Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    শ্রীশ্রীচণ্ডী – অনুবাদ : পঞ্চানন তর্করত্ন

    September 9, 2025

    পুলিশ কাহিনী ১ – পঞ্চানন ঘোষাল (প্রথম খণ্ড)

    September 9, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মাসুদ রানা ১৪৩ – অপহরণ-১

    কাজী আনোয়ার হোসেন এক পাতা গল্প181 Mins Read0

    অপহরণ-১.৩

    তিন

    পিছনের দেয়াল ঘড়ি দেখার জন্যে চেয়ারে মোচড় খেলো হফ ভ্যানডেরবার্গ। রাগে চোখমুখ লাল হয়ে উঠল বুড়োর। পাশে দাঁড়ানো যুবকের দিকে ফিরল সে, কটমট করে তাকাল। ‘কি ঘটছে খবর নাও!’ কড়া ধমকের সুরে হুকুম করল সে। ‘এরা আমাদের ভেবেছে কি!’

    ‘ওস্তাদ….’ শুরু করল এডলফ ডয়েট।

    চোখে আগুন ঝরা দৃষ্টি নিয়ে হাতের লম্বা ছড়িটা মাথার ওপর তুলল ভ্যানডেরবার্গ, মারবে। শিরদাঁড়া খাড়া হয়ে গেল ডয়েটের, ডিপারচার লাউঞ্জ ধরে ত্রস্ত পায়ে ডেস্কের দিকে এগোল সে। লোকজনের সামনে ওস্তাদের এ-ধরনের অপমানকর আচরণ গা সয়ে গেছে তার। ওস্তাদ পৃথিবীর সেরা বেহালাবাদকদের একজন, তা না হলে কবেই এই চাকরি ছেড়ে দিত।

    ডেস্কের পিছনে একটা মেয়ে আর একজন পুরুষ বসে আছে, পরনে খয়েরি ইউনিফর্ম। তালিকা মিলিয়ে এরাই আরোহীদের ভেতরে ঢুকিয়েছে। কাজ শেষ, সময় কাটছে একঘেয়ে।

    অনেকক্ষণ হলো অপেক্ষা করিয়ে রাখা হয়েছে আরোহীদের, সবাই তারা ভিয়েনা ত্যাগ করে যাবে। প্রত্যেকে অসন্তুষ্ট, কিন্তু কারও কিছু করার নেই।

    ডয়েটকে আসতে দেখে ডেস্কের পিছনে ব্যস্তভাবে উঠে দাঁড়াল ওরা।

    দু’চারটে কথা ভ্যানডেরবার্গের কানে ঢুকল, ‘ভয়ানক দুঃখিত…দুর্ভাগ্য, করার কিছু নেই…ওস্তাদের কোন অসুবিধে হচ্ছে না তো?—আমাদের ভি.আই.পি. প্যাসেঞ্জারদের জন্যে আলাদা লাউঞ্জ আছে।

    মনে মনে তিক্ত হাসল ভ্যানডেরবার্গ। লাউঞ্জে যদি সত্যি সত্যি স্বনামধন্য ব্যক্তিদের জায়গা হত, উৎসাহ বোধ করত সে। কিন্তু এয়ারলাইন কোম্পানিগুলোর বিচারে যে আরোহী যত বেশি মাইল পাড়ি দেবে তার মর্যাদা তত বেশি। কুকুর-বিড়ালও ভি.আই.পি. লাউঞ্জে ঢোকার সুযোগ পাবে যদি তাদের নামে প্রথম শ্রেণীর লম্বা জার্নির টিকেট কাটা হয়। এখানে ব্যক্তিত্ব, বংশগৌরব, বা খ্যাতির কোন মূল্য নেই। যে-কেউ যোগ্য বিবেচিত হতে পারে। ভি.আই.পি. লাউঞ্জ তো নয়, গোয়ালঘর। গেলে হয়তো দেখা যাবে কদর্য চেহারার ইহুদিরা হাত-পা ছড়িয়ে বসে ব্যবসা নিয়ে আলাপ জুড়ে দিয়েছে। দুনিয়ার সব বড় বড় ব্যবসাই তো এখন ওদের হাতে। অসহ্য!

    অতীতের কথা মনে পড়ল ভ্যানডেরবার্গের। ভ্রমণে তখন সত্যি আনন্দ ছিল। ট্রেনগুলো ছিল ধীরগতি, কিন্তু পৌঁছুতে সময়ের হেরফের হত না। ট্রেনে দু’ধরনের কার থাকত-সাধারণ লোকেরা অভিজাতদের কারে ঢুকতে পারত না।

    আকাশ ভ্রমণের যুগে সব কিছু বদলে গেছে। তার মত আরোহীরা বিশেষ মর্যাদা হারিয়েছে। প্রথম শ্রেণীর টিকেট কাটলেও আজকাল তেমন সুযোগ-সুবিধে জোটে না-বিনা পয়সায় ককটেল খেতে দেয়, আর সীট একটু চওড়া, ব্যস। বিমান কোম্পানিগুলো ব্যক্তি বিশেষকে খাতির করে না, সমষ্টিকে নিয়েই তারা ব্যস্ত। ছোট বড় সবার সাথে একই আচরণ করে। ‘কোথায় যাবেন, স্যার? নিউ ইয়র্ক? এই নিন।’ ক্লিক, ক্লিক, ক্লিক। কমপিউটর থেকে তোমার টিকেট বেরিয়ে এল। ‘দুঃখিত, স্যার, আপনার ব্যাগগুলো খুলে দেখতে হবে। একটু যদি এদিকে সরে এসে দাঁড়ান।’ ক্লিক, ক্লিক। মেশিন জানিয়ে দিল, তোমার পকেটে আগ্নেয়াস্ত্র নেই, জুতোর তলায় তুমি বোমা নিয়ে যাচ্ছ না।

    কি স্পর্ধা! জিজ্ঞেস করে সাথে পিস্তল বা বোমা আছে কিনা! হ্যাঁ, ভ্রমণের জন্যে ট্রেনই ভ্যানডেরবার্গের প্রিয়, কিন্তু অস্ট্রীয়া আর আমেরিকার মাঝখানে ট্রেন চলে না। মাত্র দশ দিনের জন্যে মার্কিন মুলুকে যাচ্ছে সে, সাতটা শহরে অনুষ্ঠান করবে, সেখানেও ট্রেনে উঠলে সময়ে কুলাবে না। তাছাড়া, ভ্যানডেরবার্গ শুনেছে, আমেরিকান ট্রেনও নাকি এয়ারলাইনগুলোর মত, গুণী লোকদের বিশেষ কোন খাতির নেই।

    কাজেই প্লেনে না চড়ে উপায় নেই তার।

    তবে, অন্তত একটা ব্যাপারে, নিজের প্রাপ্য সম্মান আদায় করে নিয়েছে সে। অন্য কোন আরোহী হলে এই সুবিধেটুকু দেয়া হত না, প্রথমে তাকেও রাজি হয়নি দিতে। কিন্তু জেদ করায় কাজ হয়েছে, ওকে আর ঘাঁটাতে সাহস পায়নি। ব্যাগগুলোর সাথে বেহালাটাও কনভেয়র বেল্টে রাখতে বলা হয়েছিল, ভ্যানডেরবার্গ পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, ‘তা সম্ভব নয়। ওটা তোমরা হাতে করে বয়ে নিয়ে যাবে।’ ব্যাপারটা নিয়ে খানিকক্ষণ তর্ক হলো। দু’জন মহিলা এয়ারপোর্ট কর্মী নাছোড়বান্দা, বেহালাটা তারা বেল্টে তুলে দিতে চায়। কারও বোঝা বহন করার চাকরি নয় তাদের।

    যুক্তিতে হেরে গিয়ে স্বমূর্তি ধারণ করল ভ্যানডেরবার্গ, মারবে বলে মাথার ওপর ছড়ি তুলল সে। অপমানে, ভয়ে চেঁচামেচি শুরু করল মহিলারা। পুরুষ কর্মীরা ছুটে এল তাড়াতাড়ি। অনেক কষ্টে স্বনামধন্য ওস্তাদকে শান্ত করল তারা। তাদের একজন বেহালাটা হাতে নিল, ভ্যানডেরবার্গ হুমকি দিয়ে বলল, ‘সাবধান! আমার বেহালার যদি কিছু হয়, অনশন করব আমি!’ কর্মী লোকটা বেহালাটাকে এমন ভাবে ধরল, যেন একটা বোমা বয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

    পাশে ফিরে এল এডলফ ডয়েট। ‘আর বেশি দেরি হবে না, ওস্তাদ।’

    ‘বিশ মিনিট আগেও এই কথা বলেছে ওরা!’

    ‘আমার ধারণা এবার বোধহয় সত্যি…’

    ‘ধারণার জন্যে নয়, তোমাকে আমি বেতন দিই,’ ঝাঁঝের সাথে বলল ভ্যানডেরবার্গ, ‘কোথাও কোন সমস্যা হলে সেটা দূর করার জন্যে। আমাকে দেরি করানো হচ্ছে। অথচ এর কোন ব্যাখ্যা নেই!’

    ‘ব্যাপারটা, ওরা বলছে, নিরাপত্তা সংক্রান্ত…।’

    ‘নিরাপত্তা? ঘোড়ার আণ্ডা! নিজেদের অযোগ্যতা চাপা দেয়ার জন্যে মিথ্যে ভয় দেখাচ্ছে ওরা।’ আড়চোখে ডয়েটের দিকে তাকাল ভ্যানডেরবার্গ। ‘না, তোমার বোধহয় কোন দোষ নেই। ‘

    ডয়েট কিছু বলতে গেল, তাকে থামিয়ে দিল ভ্যানডেরবার্গ। ‘থাক। অপেক্ষা যখন করতেই হবে, সময়টা বরং কাজে লাগাই এসো। প্রোগ্রাম লেখা কাগজটা দাও আমাকে।’

    পকেট থেকে ভাঁজ করা একটা কাগজ বের করল ডয়েট। ছোঁ দিয়ে সেটা কেড়ে নিল ভ্যানডেরবার্গ।

    ওস্তাদ কাগজটা পড়ায় মন দিতে ধীরে ধীরে, প্রায় নিঃশব্দে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল ডয়েট। খানিকক্ষণ অন্তত শান্তিতে থাকা যাবে।

    চোখ কুঁচকে কাগজের ওপর ঝুঁকে পড়ল ভ্যানডেরবার্গ প্রথম অনুষ্ঠান নিউ ইয়র্ক সিটির ফিশার হলে। তারপর শিকাগো ডেনভার, আর লস এঞ্জেলেস-এ যেতে হবে। পর পর তিনটে অনুষ্ঠান শেষ করে একদিনের বিরতি, তারপর আবার হিউস্টন আর আটলান্টায় বাজাবে সে। সবশেষে বাজাবে ওয়াশিংটন ডিসি-তে। হোয়াইট হাউসের এই অনুষ্ঠানটা হবে সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ। এই অনুষ্ঠানের জন্যেই তার আমেরিকায় যাওয়া।

    ট্যারা চোখে ডয়েটের দিকে তাকাল সে। ‘ওয়াশিংটনে আমরা কি ফুটপাথে থাকব? তোমাকে হোটেল রিজার্ভ করতে বলিনি আমি?’

    ‘না, স্যার, হোটেল বোধহয় লাগবে না,’ তাড়াতাড়ি বলল ডয়েট। কথাটা আগেও ওস্তাদকে জানিয়েছে সে। ওস্তাদ ভুলে গেছেন, একথা সে বিশ্বাস করে না। বারবার শুনতে ভাল লাগে, বোধহয় সেজন্যেই জিজ্ঞেস করছেন। ‘আমেরিকার প্রেসিডেণ্ট,’ জোর গলায় বলল সে, জানে আশপাশের সবাইকে শোনালে ওস্তাদ বেশি খুশি হবেন, ‘চেয়েছিলেন আপনি যেন ব্লেয়ার হাউসে ওঠেন। ব্লেয়ার হাউস হলো সরকারি অতিথি ভবন…।’

    ‘ব্লেয়ার হাউস কি আমি জানি!’ চোখ পাকাল ভ্যানডেরবার্গ। ‘কিন্তু সিদ্ধান্তহীনতা আমার একদম পছন্দ নয়!’

    গলা খাদে নামাল ডয়েট, ‘শিডিউল নিয়ে গোলমাল, স্যার। সরকারি সফরে একজন প্রধানমন্ত্রী আসছেন ওয়াশিংটনে, তাই…’

    আগের দিন আর নেই, ভাবল ভ্যানডেরবার্গ। গুণী লোকদের চেয়ে গুণ্ডা-পাণ্ডাদের দাম আজকাল অনেক বেশি। রাজনীতিতে আজকাল দু’ধরনের লোক রয়েছে-একদল সাধারণ মানুষকে মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে নির্বাচিত হয়, আরেকদল গায়ের জোরে ক্ষমতা কেড়ে নেয়-দু’দলের কারও মধ্যেই নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষমতা নেই, কেউ তারা জনগণের ভাল চায় না। ওদের না আছে ব্যক্তিত্ব, না আছে মহৎ কোন উদ্দেশ্য। অথচ এরাই দেশে-বিদেশে মর্যাদাবান হিসেবে খাতির যত্ন আদায় করে নিচ্ছে। দুনিয়ার সেরা একজন শিন্ধীর বদলে একজন ঘুষখোর প্রধানমন্ত্রীকে সরকারি অতিথিভবন ছেড়ে দেয়া হবে, বর্তমান যুগে এ আর আশ্চর্য কি।

    মনের সাধ মিটিয়ে পার্সোন্যাল সেক্রেটারিকে গালমন্দ করা হলো না, ইউনিফর্ম পরা একজন এয়ারপোর্ট কর্মী এগিয়ে আসছে। লোকটা ডয়েটকে বলল, ‘আসুন, ওস্তাদকে আমরা সবার আগে প্লেনে তুলে দিই।’

    খাতিরের কি বহর, তিক্ত হেসে ভাবল ভ্যানডেরবার্গ। একজন জাত শিন্ধীর জন্যে এটুকু করেই নিজেদের বিবেকের কাছে পরিষ্কার থাকতে চায় ওরা। চেহারায় রাগ আর অসন্তোষ নিয়ে উঠে দাঁড়াল সে।

    .

    ভিয়েনায় তখন সকাল দশটা, মেঘ ছাড়িয়ে পঁয়ত্রিশ হাজার ফিট উঠে সিধে হলো ভ্যানডেরবার্গের প্লেন। লণ্ডনে, প্রায় ওই একই সময়ে, পিকাডেলির অ্যামব্যাসাডর হোটেল থেকে বেরিয়ে হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হলো রানা।

    আগের দিন লণ্ডনে পৌঁচেছে সে। হোটেলে ঢোকার পর থেকে অপেক্ষার পালা শুরু হয়। আশা, কেউ বা কিছু একটা আসবে। ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করার পর নক করে একটা মেয়ে ঢুকল কামরায়। গায়ের রঙ শ্যামলা, একহারা গড়ন, সম্ভবত ভারতীয় বা পাকিস্তানী। মেয়েটার চোখ দুটো বিষণ্ন, মুখে লাজুক হাসি, কাঁধে নতুন তোয়ালে। কামরা থেকে সে বেরিয়ে যাবার পর দরজায় তালা লাগাল রানা। জানে, বাথরূমে একাধিক তোয়ালে আছে।

    নতুন তোয়ালেটা বাথরূমেই পেল রানা। ভাঁজ খুলতেই ভেতর থেকে মোটা একটা ম্যানিলা এনভেলাপ বেরুল। নতুন ডকুমেন্টগুলো খুঁটিয়ে পরীক্ষা করল ও। জাঁ ভ্যালেরি-র নামে একটা ফ্রেঞ্চ পাসপোর্ট রয়েছে, সাথের আর সব কাগজ-পত্র থেকে জানা গেল জাঁ ভ্যালেরি একজন ফ্রি-ল্যান্স সাংবাদিক। এনভেলাপ থেকে প্লেনের টিকেট, আর লকারের চাবিও বেরোল। পাসপোর্টের ছবিটার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকল রানা, বছর দশেক পর ওর চেহারা ঠিক এই রকমই হবে। সবশেষে একটুকরো কাগজে লেখা কয়েকটা সংলাপ পড়ল রানা।

    সেই রাতেই অটো এমারসনের সমস্ত জিনিস-পত্র খয়েরি একটা কাগজে মুড়ে হোটেল থেকে বেরিয়ে এল রানা। ট্যাক্সি নিয়ে ওয়াটারলু স্টেশনে পৌঁছুল ও। চাবির গায়ে ন’র দেখে লকারটা খুঁজে পেতে বিশেষ অসুবিধে হলো না। ভেতরে একটা পুরানো ক্যানভাসের সুটকেস পাওয়া গেল। লাগেজ ট্যাগে জাঁ ভ্যালেরি-র নাম লেখা রয়েছে, নামের পাশে রয়েছে প্যারিসের একটা ঠিকানা। সুটকেসটা নিল রানা, লকারে রাখল খয়েরি প্যাকেট। বেরিয়ে এল স্টেশন থেকে।

    হেঁটে হোটেলে ফেরার পথে কয়েক জায়গায় থামল রানা। টেমস নদী পেরোবার সময় ব্রিজের ওপর দাঁড়িয় প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করল। ব্রিজ থেকে পার্লামেন্ট ভবন দেখা যায়, শহরের সমস্ত উজ্জ্বল আলো গায়ে মেখে সগর্বে দাঁড়িয়ে আছে। বিগবেন ঘণ্টা দিতে শুরু করল। কালো পানিতে লকারের চাবি ফেলে দিয়ে ব্রিজ থেকে নেমে এল রানা।

    আরেকবার শ্যারিং ক্রসে থামল রানা। কেমিস্টের দোকান থেকে বেরিয়ে এল হোটেলে। নিজের কামরায় ঢুকেই দরজা বন্ধ করল ও, ওর অনুপস্থিতিতে ভেতরে কেউ ঢুকেছিল কিনা ভাল করে পরীক্ষা করল। এরপর বাথরূমে ঢুকল ও, সুইস পাসপোর্ট আর অটো এমারসনের অন্যান্য কাগজ-পত্র সিঙ্কে রেখে সবগুলোয় আগুন ধরিয়ে দিল। আগুন নিভে যেতে দুটো ট্যাপই ছেড়ে দিল, ধীরে ধীরে সমস্ত ছাই নেমে গেল ড্রেনে।

    এরপর কেমিস্টের দোকান থেকে কেনা হেয়ার প্রিপারেশনস-এর মোড়ক খুলল রানা। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পাসপোর্টের ছবির দিকে তাকাল।

    পরদিন, অর্থাৎ আজ সকালে, সকলের অগোচরে ফরাসী সাংবাদিক জাঁ ভ্যালেরি বেরিয়ে এল অ্যামব্যাসাডর হোটেল থেকে। হিথ্রোতে পৌঁছে টি-ডাব্লিউ-এ-র ভিয়েনা থেকে আসা সকালের ফ্লাইটে চড়ে বসল সে, রওনা হয়ে গেল নিউ ইয়র্ক সিটির উদ্দেশে।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleমাসুদ রানা ১৪৪ – অপহরণ-২
    Next Article মাসুদ রানা ৪৫৯ – অন্তর্যামী

    Related Articles

    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৩৮৫-৩৮৬ – হ্যাকার (দুই খণ্ড একত্রে)

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৬ – টপ টেরর

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৪ – নরপশু

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৩ – ধর্মগুরু

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫২ – কালো কুয়াশা

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫১ – মায়া মন্দির

    July 22, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    শ্রীশ্রীচণ্ডী – অনুবাদ : পঞ্চানন তর্করত্ন

    September 9, 2025

    পুলিশ কাহিনী ১ – পঞ্চানন ঘোষাল (প্রথম খণ্ড)

    September 9, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.