সমাজ বিধান। তফাৎ এই, ইসলামে সার্বভৌম-শক্তি মানুষ নয়– আল্লাহ। এ যুগে হলে তা আল্লাহবিহীন একটি উৎকৃষ্ট ism হতে পারত। খ্রীস্টধর্ম বা ইসলাম কার্যত সেকালীন রাষ্ট্রের গঠনতন্ত্রও বটে, নইলে পোপ ও খলিফা প্রতিষ্ঠা পেতেন না। আল্লাহর দোহাই কাড়া হলেও আল্লাহ পার্থিব জীবনে দেখাজানার বাইরে। কাজেই আল্লাহ নির্দেশিত বিধিনিষেধ আচরণে পালন করতে ও করাতে হলে রাজার বা রাষ্ট্রের অনুমোদন ও সহায়তা প্রয়োজন। এ কারণেই দারুল হরব মুসলমানের কাছে বিভীষিকা স্বরূপ, এবং দারুল হরব থেকে সম্ভব হলে হিজরত করার নির্দেশও দেয়া হয়েছে এ অসুবিধের কথা বিবেচনা করেই।

    ইসলামে সমাজ ও রাষ্ট্রকাঠামো প্রায় অভিন্ন। ধর্মে যা নিষিদ্ধ, রাষ্ট্রে তা বেআইনি এবং সমাজে তা-ই গর্হিত। কাজেই ধর্মে যা পাপ (Sin), রাষ্ট্রে তা-ই অপরাধ (Crime) এবং সমাজেও তা-ই অবাঞ্ছিত কু-আচার (Vice)। অতএব মুসলিম জীবনে নামাজ, রোজা, জাকাত, সত্যকথন, ভ্রাতৃত্ববোধ, পারস্পরিক সহযোগিতা প্রভৃতি যেমন সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় আবশ্যিক আচার ব্যক্তিগত নয়; তেমনি মহাজনী, মিথ্যাচার, নামাজ-রোজা-জাকাতে অবহেলা, লাম্পট্য, বেশ্যাবৃত্তি, অপব্যয়, নাচ-গানাদিও একান্তভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রদ্রোহী কর্ম-ব্যক্তিক অনাচার নয়। কেননা ইসলামী বিধানে সমাজভুক্ত মানুষের ব্যবহারিক জীবনে ব্যক্তিক (Private বা Personal) খেয়ালখুশির তথা স্বেচ্ছাচারিতার অবকাশ বিশেষ নেই। এ যেন People for the Society and State for the Society. যেহেতু মানুষের পারস্পরিক ব্যবহারবিধির উপরই সমাজ গড়ে উঠেছে, সেহেতু ব্যক্তিক আচরণে যদি সমাজনীতির মর্যাদা রক্ষিত হয় এবং রাষ্ট্রসংস্থাও যদি সমাজ-বিধি কার্যকর রাখতে সহায়তা করে, তা হলে কোনো মানুষই মানবিক জুলুমের কবলে পড়ে না। এমনি অবস্থাটা democratic right-এর পূর্ণতার ও পূর্ণ উপভোগের অবস্থা।

    কাজেই ইসলামী ধারণায় সমাজই হচ্ছে জনজীবনের নিশ্চিন্ত আশ্রয় এবং রাষ্ট্রসংস্থা সেই সমাজস্বাস্থ্য রক্ষার অছি। ব্যক্তিজীবনের নিরাপত্তার জন্যেই ব্যক্তির পক্ষে সমাজানুগত্য আবশ্যিক হয়ে উঠে, আর ব্যক্তি-জীবনের চাহিদা মেটাবার জন্যেই সমাজের প্রতিপত্তি ও মর্যাদা রক্ষাই রাষ্ট্র সংস্থার একমাত্র কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়। এ-যুগের ব্যক্তি স্বাতন্ত্রকামী গণধর্মীদের কাছে এমনি ধরনের। সমাজ-গুরুত্ব অশ্রদ্ধেয় হওয়ারই কথা। তাই কথাটি বিশদভাবে বলার চেষ্টা করা যাক।

    সমাজভুক্ত কোনো মানুষেরই ব্যক্তিগত (Private বা Personal affairs) বিষয় বা ব্যাপার বলে কিছুই থাকতে পারে না। আমার পার্শ্ববর্তী লোকটির যদি চোখে পিচুটি, নাকে শ্লেষা এবং ঠোঁটে ঘা থাকে, তাহলে তা আমার অস্বস্তির কারণ হয়ে ওঠে আমার কক্ষ-সাথীর যদি যক্ষ্মা থাকে তা আমার সর্বক্ষণের ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়; আমার প্রতিবেশীর ঘরে যদি কলহ কেদলের চেঁচামেচি চলে তাহলে তা আমার শান্তির বিঘ্ন হয়ে উঠে। আমার পাশের বাড়িতে যদি কেউ গান গায় তা আমার চিত্ত-প্রশান্তি আনে। আমার সামনের অপরিচিত লোকটি চুলে যদি সুগন্ধ তেল কিংবা গায়ে সেন্ট মাখে, তাহলে তা আমার চিত্ত-প্রসন্নতার অবলম্বন হয়, রূপবান কিংবা শ্রদ্ধেয় গুণবান ব্যক্তির সান্নিধ্য আমার আত্মপ্রসাদ লাভের কারণ হয়; তেমনি কুৎসিত, ইলুত ও নিগুণ লোক আমার চিত্তবিকার ঘটায়। এমনিভাবে কোনো সাক্ষাৎ সম্পর্ক ছাড়াও মানুষের সুখ-দুখ, আনন্দ-বেদনা, উচ্ছ্বাস-উত্তেজনা, আবেগ-উদ্বেগ, স্বস্তি-বিচলন, শান্তি-শঙ্কা, প্রীতি-ভীতি প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ করে অপর মানুষের অস্তিত্ব ও নিঃসম্পর্ক আচরণ। কাজেই যে-কোনো সমাজভুক্ত মানুষের অস্তিত্ব ও আচরণের অপ্রতিরোধ্য প্রতিক্রিয়া রয়েছে অপর মানুষের দেহ-মন-আত্মার উপর। এ প্রভাব-প্রতিক্রিয়া যে পারস্পরিক তা না বলেও চলে। অতএব মনুষ্যসমাজে individualism বা ব্যক্তিস্বাতন্ত্রের তেমন কোনো স্থানই নেই। যদিও এ-যুগে আমরা অতিপ্রগতি ও সংস্কৃতিচর্চার নামে এই স্বাতন্ত্র্য ও ব্যক্তিক আচরণে স্বাধীনতার প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাবান এবং গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্রসংস্থায় এর উপরই আত্যন্তিক গুরুত্ব দেয়ার রেওয়াজই যে কেবল চালু হয়েছে তা নয়, সংস্কৃতিচর্চার প্রথম পাঠ হিসেবে এদিকে লোক-প্রবণতাও বিশেষভাবে দেখা দিয়েছে। এজন্যে পুরোনো চারিত্রিক ও সামাজিক নীতিবোধ বদলাতে হয়েছে। কেননা সমাজ-শাসনের অনুপস্থিতিতে স্বেচ্ছাচার বা স্বৈরাচারের (শব্দার্থে ব্যবহৃত) অধিকারের ভিত্তিতেই ব্যক্তি স্বাধীনতার পরিমাপ হয়। ফলে জীবনের ও আচরণের মূল্যবোধে হেরফের দেখা দিয়েছে; তাতে পুরোনো উচ্চ হয়েছে তুচ্ছ, আবার তুচ্ছ পেয়েছে উচ্চের মর্যাদা, মহৎ হয়েছে মামুলি, বৃহৎ পাচ্ছে তাচ্ছিল্য। আবার আগেকার দিনের কাঁচ এ-যুগে কাঞ্চন মূল্যে বিকোচ্ছে।

    অনেক তুচ্ছ নীতি, আদর্শ ও আচরণ একালে মাহাত্ম্যে ও মহিমায় উজ্জ্বল ও আরাধ্য হয়ে উঠেছে। ভালো হল কি মন্দ হল তা অন্য তর্ক, তার হিসেব আলাদা। আমাদের বক্তব্য : যে গুরুত্ব ও মর্যাদা সমাজেরই একচেটিয়া ছিল, তা এ- যুগে বাক্তির উপর আরোপিত হওয়ায় আমাদের জীবনের জমা-খরচের খাতা পালটাতে হয়েছে। হিসেবের পদ্ধতিও হয়েছে বদলাতে। আগে ছিল সমাজের জন্যই ব্যক্তি ও রাষ্ট্র। এখন হয়েছে ববির জন্যই রাষ্ট্র, আর সমাজ পেয়েছে বড়জোর Club-এর মর্যাদা–এর অপরিহার্যতা এ-যুগে আর স্বীকৃত নয়। ফল দাঁড়িয়েছে এই, ব্যক্তি স্বাতন্ত্র তথা ব্যক্তি-স্বাধীনতার-বাঞ্ছরূপ আত্মরতির ছিদ্রপথে সমস্ত গুরুত্ব ও মর্যাদা গিয়ে বর্তেছে রাষ্ট্রসংস্থার উপর। যার ফলে Ism-প্রবণ জনগণ রাষ্ট্রসংস্থাকে পছন্দসই Ism অনুগ করতে গিয়ে জান-মাল রাষ্ট্রদানবের পদমূলে কোথাও বিকিয়ে দিয়েছে, কোথাওবা বন্ধক রেখেছে, আবার কোথাওবা স্বেচ্ছায় সমর্পণ করে আত্মপ্রসাদ লাভ করছে–ধন্যও হচ্ছে। দৃষ্টান্তস্বরূপ মনে করা যাক, রাশিয়া-চীনে যারা কম্যুনিস্ট তাদের একটি দল কোসিগিন কিংবা চৌ-এন-লাইকে তাদের ব্যক্তিক আচরণের জন্যে পছন্দ করছে না, অথচ সরাবার-তাড়াবার সাধ্যিও তাদের নেই। কাজেই তারা মনে মনে রাষ্ট্র প্রধানের উপর বিরূপ এবং ক্ষুব্ধ। এমনি অবস্থায় কোনো-অক্যুনিস্ট যদি কোসিগিন-চৌ-কে তাড়াতে এগিয়ে আসে, তখন ঐ বিরূপ বিক্ষুব্ধ দলের ভূমিকা কী হবে? তারা কি তখন অকমুনিস্টের বিরুদ্ধে জান-মাল পণ করে রুখে দাঁড়াবে না? তাদের কাছে তাদের আদর্শবাদ যেমন প্রাণপ্রিয়, মুসলমানদের কাছেও তাদের সমাজাদর্শ তেমনি অপরিত্যাজ্য। এজন্যে মুসলমান কেবল খলিফাতান্ত্রিক তথা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্যেই নয়, অত্যাচারী মুসলিম রাজার রাজ্যরক্ষার জন্যেও অমুসলমান আক্রমণকারীর বিরুদ্ধে জীবনপণ সংগ্রাম করবে। কেননা মুসলিম শাসনে মুসলমানের যা আবশ্যিক সামাজিক ও নাগরিক আচরণ তা অমুসলিম শাসনে ব্যক্তিগত ও ঐচ্ছিক আচরণের রূপ পায়। যেমন পাপের ভয় যে মুসলমানের নেই, সে ইচ্ছা করলেই সুদখোর হতে পারে, জাকাত দেয়া বন্ধ করতে পারে, জুয়াড়ি হতে পারে, সামাজিক সাম্যে আস্থা হারাতে পারে, বৈষম্যের অবাঞ্ছিত ব্যবধান সৃষ্টি করতে পারে। এক কথায় সে যে-কোনো বে-ইসলামী কাজ ও আচরণ করতে পারে। তা ছাড়া মুসলিম শাসনে ব্যক্তিগতভাবে একজন মুসলমান সাম্যভিত্তিক ইসলামী সমাজের যেসব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পেত, বৈষম্য কণ্টকিত বিধর্মী সমাজের কোনো শাসকের অধীনে সে-যুগে তা ছিল কল্পনাতীত।

    মুসলিম সমাজে ব্যক্তিক জীবনের ও জীবিকার নিরাপত্তাব্যবস্থা সুনিশ্চিত হয়েছে রসুলের নির্দেশে এক মুসলমানের ধনপ্রাণ অপর মুসলমানের পক্ষে পবিত্র। এবং মুসলমানরা পরস্পর ভাই ও বন্ধু। স্ত্রীর প্রতি সদ্ব্যবহার করো আর দাসের প্রতি সদয় হও এবং নিজের মতো করে তার খোর-পোষ দাও। তাই মুসলমান বিধর্মী শাসনের আশঙ্কায় বিচলিত হত। কেননা সে জানত এর ফলে তার নিশ্চিন্ত নির্বিঘ্ন জীবনে নিশ্চিতই বিপর্যয় আসবে! কাজেই যে-ইসলাম একান্তভাবে সমাজ-কাঠামো ভিত্তিক, তা এভাবে লোপ পেতে পারে। এই সমাজ-গুরুত্ব ও কর্তৃত্ব রক্ষার জন্যেই মুসলমানের পক্ষে মুসলিম শাসক আবশ্যিক। তাই জেহাদ মাত্রই আত্মরক্ষা বা প্রতিরোধমূলক (Defensive & Resistive)। জেহাদ আক্রমণাত্মক (Offensive or Aggressive) হতেই পারে না। এ অর্থেই জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের হয়ে সংগ্রামই শ্রেষ্ঠ জেহাদ।

    জেহাদ মুসলমানের সামাজিক কর্তব্য ও ব্যক্তিগত দায়িত্ব। জেহাদের জন্য প্রস্তুত থাকা মুজাহিদের ভাব জিইয়ে রাখা মুসলমানের ঈমানের অঙ্গ। এ অর্থে মুমিন মাত্রই মুজাহিদ। যে জেহাদ করে সেই মুজাহিদ, বেঁচে থাকলে হয় গাজী আর মরলে হয় শহীদ। Ism আবর্তিত আজকের দুনিয়ায় আদর্শবাদী তথা মতবাদ-ধারী মানুষ মাত্রই মুজাহিদ। কেননা আদর্শের জন্যে ও ন্যায়ের পক্ষে যে-কোনো প্রকারের সংগ্রামের নামই জেহাদ। তবু জেহাদ শব্দটি ঘৃণ্য হয়ে আছে। এর মূল্য-মাহাত্ম্য এ-যুগে মনে হয় মুসলমানদের কাছেও নেই। অবশ্য এজন্যে মুসলমানেরা নিজেরাই দায়ী। কেননা মুসলিম শাসনেও ইসলামী বিধান অনুসৃত হয়েছে কৃচিৎ আর রাজ্য-লোলুপ মুসলমান বাদশা-সুলতানেরা আত্মস্বার্থে আক্রমণাত্মক কাজে অর্থাৎ চড়াও হয়ে অপরের উপর হামলা ও জুলুম চালাবার জন্যেও অজ্ঞ-জনসাধারণকে জেহাদের ভাঁওতা দিয়ে উত্তেজিত করেছেন ও অনেক অনর্থ ঘটিয়েছেন। তাই জেহাদের নামে এমন ত্রাস ও অবজ্ঞা। যা অভিনন্দিত ও মহিমান্বিত মহৎ ব্রত হতে পারত, তা-ই হল অবাঞ্ছিত ও ঘৃণিত। তবু সমাজ-স্বার্থে নিত্য জেহাদ চাই। মুজাহিদ ছাড়া কে মানুষকে প্রাত্যহিক শাসন-শোসন-পীড়ন-পেষণ থেকে মুক্ত করবে, মুক্ত রাখবে।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleচট্টগ্রামের ইতিহাস – আহমদ শরীফ
    Next Article আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট – আহমেদ রিয়াজ

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }