Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025

    আরব জাতির ইতিহাস – ফিলিপ কে. হিট্টি (অনুবাদ : প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ)

    September 22, 2025

    নিউ মুন – স্টেফিন মেয়ার

    September 22, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    বীরবলের হালখাতা – প্রমথ চৌধুরী

    প্রমথ চৌধুরী এক পাতা গল্প129 Mins Read0

    ইতিমধ্যে

    ইতিমধ্যে

    সম্পাদকমহাশয়েরা মধ্যেমধ্যে লেখকদের ‘ইতিমধ্যে’ একটা কিছু লিখে দিতে আদেশ করেন। যদি জিজ্ঞাসা করা যায় যে, কি লিখব? তার উত্তরে বলেন, যাহোক-একটা-কিছু লেখো। কি যে লেখো তাতে কিছু আসে-যায় না–কিন্তু আসল কথা হচ্ছে, লেখাটা ইতেমধ্যে হওয়া চাই। এথলে ইতিমধ্যের অর্থ হচ্ছে আগামী সংখ্যার কাগজ বেরবার পূর্বে। সম্পাদকমহাশয়েরা যখন আমাদের এইভাবে সাহিত্যের মাস্কাবার তৈরি করতে আদেশ দেন, তখন তাঁরা ভুলে যান যে, সাহিত্যে যারা পাকা, অঙ্গে তারা স্বভাবতই কাঁচা।

    দিন গুণে কাজ করবার প্রবৃত্তিটি আমরা ইংরেজের কাছে শিখেছি। কোন দিনে কোন ক্ষণে কোন কার্য আরম্ভ করতে হবে, সেবিষয়ে এদেশে খুব বাঁধাবাধি নিয়ম ছিল; কিন্তু আরদ্ধ কর্ম কখন যে শেষ করতে হবে, সেসম্বন্ধে কোনোই নিয়ম ছিল না। সেকালে কোনো জিনিস যে তামাদি হত, তার প্রমাণ সংস্কৃত ব্যবহারশাস্ত্রে পাওয়া যায় না। সেই কারণেই বোধ হয়, বহু মনোভাব ও আচারব্যবহার, যা বহুকাল পূর্বে তামাদি হওয়া উচিত ছিল, হিন্দুসমাজের উপর আজও তাদের দাবি পুরোমাত্রায় রয়েছে। সে যাই হোক, কাজের ওজনের সঙ্গে সময়ের মাপের যে একটু সম্বন্ধ থাকা উচিত— এ জ্ঞান আমাদের ছিল না। ‘কালোহয়ং নিরবধি’— এ কথা সত্য হলেও সেই কালকে মানুষের কর্মজীবনের উপযোগী করে নিতে হলে, তার যে ঘর কেটে নেওয়া আবশ্যক–এই সহজ সত্যটি আমরা আবিষ্কার করতে পারি নি। একটি নির্দিষ্ট সময়ের ভিতর একটি বিশেষ কাজ শেষ করতে হলে প্রথমে কোথায় দাঁড়ি টানতে হবে, সেটি জানা চাই; তারপরে কোথায় কমা ও কোথায় সেমিকোলন দিতে হবে, তারও হিসেব থাকা চাই। এককথায়, সময়পদার্থটিকে punctuate করতে না শিখলে punctual হওয়া যায় না। সতরা আমরাও যে ইংরেজদের মত সময়কে টুকরো করে নিতে শিখছি, তাতে কাজের বিশেষ সুবিধে হবে; কিন্তু সাহিত্যের সুবিধে হবে কি না, সেবিষয়ে আমার সন্দেহ আছে। কারণ সময়ের মূল্যের জ্ঞান বড় বেশি বেড়ে গেলে সেই সময়ে যা করা যায় তার মুল্যের জ্ঞান, চাই কি, আমাদের কমেও যেতে পারে। জর্মান কবি গ্যেটে বলেছেন যে, মানুষের চরিত্র গঠিত হয় কর্মের ভিতর, আর মন গঠিত হয় অবসরের ভিতর। অর্থাৎ পেশী সবল করতে হলে মানুষের পক্ষে ছুটোছুটি করা দরকার, কিন্তু মস্তিষ্ক সবল করতে হলে মাথা ঠিক রাখা দরকার, স্থির থাকা দরকার। সাহিত্যরচনা করা হচ্ছে মস্তিষ্কের কাজ; সুতরাং ইতিমধ্যে’ বলতে যে অবসর বোঝায়, তার ভিতর সে রচনা করা সম্ভব কি না— তা আপনারাই বিবেচনা করবেন। তবে যদি কেউ বলেন যে, লেখার সঙ্গে মস্তিষ্কের সম্বন্ধ থাকাই চাই, এমন কোনো নিয়ম নেই, তাহলে অবশ্য গ্যেটের মতের মূল্য অনেকটা কমে আসে।

    হাজার তাড়াহুড়ো করলেও লেখা-জিনিসটে যে কিঞ্চিৎ সময়সাপেক্ষ, তার প্রমাণ উদাহরণের সাহায্যে দেওয়া যেতে পারে। প্রথমে কবিতার কথা ধরা যাক। লোকের বিশ্বাস যে, কবিতার জন্মস্থান হচ্ছে কবির হৎপিণ্ড। তাহলেও হৃদয়ের সঙ্গে কলমের এমন-কোনো টেলিফোনের যোগাযোগ নেই, যার দরুন হৃদয়ের তারে কোনো কথা ধনিত হওয়ামাত্র কলমের মুখে তা প্রতিধ্বনিত হবে। আমার বিশ্বাস যে, যে-ভাব হৃদয়ে ফোটে, তাকে মস্তিষ্কের বক-যন্ত্রে না চুইয়ে নিলে কলমের মুখ দিয়ে তা ফোঁটা-ফোঁটা হয়ে পড়ে না। কলমের মুখ দিয়ে অনায়াসে মুক্ত হয় শুধু কালি, সাত রাজার ধন কালো মানিক নয়। অতএব কবিতা রচনা করতেও সময় চাই। তারপর ছোট গল্প। মাসিকপত্রের উপযোগী গল্প লিখতে হলে প্রথমে কোনো-না-কোনো ইংরেজি বই কিংবা মাসিকপত্র পড়া চাই। তারপর সেই পঠিত গল্পকে বাংলায় গঠিত করতে হলে তাকে রপান্তরিত ও ভাষান্তরিত করা চাই। এর জন্যে বোধ হয় মূলগল্প লেখবার চাইতেও বেশি সময়ের আবশ্যক।

    কিছুদিন পূর্বে ভারতবর্ষের অতীত সম্বন্ধে যা-খুশি-তাই লেখবার একটা সুবিধে ছিল। একালে এদেশে কিছুই নেই, অতএব সেকালে এদেশে সব ছিল’— এইকথাটা নানারকম ভাষায় ফলিয়ে-ফেনিয়ে লিখলে সমাজে তা ইতিহাস বলে গ্রাহ্য হত। কিন্তু সে সুযোগ আমরা হারিয়েছি। একালে ইতিহাস কিংবা প্রত্নতত্ত্ব সম্বন্ধে লিখতে হলে তার জন্য এক-লাইব্রেরি বই পড়াও যথেষ্ট নয়। প্রত্নরত্ন এখন মাটি খুঁড়ে বার করতে হয়, সুতরাং ইতিমধ্যে’, অর্থাৎ সম্পাদকীয় আদেশের তারিখ এবং সামনে-মাসের পয়লার মধ্যে, সে কাজ করা যায় না। অবশ্য ম্যালেরিয়ার বিষয় কিছুই না জেনে অনেক কথা লেখা যায় কিন্তু সে লেখা সাহিত্য-পদবাচ্য কি না, সে বিষয়ে আমার সন্দেহ আছে। যার একপাশে ভ্রমরগঞ্জন আর অপরপাশে মধ, তাই আমরা সাহিত্য বলে স্বীকার করি। দুঃখের বিষয়, ম্যালেরিয়ার একপাশে মশকগুঞ্জন আর অপরপাশে কুইনীন। সুতরাং সাহিত্যেও ম্যালেরিয়া হতে দরে থাকাই শ্রেয়। বিনা চিন্তায়, বিনা পরিশ্রমে, আজকাল শুধু দুটি বিষয়ের আলোচনা করা চলে; এক হচ্ছে উন্নতিশীল রাজনীতি, আর-এক হচ্ছে স্থিতিশীল সমাজনীতি। কিন্তু এ দুটি বিষয়ের আলোচনা সচরাচর সভাসমিতিতেই হয়ে থাকে। অতএব ও দুই হচ্ছে বক্তাদের একচেটে। লেখকেরা যদি বক্তাদের অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ করেন, তাহলে বক্তারাও লিখতে শুরু করবেন, এবং সেটা উচিত কাজ হবে না।

    লেখবার নানারূপ বিষয় এইভাবে ক্রমে বাদ পড়ে গেলে শেষে একটিমাত্র জিনিসে গিয়ে ঠেকে, যার বিষয় নির্ভাবনায় অনর্গল লেখনী চালনা করা চলে, এবং সে হচ্ছে নীতি। নীতির মোটা আদেশ ও উপদেশগুলি সংখ্যায় এত কম যে, তা আলে গোনা যায়, এবং সেগুলি এতই সর্বলোকবিদিত ও সর্ববাদিসম্মত যে, সখশরীরে স্বচ্ছন্দচিত্তে সেবিষয়ে এক-গগা লিখে যাওয়া যায়; কেননা, কেউ যে তার প্রতিবাদ করবে, সে ভয় নেই।

    মানুষ যে দেবতা নয়, এবং মানবের পক্ষে দেবত্বলাভের চেষ্টা নিত্য ব্যর্থ হলেও যে নিয়ত কর্তব্য, সেবিষয়ে তিলমাত্র সন্দেহ নেই। তবুও অপরকে নীতির উপদেশ দিতে আমার তাদশ উৎসাহ হয় না। তার কারণ, মানুষ খারাপ বলে আমি দুঃখ করি নে, কিন্তু মানুষ দুঃখী বলে মন খারাপ করি। অথচ মানুষের দুর্গতির চাইতে দুর্নীতিটি বেশি চোখে না পড়লে নীতির গরগিরি করা চলে না।

    তাছাড়া পরের কানে নীতির মন্ত্র দেওয়া সম্বন্ধে আমার মনে একটি সহজ অপ্রবত্তি আছে। যেকথা সকলে জানে, সেকথা যে আমি না বললে দেশের দৈন্য ঘুচবে না, এমন বিবাস আমি মনে পোষণ করতে পারি নে। এমনকি আমার এ সন্দেহও আছে যে, যাঁরা দিন নেই রাত নেই অপরকে লক্ষ্মীছেলে হতে বলেন, তাঁরা নিজে চান শুধু লক্ষ্মীমন্ত হতে। যাঁরা পরকে বলেন তোমরা ভালো হও, ভালো কর’, তাঁরা নিজেকে বলেন ‘ভালো খাও, ভালো পর’। সুতরাং আমার পরামর্শ যদি কেউ জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে আমি তাঁকে বলব ‘ভালো খাও, ভালো পর। কারণ মানুষে পৃথিবীতে কেন আসে কেন যায়, সে রহস্য আমরা না জানলেও এটি জানি যে ‘ইতিমধ্যে তার পক্ষে খাওয়া-পরাটা দরকার।

    ‘তোমরা ভালো খাও, ভালো পর’, এ পরামর্শ সমাজকে দিতে অনেকে কুণ্ঠিত হবেন; কেননা, ওকথার ভিতর এইকথাটি উহ্য থেকে যায় যে, পরামর্শদাতাকে নিজে ভালো হতে হবে এবং ভালো করতে হবে। আপত্তি তো ঐখানেই।

    যিনি ভালো খান ও ভালো পরেন, সহজেই তাঁর মনে নিজের শ্রেষ্ঠত্বের উপর বিশ্বাস জন্মে যায়, এবং সেইসঙ্গে এই ধারণাও তাঁর মনে দঢ় হয়ে ওঠে যে, যেখানে দৈন্য সেইখানেই পাপ।

    দারিদ্র্যের মূলে যে দরিদ্রের দুর্নীতি, এই ধারণা একসময়ে ইউরোপের ধনীলোকের মনে এমনি বদ্ধমূল হয়ে উঠেছিল যে, এই ভুলের উপর ‘পোলিটিকাল ইকনমি’-নামে একটি উপবিজ্ঞান বেজায় মাথাঝাড়া দিয়ে উঠেছিল। অর্থ যে ধর্মমূলক, এর প্রমাণ পৃথিবীতে এতই কম যে, আমাদের পর্বপুরুষেরা একটি পর্বজন্ম কল্পনা করে সেই পর্বজন্মের পাপপণ্যের ফলস্বরূপ সুখদুঃখ সমাজকে মেনে নিতে শিখিয়েছিলেন।

    ব্যাখ্যার চাতুর্যে জিৎ অবশ্য আমাদের পূর্বপুরুষদেরই, কারণ বহু লোকের দুঃখকষ্ট যে তাদের ইহজন্মের কর্মফলে নয়, তা প্রমাণ করা যেতে পারে; কিন্তু সে যে পর্বজন্মের কমফলে নয়, তা এ জন্মে অপ্রমাণ করা যেতে পারে না।

    আসলে দুইজনের মুখে একই কথা। সে হচ্ছে এই যে, পরের দুঃখ যখন তাদের নিজের দোষে, তখন তাদের শুধু ভালো হতে শেখাও, তাদের দুঃখ দর করার চেষ্টা করা আমাদের কর্তব্য নয়। অতএব মানুষের দুর্গতির প্রতি করণ হওয়া উচিত নয়, তাদের দুর্নীতির প্রতি কঠোর হওয়াই কর্তব্য।

    কিন্তু আজকাল কালের গুণে শিক্ষার গুণে আমরা পরের দুঃখ সম্বন্ধে অতটা উদাসীন হতে পারি নে, কর্মফলে আস্থা রেখে নিশ্চিন্ত থাকতে পারি নে। তাই দীনকে নীতিকথা শোনানো অনেকে হীনতার পরিচায়ক মনে করেন। ছোটছেলে সম্বন্ধে পড়লে-শুনলে দুধ-ভাতু’, এ সত্যের পরিবর্তে ‘আগে দুধভাত, পরে পড়াশনো’, এই সত্যের প্রচার করতে চাই। এদেশের দভিক্ষ-প্রপীড়িত জনগণের জন্য আমরা শিক্ষার ব্যবস্থা করবার পূর্বে অন্নের ব্যবস্থা করা শ্রেয় মনে করি। আগে অন্নপ্রাশন, পরে বিদ্যারল্ড–সংস্কারেরও এই সনাতন ব্যবস্থা বজায় রাখা আমাদের মধ্যে সংগত। অথচ আমরা যে কেন ঠিক উলটো পদ্ধতির পক্ষপাতী, তার অবশ্য কারণ আছে।

    লোকশিক্ষার নামে যে আমরা উত্তেজিত হয়ে উঠি, তার প্রথম কারণ যে আমরা শিক্ষিত। স্কুলে লিখে এসে যে-কালি আমরা হাত আর মুখে মেখেছি, তার ভাগ আমরা দেশসদ্ধ লোককে দিতে চাই। যেমনি একজনে লোকশিক্ষার সুর ধরেন অমনি আমরা যে তার ধুয়ো ধরি, তার আর-একটি কারণ এই যে, এ কাজে আমাদের শুধু বাক্যব্যয় করতে হয়, অর্থ ব্যয় করতে হয় না। এ ব্যাপারে লাগে লাখ টাকা, দেবে গৌরসরকার।

    জনসাধারণের হাতে-খড়ি দেবার পরিবর্তে মুখে-ভাত দেবার প্রস্তাবে আমরা যে তেমন গা করি নে তার কারণ, সাংসারিক হিসাবে সকলের স্বার্থসাধন করতে গেলে নিজের স্বার্থ কিঞ্চিৎ খর্ব করা চাই; ত্যাগস্বীকারের জন্য নীতি নিজে শেখা দরকার, পরকে শেখানো দরকার নয়।

    আমাদের প্রত্যেকের নিজের স্বার্থ যে সমগ্র জাতির স্বার্থের সহিত জড়িত, এ জ্ঞান যে আমাদের হয়েছে তার প্রমাণ বাংলাসাহিত্যের কতকগুলি নতুন কথায় পাওয়া যায়। ব্যক্তির সঙ্গে সমাজের অঙ্গাঙ্গী সম্বন্ধের কথা, জাতীয় আত্মজ্ঞানের কথা, আজকাল বক্তাদের ও লেখকদের প্রধান সম্বল। অথচ একথাও অস্বীকার করবার জো নেই যে, এত বলা-কওয়া সত্ত্বেও এই অঙ্গাঙ্গী ভাব পরস্পরের গলাগলি ভাবে পরিণত হয় নি; আর জাতীয় আত্মজ্ঞান শুধু জাতীয় অহংকারে পরিণত হচ্ছে, যদিচ অহংজ্ঞানই আত্মজ্ঞানের প্রধান শত্র। জাতীয় কত ব্যবৃদ্ধি অনেকের মনে জাগ্রত হলেও জাতীয় কর্তব্য যে সকলে করেন না, তার কারণ, পরের জন্য কিছু করবার দিন আমরা নিত্যই পিছিয়ে দিই। আমাদের অনেকের চেষ্টা হচ্ছে–প্রথমে নিজের জন্য সব করা, পরে অপরের জন্য কিছু করা। সুতরাং জাতীয় কর্তব্যটকু আর ইতিমধ্যে করা হয় না। ফলে আপনি বাঁচলে বাপের নাম’, এই পুরনো কথার উপর আমরা নিজের কর্মজীবন প্রতিষ্ঠা করি, আর ‘জাত বাঁচলে ছেলের নাম’, এইরকম একটা কোনো বিশ্বাসের বলে জাতীয় কর্তব্যের ভারটা, এখন যারা ছেলে এবং পরে যারা মানুষ হবে, তাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিই।

    কিন্তু আসল কথা হচ্ছে যে, যা-কিছু করতে হবে, তা ইতিমধ্যেই করতে হবে। সম্পাদকমহাশয়েরা, লেখক নয়, পাঠকদের যদি এই সত্যটি উপলব্ধি করাতে পারেন, তাহলে তাঁদের সকল অজ্ঞা আমরা পালন করতে প্রস্তুত আছি।

    জ্যৈষ্ঠ ১৩২১

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleপ্রবন্ধ সংগ্রহ – প্রমথ চৌধুরী
    Next Article সনেট-পঞ্চাশৎ – প্রমথ চৌধুরী

    Related Articles

    প্রমথ চৌধুরী

    চার-ইয়ারী কথা – প্রমথ চৌধুরী

    September 22, 2025
    প্রমথ চৌধুরী

    সনেট-পঞ্চাশৎ – প্রমথ চৌধুরী

    September 22, 2025
    প্রমথ চৌধুরী

    প্রবন্ধ সংগ্রহ – প্রমথ চৌধুরী

    September 20, 2025
    প্রমথ চৌধুরী

    গল্পসংগ্রহ – প্রমথ চৌধুরী

    September 20, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025
    Our Picks

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025

    আরব জাতির ইতিহাস – ফিলিপ কে. হিট্টি (অনুবাদ : প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ)

    September 22, 2025

    নিউ মুন – স্টেফিন মেয়ার

    September 22, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.