Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    কিরীটী অমনিবাস ১২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ৪ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মানসী তুমি – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    নীহাররঞ্জন গুপ্ত এক পাতা গল্প99 Mins Read0

    মানসী তুমি – পরিচ্ছেদ ১

    ০১.

    টেলিগ্রামটা এসেছিল বিকেলের দিকে সংক্ষিপ্ত তার। টেলিগ্রামে লেখা ছিল : সুকুমার, বিবাহ করেছি। তোমার নতুন বৌদিকে নিয়ে আগামী শনিবার সকালের ট্রেনে পৌছাব। শরদিন্দু।

    আগামী শনিবার মানে কাল বাদে পরশুই। মনে মনে হিসাব করে দেখল সুকুমার, হাতে মাত্র একটা দিন তাহলে আর আছে। কোন্ ট্রেনে এবং ঠিক কখন ট্রেনটা পৌছাবে হাওড়া স্টেশনে সেসব কিছুই নেই তারবার্তার মধ্যে।

    টেলিগ্রামটা পেয়ে সুকুমার কম বিস্মিত হয়নি। তা বিস্মিত হবারই কথা। শরদিন্দুর যখন প্রায় চল্লিশ বৎসর বয়স তখনই তার প্রথমা স্ত্রী মানসী আকস্মিক ভাবে মারা যায় জলমগ্ন হয়ে সমুদ্রে স্নান করতে গিয়ে। স্ত্রী মানসীকে হারিয়ে শরদিন্দু যখন একা ফিরে এসেছিল পুরী থেকে—সুকুমার চমকে উঠেছিল।

    শরদিন্দুর চোখেমুখে যেন একটা সর্বস্ব হারানোর ব্যথা, মাথার চুল উস্কোখুস্কো—চোখ দুটো রক্তজবার মত লাল। সারামুখে খোঁচা কাঁচা-পাকা দাড়ি।

    সুকুমার শুধিয়েছিল, কি হয়েছে শরদিন্দুদা, তুমি একা কেন—বৌদি কোথায়?

    শরদিন্দু ফ্যালফ্যাল করে শূন্যদৃষ্টিতে চেয়ে থাকে সুকুমারের মুখের দিকে।

    ঠোঁট দুটো তার অল্প অল্প কাঁপছে।–মানসী নেই সুকুমার!

    নেই? বিমূঢ় দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে সুকুমার শরদিন্দুর মুখের দিকে কিছুক্ষণ। সত্যি সুকুমার যেন বোবা হয়ে গিয়েছিল।

    সমুদ্রে সাঁতার কাটতে গিয়ে ড়ুবে গিয়েছে মানসী।

    সে কি!

    অনেক বারণ করেছিলাম রে, সমুদ্রে আমার সঙ্গে স্নান করতে নেমো না কিন্তু শুনল না। আমার কথা।

    আত্মীয়-পরিচিতের দল সবাই জানত শরদিন্দু কি প্রচণ্ড ভালোবাসত তার স্ত্রীকে। মানসীকে নিজে পছন্দ করেই বিবাহ করেছিল শরদিন্দু বৎসর দুই আগে।

    অমন সুখী দম্পতি বড় একটা চোখে পড়ত না সচরাচর। এক দণ্ড স্ত্রীকে চোখের সামনে দেখলে যেন পাগল হয়ে যেত শরদিন্দু।

    প্রথম প্রথম হাসত নীরজা স্বামীর রকমসকম দেখে। পরে কিন্তু তার মনের মধ্যে কেমন যেন একটা ভয় বাসা বেঁধেছিল। সুকুমারকে একদিন মানসী বলেছিল, জান সুকু, আমার কেন যেন বড্ড ভয় করে।

    ভয়? ভয় কিসের বৌদি?

    ভয় তোমার দাদার ঐ প্রচণ্ড ভালোবাসাকে।

    সুকুমার হেসেছে, বলেছে, কি যে বল বৌদি!

    না, না সত্যি ভাই, তোমার দাদা কাছে এলেই—আমার যেন মনে হয়—

    দাদা চিরদিনই ঐরকম বৌদি। যাকে সে ভালোবাসে, তাকে যেন এক দণ্ড চোখের আড়াল করতে চায় না।

    শরদিন্দুর ঔষধ তৈরির একটা কারখানা ছিল বাগমারিতে। কারখানাটা খুব বিরাটও নয়, আবার ছোটও নয়। ঔষধের ব্যাপারটা নিজে ভাল করে যাতে বুঝতে পারে বিলেতে গিয়ে তাই বি-ফারমা পাস করে এসেছিল। কারখানাটা ছিল যেন তার প্রাণ।

    সকাল সাড়ে নটায় স্নান সেরে শুরু হত প্রস্তুতি। বরাবর সুকুমার দেখেছে দশটা বাজতেই শরদিন্দুর গাড়িটা বের হয়ে যেত। হেভি ব্রেকফাস্ট করে বেরুত শরদিন্দু, লাঞ্চ কারখানাতেই সারত। ফিরত সেই রাত সাড়ে নটা—কোন কোন দিন রাত দশটা—আবার সাড়ে দশটাও বেজে যেত বাড়িতে ফিরতে।

    একরাশ ফাইল নিয়ে ফিরত। বাড়ি ফিরে স্নান করে ঘরে বসত। ভৃত্য গোকুল ইতিমধ্যে টেবিলে স্কচ হুইস্কির বোতল-গ্লাস রেখে যেত, মধ্যে মধ্যে গ্লাসে চুমুক দিত শরদিন্দু আর ফাইল দেখত।

    রাত এগারোটা বাজলে গোকুল এসে সামনে দাঁড়াত।–খাবার কি টেবিলে দেব?

    আর একটু পরে-বলে শরদিন্দু আবার তার ফাইলে মনোসংযোগ করত। গোকুল চলে যেত।

    আবার আধঘণ্টা কি পঁয়তাল্লিশ মিনিট পরে গোকুল এসে সামনে দাঁড়াত।

    এবার খাবার দেব টেবিলে?

    দিবি—আচ্ছা দে! সুকুমার খেয়েছে?

    হ্যাঁ, সুকুদাদা তো কখন খেয়ে শুয়ে পড়েছে।

    সুকু আজ কারখানা থেকে কখন ফিরেছিল রে গোকুল? শরদিন্দু শুধাত।

    গোকুল বলত, সুকুদাদাবাবু তো সেই সন্ধ্যাবেলাতেই ফিরে এসেছে।

    শরদিন্দু হাসত। বলত, সুকুটা জীবনে কোনদিন উন্নতি করতে পারবে না।

    গোকুল অনেক দিন আছে ঐ বাড়িতে। হিসেব করলে খুব কম করেও পনেরো বছর তো হবেই। সেই শরদিন্দুর বাবা রজতসিন্ধুর আমল থেকে।

    খেতে খেতে প্রভু ও ভৃত্যের মধ্যে কথা হত। গোকুল একসময় বলত, এবারে একটা বিয়ে কর খোকাবাবু!

    বিয়ে? খেতে খেতে তাকাত শরদিন্দু ভৃত্যের মুখের দিকে।

    হ্যাঁ। এ কি একটা বাড়ি—এ যেন একটা ভূতুড়ে বাড়ি। গোকুল বলত, বয়স তো চল্লিশ হতে চললকবে আর বিয়ে করবে?

    তোর মতে এবারে একটা বিয়ে করা দরকার, তাই না রে গোকুল? শরদিন্দু বলত, ঠিক বলেছিস। বিয়ে সত্যিই একটা বোধ হয় করা দরকার এবার। ঠিক আছে, সামনের মাসেই বিয়ে করে ফেলব একটা তুই দেখে নিস।

    কিন্তু সে সামনের মাস আর আসত না। অবশেষে সত্যিই একদিন হঠাৎ বিয়ে করে ফেলল শরদিন্দু।

    ঘটনাটা আকস্মিকই বলতে হবে।

    পরেশ নন্দী কারখানার অনেক দিনের পুরাতন কর্মচারী, অ্যাকউন্টস রাখতেন। ক্রনিক হাঁপানির রোগী, প্রায়ই অসুস্থ হতেন। অফিসে আসতে পারতেন না। একদিন শরদিন্দু বললে, আপনি এবার রিটায়ার করুন পরেশবাবু।

    কিন্তু স্যার–

    মাসে একশো টাকা করে পেনসন পাবেন, যান এখন সামনের মাস থেকে রিটায়ার করবেন।

    ঐ এক ধরনের মানুষ ছিল শরদিন্দু, যা একবার বলবে তা করবেই। পরেশ নন্দী সেটা জানতেন। তাই পরেশ নন্দী বুঝতে পারেন, তাকে রিটায়ার করতেই হবে এবারে।

    শরদিন্দু কথাটা বলে আবার নিজের কাজে মন দিয়েছিল—কোম্পানিতে যে নতুন সায়েন্টিস্ট এসেছেন, কমলেশ ব্যানার্জী, তিনি নতুন একটা ফরমুলা বের করেছেন বেবি ফুডের—সেই। কাগজপত্রগুলোই খুঁটিয়ে দেখছিল শরদিন্দু—তাতে মনোসংযোগ করল। পরেশ নন্দী বের হয়ে গেলেন।

    দিনতিনেক পরে এক দুপুরে শরদিন্দু যখন তার অফিস কামরায় বসে গত বছরের ব্যালেন্সশীটটা দেখছে, বেয়ারা রামরূপ এসে ঘরে ঢুকল, সাব, একজন মহিলা দেখা করতে চান।

    মহিলা? কি চায়?

    তা তো বললেন না—কেবল বললেন আপনার সঙ্গে দেখা করতে চান।

    বলে দে এখানে চাকরি খালি নেই। আর আমি কাউকে ভিক্ষে দিই না।

    হঠাৎ এসময় সুইং ডোর ঠেলে একটি ২০/২১ বছরের তরুণী শরদিন্দুর অফিস কক্ষে প্রবেশ করে বলল, দেখুন, আমি আপনার কাছে চাকরির জন্যে আসিনি আর ভিক্ষে করতেও আসিনি।

    শরদিন্দু বললে, তবে কি জন্য এসেছেন?

    আপনি আমার বাবাকে হঠাৎ রিটায়ার করতে বলেছেন কেন?

    আপনার বাবা–

    পরেশ নন্দী—আমার বাবা। জানেন, আজ আপনি বাবাকে রিটায়ার করিয়ে দিলে আমাদের উপোস করে মরতে হবে—মা, আমি, দুটো ছোট ভাইবোন—মার চিকিৎসাটাও বন্ধ হয়ে যাবে।

    শরদিন্দু অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়েছিল মেয়েটির দিকে তখন। রোগা পাতলা চেহারা। গায়ের বর্ণ একটু কালোর দিকেই, কিন্তু চোখেমুখে যেন একটা অপূর্ব শ্রী ও লাবণ্য টানা টানা দুটি চোখ, নাকটি একটু চাপা হলেও মুখখানিতে যেন লাবণ্য ঢলঢল করছে। পরনে সাধারণ একটা কম দামের তাঁতের রঙিন শাড়ি। একটাল চুল এলোখোঁপা করা। দুহাতে দুগাছা ক্ষয়ে যাওয়া সোনার রুলি ছাড়া কোন অলংকার নেই।

    আপনি পরেশবাবুর মেয়ে? শরদিন্দু শুধাল, কি নাম আপনার?

    আমার নাম দিয়ে আপনার কি হবে? মেয়েটি বললে।

    কতদূর লেখাপড়া করেছেন? আবার প্রশ্ন করল শরদিন্দু।

    কেন, চাকরি দেবেন? বি. এ. পাস করেছি কিন্তু আপনার এখানে তো বললেন, চাকরি খালি নেই।

    দেখুন আমি অনেক ভেবেচিন্তেই ডিসিশনটা নিয়েছি পরেশবাবুর ব্যাপারে। রিটায়ার তাকে করতেই হবে। আপনি কাল একবার পরেশবাবুকে এই সময় দেখা করতে বলবেন।

    ঠিক আছে। চলি নমস্কার।

    দাঁড়ান দাঁড়ান—আপনার নামটা তো বললেন না!

    মানসী। বলে মানসী ঘর থেকে বের হয়ে গেল।

    পরের দিন পরেশ নন্দী এলেন। বস্তুত মনের মধ্যে একটা ক্ষীণ আশা নিয়েই এসেছিলেন। পরেশ নন্দী।

    কোনরূপ ভণিতা না করেই শরদিন্দু বললে, কোম্পানি ডিসিশন নিয়েছে আপনাকে মাসে মাসে আড়াইশো টাকা করে পেনসন দেবে—তাতে করে আপনার সংসার চলবে না জানি কিন্তু তার বেশী কোম্পানির ক্ষমতা নেই।

    যা দিচ্ছেন দয়া করে আমতা আমতা করে পরেশ নন্দী বললেন।

    দয়া নয় ওটা আপনার প্রাপ্য। যে সার্ভিস গত সতেরো বছরে কোম্পানিকে আপনি দিয়েছেন, কোম্পানি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে সেটা স্মরণ করেই ঐ টাকাটা মাসে মাসে আপনাকে দেবে। কাল থেকেই আপনি রিটায়ার করবেন।

    আমি তাহলে উঠি সার!

    বসুন, আর একটা কথা আছে। শরদিন্দু বললে।

    পরেশ নন্দী উঠে দাঁড়িয়েছিলেন আবার বসলেন চেয়ারটায়।

    বলছিলাম কি, মেয়ের বিয়ে দিচ্ছেন না কেন?

    পরেশ নন্দী কথাটা যেন ঠিক বুঝতে পারলেন না। কেমন যেন বিব্রতভাবে শরদিন্দুর দিকে তাকালেন, আজ্ঞে।

    আমি বলছি আপনার মেয়ের কথা। মানসী আপনার মেয়ে, না?

    হ্যাঁ আমার বড় মেয়ে, পরেশ নন্দী একটু ইতস্তত করে বললেন।

    তার কথাই বলছি। শরদিন্দু বলল, মানসীর বিয়ে দিচ্ছেন না কেন?

    টাকা খরচ করে মেয়ের বিয়ে দেব সে সামর্থ্য আমার কোথায় স্যার? কেউ যে দয়া করে মেয়েটিকে আমার গ্রহণ করবে, তেমন পাত্ৰই বা কোথায় পাব?

    আমি যদি পাত্রের সন্ধান দিই দেবেন মেয়ের বিয়ে?

    কিন্তু স্যার–

    টাকাকড়ি কিছু লাগবে না। শুধু শাঁখা, সিঁদুর দিয়ে মেয়ে দেবেন। কি রাজী আছেন? শরদিন্দু বললে।

    তেমন পাত্র কি পাওয়া যাবে? পরেশ নন্দী বললেন।

    দেখুন পরেশবাবু, কথাটা তাহলে খুলেই বলি—আমি আজও বিয়ে করিনি জানেন তো, যদিও বয়স আমার উনচল্লিশ হল—আমি যদি আপনার ঐ মেয়েটিকে বিয়ে করতে চাই—দেবেন বিয়ে?

    বিমূঢ় পরেশ নন্দীর বাক্যস্ফুর্তি হয় না, ভুল শুনছেন না তো তিনি! না কি শরদিন্দু তাঁর সঙ্গে পরিহাস করছেন গরিব বলে।

    কি হল, কথা বলছেন না কেন?

    আজ্ঞে আমি–

    মনে হচ্ছে কথাটা আমার যেন আপনি বিশ্বাস করতে পারছেন না। শুনুন, জবাব এখনই আপনার কাছ থেকে আমি চাই না বাড়ি যান, আপনার স্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করুন, দু-চার দিন পরেও জবাবটা দিলে চলবে। আর হ্যাঁ, শুনুন, আপনার মেয়ের সঙ্গেও পরামর্শ করবেন। আর একটা কথা, কথাটা যেন কেউ না জানতে পারে।

    পরেশ নন্দীর চোখে জল এসে যায়। তিনি বললেন, না স্যার, নিশ্চিন্ত থাকুন, কেউ জানতে পারবে না। আ—আমি তাহলে এখন আসি স্যার!

    আসুন।

    পরেশ নন্দী ছেড়া তালিমারা ছাতাটা তুলে নিয়ে বের হয়ে গেলেন।

    পরের দিন দ্বিপ্রহরে শরদিন্দু তার অফিস কামরাতেই লাঞ্চ সেরে একটা আরামকেদারায় ঠেস দিয়ে পাইপ টানছেন, দরজার বাইরে নারীকণ্ঠস্বর শোনা গেল, ভেতরে আসতে পারি?

    কে? বিরক্তিতে শরদিন্দুর দুটো কুঞ্চিত হয়ে ওঠে। এ সময়টা তার অফিস কামরায়। কারও আসার কথা নয়—বেয়ারাকে স্ট্রি অর্ডার দেওয়া আছে।

    জবাব না নিয়ে মানসী এসে ঘরে ঢুকল, বলল, আমি মানসী!

    মানসীর পরনে আজও একটা সস্তা দামের শাড়ি, পায়ে চপ্পল।

    আপনি আমার বাবার কাছে যে কথা বলেছেন তা আমি শুনেছি—

    শুনেছ? তা দাঁড়িয়ে রইলে কেন মানসী, বোসো–শরদিন্দু বলল।

    না, বসতে আমি আসিনি, কেবল একটা কথা জিজ্ঞাসা করতে এসেছি—আপনি কি আমার গরিব বাপকে দয়া করছেন?

    দয়া! তুমি কি আমার সঙ্গে ঝগড়া করতে এসেছ মানসী?

    না। আমি জানতে এসেছি ওটা দয়া নয় তো কি!

    না, সত্যিই আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই।

    কিন্তু কেন, জানতে পারি কি? আপনি তো একদিন মাত্র কিছুক্ষণের জন্য আমাকে দেখেছেন, আমার সম্পর্কে কিছুই জানেন না। সেক্ষেত্রে হঠাৎ–

    তোমার সম্পর্কে কিছু জানার দরকার আছে বলে আমি মনে করি না।

    কিন্তু আমি মনে করি আমার সম্পর্কে আপনার জানার প্রয়োজন আছে।

    তা যদি বল তাহলে আমিও তো এতদিন ব্যাচিলর হয়ে আছি, আমার সম্পর্কেও তো তোমার জানা প্রয়োজন। শোন, প্রথম পরিচয়েই তোমাকে আমার ভাল লেগেছে, তাই–

    তাই বিয়ে করছেন আমাকে?

    অবিশ্যি তোমার যদি আপত্তি না থাকে, প্রায় চল্লিশ বছরের একজনকে—

    মানসী আর কোন কথা বলতে পারে না।

    মানসী, একটা কথা জিজ্ঞাসা করব?

    কি?

    তুমি কি কাউকে ভালোবাস?

    যদি বাসিই তাহলে নিশ্চয়ই বিবাহের ইচ্ছেটা আপনার আর থাকবে না?

    না না, তা কেন, আমি যখন একবার স্থির করেছি তোমায় বিবাহ করব, অবশ্য তোমার আপত্তি থাকলে আবারও বলছি, এ বিয়ে হবে না।

    মানসী আবার চুপ।

    মানসী, চুপ করে থেকো না। যা বলবার বল। কোন সংকোচ কোরো না।

    বাবার কাছে আপনি ব্যাপারটা বলেছেন, বাবার কাছ থেকেই জবাবটা পাবেন। নমস্কার— কথাগুলো বলে মানসী ঘর থেকে বের হয়ে গেল।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleঅবগুণ্ঠিতা – নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    Next Article সামনে সমুদ্র নীল – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    Related Articles

    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ১২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ৪ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ৫ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ৭ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    যুগলবন্দী – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    কিরীটী অমনিবাস ১২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    কিরীটী অমনিবাস ১২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    কিরীটী অমনিবাস ১২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ৪ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.