Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    শ্রীশ্রীচণ্ডী – অনুবাদ : পঞ্চানন তর্করত্ন

    September 9, 2025

    পুলিশ কাহিনী ১ – পঞ্চানন ঘোষাল (প্রথম খণ্ড)

    September 9, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মাসুদ রানা ৪৬৬ – ধ্বংসযজ্ঞ

    কাজী আনোয়ার হোসেন এক পাতা গল্প453 Mins Read0

    ধ্বংসযজ্ঞ – ২১

    একুশ

    ক্ল্যাম্প লাগানোর পর দশ মিনিট পেরিয়ে গেছে। এখনও ওপরে উঠে চলেছে গ্রুপার। তবে ধীরে ধীরে কমছে গতি।

    ‘এক হাজার ফুট পেরোচ্ছি,’ জানাল আসিফ।

    স্বস্তি পেল না তানিয়া। শুনতে ষোলো হাজার ফুটের চেয়ে ভাল শোনাচ্ছে বটে, তারপরেও এই গভীরতা নিরাপদ নয়। সাধারণ স্টিলের তৈরি সাবমেরিন এতদূর নামতে পারে না। মনে পড়ল, বছর দুই আগে আমেরিকান নেভির একটা লস অ্যাঞ্জেলেস ক্লাস সাবমেরিনে চড়ে পানিতে নেমেছিল। সাতশো ফুটে পৌছুতেই বিকট শব্দে দেবে যায় ওটার খোলের অনেকটা অংশ। সেই শব্দ শুনে আত্মারাম খাঁচাছাড়া হবার দশা।

    ‘এটা আমাদের টেস্ট ডেপথ, ম্যাম,’ বলেছিলেন ক্যাপ্টেন। ‘এতদূর নামলে প্রতিবারই দেবে যায় খোল। ভয়ের কিছু নেই।’

    পরে জেনেছিল, সাবমেরিনে নতুন অতিথি এলে মজা করার জন্যে কাণ্ডটা ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটানো হয়… ভয় দেখানো হয় সাতশো ফুটে নেমে। সেই তুলনায় আরও তিনশো ফুট বেশি গভীরে রয়েছে গ্রুপার। পানির প্রেশার এখানে ষোলো হাজার ফুটের মতই মারাত্মক।

    ‘নয়শো ফুট,’ আবারও ডেপথ জানাল আসিফ। ‘কত রেটে উঠছি?’ জিজ্ঞেস করল তানিয়া।

    দেড়শোর মত।’

    তারমানে আরও ছ’মিনিট লাগবে সারফেসে পৌঁছুতে… বিপদ কাটাতে।

    বাইরে থেকে বিশ্রী একটা আওয়াজ শোনা গেল। কিছু খসে পড়ল সাবমারসিবলের গা থেকে। কাঁপতে শুরু করল পুরো কাঠামো।

    ‘মনে হচ্ছে রেডার হারিয়েছি,’ বলল আসিফ।

    ‘রেডার ছাড়া চালাতে পারবে?’

    ‘দেখি, থ্রাস্ট অ্যাডজাস্ট করা যায় কি না।’

    প্যানেলে বসানো দুটো জয়স্টিক নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল আসিফ। তানিয়া তাকাল পেছনদিকে। অন্তত আশি লিটার পানি জমেছে টেইল সেকশনে, স্পর্শ করছে ওর গোড়ালি। পা ভাঁজ করে ওপরদিকে টেনে নিল ও।

    কিছুক্ষণ কেটে গেল শ্বাসরুদ্ধকর নীরবতায়। পাঁচশো ফুটে উঠে এল গ্রুপার। তারপর ক্যাঁচকোঁচ শব্দে কেঁপে উঠল সারমারসিবলের পুরো শরীর। লোহা বেঁকে যাবার মত আওয়াজ। বাড়ছে-কমছে।

    ‘কীসের আওয়াজ…’ বলতে বলতে ওপরে তাকাল তানিয়া। থমকে গেল। ফ্ল্যাঞ্জে লাগানো একটা ক্ল্যাম্প ঝাঁকি খাচ্ছে, আওয়াজ আসছে ওটারই।

    আবার টেইল সেকশনের দিকে চোখ ফেরাল ও। বেড়েছে পানি, অন্তত একশো গ্যালন জমেছে। তারমানে সামনের তুলনায় পেছনদিকের ওজন বেড়ে গেছে আটশো পাউণ্ড। বাড়তি ওজনটা প্রচণ্ড চাপ ফেলছে দুই সেকশনের জয়েন্টের ওপর, দু’টুকরো করে ফেলতে চাইছে গ্রুপারকে। তানিয়া বুঝতে পারল, নাক উঁচু করে ওঠা যাবে না আর। লেভেল করতে হবে সাবমারসিবলকে, যাতে ওজনটা সমবণ্টন হয়ে যায় সবখানে। বয়ান্সি যতটুকু থাকবে, তার ওপর নির্ভর করে এরপর উঠতে হবে ওদেরকে।

    ‘আসিফ!’ ডাকল ও।

    ‘দু’শো,’ বলল আসিফ।

    ‘লেভেলে আনো গ্রুপারকে।’

    ‘কী?’

    জবাব দেবার আগেই বেড়ে গেল খোলের ধাতব আর্তনাদ। ঝট্ করে ওপরে তাকাল তানিয়া। ওর বিস্ফারিত দৃষ্টির সামনে ফ্ল্যাঞ্জ থেকে ছিটকে বেরিয়ে এল ক্ল্যাম্পটা, পড়ল পায়ের ওপরে। ব্যথায় কাতরে উঠল ও।

    পরক্ষণে আরেকটা ক্ল্যাম্প খুলে পড়ল পাশ থেকে। প্রবল আক্রোশে জয়েন্টের ফাঁক দিয়ে ঢুকতে শুরু করল নোনা পানি।

    .

    ঝোড়ো বেগে ঢালু পথ ধরে ছুটছে টয়োটা। অ্যাকসেলারেটরের ওপরে প্রায় চড়ে বসেছে লামিয়া। উল্টোদিক থেকে এগোতে থাকা গাড়িদুটোর মধ্যে বিন্দুমাত্র পরিবর্তন দেখা গেল না। ওরাও ছুটে আসছে একই ভঙ্গিতে—গায়ে গা ঠেকিয়ে, হেডলাইটের চোখ-ধাঁধানো আলো জ্বেলে।

    চোখের ওপর একটা হাত তুলল রানা, দৃষ্টি অক্ষত রাখতে চায়। রিয়ারভিউ মিররে চোখ বোলাল-পেছনের অডিটা দ্রুত কাছে চলে আসছে। যেন খোঁয়াড়ে ঢোকাতে চাইছে ওদেরকে।

    চোখ পিটপিট করে আবার সামনে তাকাল ও। দেখতে পেল একটা সাইনবোর্ড, রেস্টুরেন্টে যাবার পথেও দেখেছিল ওটা।

    অ্যামেচার ফ্লাইং ক্লাব: হ্যাঙগ্নাইডারস্ অ্যাণ্ড আল্ট্রালাইটস্।

    খপ্ করে স্টিয়ারিং হুইল ধরল রানা, এক টানে ঘুরিয়ে দিল ডানদিকে।

    ‘করছ কী!’ চেঁচিয়ে উঠল লামিয়া।

    জবাব দিল না রানা। গায়ের ওপর প্রায় চড়ে বসেছে সামনের গাড়িদুটো, ঘুরে যাওয়া টয়োটা চাবুকের মত একটা বাড়ি মারল ওগুলোর নাকে। ধাতব সংঘর্ষের আওয়াজ হলো, পরক্ষণে অদৃশ্য এক টানে আবার সামনে এগোল টয়োটা, পেছনে ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে পড়ল গাড়িদুটো। বিস্মিত চোখে আরোহীরা দেখল, ধূলিধূসরিত একটা সাইড রোডে ঢুকে পড়েছে তাদের শিকার।

    তাড়াতাড়ি হুইল ঘুরিয়ে চাকা সিধে করল লামিয়া। পেছনে উঁকিঝুঁকি দেবার চেষ্টা করছিল, থেমে গেল রানার ধমকে।

    ‘এগোতে থাকো!’

    ‘কোথায় যাচ্ছি কিছুই তো জানি না,’ প্রতিবাদ করল লামিয়া।

    ‘তাতে কিছু যায়-আসে না।’

    ক্ষণিকের জন্যে অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল রিয়ারভিউ মিরর। একটু পর আবার দেখা গেল আলোর প্রতিফলন। ওদের পিছু পিছু অডিটাও নেমে এসেছে রাস্তাটায়।

    ‘সোজা সামনে,’ রানা বলল। ‘একটা পাহাড়ি চাতাল দেখতে পাচ্ছি। ওদিকে যাও।’

    ‘পাগল হয়েছ? রাস্তার ওপর দিয়ে চালাতেই খবর হয়ে যাচ্ছে।’

    ‘সেজন্যেই যেতে বলছি ওদিকে।’

    পাথর ছিটিয়ে, ধুলো উড়িয়ে এগিয়ে চলেছে টয়োটা, পেছনে সৃষ্টি হয়েছে বিরাট এক মেঘ। হেডলাইটের আলো সম্পূর্ণভাবে ঢাকা পড়ছে না, তবে দৃষ্টিসীমা সঙ্কুচিত করবার জন্যে যথেষ্ট। রানা আন্দাজ করল, অডির ড্রাইভারকে যুদ্ধ করতে হচ্ছে তাল মেলাবার জন্যে-ঠিকমত দেখতে পাচ্ছে না সামনে, আলগা পাথরে ক্রমাগত পিছলাচ্ছে তার চাকা।

    টয়োটার তুলনায় অডির ইঞ্জিন শক্তিশালী, চাকাও বড়। তবে আলগা পাথরের ওপর দিয়ে চলতে গিয়ে তাতে বরং অসুবিধে হচ্ছে গাড়িটার। গতি বাড়ানোর ফলে পাথরের ওপর দিয়ে এক অর্থে ভেসে আসছে ওটা, নিয়ন্ত্রণহীনভাবে। সে-তুলনায় টয়োটার ছোট চাকা রাস্তায় কামড় বসাতে পারছে সহজে।

    ‘আরেকটু কাছে আসতে দাও,’ বলল রানা, জরিপ করছে সামনের জমিন।

    মাথা ঝাঁকাল লামিয়া। রানার প্ল্যান অনুমান করতে পারছে।

    একটু অপেক্ষা করল রানা, গাড়ি চাতালের ওপর উঠে আসতেই তীক্ষ্ণ গলায় বলল, ‘স্পিড বাড়াও… ঘোরাও গাড়ি!’ অ্যাকসেলারেটর চাপল লামিয়া, টয়োটার পেছনে বড় হলো ধুলোর মেঘ। তবে অডির ড্রাইভারও একই কাজ করেছে, এগিয়ে এসে গুঁতো মারার চেষ্টা করল ওদের পেছনে।

    ঘোরাতে বলেছি তোমাকে!’ চেঁচাল রানা।

    তাড়াতাড়ি স্টিয়ারিং হুইল ঘোরাল লামিয়া। কিন্তু আলগা পাথরের ওপর পিছলে গেল টয়োটা, স্কিড করে ছুটল চাতালের কিনারার দিকে। দাঁতে দাঁত পিষল রানা, হিসেবে ভুল করে ফেলেছে মেয়েটা। খপ্ করে ওর কাঁধ আঁকড়ে ধরল, টান দিল নিজের দিকে। ভাঙা দরজার ফোকর গলে দু’জনে ছিটকে বেরিয়ে এল, আছড়ে পড়ল মাটিতে।

    ধুলোর মেঘ ভেদ করে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বেরিয়ে এল অডি, কয়েক ইঞ্চির জন্যে মিস করে গেল রানা আর লামিয়াকে। ততক্ষণে চাতালের কিনার পেরিয়ে নিচে পড়ে গেছে টয়োটা। শেষ মুহূর্তে বিপদটা টের পেল অডির ড্রাইভার, হার্ড ব্রেক কষল। জ্বলে উঠল পেছনের ব্রেক লাইট।

    ‘মর, শালা!’ নিচু গলায় বলল রানা।

    আলগা নুড়ি পাথরের ওপর দিয়ে পিছলাতে শুরু করেছে অডি, ব্রেক কাজ করছে না। টয়োটার পিছু পিছু ওটাও অতিক্রম করল চাতালের সীমানা, খসে পড়ল নিচে।

    থমথমে নীরবতা বিরাজ করল তিন সেকেণ্ড, তারপর ভেসে এল দুটো বিস্ফোরণের আওয়াজ। পাহাড়ের নিচে আছড়ে পড়েছে গাড়িদুটো।

    ধুলোভরা বাতাস পাক খাচ্ছে রানা আর লামিয়াকে ঘিরে। ক্ষণিকের জন্যে মনে হলো, বিশ্বচরাচরে আর কেউ নেই।

    ‘বেঁচে গেলাম?’ ফিসফিসিয়ে বলল লামিয়া।

    ‘না।’ ফেলে আসা রাস্তার দিকে তাকাল রানা। ধুলোর পর্দার ওপারে দেখা দিয়েছে দু’জোড়া আলো। উল্টোদিক থেকে উদয় হওয়া গাড়িদুটো এবার আসছে নুড়ি বিছানো রাস্তা ধরে।

    ‘চলো,’ টান দিয়ে লামিয়াকে দাঁড় করাল রানা। ‘পালাতে হবে।’

    .

    ককপিটের দিকে তানিয়াকে টেনে তুলল আসিফ। ক্ল্যাম্পের আঘাতে আহত পা-টা চেপে ধরে আছে সে।

    ‘বেশি লেগেছে?’ জানতে চাইল।

    ‘না,’ মাথা নাড়ল তানিয়া। ‘আমি ঠিক আছি।’ সাবমারসিবলের টেইল সেকশন দ্রুত ভরে উঠছে পানিতে। ডেপথ গজ চেক করল আসিফ।

    ১৫০…১৪০…

    কাঁটা এখনও নড়ছে, তবে শ্লথগতিতে। ফুল পাওয়ারে চলছে মোটর, ব্যালাস্টে কোনও ওজন নেই, তারপরেও ওপরে উঠতে রীতিমত যুদ্ধ করছে গ্রুপার।

    গলগল করে ঢুকছে পানি। টেইল সেকশন গ্রাস করে এখন এগিয়ে আসছে ফরোয়ার্ড সেকশনে। কন্ট্রোলের কয়েকটা বাটন চাপল আসিফ, সাবমারসিবলকে একেবারে খাড়া করে ফেলল। প্রপেলারের থ্রাস্ট রকেটের মত করে ব্যবহার করতে চাইছে। একটু গতি পেল গ্রুপার, ১৩৫ পেরোল ডেপথ গজের কাঁটা। পায়ের কাছে পাক খাচ্ছে পানি।

    ১৩০-এ গিয়ে পুরোপুরি থেমে গেল কাঁটা। গ্রুপার এখন যেন লেজের ওপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভেতরে আটকে থাকা বাতাস আর প্রপেলার মিলে যুদ্ধ করছে পানির বিরুদ্ধে—স্থির রেখেছে ওদেরকে। তবে আরেকটু পানি ঢুকলেই নষ্ট হয়ে যাবে ব্যালান্স, তলাতে শুরু করবে সাবমারসিবল।

    আসিফের কোমর পর্যন্ত ডুবে গেছে পানিতে। ওকে আঁকড়ে ধরল তানিয়া।

    ‘বেরিয়ে পড়তে হয়,’ বলল ও।

    কিছু বলল না তানিয়া। ঠাণ্ডা পানিতে বুক পর্যন্ত ডুবে গেছে ওর। কাঁপছে। ওকে টেনে আরেকটু ওপরে ওঠাল আসিফ।

    ‘বড় করে শ্বাস নাও,’ বলল সে। ‘গুনে গুনে তিনবার। শেষেরটা ধরে রাখবে। সাঁতার কেটে যখন ওপরে উঠব, আস্তে আস্তে ছাড়বে আটকে রাখা বাতাস।’

    মাথা ঝাঁকিয়ে শ্বাস নিল তানিয়া, আসিফও একইভাবে নিয়েছে। স্ত্রীর হাত ধরে ডুব দিল সে। হ্যাচের কাছে গিয়ে থামল, ঘোরাল হুইল। ভেতর আর বাইরে পানির চাপ এখন সমান, ধাক্কা দিতেই সহজে খুলে গেল হ্যাচ। ফোকর গলে একে একে বেরিয়ে এল দু’জনে।

    পরক্ষণে তলাতে শুরু করল গ্রুপার, আরেকটু দেরি করলে আটকা পড়ে যেত ওরা। সাবমারসিবলের দিকে ফিরে তাকাল না ওরা, হাত-পা ছুঁড়তে শুরু করল। লম্বা স্ট্রোক দিয়ে দ্রুত উঠে যাচ্ছে ওপরে।

    গায়ে নিয়োপ্রিনের সুট থাকায় সুবিধে পাচ্ছে আসিফ আর তানিয়া, ওগুলো বয়ান্ট। ওয়েইট বেল্ট না থাকায় বলতে গেলে লাইফবয়ের মত ওদেরকে নিয়ে চলেছে ওপরে। দু’জনেই কম্প্রেসড্ এয়ারে শ্বাস নিয়েছে, এটাও আরেকটা ভাল দিক। তানিয়া এখন ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ার নিয়মটা মনে রাখলেই হয়, মনে মনে ভাবল আসিফ। নইলে পানির প্রেশার কমে গেলেই প্রসারিত হবে বাতাস, ফুসফুস ফাটিয়ে দেবে।

    এক মিনিটের মাথায় বুকের ভেতর জ্বালাপোড়া অনুভব করল ও। থামল না, হাত-পা নেড়ে চলল। চারপাশে নিঃসীম পানি ছাড়া কিছুই দেখতে পাচ্ছে না। অনেক নিচে, ডুবন্ত গ্রুপারকে দেখাচ্ছে একটা ছোট্ট বিন্দুর মত।

    আরও ত্রিশ সেকেণ্ড পেরুল। বুকের ভেতর চাপ বাড়তে শুরু করেছে, একটু বাতাস ছাড়ল আসিফ। ওপরটা আলোকিত হয়ে উঠছে ধীরে ধীরে, কিন্তু তানিয়াকে দেখতে পেল না… দেখার মত অবস্থাও নেই। দু’মিনিটের মাথায় বিদ্রোহ করল শরীর-সমস্ত কোষ অক্সিজেনের জন্যে আর্তনাদ করছে, মাথায় দপদপে ব্যথা, শক্তি ফুরিয়ে আসছে ওর।

    যন্ত্রের মত হাত আর পা নেড়ে চলল ও, তবে আগের চেয়ে অনেক আস্তে। টের পেল খিঁচুনি উঠছে পেশিতে, কাঁপছে পুরো শরীর, কুঁকড়ে যেতে চাইছে। ধীরে ধীরে চলে গেল সেই কাঁপুনি। চকচকে সারফেস দেখতে পেল ওপরে, যেন একটা চাঁদোয়া-নড়ছে-চড়ছে। আর কতটা উঠতে হবে, বুঝতে পারছে না।

    চোখের সামনে থেকে আলো নিভে এল আসিফের। অসম্ভব ভারী হয়ে উঠল হাত আর পা, নড়াতে পারছে না। স্থির হয়ে গেল ও। চারদিকে নিঃসীম অন্ধকার। চেতনা হারাবার আগে একটা কথাই শুধু ভাবল- তানিয়া… কোথায় ও?

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleমাসুদ রানা ৪৬৩ – ছায়াঘাতক
    Next Article মাসুদ রানা ১৪৪ – অপহরণ-২

    Related Articles

    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৩৮৫-৩৮৬ – হ্যাকার (দুই খণ্ড একত্রে)

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৬ – টপ টেরর

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৪ – নরপশু

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৩ – ধর্মগুরু

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫২ – কালো কুয়াশা

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫১ – মায়া মন্দির

    July 22, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    শ্রীশ্রীচণ্ডী – অনুবাদ : পঞ্চানন তর্করত্ন

    September 9, 2025

    পুলিশ কাহিনী ১ – পঞ্চানন ঘোষাল (প্রথম খণ্ড)

    September 9, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.