Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ১৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মাসুদ রানা ১৪৪ – অপহরণ-২

    কাজী আনোয়ার হোসেন এক পাতা গল্প192 Mins Read0

    অপহরণ-২.১

    এক

    পাহাড় ঘেরা বনভূমি, মাঝখান দিয়ে চওড়া পাকা রাস্তা শহরের দিকে চলে গেছে। নির্জনতা-প্রিয় কিছু লোক ঘর-বাড়ি বানিয়ে বাস করে জঙ্গলে। বাড়িগুলো কাছাকাছি নয়, মাঝখানে এক-আধ মাইলের দূরত্ব।

    রাস্তার পাশে বড় একটা ফাঁকা মাঠ, ছড়িয়ে ছিটিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ঝাঁকড়া মাথা অনেকগুলো প্রাচীন গাছ। গির্জাটা এক ধারে, দরজার মাথায় নগ্ন একটা বালব জ্বলছে।

    রাস্তার এপারে, অন্ধকার জঙ্গলের কিনারায় গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে হেনরি পিকেরিং। রাস্তা ছাড়িয়ে মাঠে, একটা গাছের দিকে স্থির হয়ে রয়েছে তার দৃষ্টি। গাছের পাশে একটা ছায়ামূর্তিকে দেখতে পেল সে। লোকটার গায়ের রঙ আর কাপড় আলাদা করে চেনার উপায় নেই। লোকটা একা, তাকিয়ে আছে গির্জার দিকে।

    চোখে নাইট-গ্লাস তুলে লোকটার দিকে তাকাল পিকেরিং। গির্জার কাছ থেকে বেশ খানিকটা দূরে রয়েছে লোকটা, নগ্ন বালবের ম্লান আলোয় ভাল করে দেখা গেল না তাকে। তবু চিনতে পারল সে। এগম্যান-ই।

    রবার্ট এগম্যান। প্রাক্তন বেসবল সুপারস্টার। সাংস্কৃতিক দল বিনিময় চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেণ্ট দক্ষিণ আফ্রিকায় পাঠিয়েছে তাকে, স্থানীয় কালোদের সংগঠন লিটল লীগ বল টীমের কোচ হিসেবে। মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতাসীন শ্বেতাঙ্গদের অসন্তুষ্ট না করে কালোদের সাথে আমেরিকার একটা সুসম্পর্কের ভিত তৈরি করা। এর মধ্যে লুকোচুরির কিছু ছিল না, রাজনৈতিক কুটিলতা ততটা স্থান পায়নি।

    যদিও, কেউ জানে না যে রবার্ট এগম্যান আসলে একজন সি.আই.এ. এজেণ্ট। এখানে তার গোপন কাজটা হলো, চরমপী নিগ্রো নেতাদের সাথে যোগাযোগ রাখা, আতঙ্কিত শ্বেতাঙ্গ সরকার যাদেরকে নজরবন্দী করে রেখেছে। নজরবন্দী নেতাদের সাথে বাইরের দুনিয়ার কোন যোগাযোগ থাকে না, কর্মহীন নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করতে হয় তাদের। ডিপ্লোম্যাটিক পাস থাকায় যেখানে খুশি যেতে পারে এগম্যান, যার সাথে খুশি দেখা করতে পারে। তাকে পেয়ে যেন চাঁদ হাতে পায় বন্দী নেতারা। মন খুলে কথা বলে। এভাবে চরমপীদের ভবিষ্যৎ প্ল্যান-প্রোগ্রাম সম্পর্কে বিস্তারিত সব অনায়াসে জানতে পারে এগম্যান। এগম্যানের রিপোর্ট পেয়ে সি.আই.এ. দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারকে সু (? ) পরামর্শ দিতে পারে। এগম্যান নিজে নিগ্রো হওয়ায় সহজেই আফ্রিকান নিগ্রোদের ভালবাসা আর বিশ্বাস অর্জন করতে পেরেছে। সি.আই.এ-ও লাভবান হয়েছে, এগম্যানকে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাঠাবার পর থেকে আণ্ডারগ্রাউণ্ডের খবরাখবর আগের চেয়ে অনেক বেশি, প্রায় দ্বিগুণ হারে আসছে। হ্যাঁ, এজেন্ট হিসেবে এগম্যান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রেসিডেন্টের মেয়ে টিউলিপ। বার্লিনে একটা মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেলেও, আবার ঝুঁকি না নিয়ে উপায় নেই। চোখে নাইট-গ্লাস তুলে পিকেরিং দেখল গাছটাকে পিছনে রেখে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে এগম্যান। খানিক এগিয়ে থামল সে, ডানে-বাঁয়ে ভাল করে দেখে নিল। না, কাছেপিঠে কাউকে দেখল না। মাঠের ওপর দিয়ে এবার হন হন করে এগোল সে। সোজা গিয়ে থামল গির্জার দরজার সামনে। হাত বাড়িয়ে কবাটে ঠেলা দিল এগম্যান।

    খুলে গেল দরজা।

    .

    গির্জার ভেতর অন্ধকার আর অটুট নিস্তব্ধতা। দোরগোড়ায় স্থির দাঁড়িয়ে থেকে চোখে অন্ধকার সইয়ে নেয়ার চেষ্টা করল এগম্যান। ধীরে ধীরে মৃদু আলোর ক্ষীণ একটু আভা দেখা গেল এনট্রান্স হলে। সামনে বাড়ল সে, আলোর উৎস লক্ষ্য করে এগোল। গির্জা পবিত্র স্থান, তবু তার গা ছমছম করতে লাগল।

    ওল্ড সাউথ একটা মেথোডিস্ট চার্চ। দেয়াল বা সিলিং থেকে ঝলমলে ঝালর বা রঙচঙে পর্দা নেমে আসেনি। শক্ত কাঠের মেঝে, সার সার গদিহীন আসন। সাধারণ একটা বেদি। বেদির ওপর সাদামাঠা ধরনের একটা সোনার ক্রুশ, একটা বাইবেল, একজোড়া মোমবাতি। দেয়ালগুলো খালি, সাদা রঙ করা। দু’দিকে লম্বা লম্বা জানালা, কিন্তু কোন জানালায় কাঁচ নেই।

    মনে মনে অস্বস্তি বোধ করল এগম্যান। ব্যাক-আপ টীম থাকার কথা, কোথায় তারা? হেনরি পিকেরিঙের কথা মনে পড়ল তার। সি.আই.এ. চীফ জেফ রিকার্ডের ডেপুটি লোকটা, ডান হাত। সে-ই বা কোথায়? তাকে সে কথা দিয়েছে, শুধু গির্জার ভেতরটা নয়, বাইরেটাও কাভার দেয়া হবে। সান্ধ্যকালীন প্রার্থনায় সি. আই.এ-র ছয়জন এজেন্ট উপস্থিত ছিল, প্রার্থনা শেষে তারা আর বেরিয়ে যায়নি—অন্তত বেরিয়ে যাবার কথা নয়। কিন্তু কোথায় তারা? ঝুল-বারান্দায়? নাকি পিকেরিং তার কথা রাখেনি? হয়তো বেদির পিছনে কোথাও গা ঢাকা দিয়ে আছে, আড়াল থেকে লক্ষ রাখছে চারদিকে।

    বার্লিনে যা ঘটে গেছে তারপর আর ঝুঁকি নেয়ার কোন মানে হয় না। এ-ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছিল। কিন্তু পিকেরিং ষোলো আনা নিশ্চয়তা দিয়ে বলেছে, এগম্যান সম্পূর্ণ নিরাপদে থাকবে, তার ধারেকাছে ঘেঁষতে পারবে না কেউ। তাছাড়া, গির্জার ভেতর কোথাও বসে কিছু পান করতে হবে না এগম্যানকে। অ্যারোকে যেমন হয়েছিল।

    পিছনের দেয়াল ঘেঁষে এগোল এগম্যান, তারপর অনেকগুলো সাইড প্যাসেজের একটা ধরে বেদির দিকে যাবার সময় জানালার সামনে মাথা নিচু করে রাখল। রাস্তা দিয়ে পুলিস প্যাট্রোল আসা-যাওয়া করে, তাদের চোখে ধরা পড়ার কোন ইচ্ছে ওর নেই। এদিকে চরমী কালোদের তৎপরতা নতুন কোন সমস্যা নয়, প্রতি রাতেই কারফিউ জারি করা হয়। এই অসময়ে গির্জার ভেতর কালো কোন লোককে দেখলে হাতে হাতকড়া না পরিয়ে ছাড়বে না পুলিস। ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্ট থাকায় ওকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে, কিন্তু পাসপোর্টের মর্যাদা বুঝতে সাধারণ পুলিসের সময় লাগবে কম করেও আটচল্লিশ ঘণ্টা।

    সামনে কয়েকটা নিচু সেলফ দেখল এগম্যান, ধর্ম-সঙ্গীতের বই আর প্রসাদ রাখার জন্যে কয়েকটা পাত্র রয়েছে ওগুলোয়। এখান থেকে কাঠের সিঁড়ি উঠে গেছে বেদির দিকে। সিঁড়ির ধাপে একটা এনভেলাপ দেখল সে।

    সাদা খাম। চিঠি আকারের। ভুলে কেউ ফেলে গেছে বলে মনে হলো না। ধাপের ঠিক মাঝখানে যত্ন করে রেখে যাওয়া হয়েছে। খোলা জায়গায়, সহজেই যাতে চোখে পড়ে।

    সিঁড়ির দিকে এগোল এগম্যান। এনভেলাপটা তোলার জন্যে ঝুঁকল সে। সিধে হতে যাবে, একটা আওয়াজ ঢুকল কানে। ওর ডানে, উঁচু কোথাও থেকে এল।

    আওয়াজটা শুনেই ঘাড় ফেরাতে শুরু করল এগম্যান, জানে, এরই মধ্যে দেরি করে ফেলেছে সে। উঁচু জানালার দিকে তাকাবার সুযোগ হলো না, কড়াৎ করে একটা বিস্ফোরণের শব্দের সাথে ধাক্কা খেল সে।

    বুলেটটা ব্রেনে ঢুকে গেল, বিস্ফোরিত হলো এগম্যানের মাথা। একদিকে ঘুরে গেল শরীরটা, তারপর কাত হয়ে দড়াম করে আছাড় খেয়ে পড়ল একটা আসনের ওপর, সেখান থেকে গড়িয়ে নেমে গেল মেঝেতে। নগ্ন কাঠ, ভেসে গেল রক্তে।

    গির্জার ভেতর কাঠের সিঁড়িগুলোয় ছুটোছুটির আওয়াজ শোনা গেল। কিন্তু এখন আর কারও কিছু করার নেই। যে যাবার সে চলে গেছে। সমস্ত শব্দকে ছাপিয়ে উঠল গমগমে একটা যান্ত্রিক আওয়াজ।

    বাইরে, অন্ধকার মাঠের ওপর আকাশে কালো একটা সচল ছায়া। পাহাড়গুলোর আড়াল থেকে উড়ে এসেছে ওটা। কালো আকাশের গায়ে কালো রঙ করা একটা হেলিকপ্টার। গাছগুলো থেকে অনেকটা ওপর স্থির হলো যান্ত্রিক ফড়িং, সাপের মত কি যেন একটা এঁকেবেঁকে নেমে এল সবচেয়ে উঁচু গাছটার মগডালে। মাত্র কয়েক সেকেণ্ড, তারপরই আবার সচল হলো কপ্টার। দেখতে দেখতে পাহাড়গুলোর দিকে অন্ধকারে মিলিয়ে গেল আবার।

    জঙ্গল থেকে ছুটে রাস্তায় বেরিয়ে এল পিকেরিং। অসহায় ভঙ্গিতে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে পড়ল সে, হাতে পিস্তল। কপ্টারটা ফিরে যাচ্ছে দেখে চট করে হাতঘড়ির দিকে একবার তাকাল। ঠিক মাঝরাত।

    বিস্ফোরিত হলো গির্জার দরজা। তার দিকে কে যেন ছুটে আসছে। না, এগম্যান নয়। গিনিপিগ।

    মেয়েটা কিছু বলার আগেই পিকেরিং বুঝে ফেলল কি ঘটে গেছে। রবার্ট এগম্যান বেঁচে নেই।

    .

    ব্রিন্দিসি থেকে রওনা হবার পর বিশ ঘণ্টা সাগরে রয়েছে ফেরি। ফেরিতে ওঠার টিকেট কেটেছে মাসুদ রানা, কিন্তু কেবিন ভাড়া নেয়নি। পিক-আপ ট্রাক রয়েছে, ড্রাইভিং সীটে বসে কাটিয়ে দেবে বাকি সময়টা। রেস্তোরাঁতেও ঢোকার দরকার হবে না, সাথে খাবার আছে-রুটি আর মাখন, জেলি আর পনির, এক লিটার ইটালিয়ান ওয়াইন। একান্তই যদি ঘুমাতে চায়, সীটের নিচে ওর আরোহীর মত, ট্রাকেই ঘুমিয়ে নেবে।

    জানালা দিয়ে বাইরে তাকাল রানা। ফেরির ডেকে সার সার দাঁড়িয়ে আছে নানা ধরনের যানবাহন। আশপাশে সঙ্গী-সাথীর কোন অভাব নেই ওর। গরীব ইটালিয়ান আর গ্রীক ড্রাইভাররাও যার যার গাড়িতে বসে রাত কাটাচ্ছে। ওপরতলায় বিলাসবহুল কেবিনে যারা ভ্রমণ করছে তারা সবাই ভাগ্যবান ট্যুরিস্ট। মাঝরাত পেরিয়ে গেছে, আশপাশ থেকে নাক ডাকার আওয়াজ পেল রানা। ওর চোখে ঘুম নেই। সিগারেটে টান দিতে দিতে নিকট ভবিষ্যতের কথা ভাবছে ও।

    পোলোপোনেসাস-এর উত্তর উপকূল প্যাট্রাস-এ ভিড়বে ফেরি। সেখান থেকে পুব দিকে ট্রাক ছাড়বে রানা, পেরিয়ে যাবে কোরি __ ক্যানাল। এথেন্সের বন্দর পিরিয়াস-এ পৌঁছে আরেকবার পরিচয়পত্র এবং বাহন পাল্টাবে। আবার ফেরিতে চড়ে দক্ষিণে যাবে, ক্রিট দ্বীপের হেরাক্লিয়ন-এ।

    ক্রিট একটা দুর্গম দ্বীপ, ওখানকার মানুষগুলো কর্কশ, বড় বেশি স্বাধীনচেতা। ওদের ব্যক্তিগত ব্যাপারে কাউকে ওরা নাক গলাতে দেয় না, তেমনি কারও ব্যক্তিগত ব্যাপারে নাক গলানো পছন্দও করে না। আপনমনে হাসল রানা। শহর থেকে দূরে, শহরতলিতে থাকবে ও, ট্যুরিস্ট স্পটগুলোর ধারেকাছে ঘেঁষবে না। ওকে, বা ওর সাথে গ্রাম্য কাপড় পরা বাচ্চা ছেলেটাকে দেখে কেউ কোন প্রশ্ন করবে না।

    টিউলিপের ছদ্মবেশ একেবারে নিখুঁত হয়েছে। কেউ দেখে মেয়ে বলে চিনতে পারবে না, প্রেসিডেন্টের মেয়ে বলে চেনা তো দূরের কথা।

    সিগারেট ফেলে দিয়ে খানিকটা ওয়াইন খেলো রানা। গন্তব্যে না পৌঁছে ঘুমাতে চায় না ও। নিজের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছে না, ভাবছে টিউলিপকে নিয়ে। হঠাৎ যদি ওষুধের প্রভাব কেটে যায়, সচেতন হয়ে ওঠে মেয়েটা? যদি কান্না জুড়ে দেয়?

    না, জেগে থাকাই ভাল।

    .

    রঙিন নকশা কাটা ডানা মেলে এক ঝাঁক প্রজাপতি উড়ছে বাগিচায়। সুইমিং পুল ঘিরে থাকা সার সার ফুলগাছে বসন্তের ডাকে রঙচঙে ফুল ফুটেছে, মধু আহরণে মাতোয়ারা মৌমাছিদের গুঞ্জনে দেহ-মনে পুলক জাগে। কিন্তু প্রকৃতি অপরূপ সাজে সাজলেও, হোয়াইট হাউসের কারও মনে শান্তি নেই। সিক্রেট এজেণ্ট থেকে শুরু করে কর্মচারী, চাকরবাকর, কর্মকর্তা, সবাই বিষণ্ণ এবং গম্ভীর। দৈনন্দিন কাজকর্ম থেমে থাকার নয়, কিন্তু গভীর মনোযোগের সাথে লক্ষ করলে টের পাওয়া যায় উত্তেজনায় টান টান হয়ে আছে পরিবেশ।

    সুইমিং পুল থেকে উঠে এলেন প্রেসিডেন্ট, গা থেকে পানি ঝরছে কংক্রিট অ্যাপ্রন-এ। হালকা নীল একটা আলখাল্লায় গা ঢাকলেন তিনি। পুলের পাশে একটা টেবিল সাজানো হয়েছে। ইঙ্গিতে তিনি সি.আই.এ. চীফ জেফ রিকার্ডকে কাছে ডাকলেন।

    ততে উঠেছে রোদ, শার্ট আর টাই পরে ঘামছেন জেফ রিকার্ড। রুমাল দিয়ে ঘাড়টা মুছে টেবিলের আরেক দিকে, প্রেসিডেন্টের মুখোমুখি বসলেন তিনি। সুইমিং পুলে প্রায়ই আসেন ওঁরা, দ্রুত খানিকক্ষণ সাঁতার কেটে লাঞ্চ সারেন, তারপর ফিরে যান যাঁর যাঁর নিজের কাজে। দু’জনে এক সঙ্গে শরীর শিথিল করে নেন, খানিক বিশ্রাম পেয়ে আবার তীক্ষ্ণ আর ঝরঝরে হয়ে ওঠে মাথা।

    কিন্তু আজ আর তা হবার নয়। রোদ তেতে উঠলেও, প্রেসিডেন্টের চেহারা যেন বরফের মুখোশ। বহু কষ্টে নিজেকে সামলে রেখেছেন তিনি। এই মুহূর্তে রানা যদি তাঁর সামনে থাকত, ওর মনে প্রশ্নটা নিশ্চয়ই জাগত: সত্যিই কি প্রেসিডেন্ট তাঁর মেয়েকে কিডন্যাপ করার অনুমতি দিয়েছেন?

    ‘তুমি আমার রিপোর্ট পড়েছ,’ জেফ রিকার্ড বললেন।

    ‘হ্যাঁ, পড়েছি,’ শান্তভাবে জবাব দিলেন প্রেসিডেন্ট, যেন প্রতিজ্ঞা করেছেন নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারাবেন না। ‘আর তাই সেক্রেটারি অভ স্টেট থেকে শুরু করে কেউই সারাটা সকাল আমার সাথে দেখা করতে পারেনি।’

    নীরবে মাথা ঝাঁকালেন জেফ রিকার্ড

    ‘বলো তো, জেফ, সাংস্কৃতিক চুক্তির আওতায় আমরা যখন রবার্ট এগম্যানের মত কোন লোককে বিদেশে পাঠাই, আমরা তার রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা সম্পর্কে গ্যারান্টি দিই, নাকি দিই না?’

    ‘রাষ্ট্র দেয়। আমি দিই না।’

    ‘অবভিয়াসলি!’ টেবিল থেকে মুখ তুলে বন্ধুর দিকে তাকালেন প্রেসিডেণ্ট, চোখে ঠাণ্ডা আগুন ঝরছে। ‘আমাকে জিজ্ঞেস পর্যন্ত না করে স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়ম-নীতি ভেঙে কোথায় তুমি পৌঁছুতে চাও, জেফ?’

    পাল্টা দৃষ্টি হেনে জেফ রিকার্ড জিজ্ঞেস করলেন, ‘আর যদি জিজ্ঞেস করতাম?’

    ‘নিশ্চয়ই অনুমতি দিতাম না। ব্যাপারটা বেআইনী।’

    ‘ঠিক তাই,’ এমন সুরে কথাটা বললেন রিকার্ড যেন একজন উকিল তার পয়েন্ট সুদৃঢ় যুক্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করল। ‘আর বেআইনী বলেই অনুমতির ধার ধারিনি আমি। সুযোগ পেলে সেটাকে আমার কাজে লাগাতে হয়, কারণ ছলে-বলে কৌশলে তথ্য সংগ্রহ করা আমার দায়িত্ব। তুমিও জানো দক্ষিণ আফ্রিকায় কিছুদিন আগেও আমাদের ইন্টেলিজেন্স অ্যাকটিভিটি কোন ফল দিচ্ছিল না।’

    ‘জানি। কিন্তু আমরাও, তুমি আর আমি, আইনের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য, সে-কথা ভুলে গেলে চলবে কেন?’

    জেফ রিকার্ড চুপ করে থাকলেন। এই মুহূর্তে রানা এখানে উপস্থিত থাকলে আরও একটা প্রশ্ন জাগত ওর মনে, সত্যিই কি সি.আই.এ. চীফ জেফ রিকার্ড কে.জি.বি.-র চর?

    ‘কি যে এক বিপদের মধ্যে ফেললে!’ রেগেমেগে বললেন প্রেসিডেণ্ট। ‘ব্যাপারটা যদি ফাঁস হয়ে যায়, আন্দাজ করতে পারো কি ঘটবে? শুধু যে স্টেট ডিপার্টমেন্ট আর দক্ষিণ আফ্রিকাকে জবাবদিহি করতে হবে তাই নয়, মিত্র সবগুলো দেশ আমাদের অবিশ্বাস করবে। তারপর আছে কংগ্রেস। ক্রাইস্ট! ওরা টের পেলে স্রেফ ক্রুশে চড়াবে-তোমাকে শুধু একা নয়, আমাকেও। অথচ লাভ কি হলো?’ তাঁর চোয়াল শক্ত হয়ে উঠল, আরও একটু ঠাণ্ডা হয়ে এল চোখের দৃষ্টি। ‘কে আমার মেয়েকে কিডন্যাপ করেছে? কেন? কি চায় ওরা? এবং…,’ টেবিলের ওপর ঝুঁকে পড়লেন তিনি, ‘আমার টিউলিপ কোথায়?

    জেফ রিকার্ডের বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল। এত বছরের পুরানো বন্ধুত্ব, অনেক বার অনেক বিষয়েই মতের মিল হয়নি তাঁদের। কিন্তু এবারকার মত পরিস্থিতি কখনও দেখা দেয়নি। ইনি রিচার্ড কনওয়ে নন, প্রেসিডেন্ট। রেগে আগুন হয়ে আছেন। রিকার্ড জানেন, রাগার তাঁর সঙ্গত কারণও আছে।

    পকেটে হাত ঢুকিয়ে একটা বলপয়েন্ট পেন বের করলেন সি.আই.এ. চীফ। নার্ভাস ভঙ্গিতে নাড়াচাড়া করছেন ওটা। প্ৰথম দিকে কেন কে জানে তাঁর মনে হয়েছিল, মেয়ে কিডন্যাপ হওয়ায় রিচার্ড কনওয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন নন। যাকে বলে দুশ্চিন্তায় কাতর হয়ে পড়া, সেরকম কিছু চোখে পড়েনি। এমনকি বন্ধুর রাগ দেখেও তাঁর মনে সন্দেহ হয়েছিল, ভান নয় তো? মনের এ সব সন্দেহ কাহিল করে তুলেছিল তাঁকে।

    পরে অবশ্য সন্দেহগুলো দূর হয়ে যায়। তিনি বুঝতে পারেন, মেয়ের জন্যে সত্যিই অস্থির হয়ে আছেন পিতা। কিন্তু আজ আবার সন্দেহটা ফিরে এল মনে। রিচার্ড কনওয়ের প্রশ্নের ধরন বা শব্দচয়ন তাঁর ঠিক পছন্দ হলো না। ‘আমাকে জিজ্ঞেস পর্যন্ত না করে…কোথায় তুমি পৌঁছুতে চাও, জেফ?’ প্রেসিডেণ্ট যেন আভাসে জানতে চাইলেন, তুমি কি আমার জায়গায় উঠে আসতে চাও?

    ‘আমি জানি না,’ প্রেসিডেন্টের প্রশ্নের উত্তরে বললেন সি.আই.এ. চীফ। ‘কে বা কারা কিডন্যাপ করেছে, কেন করেছে, কি চায় তারা, কোথায় আছে টিউলিপ-কিছুই আমি জানি না। কিন্তু,’ বলে দম নিলেন তিনি, ‘আমার মাথায় কিছু কিছু আইডিয়া আসছে।

    ‘আইডিয়া! গডড্যাম ইট! মাল্টিবিলিয়ন-ডলার ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির মাথায় বসে রয়েছ তুমি। কে তোমার কাছে থেকে আইডিয়া পেতে চায়? আমার ফ্যাক্টস দরকার!’

    চুপ করে থাকলেন রিকার্ড, তাঁর কিছু বলার মুখ নেই। ফেডারেল গভর্নমেন্টের সমস্ত ক্ষমতা সাময়িকভাবে তাঁর নিয়ন্ত্রণে ছেড়ে দেয়া হয়েছে, অথচ এখন পর্যন্ত কোন তথ্য তিনি যোগাড় করতে পারেননি। একটাই বাস্তবতা, সেটাকে বদলাবার কোন উপায় দেখা যাচ্ছে না। প্রেসিডেন্টের মেয়ে নিখোঁজ, এবং কোন সূত্র নেই যার সাহায্যে তাকে খুঁজে বের করা যায়।

    গোটা ব্যাপারটা অর্থহীন বলে মনে হয়। শুধু তাঁর ব্যর্থতা বাদে।

    আরও কিছুক্ষণ বন্ধুর দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকলেন প্রেসিডেন্ট, তারপর হেলান দিলেন চেয়ারে। ‘ঠিক আছে, বলো, শোনা যাক তোমার আইডিয়াগুলো।’

    ক্ষীণ একটু স্বস্তিবোধ করলেন জেফ রিকার্ড। ফ্যাক্টের যেখানে অভাব, সেখানে কাজ চালাতে হবে আইডিয়া দিয়ে। ‘প্রসঙ্গ দুটো,’ বললেন তিনি। ‘প্রথমে, মোটিভ। একজোড়া অমূল্য রত্ন হারিয়েছি আমরা, অ্যারো আর এগম্যান। কিডন্যাপাররা শুধু যদি ওদের দু’জনকে চেয়ে থাকে, এখনও বলি আমি, ওদেরকে পাবার আরও অনেক সহজ উপায় ছিল তাদের ‘

    কোন মন্তব্য না করে মাথা ঝাঁকালেন প্রেসিডেণ্ট।

    ‘কাজেই ধরে নিতে হয়,’ রিকার্ড বললেন, ‘শুধু অ্যারো বা এগম্যানকে নয়, আরও কাউকে বা আরও কিছু চায় ওরা। আরও কেউ মানে ওদের মত অন্য কোন এজেণ্ট নয়। আরও বড় কিছু আরও অনেক বড় ধরনের কিছু টার্গেট করেছে ওরা।’ একটু থেমে নাটকীয়ভাবে আবার তিনি বললেন, ‘আমার ধারণা, রিচার্ড, ওরা আমাকে চায়। আমিই ওদের টার্গেট।

    ‘তুমি? তোমাকে?’ প্রেসিডেন্টের কপাল কুঁচকে উঠল।

    ‘আমাকে ঠিক ব্যক্তিগতভাবে নয়,’ তাড়াতাড়ি বললেন রিকার্ড। ‘মনে করো, সি.আই.এ ডিরেক্টরকে। কিংবা হয়তো আরও বড় কোন টার্গেট আছে ওদের। হয়তো ওরা তোমাকে চায়।’

    বরফ গলল, মুখোশ সরে গিয়ে বেরিয়ে এল আসল চেহারা, তিক্ত একটু হাসি ফুটল প্রেসিডেন্টের মুখে। আগ্রহভরা দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকলেন তিনি।

    ‘জানি না কেন, অদ্ভুত একটা অনুভূতি হয়েছে আমার,’ ব্যাখ্যা করলেন জেফ রিকার্ড। ‘কেউ যেন ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করেছে আমাকে। এবং আমার মাধ্যমে, তোমাকেও। এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হলো, সচরাচর যে-সব সাবধানতা অবল’ন করা হয় সেগুলো বাদ দিয়েই অসম্ভব সব ঝুঁকি নিতে বাধ্য হলাম আমরা। ঠেলে বাইরে বের করে দিলাম অ্যারো আর এগম্যানকে। উপায় ছিল না, কিডন্যাপাররা কোন উপায় রাখেনি। ওরা দু’জনেই খুন হলো, বলতে গেলে ওদের আমরা বলি দিলাম। খুন হলো, অথচ কারা খুন করল জানতে পারলাম না। আরও আশ্চর্য, টিউলিপ সম্পর্কে কোন সূত্রও আমাদের হাতে এল না। এটাই আমার কাছে সম্পূর্ণ দুর্বোধ্য লাগছে। কম সময় পেরোয়নি, এরমধ্যে কিছু না কিছু জানার কথা আমার। কেউ বলতে পারবে না হাত-পা গুটিয়ে আমি বসে আছি।

    প্রেসিডেণ্ট চিন্তিত, কিন্তু তিনি কোন প্রশ্ন করলেন না। মনে মনে খুশি হলো জেফ রিকার্ড, আর কিছু না হোক, বন্ধুর মনোযোগ ধরে রাখা গেছে। আশা করা যায় খানিকটা সময়ও দেয়া হবে তাঁকে। আরেকবার চেষ্টা করে দেখবেন।

    ‘কাজেই ওটা প্রথম,’ বললেন তিনি, ‘মোটিভ। ‘উঁহুঁ, মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করবে, তা নয়। হয় আমাকে চায়, নয়তো তোমাকে। অথবা সি.আই.এ-কে পকেটে ভরতে চাইলেও আমি আশ্চর্য হব না। কে জানে, হয়তো এ-সব কিছুই নয়, ওরা আসলে সরকারের পতন চাইছে। মোটকথা, ছোটখাট কোন ব্যাপার নয়, রিচার্ড।’

    ‘তোমার দ্বিতীয় প্রসঙ্গ?’

    ‘কিডন্যাপারদের একজন ইনফরমার আছে,’ সাথে সাথে জবাব দিলেন রিকার্ড। ‘আমাদের ভেতর কেউ একজন ‘

    ঝট করে মুখ তুলে তাকালেন প্রেসিডেণ্ট। ‘গুড গড!’

    ‘প্রথম আমার সন্দেহ হয় অ্যারো মারা যাবার পর,’ বললেন সি.আই.এ. চীফ। ‘তারপর একই ঘটনা আবার ঘটল। ভেবে দেখো না, অ্যারো আর এগম্যানের সাথে যোগাযোগ করতে কি রকম সময় নেব আমরা, তা কি কিডন্যাপারদের জানার কথা? বিশেষ করে অ্যারোর সাথে? তার বেলায় নিয়ম ছিল, আমরা সঙ্কেত পাঠাব, সে তার সময় এবং সুযোগ মত আমাদের সাথে যোগাযোগ করবে। যোগাযোগ করতে কতটা সময় লাগবে, আমরা কেউ জানতাম না। দু’ঘণ্টা? দু’দিন? অ্যারো যোগাযোগ করার পর প্রথম আমরা জানলাম, কখন গোল্ডেন বারে থাকতে পারবে সে। অথচ নির্দিষ্ট দিনে ঠিকই ওখানে ওয়েটার লোকটা ছিল! নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট সময়ে-আগে নয়।

    ‘এগম্যানের সময়ও ঠিক তাই ঘটল,’ বলে চললেন জেফ রিকার্ড। ‘গির্জার বাইরে, একটা গাছের মাথা থেকে গুলি করা হলো তাকে। আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে গাছে চড়ে অপেক্ষা করছিল খুনী, এটা সম্ভব, কিন্তু আমার সন্দেহ আছে। এখানেও সেই একই ব্যাপার, নির্দিষ্ট সময়ে হাজির ছিল খুনী।’ চেয়ারে হেলান দিলেন তিনি। ‘কোইন্সিডেন্স? একবার, হ্যাঁ; কিন্তু দু’বার হয় কি করে?’

    প্রেসিডেন্টের চেহারায় বিমূঢ় একটা ভাব। ‘অবিশ্বাস্য, জেফ।’

    ‘হ্যাঁ, বিশ্বাস করা কঠিন।’

    ‘কে সে, তোমার কোন ধারণা আছে?

    মাথা নাড়লেন জেফ রিকার্ড। ‘কাউকে আমি সন্দেহ করি না। একজন না-ও হতে পারে, হয়তো কয়েকজন মিলে সর্বনাশটা করছে। তবে যে বা যারাই হোক, এর পরের বার ঠিকই আমি ধরে ফেলব।’

    তাঁর দিকে দীর্ঘক্ষণ একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকলেন প্রেসিডেণ্ট। তারপর তাঁর মুখের পেশীতে একটু ঢিল পড়ল। ঘাড় ফিরিয়ে একজন সিক্রেট সার্ভিস এজেন্টের দিকে তাকিয়ে মাথা ঝাঁকালেন তিনি। দূরে, ওয়েস্ট উইং-এর দরজার কাছে দাঁড়িয়ে রয়েছে লোকটা। একটা হাত তুলে কাকে যেন কি ইশারা করল সে।

    জেফ রিকার্ডের দিকে ফিরলেন প্রেসিডেণ্ট। ‘তাহলে বলি, শুনে হয়তো তুমি খুশি হবে, পরের বার ঘটনাটা এখানে ঘটতে যাচ্ছে।’

    ওয়েস্ট উইং-এর দরজা পেরিয়ে একজন এইড বেরিয়ে এল। এগিয়ে এসে প্রেসিডেন্টের হাতে একটা এনভেলাপ দিল সে। অপেক্ষা না করে, দ্রুত ফিরে গেল লোকটা। প্রেসিডেন্ট কিছু ব্যাখ্যা করলেন না, শুধু এনভেলাপটা সি.আই.এ. চীফের হাতে ধরিয়ে দিলেন।

    এনভেলাপের ওপর পোস্টমার্কটা লক্ষ করলেন জেফ রিকার্ড। ওয়াশিংটন, ডিসি। মুখ তুলে একবার প্রেসিডেন্টের দিকে তাকালেন। তারপর এনভেলাপের ভেতর থেকে বের করলেন কাগজটা।

    ছোট্ট একটা চিরকুট। চারটে মাত্র শব্দ টাইপ করা।

    ‘মেরিলিন শার্প। রোটাণ্ডা ক্লাব।’

    এবার কোন বিস্ময়ের ধাক্কা লাগল না। জেফ রিকার্ড যেন পাথর হয়ে গেছেন। মেরিলিন শার্প-সি.আই.এ-র আরও একজন ডীপ কাভার এজেন্ট

    ‘মেরিলিন শার্প,’ বললেন প্রেসিডেণ্ট। ‘জানি, তিনি একজন কংগ্রেস সদস্য। তাঁর সম্পর্কে আর কি জানি আমি, জেফ?’

    ‘কংগ্রেসে আমার এজেণ্ট,’ বিড়বিড় করে বললেন সি.আই.এ. চীফ। ‘তার এই পরিচয় খুব কম লোকই জানে। তোমাকে পর্যন্ত বলিনি।’

    ফোঁস করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন প্রেসিডেণ্ট। ‘তারমানে তোমার সন্দেহই ঠিক। আমাদের ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের মধ্যে একজন দু’মুখো সাপ আছে। গড, ওহ্ গড!

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleমাসুদ রানা ৪৬৬ – ধ্বংসযজ্ঞ
    Next Article মাসুদ রানা ১৪৩ – অপহরণ-১

    Related Articles

    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৩৮৫-৩৮৬ – হ্যাকার (দুই খণ্ড একত্রে)

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৬ – টপ টেরর

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৪ – নরপশু

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৩ – ধর্মগুরু

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫২ – কালো কুয়াশা

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫১ – মায়া মন্দির

    July 22, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ১৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.