Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    নৌকাডুবি

    October 26, 2025

    আরণ্যক – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

    October 25, 2025

    থ্রি মাস্কেটিয়ার্স – আলেকজান্ডার দ্যুমা

    October 21, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    বৃশ্চিকচক্র – পিয়া সরকার

    পিয়া সরকার এক পাতা গল্প320 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    আসল কথা, নকল কথা

    থানার বাইরে বীভৎস গণ্ডগোল হচ্ছিল। শ্যামল ব্যানার্জি কন্ট্রোল রুমে ফোন করে আরও ফোর্স চেয়েছেন। এখনও এসে পৌঁছায়নি। বাইরে জনমোর্চা কংগ্রেসের নেতা ও সমর্থকদের ঢল নেমেছে। সঙ্গে বহু সংখ্যায় প্রেসের লোক। সমর্থকদের কিছু থানার গেটের বাইরে, কিছু ভিতরে জটলা করেছে। উত্তেজিত চোখমুখ, আগ্রাসী বডি ল্যাংগুয়েজ— দেখে মনে হচ্ছে বিধুকে পেলে তো বটেই, না পেলেও থানাশুদ্ধ জ্বালিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে। বিধুর নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে। লাস্ট টাওয়ার লোকেশন বড়েরিয়া। বিধু কাল দুপুর থেকে সেই যে ফোন সুইচড অফ করেছে আর খোলেনি। ওর মোবাইল ট্র্যাকিংয়ে দেওয়া হয়েছে। কল রেকর্ডস এসে পৌঁছেছে। ওর খোঁজে ওর গ্রামে ফোর্স পাঠিয়েছিলেন মতিদা। সেখানেও ও নেই। সব কটা থানা, চেকপোস্ট, প্রতিটা এনট্রি আর এক্সিট পয়েন্টকে অ্যালার্ট করা হয়েছে, কিন্তু বিধু এখনও ফেরার। মতিদার করা ফোনটা কান থেকে নামিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিভাস বলল, “পি.সি.আর ভ্যানের সিট কভারে ব্লাড স্টেইনস পাওয়া গেছে। ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করার পরও থেকে গেছে।”

    “আর মাথায় মেরেছিল যে ওয়েপনটা দিয়ে, সেটা?” আমি প্রশ্ন করলাম।

    “দেখছে। গাড়িরই কোনো পার্টস…স্প্যানার, জ্যাক কিছু একটা হবে।

    “হুম।” বিভাসকে একটা সংক্ষিপ্ত উত্তর দিলাম।

    মনের ভিতরটা হু হু করছিল। বিধুকে কতদিনই বা চিনি! এ কদিনের সান্নিধ্যে নিবিড় উষ্ণতার রেশটুকু রেখে গেছে ও। আন্তরিকতার উষ্ণতা। বড় ভয়ানক ফাঁদ এক পুলিশ অফিসারের জন্য। মেকি হলে সহজেই ডানা ভেঙে দিতে পারে। অথচ এত কিছু হয়ে যাওয়ার পরও আমি বিধুকে মেকি ভাবতে পারছি না। এই অনুভূতি সব প্রমাণ, সমস্ত চার্জশিটের উর্দ্ধে। বিধু সেই সব মানুষদের মধ্যে পড়ে, যারা বাস্তবকে স্বপ্নের থেকে বেশি প্রাধান্য দেয়। রাষ্ট্র নামক যন্ত্রের টানাপোড়েনে ছাড়খার হয়ে যাওয়া মানুষের রোজকার যুদ্ধ একেবারে চোখের সামনে থেকে দেখে। ওর হাসিভরা মুখ গোপনে গোপনে বিক্ষোভের বারুদ সাজায়। কিন্তু তা থেকে হঠাৎ এত বড় বিস্ফোরণ হল কেন?

    এই খুনের প্রকৃতি বলে, কোনো তাৎক্ষণিক আবেগে ভেসে গিয়ে এই কাজ করা হয়নি। প্রতিটা পদক্ষেপ ভীষণ হিসেব করে মাপা। নিশীথ মাহাতোকে বিধু ঘৃণা করত, সেকথা বুঝতে কষ্ট হয় না। কিন্তু কোন পরিস্থিতিতে, নিজের চাকরির ঝুঁকি নিয়ে ও এত বড় একটা কাজে নামল তা পরিষ্কার নয়। আজ বুঝতে পারছি, নিশীথ মাহাতো হত্যায় অসীম ফেঁসে যাওয়াতে কেন ও এত বিষণ্ণ ছিল। অসীম যে একইদিনে গিয়ে নিশীথ মাহাতোর সঙ্গে ঝামেলা করে এসেছে, তা ওর জানা ছিল না।

    ওর সেদিনের বলা কথাগুলো মনে পড়ল, “আপনি বরং এমন আতশবাজির খোঁজ করুন যা খড়ের গাদায় আগুন লাগিয়ে দিতে পারে।” কী ইঙ্গিত করেছিল বিধু? সেই আতশবাজিটি কে! ও নিজেকে নির্দেশ করেছিল? নাকি অন্য কাউকে?

    আমার চিন্তাজাল ছিন্ন হয়ে গেল একটা সশব্দ গোলমালে। শ্যামল ব্যানার্জির ঘরে পুরুলিয়া জনমোর্চা সভাপতি ঢুকেছিলেন। ঘর থেকে উচ্চস্বরে কথাবার্তার আওয়াজ আসছিল। ফাইবারগ্লাসের দরজাটা খুলে একটু পরেই ভদ্রলোক বেরিয়ে এলেন। কনস্টেবলকে জিজ্ঞাসা করলেন আমার নাম। বুঝলাম আই.ও হিসেবে শ্যামল ব্যানার্জি আমাকে দেখিয়ে দিয়েছেন। জনমোর্চার সভাপতিকে আগেও দেখেছি। নাম, গোপাল গড়াই। বেটেখাঁটো চেহারা, ক্লিন শেভেন। জোড়া ভুরু, টিকালো নাক। আপাতত রাগে আর প্রতিস্পর্ধায় চোখমুখ লাল হয়ে আছে।

    “আপনি দর্শনা বোস?”

    গোপাল গড়াই আমার সামনের চেয়ারটা শব্দ করে টেনে বসে বললেন। “হ্যাঁ।”

    “বিধু মাণ্ডিকে কবে পাওয়া যাবে?”

    “খোঁজ চলছে। পেলে তো জানতেই পারবেন।”

    “খোঁজ চললে আপনি এখানে বসে কী করছেন? খুঁজতে যাননি কেন?” গোপালবাবু তেড়িয়া হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন।

    আমি শান্তদৃষ্টিতে লোকটার দিকে তাকালাম। চোখে চোখ মিলিয়ে বললাম, “একটা সার্চ টিমে ছজন করে মেম্বার আছে। জেলা জুড়ে এমন চারটে টিম তৈরি করা হয়েছে। তাঁরা তাঁদের কাজ এফিসিয়েন্টলি করছেন। আস্থা রাখুন।”

    গোপালবাবু ঘাড়টা কাত করে আমাকে মাপতে মাপতে বললেন, “সবই তো বুঝলাম ম্যাডাম। কিন্তু আপনার থানার নামই বারবার কেসে জড়াচ্ছে কেন? একবার অসীম প্রামাণিক, একবার বিধু মাণ্ডি! পুরো ব্যাপারটাই আপনাদের টোটাল ক্যালাপনা নয় কী! নাকের ডগায় খুনী বসে আছে, অথচ আপনারা বসে বসে সরকারের অর্থ আর সময় দুটোই নষ্ট করছেন। একটু কাজকর্মের স্পিড বাড়ান। বিধুকে আগামীকালের মধ্যে খুঁজে বার করুন। নাহলে আমাদের অন্য পথ জানা আছে।”

    “বেশ তো।” আমি বিধুর কল রেকর্ডসের ফাইল নিজের কাছে টানতে টানতে বললাম।

    “বেশ তো মানে?” গোপাল গড়াইয়ের চোখ ছানাবড়া হয়ে গিয়েছিল। আমি ফাইল থেকে মাথা তুলে বললাম, “আগামীকালের মধ্যে খুঁজে বার করার চেষ্টা করব, নাহলে আপনারা অন্য পথ অ্যাপ্লাই করবেন।”

    “আচ্ছা?!” গোপাল গড়াইয়ের মুখটা শ্লেষে বেঁকে গিয়েছিল, “প্ৰথমে অসীম প্রামাণিকের চার্জশিট নিয়ে গড়িমসি করেছেন, এখন বিধু মাণ্ডির মত মার্কামারা একটা ছেলের কেসে তাকে পালাতে সাহায্য করছেন। এগুলো উপরের লেভেলে পৌঁছালে কী হবে বুঝতে পারছেন তো?”

    “এগুলোর কোনোটাই সঠিক অভিযোগ করছেন না আপনি। তবু এসব ফলস চার্জ উপরতলায় পৌঁছালে, ডাক পড়লে…তখন নাহয় ভেবে দেখব, কেমন? নমস্কার।” আমি লোকটার সঙ্গে কথা বাড়াতে চাইছিলাম না।

    গোপাল গড়াই কিন্তু ছাড়বার মুডে ছিলেন না। আমাকে একইরকমভাবে মাপতে মাপতে বললেন, “সে তো দেখবেনই ম্যাডাম। বিধু মাণ্ডির মত অতীত আছে, এমন একটা ছেলেকে কেন কেউ এতদিনে নিশীথদার খুনের সঙ্গে লিঙ্ক করেনি, সম্ভাব্য খুনীর তালিকায় তার নাম রাখেনি, এ তো সত্যিই আশ্চর্য ব্যাপার!”

    “মানে?”

    “বিধু মাণ্ডি কেন কমপ্যাশনেট গ্রাউন্ডে চাকরি পেয়েছিল, জানেন না?”

    আমি মাথা নাড়িয়ে না বলতে বাধ্য হলাম। বিধু পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছিল বলেছিল। অবশ্য কমপ্যাশনেট গ্রাউন্ড হলেও, ফোর্সে ঢুকতে গেলে পরীক্ষা দিতেই হয়।

    “এসব আগের সরকারের দুর্নীতি। পুলিশে এই করে কত বেনো জল ঢুকে গেছে।” লোকটা ঘাড় নাড়িয়ে হতাশা প্রকাশ করল।

    “বিধুর কথা কী বলছিলেন?” আমি উদ্বিগ্ন হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম।

    “সেসব তো আপনি খুঁজে বার করবেন। নাকি সেটার জন্যও সার্চ টিম বানাবেন?” গোপালবাবু একটা ব্যঙ্গের হাসি হেসে বললেন।

    আমি কোনো উত্তর দিলাম না। উত্তর দেওয়ার মুখ ছিল না।

    “শুনুন ম্যাডাম, শুধু বিধু মাণ্ডি নয়, ওই মড়াকাটা ডাক্তারকেও বাজিয়ে দেখবেন। ইদানীং নিশীথদার সঙ্গে বেশ আঁকড়াআঁকড়ি চালাচ্ছিল। আর বিধু মাণ্ডি তো ওর পেটোয়া। ঐ আপনাদের ভাষায় কী যেন বেশ বলে, মোটিভ…সেসব দুজনেরই ছিল। বিধুকে ঐ ডাক্তারই তাতিয়েছে। ডাক্তারকে তুলুন আর জেরা করুন। পুলিশ যে লোকটার পা চাটে, সেসব আমরা জানি। কিন্তু নিশীথদার খুনের তদন্তে কোন গাফিলতি হলে আমরা জনমোর্চারা কিন্তু ছেড়ে কথা বলব না। আপনাদের ঠিক তিনদিন সময় দিলাম।”

    গোপাল গড়াই তার রোগাপাতলা শরীরটা নিয়ে তীরের মত গতিতে থানা থেকে বেরিয়ে গেলেন। পাশে দিব্যজ্যোতি বসে ছিল। আস্তে করে একটা খিস্তি দিল শুনতে পেলাম।

    “এই উমানাথনের ব্যাপারটায় কী ইন্ডিকেট করে গেলেন গোপালবাবু? কিছু বুঝলে?”

    “ছাড়ুন তো ওদের কথা। নিশীথ মাহাতো লোকটা সুবিধার ছিল না, সে তো বুঝতেই পারছেন। এদিকে উমানাথন ডাক্তার, আদিবাসীদের জন্য সেই কোনকাল থেকে ক্যাম্পট্যাম্প করেন। গ্রামের লোকজনের মধ্যে বিরাট প্রভাব। সেসব কি আর নিশীথের মত লোকের সহ্য হয়? বোকাপাঁঠা বানিয়ে রাখার চান্স কমে যায়। মেম্বার রিনিউয়াল কম হয়। পার্টিফান্ডে টাকা আসা কমে যায়। অনেক ব্যাপার আছে বুঝলেন, রাগ নিশ্চয়ই ছিল, এখন সুযোগ বুঝে ডাক্তারের নামটা গুঁজে দিচ্ছে।” দিব্যজ্যোতি টেবিল থেকে উঠতে উঠতে বলল।

    “আর বিধুর চাকরির ব্যাপারটা কী? আমি তো কিছু জানি না।”

    “আমিও জানি না।” দিব্যজ্যোতি কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলল, “ওর আগের থানা, কোটশিলায় যদি কেউ কিছু জানে। প্রথম পোস্টিং তো ওখানে।”

    “তুমি একটু খোঁজ নেবে?”

    “দিব্যজ্যোতি হ্যাঁ বলে চা খেতে চলে গেল।

    গোপাল গড়াই মাথাটা পুরো ঘেঁটে দিয়ে গিয়েছিলেন। মনের অশান্ত ঘূর্ণিটাকে প্রাণপন স্তিমিত করতে করতে আমি যুক্তির সিঁড়ি বাইতে শুরু করলাম। ডিউটি রেজিস্টার বলছে বিধু ২৯ তারিখ রাতে ডিউটিতে ছিল না। ৩০ তারিখ অর্থাৎ হোলির দিন আমি নিজে সকালে ওর সঙ্গে দেবেন মাহাতো হাসপাতালে গিয়েছি। নিশীথ মাহাতো যে খুন হয়েছে সেই সম্ভাবনার কথা সবার আগে ওর মুখে শুনেছি।

    বিধুর কলরেকর্ডস দেখাচ্ছে, রাত বারোটা সতেরোতে বিধুর কাছে একটা কল গেছে। যে নাম্বার থেকে গেছে সেটা এখন সুইচড অফ। টেকনিকাল টিমকে বলতে হবে, কিন্তু খুব একটা লাভ হবে বলে মনে হল না। এই সব সিমকার্ড কেউ সঠিক পরিচয় দিয়ে কেনে না। নম্বরটা খাতায় নোট নিলাম।

    নাম্বারটা থেকে বিধুর মোবাইলে এক বারই ফোন হয়েছে, ঘটনার রাতে। বিধুর মোবাইল ট্রায়াঙ্গুলেশন রিপোর্ট দেখাচ্ছে, সে রাতে বিধুর মোবাইল টাওয়ার লোকেশন বাঘমুণ্ডি থানার আশে পাশে। অর্থাৎ ভ্যানটা থানার কাছাকাছি কোথাও লুকানো ছিল। দোকানের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখার ভুল বিধু করবে না। বিট কনস্টেবল রাউন্ডে থাকবে, তার অথবা কোনো পথচারীর নজরে পড়ে যেতে পারে, এত রিস্ক কেউ নেবে না। ফোনটা তবে কোনো সিগন্যাল ছিল, যেটা পেতেই ভ্যানটাকে ও নিশীথের দোকানের কাছে আনে।

    অসীম বেরিয়েছে রাত বারোটা নাগাদ, হামলাটা হয়েছে তার পরপরই। তা নাহলে, বারোটা চল্লিশে পি.সি.আর ভ্যান পাস করত না। রাতের ফাঁকা রাস্তায়, নিশীথের দোকান থেকে এটিএমটায় যেতে কুড়ি মিনিটের বেশি সময় লাগার কথা না।

    সাড়ে বারোটার পর বিধুর টাওয়ার লোকেশন ফলো করলে বোঝা যায় ও এর পর নিজের গ্রামে ফিরে গেছে। খয়রাবেড়া অঞ্চলে বিধুর মোবাইলের উপস্থিতি নেই। অর্থাৎ বিধু একা নয়, বিধুর সঙ্গে দ্বিতীয় একজন ছিল!

    সে কে! এই কি সেই আতশবাজি? যদি আমার যুক্তি ঠিক হয়, তবে বুঝে নিতে হবে নিশীথ মাহাতোর প্রতি এই দ্বিতীয় লোকটারও তীব্র রাগ ছিল। গোপাল গড়াই উমানাথনের নামটা বলে গেলেন। গ্রামে গ্রামে প্রতিপত্তি বিস্তার, তার থেকে ইগো ক্ল্যাশ…খুব একটা বাজে মোটিভ নয়। কিন্তু এইভাবে খুন করার জন্য যথেষ্ট কী!

    যাকে আমরা খুঁজছি সেই মগ্ন মৈনাক, তিনি নিজেই পিছনের দরজা ঠকঠকিয়ে নিশীথ মাহাতোকে ডেকেছেন, দরজা খোলার পর দোকানে ঢুকে অতর্কিতে হামলা করেছেন, পিসিআর ভ্যান ড্রাইভ করে নিশীথ মাহাতোকে জঙ্গলে নিয়ে গেছেন, পাহাড়ি রাস্তায় টেনে তুলেছেন এবং গভীর পাহাড়ি খাদে এমনভাবে ছুঁড়ে ফেলেছেন যাতে, নিশীথ বাঁশের ফলায় গেঁথে যান। লোকটার মানসিক শক্তি কল্পনা করে শিউরে উঠলাম। এই খুনটা সম্ভবত খুনীর ক্যাথারসিসের কাজ করেছে। বহুদিনের অবদমিত শোক আর রাগ থেকে মুক্তি দিয়েছে। তারপরেও সে বিন্দুমাত্র ঢিলে দেয়নি, বিভিন্ন বিন্দু জুড়ে জুড়েও আমি তার কাছে পৌঁছাতে ব্যর্থ হচ্ছি।

    লোকটার নাম্বারটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মাথায় একটা চিন্তা এল। নাম্বারটা ভুয়ো হতে পারে, কিন্তু এই নাম্বারের কল রেকর্ড বা টাওয়ার রিপোর্ট তো ভুল হবে না। সেগুলো ব্যবহার করে লোকটাকে লোকেট করার একটা চেষ্টা করা যেতে পারে। পুরো ব্যাপারটা মতিদাকে হোয়াটসঅ্যাপে ডিটেইলে লিখে পাঠালাম। ব্লু টিক পড়ল। মতিদা একটা থামস-আপ সাইন পাঠালেন।

    টেবিলে ঠক করে একটা গরম চায়ের গ্লাস রাখল দিব্যজ্যোতি। ওর মুখচোখ থমথমে লাগছিল। আমি ওর দিকে সপ্রশ্ন দৃষ্টিতে তাকালাম।

    “বিধু মাণ্ডির বাবা মাওবাদী হামলায় মারা যায় ম্যাডাম। কোনো পলিটিকাল ব্যাকগ্রাউন্ড নেই লোকটার। মনে হয় মাওদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে চায়নি ওকে ঠুকে দিয়েছিল। বিধুর পরিবার এককালীন দুলাখ টাকা পায়, আর সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি। বিধু উচ্চমাধ্যমিকের পরপর ড্রাইভারের পরীক্ষাটা দেয়। তার আগে ও পার্টটাইমে দেবেন মাহাতো হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স চালাতো।”

    চায়ের গ্লাসটা থেকে ধোঁওয়া উঠছিল। গ্লাসের উপর জমাট বাঁধা ধোঁওয়া ধীরে ধীরে বাতাসে মিশে যাচ্ছিল। অস্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হচ্ছিল।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleইলিয়াড – হোমার
    Next Article বিসাশন – পিয়া সরকার

    Related Articles

    পিয়া সরকার

    বিসাশন – পিয়া সরকার

    October 21, 2025
    পিয়া সরকার

    বিসাশন – পিয়া সরকার

    September 12, 2025
    পিয়া সরকার

    বৃশ্চিকচক্র – পিয়া সরকার

    September 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    নৌকাডুবি

    October 26, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    নৌকাডুবি

    October 26, 2025
    Our Picks

    নৌকাডুবি

    October 26, 2025

    আরণ্যক – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

    October 25, 2025

    থ্রি মাস্কেটিয়ার্স – আলেকজান্ডার দ্যুমা

    October 21, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }