Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    শ্রীশ্রীচণ্ডী – অনুবাদ : পঞ্চানন তর্করত্ন

    September 9, 2025

    পুলিশ কাহিনী ১ – পঞ্চানন ঘোষাল (প্রথম খণ্ড)

    September 9, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মাসুদ রানা ৪৬৬ – ধ্বংসযজ্ঞ

    কাজী আনোয়ার হোসেন এক পাতা গল্প453 Mins Read0

    ধ্বংসযজ্ঞ – ৪৩

    তেতাল্লিশ

    নর্দার্ন স্টারের অ্যাকোমোডেশন ব্লকের নিচতলায়, ছোট্ট একটা কেবিনে বসে আছে লামিয়া। ক’টা বাজে বলতে পারবে না, ঘড়ি নেই ওর কাছে। অনুমান করছে, সন্ধ্যা হয়েছে বোধহয়। অবশ্য সময় নিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই। জানালাহীন এই কেবিনে দিন-রাত সমান ওর কাছে।

    আড়মোড়া ভাঙতে চাইল লামিয়া, কিন্তু পারল না। হাত বাঁধা ওর, পায়ে পরিয়ে রাখা হয়েছে শেকল। গত পাঁচ দিনে খাদ্যপানীয়ও মিলেছে যৎসামান্য।

    বিশ্রাম নেবার ব্যর্থ চেষ্টা করছিল ও, এমন সময় খুলে গেল দরজা। ভেতরে ঢুকল কর্টেজ। সঙ্গে কেউ নেই। প্রতিদিনই আসে সে, ওর একমাত্র দর্শনার্থী, নিয়ে আসে একের পর এক দুঃসংবাদ। জাহাজে আর কোনও বিজ্ঞানী নেই, সবাইকে কোথায় যেন পৌঁছে দিয়ে এসেছে, পেছনে পড়ে রয়েছে একা লামিয়া। কর্টেজের ইচ্ছেয় এখানে রাখা হয়েছে ওকে। ইচ্ছেটা কবে উবে যায়, কোনও ঠিক নেই। কিছু আশা করা ঠিক হবে না, কারণ কর্টেজ বলেছে, ওকে নাকি খুঁজতে আসবে না কেউ। ও মারা গেছে বলে সবাইকে জানিয়েছে সে।

    এভাবেই কাটছে দিনের পর দিন। ওকে নিয়ে কী মতলব, তা খোলাসা করছে না কর্টেজ। তবে তার হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে না ব্যাপারটা সুখকর কিছু হবে।

    কর্টেজ এলে সাধারণত মুখ বুজে থাকে লামিয়া। কথা বলে না, কোনও প্রশ্নের জবাব দেয় না। খেপে গিয়ে গতকাল একটা চড় বসিয়েছিল কর্টেজ, কেড়ে নিয়ে গিয়েছিল পানির বোতল। গলা শুকিয়ে এখন খসখসে হয়ে গেছে লামিয়ার, থুতু পর্যন্ত আসছে না। ইচ্ছে থাকলেও কথা বলতে পারবে কি না জানে না।

    কেবিনে ঢুকে লামিয়ার সামনে এসে দাঁড়াল কর্টেজ। হাতে একটা নতুন পানির বোতল, ওর নাগালের বাইরে নামিয়ে রাখল সেটা।

    ‘ভিজিটিং আওয়ার শুরু হলো বুঝি?’ কর্কশ গলায় মুখ বাঁকিয়ে বলল লামিয়া।

    ‘আহ্!’ হাসল কর্টেজ। ‘খাঁচার পাখি দেখছি গান গাইতে শুরু করেছে!’

    ‘খুব শীঘ্রি তুমিই খাঁচায় ঢুকবে!’ ফুঁসে উঠল লামিয়া। এ ক’দিন চুপ করে থেকে লাভ হয়নি, তাই প্রকাশ করছে মনের ভাব। ‘যদি বেঁচে থাকো আর কী। আমেরিকানরা তোমাকে জ্যান্ত অবস্থায় অ্যারেস্ট করতে চাইতে পারে, কিন্তু আমার দেশের কায়দা ভিন্ন। আমরা তোমার মত লোকদেরকে উচিত শিক্ষা দিতে পছন্দ করি।

    ‘হ্যাঁ, আমি তা জানি,’ বলল কর্টেজ। ‘ভুলে গিয়েছিলাম, এখনও নিজেদের মহাশক্তিধর ভাবো তোমরা। ছেলেমানুষের মত আচরণ করে ভাবো, যেন তাতেই লোকে ভয়ে কুঁকড়ে যাবে, কাঁপবে থরথর করে।’

    ‘আমার কথাকে ফাঁকা বুলি ভেরো না। মেজর রাবিনোভিচকে খুন করেছ তুমি, আমাকে কিডন্যাপ করেছ। এরপরও যদি তোমার কোনও ব্যবস্থা না করা হয়, পুরো দেশের জন্যে বেইজ্জতি হবে সেটা। নিজের শক্তি দেখানোর জন্যে হলেও তোমাকে খুন করবে রাশা।’

    গম্ভীর ভঙ্গিতে মাথা ঝাঁকাল কর্টেজ। ‘সবকিছুরই বিকল্প থাকে,’ বলল সে। একটা চেয়ার টেনে লামিয়ার মুখোমুখি বসল। পানির বোতলটা নিয়ে মুখ খুলল, একটা চুমুক দিয়ে আবার ওটা নামিয়ে রাখল টেবিলে… এবারও লামিয়ার নাগালের বাইরে। ‘বিকল্পের কথা বলছিলাম। তোমার বন্ধু মাসুদ রানার কথাই ধরো। ওকে একটা বিকল্প দিয়েছিলাম আমি–বন্ধুকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে নিজে বেঁচে থাকার। তোমাকেও সেই একই সুযোগ দিচ্ছি। বাঁচো, কিংবা বাকিদের সঙ্গে মরো।’

    চুপ করে রইল লামিয়া, কথাটা আরও খোলাসা করুক লোকটা।

    ‘বিকল্প সুযোগ তোমার দেশের জন্যেও রয়েছে,’ বলল সে। ‘আমার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে পারে, কিংবা ফিরিয়ে আনতে পারে নিজেদের হারানো শৌর্য-বীর্য।’

    পকেট থেকে স্টিলেটো ছুরি বের করল কর্টেজ। সুইচে চাপ দিতেই বেরিয়ে এল ধারালো ফলা। ছুরিটা লামিয়ার মুখের সামনে নাচাল সে। ‘কী চাও, সেটা জিজ্ঞেস করতে পারি; কিন্তু মানুষের মুখের কথার দাম কী, বলো? তারচেয়ে কাজেই প্রমাণ হয়ে যাক।’

    ছুরির এক পোঁচে লামিয়ার হাতের বাঁধন কেটে দিল কর্টেজ। তারপর চেয়ারে হেলান দিল। মুখে মিটিমিটি হাসি।

    লোকটার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার উদগ্র ইচ্ছেটা বহু কষ্টে নিয়ন্ত্রণ করল লামিয়া, ফাঁদে পা দিল না। তার বদলে হাত বাড়িয়ে তুলে নিল পানির বোতলটা। ওতে মুখ দিয়েছে কর্টেজ, কিন্তু পরোয়া করল না। ঢক ঢক করে খালি করল অর্ধেকটা। তৃষ্ণা মিটে গেলে নামিয়ে রাখল। তাকাল কর্টেজের দিকে।

    একচুল নড়েনি লোকটা। মুখে ধরে রেখেছে হাসিটা। ‘গুড,’ ছোট করে বলল সে। তারপর নিচু হয়ে চাবি দিয়ে খুলে দিল লামিয়ার পায়ের শেকল।

    ‘আমাকে ছেড়ে দিচ্ছ তুমি?’

    ‘আটকে রাখার আর কোনও প্রয়োজন দেখছি না। আমাদের চারদিকে এক হাজার মাইলের ভেতর কোনও ডাঙা নেই। সাঁতার কেটে তো আর অতদূর যেতে পারবে না। কাজেই…

    দমে গেল লামিয়া। বাঁধন খুলে গেলেও বন্দিদশা কাটেনি ওর।

    ‘এখানেও দুটো বিকল্প আছে তোমার জন্যে,’ বলল কর্টেজ। ‘কয়েদি হয়ে থাকতে পারো, কিংবা থাকতে পারো অতিথি হয়ে।’

    ‘অতিথি হতে চাইলে কী করতে হবে আমাকে?’ সন্দিহান গলায় জিজ্ঞেস করল লামিয়া।

    ওর শরীরের ওপর দিয়ে লোভাতুর দৃষ্টি বুলিয়ে আনল কর্টেজ। ‘তোমার শরীরটা লোভনীয়, সন্দেহ নেই। যদি ভেবে থাকো আমি তোমাকে উপভোগ করতে চাই, সেটাও খুব একটা ভুল হবে না। তবে এখন পর্যন্ত সেটা করিনি, কারণ শরীরের চেয়ে বড় কিছু আমি পেতে চাই তোমার কাছে।’

    ‘কীসের কথা বলছ?’ অস্বস্তি ফুটল লামিয়ার গলায়।

    ‘এই জাহাজটা… এটা কোনও ট্যাঙ্কার নয়। এটা আসলে ভীষণ শক্তিশালী একটা হাতিয়ার। উড়ে আসা মিসাইলকে ধ্বংস করে দেয়া যায় এখান থেকে, চোখের পলকে মিশিয়ে দেয়া যায় যুদ্ধজাহাজের বহর। কোনও ধরনের বোমা বিস্ফোরণ ছাড়াই গোটা একটা শহরকে বন্ধ্যা করে দিতে পারে এই জাহাজ।’

    অপলকে তাকিয়ে রইল লামিয়া।

    ‘দুনিয়ার লোকে এখনও জানে না এসব,’ বলে চলল কর্টেজ। ‘তবে খুব শীঘ্রি জানবে। আর তখন… আমি চাই… তুমি যোগাযোগ করবে তোমার ওপরঅলাদের সঙ্গে। তাদেরকে জানাবে আমি কে, আর মধ্যস্থতা করবে এই হাতিয়ারটা বিক্রির ব্যাপারে। বেশি না, মাত্র আধ বিলিয়ন ডলারের হীরা চাই আমি; বিনিময়ে রাশার হাতে তুলে দেব ভবিষ্যৎ পৃথিবীর এই অস্ত্র।’

    কপালে ভাঁজ পড়ল লামিয়ার। ‘তুমি নিজেই যোগাযোগ করছ না কেন? যোগাযোগ করার মত লোকজনের সঙ্গে নিশ্চয়ই পরিচয় আছে তোমার?’

    ‘তা আছে,’ স্বীকার করল কর্টেজ। ‘তবে সমস্যা হলো, আমার বদনামও আছে। স্রেফ মুখের কথায় আমাকে আধ বিলিয়ন ডলার দেবে না কেউ। বিশেষ করে রাশা তো নয়ই। এজন্যেই এমন কাউকে দরকার, যার মুখের কথাকে ওরা মূল্য দেবে।’

    ব্যাপারটা এবার মাথায় ঢুকল লামিয়ার। সত্যিই ওকে দরকার কুচিয়োর। কিন্তু তার মানে এ-ই নয় যে, এসবের সঙ্গে ও নিজেকে জড়াবে। জঘন্য এই লোকটার সহযোগী হতে যথেষ্টরও বেশি আপত্তি আছে ওর। তবে সেটা মুখে প্রকাশ করল না। ছোট্ট একটা সুযোগ দেখতে পাচ্ছে, তার সদ্ব্যবহার করবে বলে ঠিক করল। পুরো জাহাজটা যদি ঘুরে দেখতে পারে, হয়তো বা পালাবার, অথবা সাহায্য চাইবার কোনও উপায় বেরিয়ে যেতে পারে।

    ‘যদি ভেবে থাকো আমার কথায় ওরা তোমাকে বস্তা ভর্তি হীরা দিতে উতলা হয়ে উঠবে, তা হলে ভুল করছ,’ কর্টেজকে বলল ও। ‘আমাকেও অতটা বিশ্বাস করে না ওরা।’

    ‘করবে, যদি অস্ত্রটার পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যা তুমি দিতে পারো,’ বলল কর্টেজ। ‘এনার্জি প্রোডাকশন ও ট্র্যান্সফারের ওপর তুমি একজন বিশেষজ্ঞ। পার্টিকেল ফিজিক্সের ওপরেও ভাল জ্ঞান আছে তোমার। আমি শিয়োর, অস্ত্রটা দেখলেই সব বুঝে যাবে তুমি। জিনিসটা যে জেনুইন, সেটা তখন ওদেরকে বোঝাতে কোনও অসুবিধে হবে না।’

    উঠে দাঁড়াল সে। দেখাদেখি লামিয়াও। কী করবে এরপর, জানে না; আপাতত কেবিন থেকে বেরুতে পারলেই চলে।

    ‘জাহাজটা ঘুরিয়ে দেখাবে আমাকে?’ জিজ্ঞেস করল ও। ‘কী বিক্রি করতে চলেছ, সেটা দেখাব,’ বলল কর্টেজ। ‘নিশ্চিত থাকো, যে-জিনিসের খোঁজ দিতে চলেছ, তাতে তোমার বসেরা খুব খুশি হবে।’

    ‘আর এই কেনাবেচা শেষ হবার পর?’

    ‘জাহাজের সঙ্গে যাবে তুমি। বীরের মত ফিরবে দেশে—মাতৃভূমির জন্যে অপূর্ব একটা উপহার নিয়ে।’

    কথাটা বিশ্বাস হলো না লামিয়ার। বলল, ‘তোমার আফ্রিকান বন্ধুর কথা তো ভাবলে না।’ ইয়টেই কর্টেজকে জোসেফ আকুম্বার কথা বলতে শুনেছে ও। ‘যা করতে চলেছ, তাতে কি তিনি অসন্তুষ্ট হবেন না?’

    বাঁকা চোখে তাকাল কর্টেজ। ‘যতটা ভেবেছি, তারচেয়েও বুদ্ধিমতী তুমি,’ বলল সে। ‘ভাবো, ইয়টে ওই কালো চামড়ার বেয়াদবটাকে কেন খুন করেছি আমি? কেন তার লাশ ফেলে এসেছি সাগরে? আমাকে খেপিয়ে দিয়েছিল বলে? উঁহুঁ। কাজটা করেছি যাতে লাশটার সূত্র ধরে আকুম্বার খোঁজ পায় আমেরিকানরা। প্ল্যানটা কাজে দিয়েছে। আমার কাছে পাকা খবর আছে, আমেরিকান নেভির একটা বহর এখন ছুটছে সিয়েরা লিওন লক্ষ্য করে। খুব শীঘ্রি কোণঠাসা হয়ে পড়বে আকুম্বা, বাধ্য হবে তার অস্ত্রটা ব্যবহার করতে। আর সেটাই হবে সম্ভাব্য ক্রেতাদের জন্যে আমার বাস্তব ডেমোনস্ট্রেশন। এরপর… আমেরিকান হানাদারদের নিয়ে লোকটা এতই ব্যস্ত হয়ে পড়বে যে, এই অধমকে নিয়ে মাথা ঘামাবার সময় থাকবে না তার।’

    পানির বোতলটা তুলে আবার কয়েকটা চুমুক দিল লামিয়া। মুখ মুছে বলল, ‘জবরদস্ত প্ল্যান, বলতে বাধ্য হচ্ছি। ঠিক আছে, তোমার অস্ত্রটা আমি দেখব। যা বলছ, তা যদি সত্যি হয়, রাশার হয়ে মধ্যস্থতা করতেও আপত্তি করব না। কিন্তু তার আগে আরেকটা ব্যাপারে মধ্যস্থতা হওয়া দরকার। খিদেয় পেট চোঁ চোঁ করছে। শেষ কবে মদ চেখেছি, তাও মনে নেই। একসঙ্গে ডিনার করলে কেমন হয়?’

    ভুরু কুঁচকে ওর দিকে তাকাল কর্টেজ। ভয় পেল লামিয়া, তার সঙ্গে ডিনারে যাবার কোনও ইচ্ছে নেই ওর, প্রস্তাবটা দিয়েছে স্রেফ লোকটাকে নিজের জালে ফাঁসাবার জন্যে। বুঝে ফেলল না তো?

    ওকে অবাক করে দিয়ে হাসল দুর্ধর্ষ মার্সেনারি। ‘যথা আজ্ঞা!’ বলল সে।

    .

    ত্রিশ মিনিট গ্লাইড করার পর ট্যাঙ্কারের কাছাকাছি পৌঁছে গেল রানা। হেডস্-আপ ডিসপ্লেতে এলএক্স-এর গতি দেখাচ্ছে একশো বিশ নট, নিখুঁতভাবে উড়ছে। আশাবাদী হয়ে উঠল ও। দূরে দেখতে পাচ্ছে জাহাজটাকে। কালো সাগরের পটভূমিতে ঝলমল করছে ওটার আলো।

    টার্গেটের দু’মাইলের মধ্যে পৌঁছুলে ওপরের কাভারটা খুলে দিল ও। বাতাসের তোড়ে পেছনদিকে উড়ে চলে গেল ওটা। ঝাঁকি খেতে শুরু করল গ্লাইডারের পুরো কাঠামো। নব্বুই নটে স্পিড নামিয়ে আনল রানা, সাড়ে তিন হাজার ফুট ওপর দিয়ে জাহাজটাকে অতিক্রম করল নিঃশব্দ চিলের মত।

    আরও আধমাইল এগোল ও, তারপর অন করে দিল অটোপাইলট। গ্লাইডার এবার চালকের সাহায্য ছাড়াই নাক সোজা রেখে এগোবে। স্ট্র্যাপ খুলে ফেলল রানা, খাঁজ থেকে মুক্ত করল হাত-পা; রিপকর্ড টেনে খুলে ফেলল পিঠে বাঁধা প্যারাশুট। জিনিসটা এক ঝটকায় ওকে টান দিয়ে বের করে আনল গ্লাইডারের ভেতর থেকে, আর গ্লাইডারটা চলে গেল সামনে। মোটামুটি পাঁচ মাইল গিয়ে পানিতে আছড়ে পড়বে ওটা, ডুবে যাবে সাগরে। জাহাজ থেকে কেউ দুরবিন তাক করে তাকিয়ে থাকলেও দেখতে পাবে না ওটাকে।

    প্যারাশুটে নামতে থাকা রানার বেলায় অবশ্য সে-কথা খাটে না। তাই রাতের আকাশের পটভূমিতে অদৃশ্য থাকার জন্যে আপাদমস্তক কালো পোশাক পরেছে ও। প্যারাশুটটাও কালো রঙের। সাগরের দু’হাজার ফুট ওপরে এখন সেই কালো প্যারাশুটের নিচে ঝুলছে। বড় একটা বৃত্ত রচনা করে দিক পাল্টাল ও, এগোল আগুয়ান জাহাজটার দিকে।

    ত্রিশ সেকেণ্ডের মাথায় ট্যাঙ্কারের বো থেকে সিকি মাইল দূরত্বে পৌছে গেল রানা। নেমে এসেছে নয়শো ফুটে। আর তখুনি মস্ত খুঁত আবিষ্কার করল ও নিজের প্ল্যানে। জাহাজের ঝলমলে বাতিগুলোকে এতক্ষণ মনে হচ্ছিল বাতিঘরের মত, ওকে পথ দেখিয়ে চলেছে; কিন্তু এবার সেগুলো হয়ে উঠেছে উদ্বেগের কারণ। জাহাজের সাদা ডেকে উজ্জ্বল আলো এমনভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে যে, চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে ওর। তারচেয়েও খারাপ খবর হলো, ওই আলোকিত সফেদ পটভূমিতে নামামাত্র ওর দশা হবে দুধের গ্লাসে পড়া কালো মাছির মত। দূর থেকেও পরিষ্কার দেখা যাবে ওকে।

    বিপদটা অনুধাবন করতে পেরে স্টিয়ারিং টগল ধরে টান দিল ও, সরে এল ডানে… জাহাজের পোর্ট সাইডে। একটাই উপায় দেখতে পাচ্ছে সবার অলক্ষে ওখানে নামার। সুপারস্ট্রাকচারের পেছনে, মেইন ডেকের শেষ অংশটা আঁধারে ছাওয়া। জাহাজটাকে পাশ কাটিয়ে যেতে হবে ওকে, পেছনে পৌছুনোর পর ইউ-টার্ন নিয়ে ফিরে আসতে হবে, তারপর ল্যাণ্ড করতে হবে অন্ধকার জায়গাটায়।

    কাজটা কঠিন… প্রায় অসম্ভবের পর্যায়ে পড়ে। কিন্তু কোনও বিকল্পও নেই। হয় ঝুঁকি নাও, নয়তো আছড়ে পড়ো সাগরে। উদ্ধার পাবার আগে কতক্ষণ পানিতে হাবুডুবু খেতে হবে কে জানে। যদি ততক্ষণে কোনও ক্ষুধার্ত হাঙর হামলা না চালায়, সেটাকে সাত জনমের ভাগ্য বলতে হবে।

    চারশো ফুট উচ্চতায় ট্যাঙ্কারের পাশ দিয়ে ভেসে গেল রানা। হাতে সময় মাত্র বিশ সেকেণ্ড, এর ভেতরেই যা করার করতে হবে। সুপারস্ট্রাকচার অতিক্রম করার সময় ব্রিজের জানালায় উঁকি দিল। চালক ছাড়া আর কাউকে দেখতে পেল না। বাইরেও কেউ নেই। ভালই। অবশ্য পাহারায় কেউ থাকলেও কালো আকাশের বুকে ওকে দেখতে পেত কি না সন্দেহ।

    ঘুরতে শুরু করল রানা। অ্যাকোমোডেশন ব্লকের টার্বিউলেন্সে আটকা পড়ল ক্ষণিকের জন্য, মনে হলো প্যারাশুট থেকে বেরিয়ে যাবে সব বাতাস। কৌশলে ফাঁদটা থেকে বেরিয়ে এল ও, সোজা হয়ে ছোঁ মারার ভঙ্গিতে এগোল জাহাজের পেছনটা লক্ষ্য করে। বিপজ্জনক একটা মুহূর্ত। নিচে প্রপেলারের ঘূর্ণনে সৃষ্টি হওয়া সাদা ফেনা দেখতে পাচ্ছে। ডেক মিস করে যদি ওখানে গিয়ে পড়ে, চোখের পলকে ঠাটারিবাজারের কিমা হয়ে যাবে।

    তির্যক একটা পজিশন নিল রানা, গতি সামান্য বাড়াল, দ্রুত নামতে শুরু করল নিচে। শেষ মুহূর্তে টান দিল লাইনে, কিন্তু দেরি করে ফেলেছে। জাহাজের পাশ দিয়ে ছুটে আসা বাতাসের ঝাপটা ওকে সরিয়ে নিল পেছনদিকে। ডেকের নাগাল পেল না, হুড়মুড় করে নামতে থাকল ফেনায়িত পানির ওপর—নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে।

    লাইন টেনে সরে যাবার চেষ্টা করল রানা, এবার উল্টোমুখী বাতাসের স্রোতে পড়ে গেল, ছিটকে গেল সামনে। ততক্ষণে ডেকের লেভেল থেকে নেমে এসেছে অনেকটা; টের পেল, গিয়ে আছড়ে পড়তে চলেছে জাহাজের পশ্চাদ্দেশে। বড় বড় সাদা হরফে নর্দার্ন স্টার লেখাটা আরও বড় হচ্ছে চোখের সামনে, ওখানেই বাড়ি খেতে চলেছে ও! কী করবে ভেবে পেল না, এমন সময় চোখের কোণ দিয়ে, দেখতে পেল, মেইন ডেক আর ঠিক তার নিচের ডেকের মাঝে চওড়া একটা ব্যালকনির মত জায়গা আছে। মরিয়া হয়ে উঠল ও, ক্যানোপির বাতাস ছেড়ে দিয়ে ঝাঁপ দিল ওখানে।

    স্রেফ কপাল বলতে হবে, নিখুঁতভাবে ফাঁক গলে ঢুকে পড়ল রানা, দড়াম করে আছড়ে পড়ল ডেকে। ব্যথায় ককিয়ে উঠল অস্ফুটভাবে। কয়েক মুহূর্ত পড়ে রইল নিঃসাড়ে। পরক্ষণে প্যারাশুটের লাইনে টান পড়ায় সচকিত হয়ে উঠল। বাতাসে আবার ফুলে উঠেছে ক্যানোপি, ওকে ডেকের ওপর দিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছে রেইলের দিকে… এক্ষুণি বাইরে নিয়ে ফেলবে।

    পাগলের মত হাত চালাল রানা, হারনেসের ইন্সট্যান্ট রিলিজ মেকানিজমে টান দিল। সঙ্গে সঙ্গে খুলে গেল সবক’টা লাইন। বাতাসে ভরা প্যারাশুটটা বেলুনের মত উড়ে গেল পানির ওপর দিয়ে। হারিয়ে গেল অন্ধকারে।

    ফোঁস করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল রানা। তাকাল চারদিকে। বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে, সত্যি সত্যিই নামতে পেরেছে ও জাহাজে… তাও আবার সুস্থ শরীরে। মুরল্যাণ্ডের সমস্ত ভয় আর আশঙ্কা অমূলক প্রমাণিত হয়েছে। উঠে দাঁড়াল ও। বোঝার চেষ্টা করল, ঠিক কোথায় পৌঁছেছে। জাহাজের একেবারে পেছনে জায়গাটা, মেইন ডেকের নিচে একটা খোলামেলা অংশ—এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ারে ফ্লাইট ডেক আর হ্যাঙার ডেকের মাঝখানে এ-ধরনের খোলা জায়গাকে ফ্যানটেইল বলে।

    কয়েকটা ল্যাডার দেখতে পেল ও—ওপর-নিচ দু’দিকেই গেছে। দরজাও আছে কিছু, সেগুলো বন্ধ। বাঁয়ে জং-ধরা কয়েকটা চেয়ার, আর সিগারেটের পোড়া বাটে ভরা একটা বালতি দেখা গেল। ধূমপায়ীদের স্মোকিং জোন। কপাল ভাল যে, এ-মুহূর্তে কেউ ওখানে নেই। নিশ্চিত হলো, কেউ দেখতে পায়নি ওকে।

    হেলমেট খুলে ফেলল রানা, অক্সিজেন সিলিণ্ডারের ভালভ বন্ধ করল। দুটোই ছুঁড়ে ফেলল পানিতে। প্রপেলার আর বাতাসের গর্জনে সেগুলো পানিতে আছড়ে পড়ার কোনও আওয়াজ শোনা গেল না। বাল্কহেডের পাশে ছায়ায় সরে গেল ও, হাঁটু গেড়ে বসে সাইড পকেট থেকে বের করে আনল একটা নাইন মিলিমিটারের বেরেটা পিস্তল। সাইলেন্সার লাগাতে শুরু করল ওটায়। সমস্ত ইন্দ্রিয় সতর্ক, কেউ এদিকে আসছে কি না খেয়াল রাখছে।

    ইঞ্জিনের গুরুগম্ভীর আওয়াজ ছাপিয়ে খুব বেশি কিছু শোনা যাচ্ছে না। তবে ছায়া থেকে বেরুবার চেষ্টা করতেই একটা দরজার হাতল ঘুরতে দেখল ও। এক মুহূর্ত পর হাট হয়ে খুলে গেল পাল্লা। তাড়াতাড়ি আবার ছায়ায় মিশে গেল রানা।

    দুটো ছায়ামূর্তিকে বেরিয়ে আসতে দেখল রানা। দরজার ফাঁক দিয়ে আসা আভায় বোঝা গেল, একজন পুরুষ, অন্যজন নারী। রেইলের পাশে গিয়ে দাঁড়াল তারা।

    ‘তোমাকে দেখেই বুঝতে পারছি, মুগ্ধ হয়েছ,’ বলল পুরুষটি। গলাটা চিনতে পারল রানা—কর্টেজের গলা।

    নিজের কপালকে বিশ্বাস করতে পারছে না রানা। এত সহজে লোকটাকে হাতের মুঠোয় পাবে, ভাবতে পারেনি। বেরেটার হাতলে ওর মুঠো শক্ত হয়ে গেল। পা বাড়াতে যাবে, এমন সময় শুনল মেয়েটির কণ্ঠ। রাশান উচ্চারণে কথা বলছে… লামিয়া!

    ‘আমি বুঝতেই পারছি না, কাউকে কিছু জানতে না দিয়ে এমন একটা জিনিস কীভাবে তৈরি করা হলো,’ বলল সে। ‘তবে এ-কথা ঠিক, ডিজাইনটার প্রশংসা না করে পারা যায় না। আমাকে দেখিয়েছ বলে ধন্যবাদ। ডিনারের জন্যে আরেকটা ধন্যবাদ পাওনা হয়েছে তোমার।

    ‘সে আমার সৌভাগ্য,’ বলল কর্টেজ। ‘আশা করি এবার বুঝতে পারছ আমার প্রস্তাবের গুরুত্ব?’

    ‘হ্যাঁ। আমার বসেরা নিঃসন্দেহে আগ্রহী হয়ে উঠবে।’

    ভুরু কোঁচকাল রানা। তবে কি লামিয়া যোগ দিয়েছে কর্টেজের দলে? অবশ্য, প্রাণ বাঁচানোর জন্যে লোকটার সঙ্গে তালও মেলাতে পারে। সেজন্যে দোষ দেয়া যায় না ওকে। একটা ব্যাপার পরিষ্কার, যেভাবে কথা বলছে ওরা, তাতে এখানে আরও বড় কিছু ঘটছে।

    অস্ত্র নিয়ে আরেক দফা এগোবার চেষ্টা করতেই আবার বাধা পেল রানা। খোলা দরজায় উদয় হয়েছে এক নাবিক।

    ‘রেডিও কল, কুচিয়ো,’ বলল সে। ‘ফ্রিটাউন থেকে। আর্জেণ্ট।’

    ‘যেতে হয় তা হলে,’ বলল কর্টেজ।

    লামিয়াকে নিয়ে দরজার দিকে এগিয়ে গেল সে। পেছনে টেনে দিল পাল্লা। অন্ধকারে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল রানা। মনের মধ্যে যতটুকু সন্দেহ ছিল, তা মিলিয়ে গেছে। সাধারণ একটা সুপারট্যাঙ্কারের প্রতি আগ্রহী হবার কোনও কারণ নেই রাশানদের। এর ভেতর নিশ্চয়ই বিরাট কিছু আছে। জাহাজের অদ্ভুত আকৃতির পেছনে লুকিয়ে আছে ভয়ানক কোনও অশুভ ব্যাপার। কী সেটা?

    একটু অপেক্ষা করে দরজাটার দিকে এগিয়ে গেল ও। সাবধানে হাতল ঘুরিয়ে পাল্লাটা ফাঁক করল একটু, উঁকি দিল ভেতরে। আলোকিত একটা করিডোর দেখতে পেল, কেউ নেই সেখানে।

    সন্তর্পণে জাহাজের ভেতরে ঢুকে পড়ল রানা।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleমাসুদ রানা ৪৬৩ – ছায়াঘাতক
    Next Article মাসুদ রানা ১৪৪ – অপহরণ-২

    Related Articles

    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৩৮৫-৩৮৬ – হ্যাকার (দুই খণ্ড একত্রে)

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৬ – টপ টেরর

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৪ – নরপশু

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৩ – ধর্মগুরু

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫২ – কালো কুয়াশা

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫১ – মায়া মন্দির

    July 22, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    শ্রীশ্রীচণ্ডী – অনুবাদ : পঞ্চানন তর্করত্ন

    September 9, 2025

    পুলিশ কাহিনী ১ – পঞ্চানন ঘোষাল (প্রথম খণ্ড)

    September 9, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.