Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মানুষের ঘরবাড়ি – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়

    লেখক এক পাতা গল্প1047 Mins Read0

    মানুষের ঘরবাড়ি – ৭

    সাত

    সকালে উঠেই দেখি মা’র মুখ ভার। বাবার ওপর অভিমানে মা কারো সঙ্গে একটা কথা বলছে না। পিলু কোথায় গেল, দুপুর হয়ে গেল, এখনও ফিরে আসছে না— অন্য সময়ে মা স্থির থাকতে পারতো না। অথচ আজ সব জ্বলে পুড়ে যাক, কি হবে ঘরবাড়ি দিয়ে—যেমন বাবা, তার ছেলে আর ভাল হবে কোত্থেকে, একটা চিঠি দিয়েও তো জানাতে পারে, তা না। যেন আমরা সব ভেসে এসেছি। এ-সব থেকেই বোঝা গেল মা’র মন-মেজাজ খুব খারাপ। আর মন-মেজাজ খারাপ হলেই আমাদের কপালে দুর্ভোগ বাড়ে। খুব ভয়ে ভয়ে আছি। কার পিঠে কখন কি পড়বে কিছুই বলা যাচ্ছে না। মা’র কাছেপিঠে থাকা আজ আর খুব নিরাপদ নয়।

    তখনই রাস্তায় একটা লোক সাইকেল থেকে নেমে ক্রিং ক্রিং করে বেল বাজাচ্ছে। ডাকছে আমাকে- এই ছেলে, এটা অমুকের বাড়ি? আমি দৌড়ে চলে গেলাম। পোস্টাফিসের লোক। গায়ের জামা প্যান্ট সাইকেলে থলে দেখেই বুঝে ফেলেছি। লোকটাকে বললাম, হ্যাঁ।

    —সুপ্রভা দেবী বলে কেউ আছেন? মনি অর্ডার আছে।

    মাকে দৌড়ে গিয়ে বললাম, মা তোমার নামে মনি অর্ডার এসেছে। মা তো খুব হতবাক হয়ে গেল। বলল, সত্যি!

    লোকটা তখন সাইকেলটা গাছে হেলান দিয়ে বাড়ির ভিতর ঢুকে গেল। মায়া তাড়াতাড়ি আসন পেতে দিল একটা। লোকটা বসেই বলল, এক গ্লাস জল দিন আগে খাই। এখানে বাড়িঘর হয়েছে কি করে জানব বলুন। তিনি-চার দিন ব্যারাকে ঘুরে গেছি, ও নামে কোথায় এখানে কে আছে কেউ বলতে পারে না। ভাগ্যিস একটা চিঠি এসেছে আজ। এবং চিঠিটার ওপর ঠিকানা লেখা, পরম কল্যাণীয়া সুপ্রভা দেবী, গ্রাম নিমতলা। তারপর লিখেছেন, পুলিস ব্যারাকের অদূরে দক্ষিণমুখী বাড়ি। পোঃ কাশিমবাজার। চিঠিটা না এলে আপনাদের মনিঅর্ডার ফিরে যেত।

    মা একটা কথাও বলছে না। সামনে একটা প্রস্তরমূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছে। এত বড় সুখ কপালে কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না। মনি অর্ডারে টাকা আসবে, মা স্বপ্নেও ভাবেনি। চিঠি আসবে সেটাও যেন বিশ্বাস করা যায় না। মাসাধিক হয়ে গেছে বাড়ি ছেড়ে গেছেন বাবা—টাকাই বা পাবেন কোথায়! পিয়ন দেখিয়ে দিল, এখানে টিপ দিন। মা হয়ত টিপই দিত, কিন্তু আমি মনে করিয়ে দিলাম, এখানে তুমি মা সই কর। মার হস্তাক্ষর ভারি সুন্দর। এবং মা যখন সই করল, পিয়নটাও হতবাক হয়ে গেল। কেমন নিজের মানুষের মত বলল, দেশ ভাগে কত মানুষের যে কপাল পুড়েছে।

    আমার আর সহ্য হচ্ছিল না। বললাম, চিঠিটা দিন।

    —দিচ্ছি দিচ্ছি। আগে টাকা ক’টা গুনে নাও। তুমি এখানটায় আর একটা সই করে দাও। দেখ চল্লিশ টাকা আছে। সবই এক টাকার নোট। গুনে বললাম, ঠিক আছে। তারপর সেই লোকটা দেবদূতের মতো একটা নীল খাম বের করে দিল। কল্যাণীয়া সুপ্রভা দেবী। মা’র চিঠি। তাকিয়ে দেখলাম, মা’র চোখ জলে ভরে গেছে। মা-টাকা ক’টার দিকে ফিরেও তাকাল না। চিঠিটা নিয়ে কোথায় মুহূর্তে উধাও হয়ে গেল।

    পিলু ফিরে এল, বেশ বেলা করে। কদিন থেকে শীত পড়েছে খুব। সকালে অন্য সব দিনে খড়কুটো সংগ্রহ করে পিলু আগুন দেয়। আমরা তখন আগুনের পাশে গোল হয়ে বসি। রোদ না উঠলে, শীত না কমলে কেউ নড়ি না। মা কাজের ফাঁকে মাঝে মাঝে হাত সেঁকে নেয়। ঠাণ্ডা জলে মা’র হাত তখন সাদা দেখায়। মনে হয় কেমন রক্তশূন্য হাত। সকালবেলায় এত কি কাজ, একটু বেলা হলে সহজেই কাজ করা যায়—কিন্তু রোদ না উঠতে সব বাসি থালাবাসন ধুয়ে রাখা, গোবরছড়া, ঘরের দাওয়া লেপে দেওয়া মা’র বড় জরুরী কাজ। মানুষের ঘরবাড়ি হলে যে যে স্বভাব—মা’রও তাই। পিলু সকালেই বের হয়ে গেছিল বলে আগুন জ্বালানো হয়নি। অন্য দিনের মতো আগুনের উত্তাপে আর আজ আমাদের ঘুম ভাঙেনি। যখন ভাঙল, তখন দেখলাম বেশ বেলা হয়ে গেছে। গাছের মাথায় শীতের রোদ চিকচিক করছে। তারপর কত সুখবর সংসারে — ডাকপিয়ন এসেছিল — বাবার চিঠি এসেছে, টাকা এসেছে। পিলু তখন জঙ্গলে টো টো করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পিলু কিছুই জানে না। সেই পিলু শীতের চাদর গায়ে যখন ফিরল তখন মনে হল বগলের নিচে কিছু একটা কুঁই কুঁই করছে। কি কোথা থেকে ধরে এনেছে কে জানে।

    বললাম, জানিস পিলু, ডাকপিয়ন এসেছিল। মা’র নামে মনিঅর্ডার, নীল খামে চিঠি।

    সে কানেই তুলল না কথাটা। খুব সতর্ক চোখে রাস্তার দিকে কি দেখছে। আমি বললাম, তোর চাদরের নিচে কুঁই কুঁই করছে কে রে? সে খুব ভারিক্কি চালে ঘরে ঢুকে গেল। পিছু পিছু আমরা গেলে দেখলাম, একটা ককুরছানা সে বগলের নিচ থেকে বের করছে। আশ্চর্য কি নরম তুলোর বলের মতো একটা কুকুরছানা পিলু কোত্থেকে নিয়ে এসেছে।

    ভয়ে বাচ্চাটা লেজ গুটিয়ে আছে। এক ফাঁকে পালাতেও চাইছিল কিন্তু পিলু খপ করে ফের ধরে ফেললে—ত্রাহি চিৎকার শুরু করে দিল তুলোর বলটা। মা এসে দেখে তাজ্জব। বলল, হ্যাঁরে তুই এটা আবার কোত্থেকে নিয়ে এলি! দুধের বাচ্চা বাঁচবে কেন? সারাটা সকাল টোটো করে ঘুরে বেড়ালি। একটু পড়াশোনা করলি না। তোরা আর আমার হাড়মাস কত পুড়িয়ে খাবি।

    কারো কোনো কটু কথায় পিলুর যেন এখন কিছুই আসে যায় না। সে খুব সন্তর্পণে চারপাশে কিছু খুঁজছে। আর যেন কান খাড়া করে রেখেছে। মায়া কুকুরের ছানাটাকে কোলে তুলে নিতে গেলে এক ধমক— রাখ বলছি। ঘাঁটবি না। সে বোধহয় কোথাও থেকে বাচ্চাটা চুরি করে এনেছে। সে তাড়াতাড়ি বাচ্চাটাকে নিয়ে ঘরের পেছনে চলে গেল। এবং রাস্তা থেকে দূরে আড়াল মতো জায়গায় লুকিয়ে রাখার সময় বলল, দড়িটড়ি আন তো।

    আমি বললাম, ছেড়ে দে না। ওটুকু বাচ্চা কোথাও আর পালাতে পারবে না।

    —ছেড়ে দিলেই চলে যাবে। ওর মা-টা ভীষণ পাজি। আমার পেছন পেছন এসেছিল। ঢিল ছুঁড়তেই কোথায় পালাল। ও মা, বাড়ির কাছে এসে দেখছি, আবার মা-টা পেছনে।

    —কোত্থেকে আনলি?

    —বাগদীপাড়া থেকে।

    —ওর মা-টা কোথায়?

    —ঠ্যাঙানি খেয়ে পালিয়েছে। তবু মা তো, আবার ঠিক চলে আসতে পারে।

    মা তখনও কাজকাম করতে করতে চেঁচাচ্ছিল, পিলু বাচ্চাটা দিয়ে আয়। দুধের বাচ্চা, বাঁচবে না। এটুকু বাচ্চা মা ছাড়া থাকবে কি করে। ঘরে দুধ নেই যে দুধ দেব।

    আমারও ইচ্ছে ছিল না—ওটা আবার পিলু রেখে আসে। রাতে যে-ভাবে হাবিলদার লোকটা আমাদের ভয় ধরিয়ে দিয়ে গেল, তাতে করে পিলুর এমন কাজকে প্রশংসা না করে পারা যায় না।

    লোকটা ভয় দেখিয়ে চলে যাবার পর বোধহয় পিলু সারা রাত ভেবেছে কি করা যায়। রাতে বোধহয় ওর ভাল ঘুমও হয়নি। বাবা নেই, বাবা মাঝে মাঝে এভাবে থাকে না, বনের অন্ধকারটা তখন রাতে দাঁত বের করে হাসে। যে বনটা দিনের বেলায় পিলুর সঙ্গী রাতে সেটাই কেমন তার শত্রু হয়ে যায়। তারপর চোর-ছ্যাঁচোড়ের মতো যদি আবার সেই বাটপাড় লোকটা রাতে চলে আসে তখন কি হবে? সে এত সব ভয়ের কথা ভেবেই শেষ পর্যন্ত একজন তার উপযুক্ত সঙ্গী খুঁজে এনেছে।

    সে ফিরে এসে ভেবেছিল, কুকুরের এমন সুন্দর বাচ্চাটা দেখে মাও খুব খুশী হবে। কিন্তু মাকে তেমন খুশী দেখাল না বলে সে বেশ মুষড়ে পড়েছে। বাচ্চাটার ভাল করে চোখ ফোটেনি। ঠিকমতো দেখতে পায় না। দুধ না পেলে বাঁচবে না। মা তখনও পাঁচালী পাঠ করে যাচ্ছে—দুধের বাচ্চাটা তুলে নিয়ে এলি, তোর মায়াদয়া কিছু নেই রে পিলু। মা এমন সব হরবখত বলে যাচ্ছিল।—দিয়ে আয়। এমনিতেই কি পাপে যে পড়েছি, দেশ ছাড়া, দু-মুঠো পেট ভরে খেতে দিতে পারি না- আর পাপ বাড়াস না বাবা। বড় হলে আনবি। যা লক্ষ্মী বাবা, দিয়ে আয়। পিলু এখন কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। সে আমার দিকে তাকিয়ে সামান্য ভরসা খুঁজছে। অন্তত একজনও যদি তার এই দুঃসময়ে পিছনে না দাঁড়ায় তবে সে যায়টা কোথায়। মায়া ততক্ষণে কোলে নিয়ে বাচ্চাটাকে আদর করতে বসে গেছে। পেটের কোথায় লুকিয়ে আছে বাচ্চাটা টেরও পাওয়া যাচ্ছে না।

    মা রেগে গেলে ভারি মুশকিল আমাদের। সারাদিন পাঁচালী পাঠ চলবে। রাজা শ্রীবৎস থেকে আরম্ভ করে পুরাণের সব দুঃখী মানুষদের গল্প এক এক করে কপালে করাঘাত করার মতো শোনাবে আমাদের।

    এ-সব সময়ে আমার মধ্যস্থতা খুব কাজ দেয়। তখন আমি পিলুর পক্ষেও না, মায়ের পক্ষেও না। একেবারে নিরপেক্ষ মানুষ। পিলুকেই প্রথম আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিলাম। বললাম, তুই যে আনলি, ওর মা-টা কোথায় থাকে জানিস?

    —ঐ যে তোর বড় শিশুগাছটা আছে না, একটা চালতা গাছ, আরে ঐ যে তোর বাগদিপাড়ার মুখে একটা ঝুপসি মতো ছিটকিলার জঙ্গল আছে—বুঝতে পারছিস না, খড়ের গাদা আছে একটা তার নিচে মা-টা থাকে।

    বুঝতে পারলাম, বেশ খানিকটা পথ হেঁটে যেতে হবে। বাদশাহী সড়ক পার হয়ে মাঠের ওপর দিয়ে কিছুটা পথ হেঁটে যেতে হবে। সকালে বিকেলে দুবার দুধ খাওয়ানো দরকার। এবারে মাকে একটু বাজিয়ে দেখা যাক। বললাম, ওর মা-টা কাছেপিঠেই থাকে।

    মা বিছানা রোদে দিচ্ছিল। শুনতে পেল কি না কে জানে। বেশ চেঁচিয়ে বললাম, ওর মা-টা কাছেপিঠেই থাকে মা!

    —তা কাছেপিঠেটা কোথায়?

    —ঐ তো রাস্তাটা আছে না!

    —রাস্তায় কখনও কুকুর বাচ্চা নিয়ে থাকে? তার বাড়িঘর থাকবে না।

    বাড়িঘরের কথায় আসতেই বললাম, ব্যারাক বাড়িতে থাকে।

    বাড়িঘরের কথা শুনে মা বেশ খুশীই হল। মা বলল, পুলিস ব্যারাকে থাকে বলছিস?

    পিলু চোখ টিপে দিল। বললাম, হ্যাঁ।

    কাছেপিঠে যখন থাকে মা-টা তখন আর ভাবনা নেই। মারও বেশ আগ্রহ বাড়ছে বাচ্চাটার জন্য। মা বলল, দু দিন বাদে আবার কেউ না নিয়ে যায়।

    মা এবার পুনুকে কোলে নিয়ে বাচ্চাটার কাছে এসে বসল। পুনু দুহাতে বাচ্চাটাকে চটকাতে চাইছে। আমরাও তখন গোল হয়ে ফের একজন অতিথি, ঠিক অতিথি বলা চলে না, একেবারে আর একজন এই সংসারের ভেবে আনন্দে মেতে গেলাম। সংসারের আর পাঁচটা কাজের মতো এই বাচ্চাটাকে বড় করার দায়িত্বও আমাদের পড়ে গেল।

    পিলু তখন বলল, মা, বাবা সত্যি চিঠি লিখেছেন?

    মা বলল, হ্যাঁ লিখেছে। চিঠি লিখেছে, টাকা পাঠিয়েছে।

    –কবে আসবেন বাবা?

    —তা কিছু লেখেনি। এখন জলপাইগুড়িতে আছে। সেখান থেকে কোথায় আসামে অভয়াপুরী আছে সেখানে যাবে। দু-দশ ঘর শিষ্যের খোঁজ পেয়েছে। আরো পাবে বলেছে। ওদের প্রণামী টাকা সব একসঙ্গে করে পাঠিয়ে দিয়েছে। বোঝা গেল বাবার ফিরতে আরও মাসাধিককাল।

    মা ফের বলল, তোমাদের পড়াশোনা করতে বলেছে মন দিয়ে।

    মায়া বলল, আমার কথা কিছু লেখেনি মা?

    —সবার কথাই লিখেছে।

    তাছাড়া মা’র কাছে আরও জানা গেল, বাবা শিলচর কাছাড় হয়ে ফিরবেন। দেশ থেকে হরমোহন জ্যাঠামশাইরা চলে এসেছেন। আসার সময় হরমোহন জ্যাঠামশায়ের কাছে বাড়ির বিগ্রহ রেখে এসেছিলেন বাবা। বিঘে দুই ভুঁই ঠাকুরের নামে রেখে এসেছিলেন। সব বিক্রি করে নগদে বাবা যা পেয়েছিলেন, সবটা আনতে পারলে, আমাদের এখানে পাঁচ-সাত বছর রাজার হালে চলে যেত। কিন্তু ঐ তো দোষ বাবার, বাই উঠলে রক্ষা নেই—দেশ ভাগ হবার সঙ্গে সঙ্গে বাবার এক দণ্ড সবুর সইল না। জলের দরে তারক মাঝির কাছে সব বিক্রি। তাও তারক মাঝি বলল, কর্তা, এত টাকা নিয়ে তো যেতে পারবেন না, দর্শনায় সব কেড়েকুড়ে নেবে। বরং বাকিটা আমি হুণ্ডি করে পাঠিয়ে দেব। সেই দেব বলে আর দিল না। চিঠি দিলে লিখত, সব ফিরিয়ে নিন কর্তা। আমার আগাম টাকা আর আপনাকে ফেরত দিতে হবে না!

    বাবা খুব উত্তেজিত হলে বলতেন, তারক আমাকে এমনভাবে ডোবাবে ভাবিনি।

    মা বলত, আসলে লোকটা বিষয়ী মানুষ। ধূর্ত। তুমি ওর কথা বিশ্বাস করলে কত বললাম, নিয়ে নাও। রাস্তায় যা হবার হবে।

    বাবা খুব চড়া গলায় বলতেন, মেয়েছেলের বুদ্ধি আর কাকে বলে। রাস্তায় কেড়ে নিলে একেবারেই যেত। তবু তো আশা আছে, তারকের সুমতি হলে টাকাটা পাঠিয়েও দিতে পারে।

    —আর দিচ্ছে।

    —বামুনের টাকা কেউ মারে!

    বাবার এমন ধরনের কথা শুনে শুনে মা শেষ পর্যন্ত মাথা ঠিক রাখতে পারত না। বলত, দ্যাখো তোমার কি হয়! নিজের ভালটা একটা কুকুর বেড়ালও বোঝে, তুমি তাও বোঝ না। লোকের কথায় কেবল নাচ।

    —লোকের কথায় নাচব না, তোমার কথায় নাচব! বাবা তারপর ধৃতরাষ্ট্র থেকে দশরথের কৈকেয়ী পর্যন্ত নির্বিঘ্নে নারীবুদ্ধি সংসারে কত বিপত্তিকর সব উদাহরণসহ এক এক করে তুলে ধরতেন। আমরা ঐ সময়ে কার কত বেশি রামায়ণ মহাভারতে দৌড় টের পেতাম। বাবা শেষ পর্যন্ত পরাস্ত হলে মাকে মহারোষে চণ্ডীপাঠ আবৃত্তি করে শোনাতেন। মার হাজার কথার এক বর্ণও আর যেন কানে না ঢোকে। বলতেন :

    যা দেবী সর্বভূতেষু সৃষ্টিরূপেন সংস্থিতা
    নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ

    মা তখন আমার আরও রেগে যেত। চেঁচিয়ে বলত, তোমার বুদ্ধিনাশ হয়েছে। তোমার মতিভ্রংশ হয়েছে। তুমি আমাকে আর কত জ্বালাবে। হাড়মাস তো কিছু আর রাখনি। সব গেছে আমার।

    বাবার চণ্ডীপাঠ তত দ্রুত বাড়ত। প্রায় পাল্লা দেবার মতো, কেউ কম যায় না, একদিকে বাবার উদাত্ত কণ্ঠে স্তোত্র পাঠ অন্য দিকে মায়ের সারাজীবনের জ্বালা, সারা বাড়িটায় তখন খোল-করতাল সহ হরিসংকীর্তনের মতো। আর আমরা তখন একেবারে স্বাধীন নাগরিক। খুশিমতো পেলে খাই, না পেলে খাই না, যা পাই তাই খাই। উদাহরণ দেবার মতো স্বাধীন নাগরিক অধিকার রক্ষা করে যাচ্ছি। যেখানে সেখানে চলে যেতে পারি।

    এখন সে-সব খণ্ড-যুদ্ধের মলিন দিনগুলি আর ভাসে না চোখে। বাড়িঘর হয়ে যাওয়ায় আমরা মা বাবার খুবই অনুগত হয়ে উঠেছি। মা দেখছি সব কিছু, সময় মতো মনে করিয়ে দেয়। টাকাটা দিয়ে মোটামুটি আমাদের বেশ কিছু দিন খুব ভালভাবে চলে যাবে বলে, একটা হিসাবপত্রও হয়ে গেল। এক মণ চাল, সতের টাকা দশ আনা, মায়ার ফ্রক, তিন টাকা ছ আনা, পিলু এবং আমার প্যান্ট শার্ট সাত টাকা চোদ্দ আনা, বাকি টাকায় মজুত ভাণ্ডার গড়ে উঠবে—এত সব পরিকল্পনার পর মা মনে করিয়ে দিল, মনার দুধ খাবার সময় হয়ে গেছে, কৈ রে পিলু যা বাবা, দেখ ওর মা-টা কোথায় আছে, একটু দুধ খাইয়ে আন।

    তখন হয়ত সকালের রোদ উঠে গেছে। আমরা দু ভাই সেই নেড়ি কুকুরটাকে খুঁজে বেড়াচ্ছি। কোলে তুলোর বলের মতো বাচ্চাটা চোখ বুজে ঘুমোচ্ছ। কোথাও নেড়ি কুকুরটাকে দেখা যাচ্ছে না। আস্তানায় নেই। মাঠঘাট এবং গাছপালার অভ্যন্তরে কুকুরের আভাস পেলেই ছুটছি। আস্তানায় অন্য বাচ্চাগুলি সারারাত দুধ খেয়ে অঘোরে জড়াজড়ি করে ঘুমোচ্ছে। মনা রাতে দুধ খায়নি। ভোর রাতে কেঁদেছে। খিদেয় মাঝে মাঝে কোলের মধ্যে কোঁ কোঁ করেছে। সারারাত মনা থাকে পিলুর লেপের নিচে। তারপর কিছুদিনের মধ্যে পিলু বনবাদাড়ে গেলে বাচ্চাটাও যায়। পিলু ঘাটে গেলে বাচ্চাটাও হেলতে দুলতে চলতে থাকে। পড়তে বসলে দু পা সামনে রেখে হিজ মাস্টারর্স ভয়েস হয়ে যায়। কান খাড়া রেখে আমাদের পড়াশোনা মন দিয়ে শোনে। আমরা তখন আরও মনোযোগী ছাত্র হয়ে যাই বাচ্চাটার জন্য। মা বাটিতে করে সবার জন্য ভাগে ভাগে তেল পেঁয়াজ মাখা মুড়ি রেখে যায়। পুনু বারান্দায় উঠোনে হেঁটে বেড়ায় তখন। কখনও হাঁটতে হাঁটতে পড়ে যায়। আমরা মুড়ি খাই, পড়ি। মনা মুড়ি খায়, পড়া শোনে। পুনু মা মা করে তখন ফ্যাক করে কাঁদে। আর তখনই মায়ার পড়া থেকে ছুটি— সে পড়ার চেয়ে ভাইকে আদর করা, কোলে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো সংসারে বেশি দরকারী কাজ মনে করে থাকে। মা’রও বোধহয় এতে সুবিধা হয়। মায়া পড়ছে না বলে তার বাড়ির কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। পিলু এতটা সহ্য করতে পারে না। সেও পড়া ফেলে তখন উঠে পড়ে এবং কুকুরের বাচ্চাটার সঙ্গে তু-তু খেলা শুরু করে দেয়। পড়া ছেড়ে ওঠার আমার কোনো অছিলাই থাকে না। মনটা ঘরবাড়ির উপর বেজায় ক্ষেপে যায়।

    মাস শেষ হতে না হতেই বাচ্চাটা সেয়ানা হয়ে গেল। অচেনা ঘ্রাণে চিৎকার করে উঠতে শিখে গেল এক সময়। গাছ থেকে পাতা পড়লে দৌড়ে যায়, কোনো শব্দ পেলে ঘেউ ঘেউ করে ওঠে। রাস্তায় লোকজন দেখলে তাড়া করে যায় মানুষকে।

    বনভূমির অভ্যন্তরে আমাদের বাড়িটার প্রায় রক্ষাকারী বাচ্চাটা। বাচ্চাটারও নিজস্ব একটা নাম হয়ে যাওয়ায় পিলু, পুনুর মতো সে সংসারে বেশ একজন হয়ে গলে। —মনা কোথায়, মনাকে খেতে দে। তোরা স্নান করতে যাচ্ছিস, মনাকে নিয়ে যা। গায়ে খুব ময়লা পড়েছে।

    আমার মা সবার সঙ্গে মনার ভাল মন্দ নিয়ে ভাবে। যা শেয়ালের উপদ্রব, কিছুতেই রাতে বাইরে রাখা নিরাপদ নয়। সে ঘরেই থাকে রাতে। আর যখন তখন এলোপাথাড়ি চিৎকার। মাঝে মাঝে ঘুম ভেঙে গেলে পিলু বিছানা থেকে নেমে কান মুচড়ে দিয়ে বলে, হয়েছে। খুব হয়েছে। এখন ঘুমোতে দে।

    আসলে বোধহয় কুকুরটার রাতে লেপের তলায় থাকা অভ্যাস ছিল বলে নিচে একা থাকতে কিছুতেই রাজি না। ক্ষোভে দুঃখে বোধহয় সারারাত ঘেউ ঘেউ করত। তারপর একা থাকা অভ্যাস হয়ে গেলে আর কুঁই কুঁই করত না। সত্যিকারের ঘ্রাণ টানে সে যখন ভাল মন্দ বুঝতে শিখে গেল, তখনই এই ঘরবাড়ির আসল চোরের ঘ্রাণ পেয়ে একদিন গভীর রাতে ত্রাহি চিৎকার। আমাদের ঘুম ভেঙে গেল। দরজায় সত্যি খুট খুট শব্দ করছে কে। মাও উঠে পড়েছে। লম্ফ জ্বেলে দরজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে! আর কুকুরটা একেবারে লাফিয়ে, সত্যি বাঘা কুকুর, বাঁচলে হয়—না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না, আঁচড়ে কামড়ে ফালা ফালা করে দিতে চাইছে খলপার দরজা। বারান্দায় দাঁড়িয়ে কে কথা বলছে, কি বলছে, বোঝা যাচ্ছে না। তখন মা আমার না পেরে অত্যন্ত সরল গলায় বলছে, থাম বাপু, খুব হয়েছে। আলো হাতে মা দরজা খুলে দিলে দেখলাম, বাবা আমার ফিরে এসেছেন। হাতে কাঁধে কত সব ছোট বড় মাঝারি পোঁটলা-পুঁটলি। আর তখনই বুঝি পিলুর মনে হল, কুকুরের স্বভাব কামড়ানো। যেভাবে বাবার দিকে একবার এগোচ্ছে পিছোচ্ছে, কখন না কামড়ে দেয়। সে প্রায় সার্কাসের রিং মাস্টারের মতো কুকুরটাকে গম্ভীর গলায় বলল, এদিকে এস। আমার বাবা। বেয়াদবি করবে না।

    কে কার কথা শুনছে! কুকুরের বাচ্চাটা পিলুকে আমলই দিচ্ছে না। বাবাও খুব বিব্রত বোধ করছেন। গলায় আবার একটা গামছা বাঁধা বাবার। গামছার মধ্যে ভারি কিছু পাথরটাথর ঝুলছে গলায়। একটা বড় সাইজের মাদুলির মতো লাগছিল পুঁটলিটাকে। এক গাল দাড়ি। বাবাকে ঠিক চেনাই যাচ্ছে না। পিলুর মতো কুকুরের বাচ্চাটাকে সাহসের সঙ্গে বলতে পারছিলাম না— হ্যাঁরে আমাদের বাবা। সত্যিকারের বাবা। একা পিলু বললে কুকুরের বাচ্চাটা বিশ্বাস করবে কেন।

    পিলু ফের গম্ভীর গলায় বলল, মনা ভাল হচ্ছে না। বাবা কত দূরদেশ থেকে এসেছেন। বাবাকে বসতে দাও।

    বাবাও কুকুরটাকে দেখে ভারি ভীতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন। এক পা এগোচ্ছেন না, পিছোচ্ছেনও না। কি বলবেন যেন ঠিক করতে পারছেন না। আর গলায় যা আছে সেটাও একটা যেন বাবার পক্ষে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

    তখন আমি বললাম, এই মনা, আমার বাবা, সত্যিকারের চোর-ছ্যাঁচোড় না। থাম বলছি।

    তবু যখন থামল না, পিলু বেজায় চটে গেল। রিং মাস্টারের মতো ঘুরে দাঁড়াল। তারপর ধাঁই করে ফুটবলের মতো সজোরে লাথি, বেশ উঁচুতে উঠে টপকে পড়ে গেল। এবং সঙ্গে সঙ্গে লেজ গুটিয়ে কুঁই কুঁই করতে করতে ঘরের কোণায় গিয়ে বসে পড়ল। বাবা বললেন, আহা মারছিস কেন, ওর কি দোষ। না বলে না করে এসেছি, চোর-ছ্যাঁচোড় তো ভাববেই।

    বাবার দিকে তাকিয়ে মা আর একটা কথাও বলতে পারছিল না। বাবার চেহারাটা সত্যি খুব খারাপ হয়ে গেছে যেন। খুব বড় অসুখ-বিসুখ থেকে উঠলে যেমন দেখায়—লণ্ঠনের আলো তুলে বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে মা। তখন ক্ষীণ গলায় বাবা বললেন, একটা মাদুর পেতে দাও। বিছানায় বসব না। গলায় ব্রহ্মাণ্ড।

    মা ঠিক বুঝতে না পেরে অত্যন্ত বিচলিত বোধ করল কথাটাতে। বলল, তোমার কিছু হয়েছে?

    —আরে না না।

    —বড় অসুখ-টসুখ? তারপরই বুঝি মনে হয় মা’র, বাবা আর দু দন্ড দাঁড়িয়ে থাকতে পারবেন না। মাথা ঘুরে পড়ে যাবেন। তাড়াতাড়ি মাদুর পেতে বলল, বোস।

    বাবা নিস্তেজ গলায় বললেন, জল দাও। তিন দিন থেকে জল খেয়ে আছি। আজও থাকতে হবে। নিরম্বু উপবাস করতে ভরসা পেলাম না। সবই তাঁর ইচ্ছে। এবং গলায় এত বড় পুঁটলিটা নিয়ে বাবার কতটুকু অস্বস্তি হচ্ছিল জানি না, কিন্তু আমাদের কেমন হাঁসফাঁস লাগছিল। বললাম, বাবা ওটা খুলে ফেল। ওতে কি আছে?

    বাবা বললেন, ওতে বিশ্বব্রহ্মান্ড আছে।

    বাবার হেঁয়ালি বুঝতে না পেরে পিলু বাবার মুখের ওপর ঝুঁকে বলল, কি বললে বাবা? বিশ্বব্রহ্মান্ড!

    —হ্যাঁ, বিশ্বব্রহ্মান্ড আছে। বলছি না বিশ্বব্রহ্মান্ড— বুঝলে ধনবৌ, আর রাত জেগে কি হবে, নিচে শুয়ে থাকছি। সকালে তোমাদের কাজের অন্ত থাকবে না। লোকজন ডাকতে হবে।

    আমরা বাবার কথায় খুবই ভয় পেয়ে যাচ্ছিলাম। লোকজন ডাকতে হবে কেন। কিছু একটা তবে সকালে হচ্ছে। সেটা কি—কিন্তু বাবা একে নিস্তেজ তায় আবার গম্ভীর, গলায় গামছা ঝুলিয়ে তদুপরি বিশ্বব্রহ্মান্ড বয়ে বেড়াচ্ছেন—সুতরাং কিংকর্তব্য বিমূঢ়ের মতো আমাদের রা সরছিল না।

    মা কেমন অসহায় বালিকার মতো কেঁদে ফেলল। বলল, কি হয়েছে বলবে তো? বাবার মুখে সুমধুর হাসি ফুটে উঠল। বললেন সব। কোথায় হরকুমার জ্যাঠারা বাড়ি করেছেন, কোথায় দাদুর শিষ্যরা কে কি ভাবে বেঁচে আছেন, কে কত টাকা দিয়েছে—সব। হরকুমার জ্যাঠার কাছ থেকে বাড়ির গৃহদেবতা চেয়ে নিয়ে এসেছেন। দুটো রাধাগোবিন্দের মাঝারি সাইজের পেতলের মূর্তি, শালগ্রামশিলা – এবং ওজনে সের দশেক হবে। তেনারা গলায় ঝুলছেন একটা ছোট মাপের ঢোলের মতো। তিন দিন তিনি অনাহারী, গলায় বিশ্বব্রহ্মান্ড ঝুলিয়ে আহার করেন কি করে। কালই দেবতাদের জন্য ঠাকুরঘর উঠবে। সকালে সবাইকে তুলে নিয়ে যাবেন নদীতে। গঙ্গাস্নান করবেন। ভিজে কাপড়ে ফিরে আসতে হবে সবাইকে। দুলে-বাগদিকে ডাকতে হবে। সে ছোট মতো ঠাকুর ঘর বানাবে, ১লা বৈশাখ ঠাকুরের অভিষেক। লোকজন খাবে, চন্ডীপাঠ হবে। দু-দশজন ব্রাহ্মণ ভোজন। এতসব শুনে আমরা হাঁ হয়ে গেছি। কুকুরের বাচ্চাটাও লেজ নাড়ছে। আনন্দ প্রকাশের কোনো ভাষা আমাদের জানা নেই। শুধু নিঝুম এক অন্ধকারে এই বাড়িঘর বড় বেশি সজাগ হয়ে উঠেছে। আর আমার মনে হল আজ থেকে আকাশের ছোট একটা নক্ষত্র সারাক্ষণ রাতে বাড়িটার মাথায় পাহারায় থাকবে। বাড়িটার ভেতর কোনো দুঃখ ঢুকতে দেবে না। বাবার বিশ্বব্রহ্মান্ড একটা তালপাতার ঘরে, সত্যি ভাবা যায় না। জীবনে কত বড় সুখ কত সহজে বাবা আমাদের জন্য মাঝে মাঝে যে নিয়ে আসেন।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleঈশ্বরের বাগান – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়
    Next Article নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়

    Related Articles

    তসলিমা নাসরিন

    সেইসব অন্ধকার – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    আমার প্রতিবাদের ভাষা – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    অগ্রন্থিত লেখার সংকলন – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    বন্দিনী – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    নির্বাসন – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    নেই, কিছু নেই – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Our Picks

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }