Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    শ্রীশ্রীচণ্ডী – অনুবাদ : পঞ্চানন তর্করত্ন

    September 9, 2025

    পুলিশ কাহিনী ১ – পঞ্চানন ঘোষাল (প্রথম খণ্ড)

    September 9, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মাসুদ রানা ১৪৩ – অপহরণ-১

    কাজী আনোয়ার হোসেন এক পাতা গল্প181 Mins Read0

    অপহরণ-১.৯

    নয়

    মাত্র দশ মিনিট এগিয়ে থাকার সুযোগ পেল রানা।

    ল্যাঙ্গার ভিলা থেকে একটাই রাস্তা চলে গেছে ইণ্ডিয়ান স্প্রিং শহরের দিকে। দশ মিনিট আগে এই রাস্তা দিয়েই গেছে রানা। একই রাস্তা দিয়ে এই মুহূর্তে একই দিকে ছুটছে সিক্রেট সার্ভিসের শক্তিশালী গাড়ি।

    গাড়ির সামনে দু’জন এজেণ্ট-একজন ড্রাইভ করছে, অপরজন রাস্তার ওপর চোখ রেখে কথা বলছে রেডিওতে; পিছনে বসেছে আরও দু’জন, রাস্তার দু’দিকে ঘন বনভূমির ওপর তীক্ষ্ণ নজর বুলাচ্ছে তারা।

    ছ’মাইল সামনে রয়েছে ইণ্ডিয়ান স্প্রিং শহর, এবং প্রথম চৌরাস্তা। চিন্তার কিছু নেই, রেডিওতে খবর পেয়ে আগেই রাস্তাগুলোর ওপর ব্যারিকেড তৈরি করেছে পুলিস। রোড-ব্লক বলে কোন যানবাহনই কোন দিকে যেতে পারবে না। ভুয়া স্যাম গ্রেসনের পালাবার কোন উপায় নেই।

    হঠাৎ পিছনের একজন এজেন্ট চেঁচিয়ে উঠে আকাশের দিকে একটা হাত তুলল। ছোট একটা প্লেন, এই মাত্র গাছপালার ভেতর থেকে আকাশে উঠেছে। একটা পাইপার চেরোকি, কালো আকাশের গায়ে প্রায় মিশে আছে গাঢ় রঙের প্লেনটা।

    ঘ্যাচ করে ব্রেক কষল ড্রাইভার, প্রচণ্ড ঝাঁকি সামলে উঠেই লাফ দিয়ে বাকি তিনজন এজেন্ট রাস্তায় নামল। জঙ্গলে ঢুকে একটু পরই বেরিয়ে এল ওরা। ভুয়া স্যাম গ্রেসনের গাড়িটা রয়েছে ওখানে, বনভূমির মাঝখানে ফাঁকা একটা জায়গায়। ওখান থেকেই টেক-অফ করেছে প্লেন। ড্রাইভারের পাশের এজেন্টরা রেডিওতে কথা বলতে শুরু করল। সমস্ত এজেন্টকে চেরোকির ওপর নজর রাখার নির্দেশ দিল সে। ড্রাইভার বসে নেই, মস্ত একটা ইউ টার্ন নিয়ে ভিলার দিকে ফিরে চলল সে।

    .

    গাছপালার ভেতর থেকে উঁকি দিয়ে রাস্তায় তাকাল রানা। সিক্রেট সার্ভিসের গাড়িটাকে বাঁক নিতে দেখল ও। ভিলার দিকে ওরা ফিরে যাচ্ছে বুঝতে পেরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ল একটা।

    জানে, আরও গাড়ি আর লোকজন নিয়ে আবার ফিরে আসবে ওরা। বিভিন্ন সংস্থার ফেডারেল এজেন্টরা দলে দলে এসে ঘিরে ফেলবে গোটা বনভূমি, তন্ন তন্ন করে এলাকার প্রতিটি ইঞ্চি খুঁজবে। ডেট্রয়েট, শিকাগো, ওয়াশিংটন থেকে আসবে ফেডারেল পুলিস আর এফ.বি.আই-এর অপারেটররা। কিন্তু এখুনি নয়, দেরি আছে, অন্তত ঘণ্টা দু’ঘণ্টার আগে নয়।

    এখন শুধু পিছু লেগে থাকবে ল্যাঙ্গার ভিলার এজেন্টরা। তবে, শুরুতেই ওদেরকে ধোঁকা দেয়া সম্ভব হয়েছে। ওরা জানে টিউলিপকে নিয়ে ভুয়া স্যাম গ্রেসন প্লেনে করে পালিয়েছে। ভুলটা এক সময় ভাঙবে ওদের, ততক্ষণে ওদের নাগালের বাইরে চলে যেতে হবে।

    লেক মিশিগানের ওপর দিয়ে পশ্চিমে অদৃশ্য হয়ে গেছে চেরোকি। এবার নিজের পালাবার ব্যবস্থা করতে হয়। জঙ্গলের ভেতর ওর জন্যে একটা রেডিও ট্র্যান্সমিটার রয়েছে। রেখে যাবার কথা ছিল, কিন্তু কে রেখে গেছে রানা জানে না। হয়তো পাইলটকে দিয়েই কাজটা করিয়েছে ডানিয়েল। সেট অন করে ছোট্ট মেসেজ পাঠাল রানা, ‘গোলাপ কুঁড়ি বলছি। ফোন কলটা এখুনি করো।’

    দূরে কোথাও ডানিয়েলের একজন লোক মেসেজটা রিসিভ করল। সাথে সাথে সাড়া দিল সে, ‘রজার, গোলাপ কুঁড়ি।’

    এক ঝটকায় ট্র্যান্সমিটার অফ করল রানা। সেট বেশিক্ষণ অন করা থাকলে ওর অবস্থান ফাঁস হয়ে যেতে পারে। রেডিও যোগাযোগ খুব সহজেই ট্রেস করা যায়।

    ওখানে দাঁড়িয়ে কালো রাস্তার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকল রানা। ঝিঁঝি পোকার ডাক ছাড়া কোথাও কোন শব্দ নেই। জঙ্গলের ভেতর দিয়ে হাঁটা ধরল ও। ল্যাঙ্গার ভিলার দিকে আধ মাইল এগিয়ে থামল। সামনে একটা গাড়ি রয়েছে ওর জন্যে। ভেতরে নতুন পরিচয়-পত্র, ইত্যাদি। যেখানে যা থাকার কথা সবই আছে-সত্যি, কাজের লোক ডানিয়েল।

    .

    চাকরবাকর আর কর্মচারীরা মিসেস কেনটারকিকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে। তার মাথায় পানি ঢালছে হাউজকীপার। গভর্নেসকে তার বেডরূমেই পাওয়া যায়, অজ্ঞান অবস্থায়। চাপা স্বরে কথা বলছিল সবাই, হঠাৎ থেমে গেল গুঞ্জনটা। মিসেস কেনটারকির জ্ঞান ফিরছে।

    .

    ফাদার কলার্ড কথা দিয়েছেন, এখুনি রওনা হবেন তিনি।

    অফিস থেকে বেরিয়ে কালো ডজ ডার্ট-এ চড়লেন ভদ্রলোক। উত্তর দিকে বাঁক নিল গাড়ি, ইণ্ডিয়ান স্প্রিঙের দিকে ছুটল।

    যাজকদের যার যার এলাকা ভাগ করা থাকে। ল্যাঙ্গার পরিবার ফাদার কলার্ডের এলাকায় নিয়মিত বাস করে না। গ্রীষ্মকালে ভিলায় বেড়াতে আসে তারা, তখন প্রার্থনাসভায় হাজিরা দেয়। তবে বছরের শেষে চার্চের নামে ঠিকই পৌঁছে যায় চেকটা।

    আজ হঠাৎ করে তাঁকে ওদের দরকার পড়েছে। ল্যাঙ্গার ভিলায় বড় ধরনের কোন অঘটন ঘটে গেছে। কেউ হয়তো অসুস্থ। অথবা মারা যাচ্ছে। ফোনে লোকটা পরিষ্কার করে কিছু বলেনি।

    নির্জন, অন্ধকার রাস্তা। হেডলাইটের আলোয় ফাদার কলার্ড কিছুই নড়তে দেখলেন না। সামনে একটা বাঁক, গাড়ি ঘোরাবার সাথে সাথে ব্রেকের ওপর দাঁড়িয়ে পড়লেন তিনি।

    রোডব্লক। রাস্তার দু’ধারে একজোড়া স্টেট পুলিস কার, দু’জোড়া হেডলাইটের আলোয় তিনজন ইউনিফর্ম পরা স্টেট পুলিস দাঁড়িয়ে রয়েছে। সবাই সশস্ত্র।

    গাড়ি থামিয়ে জানালার কাঁচ নামালেন ফাদার। একজন লোক তাঁর দিকে এগিয়ে এল। স্টেট ট্রুপার, এলাকার কেউ নয়, ফাদার তাকে চিনতে পারলেন না।

    ‘কোথায় যাচ্ছেন, ফাদার?’

    ‘কেন, ল্যাঙ্গার ভিলায়। ওরা আমাকে ফোনে ডেকে পাঠাল।’

    ঘাড় ফিরিয়ে বাকি দু’জনের দিকে তাকাল লোকটা। ওদের দৃষ্টি বিনিময়ের অর্থ ফাদারের বোধগম্য হলো না। জানতে চাইলেন, ‘ব্যাপারটা কি? কিছু ঘটেছে?’

    লোকটা তাকে পাল্টা প্রশ্ন করল, ‘সাথে পরিচয়-পত্র আছে?’

    ‘হ্যাঁ, কেন থাকবে না।’ পকেট থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স, আর ক্লেরিকাল আইডেনটিফিকেশন কার্ড বের করে বাড়িয়ে দিলেন ফাদার।

    কাগজগুলো নিয়ে একটা গাড়ির কাছে ফিরে গেল লোকটা। ড্যাশবোর্ড থেকে রেডিও মাউথপীস তুলে কথা বলল সে। তার কথা কিছুই শুনতে পেলেন না ফাদার। তবে লক্ষ করলেন, বাকি লোক দু’জন তাঁর দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে যার যার জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকল। গাড়ি নিয়ে এগোবার পথ বন্ধ।

    এক মিনিট পর গাড়ির কাছ থেকে ফিরে এল লোকটা। ‘সব ঠিক আছে, ফাদার,’ বলল সে। ‘আপনি যেতে পারেন। ফাদারের হাতে কাগজগুলো ফিরিয়ে দিল সে। তারপর নিঃশব্দ ইঙ্গিতে পথ ছেড়ে সরে দাঁড়াবার নির্দেশ দিল সঙ্গীদের।

    ‘ধন্যবাদ,’ ফাদার বললেন। ‘জিজ্ঞেস করতে পারি, এ-সব কি নিয়ে?

    ‘দুঃখিত, ফাদার, আমাদের মুখ খোলা বারণ। তবে ওখানে পৌঁছে আপনি বোধহয় সবই জানতে পারবেন।

    .

    বিশ মিনিট পর জঙ্গল থেকে বেরিয়ে দক্ষিণ দিকে গাড়ি ছুটাল রানা। কোথাও থামতে হলো না, ইণ্ডিয়ান স্প্রিং পেরিয়ে এল নিরাপদে। গাড়িটা এলাকার সবার পরিচিত-কালো একটা ডজ ডার্ট। ফাদার কলার্ড আর রানা, দু’জনের লাইসেন্স প্লেটও হুবহু এক। গাড়ি দুটোর মধ্যে একমাত্র পার্থক্য হলো, রানার ডজে একটা ট্রাঙ্ক রয়েছে, ভেণ্টিলেটর সহ। ভেতরে একটা খেলনা।

    আরও দশ মাইল পেরিয়ে শহরের শেষ মাথায় পৌঁছুল রানা। ধীরে ধীরে স্পীড কমিয়ে দাঁড় করাল গাড়ি। সামনে রোড ব্লক। স্টেট পুলিস কারের দু’জোড়া হেডলাইটের আলোয় দাঁড়িয়ে রয়েছে তিনজন ট্রুপার।

    ট্রুপারদের একজন এগিয়ে এল। ‘ও, আপনি, ফাদার,’ বলল সে, ‘ভিলার কি অবস্থা বলুন।’

    ‘কি আর অবস্থা,’ বড় করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল রানা। ‘সবাই খুব আতঙ্কিত। কোন খবর পাওয়া গেল?’

    ‘এখনও কিছু কানে আসেনি। ফেডারেল পুলিস মুখ খুলতে চায় না। শুধু জানি, এখনও আমাদের ফিরে যেতে বলেনি। ‘

    রানা গম্ভীর। বিষণ্ন ভঙ্গিতে মাথা নাড়ল। ‘যাই, বাড়ি ফিরে অপেক্ষা করি…’

    ‘ঠিক আছে, ফাদার, যান। আবার হয়তো দেখা হবে।’

    ‘মনে হয় না,’ বলল রানা। ‘অতক্ষণ আপনারা এখানে থাকবেন না বলেই আশা করি।

    জানালার কাঁচ তুলে গাড়ি ছেড়ে দিল রানা। জোড়া পুলিস কারের মাঝখান দিয়ে পথ করে নিয়ে বেরিয়ে এল। সামনে একটা বাঁক, সেটা পেরিয়েই পিছন দিকে তাকাল একবার। নির্জন, অন্ধকার রাস্তা। গ্রে উইগ আর ক্লেরিকাল কলার খুলে ফেলল ও। তারপর ফুল স্পীডে ছোটাল গাড়ি। ব্যাপারটা ফাঁস হবার আগেই পালাতে হবে। ল্যাঙ্গার ভিলায় কখন ফাদারের ডাক পড়েছিল, ও জানে; জঙ্গলে অপেক্ষা করার সময় ফাদারের গাড়িটাকে যেতেও দেখেছে। কিন্তু ফাদারের ফেরত আসা ঠেকানো ওর ক্ষমতার বাইরে। আসল ফাদার হয়তো খুব একটা পিছনে নন।

    .

    পাইপার চেরোকির পাইলট মহা ফুর্তিতে গুনগুন করে গান গাইছে। সরাসরি পশ্চিম দিকে কোর্স স্থির করেছে সে, এই মুহূর্তে উইসকনসিন বা কাছে-পিঠের কোন এলাকার ওপর রয়েছে। পরিষ্কার আকাশ, মৃদু বাতাস, হালকা প্লেন-তার মত অভিজ্ঞ পাইলটের জন্যে কাজটা ছেলেখেলা ছাড়া আর কি। লোকটা বদ্ধ উন্মাদ, তা না হলে সামান্য এই কাজের জন্যে হাজার ডলার গুঁজে দেয় হাতে?

    তবে, লোকটার শর্তটা কিন্তু অদ্ভুত ছিল। কোন প্রশ্ন করা যাবে না।

    করেওনি সে। এক রাতে হাজার ডলার পেলে বেয়াড়া প্রশ্ন করার কি দরকার তার?

    তার সামনে পাহাড়ী এলাকা দেখা গেল। সাবলীল ভঙ্গিতে প্লেনের নাক উঁচু করল সে, ছ’হাজার ফিটে উঠে এসে সমান হলো চেরোকি।

    .

    কানাডিয়ান সীমান্ত বরাবর এন.ও.আর.এ.ডি. পেট্রল ডিউটিতে ছিল এস.এ.সি. বম্বার, দশ হাজার ফিট উঁচুতে উড়ছিল। কনট্রোল টাওয়ার থেকে জরুরী নির্দেশ পেয়ে কোর্স বদল করল পাইলট।

    রাডারে পাইপার চেরোকিকে দেখা গেল, পাঁচ মাইল সামনে, পশ্চিম দিকে যাচ্ছে, চার হাজার ফিট নিচে।

    ইউ.এস. এয়ারফোর্স পাইলট ঘাড় ফিরিয়ে কেবিনের আরেক প্রান্তে বসা লোকটার দিকে তাকাল। ‘চেরোকির পাইলট কিন্তু আমাদের খসাবার চেষ্টা করছে না।’

    কো-পাইলট, একজন ক্যানাডিয়ান, এদিক ওদিক মাথা নাড়ল। ‘না। একই কোর্সে, একই স্পীডে যাচ্ছে।’ হঠাৎ, সীটের কিনারায় সরে এল সে, সামনের দিকে ঝুঁকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাল রাডার স্ক্রীনে। ‘আরে! নেই!’

    ‘নেই?’

    ‘একেবারে গায়েব! ব্যাপার কি! চোখের পলকে কোন প্লেন ল্যাণ্ড করতে পারে না!’

    ‘তাই তো! তাহলে?’ আমেরিকান পাইলটের ভুরু কুঁচকে উঠল। ‘তবে কি…!’

    .

    ল্যাঙ্গার ভিলার গেস্ট হাউস। প্রথমবার বেজে উঠতেই ডিউটি রত সিক্রেট সার্ভিস এজেণ্ট হাত বাড়িয়ে ফোনের রিসিভার তুলল।

    ‘খারাপ খবর,’ অপরপ্রান্ত থেকে বলা হলো তাকে। ‘তোমরা যে পাইপার চেরোকির ওপর নজর রাখতে বলেছিলে, উত্তর উইসকনসিনে বিধ্বস্ত হয়েছে সেটা।’

    রিসিভারটা শক্ত করে চেপে ধরল এজেণ্ট। প্রথমেই যে প্রশ্নটা মনে এল, ‘কেউ বেঁচেছে?’

    ‘বেঁচেছে মানে?’ পাল্টা প্রশ্ন এল অপরপ্রান্ত থেকে। ‘পাইলট ছাড়া কেউ থাকলে তো বাঁচবে!’

    সাইনবোর্ডটা খুব জমকালো। কালকাসকা এভিয়েশন ইনকরপোরেটেড: ফ্লাইট ইন্সট্রাকশন, জি.ই.টি. সিমিউলেটর, এ.টি.পি. স্পেশালিস্ট, হ্যাঙ্গারস, টাইডাউনস, এয়ারক্রাফট ফর রেণ্ট অর লীজ। কিন্তু বিল্ডিংটা অস্থায়ী ব্যারাকের মত, আর কাউন্টারের পিছনে বসে ছেলেটার এখনও মদ ধরার বয়স হয়নি।

    তবে আজ সে কয়েকটা বিয়ার খেয়েছে। কেউ যদি মনের ভুলে একটা নয়, দুটো নয়, ছ’ছটা ক্যান রেখে যায় অফিসে, না খেয়ে উপায় কি তার? ফেলে দেবে নাকি? মাগনা?

    কাউন্টারের ওদিকে দাঁড়ানো খদ্দেরের দিকে লালচে, ঘোর লাগা চোখ মেলে তাকাল সে। উঁহুঁ, এলাকার কেউ নয়। কালা আদমি, তবে ব্যাটাচ্ছেলে সৌখিন বটে। দামী স্যুট, চোখে চশমা, সম্ভবত ডেট্রয়েটের কোন প্রফেসর বা হোটেল মালিক হবে। তার দিকে একটু তেরছা চোখে তাকাল ছেলেটা, বলল, ‘এই মুহূর্তে শুধু একটা লীয়ার জেট আছে আমাদের। প্রচুর খরচ পড়বে, মিস্টার।’

    পকেটে হাত ভরল খদ্দের, মানি ব্যাগ নয়, টাকার মোটা একটা বাণ্ডিল বের করল। ছানাবড়া হয়ে উঠল ছোকরার চোখ। ওরে সর্বনাশ! সবই একশো ডলারের নোট! ‘কত?’

    বিস্ময়ের ধাক্কাটা সামলে উঠতে সময় নিল ছেলেটা। একজন কালা আদমির পকেটে এত টাকা! তাও আবার ক্যাশ! অত কথা কি, কোন সাদা চামড়ার কাছেও এত টাকা একসাথে দেখেনি সে। কে বাওয়া তুমি, কোথাকার লাটসাহেব? ধ্যেৎ, তা জেনে তার কি লাভ? কালো টাকা বা সাদা টাকা, তার কাছে সবই এক। ‘শুধু আপনি?

    ‘সাথে আমার মেয়ে আছে,’ নিগ্রো লোকটা বলল। ‘বাইরে, গাড়িতে ঘুমাচ্ছে সে।’

    ঝট্ করে মুখ তুলল ছেলেটা। এক ঘণ্টাও হয়নি স্টেট পুলিস টেলিফোনে সতর্ক করে দিয়েছে ওকে। চেহারার বর্ণনা ইত্যাদি দিয়ে তাকে জানানো হয়েছে, ছোট্ট এক মেয়েকে নিয়ে পালাচ্ছে লোকটা।

    কিন্তু এই লোকটা মেয়ের কথা গোপন করছে না। গায়ের রঙও ফর্সা নয়, চেহারার বর্ণনা বা বয়সও মেলে না। ছেলেটার পেশীতে ঢিল পড়ল, ঝুঁকে দেরাজ থেকে ট্রিপলিকেট ফর্ম বের করল সে। ‘ক’দিনের জন্যে দরকার আপনার?’

    ‘এক হপ্তা।’

    ‘কোথায় যাবেন?’

    ‘নর্দার্ন পেনিনসূলা। মারকেটের জন্যে প্ল্যান ফাইল করব।’

    মাথা ঝাঁকাল ছেলেটা। ‘ঠিক আছে-সাথে যদি তিন ধরনের আইডেনটিফিকেশন থাকে, সেই সাথে পাইলট’স আই.ডি. তাহলে ব্যবসা হতে পারে।’

    বিশ মিনিট পর টেক-অফ করল লীয়ার জেট। গাছপালার মাথার ওপর দিয়ে ছুটে গেল সগর্জনে। উত্তর দিকে যাচ্ছে। খানিক পর নিচের এয়ারফিল্ড থেকে প্লেনটাকে আর দেখা গেল না। এবার নাক ঘুরিয়ে পুব দিকে ছুটল জেট।

    গন্তব্য ওয়াশিংটন ডি.সি.।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleমাসুদ রানা ১৪৪ – অপহরণ-২
    Next Article মাসুদ রানা ৪৫৯ – অন্তর্যামী

    Related Articles

    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৩৮৫-৩৮৬ – হ্যাকার (দুই খণ্ড একত্রে)

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৬ – টপ টেরর

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৪ – নরপশু

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৩ – ধর্মগুরু

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫২ – কালো কুয়াশা

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫১ – মায়া মন্দির

    July 22, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    শ্রীশ্রীচণ্ডী – অনুবাদ : পঞ্চানন তর্করত্ন

    September 9, 2025

    পুলিশ কাহিনী ১ – পঞ্চানন ঘোষাল (প্রথম খণ্ড)

    September 9, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.