Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মধুরেণ – ইন্দ্রনীল সান্যাল

    ইন্দ্রনীল সান্যাল এক পাতা গল্প249 Mins Read0
    ⤷

    মধুরেণ – ১. এক বছর পরে

    ১. এক বছর পরে

    “সেটা ছিল ২০০৪ সাল। অস্ট্রেলিয়া থেকে ইংল্যান্ড যাওয়ার মাঝে কলকাতায় একটা স্টপওভার নিয়েছিলাম…” ইংরিজিতে বলছে অ্যাঙ্গাস ডিনুন, “হিমালয়ে এক সপ্তাহ কাটানোর প্ল্যান ছিল। দমদম এয়ারপোর্টের কাছে একটা হোটেলে উঠেছিলাম। সেটা ছিল তোমাদের পুজোর শেষ দিন, আই মিন শেষ রাত। কী যেন বলে? সপ্তমী, অষ্টমী, নষ্টামি, দুষ্টামি…”

    “অ্যাঙ্গাস, এটা ইংরিজি প্রোগ্রাম। ইংরিজি-বাংলা মেশানো পান চলবে না। ওরা এডিট টেবিলে ফেলে দেবে।” বলে মধুরা ভৌমিক। ‘হাই লাইফ’ চ্যানেলের কুকারি শো ‘মেল্টিং পট’এর হোস্ট।

    “ঠিক আছে মধুরা। আমি তা হলে ইংরিজিতেই বলছি,” বলল বছর পঞ্চাশের অ্যাঙ্গাস ডিনুন। রেস্তোরাঁ-বার-পাব-ওয়াটারিং হোল-স্টার হোটেল শাসিত লন্ডনে আড়াই লাখের কাছাকাছি শেফ আছে। এই ভিড়ে অ্যাঙ্গাস নিজের চমৎকার ব্র্যান্ডিং করেছে! লন্ডনের রাস্তায় সে ক্যারাভ্যান নিয়ে ঘোরে। ক্যারাভ্যানের নাম ‘এভরি ডে লাভলাভ ঝালমুড়ি এক্সপ্রেস।’ রাস্তার কোণে দাঁড়িয়ে ক্যারাভানের গায়ে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়। তাতে লেখা, ‘কলকাতা ফেমাস ঝালমুড়ি। ওয়েলকাম।’ হলদে টিনের বাক্স থেকে হরেক আকারের শিশি, বোতল, থার্মোফ্লাস্ক, কৌটো, গেলাস, টিনের পাত্র বার করে লন্ডনের ফুটপাথে হাঁটু মুড়ে বসে অ্যাঙ্গাস ঝালমুড়ি বানাচ্ছে— সে এক দেখার দৃশ্য! অ্যাঙ্গাস ঝালমুড়ি বলতে পারে না। বলে ‘জ্যা-ল মিউরি’।

    অ্যাঙ্গাস বলছে, “সেটা ছিল নবমীর রাত। আমি জীবনে দুর্গাপুজোর নাম শুনিনি। বাংলা নামে একটা দেশ আছে, সেটাই জানতাম না। ঢাক কাকে বলে, জানতাম না। শুনলাম, সমস্ত ঢাকি একসঙ্গে ঢাক বাজাচ্ছে। ওই শব্দ, ওই রং, ওই পাগলামি আমি কোত্থাও দেখিনি। রাস্তায় বেরিয়ে কলকাতার স্ট্রিট ফুডের বৈচিত্র্য দেখে পাগল হয়ে গেলাম। শুধু টেস্ট নয়, শুধু টেক্সচার নয়, শুধু প্রেজেন্টেশান নয়, হকারদের থিয়েট্রিক্সও দেখার মতো। কখনও হাঁক পাড়ছে, কখনও সুর করে বলছে ‘চায়েগ্রাম’, কখনও নাচের মুদ্রার মতো হাত ঝাঁকিয়ে শালপাতায় সাজিয়ে দিচ্ছে চুরমুর, কখনও ম্যাজিশিয়ানরা যেভাবে টুপি থেকে খরগোশ বার করে আনে, সেইভাবে আকাশ থেকে পেড়ে আনছে ফুচকা… আই মিন আই ওয়াজ মেসমারাইজ্‌ড! আমি একটা সাহেব, আমি কলকাতা চিনি না, বাংলা ভাষা জানি না, শুধু খাবারের লোভে এক রাতের জন্যে কলকাতায় এসে দু’মাস থেকে গেলাম। গিন্নিকে খবর দিলাম, কলকাতার স্ট্রিট ফুড নিয়ে ডকুমেন্টারি ফিল্ম বানাচ্ছি। তুমি আমাদের রেস্তোরাঁ সামলাও। বউ আমার পাগলামি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। মাইন্ড করল না। আমি মহানন্দে কলকাতার রাস্তায় খেয়ে বেড়াতে লাগলাম।”

    “অ্যাঙ্গাস ডিনুন, তুমি গ্রেট ব্রিটেনের নামকরা শেফ। তোমার প্রথম ঝালমুড়ি খাওয়ার অভিজ্ঞতা ‘মেল্টিং পট’-এর ভিউয়ারদের সঙ্গে শেয়ার করো।”

    “মির্জা গালিব স্ট্রিট আর রয়েড স্ট্রিটের ক্রসিং-এ, যেখানে ডানলপের পুরনো প্যালেসটা আছে…”

    “বিল্ডিং বলো অ্যাঙ্গাস। কলকাতাকে সিটি অব প্যালেসেস বলা হয় ঠিকই, তবে কলকাতার সব বাড়িই প্যালেস নয়।”

    “এনিওয়ে, ওই প্যালেসের সামনের ফুটপাথে একটা লোক ঝালমুড়ি বিক্রি করছিল। মাইন্ড ইট, আমি তখনও ঝালমুড়ি মানে কী, তাই-ই জানি না। লোকটার হাত-পা নাড়া দেখে মনে হল খুব কনফিডেন্ট। কী করতে চলেছে, সেটা সম্পর্কে ক্লিয়ার আইডিয়া আছে। এই মুড়ি নিচ্ছে, এই বাদাম ঢালছে, এই লঙ্কাকুচো-কাঠিভাজা-চানাচুর মেশাচ্ছে, এই সর্ষের তেল ছিটোচ্ছে, এই নারকেল কুচি দিয়ে গারনিশ করছে… কী ফ্লেয়ার! কী ফিনেস! আমি ওর পারফরম্যান্স দেখে মুগ্ধ হয়ে এক ঠোঙা মুড়ি কিনলাম। অ্যান্ড ইট সিল্‌ড মাই ফেট!”

    ‘সিল্‌ড ইয়োর ফেট’ কেন বললে? লন্ডনের এক নামকরা শেফের ভাগ্য কলকাতার ফুটপাথের ঝালমুড়ি কীভাবে ঠিক করে দিল?”

    “জানি না মধুরা। ভেরি অনেস্টলি জানি না। আমি আজ রেস্তোরাঁর কাজ ছেড়ে লন্ডনের রাস্তায় ঝালমুড়ি বিক্রি করি। এর পিছনে মির্জা গালিব স্ট্রিটের ওই ঝালমুড়িওয়ালার অবদান আছে।”

    “হোয়াই ঝালমুড়ি? কেন অন্য স্ট্রিট ফুড নয়?”

    “আমার জীবনের একটা বড় অংশ আমি এয়ারলেস কিচেনে কাটিয়েছি। সেখানে সূর্য বা চাঁদের আলো ঢোকে না। ঝালমুড়ি ওয়াজ আ ফ্রিডম ফ্রম কিচেন। এ ছাড়া, প্রোডাক্ট ওয়াইজ, অধিকাংশ মানুষ ঝালমুড়ি পছন্দ করে।”

    “তুমি যখন লন্ডনের রাস্তায় ঝালমুড়ি ফিরি করতে শুরু করলে, তখন লোকজনের রিঅ্যাকশান কীরকম হয়েছিল?”

    “ইট ওয়াজ সাকসেস স্টোরি ফ্রম দ্য ভেরি বিগিনিং। বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষ; বড়লোক, মিড্‌ল ক্লাস, হ্যাভ নট— সব্বাই ঝালমুড়ি পছন্দ করে। আমি যখন প্রফেশনাল শেফ ছিলাম, তখন বিভিন্ন কাস্টমারের টেস্টের কথা ভাবতে হত। কিন্তু ঝালমুড়ি সব্বার পছন্দ।”

    “তোমার এই ঝালমুড়ি কার্ট নিয়ে কিছু বলো।”

    মধুরার আঙুলের ইশারায় বাল্কি ক্যামেরা হাতে এগিয়ে এল। বালকৃষ্ণণের মতো বড়, দক্ষিণি পদবি কেটেছেঁটে বাল্কি হয়ে গেছে। বাল্কি সিনেমাটোগ্রাফির কাজে অসম্ভব দক্ষ। ফুড ফোটোগ্রাফি ডেলিকেট কাজ। টিভির পরদায় খাবার দেখে দর্শকের জিভে যেন জল আসে, এই কথাটা প্রতি সেকেন্ডে মনে রাখতে হয়। বাল্কি সেই কাজটা হেলাফেলার সঙ্গে করে। চোখের ইশারায় সে মধুরাকে কাজ শুরু করতে বলল।

    টিনের কৌটোয় মুড়ি ঢালে মধুরা। অনেকটা বাদাম, অনেকটা ঝুরিভাজা, অনেকটা চানাচুর ঢালে। অভ্যস্ত হাতে পেঁয়াজ কাটতে কাটতে জিজ্ঞাসা করে, “অ্যাঙ্গাস, কলকাতার ঝালমুড়ির সঙ্গে লন্ডনের ঝালমুড়ির কতটা তফাত?”

    “প্রথম দিকে অথেনটিক থাকার চেষ্টা করতাম। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে কাস্টমারের ইচ্ছেকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে কিছুটা সরে এসেছি। বাংলাদেশের মানুষ হলে ঝাল বেশি পড়ে। ইন্ডিয়ার গুজরাটি হলে মিষ্টি বেশি পড়ে। ইন্ডিয়ার বাঙালি হলে সর্ষের তেল বেশি পড়ে।”

    “দ্যাট্‌স দ্য সিক্রেট অফ ঝালমুড়ি। সর্ষের তেল।” কৌটোয় অনেকটা তেল দেয় মধুরা। বাল্কি ক্যামেরা নিয়ে এগিয়ে এসেছে। ক্যামেরার লেন্স উঁকি দিচ্ছে কৌটোর মধ্যে। চামচ দিয়ে তেল মেশাতে মেশাতে মধুরা বকবক করে যাচ্ছে আর গত এক বছরের কথা ভাবছে…

    *

    মেল্টিং পট কুকারি শোয়ের অ্যাঙ্কর হয়ে মধুরা লন্ডনে এসেছে, সে প্রায় এক বছর হতে চলল। ‘হাই লাইফ’ ব্রিটিশ চ্যানেল। সংক্ষেপে ‘হাই’। মিডিয়া ব্যারন রবার্ট বয়কট এই চ্যানেলের মালিক। ওঁর মালিকানায় নিউজ চ্যানেল, জেনারেল এন্টারটেনমেন্ট চ্যানেল, কার্টুন চ্যানেল, মেয়েদের চ্যানেল—সব আছে। তার মধ্যে সবচেয়ে কম জনপ্রিয় চ্যানেল হাই। মার্কেট রিসার্চ বলেছিল, চ্যানেলটার ভারতবর্ষে চলার সম্ভাবনা আছে। ইন্ডিয়াতে লঞ্চ করার আগে হাই বেশ কয়েকটা ভারত-কেন্দ্রীক কুকারি শো তৈরি করেছিল। তার মধ্যে একটা শোয়ের নাম মেল্টিং পট।

    মেল্টিং পটের আইডিয়া হাইএর এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার এলিজাবেথের। লন্ডনকে বলা হয় মেল্টিং পট। সারা পৃথিবীর মানুষ জীবিকার সন্ধানে গ্রেট ব্রিটেনকে নিজের দেশ বানিয়েছে। ভারতীয়, বাংলাদেশি, পাকিস্তানি, তিব্বতি, শ্রীলঙ্কাবাসী, চিনা, জাপ, আমেরিকান, স্ক্যান্ডিনেভিয়ান, ইজরায়েলি মানুষে লন্ডন থইথই করছে। এই সব দেশের খাবার লন্ডনে পাওয়া যায়। পাঁচতারা হোটেলের বাইরে, পাড়ার রেস্তোরাঁয়, ফুটপাথে, ঘেটোয়, ডরমিটরিতে, হস্টেলে, সাধারণ মানুষের রান্নাঘরে। এই ‘ইন্টিগ্রেশান থ্রু ফুড’কে সেলিব্রেট করতে মেল্টিং পট শোয়ের জন্ম।

    মেল্টিং পটের হোস্ট হিসেবে লিজ এমন কাউকে খুঁজছিল যে ব্রিটিশ নয়, যার ইংরিজি বলায় ত্রুটি নেই, যে ক্যামেরার সামনে স্বচ্ছন্দ, যে কথা বলতে বলতে রান্না করতে পারে। দীর্ঘ ছ’মাস ধরে লিজের টিম পাঁচশো শেফের অডিশন নিয়েছিল। কলকাতার স্কুপ চ্যানেলের কুকিং রিয়্যালিটি শো ‘পাঁচফোড়ন’এ মধুরার পারফরম্যান্স দেখে লিজ মধুরাকে সিলেক্ট করেছিল। লিজের সঙ্গে মধুরা লন্ডনে আসে।

    প্রথম পনেরো দিন লিজ তাকে লন্ডনের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিয়েছিল। হাইএর গেস্ট হাউসে থাকাখাওয়া, শফার ড্রিভেন কারে সাইট সিয়িং, বিকেল নাগাদ হাইএর অফিসে হাজিরা দেওয়া, দিব্যি কাটছিল।

    ষোলোতম দিন থেকে কাজ শুরু হল। সকাল সাতটায় উঠে, লন্ডনের ডিপ্রেসিং, মেঘলা ওয়েদারের মধ্যে আটটায় পৌঁছতে হত হাইএর অফিসে। ফার্স্ট আওয়ারে ক্রিয়েটিভ টিমের সঙ্গে মিটিং। কোথায় শুটিং হবে, লজিস্টিক সাপোর্ট কী লাগবে, নির্ধারিত বাজেটের মধ্যে শুটিং কীভাবে করা যায় এইসব চলত। দু’সপ্তাহের মধ্যে ছক বুঝে গিয়ে মধুরা নিজের মতামতও দিতে লাগল।

    ক্রিয়েটিভ টিমের মিটিং শেষ হতে হতে দশটা। অফিসের ক্যান্টিনে ব্রেকফাস্ট সেরে লাল সিঙ্গল ডেকার বাস নিয়ে বেরিয়ে পড়তে হত। কখনও হোয়াইট ক্রস মার্কেটের ‘ইট মাই পাই’ রেস্তোরাঁ থেকে টিপিক্যাল ব্রিটিশ খাবার, কখনও পোর্টোবেলো রোড মার্কেটের ‘জামন জামন’ থেকে পায়া, কখনও ব্রডওয়ে মার্কেটের ‘ইয়াম বান’ থেকে পর্ক বান, কখনও নেটিল মার্কেটের ‘লাকি চিপ’ থেকে বিফ বার্গার… একটানা শুটিং!

    টানা দশঘন্টা শুটিং সেরে আবার অফিস। এবার এডিট টেবিলের লোকজনের সাথে মিটিং। মিটিং চুকিয়ে গেস্ট হাউসে ফিরতে রাত একটা। কোনওরকমে পেটে কিছু দিয়ে ঘুম। পরদিন সকাল সাতটায় আবার বেরোতে হবে।

    মাসতিনেক এই ধকল চলেছিল। লিজ চেয়েছিল এপিসোড ব্যাঙ্ক তৈরি করতে। সেটা হয়ে যাওয়ার পরে কাজ কিছুটা হালকা হল। রবিবারে শুটিং থাকত না। সেই সব দিনে মেল্টিং পটের প্রোমোশনাল অ্যাক্টিভিটিতে থাকতে হত। আজ অমুক রেস্তোরাঁর কুকিং ক্লাস অ্যাটেন্ড করো, কাল ভাইনইয়ার্ড ট্রিপে যোগ দাও, পরশু ওয়াইন সমেলিয়ার বা সুরা বোদ্ধা হিসেবে উপস্থিত থাকো… অত্যাচারের চূড়ান্ত।

    মেল্টিং পটের হোস্ট হিসেবে মধুরা তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে, কিন্তু সেই জনপ্রিয়তা উপভোগ করার সময় নেই। সপ্তাহে সাড়ে ছ’দিন শ্রমিকের মতো খাটো। রোববার সেকেন্ড হাফে ঘুমিয়ে কাটানো ছাড়া কিস্‌সু করত না।

    অর্থ, হয়েছে। খ্যাতি, হয়েছে। যশ, অল্প হলেও হয়েছে। এবার? এক বছরের কনট্র্যাক্টের দিন শেষ হয়ে এসেছে।

    *

    “ঝালমুড়ি রেডি।” ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলল মধুরা। অ্যাঙ্গাস কাগজের ঠোঙা এগিয়ে দিয়ে বলল, “ঢেলে দাও।”

    অভ্যস্ত হাতে ঠোঙায় ঝালমুড়ি ঢালে মধুরা। নারকেলের কুচি সাজিয়ে দেয়। অ্যাঙ্গাস একমুঠো মুড়ি মুখে ফেলে বলে “ওয়াও! সুপার্ব!”

    বাল্কির পিছনে দাঁড়িয়ে এপিসোড ডিরেক্টার ঘড়ির দিকে ইশারা করছে। অর্থাৎ, সময় শেষ। এবার ইতি টানতে হবে। মধুরা পাপড়ি চাট বানাতে বানাতে জিজ্ঞাসা করে, “ঝালমুড়ি বিক্রি করতে গিয়ে কোনও মজার ইনসিডেন্টের কথা মনে পড়ছে?”

    “একবার লন্ডনের ‘ইন্ডিয়া মেলা’য় ক্যারাভান নিয়ে গিয়েছিলাম। আমার মুড়ি খেয়ে তিন বাঙালি ঠাকুমা দারুণ উত্তেজিত। তিনজনে মিলে আমাকে একটা রবীন্দ্রসংগীত শেখালেন। নাচের স্টেপিংও শেখালেন। মধুরা, ক্যান আই পারফর্ম?”

    “শিয়োর! হোয়াই নট?”

    অনুমতি পাওয়ামাত্র অ্যাঙ্গাস ‘হাত ঘুরু ঘুরু নাড়ু দেব’ স্টাইলে নাচতে শুরু করল। সঙ্গে বিচিত্র উচ্চারণে রবীন্দ্রসংগীত, “পুড়ানো শেই ডিনেড় কটা বুলবি কিড়ে হাই!”

    মধুরা কী আর করে! শো-কে স্পাইস আপ করতে সে-ও নাচতে লাগল। অ্যাঙ্গাস গাইছে, ‘মোড়া ভোড়েড় বেলা ফুল টুলেচি, ডুলেচি ডোলাই…’

    ইউনিটের সব্বাই হাততালি দিচ্ছে। লিজ নিজে ক্যামেরার সামনে চলে এসে নাচতে লাগল। নাচতে লাগল মেকআপ আর্টিস্ট, হেয়ার স্টাইলিস্ট, কস্টিউম ডিজাইনার, প্রোডাকশান কনট্রোলার, লাইটম্যান, বুমম্যান, স্পটবয়, টেক সাপোর্ট, ড্রাইভার। অ্যাঙ্গাস সব্বাইকে ঝালমুড়ি খাওয়াচ্ছে আর গান গাইছে, “পুড়ানো শেই ডিনেড় কটা বুলবি কিড়ে হাই!”

    লিজ বলল, ‘প্যাক আপ!’ বাল্কি ক্যামেরা বন্ধ করল। মেল্টিং পটের ফাইনাল এপিসোডের শুটিং শেষ হয়ে গেল।

    লিজ এগিয়ে এসে মধুরার হাত ধরে বলল, “আজ রাতে অফিসে ডিনার। গেস্ট হাউসে ফিরে ফ্রেশ হয়ে আটটায় চলে এসো।”

    “আচ্ছা,” গাড়িতে ওঠে মধুরা।

    *

    ডিনার টেবিলে মধুরার উলটোদিকে বসেছে রবার্ট। রবার্ট বয়কটকে আজ দ্বিতীয়বারের জন্য দেখল মধুরা। প্রথমবার দেখেছিল শুটিং শুরু হওয়ার আগের রাতের ওয়েলকাম ডিনারে। শুটিং শেষ হয়ে যাওয়ার পরে আবার দেখা হল। এটা কি ফেয়ারওয়েল ডিনার? নাকি, এটা মেল্টিং পট, সিজ্‌ন টু-এর ওয়েলকাম ডিনার? মধুরা এক বছরের জন্য হাইএর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিল। এক বছর শেষ। তার পালাও কি শেষ? কে জানে?

    রবার্টের পাশে বসে লিজ। লিজের পাশে যে বসে আছে তাকে দেখে মধুরার হার্ট এক লাফে মুখের মধ্যে চলে এল। প্রায় ছ’ ফুট লম্বা, বছর ষাটেকের মানুষটি ক্লিন শেভ্‌ড। মাথা ভরতি কলপ করা চুল। মধুরা চিৎকার করে বলল, “সঞ্জয় কপুর!”

    সঞ্জয় ভারতের ন্যাশনাল টেলিভিশনের প্রথম স্টার শেফ। রেডিয়ো জকিরা যেমন আমিন সায়ানিকে তাদের গুরু মনে করে, বলিউডের অ্যাক্টররা যেমন অমিতাভ বচ্চনকে ‘লিভিং লেজেন্ড’ মনে করে, তেমনই ভারতীয় শেফরা সঞ্জয় কপুরকে তাদের ইনস্পিরেশান বলে মনে করে। টিভিতে কুকারি শো করে ‘রাঁধুনি’ সম্প্রদায়কে ‘শেফ’ বানিয়ে ছেড়েছেন। ভারতে এবং বিদেশে একাধিক রেস্তোরাঁর মালিক সঞ্জয় এখনও নিয়মিত টিভি শো করেন। গত সিজ্‌নে হাই চ্যানেলের জন্যে ‘নমস্তে ফ্রান্স’ নামে একটা ফুড বেস্‌ড রিয়্যালিটি শো করেছেন। ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরের রেস্তোরাঁয় খাওয়াদাওয়া করে নিজের মতামত দিয়েছেন।

    মধুরা বলল, “হাই! আই অ্যাম মধুরা!”

    সঞ্জয় বললেন, “তুমি বাংলা বলতে পারো!। আমি বাংলা একটু একটু বুঝি।”

    লিজ হাসতে হাসতে বলল, “বাংলা বলার দরকার নেই। আপনারা ইংরিজিতে কথা বলুন। বাই দ্য ওয়ে! সঞ্জয়ের এখানে আসার কারণটা বলে দিই। ‘নমস্তে ফ্রান্স’এর পরে উনি ‘নমস্তে ইউকে’ নামে একটা শো করতে চলেছেন।”

    “তাই?” ঘাড় নাড়ে মধুরা। তার এক পাশে বাল্কি। অন্য পাশে অচেনা একটা মেয়ে। লিজ মেয়েটিকে বলল, “তোমার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিই, এ হল মধুরা ভৌমিক।”

    মেয়েটি মধুরার দিকে তাকিয়ে উত্তেজিত হয়ে বলল, “আমি আপনার বিরাট ফ্যান! আমার নাম রিচা চাড্‌ঢা। একটা অটোগ্রাফ দিন প্লিজ!” সে একটা পেপার ন্যাপকিন বাড়িয়ে দিয়েছে।

    রিচার বয়স মধুরার মতো। চোখদুটো বড়ো আর এক্সপ্রেসিভ। হাসলে গালে চমৎকার টোল পড়ে। এক পলক দেখে মেয়েটাকে ভাল লাগল মধুরার। ন্যাপকিনে সই করে জিজ্ঞাসা করল, “এনআরআই না সেকেন্ড জেনারেশান ইন্ডিয়ান?”

    “ব্রিটিশ বাই বার্থ। ইন্ডিয়ান বাই রুট্‌স।” টোল ফেলা হাসি হেসে, কাগজটা যত্ন করে ক্লাচে ঢুকিয়ে বলল রিচা। রিচার কথা শুনে মিষ্টি হাসল মধুরা। ফ্যানগার্লের সঙ্গে আর বকবক করা উচিত নয়। তা হলে স্টার ভ্যালু কমে যাবে। অন্য পাশে বসে থাকা বাল্কিকে ফিসফিস করে জিজ্ঞাসা করল, “মেনু কী?”

    “টিপিক্যাল ব্রিটিশ মেনু,” নিচু গলায় উত্তর দেয় বাল্কি, “পটেড শ্রিম্প উইথ পিকল্‌ড কিউকামবার, রোস্ট সারলয়েন উইথ ইয়র্কশায়ার পুডিং, রোজমেরি রোস্টেড পোট্যাটোস আর সাসেক্স পন্ড পুডিং। ঢপের খাবার। তুমি ওয়াইন নেবে না অন্য কিছু?”

    “ওয়াইন,” ওয়েটারকে বলে মধুরা। কলকাতায় থাকার সময় সে টিটোটেলার ছিল। মদ স্পর্শ করত না। লন্ডনে এসে ওয়াইন পান করতে শিখেছে। এখানকার ডিনারে ড্রিঙ্ক না নিলে সবাই অদ্ভুত চোখে তাকায়।

    ওয়েটার টিউলিপ গ্লাসে রেড ওয়াইন ঢেলে দিল। মধুরা দেখল, রবার্ট আর লিজ নিজেদের মধ্যে কথা বলছে। কথা সেরে লিজ নিজের গ্লাস তুলে বলল, “টু দ্য সাকসেস অফ মেল্টিং পট, সিজ্‌ন ওয়ান।”

    টোস্ট সেরে, ওয়াইন সিপ করে মধুরা আড়চোখে হাতঘড়ির দিকে তাকাল। সাড়ে আটটা বাজে। ক’টায় ছাড়া পাবে কে জানে! বাড়িতে একবার ফোন করতে হবে। গত সপ্তাহে একবারও ফোন করা হয়নি।

    লিজ ওয়াইনের গ্লাস নামিয়ে রেখে কথা বলছে। “বন্ধুরা, মেল্টিং পট, সিজ্‌ন ওয়ান শেষ হল। এই কুকারি শো কনসিভ করা হয়েছিল ইন্ডিয়ার কথা ভেবে। ইন্ডিয়ায় অনুষ্ঠানটির তুমুল জনপ্রিয়তার ফলে হাইও জনপ্রিয় হয়েছে। ওখানকার লাইফস্টাইল চ্যানেলের মধ্যে রেটিংএ হাই এখন তিন নম্বরে। লঞ্চ হওয়ার এক বছরের মধ্যে তিনে চলে আসা বিরাট অ্যাচিভমেন্ট। এই কৃতিত্ব হাইএর সবার। পাশাপাশি, মেল্টিং পট টিম হিসেবে আমরা একটু বেশি কৃতিত্ব দাবি করতে পারি। কী রবার্ট, তাই তো?”

    রবার্ট সামান্য ঘাড় ঝাঁকায়। টেবিলের চারদিকে বসে থাকা টিমমেটরা হাততালি দেয়।

    লিজ বলে, “ইন্ডিয়ার পাশাপাশি, ইংল্যান্ডের অনাবাসী ভারতীয়দের মধ্যেও চ্যানেলটি খুব পপুলার। এবং, তাদের কাছে চ্যানেলের সিগনেচার শো হল মেল্টিং পট।’’

    মধুরা এই শোয়ের হোস্ট। তার জন্যই এই শো এত সফল। যে-কোনও সফল শোয়ের হোস্টকে পরের সিজ্‌নে রেখে দেওয়া হয়। ‘মাস্টারশেফ’ বা ‘কিচেন নাইটমেয়ার্‌স’-এর হোস্ট কখনও বদলায় না। মধুরাকে দিয়ে মেল্টিং পটএর পথ চলার শুরু। শোয়ের সিজ্‌ন টু তে সে থাকবে তো?

    আর এক চুমুক ওয়াইন পান করে মধুরা। তার হালকা টেনশান হচ্ছে। প্রাইভেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে পাশ করার পরে সে যখন কলকাতায় ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ কোম্পানিতে চাকরি করত, তখন কারণহীন মনখারাপ ভেজা ন্যাতার মতো জড়িয়ে থাকত তাকে। সেইসব ডিপ্রেশানের মুহূর্তে রান্না করে শান্তি পেত মধুরা। রান্নার প্রতি প্যাশন তাকে তারকা-শেফ বানিয়েছে। চাকরি ছেড়ে, বাবা-মা আর দাদা-বউদিকে ছেড়ে, বন্ধুবান্ধব আর অফিস কোলিগদের ছেড়ে, এক বছর লন্ডনে থাকতে তার একটুও খারাপ লাগেনি। আর এক বছর থাকলেও খারাপ লাগবে না। মোটা পাউন্ডের মাসমাইনে, টিভি, রেডিয়ো, খবরের কাগজ, ওয়েবসাইটে ইন্টারভিউ, নিয়মিত স্পটলাইটে স্নান করায় সে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। আভাসে ইঙ্গিতে অনেকবার লিজকে জানিয়েছে, মেল্টিং পট, সিজ্‌ন টু হোস্ট করতে চায়।

    কিন্তু লিজ তাকে রাখতে চায় কি? প্রত্যেক চ্যানেলের, প্রত্যেক প্রোগ্রামের আলাদা মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি আছে। মধুরা মনে মনে প্রার্থনা করে, লিজ তাকে পরের সিজ্‌ন হোস্ট করতে অনুরোধ করুক। প্লিজ… এলিজাবেথ, প্লিজ…

    “ইন্ডিয়ার ভিউয়ারশিপ বাড়াতে এবং ইংল্যান্ডের নন রেসিডেন্ট ইন্ডিয়ানদের মার্কেট ইনভেড করতে আমরা মেল্টিং পট, সিজ্‌ন টু-এর কাজ অলরেডি শুরু করে দিয়েছি,” মধুরার দিকে তাকিয়ে বলে লিজ, “আমাদের টার্গেট অডিয়েন্স এখন একদিকে ইন্ডিয়া, অন্যদিকে লন্ডনের ভারতীয়রা। দুই আলাদা জনগোষ্ঠীর টেস্ট ক্যাটার করতে আমরা সিজ্‌ন টু-তে অন্যরকম ক্যুজিন দেখাব। একদিকে দেখাব সাউথ হলের ইংলিশ-পঞ্জাবি ফিউশান ক্যুজিন। অন্যদিকে ব্রিক লেনের বাংলাদেশি-ব্রিটিশ ক্রস কালচারাল ফুড। আরও নানা প্ল্যান আছে। তবে সেসব পরের কথা। সিজ্‌ন টু-এর জন্য আমাদের এমন একজন হোস্ট চাই, যে দুটো মার্কেটের কাছেই গ্রহণযোগ্য।”

    প্লিজ… এলিজাবেথ, প্লিজ…

    “এবারের শো ডিম্যান্ড করছে এমন এক হোস্ট, যে অর্ধেক ব্রিটিশ আর অর্ধেক ভারতীয়। ফিউশান ফুডের জন্য ফিউশান হোস্ট।”

    মধুরা ওয়াইনে চুমুক দিয়ে আড়চোখে রিচার দিকে তাকাল। হাইএর অফিসিয়াল ডিনারে এই মেয়েটির উপস্থিতির কারণ এতক্ষণে সে বুঝতে পেরেছে। মধুরার কান্না পাচ্ছে। গলার কাছে একটা পুঁটলি জমা হচ্ছে। ঢোঁক গিলতে গিয়ে চোয়াল আটকে যাচ্ছে।

    লিজ বলছে, “মেল্টিং পট, সিজ্‌ন টু-এর হোস্ট হল রিচা চাড্‌ঢা। রিচার বাবা সাউথ হলের ‘ফান-জাবি ফিউশান’ রেস্তোরাঁর মালিক ভিকি চাড্‌ঢা। আর মা ব্রিটিশ শেফ অ্যানা। রান্নাবান্নার পরিবেশে রিচা বড় হয়েছে। শি ইজ আ ফ্যাবুলাস কুক। ভারতীয় রান্না এবং ব্রিটিশ রান্না দুটোতেই সমান স্বচ্ছন্দ। ভারতীয়, এনআরআই এবং লন্ডনের দ্বিতীয় প্রজন্মের ভারতীয়দের সঙ্গে ওর ইমোশনাল কানেক্ট থাকবে। আমরা গত একমাস ধরে ওকে ট্রেইন করছি। নেক্সট উইক থেকে শুটিং শুরু। টিম একই থাকছে।”

    টেবিলের চারিদিকে বসে থাকা টিমমেটরা হালকা হাততালি দিল। বাল্কি ফিসফিস করে মধুরাকে বলল, “মন খারাপ করে লাভ নেই। দিস ইজ শো বিজনেস। অ্যান্ড দেয়ার ইজ নো বিজনেস লাইক শো বিজনেস!”

    মধুরা বাল্কিকে বলল, “দ্য শো মাস্ট গো অন।” মধুরা জানে, মেল্টিং পট চলতে থাকবে। দর্শকরা প্রথম কয়েকদিন অস্বস্তিতে পড়বে। হাইএর অফিসে ফোন করবে বা মেল করবে। কাগজে চিঠিও লিখতে পারে। তারপর তারা ভুলে যাবে যে মধুরা ভৌমিক নামে কোনও হোস্ট ছিল। দু’হাতে জড়িয়ে ধরবে রিচা চাড্‌ঢাকে।

    মধুরা ফিসফিস করে রিচাকে বলল, “ইয়ু আর পারফেক্ট চয়েস ফর সিজ্‌ন টু।”

    “থ্যাঙ্কস। আই নিড ইয়োর ব্লেসিংস!” মধুরার হাত চেপে ধরেছে রিচা।

    লিজ বলল, “মধুরা তোমাকে আমরা রিসার্চ টিমে চাইছি। তোমার ইনপুট্‌স ভীষণ এফেক্টিভ। ওই ছোট্ট ছোট্ট ডিটেলগুলোর জন্যই মেল্টিং পট এত সফল।”

    মধুরা খেয়াল করে রিচা এখনও তার হাত শক্ত করে ধরে আছে। আসলে রিচা স্টার শেফ মধুরাকে ছুঁতে চাইছে। ছুঁতে চাইছে সাফল্যকে।

    ‘সাফল্য’ শব্দটা কত আপেক্ষিক! রিচার মনে হচ্ছে, স্টার শেফ মধুরা ভৌমিককে ছুঁয়ে তার জীবন ধন্য হয়ে গেল। আর মধুরার মনে হচ্ছে, রিচা একজন স্টার। কেননা রিচা মেল্টিং পট, সিজন টুয়ের হোস্ট।

    সাফল্য মানে তা হলে কী? ভুরু কুঁচকে ভাবে মধুরা। লিজ বলে, “মধুরা, শ্রিম্পটা খেয়ে দেখো। দারুণ হয়েছে! আর, কাল বারোটা নাগাদ একবার অফিসে এসো। তোমার সঙ্গে কথা আছে।”

    ঘাড় নাড়ে মধুরা। চিংড়ি মাছ গলা দিয়ে নামছে না! অনেক কষ্টে কান্না চেপে সে বলল, ‘খুব ভাল হয়েছে। তাই না রিচা?”

    রিচা বলল, “পিক্‌লটা আর একটু ট্যাঙ্গি হলে আরও জমত। ডোন্ট ইয়ু থিঙ্ক সো?”

    ন্যাপকিন দিয়ে নাক মুছে মধুরা বলে, “তুমি যখন বলছ, তখন সেটাই ঠিক।”

    ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleস্পাই মেয়ে – মার্থা ম্যাককেনা
    Next Article শেষ নাহি যে – ইন্দ্রনীল সান্যাল

    Related Articles

    ইন্দ্রনীল সান্যাল

    অপারেশন ওয়ারিস্তান – ইন্দ্রনীল সান্যাল

    July 10, 2025
    ইন্দ্রনীল সান্যাল

    শেষ নাহি যে – ইন্দ্রনীল সান্যাল

    July 10, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }