Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মাল্যবান – জীবনানন্দ দাশ

    জীবনানন্দ দাশ এক পাতা গল্প189 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ০৭. পরদিন সিনেমায়

    পরদিন উৎপলা আগ বাড়িয়ে বললে, সিনেমায় চল।

    অফিস ছুটি ছিল সে-দিনও তিনটের শো-তে গেল তারা। ট্রাম থেকে নেমে উৎপলা বললে, বক্সে বসবে তো?

    না, সে ঢের খরচ।

    তাহলে কোথায় যাবে আবার। ছবিতে বক্সে না বসলে ভালো লাগে না।

    কেন, নিচের গদিতে বসেও তো বেশ আরাম।

    আরামের জন্যে বলছি না আমি—

    তবে?

    বক্সে বসলে নিচের লোকেরা হাঁস-হাঁসিনের মতো ঘাড় বাঁকিয়ে আমাদের দিকে তাকায়, দেখতে বেশ লাগে।

    মাল্যবান হেসে বললে, ওঃ সেই। তন ঘণ্টার জন্যে তো শুধু, তারপর সিনেমা ভেঙে গেলে কেউ কি আর বক্সের মানুষদের কথা মনে রাখে।

    তা রাখে বৈ কি। যদি কোনো চেনা মানুষ নিচের থেকে আমাদের দেখতে চায়, তাহলে জনে-জনে বলে বেড়াবে কথাটা। আচ্ছা রগড়ই হবে! খুব কি খারাপ জিনিস হবে কথাটা চার হাত-পায়ে চতুর্দিকে ছুটে বেড়াবে

    কেমন যেন নির্দোষ শয়তান মেয়ের মতো হাসি-ভেঁপো ইশকুলের উৎপলার পাউডার -ক্রিম মাখানো চমৎকার মুখখানাকে আঁকড়ে ধরল। হি-হি করে হাসতে লাগল সে।

    মাল্যবান আড়চোখে একবার উৎপলার দিকে তাকিয়ে বললে, না, তা নয়—তবে এতে আমাদের কী আর লাভ।

    বেশ রগড় হয়।

    এ-রকম রগড়ের কী আর মূল্য আছে।

    মূল্য নেই? তুমি বললেই হল নেই? নিশ্চয়ই আছে। না থেকে পারে না।

    হাঁটতে—হাঁটতে উৎপলা বললে, সে দিন তো সোনার ঘড়ি বেচে তিন শো পঁচাত্তর টাকা পেলে-বক্সের টিকিট কিনতে তোমার এত ভয়—

    মিছেমিছি পয়সাবাজি করে কী লাভ।

    মিছিমিছি হল?

    চেনা মানুষ কে এমন থাকবে নিচে যে, বক্সে আমাদের দেশে ঈর্ষায় রাতে ঘুমোতে পারবে না আর। বলেই মাল্যবান একটু দাঁত বার করে হাসল।

    উৎপলা বললে, ঝপ করে মিথ্যে কথা বলে ফেললে।

    কেন, মিছে কথা কী হল?

    ঈর্ষার কথা বলেছিলাম আমি?

    বেশ মজা হবে, বেশ পাঁয়তাড়া কষা হবে, বলেছিলে তুমি। তা তো হবে, কিন্তু অন্যেরা ঈর্ষায় না পুড়লে রগড় ফলাও হয় কী করে?

    বেশ তো, পুড়ুক হিংসায়।

    বেশ। পুড়ুক। মাল্যবান টিকিট-ঘরের দিকে এগিয়ে গেল।

    মাল্যবান অবিশ্যি সেকেন্ড ক্লাসের টিকিট কাটল—ম্যাটিনির সময়ে আর্ধেক দামে পেলে—তিন-চার টাকাও খরচ হল না তার।

    যাক, আমি বাড়ি ফিরে যাই— উৎপলা প্লাগ ঢোকাতে গিয়ে বিদ্যুতের ঘা খেয়ে যেন বললে।

    কেন?

    দেখব না সিনেমা।

    তুমিই তো সকাল থেকে তাড়া দিলে সিনেমায় আসবার জন্যে।

    ঢের হয়েছে, আর কোনোদিন আসতে চাইব না।

    কিন্তু এখন তো চলো।

    তুমি আর মনু যাও।

    আর তুমি?

    ঠিক আছে। যাও তোমরা।

    হুশ, এ-রকম ছেলেমানুষি করে নাকি, পলা।

    কী টিকিট কিনেছ, দেখেছি আমি, ঝামটা মেরে উৎপলা বললে, ছেলেমানুষি? আমার? নাম ডোবালে তুমি। ধনবান খোয়ালে টিকিট কিনে। ওমা, থার্ড ক্লাসের টিকিট।

    কে বললে তোমাকে? টিকিটগুলো উৎপলার চোখের সামনে ধরে মাল্যবান বললে, সেকেন্ড ক্লাস

    তবে দেড় টাকা নিয়ে কেন—সেকেন্ড ক্লাসে তো তিন টাকা দুআনা নেবার কথা—

    ম্যাটিনিতে অনেক দিন পরে এলাম, তাই ভুলে গ্যাছ দর-দস্তুর সব। এটা ম্যাটিনি—আদ্ধেক দাম—

    উৎপলা দুএক পা হেঁটে মুখিয়ে এসে বললে, তাহলে ফার্স্ট ক্লাস করলেই পারতে।

    ভেবেছিলাম, কিন্তু তাতে সীট বড় পেছনে পড়ে যেত।

    আ মল! সিনেমায় পেছনে বসেই তো ভালো দেখা যায়—

    কিন্তু, তুমি চোখে তো কম দ্যাখ—

    কে, আমি? উৎপলা মাল্যবানের দিকে সাঁ করে তার গালে চড় মারবার মতো চোখ তুলে তাকাল, আমি চোখে কম না দেখলে সেকেন্ড ক্লাসের টিকিট কেনার ওজোর টেকে না? না-কি?

    তাই বুঝি তাই? গত বার যখন তোমাকে ফার্স্ট ক্লাসে নিয়ে গেলাম, তুমি সমস্তটা সময় আমাকে বললে, কিছু দেখছ না, ঝাপসা দেখছ—তুমি তো সামনে এগিয়ে বসতে চাইছিলে সেদিন।— বলতে বলতে মাল্যবান উৎপলার দিকে সোজাসুজি মুখ ফিরিয়ে তাকিয়ে বললে, দাঁড়িয়ে রইলে যে—

    আমি বড় রাস্তার মোড়ে গিয়ে একটা বাস ধরে চলে যাব।

    ছবি দেখবে না?

    উৎপলা মুখ ফিরিয়ে রইল।

    মাল্যবান বললে, বেশ, বাড়ি চলো তাহলে—

    এ-টিকিটগুলো পাল্টে টাকা নিয়ে এসো।

    এখন ফেরৎ নেবে কেন?

    তাহলে বিক্রি করে দাও কারু কাছে।

    কে কিনবে?

    গলাবন্ধ ছিট, খোঁচা দাড়ি দেখলে কেউ কিনবে না বটে?

    আজ অবিশ্যি মাল্যবান একটা তসরের পাঞ্জাবী গায়ে দিয়ে এসেছিল—দাড়িও কামিয়ে ছিল।

    একটু কাঠ মেরে গিয়ে, হেসে, হাসিমাখা দাঁতে কুণ্ঠায় সঙ্কোচে মাল্যবান ইতস্তত তাকাতে লাগল কার কাছে টিকিট বিক্রি করা যায়। দু-চার জায়গা ঘুরে সুবিধে হল না। তারপর একজন ভদ্রলোক টিকিট নেড়ে-চেড়ে বললেন, আজকের তারিখ তো? কলকাতা শহরে নানা রকম চোট্টা থাকে; যাক, তারিখটা আজকেরই; হ্যাঁ, এই সেন্টারের সীটই আমি চেয়েছিলাম আমি আর আমার দুই মেয়ে। তা বেশ, টিকিটের মাথায় চেয়েছিলাম—আমি আর আমার দুই মেয়ে। তা বেশ, টিকিটের মাথায় দুআনা দুআনা কম নেবেন,—একুনে ছ গণ্ডা পয়সা কমিয়ে দিতে হবে। আপনার তো সবই ভাগাড়ে গড়াচ্ছিল–

    পকেট থেকে ব্যাগ বার করে ভদ্রলোক বললেন, আট আনার টিকিট ফুরিয়ে গেছে কিনা সব। এসেছিও সেই চেলার থেকে কলকাতায় ছবি দেখতে। ফিরে যেতে তো আর পারি না; নইলে আমি ও হাতির শুড় ব্যাঙের লেজ সব অফিস থেকেই কিনি। তা এই একটা টাকা নিন, টিকিট তিনটে দিয়ে দিন আর-কি।

    উৎপলা মাল্যবানের পাঞ্জাবীর ঝুল ধরে এক টান মেরে বললে, কৈ, ভেতরে তো ঘণ্টা পড়ে গেছে। দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে পা ব্যথা হয়ে গেল, তবুও তোমার ন্যাকড়া ফুরায় না দেখি।

    শুনে মাল্যবানেরা পা চালাতেই ভদ্রলোকটি বললেন, ও মশাই, ও মশাই, শুনছেন দেড় টাকাই দিচ্ছি, নিন, আসুন, নিন। ও মশাই, ও দাদা!

    আর ও দাদা! তিন জনে ভেতরে ঢুকল। মনু মাঝখানে, দুপাশে দুজন; গদি-আঁটা চেয়ারে অন্ধকারের মধ্যে বেশ লাগছিল মনুর—মাল্যবানেরও। বই আরম্ভ হয়ে গেছে।

    উৎপলা পর্দাটাকে অগ্রাহ্য করে ওপরের দিকে তাকাতে লাগল বেশি। বক্সে কে কোথায় বসেছে ঠাহর করতে পারা যায় কি-না, কোনো চেনা মুখ চোখে পড়ে কি-না; ফাস্ট-ক্লাসের সীটের বা কারা; এই সব নিয়ে অনেক কটা মুহূর্ত কেটে গেল তার। কিন্তু অন্ধকারের মধ্যে বিশেষ কিছু বুঝল না সে। তারপর নিঃশ্বাস ফেলে অবসন্ন হয়ে ছবির দিকে তাকাল। একজন অ্যাংলো-ইণ্ডিয়ান পুরুষ উৎপলার পাশের সীটে বসে সিগারেট টানছিল; মন তার বিচ্ছিরি লাগছিল তাতে।

    মাল্যবানকে বললে, তুমি এখানে এসো, আমি তোমার চেয়ারে গিয়ে বসি।

    সীট বদলে যখন বসেছে, উৎপলা দেখল তার পাশে একটি অ্যাংলো ইন্ডিয়ান মেয়ে চকোলেট খাচ্ছে আর কাশছে–

    অনবরত কাশছে—

    ব্যতিব্যস্ত বোধ করল উৎপলা, পর-পর চার-পাঁচটি ফিরিঙ্গি মেয়ে বসে গেছে। উৎপলা মাল্যবানকে বললে, এ পাঁচ জন কি বি.এন.আর.-এর মেয়ে নাকি টেলিফোনের–

    আস্তে।

    মেয়ে কটি নিজেদের বাড়ির খবর হাঁড়ির খবর, মাঝে-মাঝে ছবির তাৎপর্য নিয়ে গলা ছেড়ে হাঁকড়াবার জন্যেই হাজির হয়েছিল। যখনই ঘরোয়া কথা বলবার তাগিদ জুড়িয়ে যাচ্ছিল, হেসে, হল্লা করে চিৎকার পেড়ে, পর্দার ছবিটাকে তারাই তো জীইয়ে রাখছিল—

    কিছু জানে না, বোঝে না, কলির সন্ধ্যায় কী করবে আর, চ্যাঁচাচ্ছে–একটু নড়ে-চড়ে বসে কৌতুকে ও বিমর্ষতায় বিমিশ্র একটা নিঃশ্বাস ফেলে উৎপলা বললে।

    কাদের কথা বলছ?

    ফিরিঙ্গি মেমদের : গুল ছাড়ছে শুনছ না?

    কেন ঘাঁটাচ্ছ ওদের? মাল্যবান উৎপলার কাঁধের ওপর এক বার হাত রেখে হাত সরিয়ে নিয়ে বললে।

    কিন্তু, তবুও, কথা বলবার দরকার আছে ঢের উৎপলার। চাপা গলায় বললে, ছবি তো আমরাও দেখছি, বাপু, তোমরাও দেখছ। ছবি তো চিত্তির: তা তো দেখছিই! কিন্তু তাই বলে দিক-বিদিকে নয়া আণ্ডা ছুঁড়ে একেবারে ঝোল বের করে দেবে না-কি? পর্দায় এক জনে একটা ছেড়া ট্রাউজার পরে এসেছে—-ওম্নি হি-হি করে হাসি; একটা গাধা দৌড়ে গেল—ওমি হু-হু-হু-হু; পকেটের থেকে একজনে এক জোড়া নকল গোঁফ বের করল—ওমি ফ্যা-ফ্যা; বাস্কেটের থেকে একটা হাঁদুর লাফিয়ে পড়ল তো আমাদের মাথায়ও চাতাল ফাটল। হাতিবাগানে আগুন লেগেছে, না-কি দমকল ছুটেছে, না-কি শোভাবাজারের দামোদর বাবুরা সব খুন হয়ে গেল—এ কী-সব মাগীদের কোলে করে বসেছি আমি।

    মাল্যবান ঘাড় কাৎ করে একটা সিগারেট জ্বেলে নিল। উৎপলা বা অ্যাংলোইণ্ডিয়ান মেয়েদের দিকে সে ফিরে তাকাল না। ছবিটা তাকে আকৃষ্ট করেনি। মাল্যবান ছবি দেখতে-দেখতে নিজের সত্তার ভেতরের অঙ্গারশিল্প ও কাঠখোদাইয়ের আবছায়া-মতন অনুপম ছবিগুলো দেখে নিচ্ছিল—চোখ বুজে। বাস্তবিকই চোখ বুজে ছিল সে।..ঘুমোচ্ছিল না, কথা ভাবছিল; কারা যেন কোথায়—অনেক দূরে সঙ্গত করছে। এক-মনে শুনছিল সে।

    মাল্যবানকে একটা ধাক্কা দিয়ে উৎপলা বললে, রেলী ব্রাদার্সের, না, পোর্ট কমিশনের বিয়ে করেছে, না রাঁড়ি?

    মাল্যবান যেন অপারেশন টেবিলের ক্লোরোফর্মের ঘোর আস্তে আস্তে কাযিয়ে উঠতে উঠতে চোখ মেলতে মেলতে বললে, কে?

    এই যে মেমসাহেব কটি : আমার পাশে যারা বসে আছে?

    ওরা? মাল্যবান অনেকখানি জেগে উঠে আরো জেগে উঠতে চেয়ে, তারপরে বললে, ওদের দিয়ে তুমি কী করবে?

    আমাকে ছবিটা দেখতেই দিচ্ছে না।

    ওদের মনে ওরা থাক। ছবি দেখতে দিচ্ছে না বলছ। দ্যাখ ছবি; দেখলেই তো দেখা হল।

    বলে দিল কথা! আর বাপু, কী রকম গুল মারছে শুনছ না। হাড়হদ্দ ঘাঁটিয়ে বার করছে।

    কীসের?

    না কীসের?

    ওদের কথায় কান দিয়ো না।

    কান টেনে মাথা টেনে নিয়ে যায় যে—

    বাপ রে, উৎপলা ধড়ফড় চন মন করে উঠল, আমাকে চেপে বসেছে। ধরছে—উঃ!

    দ্যাখ-না, ছবিটা দ্যাখ–

    এই জন্যেই আমি বলেছিলাম বক্সের কথা। উঃ! ধরধর-হাতিমুখো গণেশ এসে আমার কোল ঠেসে বসেছে রে বাবা—গেল—গেল—হয়ে গেল—হয়ে গেল আমার—

    ছবিটা দ্যাখ, ছবিটা দ্যাখ মাল্যবানের সীটে এসে বসল উৎপলা। মাল্যবানকে যেতে হল তার স্ত্রীর চেয়ারে। সেই অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান পুরুষটি রইল উৎপলার পাশে। কিন্তু লোকটা চুপচাপ, উৎপলার কোনো অসুবিধে হবার কথা নয়।

    খানিকক্ষণ স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে উৎপলা বললে, খুব, হিজিবিজি বই, না?

    ছবিটা ভালো মনে হচ্ছে না।

    খারাপও লাগছে না তোমার। আড়ি পেতে তাকিয়ে আছ তো বাপু।

    কী করব, আট গণ্ডা পয়সা দিয়েছি—

    মনু ঘুমোচ্ছিল।

    উৎপলা তার মাথায় একটা গাঁট্টা মেরে বললে, দ্যাখ, ছবি দ্যাখ—তোর জন্যেই তো গচ্চা গেল দেড় টাকা। খা-খা—গঙ্গার ইলিশ খা–না খাবি তো সুঁটকি মাছ খা। চার দিকে সব বকনা বাছুর হা করে তাকিয়ে আছে। তাদের কানে ডাঁশ উড়ছে। কী খাবি খা—কী খাবি খা— বলে গাঁট্টা মারতে মারতে মনুকে জাগিয়ে দিল উৎপলা।

    মনু চোখ কচলাতে-কচলাতে এ-দিক সেদিক তাকিয়ে অবশেষে ছবির দিকে ফিরে চুম্বক পাহাড়ের দিকেই ফিরল যেন;—এমনই লেপটে রইল ছবির গায়ে যে, কিছুই দেখল না আর। দেখে-শুনে তবুও গাঁট্টা মারতে গেল না আর মনুর মাথায় উৎপলা। সময়ের ভিতরে নয়—নিঃসময়ে নয়, নিজের প্রাণে অথবা হৃদয়েও নয়—অথচ এই সবেরই পরিচিত-আধোপরিচিত কেমন একটা আপতিত নিরবচ্ছিন্নতার ভেতর ঘাড় হেঁট করে ডুবে যেতে লাগল উৎপলা অনুপম অপর দেশের অপর জীবন অন্ধকার মৃত্যু নিৰ্দায়ের ভেতর।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleঅগ্রন্থিত কবিতা – জীবনানন্দ দাশ
    Next Article শ্রেষ্ঠ কবিতা – জীবনানন্দ দাশ

    Related Articles

    জীবনানন্দ দাশ

    ঝরা পালক – জীবনানন্দ দাশ

    August 14, 2025
    জীবনানন্দ দাশ

    ধূসর পাণ্ডুলিপি – জীবনানন্দ দাশ

    August 14, 2025
    জীবনানন্দ দাশ

    বনলতা সেন – জীবনানন্দ দাশ

    August 14, 2025
    জীবনানন্দ দাশ

    মহাপৃথিবী – জীবনানন্দ দাশ

    August 14, 2025
    জীবনানন্দ দাশ

    সাতটি তারার তিমির – জীবনানন্দ দাশ

    August 14, 2025
    জীবনানন্দ দাশ

    শ্রেষ্ঠ কবিতা – জীবনানন্দ দাশ

    August 13, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }