Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    নৌকাডুবি

    October 26, 2025

    আরণ্যক – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

    October 25, 2025

    থ্রি মাস্কেটিয়ার্স – আলেকজান্ডার দ্যুমা

    October 21, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    বৃশ্চিকচক্র – পিয়া সরকার

    পিয়া সরকার এক পাতা গল্প320 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    পাঁজর ঘেঁষে লাগ্‌ল কি বাণ ছকে এসে-ফট্?

    আজ অসীম, সোনালি আর হেমন্তর কেস কোর্টে উঠছে। পুলিশের তরফ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হবে না। সকালবেলা থানা থেকে বেরোনোর সময়, শ্যামল ব্যানার্জিকে দেখে এসেছি, লোলুপ দৃষ্টিতে সোনালি মাহাতোর দিকে তাকিয়ে আছেন। লোকটা নারীমাংসের ক্ষেত্রে জাতবিচার একেবারেই করে না। গাড়ি চলছিল বড়েরিয়ার পথে, বিধুর গ্রামে। নতুন যে ছেলেটা গাড়ি চালাচ্ছিল তার নাম জিজ্ঞাসা করতে গিয়েও নিজেকে আটকালাম। বাঘমুণ্ডি পি.এসের জিপ ড্রাইভার হিসেবে বিধু মাণ্ডির নামটা এখনও বুক থেকে আবছা হয়ে যায়নি। নতুন কারুর সঙ্গে না হয় আর কদিন পরে অভ্যস্ত হবো। লালচে মাটির সড়ক, দুধারে ঢাল করে পাথরকুচি ফেলা। রাস্তায় মাঝে মাঝে সোলার প্যানেলসমেত ল্যাম্পপোস্ট বসানো। গ্রামে ঢোকার আগে নির্জন পথ পেরিয়ে আসতে হয়। সে পথে শালকাঠ, শালপাতা মাথায় নিয়ে গ্রামের মেয়ে বৌরা হেঁটে যায়। তাদের ক্লিষ্ট, দরিদ্র চেহারাগুলি গাড়ি দেখলে পিছু মুড়ে তাকায়। তারপর আবার নির্বিকারে পথ চলে।

    গ্রামে ঢুকে সামান্য এদিক ওদিক জিজ্ঞাসা করতেই বিধুর বাড়ি দেখিয়ে দিল সবাই। অলরেডি বহুবার পুলিশ এসেছে ওর খোঁজে। নতুন ড্রাইভার একটা চৌকোনো বাড়ির সামনে দাঁড় করিয়ে দিল। দেওয়ালে ইঁট গাঁথা, কিন্তু চালে টিনের শেড। বাড়িটার সামনে একপাল খুদে গায়ে মাটি মেখে খেলাধুলা করছিল। একজন রোগাসোগা বৃদ্ধা, দাওয়ায় বসে চুল আঁচড়াচ্ছিলেন। আমাকে দেখে ঘরে ঢুকে গেলেন। কিছুক্ষণ পর একটি লম্বা মত লোক এসে বাইরে দাঁড়াল। সুগঠিত চেহারা আর চকচকে চোখ দেখে মনে হল, ইনি বিধুর দাদা হবেন।

    লোকটা আমাকে দেখেই হাতজোড় করে বলল, “আমাদের আর কিছু বলার নেই। আমরা সত্যিই জানি না বিধু কোথায় আছে। ও অন্যায় করেছে, শাস্তি পাক। এটাই চাই। আপনারা ওকে খুঁজে শাস্তি দিন।”

    আমি কথা হারাচ্ছিলাম। এই মানুষগুলো দুদিনের পুলিশি জেরায় ক্লান্ত বিধুর মত বিধুর দাদারও একই মোটিভ ছিল। কিন্তু লোকটা স্থানীয় একটা ইটভাটায় কাজ করে। এক্সট্রা টাকা রোজগারের জন্য ছৌ নাচের দলে নাচে। দোলের দিন রাতে অযোধ্যার এক হোটেলে লোকটার পারফরম্যান্স ছিল। নেহাত ওর অ্যালিবাই পাকা বলে পুলিশ ওকে থানায় তুলে নিয়ে যায়নি। কিন্তু তাতেও যে সে রেহাই পেয়েছে, ব্যাপারটা এমন নয়। এই ধরণের পরিস্থিতিতে বারবার একই কথা জিজ্ঞাসা করে জেরা চলে। কিছুমাত্র ঢিলা দেখলেই, থানায় আটকে রেখে জেরা চলবে।

    লোকটাকে প্রতিনমস্কার করে বললাম, “আমার কিছু অন্য কথা জানার ছিল।”

    বিধুর দাদা একটু ইতস্তত করে একটা মোড়া এনে দিলেন। আমি সেটায় বসে ঘরের ভিতরটায় তাকিয়ে দেখলাম। দুটো পাকা ঘর। একটায় বোধহয় বিধু আর ওর মা থাকে। দ্বিতীয়টায় দাদা পরিবার সমেত থাকেন। ঘরে আসবাব বলতে রট আয়রনের খাট, শোকেস আর একটা বড়সড় টিভি। বিধুর চাকরির সুবাদে সবে সচ্ছলতার মুখ দেখতে শুরু করেছিল পরিবারটি।

    বিধুর দাদার নাম সাধু মাণ্ডি। আমার সামনে আরেকটা মোড়া নিয়ে এসে বসলেন। মাটি থেকে ভাঁপা একটা গরম উঠছিল। খুদেগুলো খেলা থামিয়ে খানিকক্ষণ অবাক হয়ে আমার দিকে তাকাল, তারপর আবার মাটি ছুঁড়ে ছুঁড়ে খেলতে শুরু করল।

    সাধু মাণ্ডি আবার বললেন, “বিধু যা করেছে তার জন্য আমরা খুব লজ্জিত। মাথা ঠাণ্ডা ছেলে ছিল। ইকিরবিকিড় কোনোদিন করতে দেখি নাই। তার মাথায় এসব কখন ঢুকল, কীভাবে ঢুকল…সব গুলিয়ে যাচ্ছে…”

    আমি খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে বললাম, “দেখুন, বিধুর সঙ্গে আরও একজন ছিল সে রাতে। পুলিশ তাকেও খুঁজছে।”

    “জানি। সেইজন্যেই থানা থেকে বারবার লোক আসে, আর আমাকে খুঁচিয়ে মারে। দুদিন ধরে ভাটায় যেতে পারিনি।” লোকটার মুখে অনেকগুলো ভাঁজ পড়ল, অস্বস্তি, বিরক্তি আর অসহায়তা একসঙ্গে মিশলে যেমন হয়।

    “এমন কাউকে চেনেন যার সঙ্গে মিলে বিধু এ কাজটা করতে পারে? বন্ধুবান্ধব, কোনো পরিচিত?”

    লোকটা দুদিকে মাথা নাড়িয়ে বলল, “নিজের পায়ে নিজে কুড়ুল মারার মত বোকা আর কে হয় ম্যাডাম? বন্ধুর জন্য, পরিচিতের জন্য কে এসব করবে?”

    “এমন কেউ যে বাড়িতে আসত, গত কয়েকমাস যাবৎ বিধুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে মিশছিল?”

    “না। আমরা কিছুই জানি না। জোয়ান মদ্দা ছেলে ছিল। ডিউটির পর কোথায় যাচ্ছে, কী করছে অত খোঁজ রাখতাম না। বিয়েটিয়ে দেব ঠিক করেছিলাম…তার মধ্যে এসব হয়ে গেল…”

    “বিধু কি ওর বাবার মৃত্যুটা নিয়ে খুব গুমরে থাকতো? কোনোদিন বাড়িতে কিছু বলেনি?”

    সাধু আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, “কিছু বুঝিনি। বাবার কথা খুব একটা উঠত না। আমরা তো ভয়েই অর্ধেক …”

    “বিধুর চাকরিটা তো ওর বাবার মৃত্যুর সূত্রেই হয়েছে?”

    সাধু চুলের মধ্যে আঙুল চালিয়ে বললেন, “কী লাভ হল! যে কোনো একজনকে চাকরি দেবে বলেছিল। আমার তো পড়াশুনার দৌড় ফাইভ কেলাস অবধি। ও ড্রাইভারি শিখল, স্কুলের পরীক্ষায় পাস দিল। ভাবলাম, সরকারি চাকরি পেয়েছে…এবার সব ঠিক হবে। পাঁচ বছরের মাথায় মাথায় কী সব্বোনাশটা করল…”

    ভিতর ঘর থেকে মহিলাকণ্ঠে একটা কান্নার রোল উঠল। বিধুর মা, বিধুর নাম ধরে কাঁদছিলেন।

    সাধু মাণ্ডি সেদিকে তাকিয়ে বললেন, “মাকে বোঝানো দায়। বাবাকে তো ফেরত পাবো না। বিধুটাও আক্কেল বেচে এমন একটা কাজ করল। সারাজীবন পালিয়ে পালিয়ে বাঁচতে হবে।”

    আমি নিজেকে একটু গুছিয়ে নিলাম। এঁদের আবেগের চোরাবালির তলায় কোথাও একটা সত্যিটা লুকিয়ে আছে। সাধু মাণ্ডিকে জিজ্ঞাসা করলাম, “আপনার বাবার মৃত্যুর কথা মনে আছে?”

    “মনে থাকবে না কেন? পরিষ্কার মনে আছে। চাঁদের আলো ছিল। যারা এসেছিল তাদের মুখও চিনতে পেরেছিলাম।”

    “নিশীথ মাহাতো?”

    সাধু আমার কথার উত্তর দিলেন না। চিত্রার্পিতের মত বলে যেতে লাগলেন, “চাঁদের আলোয় সেদিন উঠোন ভেসে যাচ্ছিল। প্রচণ্ড গরম বলে বাবা এই উঠোনটায় খাটিয়ায় ঘুমাচ্ছিল। মা, বিধু আর আমি এই দাওয়ায়। বিধু তখন দশ, আমি পনেরো।

    একটু পরে একটা বাইক গরগর শব্দ তুলে বাড়ির পিছনদিকটায় থামল। দুজন এসে দাঁড়াল উঠোনে। পরনে খাকি পোশাক। পিঠে বড় বন্দুক। ওদেরকে চিনতাম। সেই দিনই সন্ধেবেলা গণসভায় ওদের সঙ্গে বাবার ঝামেলা হয়েছিল। ওদের দলবল মাঝে মাঝেই বাড়িতে এসে চাল ডাল যা পেত নিয়ে যেত। কিছু বললেই বলত, সবার ভালোর জন্য এটুকু করতেই লাগবে। বাবা সেদিন সভায় বলল, এত চাঁদা ওঠে…সেসব দিয়ে লোকের ভালো করো না কেনে…আমরা গরীব মানুষ, আমাদের ছেঁড়া কাঁথায় আরও বড় ছেদ করে কী হবে! ওরা শাসিয়েছিল…বলেছিল মুখ বন্ধ রাখ, নাহলে ঠুকে দিব…” সাধু একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন।

    “তারপর?”

    “বাবা ক্ষ্যাপা ছিল। সেদিন তাড়ি খেয়েও ছিল। মুখ থেকে ভকভক করে তাড়ির গন্ধ বেরোচ্ছিল, সঙ্গে দুচারটে বাছাবাছা গালি। ওদেরকে বলল, সকাল হতে দে। মোরগের ডাকের বদলে আমি তোদের কীর্তিকাহিনী শুনিয়ে লোকের ঘুম ভাঙাবো। তখনই ওদের চোখমুখ লাল হয়ে গিয়েছিল, বুঝেছিলাম কিছু একটা করবে।”

    সাধু কথা বলতে বলতে দ্রুত নিঃশ্বাস নিচ্ছিলেন। বুঝতে পারছিলাম সেদিনের ঘটনাক্রম চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলেন।

    “তখন রাত কটা হবে…বারোটা, সাড়ে বারোটা। গরমের চোটে ঘুম আসছিল না। দেখলাম, জমির কোনা বরাবর হেঁটে এসে, নিশীথ মাহাতো আর সুশীল বাস্কে পা টিপে টিপে খাটিয়াটার পাশে এসে দাঁড়াল। ঘুমালে বাবার মুখটা হাঁ হয়ে থাকত। ওরা বন্দুকের নলটা হাঁ মুখে ঢুকিয়ে ট্রিগার টিপে দিল। বাবার মুখের মধ্যে গুলি চলল বলে, আওয়াজটা কেমন যেন দেবে গেল। বাবার শরীলটা খাটিয়ায় একবার লাফিয়ে উঠে তারপর…তারপর একদম ইস্থির…”

    সাধু চুপ করে গেলেন। ওঁর চোখদুটো থেকে আতঙ্কের বিষছাপটা এত বছরেও মলিন হয়ে যায়নি। সেদিকে তাকিয়ে বললাম, “নিশীথের সঙ্গে দেবাশিস মাহাতো আসেনি? ওর ডান হাত?”

    সাধু উপর নিচ মাথা নাড়ালেন। বললেন, “এসেছিল। পরের দিন, সকালে।”

    “পরের দিন?”

    “হ্যাঁ। বাবার বড়িটা তখনও উঠোনে শোওয়ানো। আমি আর বিধু এক কোনায় দাঁড়িয়ে। মা পাগলের মত কেঁদে কেঁদে বাবার বড়িকে কাঁধ দেওয়ার জন্য গ্রামের লোকেদের হাত পা জুড়ছে। কেউ রাজি হচ্ছিল না। সেইসময় সে এসে দাঁড়াল উঠোনে।”

    “কী বলল? আরও ভয় দেখাল?”

    “না তো! অবাক হয়ে দেখলাম, লোকটা বাবার বড়ির পাশে দাঁড়িয়ে, হাত বাড়িয়ে চোখদুটো ছুঁল। বাবার চোখদুটো রাতভর ওরকম খোলাই পড়ে ছিল। মাছি ভনভন করছিল চারিদিকে। বডি থেকে গন্ধ ছাড়ছিল। দেবাশিস মাহাতো চোখদুটোর ঢাকনা নামিয়ে দিল, তারপর আমাদের কাছে এগিয়ে এসে আমাদের মাথাদুটোকে নিজের বুকের মধ্যে জাপটে ধরল। লোকটার গায়ের ঘাম আমাদের গায়ে মাথায় মাখামাখি হয়ে গেল। বিধুকে বলল, চিন্তা করিস না, আমি আছি।”

    “দেবাশিস মাহাতো? আপনার ঠিক মনে আছে?” আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম।

    সাধু আমার দিকে তাকিয়ে হাসলেন। তারপর বললেন, “আপনার খুব কাছের লোক কোনোদিন মারা গেছে?”

    মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললাম।

    “সেসময় যে মানুষটা আপনাকে কাছে টেনে ছিল, আপনাকে বুকে জড়িয়েছিল, আপনার চোখের জল মুছিয়েছিল, তাকে আপনি ভুলে গেছেন?”

    সাধুর প্রশ্নটা আমাকে ছিটকে মোড়া থেকে উঠিয়ে দিল। যন্ত্রচালিতের মত জিপে উঠতে উঠতে ভাবলাম, আমাকে যে কাছে টেনেছিল সে তো বিশ্বাসঘাতক ছিল। এঁদের যে কাছে টেনেছিল, সেও কি বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে পারেনি? আমি আছি বলে আশ্বাস দিয়ে কোথায় হারিয়ে গেল সে!

    বিভাসকে একটা ফোন করলাম। রঘুনাথপুর কলেজের খবরটা দরকার। বিভাস একবারেই ফোন ধরল। বলল, “আপনাকে এক্ষুণি ফোন করতে যাচ্ছিলাম। দেবাশিস মাহাতো সম্পর্কে ইন্টারেস্টিং তথ্য আছে।”

    “কী তথ্য?”

    “লোকটা রঘুনাথপুরে পড়াতো শুধু নয়, এই কলেজের ছাত্রও ছিল। ছাত্র রাজনীতি করত।”

    “আর কী জেনেছ?”

    “প্রথম সারির নেতা ছিল না। পড়ুয়া ধরণের ছেলে ছিল। পরে যখন পার্ট-টাইম লেকচারার পোস্টে জয়েন করে, তখন তলে তলে আলট্রা পলিটিকসের লিফলেট স্টুডেন্টদের মধ্যে বিলোতে শুরু করে। লাইব্রেরিয়ানের তাকে মনে আছে কারণ একজন বন্ধুর সঙ্গে মিলে সে একটা পত্রিকা বার করত। সেটা স্টুডেন্টদের মধ্যে বিলোনোর সময় প্রিন্সিপালের রোষে পড়ে। পত্রিকাটা কলেজ ম্যানেজমেন্ট বাজেয়াপ্ত করে। আর দেবাশিস মাহাতোকে চাকরি থেকে তাড়ানো হয়। কলেজের লাইব্রেরি থেকে পত্রিকার একটা কপি জোগাড় করতে পেরেছি।”

    “কোন বন্ধু? এনি লিড?”

    “না ম্যাডাম।”

    “তার আগে কী করত, কোথায় কোথায় যোগাযোগ রাখত কিছু জানা গেছে?” আমি খুব দ্রুত কথা বলার চেষ্টা করছিলাম।

    “না ম্যাডাম। লোকটা খুব সামান্য সময়ের জন্য পড়িয়েছে। ২০০৩ এর মাঝামাঝি থেকে ২০০৪ এর প্রথম দিক। কারুর স্পষ্ট করে কিছু মনে নেই।”

    “কারুর সঙ্গে পরবর্তীতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন?

    “নাহ।”

    “কোনো অল্টারেনেটিভ ঠিকানা, অন্য কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড, যাতে কোনোভাবে ওঁকে ট্রেস করা যায়?” আমি হতাশ হয়ে বললাম।

    বিভাস দুঃখিত স্বরে বলল, “না ম্যাডাম। আর কিছু জানতে পারিনি। আসলে রঘুনাথপুরে তো বাড়ি ছিল না…ঝালদার ছেলে। তাই বোধহয় কারুর কিছু মনে নেই।”

    “হুম। তুমি একটা কাজ করো বিভাস। ঝালদায় সোর্স লাগাও। ভালো করে খোঁজ নাও। লোকটা কোনোদিন ফেরত এসেছিল কিনা, ওর বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল কিনা, সেটা জানার দরকার। আশেপাশের বাড়ি, পাড়া প্রতিবেশীদের মধ্যে খোঁজ নাও। অন্তত বাড়ির কাউকে যদি ট্রেস করা যায়, তাকে কনট্যাক্ট করো। লোকটার ছবি-টবি বা অন্য কোনো রেকর্ড পাওয়া গেছে?”

    “নেই ম্যাডাম। কোথাও নেই। না স্টুডেন্ট অ্যাডমিশন রেজিস্টারে লোকটার ফর্ম আছে, না এমপ্লয়ি রেকর্ড বলে কিছু আছে। আমি ওর এমপ্লয়মেন্টের টাইমটা পুরোনো স্যালারি অ্যাকয়েন্টেন্স রেজিস্টার ঘেঁটে বার করলাম। অফিসের লোক বলছে পুলিশ সব রেকর্ড নিয়ে গিয়েছিল।”

    “পুলিশ নিয়ে গিয়েছিল!”

    “হ্যাঁ ম্যাডাম।”

    অবাক হয়ে ভাবলাম, পুলিশ যদি নিয়েই যাবে, তো রেকর্ড নেই কেন? আশ্চর্য তো!

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleইলিয়াড – হোমার
    Next Article বিসাশন – পিয়া সরকার

    Related Articles

    পিয়া সরকার

    বিসাশন – পিয়া সরকার

    October 21, 2025
    পিয়া সরকার

    বিসাশন – পিয়া সরকার

    September 12, 2025
    পিয়া সরকার

    বৃশ্চিকচক্র – পিয়া সরকার

    September 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    নৌকাডুবি

    October 26, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    নৌকাডুবি

    October 26, 2025
    Our Picks

    নৌকাডুবি

    October 26, 2025

    আরণ্যক – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

    October 25, 2025

    থ্রি মাস্কেটিয়ার্স – আলেকজান্ডার দ্যুমা

    October 21, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }