Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মার্ক টোয়েন গল্পসমগ্র

    মার্ক টোয়েন এক পাতা গল্প767 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    দুটি ছোট গল্প

    দুটি ছোট গল্প
    Two Little Tales

    প্রথম গল্প: ডিরেক্টর-জেনারেল-এর জন্য সংবাদ-বহনকারী লোকটি

    কিছুদিন আগে ১৯০০-র দ্বিতীয় মাসে জনৈক বন্ধু একদা বিকেলে আমার সঙ্গে দেখা করতে লণ্ডনে এসেছিল। আমাদের দুজনেরই তখন সেই বয়স যখন মানুষ সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে জীবনের আনন্দের পরিবর্তে ক্ষোভ ও বিরক্তির কথা বলেই সময়। কাটিয়ে দেয়। ক্রমে ক্রমে বন্ধুটি সরকারী সমর দপ্তরের নিন্দা শুরু করল। মনে হল, তার একটি বন্ধু এমন একটা জিনিস আবিষ্কারের চেষ্টা করছিল যেটা দক্ষিণ আফ্রিকার সৈন্যদের খুব কাজে লাগতে পারে। জিনিসটা হাল্কা, খুব সস্তা, আর টেকসই বুট জুতো; সেটা বর্ষায়ও শুকনো থাকবে, শক্ত থাকবে, আর আকারও ঠিক থাকবে। আবিষ্কর্তার ইচ্ছা, জিনিসটার প্রতি সরকারের দৃষ্টি পড়ুক, কিন্তু তাকে তো কেউ চেনে না, আর শুধু একটা চিঠি ছেড়ে দিলে তাতে বড় বড় কর্মচারীদের ঘুম ভাঙবে না। আমি বাধা দিয়ে বললাম, এতে বোঝা যায় সে একটি গাধা-আমাদের অন্য সকলের মতই। বলে যাও।

    কিন্তু তুমি ও কথা বললে কেন? লোকটি তো খাঁটি কথাই বলেছে।

    লোকটি মিথ্যে কথা বলেছে। বলে যাও।

    আমি প্রমাণ করে দেব যে সে-

    ও রকম কিছুই তুমি প্রমাণ করতে পারবে না। আমার বয়স হয়েছে, বুদ্ধিশুদ্ধিও আছে। আমার সঙ্গে তর্ক করো নাঃওটা অসম্মানকর ও দূষণীয়। বলে যাও।

    ঠিক আছে। কিন্তু তুমিও অচিরেই ব্যাপারটা বুঝতে পারবে। আমাকে তো সকলেই চেনে, কিন্তু আমিও জুতোর চমড়া বিভাগের জিরেক্টর-জেনারেলের কাছে তার খবরটা পৌঁছে দিতে পারলাম না।

    এটাও আর একটা মিথ্যে। দয়া করে বলে যাও।

    কিন্তু আমার কথা বিশ্বাস কর, সত্যি আমি পারি নি।

    তা তো বটেই। সে তো আমি জানতামই। তোমার বলারই দরকার ছিল না।

    তাহলে এর মধ্যে মিথ্যেটা কোথায়?

    লোকটির ব্যাপারের প্রতি ডিরেক্টর-জেনারেলের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পার নি-তোমার এই কথাটাই মিথ্যে। এই জন্য মিথ্যে যে সঙ্গে সঙ্গেই তার মনোযোগ আকর্ষণ করতে তুমি পারতে।

    আমি তো বলছি আমি পারি নি। তিন মাস চেষ্টা করেও পারি নি।

    নিশ্চয়। অবশ্য। তুমি না বললেও সেটা আমি জানতাম। তুমি যদি আর একটু বুদ্ধিমানের মত এগোতে তাহলেই সঙ্গে সঙ্গে তার মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারতো। অন্য লোকরাও তাই পারত।

    আমি তো বুদ্ধিমানের মতই চেষ্টা করেছিলাম।

    না, তা করো নি।

    তুমি কি করে জানলে? সে সব ব্যাপারের তুমি কতটুকু জান?

    কিছুই জানি না। কিন্তু তুমি যে বুদ্ধিমানের মত কাজ কর নি সেটা আমি নিশ্চিত করেই জানি।

    তা কি করে জানবে? আমি কি পদ্ধতিতে কাজ করেছি তাই তো তুমি জান না?

    ফলাফল দেখেই বুঝতে পারি। ফলই তো আসল প্রমাণ। তুমি কাজটা করতে গিয়েছিলে পাগলের মত। আমার বয়স হয়েছে, বুদ্ধিশুদ্ধি-

    হ্যাঁ, হ্যাঁ, তা জানি। কিন্তু কি ভাবে আমি কাজটা করেছিলাম সেটা বলবে কি? সেটা পাগলামি কি না আগে সেটাই মীমাংসা করা যাক।

    না; সেটার মীমাংসা আগেই হয়ে গেছে। যখন একান্তই নিজের বোকামিটা মেলে ধরতে চাইছ, তখন বলে যাও। আমার বয়স হয়েছে-

    নিশ্চয়, নিশ্চয়। ভাল করে বসে জুতোর চামড়া বিভাগের ডিরেক্টর-জেনারেলকে বেশ ভদ্রগোছের একটা চিঠি লিখলাম যাতে-

    তাকে তুমি ব্যক্তিগতভাবে চেন কি?

    না।

    তাহলেই তো আমাকে এক পয়েন্ট দিলে। তুমি তো কাজটা শুরুই করেছিলে পাগলের মত। বলে যাও।

    সেই চিঠিতে আবিষ্কারের গুরুত্ব ও অল্প খরচের কথা পরিষ্কার করে জানিয়ে প্রস্তাব করেছিলাম-

    তার ওখানে গিয়ে দেখা করবে? নিশ্চয় সেই প্রস্তাবই করেছিলে। তোমায় বিরুদ্ধে দুই পয়েন্ট হল। আমি বয়স-

    তিন দিনেও কোন জবাব এল না।

    তাতো আসবেই না। বলে যাও।

    আমি কষ্ট করে চিঠি লিখেছি বলে ধন্যবাদ জানিয়ে আমাকে পাঠাল তিন লাইনের এক সংক্ষিপ্ত চিঠি। তাতে-

    আর কিছুই ছিল না।

    আর কিছুই ছিল না। আরও বিস্তারিতভাবে তাকে চিঠি লিখলাম-

    তিন পয়েন্ট–

    কিন্তু কোন জবাব পেলাম না। এক সপ্তাহ শেষে আবার চিঠি লিখলাম; এবার একটু কড়া সূরেই চিঠিটার জবাবও চাইলাম।

    চার। বলে যাও?

    জবাব এল; আগের চিঠি টা পাওয়া যায় নি বলে তার একটা অনুলিপি চাওয়া হয়েছিল। ডাক-ঘরে খোঁজ নিয়ে জানলাম, চিঠিটা। যথারীতিই পৌঁচে ছিল; তবু সে কথা না জানিয়ে একটা অনুলিপি পাঠিয়ে দিলাম। দুই সপ্তাহ চলে গেল, কোন রকম উচ্চ বাচ্য নেই। ইতিমধ্যে আমার মাথাও অনেকটা ঠাণ্ডা হয়ে এল এবং ভদ্রগোছের চিঠি লিখবার মত মানসিক অবস্থা ফিরে পেলাম। তখন আর একটা চিঠি লিখে জানিয়ে দিলাম যে পরদিন আমি তার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি, আর তার আগে যদি কোন ঠিকানা পাই তাহলে ধরে নেব যে মৌনং সম্মতি লক্ষণম্।

    পাঁচ পয়েন্ট।

    ঠিক বারোটায় পৌঁছে গেলাম। পাশের ঘরে একটা চেয়ার দিয়ে আমাকে অপেক্ষা করতে বলা হল। দেড়টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে অপমানে ও ক্রোধে সেখান থেকে চলে এলাম। মনটাকে ঠাণ্ডা করবার জন্য আরও এক সপ্তাহ অপেক্ষা করলাম। আবার একটা চিঠি লিখে পরদিন দুপুরে তার সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা করলাম।

    ছ পয়েন্ট।

    সম্মতি জানিয়ে চিঠির জবাব এল। যথাসময়ে সেখানে গেলাম, আড়াইটে পর্যন্ত একটা চেয়ারে বসে কাটালাম। তারপর চলে এলাম; চিরদিনের মত জুতো থেকে সে জায়গার ধূলো ঝেড়ে ফেললাম। অভদ্রতা, অযোগ্যতা, অক্ষমতা এবং সেনাবাহিনীর স্বার্থের প্রতি উদাসীনতার দিক থেকে দেখলে আমার মতে সমর দপ্তরের জুতোর চামড়া বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল একটি–

    শান্ত হও! আমার অনেক বয়স হয়েছে; বুদ্ধিশুদ্ধিও যথেষ্ট আছে; আপাতদৃষ্টিতে বুদ্ধিমান এমন অনেক লোককেই আমি দেখেছি; এই রকম একটা সহজ, সরল ব্যাপারকে সাধারণ বুদ্ধি দিয়ে দেখবার মত বুদ্ধিটু কুও তাদের নেই। তোমাকে দেখে তাই আমার অবাক লাগছে না; তোমার মত লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি লোক আমি নিজে দেখেছি। অকারণেই তুমি তিনটি মাস নষ্ট করেছ; আবিষ্কর্তাটি নষ্ট করেছে তিনটি মাস; সৈনিকরা নষ্ট করেছে তিনটি মাস-মোট ন মাস। এবার তোমাকে একটা ছোট গল্প পড়ে শোনাব। গল্পটা আমি গতকাল রাতে লিখেছি। তারপর কাল দুপুরে তুমি ডিরেক্টর-জেনারেলের সঙ্গে দেখা করে তোমার কাজের কথা পাশ করে নিও।

    চমৎকার! তুমি কি তাকে চেন?

    না; কিন্তু গল্পটা শোন।

    .

    দ্বিতীয় গল্প: একটি চিমনি-ঝাড়ুদার কেমন করে সম্রাট কে কথা শুনিয়েছিল

    ০১.

    গ্রীষ্ম কাল। যাদের গায়ে জোর আছে প্রচণ্ড গরমে তারাও কাৎ; যারা দুর্বল তাদের তো ভেঙে পড়া মর-মর অবস্থা। সপ্তাহের পর সপ্তাহ সৈনিকদের বড় রোগ আমাশয়ের মহামারীতে সেনাদলে মড়ক লেগেছে। কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। ডাক্তাররা হাল ছেড়ে দিয়েছে; তাদের ওষুধ ও বিজ্ঞানের একদিন যে ক্ষমতা ছিল-কোন কালেই খুব বেশী ছিল না-আজ আর তা নেই; আর নতুন করে আশা করবারও কিছু নেই।

    সম্রাট বিব্রত হয়ে পড়ল। সব চাইতে খ্যাতনামা ডাক্তারদের সঙ্গে পরামর্শ করবার জন্য সে তাদের ডেকে পাঠাল। সম্রাট তাদের সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করল; সৈনিকদের মৃত্যুর জন্য তাদের কাছে কৈফিয়ৎ চাইল; জানতে চাইল, তারা সত্যি সত্যি চিকিৎসার কিছু জানে কিনা; তারা কি ডাক্তার, না খুনী। তখন প্রধান খুনী-দেশের সব চাইতে প্রধান ও সৌম্যদর্শন ডাক্তার জবাব দিল:

    মুহামান্য সম্রাট, আমাদের যা সাধ্য তা করেছি, অবশ্য কার্যক্ষেত্রে তার ফল কিছুই হয় নি। কোন ওষুধ আর কোন ডাক্তারই এ রোগ সারাতে পারবে না; প্রকৃতি ও ভাল স্বাস্থ্যই এর একমাত্র প্রতিকার। কোন ডাক্তার বা ওষুধে কিছু হবে না-কথাটা আমি আবার বলছি এবং বেশ জোর দিয়েই বলছি। ডাক্তার বা ওষুধ কখনও কখনও কিছুটা সাহায্য করলেও, সাধারণত তারা ক্ষতি করে থাকে।

    সম্রাট ছিল খুব রোগী: আর খুব গালাগালি করত। অত্যন্ত অশ্লীল সব আজে বাজে গালাগালি দিয়ে সে ডাক্তারদের তাড়িয়ে দিল।

    একদিনের মধ্যেই সেই মারাত্মক রোগ তাকেও ধরল। মুখে-মুখে কথাটা ছড়িয়ে পড়ল। সারা দেশ আতংকে কাহিল হয়ে পড়ল।

    সকলের মুখেই ঐ মারাত্মক রোগের কথা। সকলেরই মন খারাপ। সকলেরই মনে নিরাশা। সম্রাটেরও মন খারাপ। দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে বলল: ঈশ্বরের ইচ্ছাই পূর্ণ হোক। আবার সেই খুনীদেরই ডেকে পাঠাও। এ বিপদ দূর হোক।

    তারা এল। সম্রাট নাড়ি দেখল, জিভ দেখল, ওষুধের দোকান উজাড় করে ঢেলে দিল এবং সেখানে বসে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে লাগল-কারণ তারা কাজের বিনিময়ে টাকা পেত না; তারা ছিল বছর-মাইনের লোক।

    .

    ০২.

    টমির বয়স ষোল। চটপটে ছেলেটি। কিন্তু সমাজের উঁচু স্তরের লোক নয়। তার পদমর্যাদা অতি সামান্য, আর চাকরিটাও নগণ্য। আসলে তার কাজই ছিল সব চাইতে নীচু স্তরের। তার বাবা আস্তাকুড় পরিষ্কার করত আর একটা রাতের ময়লবাহী গাড়ি চালাত। বাবার পরেই ছিল টমির স্থান। টমির প্রাণের বন্ধু ছিল চিমনি-ঝাড়ুদার জিমি। চোদ্দ বছরের একহারা ছোট খাট ছেলেটি; সৎ ও পরিশ্রমী; মনটাও ভাল; এই বিপজ্জনক নোংরা কাজ করেই শয্যাশায়ী মায়ের ভরণ-পোষণ করে।

    সম্রাট অসুস্থ হবার মাসখানেক পরে একদিন সন্ধ্যা নটা নাগাদ এই দুটি ছেলের দেখা হয়ে গেল। টু মি বেরিয়েছিল তার রাতের কাজ সারতে; কাজেই রবিবারেরর ভাল পোশাকের পরিবর্তে তার পরনে ছিল মজুরের নোংরা পোশাক; তা থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। জিমি সারা দিনের কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিল; সারা অঙ্গ কালি মাখা; কাঁধের উপর ঝুল ঝাড়বার বুরুশ, কোমরে ঝুল বোঝাই করে রাখবার থলে; একমাত্র দুটো উজ্জ্বল চোখে ছাড়া সারা মুখের আর কিছুই চোখে পড়ে না।

    পথের পাশের পাথরের উপর বসে দুজন কথা বলতে লাগল; বিষয় একটি ই-জাতির বিপদ, সম্রাটের অসুখ। জিমির মাথায় মস্ত বড় পরিকল্পনা; সে কথা বলতে তার আর তার সইল না। সে বলল:

    টমি, আমি সম্রাটের রোগ সারিয়ে দিতে পারি। কেমন করে সারাতে হবে আমি জানি।

    টুমি তো অবাক।

    সে কি! তুমি?

    হ্যাঁ, আমি।

    কি বলছ বোকার মত? বড় বড় ডাক্তাররা পারল না।

    তা কি হয়েছে; আমি পারি। পনেরো মিনিটের মধ্যে আমি তার রোগ সারিয়ে দিতে পারি।

    কি যা তা বলছ?

    যা সত্য তাই বলছি।

    জিমি এত গম্ভীরভাবে কথা বলল যে টমি ঘাবড়ে গিয়ে বলল:

    মনে হচ্ছে তুমি বেশ ভেবে চিন্তেই কথাটা বলেছ জিমি। তাই তো?

    তোমাকে কথা দিচ্ছি।

    ব্যাপারটা কি? কেমন করে রোগ সারাবে?

    তাকে একটু রো পাকা তরমুজ খেতে বলব।

    কথাটা শুনে টমি যেন হঠাৎই একটা ধাক্কা খেল; কথাটার অবাস্তবতায় সে হো-হো করে হেসে উঠল। কিন্তু জিমি তাতে কষ্ট পাওয়ায়। সে থেমে গেল। ঝুল-কালি সত্ত্বেও জিমির হাঁটু টা আদর করে টোকা দিতে দিতে বলল:

    আমার হাসি আমি ফিরিয়ে নিচ্ছি। তোমাকে কষ্ট দিতে আমি চাই নি জিমি, এবং এ রকমটা আর কখনও করব না। কি জান, তোমার কথাটা খুবই উদ্ভট বলে মনে হয়েছিল, কারণ কোন সেনা-বারিকে যখনই আমাশয় দেখা দেয় তখনই ডাক্তাররা সেখানে একটা

    আমি জানি-বোকারামের দল! জিমি বলল: তার কণ্ঠ সুরে একই সঙ্গে চোখের জল ও রাগের ছোঁয়াচ। তরমুজেরও অভাব নেই, আর তাই একটি সৈনিকেরও মরবার কথা নয়।

    কিন্তু জিমি, এ ধারণাটা তোমার মাথায় এল কেমন করে?

    এটা ধারণা নয়, এটা ঘটনা। সেই পাকা-চুল জুলু বুড়োকে তো তুমি চেন? দেখ, অনেক দিন থেকেই সে আমাদের অনেক বন্ধুকে সারিয়েছে। আমার মা নিজের চোখে দেখেছে; আমিও দেখেছি। মাত্র একটু করো বা দুটু করো তরমুজ, বাস, রোগ নতুন হোক আর পুরনো হোক, তাতেই সারবে।

    খুবই অদ্ভুত। কিন্তু জিমি, তাই যদি হয়, তা হলে তো সম্রাট কে কথাটা বলা উচিত।

    নিশ্চয়; আমার মা লোকজনদের কথাটা বলেছেও যাতে তারা কথাটা রাজার কানে পৌঁছে দিতে পারে; কিন্তু বোকা-বোকা মজুর, তাই

    কাজটা কেমন করে করবে তাই জানে না।

    টুমি ঘৃণার ভঙ্গীতে বলল, তা তো বটেই; মাথা-মোটা লোকগুলো তা জানবে কেমন করে। আমি কথাটা রাজার কাছে পৌঁছে দেব।

    তুমি? ব্যাটা রাতের গাড়িওয়ালা গন্ধগোকুল তুমি! এবার জিমির হাসবার পালা। কিন্তু টমি পাল্টা জবাব দিল:

    হেসে নাও যত পার কিন্তু আমি এ কাজ করবই।

    তার কথায় এমন নিশ্চিন্ত আত্মবিশ্বাস ফুটে উঠল যে জিমি গম্ভীর গলায় প্রশ্ন করল:

    তুমি কি সম্রাট কে চেন?

    আমি চিনি কি না? তুমি বলছ কি? অবশ্যই চিনি না।

    তাহলে কাজটা করবে কেমন করে?

    খুবই সহজ, সরল ব্যাপার। অনুমান কর তো। তুমি হলে কি করতে জিমি?

    একটা চিঠি লিখে দিতাম। এক মুহূর্ত আগেও এ বিষয়ে আমি কখনও কিছু ভাবি নি। তবু বাজি রেখে বলতে পারি, সেই ভাবেই তুমিও কাজটা করবে।

    আমিও বাজি ধরে বলছি, তা নয়। বল তো চিঠি টা পাঠাতে কেমন করে?

    কেন? নিশ্চয় ডাকে।

    টমি ঠাট্টায় একেবারে পঞ্চমুখ হয়ে উঠল। তারপর বলল:

    দেখ, তোমার কি মনে হয় না যে রাজ্য শুধু প্রতিটি পাগলই এই কাজ করে চলেছে? তুমি কি বলতে চাও যে এ কথাটা তোমার কখনও মনে হয় নি।

    তা-না, জিমি লজ্জিত হয়ে কথাটা বলল।

    যদি তোমার বয়স ও অভিজ্ঞতা এত কম না হত তাহলে হয় তো এ কথাটা তোমার মনে হত। আরে জিমি, একজন সাধারণ সেনাপতি, বা কবি, বা অভিনেতা, বা অল্প-বিস্তর খ্যাতিমান যে কেউ অসুস্থ হলেই রাজ্যের যত মাথা-খারাপ লোকগুলো তাকে হাতুড়ে তুক-তাকের খবর জানিয়ে চিঠি লিখে একেবারে পাকার করে ফেলে। আর তাহলে, সম্রাটের বেলায় ব্যাপারটা কি ঘটতে পারে ভাব তো?

    সে তো আরও শোচনীয় অবস্থাই হবে,জিমি ভয়ে ভয়ে বলল।

    ঠিক। আমারও তাই ধারণা। দেখ জিমি, প্রতিটি রাতে প্রাসাদের পিছনকার উঠোন থেকে আমাদরে ঐ ধরনের ছয় গাড়ি ভর্তি চিঠি তুলে নিয়ে বাইরে ফেলতে হয়। এক রাতেই তো ফেলেছি আশি হাজার চিঠি। তুমি কি মনে কর সে সব চিঠি কেউ পড়ে? দুঃ! একটাও পড়ে না! তুমি যদি চিঠি লেখ, তোমার চিঠিরও ঐ দশাই হবে।কাজেই আমার বিশ্বাস, সে কাজ তুমি করবে না। কি বল?

    না, দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে জিমি জবাব দিল।

    ঠিক আছে জিমি, ঠিক আছে। মন খারাপ করো না। কাজ হাসিল করবার অনেক রকম উপায় আছে। তার কাছে কথাটা আমিই পৌঁছে দেব।

    আঃ, তা যদি করতে পার টমি, আমি তোমাকে চিরকাল ভালবাসব।

    তোমাকে তো বলেছি, কাজটা আমি করবই। কোন চিন্তা করো না; আমার উপর ভরসা রাখ।

    তা তো অবশ্যই রাখব টমি; তুমি কত কিছু জান। তুমি তো অন্য ছেলেদের মত নাও; তারা তো কিছু জানে না। কিভাবে কাজটা করবে। বল তো টু মি?

    টুমি তো ভারী খুসি। একটু চুপ করে ভেবে নিয়ে সে বলল:

    ওই যে ছেঁড়া পোশাক পরা লোকটা যে ঝুড়ি নিয়ে ঘোরে আর বেড়ালের মাংস ও পচা যকৃৎ বিক্রি করে নিজেকে কসাই বলে পরিচয় দেয় তাকে তো তুমি চেন? তাকে দিয়েই শুরু করব। তাকে কথাটা বলব।

    জিমি খুব হতাশ হল। মুখ বেঁকিয়ে হেসে বলল: দেখ টমি, এ কথা বলাও লজ্জার ব্যাপার। তুমি তো জান, এটা আমার কতখানি অন্তরের কথা।

    তার পিঠে ভালবেসে হাত বুলিয়ে টমি বলল:

    বিচলিত হয়ো না জিমি। আমার কাজ আমি ভালই বুঝি। অচিরেই তুমিও দেখতে পাবে। ওই বদখৎ কসাই কথাটা বলবে সেই বুড়িকে যে গলির মোড়ে বাদাম বিক্রি করে-সে আবার কসাইটার প্রাণের বন্ধু তারপর আমার অনুরোধে বুড়ি কথাটা বলবে তার সেই বড়লোক মাসিকে যার একটা ফলের দোকান আছে দুটো ব্লক পরের মোড়টাতে; সে কথাটা বলবে তার বিশেষ বন্ধু পাখির দোকানের মালিককে মালিক বলবে তার বন্ধু পুলিশ-সার্জেন্টকে; সার্জেন্ট বলবে তার ক্যাপ্টেনকে, ক্যাপ্টেন বলবে ম্যাজিস্ট্রেট কে, ম্যাজিস্ট্রেট বলবে তার শ্যালক জেলাজজকে, জজ বলবে শেরিফ কে, শেরিফ বলবে লর্ড মেয়রকে, লর্ড মেয়র বলবে পরিষদ সভাপতিকে, পরিষদ-সভাপতি বলবে–

    জর্জের দিব্যি, এ যে এক আশ্চর্য পরিকল্পনা টমি! এটা তোমার মাথায়।

    রিয়ার-অ্যাডমিরালকে, রিয়ার বলবে ভাইসকে, ভাইস বলবে ব্লু-অ্যাডমিরালকে, ব্লু বলবে রেড কে, রেড বলবে হোয়াইট কে, হোয়াইট বলবে নৌ-বিভাগের প্রথম লর্ডকে, প্রথম লর্ড বলবে পার্লামেন্টের স্পীকারকে, আর স্পীকার-

    বুঝতে পেরেছি টমি; তুমি প্রায় পৌঁছে গেছ!

    বলবে শিকারী কুকুর-রক্ষককে, রক্ষক বলবে আস্তাবলের বড় সহিসকে, বড় সহিস বলবে প্রধান অশ্বপালককে, প্রধান অশ্বপালক বলবে প্রথম লর্ডকে, প্রথম লর্ড বলবে লর্ড দেওয়ানকে, লর্ড দেওয়ান বলবে গৃহ-কর্তাকে, গৃহকর্তা বলবে সেই পেয়ারের ছোকরা চাকরটাকে যে পাখার বাতাস করে সম্রাটের গায়ের মাছি তাড়ায়, আর ছোকরা চাকরটা নতজানু হয়ে সম্রাটের কানে কানে কথাটা বলবে-বাস, কিস্তি মাৎ।

    উঠে দাঁড়িয়ে দুবার তোমার জয়ধ্বনি করতে ইচ্ছে হচ্ছে টমি। কী অপূর্ব চিন্তাধারা। একনকি কেউ কখনও করে নি। এটা তোমার মাথায় এল কি করে?

    বসে মনোযোগ দিয়ে শোন; তোমাকে কিছু জ্ঞান দিচ্ছি-যতদিন বেঁচে থাকবে কথাটা ভুলো না। এখন বল তো কে তোমার সেই সব চাইতে প্রাণের বন্ধু যার কথা তুমি কখনও না রেখে পার না?

    কেন, সে তো তুমি টমি। তুমি তো তা জান।

    ধর, বিড়ালের মাংস-বিক্রেতা লোকটাকে কাছ থেকে তুমি একটা বড় রকমের সুবিধা আদায় করতে চাও। এখন, তুমি তো তাকে চেন না, কাজেই তুমি যদি তার কাছে গিয়ে কথাটা পাড়, সে তো তোমাকে হটিয়েই দেবে, কারণ সে লোকটাই ঐ রকম। কিন্তু তোমার। পরেই সে আমার প্রাণের বন্ধু কাজেই আমার যে কোন উপকার করতে সে যেখানে খুসি ছুটতে গিয়ে পায়ের টেংরি খুলে ফেলতেও রাজী হবে। এখন তোমাকে জিজ্ঞাসা করি: কোটি বুদ্ধিমানের কাজ-তোমার এই তরমুজ-টোটু কার কথাটা বাদাম-বিক্রিওয়ালীর কাছে বলবার জন্যে তুমি নিজে কসাইটার কাছে যাবে, না কি আমাকে তার কাছে পাঠাবে?

    নিশ্চয় আমার হয়ে কাজটা করে দিতে তোমাকেই পাঠাব। আরে টমি, এ কথাটা তো এমনিতে আমার মনেই আসত না। কী চমৎকার ধারণা!

    একে বলে দর্শন, বুঝলে? খুব উঁচু দরের কথা-বড় কথা। একটি মাত্র নীতির উপর এটা প্রতিষ্ঠিত: পৃথিবীর ছোট-বড় প্রত্যেকেরই একজন বিশেষ বন্ধু থাকে-এমন বন্ধু যে বিরাগে নয়, অনুরাগ বশেই মনে-প্রাণে তার উপকার করতে ইচ্ছুক। আর তাই, তুমি যেখান থেকে খুসি শুরু কর না কেন, তুমি যার কানে ইচ্ছা তার কানেই তোমার কথা পৌঁছে দিতে পার-তুমি যত ছোট ই হও, আর সে যত বড়ই হোক তাতে কিছু যায়-আসে না। আর ব্যাপারটা কত সরল; একজন প্রাণের বন্ধু খুঁজে নিতে পারলেই হল; তোমার কাজ। সেখানেই শেষ। পরবর্তী বন্ধু সেই খুঁজে নেবে, আর সে খুঁজে নেবে তৃতীয় জনকে, আর এই ভাবে চলবে বন্ধুর পর বন্ধু একটা শিকলের গাঁটের পর গাঁট; আর সেই শিকল বেয়ে তুমি উপরেও উঠতে পার, নীচে ও নামতে পার-যত উঁচুতে তোমার খুসি। অথবা যত নীচে তোমার খুসি।

    কী সুন্দর, টমি।

    এ তো ক-খ-গ-ঘ-র মত সহজ, সরল; কিন্তু আজ পর্যন্ত কাউকে এটা পরীক্ষা করতে দেখেছ কি? না; সকলেই মুখখু। বিনা পরিচিতিতে সে যায় একজন অপরিচিত লোকের কাছে, অথবা তাকে একটা চিঠি লেখে, বোঝ, সম্রাট আমাকে চেনে না, কিন্তু তাতে কি হল-কাল সে অবশ্যই তরমুজ খাবে। দেখে নিও। হাই-হাই-দাঁড়াও! ওই তো বিড়ালের মাংস বিক্রিওয়ালা। বিদায় জিমি; ওকে ধরতেই হবে।

    তাকে ধরল ও। বলল:

    আমার একটা উপকার করবে কি বল?

    করব কি না? সে কথা আবার বলতে হবে! আমি তো তোমারই লোক। মুখের কথাটি খসাও, আর দেখ যে আমি উড়ে চলেছি!

    বাদামওয়ালীর কাছে গিয়ে বল, সব কাজ ফেলে রেখে আমার এই কথাটা সে তার প্রাণের বন্ধুকে বলুক এবং তাকে বলে দিক তার প্রাণের বন্ধুকে বলত। কথাটা বুঝিয়ে দিয়ে সে বলল, এবার ছুটে যাও!

    পরমুহূর্ত থেকেই চিমনি-ঝাড়ুদারের কথটা বলতে মাটের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করল।

    .

    ০৩.

    পরদিন মাঝ রাতে সম্রাটের রোগশয্যার পাশে বসে ডাক্তাররা ফিস্ ফিস্ করে কথা বলছিল। তাদের সমূহ বিপদ, কারণ সম্রাটের। অবস্থা খুব খারাপ। এ সত্যকে তারা নিজেদের কাছেও আর লুকিয়ে রাখতে পারছিল না যে যতবার তারা সম্রাটের পেটে নতুন নতুন ওষুধের শিশি ঢালছে ততবারই তার অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ছে। তাই তাদের খুম মন খারাপ। বেচারি সম্রাট শীর্ণ দেহে চোখ বুজে চুপচাপ শুয়ে আছে, পেয়ারের বাঁচা চাকরটা পাখা চালিয়ে মাছি তাড়াচ্ছে আর নিঃশব্দে কাঁদছে। হঠাৎ দরোয়ানের রেশমী পোশাকের খসখস শব্দ কানে যেতেই সে দেখল, লর্ড গৃহকর্তা দরজায় উঁকি মেরে অত্যন্ত উত্তেজিতভাবে ইঙ্গিতে তাকে ডাকছে। তাড়াতাড়ি পা টিপে-টিপে সে তার প্রিয় ও পূজনীয় গৃহকর্তার কাছে গেল সে বলল:

    একমাত্র তুমিই তাকে বুঝিয়ে রাজী করাতে পারবে বাবা। কাজটা তোমাকে অবশ্যই করতে হবে। এটা নিয়ে তাকে খাইয়ে দাও; তাহলেই সম্রাট বেঁচে যাবেন।

    আমার মাথার দিব্যি দিয়ে বলছি, এটা তাকে খাওয়াবই।

    তাজা, লাল তরমুজের দুটো ফালি মাত্র।

    পরদিন সকালেই সর্বত্র সংবাদ রটে গেল যে সম্রাট আবার সুস্থ হয়ে উঠেছে এবং সব কটি ডাক্তারকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে। সারা দেশে খুসির জোয়ার বয়ে গেল। শুরু হয়ে গেল আলোকসজ্জার তোড়জোড়।

    প্রাতরাশের পরে সম্রাট বসে ভাবছিল। তার কৃতজ্ঞতা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। তাই সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উপযুক্ত একটা পুরস্কার উপকারীকে দেবার কথাই সে ভাবছিল। মনে মনে বিষয়টা স্থির করে সে ছোকরা চাকরকে ডেকে জিজ্ঞাসা করল, সে নিজেই ওষুধটা। আবিস্কার করেছে কি না। ছেলেটি বলল–না-সে ওটা পেয়েছিল লর্ড গৃহকর্তার কাছ থেকে।

    তাকে পাঠিয়ে দিয়ে সম্রাট আবার পুরস্কারের কথা ভাবতে লাগল। গৃহকর্তা একজন আর্ল; সম্রাট তাকে ডিউক পদে অভিষিক্ত করবে এবং বিরোধী পক্ষের জনৈক সদস্যের মালিকানাধীন প্রচুর ভূ-সম্পত্তি তাকেই দান করবে। তাই তাকে ডেকে পাঠিয়ে জানতে চাইল, সেই ওষুধটা আবিস্কার করেছে কি না। কিন্তু গৃহকর্তাটি সৎ মানুষ, সে বলল, সে ওটা পেয়েছে বড় দেওয়ানের কাছ থেকে। তাকে পাঠিয়ে দিয়ে সম্রাট আরও বড় কিছু ভাবতে লাগল। দেওয়ান ছিল একজন ভাইকাউন্ট, তাকে সে আর্ল বানাবে এবং প্রচুর উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেবে। কিন্তু দেওয়ান তাকে বলল প্রথম লর্ডের কথা, কাজেই আবার নতুন করে ভাবনা-চিন্তা। সম্রাট এবার একটা ছোট খাট পুরস্কারের কথা ভাবল। কিন্তু প্রথম লর্ড ব্যাপারটাকে আরও পিছিয়ে দিল এবং সম্রাট কেও নতুন করে ভাবতে হল আরও ছোট একটি যথাযোগ্য পুরস্কারের কথা।

    অবশেষে একের পর এক একঘেয়ে অনুসন্ধন-পর্ব ভেঙে দিয়ে তাড়াতাড়ি কাজ হাসিল করবার জন্য সম্রাট গোয়েন্দা বিভাগের মহাপ্রধানকে ডেকে পাঠাল এবং এই ওষুধ একেবারে গোড়ায় কার কাছ থেকে এসেছে সেটা খুঁজে বের করবার নির্দেশ দিল। আসল উপকারীকেই পুরস্কৃত করা চাই।

    সন্ধা নটায় গোয়েন্দা মহাপ্রধান আসল খবর এনে দিল। জিমি নামক চিমনি-ঝাড়ুদারকে সে খুঁজে বের করেছে। গভীর আবেগে সম্রাট বলল:

    সাহসী বালক আমার জীবন রক্ষা করেছে; সেজন্য তাকে অনুশোচনা করতে হবে না।

    নিজের একজোড়া বুট জুতো সম্রাট ছেলেটি কে পাঠিয়ে দিল; তার যত জুতো ছিল তার মধ্যে এই জোড়াটাই দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ। কিন্তু বুট জোড়া জিমির পায়ে অনেক বড় হল, কিন্তু বেশ মাপমত লাগল জুলু-র পায়। কাজেই সব কিছুই যেমনটি হওয়া উচিৎ তেমনটি ই হল।

    .

    প্রথম গল্পের উপসংহার

    এবার-ব্যাপারটা ধরতে পেরেছ তো?

    সে কথা স্বীকার করতে আমি বাধ্য। আর তোমার কথামতই কাজ হবে। কালই কাজ হাসিল করব। ডিরেক্টর-জেনারেলের প্রাণের বন্ধুকে আমি ঘনিষ্ঠ ভাবেই চিনি। সে আমাকে একটা পরিচয়পত্র দেবে; তাতে লেখা থাকবে, আমার বিষয়টা সরকারের পক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাক্ষাতের কোন রকম পূর্ব-ব্যবস্থা না করেই সেই চিঠি নিয়ে আমি যাব, আমার কার্ড সহ চিঠি টা ভিতরে পাঠিয়ে দেব, আর আমাকে আধ মিনিট ও অপেক্ষা করতে হবে না।

    কথাগুলো অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেল; সরকার সেই বুট জুতোকে স্বীকৃতি দিল।

    [১৯০১]

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleঝাঁপতাল – মন্দাক্রান্তা সেন
    Next Article বিলেতে সাড়ে সাতশ দিন – মুহম্মদ আবদুল হাই
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }