Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    বিপ্রদাস – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

    উপন্যাস শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এক পাতা গল্প273 Mins Read0

    বিপ্রদাস

    ছাব্বিশ

    ম্যানেজার বিরাজ দত্ত মোটর লইয়া স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন। বন্দনাকে সসম্মানে ট্রেন হইতে নামাইয়া গাড়িতে আনিয়া বসাইলেন।

    বন্দনা জিজ্ঞাসা করিল, মা আজও বাড়ি এসে পৌঁছন নি দত্তমশাই?

    না দিদি।

    মৈত্রেয়ী?

    না, তাঁকে ত কেউ আনতে যায়নি।

    বাসু ভাল আছে?

    আছে।

    মুখুয্যেমশাই? দ্বিজুবাবু?

    বড়বাবু ভাল আছেন, কিন্তু ছোটবাবুকে দেখলে তেমন ভালো বোধ হয় না।

    বন্দনা জিজ্ঞাসা করিল, জ্বর-টর হয়নি ত?

    দত্ত বলিলেন, ঠিক জানিনে দিদি। কিন্তু সমস্ত কাজকর্ম করেই ত বেড়াচ্চেন।

    বন্দনা কিছুক্ষণ মৌন থাকিয়া বলিল, দত্তমশাই, আমার মনে হয় মা হয়ত এ দুঃখের মধ্যে আর আসবেন না। কিন্তু দুঃখ যতই হোক, শ্রাদ্ধের আয়োজন ত করতে হবে। কিছু হচ্চে কি?

    হচ্চে বৈ কি দিদি। কর্তাবাবুর শ্রাদ্ধে যেমন হয়েছিল প্রায় তেমনি ব্যবস্থাই হচ্চে।

    কথাটা ভাল বুঝিতে না পারিয়া বন্দনা সবিস্ময়ে প্রশ্ন করিল, কার মত বলচেন, মুখুয্যেমশায়ের পিতৃশ্রাদ্ধের মত? তেমনি বড় আয়োজন?

    দত্ত বলিলেন, হাঁ, প্রায় তেমনিই। গেলেই দেখতে পাবেন। বড়বাবু ডেকে বললেন, দ্বিজু, পাগলামি করিস নে, সব জিনিসেরই একটা মাত্রা আছে। ছোটবাবু বললেন, মাত্রা আছে জানি, কিন্তু মাত্রাবোধ ত সকলের এক নয় দাদা। বড়বাবু হেসে বললেন, কিন্তু তুই যে সকলের সকল মাত্রাই ডিঙিয়ে যাচ্ছিস দ্বিজু। ছোটবাবু বললেন, তাহলে আপনাদের কাছে মিনতি এই একটিবারের জন্যে আমাকে ক্ষমা করুন। আমি মাত্রা লঙ্ঘন করতে পারবো, কিন্তু বৌদিদির মর্যাদা লঙ্ঘন করতে পারবো না।

    এর পরে আর কেউ কথা কয়নি, এখন আপনি যদি কিছু করতে পারেন। খরচ বিশ-পঁচিশ হাজারের কমে যাবে না।

    খরচ কি সব ছোটবাবুর?

    হাঁ, তাই ত।

    বন্দনা জিজ্ঞাসা করিল, এ কি তাঁর পক্ষে খুব বেশী মনে হয় দত্তমশাই?

    বিরাজ দত্ত বলিলেন, খুব বেশী না হলেও সম্প্রতি গেলও যে অনেক দিদি। এখন সামলে চলার প্রয়োজন। এর উপর নতুন বিপদ আসতেই বা কতক্ষণ?

    আবার নতুন বিপদ কিসের?

    দত্ত ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া বলিলেন, আপনি কি শোনেন নি জামাইবাবুর সঙ্গে মামলা বেধেছে? এ-সব বস্তুর পরিণাম ত জানেন, ফলাফল বলতে কেউ পারে না।

    তবে নিষেধ করেন নি কেন?

    নিষেধ? এ ত বড়বাবু নয় দিদি, যে নিষেধ মানবেন। এঁকে নিষেধ করতে শুধু একজনই ছিলেন তিনি এখন স্বর্গে। এই বলিয়া বিরাজ দত্ত নিশ্বাস ফেলিলেন।

    বন্দনা আর কোন প্রশ্ন করিল না। বাড়ির কাছে আসিয়া দেখিল সুমুখের মাঠের একদিকে কাঠ কাটিয়া স্তূপাকার করা হইয়াছে। যে-সকল চালাঘর দয়াময়ীর ব্রতোপলক্ষে সেদিন তৈরি হইয়াছিল, সেগুলা মেরামত হইতেছে, বাহির প্রাঙ্গণে বিরাট মণ্ডপ নির্মিত হইতেছে, তথায় বহু লোক বহুবিধ কাজে নিযুক্ত। বিরাজ দত্ত অত্যুক্তি করে নাই বন্দনা তাহা বুঝিল।

    গাড়ি হইতে নামিয়া সে সোজা উপরে গিয়া উঠিল। প্রথমেই গেল দ্বিজদাসের ঘরে। একটা মোটা বালিশে হেলান দিয়া সে বিছানায় শুইয়া ছিল, পর্দা সরানোর শব্দে চোখ মেলিয়া উঠিয়া বসিল, বলিল, বন্ধু আপনি এলো আমার ঘরের দোরগোড়ায়।

    বন্দনা বলিল, হাঁ এলোই ত। কিন্তু এমন সময়ে শুয়ে কেন?

    দ্বিজদাস বলিল, চোখ বুজে তোমাকেই ধ্যান করছিলুম আর মনে মনে বলছিলুম, বন্দনা, দুঃখের সীমা নেই আমার। দেহে নেই বল, মনে নেই ভরসা, বোধ করি ঠেলতে আর পারব না, নৌকো মাঝখানেই ডুববে। ও-পারে পৌঁছনো আর ঘটবে না।

    বন্দনা বলিল, ঘটতেই হবে। তোমাকে ছুটি দিয়ে এইবার নৌকো বাইবার ভার নেবো আমি।

    তাই নাও। রাগ করে আর চলে যেও না।

    বন্দনা কাছে আসিয়া গড় হইয়া প্রণাম করিল, তাহার পায়ের ধূলা মাথায় লইয়া উঠিয়া দাঁড়াইতে দুজনের চোখ দিয়াই জল পড়িতে লাগিল। এমনভাবে প্রণাম করা তাহার এই প্রথম। বলিল, তোমার চোখেও জল আসে এ আমি জানতুম না।

    দ্বিজদাস বলিল, আমিও না। বোধ করি তার আসার পথটা এতকাল বন্ধ ছিল। প্রথম খুললো যেদিন মৈত্রেয়ীকে ডেকে এনে এ সংসারের ভার দিতে বলে তুমি চলে গেলে। আড়ালে চোখ মুছে ফেলে মনে মনে বললুম, এতবড় আঘাত যে স্বচ্ছন্দে করতে পারে তার কাছে কখনো ভিক্ষে চাইবো না। কিন্তু সে পণ আমার রইলো না। বৌদিদি গেলেন স্বর্গে, শশধরের সঙ্গে মামলা বাধতে মা চলে গেলেন মেয়ের বাড়িতে, দাদা জানালেন সংসার-ত্যাগের সঙ্কল্প, এক মিনিটের ভূমিকম্পে যেন সমস্ত হয়ে গেল ধূলিসাৎ। এ-ও সয়েছিল, কিন্তু শুনলুম যখন বাড়ি ছেড়ে বাসু যাবে কোন্‌ একটা অজানা আশ্রমে, সে আর সইলো না। একবার ভাবলুম যা-কিছু আছে কল্যাণীর ছেলেদের দিয়ে আমিও যাবো আর একদিকে, তখন হঠাৎ মনে পড়লো তোমার যাবার আগের শেষ কথাটা—বলেছিলে বিশ্বাস করতে, বলেছিলে আমার একান্ত প্রয়োজনে বন্ধু আপনি আসবে আমার দোরগোড়ায়। ভাবলুম, এই ত আমার শেষ প্রয়োজন, আর প্রয়োজন হবে কবে? তাই লিখলুম তোমাকে চিঠি। সন্দেহ আসতে চায় মনে, জোর করে তাদের তাড়িয়ে দিয়ে বলি—আসবেই বন্ধু। নইলে মিথ্যে হবে তার কথা, মিথ্যে হয়ে যাবে বৌদিদির শেষের আশীর্বাদ। যে বোঝা তিনি ফেলে গেলেন সে বোঝা বইবো আমি কোন্‌ জোরে! বলিতে বলিতে দু’ফোঁটা অশ্রু আবার গড়াইয়া পড়িল।

    বন্দনা কহিল, সবাই বলে তুমি বড় অবাধ্য। একা বৌদির ছাড়া আর কারো কথা কখনো শোননি।

    দ্বিজদাস বলিল, এই তোমার ভয়! কিন্তু কেন যে শুনিনি বৌদি বেঁচে থাকলে এর জবাব দিতেন। এই বলিয়া সে নিজের চোখ মুছিয়া ফেলিল।
    বন্দনা চুপ করিয়া কয়েক মুহূর্ত তাহার প্রতি চাহিয়া বলিল, জবাব পেয়েছি তোমার, আর আমার শঙ্কা নেই। এই বলিয়া সে দ্বিজদাসের হাতখানি নিজের হাতের মধ্যে টানিয়া লইয়া আবার কিছুক্ষণ স্থির থাকিয়া বলিল, কেবল তোমার চারপাশেই যে ভূমিকম্প হয়েছে তাই নয়, আমার মধ্যেও এমনি প্রবল ভূমিকম্প হয়ে গেছে। যা ভূমিসাৎ হবার তা ধূলোয় লুটিয়েছে, যা ভাঙবার নয়, টলবার নয়, সেই অটলকেই আজ ফিরে পেলুম। এবার যাই দাদার কাছে। যাবার দিনে আমাকে তিনি আশীর্বাদ করে বলেছিলেন, বন্দনা, যে তোমার আপন, আমার আশীর্বাদ যেন তাকেই একদিন তোমার হাতে এনে দেয়। সাধুর বাক্য আমি অবিশ্বাস করিনি, নিশ্চয় জেনেছিলুম এ কথা তাঁর সত্য হবেই। শুধু ভাবিনি, সে আশীর্বাদ এমন দুঃখের ভেতর দিয়ে সেই আপনজনকে এনে দেবে। যাই গিয়ে তাঁকে প্রণাম করি গে।

    দ্বিজু, বন্দনা এসেচে না? এই বলিয়া সাড়া দিয়া অন্নদা আসিয়া প্রবেশ করিল।

    এসেচি অনুদি, বলিয়া বন্দনা ফিরিয়া চাহিল। অন্নদার গভীর শোকাচ্ছন্ন মুখের প্রতি চাহিয়া বন্দনা চমকিয়া উঠিল, কাছে গিয়া তাহার বুকের উপর মাথা রাখিয়া অস্ফুটে কহিল, তোমার ও-মূর্তি আমি ভাবতেও পারিনি অনুদি। তার পরেই হু হু করিয়া কাঁদিয়া উঠিল। অন্নদার চোখ দিয়া জল পড়িতেছিল। ধীরে ধীরে বহুক্ষণ পর্যন্ত তাহার পিঠের উপর হাত বুলাইয়া মৃদুস্বরে বলিতে লাগিল, হঠাৎ আর চলে যেও না দিদি, দিন-কতক থাকো। আর তোমাকে কি বলবো আমি।

    বন্দনা কথা কহিল না, বুকের উপর তেমনি মুখ লুকাইয়া মাথা নাড়িয়া শুধু সায় দিল। এমনিভাবে আবার বহুক্ষণ গেল। তার পরে মুখ তুলিয়া আঁচলে চোখ মুছিয়া জিজ্ঞাসা করিল, বাসু কোথায় অনুদি?

    চাকরেরা তাকে পুকুরে স্নান করাতে নিয়ে গেছে।

    তাকে রেঁধে দেয় কে?

    অন্নদা কহিল, দ্বিজু। ওরা দুজনে একসঙ্গে খায়, একসঙ্গে শোয়। বলিতে বলিতে আবার তাহার চোখে জল আসিয়া পড়িল, মুছিয়া কহিল, মা ত শুধু বাসুর মরেনি, ওরও মরেছে। আবার চোখ মুছিয়া বলিল, সবাই বলে অকালে অসময়ে বাড়ির বৌ মরেছে, ছেলেমানুষের শ্রাদ্ধে এত ঘটা কেন? ওরে সবাই করে মানা,—বাহুল্য দেখে তাদের গা যায় জ্বলে, ভাবে, এ যে বাড়াবাড়ি! জানে না ত সে ছিল ওর আর এক জন্মের মা। কোন ছলে সে মর্যাদায় ঘা লাগলে ও সইবে কি করে?

    দ্বিজদাস বন্দনাকে ইঙ্গিতে দেখাইয়া কহিল, আর ভয় নেই অনুদি, বন্দনা এসেছেন, এবার সমস্ত বোঝা ওঁর মাথায় ফেলে দিয়ে আমি আড়াল হয়ে যাবো।

    অন্নদা বলিল, পরের মেয়ে এত বোঝা বইবে কেন ভাই?

    পরের মেয়েরাই ত বোঝা বয় অনুদি। ওঁকে ডেকে এনে বলেছি, এত দুঃখের ভার বইতে আমি পারবো না, এর ওপর বাসু যদি যায় ত, রইলো তোমাদের বলরামপুরের মুখুয্যেবাড়ি, রইলো তাদের সাতপুরুষের অভিমান, শশধরের ছেলেদের ডেকে এনে সংসারে আমি ইস্তফা দেবো। দাদাই শুধু পারে তাই নয়, দ্বিজুও পারে। সন্ন্যাস নিতে পারবো না বটে, ও আমি বুঝিনে—কিন্তু টাকাকড়ির বোঝা অনায়াসে ফেলে দিয়ে যাবো।

    অন্নদা বন্দনার হাত-দুটি ধরিয়া কহিল, পারবে না দিদি বিপিনের মত করতে? পারবে না বাসুকে বাড়িতে রাখতে?

    পারবো অনুদি।

    আর এই যে বাধলো সর্বনেশে মামলা জামাইবাবুর সঙ্গে, পারবে না থামাতে?

    হাঁ, এ-ও পারবো অনুদি। ক্ষণকাল স্তব্ধ থাকিয়া বলিল, উনি কোনদিন আমার অবাধ্য হবেন না, এই শর্তেই এ বাড়ির ছোটবৌ হতে রাজী হয়েছি অনুদি।

    কথাটা অন্নদা ভাল বুঝিতে না পারিয়া চুপ করিয়া চাহিয়া রহিল। বন্দনা বলিল, যা গেছে সে ত গেছেই। এর উপর কি মাকেও হারাতে হবে? মকদ্দমা না থামালে তাঁকে ফিরিয়ে আনবো আমি কি করে?

    দ্বিজদাস বালিশের তলা হইতে চাবির গোছাটা বাহির করিয়া বন্দনার পায়ের কাছে ফেলিয়া দিয়া কহিল, এই নাও। অবাধ্য হবো না সেই শর্তই তোমার কাছে আজ করলুম।

    বন্দনা চাবির গুচ্ছ তুলিয়া লইয়া আঁচলে বাঁধিল।

    এইবার অন্নদা ইহার তাৎপর্য বুঝিল। বন্দনাকে বুকের উপর টানিয়া লইয়া স্থির হইয়া রহিল, তাহার দুই চোখ বাহিয়া শুধু বড় বড় অশ্রুর ফোঁটা ঝরিয়া পড়িতে লাগিল।

    বন্দনা বিপ্রদাসের ঘরে ঢুকিয়া তাঁহাকে প্রণাম করিল। বলিল, বড়দা, এলুম।

    এই নূতন সম্বোধন বিপ্রদাসের কানে ঠেকিল। কিন্তু এ লইয়া কিছু না বলিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, শুনেছিলুম তুমি আসচো, তোমার বাবার তার পাওয়া গিয়েছিল। পথে কষ্ট হয়নি ত?

    না।

    সঙ্গে কে এল?

    আমাদের দরোয়ান আর আমার বুড়ো চাকর হিমু।

    বাবা ভালো আছেন?

    হাঁ।

    বিপ্রদাস একটুখানি চুপ করিয়া থাকিয়া বলিলেন, দ্বিজু কি পাগলামি করচে দেখলে?

    বন্দনা কহিল, আপনি শ্রাদ্ধের কথা বলচেন ত? কিন্তু পাগলামি হবে কেন? আয়োজন এত বড়ই ত চাই। এ নইলে তাঁর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হতো যে!

    কিন্তু সামলাতে পারবে কেন বন্দনা?

    উনি না পারলেও আমি পারবো বড়দা।

    বিপ্রদাস হাসিয়া কহিলেন, সে শক্তি তোমার আছে মানি, কিন্তু মেজাজ বিগড়োলেই মুশকিল। হঠাৎ রাগ করে চলে না গেলে বাঁচি।

    বন্দনা বলিল, সেদিন এসেছিলুম পরের মত, মাথায় কোন ভার ছিল না। কিন্তু আজ এসেছি এ বাড়ির ছোটবউ হয়ে। রাগিয়ে দিলে রাগ করতেও পারি, কিন্তু আর চলে যাবো কেমন করে? সে পথ বন্ধ হয়ে গেল যে! এই বলিয়া সে চাবির গোছা দেখাইয়া কহিল, এই দেখুন এ বাড়ির সব আলমারি-সিন্দুকের চাবি। আপনি তুলে নিয়ে আঁচলে বেঁধেচি।

    আনন্দ ও বিস্ময়ে বিপ্রদাস নিঃশব্দে চাহিয়া রহিলেন। বন্দনা বলিতে লাগিল, আপনাকে আমার লজ্জা করে বলবার, গোপন করে বলবার কিছু নেই। ভগবানের কাছে যেমন মানুষের নেই লুকোবার ঠিক তেমনি। মনে পড়ে কি আপনার আশীর্বাদ? যাবার দিনে আমাকে বলেছিলেন, যে তোমার যথার্থ আপন তাকেই তুমি পাবে একদিন। সেদিন থেকে গেছে আমার চঞ্চলতা, শান্তমনে কেবল এই কথাই ভেবেচি, যিনি জিতেন্দ্রিয়, যিনি আজন্ম শুদ্ধ সত্যবাদী সাধু, তাঁর আশীর্বাদে আর আমার ভয় নেই। যিনি আমার স্বামী তাঁকে আমি পাবোই। দুই চক্ষু তাহার অশ্রুপূর্ণ হইয়া উঠিল।

    বিপ্রদাস কাছে আসিয়া তাহার মাথায় হাত রাখিয়া নীরবে আশীর্বাদ করিলেন, এবং আজ এই প্রথম দিন বন্দনা তাঁহার পায়ের উপর বহুক্ষণ ধরিয়া মাথা পাতিয়া নমস্কার করিল। উঠিয়া দাঁড়াইলে বিপ্রদাস কহিলেন, আজ যাকে তুমি পেলে বন্দনা, তার চেয়ে দুর্লভ ধন আর নেই। এ কথাটা আমার চিরদিন মনে রেখো।

    বন্দনা কহিল, রাখবো বড়দা। একদিনও ভুলবো না।

    একটু থামিয়া কহিল, একদিন অসুখে আপনার সেবা করেছিলুম, আপনি পুরস্কার দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেদিন নিইনি,—মনে পড়ে সে কথা?

    পড়ে।

    আজ সেই পুরস্কার চাই। বাসুকে আমি নিলুম।

    বিপ্রদাস হাসিমুখে বলিলেন, নাও।

    তাকে শেখাবো আমাকে মা বলে ডাকতে।

    তাই করো। ওর মা এবং বাপ দু’জনকেই আজ রেখে গেলাম তোমার মধ্যে। আর রেখে গেলাম এই মুখুয্যেবাড়ির বৃহৎ মর্যাদাকে তোমার হাতে।

    বন্দনা ক্ষণকাল মাথা হেঁট করিয়া এই ভার যেন নীরবে গ্রহণ করিল, তারপরে কহিল, আর একটি প্রার্থনা। নিজেকে চিনতে না পেরে একদিন আপনার কাছে অপরাধ করেছিলুম। ভুল ভেঙ্গেচে, আজ তার মার্জনা চাই।

    মার্জনা অনেকদিন করেছি বন্দনা। আমি জানতাম তোমার অন্তর যাকে একান্তমনে চেয়েছে একদিন তাকে তুমি চিনবেই। তাই, আমার কাছে তোমার কোন লজ্জা নেই।

    বন্দনার চোখে আবার জল আসিতেছিল, জোর করিয়া নিবারণ করিয়া বলিল, আরও একটি ভিক্ষে। আমাদের সংসারে কি একদিনও থাকবেন না আর? অভিমানে, সঙ্কোচে কোনদিন মন পূর্ণ করে আপনাকে যত্ন করতে পাইনি, কিন্তু সে বাধা ত ঘুচলো; আর ত আমার লজ্জা নেই—কিছুদিন থাকুন না আমার কাছে? দু’দিন পূজো করি। এই বলিয়া সে সজল চক্ষে চাহিয়া রহিল,—তাহার আকুল কণ্ঠস্বর যেন অন্তর ভেদ করিয়া বাহিরে আসিল।

    বিপ্রদাস হাসিমুখে চুপ করিয়া রহিলেন।

    বন্দনা বলিল, ওই হাসিমুখের মৌনতাকেই আমি সবচেয়ে ভয় করি বড়দা। কি কঠোর আপনার মন, একে না পারা যায় গলাতে, না পারা যায় টলাতে। দেবেন না উত্তর?

    বিপ্রদাস এবার হাসিয়া ফেলিলেন। যেমন স্নিগ্ধ, তেমনি সুন্দর, তেমনি নির্মল। তাঁহাকে এমন করিয়া হাসিতে বন্দনা যেন এই প্রথম দেখিল। বলিল, উত্তর পেলুম, আর আপনাকে আমি পীড়াপীড়ি করব না। কিন্তু মনকে শান্ত করি কি করে বলে দিন। এ যে কেবলি কেঁদে উঠতে চায়।

    বিপ্রদাস বলিলেন, মন আপনি শান্ত হবে বন্দনা, যেদিন নিঃসংশয়ে বুঝবে তোমার দাদা দুঃখের মাঝে ঝাঁপ দিতে গৃহত্যাগ করেনি। কিন্তু তার আগে নয়।

    কিন্তু এ বুঝবো আমি কেমন করে?

    শুধু আমাকে বিশ্বাস করে। জানো ত দিদি, আমি মিছে কথা বলিনে।

    বন্দনা চুপ করিয়া রহিল। মিনিট-দুই পরে গভীর নিশ্বাস ফেলিয়া বলিল, তাই হবে। আজ থেকে প্রাণপণে বোঝাবো নিজেকে, বড়দা, সত্যি কথাই বলে গেছেন, সত্যবাদী তিনি, মিছে কথায় ভুলিয়ে চলে যাননি। যেখানে আছে মানুষের চরম শ্রেয়ঃ, সেই তীর্থেই তিনি যাত্রা করেছেন।

    বিপ্রদাস কহিলেন, হাঁ। তোমার মনকে বুঝিয়ে বোলো যা সবচেয়ে সুন্দর, সবচেয়ে সত্য, সবচেয়ে মধুর, বড়দা সেই পথের সন্ধানে বার হয়েছেন। তাঁকে বাধা দিতে নেই, তাঁকে ভ্রান্ত বলতে নেই, তাঁর তরে শোক করা অপরাধ।

    বন্দনার চোখে আবার জল আসিয়া পড়িল, তাড়াতাড়ি মুছিয়া ফেলিয়া বলিল, তাই হবে, তাই হবে। এ জীবনে আর যদি কখনো দেখা না পাই, তবু বলবো তিনি ভ্রান্ত নন, তাঁর তরে শোক করা অপরাধ।

    পর্দার ফাঁক দিয়া মুখ বাড়াইয়া বিরাজ দত্ত বলিলেন, দিদি, একটা জরুরী কথা আছে,—একবার আসতে হবে যে।

    যাই বিরাজবাবু। বড়দা, আসি এখন, বলিয়া বন্দনা ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল।

    সতীর শ্রাদ্ধের কাজ ঘটা করিয়া শেষ হইল। ভিক্ষুক কাঙালী সতীসাধ্বীর জয়গান করিয়া গৃহে ফিরিল, সকলেই বলিল, মুখুয্যেবাড়ির কাজ এমনি করেই হয়, এর ছোটবড় নেই।

    সকালে স্নান সারিয়া বন্দনা প্রণাম করিতে বিপ্রদাসের ঘরে ঢুকিয়া বিস্ময়ে থমকিয়া দাঁড়াইল—তাঁহার পাশে বসিয়া দয়াময়ী। ভোরের ট্রেনে বাড়ি ফিরিয়াছেন, এখনো কেহ জানে না। মায়ের মূর্তি দেখিয়া বন্দনার বুকে আঘাত লাগিল। সোনার বর্ণ কালি হইয়াছে, মাথার ছোট ছোট চুলগুলি রুক্ষ, ধূলিমাখা, চোখ বসিয়াছে, কপালে রেখা পড়িয়াছে—দুঃখশোকের এমন ব্যথার ছবি বন্দনা কখনো দেখে নাই। তাহার মনে পড়িল সেদিনের সেই ঐশ্বর্যবতী সর্বময়-কর্ত্রী বিপ্রদাসের মাকে। ক’টা দিনই বা! আজ সমস্ত মহিমা যেন তাঁহার পথের ধূলায়। কাছে গিয়া প্রণাম করিয়া বলিল, কখন এলেন মা, আমি জানতে পারিনি ত।

    দয়াময়ী তাহার চিবুক স্পর্শ করিয়া চুম্বন করিলেন, বলিলেন, আমার আসায় খবর কিসের জন্যে বন্দনা? তখন আসতো বিপ্রদাসের মা, তাই দেশের ছেলে-বুড়ো সবাই টের পেতো। বিপিন, কাজ ত চুকে গেছে বাবা, চল না মায়ে-পোয়ে আজই বেরিয়ে পড়ি।

    শুনিয়া বিপ্রদাস হাসিয়া কহিল, তোমার ভয় নেই মা, মায়ে-পোয়ের যাত্রার বিঘ্ন ঘটবে না,—কিন্তু আজই হয় না। বন্দনার বাবা আসছেন কাল, তোমার ছোটবৌয়ের হাতে সংসার বুঝিয়ে না দিয়ে যাবে কেমন করে?

    দয়াময়ী অনেকক্ষণ মৌন থাকিয়া বলিলেন, তাই হোক বিপিন। সহ্য হবে না আমার, এমন মিথ্যে আর মুখে আনবো না। কিন্তু ক’টা দিন আর বাকী?

    কেবল সাতটা দিন মা। আবার আজকের দিনেই আমরা যাত্রা শুরু করবো।

    বন্দনা কহিল, মা, বাড়ির ভেতর আপনার ঘরে চলুন।

    দয়াময়ী মাথা নাড়িয়া অস্বীকার করিলেন—তোমার এই কথাটি রাখতে পারবো না মা। যে ক’টা দিন থাকবো, এইখানেই থাকবো, আবার যাবার দিন এলে এই বাইরের ঘর থেকেই দু’জনে বার হয়ে যাবো। ভেতরে যা-কিছু রইলো সে-সব তোমার রইলো মা।

    বন্দনা পীড়াপীড়ি করিল না, শুধু আবার একবার তাঁহার পদধূলি লইয়া নতমুখে বাহির হইয়া গেল।

    বিপ্রদাসের পত্র পাইয়া রে-সাহেব এক সপ্তাহের ছুটি লইয়া বলরামপুরে আসিয়া উপস্থিত হইলেন এবং মেয়েকে দ্বিজুর হাতে অর্পণ করিয়া আবার কর্মস্থলে ফিরিয়া গেলেন।

    এ বিবাহে নহবৎ বাজিল না, বরযাত্রী-কন্যাযাত্রীর বিবাদ বাধিল না, মেয়েরা উলু দিল অস্ফুটে, শাঁক বাজিল চাপা সুরে,—বাসরগৃহ রহিল স্তব্ধ, মৌন।

    নিরালা কক্ষে দ্বিজদাসের বিষণ্ণ মুখের পানে চাহিয়া বন্দনা প্রশ্ন করিল, কি ভাবচো বলতো?

    দ্বিজদাস বলিল, ভাবচি তোমার কথা, ভাবচি আমার চেয়ে তুমি অনেক বড়।

    কেন?

    নইলে পারতে না। সর্বনাশ বাঁচাতে কি দুঃখের পথ হেঁটেই না তুমি আমার কাছে এলে।

    বন্দনা জিজ্ঞাসা করিল, তুমি আসতে না?

    না।

    বন্দনা বলিল, মিছে কথা। কিন্তু আমি কি ভাবছিলুম জানো? তোমার গলায় মালা পরিয়ে দিতে দিতে ভাবছিলুম, আমি এমন-কি সুকৃতি করেছিলুম যাতে তোমার মত স্বামী পেলুম। পেলুম বাসুকে, মাকে, বড়দাকে। আর পেলুম এই বৃহৎ পরিবারের বিপুল ভার। কিন্তু যে সমাজের মেয়ে আমি, তার প্রাপ্য কতটুকু জানো?

    দ্বিজদাস কহিল, না।

    বন্দনা বলিতে গিয়া হঠাৎ থামিয়া গেল। কহিল, কিন্তু আজ নয়। নিজের পরম সৌভাগ্যের দিনে অন্যের দৈন্যকে কটাক্ষ করবো না। অপরাধ হবে।

    হবে না, তুমি বলো।

    বন্দনা মাথা নাড়িয়া অস্বীকার করিল, কহিল, আজ তুমি ক্লান্ত, একটু ঘুমোও, তোমার মাথায় আমি হাত বুলিয়ে দিই।

    মিনিট-দুই পরে বলিল, আমার মেজদির কথা মনে পড়ে। সেদিন বড়দার সঙ্গে তখনি চলে যেতে চাইলেন দেখে বললুম, তুমি ত ঝগড়া করোনি মেজদি, তুমি কেন যাবে? মেজদি বললেন, যেখানে স্বামীর স্থান হয় না, সেখানে স্ত্রীরও না। একটা দিনের জন্যেও না। তোর স্বামী থাকলে এ কথা বুঝতিস। সেদিন হয়ত ঠিক এ কথা বুঝিনি, কিন্তু আজ বুঝচি তুমি না থাকলে আমি একটা দিনও সেখানে থাকতে পারিনে।

    একটু থামিয়া বলিল, এই ত মাত্র ঘণ্টা-কয়েক আগে, পুরুতের সঙ্গে গোটা-কয়েক শব্দ উচ্চারণ করে গেলুম, কিন্তু মনে হচ্ছে যেন আমার দেহের প্রতি রক্তকণাটি পর্যন্ত বদলে গেছে।

    দ্বিজদাস চোখ মেলিয়া তাহার মুখের পানে চাহিল। তাহার হাতখানি নিজের বুকের উপর টানিয়া লইয়া আবার চোখ বুজিল। কোন কথা কহিল না।

    রবিবার ঘুরিয়া আসিল। বিপ্রদাস ও দয়াময়ীর যাবার দিন আজ। তীর্থভ্রমণ দয়াময়ীর একদিন সমাপ্ত হইবে, সেদিন সংসারের আকর্ষণ হয়ত এই গৃহেই আবার তাঁহাকে টানিয়া আনিবে; কিন্তু যাত্রা শেষ হইবে না আর বিপ্রদাসের, আর ফিরাইয়া আনিবে না তাঁহাকে এ গৃহে। এ কথা শুনিয়াছে অনেকে। কেহ বিশ্বাস করিয়াছে, কেহ করে নাই।

    প্রাঙ্গণে মোটর দাঁড়াইয়া। কাছে, দূরে বাটীর সকলেই উপস্থিত। মেয়েরা দ্বিতলের বারান্দায় দাঁড়াইয়া চোখ মুছিতেছে, বিপ্রদাস উঠিতে গিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, দ্বিজুকে দেখচি নে কেন?

    কে একজন বলিল, তিনি বাড়ি নেই, কি-একটা কাজে বাইরে গেছেন। শুনিয়া বিপ্রদাস হাসিয়া বলিলেন, পালিয়েছে। সেটা শুধু মুখেই গোঁয়ার, নইলে ভীতুর অগ্রগণ্য।

    বন্দনার হাত ধরিয়া দাঁড়াইয়াছিল বাসু। বলিল, তুমি আবার কবে আসবে বাবা? একটু শিগগির করে এসো।

    বিপ্রদাস হাসিয়া তাহার মাথায় একবার হাত বুলাইয়া দিলেন, এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন না।

    বন্দনা শাশুড়ীর পায়ের ধূলা লইল। তিনি বলিলেন, বাসু রইলো ছোট-বৌমা। আর রইলেন মন্দিরে তোমার শ্বশুরকুলের রাধাগোবিন্দজী। ফিরে কখনো এলে তোমার কাছ থেকে এঁদের নেবো। এই বলিয়া তিনি আঁচলে চোখ মুছিলেন।

    বন্দনা দূর হইতে বিপ্রদাসকে প্রণাম করিল। তার পরে কাছে আসিয়া সজলচক্ষে বাষ্পরুদ্ধ স্বরে কহিল, কলকাতায় পূজোর ঘরে যে-মূর্তি একদিন আপনার লুকিয়ে দেখেছিলুম, আজ আবার সেই মূর্তিই আমার চোখে পড়লো, বড়দা। আর আমার শোক নেই, ঠিকানা আপনার নাই বা পেলুম, জানি, মনের মধ্যে যেদিন ডাক দেবো আসতেই হবে আপনাকে। যতই না না বলুন, এ কথা কোনমতেই মিথ্যে হবে না।

    বিপ্রদাস শুধু একটু হাসিলেন। যেমন করিয়া ছেলের উত্তর এড়াইয়া গেলেন তেমনি করিয়া বন্দনারও।

    গাড়ি ছাড়িয়া দিল।

     

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleবিরাজবৌ – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    Next Article বামুনের মেয়ে – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

    Related Articles

    উপন্যাস কল্লোল লাহিড়ী

    ইন্দুবালা ভাতের হোটেল – কল্লোল লাহিড়ী

    May 28, 2025
    উপন্যাস বুদ্ধদেব গুহ

    কোয়েলের কাছে – বুদ্ধদেব গুহ

    May 23, 2025
    চলিত ভাষার শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

    দর্পচূর্ণ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

    May 6, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    রবার্টসনের রুবি – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    বোম্বাইয়ের বোম্বেটে – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    রয়েল বেঙ্গল রহস্য – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Our Picks

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }