Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মানুষের ঘরবাড়ি – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়

    লেখক এক পাতা গল্প1047 Mins Read0

    মানুষের ঘরবাড়ি – ১

    এক

    এদেশে এসেই আমার বাবা খুব গরীব হয়ে গেলেন। হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছিলাম, দেশে থাকতে আমরা এতটা গরীব ছিলাম না। বাবা মা আমাদের ক’ভাই বোন সম্বল করে এদেশে পাড়ি জমালেন সত্য, কিন্তু থিতু হয়ে বসতে পারছিলেন না। এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় —কখনো কোনো প্ল্যাটফরমে অথবা ভাঙা মন্দিরে, পরিত্যক্ত কারো আবাসে থাকতে থাকতে কিছুটা যাযাবরের মতো জীবন বয়ে যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত একটা গভীর বনের ভেতর বাবা তাঁর সঠিক আস্তানা খুঁজে বের করলেন।

    আমাদের কাজ ছিল সকাল হলে জমির জঙ্গল কাটা, আগাছা সাফ করা। মানুষের নতুন ঘরবাড়ি যেমনটা হয়ে থাকে। অথবা সেই প্রাচীনকালের মতো, কোথাও জল এবং জমিতে উর্বরা শক্তি থাকলেই যেমন জনপদ গড়ে উঠত আমরাও তেমন একটা জনপদের আদি বাসিন্দার মতো জায়গাটাতে এসে উঠেছিলাম।

    দু’ বছর নানা জায়গায় ঘুরে ঘুরে শেষ পর্যন্ত এমন একটা জায়গায় এসে থিতু হয়ে বসার আশায় বাবা খুব খুশী। বাবা বলতেন, জমি খুবই উর্বরা। রাজরাজড়ার পতিত জমি, নানা রকমের জীবজন্তুর বাস, এই সবই বোধ হয় জমিটার উর্বরা শক্তির উৎস। জমি খুব উর্বরা বলতে বাবা বোধ হয় এ-সবই বোঝাতে চাইতেন। বাবা খুব খুশী থাকলে মাঝে মাঝে বলতেন, দু ক্রোশ হেঁটে গেলে শহর, আড়াই ক্রোশের মাথায় একটা কাপড়ের মিল, বড় মাঠ পার হয়ে গেলে পুলিস ব্যারাক, জলের অভাব নেই, খাবারের অভাবও হবে না।

    এত বড় বনটা কতদূর কোথায় গিয়ে শেষ হয়েছে কিছু বোঝার উপায় নেই। বনটার সামনে একটা বড় শস্যবিহীন মাঠ, তারপর দিঘির মতো কালো জল টলটল করছে, একটা পুকুর এবং আমবাগান ছাড়িয়ে ব্যারাক বাড়ি। হেস্টিংসের আমলের জীর্ণ প্রাসাদ-সংলগ্ন সব বেড়া দেওয়া প্ল্যাটফরমের মতো লম্বা খুপরি ঘর। জায়গাটা সম্পর্কে শেষ পর্যন্ত বাবার কতটা উৎসাহ থাকবে মা বুঝি টের পেত। সংশয় ছিল হয়তো আবার কোন নবর বাবার খবর পেয়ে বাবা উধাও হতে চাইবেন। জমিটার প্রশংসায় মা বেশি রা করত না। প্রায় সময় চুপচাপ শুনে যেত। কিছু বলত না। শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারলে হয়।

    হেস্টিংসের আমলের সেই পুরনো বাড়িটাতেই ছিল পুলিসের আরমারি। বিরাট গম্বুজয়ালা বাড়িটার সামনে মাঠ। সকালে বিউগিল বাজলে শ’দুই রিক্রুট ফলইনে দাঁড়াত। তারপর পিটি প্যরেড আরম্ভ হয়ে যেত। মাঠের ভিতর রেলগাড়ির মতো সব লম্বা খুপরি ঘর, আমবাগানের ভিতর সেই কুঠিবাড়ি, পুকুরের টলটলে জল আর মানুষজনের সাড়া শব্দে বনটাকে বাবার কাছে মানুষের আবাসযোগ্য মনে হয়েছিল হয়তো। বাবা এখানেই শেষবারের মতো থিতু হয়ে বসতে চাইলেন।

    বাবার কাছে পরে জেনেছি এই বনভূমির পশ্চিমে রয়েছে কারবালার মাঠ। পুবে ব্যারাকবাড়ি এবং বাদশাহী সড়ক, উত্তরে রাজরাজড়ার পুরনো শ্যাওলা ধরা প্রাসাদ। বাবা ঘুরে ঘুরে সব দেখে এসে খবর দিতেন। অথচ প্রথম দিন এখানে এসে বাবার কথায় মনে হয়েছিল আমাদের সবাইকে একটা গভীর বন দেখাতে নিয়ে এসেছেন। এই যে বনটা দেখছ, এখানে আছে সব বিষধর সর্প। বাবার অভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ কথাবার্তায় এলে সাধু ভাষার ব্যবহার। —বিষধর সর্প, একদা ব্যাঘ্র দেখা যেত। তরুলতা বলতে শাল, শিমুল। উত্তরে দক্ষিণে এর বিস্তার ক্রোশের ওপর। রাজরাজড়ার পতিত জমি বিনে পয়সায় বলতে গেলে মিলে গেল। উর্বরা জমিতে চাষাবাদ হলে তখন দেখবে এর চেহারা কত আলাদা।

    বনটা ঘুরে দেখার সৌভাগ্য এখনও আমার কিংবা পিলুর হয়নি। শুধু বাবা বলেছেন, বনের শেষে আছে রাজবাড়ি। পিলখানা আছে একটা। হাতি বাঁধা থাকে। একদিন তোমাদের হাতি দেখাতে নিয়ে যাব।

    দেশ ছেড়ে আসার পর এই নিয়ে বাবা চারবার জায়গা বদল করলেন। কিছুদিন এখানে বসবাস করতে করতে কি কখন মনে হবে বাবার, লোটা কম্বল গুটিয়ে ফের রওনা। তার আগেই রাজবাড়িটা দেখে আসতে হবে। অনেকদিন পর আবার হাতি দেখার এই মৌকা। বাবার মাথায় দুর্বুদ্ধি গজাবার আগেই আমি এবং পিলু কাজটা সেরে ফেলব ভেবেছি।

    আসলে আমাদের অন্নকষ্ট আরম্ভ হলেই বাবা এমন একটা পৃথিবী খুঁজে বেড়াতেন, যেখানে দুবেলা পেট পুরে আহার পাওয়া যায়—সদলবলে তার খোঁজে তখন শুধু রওনা হওয়া। খোঁজখবর করবেন, দেশের লোক কে কোথায় এসে উঠেছে, কি ভাবে বেঁচে আছে। এবং কুপরামর্শ দেবার লোকের অভাব ছিল না। সেই জায়গাটাতে যাবার আগে যা কিছু অসুবিধা ঘটাত আমার মা। মাকে সহজে তিনি বাগে আনতে পারতেন না। মা বলত, এখানেই কোথাও কিছু জোটাতে পার কিনা দ্যাখো। ঘুরে ঘুরে আর পারছি না।

    বাবার বিদ্যা বলতে যজনযাজন। এবং বাবা দেশ ছেড়ে আসার আগে জমিদার বাড়িতে আমলার কাজ করতেন। পুজো-আর্চা করতেন। এখানে এসে তেমন একটা উপযুক্ত কাজের সন্ধানেই আছেন। যদি কোথাও পাওয়া যায়। একবার খবর এল গুপ্তিপাড়াতে সব বনেদী মানুষের বাস। সেখানে গেলে এমন একজন সৎ ব্রাহ্মণের কিছু একটা হয়ে যাবেই। গুপ্তিপাড়াতে আমরা একটা ভাঙা মন্দিরের নিচে আশ্রয় নিয়েছিলাম। বাবা খুব সাত্ত্বিক ব্রাহ্মণের মতো চলাফেরা করলেন কিছুদিন। ঘাটে স্নানের সময় শব্দই ব্রহ্ম—এমন জোরে জোরে স্তোত্র পাঠ করতেন যে মাঝে মাঝে মনে হত প্ল্যাটফরমে রেলগাড়ি পর্যন্ত থমকে দাঁড়িয়েছে। আর নড়তে পারছে না।

    বাবার বোধ হয় আশা ছিল, ঠিক খবর পৌঁছে যাবে ঘরে ঘরে—লাইনবন্দি হয়ে আসবে মানুষজন। যাবতীয় পূজা পার্বণে ডাক পড়বে মানুষটার। এমনই বোধহয় সব মনে হত তাঁর। অথচ গাড়ি যায় ট্রেন আসে। বাবুদের সব কাজ কাম হয়ে যায়, ভাঙা মন্দিরে সাপখোপের উপদ্রব বাড়ে। বাবা তারপর রেগে মেগে কোথায় চলে যান। আহার আমাদের কমে আসে। মন্দিরের চাতালে আমরা উপোসী মানুষ, কখন বাবা আসবে এবং না বলে না কয়ে তিনি কোথায় যে চলে যেতেন! তারপর একদিন ফিরে এসেই যেন একেবারে সদরে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখেছেন—ওঠো ওঠো। সব ম্লেচ্ছর বাস! মানুষ এখানে থাকে না। গলসীতে নবর বাবা আছে। সে তোমাদের নিয়ে যেতে বলেছে। গোপালদির বাবুরা ওখানে বিরাট খামার করেছে। নবর বাবা চালের আড়ত করেছে বর্ধমান শহরে। না খেয়ে আর মরতে হবে না। স্টেশনে নবর বাবার সঙ্গে ভাগ্যিস দেখা হয়ে গেল।

    বাবার কথাবার্তা শুনে মনে হত চালের আড়তটা আসলে নবর বাবার নয়, আমার বাবার। আর অন্নকষ্ট থাকবে না। কেবল খাও আর খাও। সারাদিন—অহ সে কি স্বপ্ন! যখন তখন খেতে বসে যাব। বাবা কত সহজে সব কিছু নিজের বলে ভাবতে পারতেন। বলতেন, এত বড় আড়ত নবর বাবার—চার পাঁচটা পেটের সংস্থান হবে না সে কি হয়। রওনা হবার আগে ধুমধাড়াক্কা লেগে যেত। এটা নাও ওটা নাও। কিছু পড়ে থাকল না তো। স্নান আহার করার সবুর সইত না বাবার। রওনা হতে পারলেই হল।

    পিলু আর আমার তখন কাজ ছিল স্টেশনে বসে দুর্লভ হাঁড়ি পাতিল, ভাঙা বাক্স, ছেঁড়া শীতলপাটি পাহারা দেওয়া। চারপাশের মানুষজনদের মনে হত চোর বাটপাড়। কে কি ভাবে ঠকিয়ে শীতলপাটি কিংবা ভাঙা বাক্সটা মাথায় করে ভাগবে কে জানে।

    আর ট্রেনে সেই পকেটমার হইতে সাবধান—এমন সব বাক্য জোরে জোরে পড়তে আমাদের ভাল লাগত। আর তখন এই গাড়িতে কে পকেটমার নয় সেটা ঠিক করাই ছিল বড় দুরূহ কাজ। মনে হত সবাই পকেটমার। গাড়িতে সবাই সবাইকে বুঝি পকেটমার ভাবছে। আমাদের যা চেহারা এবং যা অবস্থা সহজেই সবাই পকেটমার ভেবে ফেলতে পারে। গাড়িতে উঠে ভয়ে আমরা দুই ভাই কাঁচুমাচু হয়ে বসে থাকতাম। কারণ আমার আর পিলুর যা পোশাক-আশাক ওতে অন্তত চোর বাটপাড় না ভাবুক, চোর বাটপাড়ের আণ্ডা বাচ্চা ভাবতে পারে।

    মা’র মুখ তখন আরও করুণ। একে বিনা টিকিটের যাত্রী—তার ওপর ট্রেনের গায়ে ও-সব লেখা, মা বোধ হয় ভয়ে কেঁদেই ফেলবে। এত ভয় যে বাংকে না বসে নিচে বসে পড়েছে। বিনা টিকিটের যাত্রী—কখন কোথায় নামিয়ে দেবে—তার চেয়ে নিচে বসে থাকলে কেউ কিছু বলবে না। নিচে তো আর কেউ বসে না। কারো জায়গা দখল করেও মা বসে নেই। কিছুতেই কারো কোনো অসুবিধা হোক মা চাইত না। আমরাও পাশে গোল হয়ে লটবহরের মতো গাদা মেরে পড়ে থাকতাম। বাবার অবস্থা একেবারে অন্যরকমের। যেন সংকীর্তনের দল নিয়ে বের হয়েছেন। গাঁয়ে গঞ্জে ঈশ্বরের নাম দেবে তার আবার ভাড়া কি! এবং সহজেই এত ভাল মানুষ হয়ে যেতেন তখন যে আমার মা পর্যন্ত তাজ্জব বনে যেত।

    আর আমার বাবা তখন এক দণ্ড স্থির হয়ে বসে থাকতে পারতেন না। কামরার জানলায় মুখ বাড়িয়ে কখনও কি দেখতেন। কখনও দরজায়। কোনো স্টেশনে প্ল্যাটফরমে নেমে ঘোরাঘুরি করতেন। যেন বাবার জমিদারি ওটা। কার কি বলার আছে। আর চেকারবাবুকে দেখলেই মুখটা ভয়ে সাদা হয়ে যেত। কিন্তু কাছে এলে একেবারে তিনি দু পাটি দাঁত বের করে হেসে ফেলতেন। বাবার হাসি দেখলেই বোধ হয় টের পেত নির্ঘাত রিফিউজি।

    বাবা তখন সব সামলেসুমলে একেবারে অন্তরঙ্গ মানুষের মতো কথা-বার্তা আরম্ভ করে দিয়েছেন চেকারবাবুর সঙ্গে। যত বাবাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করছে তত বাবা মনে যেন বেশি জোর পাচ্ছে। এবং সব সময় একটা লোককে স্যার স্যার করলে যা হয়, একসময় চেকারবাবুটি যথার্থই সহৃদয় হয়ে উঠতেন। আর যেই না সামান্য সহৃদয় হয়ে ওঠা, বাবার সেই প্রথম আপ্তবাক্যটি মুখ ফসকে বের হয়ে আসত-স্যার আপনার দেশ ছিল কোথায়?

    বাবার সাহস দেখে চেকারবাবুটি তার কাজকর্মের কথা ভুলে যেত। বোধ হয় বিরক্তও হতো। আচ্ছা ফিচেল লোক তো। তোমার কি এত দরকার আমার দেশ বাড়ির খবরে।

    আমরা নানা জায়গায় বাবার সঙ্গে ঘুরে ঘুরে এই আপ্তবাক্যটির মূল ভাবার্থ ততদিনে আবিষ্কার করে ফেলেছি। ঢাকা জেলার মানুষ আমরা। এতটা সগৌরবের জেলা বাংলাদেশে আর যেন একটা ও নেই। বাবার অহংকার ঢাকা জেলার লোক দেশবন্ধু, ঢাকা জেলার লোক বিজ্ঞানী জগদীশ বসু। আর সেই জেলার লোক বাবার ডাকসাইটে জমিদার দীনেশবাবু। এই তিন ব্যক্তি বাবাকে তাঁর জেলা সম্পর্কে আমাদের এই দুঃসময়ে খুব অহংকারী করে রাখে মাঝে মাঝে। চেকারবাবুটাবুর সঙ্গে দেখা হলেই সেটা তাঁর যেন আরও বেশি করে মনে হয়।

    বাবার বুঝি খুব ইচ্ছে হত, চেকারবাবু যদি ঢাকা জেলার লোক হন। ঢাকা জেলার লোক হলেই নিশ্চিন্ত। একই জেলার মানুষ, সুতরাং ভাই ব্রেদারের মতো। এবং সেই প্রথম আপ্তবাক্যটির পর বাবা আর কি বলবেন, তাও জানা থাকত। ঢাকা জেলার লোক হলেই বাবার পরের আপ্তবাক্যটি হচ্ছে, দীনেশবাবুকে চেনেন?

    চেকারবাবু যদি জবাব না দিত তাতেও তাঁর কিছু আসত যেত না। ঠিক বাবা পরের তিন নম্বর আপ্তবাক্যটি উচ্চারণ করতেন, কি দেশ ছিল বলুন। কত বড় পাপ করলে সে দেশ ছেড়ে মানুষকে আসতে হয়। আমাদের আর কি থাকল। চেকারবাবুটি হয়তো তাঁর একটা কথাও শুনছে না। কিন্তু বাবার কথার কামাই নেই। চার নম্বর আপ্তবাক্যটি আবার বের হয়ে আসত। —দীনেশবাবুকে চেনেন না! ঢাকা জেলার লোক হয়ে তার নাম শোনেন নি। আমার তখন মনে হত, দীনেশবাবু হচ্ছে বাবার দেখা পৃথিবীতে সব চেয়ে সেরা মানুষ। সে মানুষটার নাম জানে না ঢাকা জেলাবাসী চেকারবাবু— কি তাজ্জব! লোকটা আসলে তখন ঢাকা জেলার কিনা বাবার সংশয় হত। তাঁর পাঁচ নম্বর আপ্ত বাক্যটি আর মুখ ফসকে বের হয়ে আসত না। কেমন দমে যেতেন একেবারে। মুড়াপাড়া কত বড় গ্রাম—শীতলক্ষার পারে দীনেশবাবুর সেই প্রাসাদের মতো বাড়ি, দীনেশবাবুর নুন খায় নি ঢাকা জেলার মানুষ বাবার বিশ্বাস করতে কষ্ট হত। আর কি বৈভব। পূজাপার্বণে দোল-দুর্গোৎসবে তিনি ছিলেন সে বাড়ির প্রাণ। দীনেশবাবু এমন মানুষ, যাঁর পরিচয়ে তাঁদেরও পরিচয় মিলে যাবে। এবং বাবার মুখ দেখলেই আমরা টের পেতাম, তাঁর ছ নম্বর এবং শেষ আপ্তবাক্যটি এবারে বের হয়ে এল বলে, আমাদের এমন দিন ছিল না মশাই, যা দেখছেন বুঝছেন আমরা তা নই।

    তখনই আমার মা নড়েচড়ে বসত। বাবার এই অসহায় উক্তি এতবার মা শুনেছে যে আর সহ্য করতে পারত না। বাবার এই দীন হীন উক্তি মাকে ভীষণ ক্ষুব্ধ করে তুলত। এবং তখনই মনে হত বাবার ডাক পড়বে এবার। – দ্যাখ তো বিলু লোকটার সঙ্গে তোদের সেনাপতি কি এত ব্যার্জর ব্যাজর করছে।

    আমি উঠে গিয়ে বলতাম, বাবা, তোমাকে ডাকছে।

    কে ডাকছে, কেন ডাকছে বাবার সব জানা। বলতেন, যাচ্ছি যাচ্ছি। কিন্তু যতই তিনি চড়া গলায় কথা বলুন না কেন, তাঁর আর এক দণ্ড দেরি করার সাহস থাকত না। পৃথিবীতে এখন একমাত্র যাকে সমীহ করার সে হচ্ছে আমার মা। পাশে চলে এসে বলতেন, ডাকছ কেন

    —কি অত ব্যাজর ব্যাজর করছ।

    বাবার রক্ত বোধ হয় গরম হয়ে যেত। এবং সেই এক কথা—আরে রণ-সাজে আছি! এখন কে কোথায় কি করে বসবে তার আমরা কতটুকু জানি। সবাইকে খুশী না রাখলে চলে!

    রণ-সাজে কথাটা বাবা খুব ইদানীং ব্যবহার করছেন। আর মাও বাবাকে সেই সুবাদে সেনাপতি আখ্যা দিয়েছে। এখন আর মা তোদের বাবা না বলে, বলে, তোদের সেনাপতি কোথায় গেল রে। বাবা আবার লাফিয়ে কামরার দরজায় ছুটে গেলে মা বলত, দ্যাখ তোদের সেনাপতি কার সঙ্গে আবার পরামর্শ করতে গেল।

    আমরা বুঝতে পারি মার ভয়টা কোথায়। এমন একটা যুদ্ধের ফ্রন্টে বাবা বোধ হয় তাঁর স্ট্র্যাটেজি ঠিক করতে পারছেন না। মার ভয় সেই চেকারবাবুটির সঙ্গে পরামর্শ করে হয়তো স্টেশনেই নেমে পড়বেন। নেমে পড়বেন না নামিয়ে দেবে কে জানে। কোনো কিছু ঠিকঠাক নেই—কি যে হবে! কিছু বললেই রেগেমেগে বলবেন, যুদ্ধক্ষেত্রে রণ-সাজে আছি। কখন কি হবে কিছু বলা যাবে না।

    মার তখন আর কোনো উপায় থাকে না।—মতিভ্রংশ হয়েছে তোমার। মা খুব বেশি গালাগাল দিলে বাবাকে এমন সব নিষ্ঠুর কথা বলত।

    মা কোনো উপায় না দেখে বলল, যা তো, কি বলছে শোন।

    খুব সন্তর্পণে দরজার কাছে এগিয়ে গেলাম। ট্রেন তেমনি দ্রুত আমাদের নিয়ে কোথাও যাচ্ছে। কাছে যেতেই বাবা বললেন, তোর মাকে বল সামনের স্টেশনে নামব। মার কাছে ফিরতে না ফিরতেই দেখলাম বাবাও ফিরে এসেছেন। সেই আমাদের হাঁড়ি পাতিল, শেতলপাটি, একটা পেতলের কলসি, বালতি দুটো এবং জীবনধারণের যা কিছু প্রয়োজন—কারণ আমাদের সঙ্গে এমন সব মহামুল্য সামগ্রী রয়েছে যে একটা ফেলে গেলে প্রচণ্ড সর্বনাশ হবে। বাবা গুনতে থাকলেন, আমি গুনে দেখলাম। পিলু টেনে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। সব ঠিক নিয়েছে কিনা মা একবার গুনে দেখল—একটা শেষ পর্যন্ত কম পড়ে যাচ্ছে—কি গেল, খোঁজ খোঁজ—যা চোর বাটপাড়ের দেশ, কোনটা কে নিয়ে যাবে— খুঁজে পাওয়া গেল, একটা ছেঁড়া চটের বস্তা। বাবা মহাখুশী কিছুই খোয়া যায়নি দেখে। তাঁর ছেলেরা যে ভীষণ উপযুক্ত হয়ে উঠেছে ভেবে হয়তো গানই ধরে দিতেন—কিন্তু স্টেশনে ট্রেন তখন থেমে গেছে। বাবার আর গান গাওয়া হল না। হাঁকডাক শুরু করে দিলেন। যেন স্টেশনে নেমেই দেখতে পাবেন, নবর বাবা দাঁড়িয়ে আছে। বাবাকে মহামান্য মানুষের মতো স্টেশনে নিতে এসেছে নবর বাবা।

    কেউ স্টেশনে ছিল না। বাবা স্টেশনে নেমেই খোঁজাখুঁজি করলেন। কোথায় নবর বাবা, কোথায় সেই গোপালদি বাবুদের খামার! যাত্রীরা চলে গেলে শুধু ফাঁকা প্ল্যাটফরম পড়ে থাকল। অথচ এমন একটা অচেনা নির্বান্ধব জায়গায় বাবা এতটুকু ঘাবড়ে গেলেন না। সন্ধ্যা হয়ে আসছিল, কোথায় আর অন্ধকারে খোঁজাখুঁজি হবে। স্টেশনেই থাকার মতো ব্যবস্থা হয়ে গেল। স্টেশনের কল থেকে জল নিয়ে এলেন বাবা। প্ল্যাটফরমের একপাশে ছোট মতো একটা সেডও আবিষ্কার করা গেল। সেডটা পাওয়ায় জায়গাটা ভালই মনে হচ্ছে। নবর বাবা কোথায় থাকে, নবর বাবা এবং তার ঊর্ধ্বতন পিতৃপুরুষের পরিচয় দিয়ে দু-একজনের কাছে খোঁজ খবরও নিলেন। সবাই বাবার কথাবার্তা শুনে গা ঢাকা দেওয়াই শ্রেয় মনে করল। কেউ আর দাঁড়ায় না। বাবার কথা শুনলেই পালায়। অন্ধকারে অদৃশ্য জনতার দিকে তখন বাবা হাঁ করে তাকিয়ে থাকেন। গোপালদির বাবুরা আছেন এখানে, কোনদিকটায়—তারও খোঁজখবর পাওয়া গেল না কিছু। বাবা কি বুঝে আর আমাদের কাছে আসতেও সাহস পাচ্ছিলেন না। ঠায় হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেই মার বোধ হয় মায়া হল। বলল, ডেকে আন।

    ফিরে এসে খুব নম্র গলায় বাবা বললেন, ধনবৌ, আজকের মতো এখানেই রাত কাটাতে হবে দেখছি।

    মার কোনো যেন এতে আর আপত্তি নেই। অথবা মার চোখমুখ দেখে বোঝা গেছিল, বিপত্তি বাড়বে বই কমবে না। শুধু বলল, শ্রীশ পাল এখানে কোথায় থাকে না জেনেই চলে এলে।

    —সেই তো বর্ধমান স্টেশনে দেখা। সব বললাম। শুনে বলল, আমাদের দিকে চলে আসুন, বামুনের অভাবে পুজো পার্বণ সব ভুলে যাচ্ছি।

    পিলু ইতিমধ্যে কিছু খড়কুটো সংগ্রহ করে ফেলেছে, ওর খাবার ঠিক না থাকলে মাথা গরম হয়ে যায়। বাবার ওপর ভরসা করে থাকতে সে বোধ হয় আর রাজী নয়। সে আর মায়া কিছু শুকনো প্যাকিং বাক্সের কাঠও নিয়ে এসেছে। মা তাড়াতাড়ি কাঠগুলো লুকিয়ে ফেলল। শিতলপাটি দিয়ে সেই কাঠগুলো ঢেকে রাখা হল। আর প্ল্যাটফরম পার হলে বর্ষার জল, নালা ডোবা। ডোবা থেকে পিলু অন্ধকারেই কিছু কলমি শাক তুলে এনেছে। মা সবই সযত্নে রেখে দিল। কুপি জ্বালানো হল।

    বাবা ফের স্টেশনমাস্টারের কাছে হাজির হয়ে আদ্যোপান্ত খুলে বলছেন। শুনতে চায় না তবু বাবা বার বার বোঝাচ্ছিলেন, শ্রীশ পাল আমাকে কি বিপদে ফেললে বলুন তো। এখন এই ছেলেপুলে নিয়ে কোথায় উঠি!

    ফিরে এসে বাবা খুব মিনমিনে গলায় বললেন, বুঝলে ধনবৌ, একটা চিঠি দিয়ে এলে ভাল হত। ও জানবে কি করে আমরা এসে বসে আছি। আমাকে তিনি বললেন, মার যা লাগে এনে টেনে দিস। আমি একটু খোঁজাখুঁজি করে দেখি কে কোথায় আছে।

    মা বলল, কোথাও যেতে হবে না। সকালে দেখা যাবে।

    আমিও বললাম, সকালেই দেখা যাবে বাবা।

    মা কোলের ভাইটাকে ঘুম পাড়াচ্ছিল। খুব জোরে কথা বলতে পারছে না। পারলে যেন বলত, পুনু ঘুমচ্ছে। ওকে আর জাগিয়ে দিও না। জেগে গেলেই খেতে চাইবে।

    —সকালে কি আর সময় পাব। যেন কত কাজের মানুষ বাবা। আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, দ্যাখ বাবা কোথাও গোটা তিন চার ইঁট পাস কিনা। কিছু তো খেতে হবে।

    মেটে হাঁড়িতে চাল আছে এখনও কিছুটা। চাল থাকলে মার অন্য দুঃখ বড় একটা বেশি থাকত না। চাল ফুটিয়ে দেওয়া যাবে। ঠিক ভাত না। ফ্যানা ভাতও নয়। সবটাই জল, কিছুটা চাল। জাউ। খুবই পাতলা। এনামেলের থালায় ঢেলে পাখার হাওয়া। আমাদের খিদে এত প্রবল থাকে যে ভাঙা পাখার শনশন শব্দ একদম সহ্য হয় না। দেরি হয়ে যাচ্ছে। যত গরমই হোক মুখে দিয়ে হাঁ করে বসে থাকা। আর প্রবল শ্বাসে তাকে ঠাণ্ডা করে নেওয়া। মুখের বাতাসে ঠাণ্ডা হয়ে যায়। পেটে গেলে আরও ঠাণ্ডা। বাবা আমাদের খাওয়া দেখতে দেখতে বলতেন, তোরা বড় হা-ভাতে। এমনভাবে খাস যেন জীবনেও ভাত খাস নি। আস্তে খা। গাল, গলা পুড়ে গেলে ডাক্তার পাব কোথায়। সময় যা যাচ্ছে।

    প্ল্যাটফরম পার হয়ে যাবার সময় কাউন্টারে দেখলাম স্টেশনমাস্টার মশাই টেবিলে ঝুঁকে কি লিখছেন। একবার অফিসঘরটার পাশে দাঁড়ালাম। দরজা খোলা। দু-তিনজন বাবু মতো মানুষ বসে গল্প করছে। টরে টক্কা শব্দ হচ্ছে। কেমন একটা আশ্চর্য স্বপ্নের মতো পৃথিবী। আমি বড় হয়ে স্টেশনমাস্টার হব ভাবলাম। এবং এটা প্রায়ই দেখেছি, যখন কোনো মানুষ বাবাকে ধমকে কথা বলত, অথবা বাবা যাদের সমীহ করে কথা বলতেন তাদের ওপরয়ালা হবার মনে মনে বাসনা জাগত। তখন বাইরে অন্ধকার মতো একটা রাস্তায় বাবা কার সঙ্গে কথা বলছেন। কাছে যেতেই বললেন, সাবধানে থাকিস। আমি একটু ঘুরে আসছি। রাতে আর সত্যি বাবা ফিরলেন না। আমাদের বাবা মাঝে মাঝে এভাবে হারিয়ে যেতেন। কলমি শাক সেদ্ধ আর জাউ ভাত খেয়ে মনটা বেশ প্রসন্ন হয়ে উঠেছিল। অথচ বাবা নেই। মনটা ভার হয়ে গেল। অবশ্য জানি বাবা আবার ঠিক এক সময়ে ফিরে আসবেন। এ ক’দিন কিভাবে যাবে আমরা জানি না। মাও জানে না। আমাদের কথা মনে হলে, মার কথা মনে হলে, বাবা কোথাও গিয়ে বেশিদিন থাকতে পারেন না।

    অনেক রাত এ-ভাবে তখন পরিত্যক্ত আবাসে অথবা প্ল্যান্টফরমে আমাদের কেটে গেছে। আমি, পিলু, মায়া কখনো চুপচাপ প্ল্যাটফরমে বসে থাকতাম। ঘুরতাম। কখনো আকাশে জ্যোৎস্না থাকত, কখনো অন্ধকার। কিছু কুকুর বেড়াল ছিল তখন আমাদের সঙ্গী। ওরাও আমাদের সঙ্গে পায়ে পায়ে ঘুরত। বাবা আমাদের কোথায়, কতদূরে—বাবার জন্য আমাদের ভারি কষ্ট হত তখন। আমরা তবু কিছু খেয়েছি, বাবা কিছু না খেয়েই কোথায় চলে গেলেন। একটা মাল গাড়ি টং লিং টং লিং ঘণ্টা বাজিয়ে চলে আসত। অন্ধকারে কোনো দূরবর্তী ছায়া এগিয়ে আসতে থাকলে মনে হত বাবা বুঝি ফিরছেন। সবার আগে ছুটে যেত পিলু। পেছনে আমি। সবার শেষে মায়া। কিন্তু সে অন্য মানুষ। মাঠের অন্ধকারে মেঘলা আকাশের নিচে আমরা বাবার জন্য এভাবে অপেক্ষা করতাম। বাবা বুঝি ফিরছেন। মাথায় হাতে বাবার রকমারি পোঁটলা-পুঁটলি। ভেতরে পূজা-পার্বণের চাল-ডাল। মা’র জন্য লাল পেড়ে শাড়ি। হাত দিলে বলবেন, ওটা তোমার মা’র। ধরো না।

    এতবড় পৃথিবীতে আমাদের বাবা বাদে আর কিছু নেই। মানুষের ঘরবাড়ি থাকে আমাদের তাও নেই। চুপচাপ থাকলে মায়া বলত, দাদা দ্যাখ, দূরে কেমন একটা নীল বাতি জ্বলছে। সিগন্যালের লাল বাতিটা গাড়ি আসবে বলে নীল হয়ে গেছে। সাইডিং-এ মালগাড়ি সান্টিং হচ্ছে। ইচ্ছে হত এঞ্জিনের ড্রাইভারের পাশে গিয়ে বসে থাকি। সে আমাকে দূরে কোথাও নিয়ে যাক। আমি তো বড় হয়ে যাচ্ছি। ইচ্ছে করলে আমি নিজেও কিছু একটা করতে পারি।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleঈশ্বরের বাগান – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়
    Next Article নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়

    Related Articles

    তসলিমা নাসরিন

    সেইসব অন্ধকার – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    আমার প্রতিবাদের ভাষা – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    অগ্রন্থিত লেখার সংকলন – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    বন্দিনী – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    নির্বাসন – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    নেই, কিছু নেই – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Our Picks

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }