Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রাজমালা বা ত্রিপুরার ইতিহাস – শ্রী কৈলাসচন্দ্ৰ সিংহ প্রণীত

    August 20, 2025

    আলো হাতে সেই মেয়েটি – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    গোয়েন্দা গার্গী সমগ্র – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মাসুদ রানা ৪৫৯ – অন্তর্যামী

    ইসমাইল আরমান এক পাতা গল্প358 Mins Read0

    অন্তর্যামী – ৯

    নয়

    ব্লুম হোয়্যার ইউ আর প্ল্যান্টেড।

    কথাটাকে জীবনের একটা মন্ত্র বানিয়ে নিয়েছে লিয়ারি বহুদিন থেকে। ওর কাছে এর অর্থ: যেখানেই থাকো, পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, সেটাকেই কাজে লাগিয়ে কার্যোদ্ধার করো। বীজ বোনার পর মাটির অবস্থা খারাপ হলে সেটাকে যেমন সরানো যায় না, তেমনি বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়লেও মানুষ সেটাকে রাতারাতি বদলে ফেলতে পারে না। কাজেই, মন্দ জমিনেই ফুল ফোটাবার চেষ্টা করতে হয়…খারাপ পরিস্থিতিকেও নিজের অনুকূলে ব্যবহার করতে হয়।

    মন্ত্রটা কলেজের এক বন্ধুর মুখে প্রথম শুনেছিল লিয়ারি। এখন সে একজন নামকরা ডিফেন্স অ্যাটর্নি। একবার সে জটিল এক সমস্যায় পড়েছিল, এমন একটা কেস নিয়ে বসেছিল, যেটায় হার নিশ্চিত। কলেজের পার্টিতে গিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছিল এক অল্পবয়েসী মেয়ে, সাক্ষ্যপ্রমাণ সবই ছিল ছেলেগুলোর বিরুদ্ধে। এ-অবস্থায় ভিকটিম মেয়েটাকে কাঠগড়ায় তোলে সে, প্রশ্নবাণে ফালা ফালা করে দেয়। কী ধরনের পোশাক পরেছিলে তুমি? ছেলেগুলোকে ঠিক কী বলেছিলে? ওরা কীভাবে তোমাকে ধরেছিল? কোথায় কোথায় স্পর্শ করেছে? কার পরে কে তোমার ওপর চড়াও হয়েছিল? সোজা কথায়, কাঠগড়ায় তুলে মেয়েটাকে দ্বিতীয়বার বাক্যবাণে ধর্ষণ করেছিল সে। তাকে বাধ্য করেছিল ভয়াবহ সেই স্মৃতি রোমন্থন করতে… তাও আবার জনসমক্ষে! বলা বাহুল্য, আবেগের তোড়ে ভুলভাল বলতে শুরু করে মেয়েটি, দিতে শুরু করে পরস্পরবিরোধী তথ্য। তার মুখ দিয়েই বলিয়ে নেয় বন্ধুটি—উত্তেজক পোশাক পরেছিল সে, প্রচুর ড্রিঙ্ক করেছিল, ছেলেগুলোর সঙ্গে খুনসুটি করেছিল। শেষে যা হবার তা-ই হলো, মামলায় হেরে গেল মেয়েটি। ছাড়া পেয়ে গেল ধর্ষকেরা। খুবই খারাপ একটা কাজ ছিল সেটা। কিন্তু কী আর করা… যেখানে বীজ বোনা হয়েছে, সেখানেই তো ফুল ফোটাতে হবে!

    লিয়ারির কাছে তাই মন্ত্রটা ঘন জঙ্গলে ধারালো মাচেটির মত মূল্যবান। এমন এক অস্ত্র, যা দিয়ে সমস্যার ঘন ঝোপঝাড় কেটে পথ করে নেয়া যায়, কিংবা বাধার প্রাচীর কেটে পৌঁছুনো যায় অভীষ্ট লক্ষ্যে। কথাটা ওকে পুরনো পাপের স্মৃতিও চাপা দিতে সাহায্য করে। ভাবে, ওসব অন্যায় তাকে করতে হয়েছে ফুল ফোটানোর তাগিদে।

    টোপাঙ্গা বিচের তিনশো ফুট ওপরে, ট্যুরিস্টদের জন্যে তৈরি করা ভিউয়িং এরিয়ার পাশে, কয়েকটা পাম গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে এসব কথা ভাবছে লিয়ারি। চোখ প্যাসিফিক কোস্ট হাইওয়ের দিকে—সাগরের পার ঘেঁষে দিগন্তে মিলিয়ে গেছে রাস্তাটা। ভোরের আলোয় অপার্থিব দ্যুতি ছড়াচ্ছে প্রশান্ত মহাসাগরের পানি। রাস্তা ধরে একটা কালো রঙের এস.ইউ.ভি-কে এগিয়ে আসতে দেখল সে, ক্যানিয়ন রোডে ঢুকল ওটা। পাহাড়ি ঢাল বেয়ে ওভারলুক ড্রাইভ ধরল, কয়েক মিনিট পরে এসে থামল লিয়ারির বি.এম.ডব্লিউ-র পাশে। ভোরের এ-সময়টায় আর কোনও গাড়ি বা মানুষ নেই আশপাশে।

    এস.ইউ.ভি-র পেছনের দরজা খুলে গেল। নেমে এল আলবার্ট ফুলার। পরিপাটি মানুষ, বয়স পঞ্চাশের আশপাশে, মাথার চুল পাতলা হতে শুরু করেছে। সাগরের দিক থেকে ধেয়ে আসা বাতাসে তার টাই আর কোটের ঝুল পতাকার মত পত পত করে উড়ছে। হেঁটে লিয়ারির পাশে চলে এল লোকটা, কিন্তু হাত মেলাল না; মুখ ঘুরিয়ে তাকাল না পর্যন্ত। অপ্রয়োজনীয় সৌজন্য বিনিময়ে আগ্রহী নয় সে। রেলিঙে হাত রেখে সাগরের দিকে একটু ঝুঁকে দাঁড়াল। লিয়ারিও ভদ্রতা দেখিয়ে জানতে চাইল না, ওয়াশিংটন থেকে লস অ্যাঞ্জেলেস পর্যন্ত আকাশভ্রমণটা কেমন কেটেছে তার। সেসবের প্রয়োজন নেই। জানে, একটা এফ-সিক্সটিন জেট ফাইটারে চড়ে মার্ক-টু বেগে ফুলারকে ছুটে আসতে হয়েছে এই মিটিংটার জন্যে। কিছু কিছু বিষয় আছে, যেগুলো নিয়ে টেলিফোনে আলাপ চলে না; সামনাসামনি কথা বলতে হয়।

    মুখ খোলার আগে ফুলারের মুখটা খুঁটিয়ে দেখল লিয়ারি। গত বিশ বছর ধরে তাকে চেনে সে। ভীষণ বাস্তববাদী মানুষ… হোমল্যাণ্ড সিকিউরিটির মত একটা গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের প্রধান হতে গেলে সেটাই প্রয়োজন… লিয়ারির বীজ-মাটি আর ফুল ফোটানো-র মন্ত্রের ঘোর বিরোধী। দুশ্চিন্তাটা সেখানেই।

    গুরুত্বহীন লোকেরা সমস্যা বাধালে সেটা সহজে সামাল দেয়া যায়। যেমন ওই অপদার্থ ডাক্তারটা, যাকে অ্যালির দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। সপ্তাহখানেক আগে এল.এ. টাইমস্ এর এক সাংবাদিকের সঙ্গে লাঞ্চে গিয়েছিল সে। আড়িপাতা যন্ত্র লাগানো ছিল… ডাক্তার কোনও গোপন তথ্য পাচার করছে, এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তা ছাড়া ভালমত খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ওই সাংবাদিক আসলে ডাক্তারের কাজিন। দু’জনে লাঞ্চে যেতেই পারে। কিন্তু তারপরেও ঝুঁকি নিতে চায়নি লিয়ারি। যে-দরজার পেছনে বিপদ লুকিয়ে আছে, সেটায় একটা ফুটোও রাখা চলে না। কিন্তু এ-ধরনের সহজ সমাধান ফুলারের বেলায় অচল।

    ‘আমাদের বন্ধু ফোন করেছিলেন,’ হঠাৎ বলে উঠল ফুলার। সাগরের দিক থেকে চোখ সরায়নি। ‘আমাকে দিয়ে কী করাতে চাইছ, সেটা ব্যাখ্যা করে শুনিয়েছেন।’

    চুপ করে রইল লিয়ারি।

    ‘আমার কথা একটাই,’ বলল ফুলার। ‘অন্ধের মত কুয়োয় ঝাঁপ দেব না আমি। কী ঘটেছে… কীসের মধ্যে পড়তে চলেছি, সব খুলে বলতে হবে আমাকে। স-অ-ব!’

    ‘সবকিছু বলা সম্ভব নয় আমার পক্ষে,’ নিচুস্বরে বলল লিয়ারি। ‘আমি নিজেই পুরোটা জানি না।’

    ‘ওসব বলে পার পাবে না। কার বিরুদ্ধে লাগতে বলছ আমাকে, সেটা তো ভাবো! মাসুদ রানা কোনও সাধারণ মানুষ নয়। আমরাই অনেকবার তাকে বীরের সম্মান দিয়েছি… আজও বহু আমেরিকান তাকে নায়ক বলে মানে। চালে যদি সামান্যতম গড়বড় হয়, ওর বদলে ফেঁসে যাব আমি। বিশ্বাসঘাতক, আর জাতীয় পর্যায়ের ভিলেনে পরিণত হব আমি!’

    লোকটাকে কড়া করে একটা ধমক দিতে ইচ্ছে হলো লিয়ারির। বলতে ইচ্ছে হলো, বড় বড় রাঘব-বোয়ালেরা জড়িত পুরো ব্যাপারটার সঙ্গে; সে-তুলনায় ফুলার নেহাত চুনোপুঁটি। তাকে অনুরোধ নয়, চাইলে হুকুমই দিতে পারে সে। এমন নয় যে, কাজটা করে দিলে কাউকে মস্ত বড় দয়া দেখানো হবে। ইচ্ছেটা বহু কষ্টে দমন করল সে। নরম সুরে বলল, ‘তোমাকে যে একটা বাজে পরিস্থিতিতে ফেলছি, তা আমি জানি, আলবার্ট। কিন্তু কাজটা করে দিলে আমি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।’

    এবার তার দিকে ঘুরে দাঁড়াল ফুলার। চেহারা দেখে বোঝা গেল, চিড়ে ভেজেনি। থমথমে গলায় সে বলল, ‘সব খুলে বলো আমাকে।’

    রেলিঙে কনুই রেখে হাইওয়ের দিকে তাকাল লিয়ারি। কতটুকু বলবে ফুলারকে… কোত্থেকেই বা শুরু করবে—ভাবছে।

    ‘কিছু কিছু ব্যাপার আমার জানা আছে’ ফুলার বলল। ‘আমি জানি, আসলে রানা তোমাদের টার্গেট নয়; টার্গেট একটা মেয়ে। গত দু’মাস থেকে ও তোমাদের কাস্টডিতে ছিল। আর এই মেয়ের সঙ্গে এক দশকের পুরনো ফোর্ট ডেট্রিকের রিসার্চ ওঅর্কের সম্পর্ক আছে, রাইট?’ নিচু গলায় হাসল সে। ‘অবাক হচ্ছ? আমি মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সে ছিলাম, অ্যালেক্স। ওখানে কানাঘুষোর ছলে অনেক কিছুই আলোচনা হয়। এককালে অ্যানিমেল টেস্টিং হতো ফোর্ট ডেট্রিকে। পরে শুনেছিলাম হিউম্যান এক্সপেরিমেন্টেশনও শুরু করা হয়েছিল। বিশ্বস্ত এক সূত্র জানিয়েছিল, ওরা সফল হয়েছিল। কী, এখন পর্যন্ত সব ঠিকঠাক বলতে পেরেছি তো?’

    তার দিকে না তাকিয়ে মাথা ঝাঁকাল লিয়ারি।

    অদ্ভুত একটা আওয়াজ করল ফুলার। রুদ্ধশ্বাসে বলল, ‘ক্রাইস্ট! মেয়েটা ওদের একজন? ও কি… ও কি ইণ্ডরিডার?’

    নির্বিকার রইল লিয়ারি। রাস্তার ওপর থেকে দৃষ্টি সরাল না। মনে মনে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসছে—ফুলার যদি ভেবে থাকে, মাইণ্ডরিডিং পর্যন্তই অ্যালির দৌড়; তা হলে বলতে হয়, তার জ্ঞানে যথেষ্ট খামতি রয়েছে। বাস্তবে মেয়েটার ক্ষমতা আরও বহুগুণ বেশি।

    ‘হ্যাঁ,’ লিয়ারি বলল। ‘ও মনের কথা পড়তে পারে।’

    এক হিসেবে মিথ্যে বলছে না সে। যতক্ষণ না স্মৃতি ফিরে আসছে, মাইণ্ডরিডিঙের চেয়ে বেশি কিছু করতে পারবে না মেয়েটা। ওটা ওর সহজাত ক্ষমতা—চোখ দিয়ে দেখা, বা কান দিয়ে শোনার মত। কিন্তু বাকি ক্ষমতাগুলো প্রদর্শন করতে চাইলে তাকে খাটতে হবে। স্মৃতি না ফিরলে ও জানবেই না, ওসব ক্ষমতা ওর আছে। কীভাবে কী করতে হবে, তাও মনে পড়বে না।

    ‘বেশ,’ বলল ফুলার। ‘এবার তা হলে সব খুলে বলো। কী ঘটছে? কীসের মধ্যে নাক গলাতে হবে আমাকে?’

    নিচের দিকে তাকিয়ে রইল লিয়ারি। হুডখোলা একটা হলুদ রঙের হামভি গাড়ি ছুটে চলেছে, তাতে প্রমোদভ্রমণে বেরিয়েছে কয়েকজন তরুণ-তরুণী। হাসছে গলা ছেড়ে। সান্তা মনিকার দিকে চলে গেল গাড়িটা। ওদিকে তাকিয়ে আনমনা হয়ে গেল সে। ভাবছে, ওদের মত নিশ্চিন্ত, মুক্ত জীবনযাপন করতে পারলে কতই না ভাল হতো!

    ‘অ্যালেক্স?’ ডাকল ফুলার।

    সংবিৎ ফিরে পেল গিয়ারি। সোজা হয়ে ঘুরে দাঁড়াল। বলল, ‘ফোর্ট ডেট্রিকের ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না, শুধু এটুকু জেনে রাখো, পাঁচ বছর আগেই গবেষণা থামিয়ে দিয়েছে ওরা। এরপর কাজটার ভার নিয়েছে প্রাইভেট সেক্টরের ডিফেন্স কন্ট্রাক্টরেরা।’

    ‘একাধিক কন্ট্রাক্টর?’

    মাথা ঝাঁকাল লিয়ারি। ‘হ্যাঁ। দুটো ফার্ম। প্রথমটা ফিল্ডিং-গেলার…. আমি ওদের হয়ে কাজ করছি। অন্যটা সাদার্ন অ্যাসোশিয়েটস্।’

    কথাটা শুনেই ভুরু কোঁচকাল ফুলার। তার জানা আছে, ফিল্ডিং-গেলার আর সাদার্ন অ্যাসোশিয়েটস্ পরস্পরের চির- – প্রতিদ্বন্দ্বী। সন্দিহান গলায় জিজ্ঞেস করল, ‘দুই ফার্মই রিসার্চের দায়িত্ব নিল?’

    ‘স্বতন্ত্রভাবে,’ তাকে জানাল লিয়ারি। ‘মানে, দু’পক্ষের মাঝে কোনও ধরনের কানেকশন ছাড়া।’

    ‘প্রতিযোগিতার মত?’

    ‘প্রতিযোগিতাই—কে কার আগে কাজ শেষ করতে পারে। ওপরমহলের অদ্ভুত খেয়াল

    অদ্ভুত খেয়াল বলতে পারো, কম্পিটিশনের মাধ্যমে দ্রুত প্রজেক্ট শেষ করার একটা কায়দা। মাঝে মাঝে এতে কাজও হয়। যেহেতু একটা তাড়া থাকে, বাড়তি মোটিভেশন নিয়ে কাজ করে লোকে।’

    ‘এবার কাজ হয়েছে?’

    মাথা ঝাঁকাল লিয়ারি।

    ‘তো… কে জিতল?’ জিজ্ঞেস করল ফুলার।

    অন্যদিকে মুখ ফেরাল লিয়ারি। তিক্ত স্বরে বলল, ‘ওরা। গত পাঁচ বছরে আমাদের আউটপুট প্রায় শূন্য। কিন্তু শুরু থেকেই সাদার্ন অ্যাসোশিয়েটস্ সাফল্যের দেখা পেয়েছে।’ কাঁধ ঝাঁকাল সে। ‘এ-মুহূর্তে ওরা আর রিসার্চে সীমাবদ্ধ নেই। ইন ফ্যাক্ট, ফাইনাল ট্রায়ালের জন্যে ফিনিশড প্রোডাক্ট রয়েছে ওদের হাতে।

    ‘কী ধরনের প্রোডাক্ট?’ জানতে চাইল ফুলার।

    ‘মানুষ,’ বলল লিয়ারি। ‘টেস্ট সাবজেক্ট নয়, সত্যিকার অপারেটিভ। বাধ্য, অনুগত… হুকুম তামিল করে।’

    ‘প্রত্যেকেই মাইণ্ডরিডার?’

    নিঃশব্দে সায় জানাল লিয়ারি। তবে বলল না যে, সাদার্ন অ্যাসোশিয়েটসের অপারেটিভরা অ্যালির তুলনায় নিতান্তই দুগ্ধপোষ্য শিশু। অনেকটা পাড়ার ফুটবলার আর আর্জেন্টিনার লিয়োনেল মেসির মত। খেলতে জানে দু’জনেই, কলাকৌশল সবই জানে, কিন্তু মাঠে তাদের আকাশ-পাতাল ফারাক।

    এর ভেতর তুমি এলে কীভাবে?’ প্রশ্ন করল ফুলার। ‘রিসার্চ-টিসার্চ তোমার লাইন নয় বলেই জানি।’

    ‘কয়েক মাস আগে ফোর্ট ডেট্রিক থেকে এক পুরনো বন্ধুর ফোন পাই আমি—ছোট একটা ওঅর্কিং গ্রুপ নিয়ে সে ওখানকার পুরনো রিসার্চের নথিপত্র ঘাঁটাঘাঁটি করছিল। সে- আমলের একজন টেস্ট সাবজেক্টের ইনফরমেশন খুঁজে পায় সে। অরিজিনাল রিসার্চের সব টেস্ট সাবজেক্টকে… ইয়ে, যাকে বলে… নষ্ট করে ফেলা হয়েছিল; তবে এই সাবজেক্ট—একটা মেয়ে—বেঁচে যায়। পালিয়ে গিয়েছিল মেয়েটা। শুধু তা-ই নয়, গত পাঁচ বছর ধরে মুক্ত, স্বাধীন অবস্থায় রয়েছে মেয়েটি। বন্ধুটি জানতে চায়, ফিল্ডিং- গেলারের হয়ে আমি তাকে খুঁজে বের করে উঠিয়ে আনতে পারব কি না।’

    ‘যাতে সাদার্ন অ্যাসোশিয়েটসকে টেক্কা দেয়া যায়?’

    ‘হুঁ।’

    ‘তাতে তুমি রাজি হয়ে গেলে? ছোট্ট একটা মেয়ে… কী করতে চাইছিলে তোমরা ওকে নিয়ে?’

    ‘প্রয়োজনের বেশি কিছু নয়। বেশিরভাগ টেস্টই ওর রক্ত পরীক্ষা এবং ব্রেনের ফাংশানাল এমআরআই স্ক্যানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার কথা ছিল। কিন্তু শুরুতে আমরা নারকোটিক ইন্টারোগেশন করব বলে ঠিক করি। আশা করেছিলাম, তাতে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য পাওয়া যাবে ওর মাথা থেকে।’

    ‘গিয়েছিল?’

    দীর্ঘশ্বাস ফেলল লিয়ারি। ‘হ্যাঁ। গুরুত্বপূর্ণ তথ্যই বটে।’

    ‘কী তথ্য?’

    সাগরের দিকে তাকাল লিয়ারি। ম্যারিনা ডেল রে থেকে একটা ইয়ট বেরিয়ে এসে মিলিয়ে যাচ্ছে দিগন্তে।

    ‘অ্যালেক্স,’ ডাকল ফুলার। ‘কী জেনেছ তোমরা ওর কাছ থেকে?

    আরেক দফা দীর্ঘশ্বাস ফেলে পুরোটা খুলে বলল লিয়ারি। তিন মিনিট পর ওর কথা যখন শেষ হলো, ফুলারের চোয়াল ঝুলে পড়েছে। কপালে জমেছে বিন্দু বিন্দু ঘাম।

    ‘এসব কি সত্যি?’ বলল সে। ‘নাকি কোনও উর্বরমস্তিষ্ক মানুষের মাথা থেকে গজানো…’

    তাকে থামিয়ে দিল লিয়ারি। বলল, ‘আমাকে বলা হয়েছে, পুরো ব্যাপারটা স্ট্যাণ্ডবাই অবস্থায় আছে, যে-কোনও মুহূর্তে অ্যাকটিভেট করা হবে। এবার বুঝতে পারছ তো, কেন মেয়েটাকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব নয়? ওর পক্ষে প্ল্যানটায় বাগড়া দেয়া সম্ভব… আর সেটা মস্ত বড় সমস্যার সৃষ্টি করবে। এটা এখন আর ডিফেন্স কন্ট্রাক্টরদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় সীমাবদ্ধ নেই। অনেক ওপর থেকে মেয়েটাকে শেষ করে দেয়ার নির্দেশ পেয়েছি আমি। এ নির্দেশ আমাকে মানতেই হবে।’

    দুর্বলভাবে মাথা ঝাঁকাল ফুলার। জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজাল।

    ‘সঙ্গে থাকছ তো তুমি?’ জিজ্ঞেস করল লিয়ারি। ‘আমাকে সাহায্য করছ তো?’

    আরেকবার মাথা ঝাঁকাল ফুলার। লিয়ারিকে ছাড়িয়ে তার দৃষ্টি চলে গেছে লস অ্যাঞ্জেলেসের স্কাইলাইনের দিকে। যা শুনল, তার আলোকে দেখতে শুরু করেছে শহরটাকে।

    ‘তা হলে আলোচনার এখানেই সমাপ্তি,’ বলল লিয়ারি। ‘কী করতে হবে, তা তুমি জানো।’

    ফুলারের তরফ থেকে কিছু শোনার জন্যে আর অপেক্ষা করল না সে। ঘুরে নিজের গাড়িতে গিয়ে উঠল। ইঞ্জিন চালু করে ঘুরিয়ে নিল গাড়ি। রওনা দেবার আগে শেষবারের মত তাকাল ফুলারের দিকে, সে এখনও রেলিঙে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। হজম করার চেষ্টা করছে পুরো ব্যাপারটা।

    ওকে কতটা বিশ্বাস করা চলে? মনে মনে ভাবল লিয়ারি। কতটা বাস্তববাদী সে? ফুলারকে ঘুরে দাঁড়াতে দেখল। চেহারা দেখে মনে হলো, সবকিছু মেনে নিয়েছে। আপাতত সেটুকুই যথেষ্ট।

    ব্রেক থেকে পা সরিয়ে অ্যাকসেলারেটর চাপল লিয়ারি। গাড়ি চলতে শুরু করল।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleরিং – কোজি সুজুকি
    Next Article সাবাস অয়ন! সাবাস জিমি!! – ইসমাইল আরমান

    Related Articles

    ইসমাইল আরমান

    দ্য সি-হক – রাফায়েল সাবাতিনি

    July 11, 2025
    ইসমাইল আরমান

    সাবাস অয়ন! সাবাস জিমি!! – ইসমাইল আরমান

    July 11, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রাজমালা বা ত্রিপুরার ইতিহাস – শ্রী কৈলাসচন্দ্ৰ সিংহ প্রণীত

    August 20, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রাজমালা বা ত্রিপুরার ইতিহাস – শ্রী কৈলাসচন্দ্ৰ সিংহ প্রণীত

    August 20, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রাজমালা বা ত্রিপুরার ইতিহাস – শ্রী কৈলাসচন্দ্ৰ সিংহ প্রণীত

    August 20, 2025

    আলো হাতে সেই মেয়েটি – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    গোয়েন্দা গার্গী সমগ্র – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.