Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    শ্রীশ্রীচণ্ডী – অনুবাদ : পঞ্চানন তর্করত্ন

    September 9, 2025

    পুলিশ কাহিনী ১ – পঞ্চানন ঘোষাল (প্রথম খণ্ড)

    September 9, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মাসুদ রানা ৪৬৬ – ধ্বংসযজ্ঞ

    কাজী আনোয়ার হোসেন এক পাতা গল্প453 Mins Read0

    ধ্বংসযজ্ঞ – ৯

    নয়

    দুপুর বারোটার সামান্য পরে সান্তা মারিয়ায় পৌঁছল নেপচুন, নোঙর করল বন্দরের ঠিক বাইরে-দ্বীপবাসীদের কৌতূহলী চোখের সামনে। রিসার্চ শিপের মত চেহারা নয় নেপচুনের, আকৃতিটা সরু ফলার তীক্ষ্ণ ছুরির মত। আসলে কোস্টগার্ডের জন্যে বানানো ছোটখাট একটা যুদ্ধজাহাজ ওটা; পরে নুমার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জাহাজে রয়েছে নানা ধরনের অস্ত্রশস্ত্র ও সাগরে উদ্ধার অভিযান চালাবার মত সরঞ্জাম।

    আড়াইশো বছর আগে দ্বীপের পোতাশ্রয়ে এ-ধরনের কোনও জাহাজ উদয় হলে শঙ্কিত হতো মানুষ, সাও ব্রাস দুর্গ থেকে কড়া নজর রাখা হতো ওটার ওপর। দুর্গটা ষোড়শ শতকে তৈরি, পাথর আর মর্টারে গড়া উঁচু প্রাচীরের ওপর বসানো আছে ভারী কামান। আপাতত ওটা পর্তুগিজ নৌবাহিনীর একটা অবহেলিত ডিপো, হাতে গোনা কিছু অফিসার ও নাবিকের বাসস্থান। এদিকে নৌবাহিনীর জাহাজ আসে না বললেই চলে।

    নেপচুনের ডেকে দাঁড়িয়ে আছে রানা, দুর্গের দিকে তাকিয়ে ভাবছে, আর কোনোদিন এ-ধরনের দুর্গের প্রয়োজন, পড়বে কি না। দিনকাল বদলে গেছে, এখন সাগরের প্রধান বিপদ জলদস্যুতা-দিন দিন তা বাড়ছে। সবাই অতিষ্ট, কিন্তু কবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ মিলে এর বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ নেবে—সেটাই প্রশ্ন।

    চারদিন পেরিয়ে গেছে ইতিমধ্যে। আরাতামা মারুর ঘটনা জেনে গেছে সারা বিশ্ব। মেরিটাইম কমিউনিটিতে বেশ আলোড়ন উঠেছে বলে খবর পেয়েছে রানা, অনেকেই এর প্রতিকার চাইছে। লক্ষণটা ভাল, কিন্তু কেন যেন ওর মনে হচ্ছে, ব্যাপারটা শেষমেশ বক্তৃতা-বিবৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে, কাজের কাজ কিছুই হবে না। অভিজ্ঞতা তা-ই বলে।

    আরেকটা বিষয় নিয়ে রানা বিরক্ত। অ্যাযোর্সে আসার পথে রেডিওতে ইন্টারপোল, ইনশিয়োরেন্স কোম্পানি, আর কয়েকটা অ্যান্টি-পাইরেসি অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে কথা বলতে হয়েছে ওকে। লক্ষ করেছে, তারা স্রেফ জলদস্যুতা নিয়ে ব্যস্ত; সমস্ত প্রশ্ন আর আলোচনা ওই ধারণাকে কেন্দ্ৰ করেই ঘুরপাক খাচ্ছে। বার বার চেষ্টা করেও তাদের মাথায় ঢোকাতে পারেনি যে, আরাতামা মারুর ঘটনাটা জলদস্যুতার চেয়ে বড় কিছু হতে পারে। রানার কথা চুপচাপ স্রেফ শুনে গেছে তারা, এতদিনে হয়তো ভুলেও গেছে। কিন্তু এখনও ওর চোখে ভাসছে নিরীহ নাবিকদের খুন হবার দৃশ্য, কানে বাজছে লোরি লারসেনের বিচিত্র অভিজ্ঞতার বর্ণনা। হঠাৎ করে জাহাজের সব বাতি নিভে যাওয়া, মাথার ভেতর অদ্ভুত যন্ত্রণা, কিংবা আট ঘণ্টা অজ্ঞান হয়ে থাকা—কোনোটাই স্বাভাবিক নয়।

    বিপদের আভাস পাচ্ছে রানা। দীর্ঘদিন বিপজ্জনক পেশায় কাটানোয় ওর ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় অনেক বেশি তীক্ষ্ণ, সেটাই সাবধান করছে ওকে। বুঝতে পারছে, তলে তলে অনেক বড় কিছু ঘটছে। সারা বিশ্ব এ-মুহূর্তে ব্যাপারটাকে পাত্তা না দিলেও খুব শীঘ্রি ওটা সবার মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। মেজর জেনারেল রাহাত খানও ওর সঙ্গে একমত—ইতিমধ্যে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে ও। রহস্যটা ভালমত খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

    নোঙর ফেলার পর জাহাজের ক্রুদের ডাঙায় ছুটি কাটাবার অনুমতি দিয়েছেন ক্যাপ্টেন মিচাম। সান্তা মারিয়ায় এক সপ্তাহ থাকবে নেপচুন, এ-সময়টায় অল্প কিছু নাবিক শুধু পালা করে থাকবে জাহাজে; তদারক করবে ইঞ্জিনের মেইনটেন্যান্স, রিফিউয়েলিং এবং রেশন তোলার কাজ। রানার হাতেও এই এক সপ্তাহই সময়। ববি মুরল্যাণ্ডের সঙ্গে দেখা করে তার সাবমারসিবলের প্রয়োজনীয় মডিফিকেশন করে নিতে হবে, যাতে সাগরে ফিরে আরাতামা মারুর ধ্বংসাবশেষে ডাইভ দিতে পারে।

    আধঘণ্টা পর বোটে চেপে দ্বীপের প্রধান শহর ভিলা দো পোর্তোয় পৌছল রানা। স্থানীয় এক ওয়ার্কশপে রাখা হয়েছে মুরল্যাণ্ডের সাবমারসিবল হ্যামারহেড, সরাসরি চলে গেল ওখানে। কিন্তু ওর বন্ধুটিকে পাওয়া গেল না সেখানে। খোঁজ নিতেই দাঁত কেলিয়ে হাসল ওয়ার্কশপের প্রহরী।

    ‘ওনার বক্সিং দেখতে চাইলে ঠিক সময়ে এসেছেন, বলল সে। ‘রিক্রিয়েশন সেন্টারে চলে যান। ওখানেই পাবেন আপনার বন্ধুকে… মানে, এখনও যদি নক আউট না হয়ে থাকেন আর কী।’

    কথাটা ধাঁধার মত লাগল রানার কাছে, কিন্তু খুব একটা অবাক হলো না। অদ্ভুত সব পরিস্থিতিতে জড়িয়ে পড়ার বদভ্যাস আছে মুরল্যাণ্ডের, এবার কীসে জড়িয়েছে কে জানে। রিক্রিয়েশন সেন্টারের ঠিকানা নিয়ে হাজির হলো ওখানে।

    ভেতরে ঢুকতেই কানে ভেসে এল উত্তেজিত জনতার চিৎকার। যা দেখল, তাতে মনে হলো কোনও বক্সিং স্টেডিয়ামে এসে ঢুকেছে। বিল্ডিঙের ঠিক মাঝখানে মাথা তুলে রেখেছে এক বক্সিং রিং, চারপাশে সাজানো হয়েছে শ’তিনেক চেয়ার—দর্শকে ভরপুর। রিঙের দৃশ্য দেখতে পেল না, কারণ উত্তেজিত দর্শকেরা ক্ষণে ক্ষণে দাঁড়িয়ে পড়ছে, হৈচৈ আর চেঁচামেচিতে কানে তালা লেগে যাবার জোগাড়। আবছাভাবে শুনতে পেল বক্সিং গ্লাভের মৃদু ধুপধাপ আওয়াজ—লড়াই চলছে রিঙে।

    টিং টিং করে ঘণ্টি বাজল, আবারও হুল্লোড় করে দুই বক্সারকে উৎসাহ দিল দর্শকেরা। ভিড় ঠেলে কষ্টেসৃষ্টে আগে বাড়ল রানা। রিঙের কাছাকাছি যখন পৌছুল, তখন রাউণ্ড শেষ হতে চলেছে।

    মুরল্যাণ্ডকে দেখতে পেল রানা—ছোটখাট গড়নের গাঁট্টাগোট্টা একজন মানুষ, লাল শর্টস্ পরা, মাথার চুল ঢাকা পড়েছে প্রোটেক্টিভ হেডগিয়ারে। রিং জুড়ে প্রজাপতির মত নেচে বেড়াচ্ছে সে, ঘামে চকচক করছে পেশিবহুল অনাবৃত ঊর্ধ্বাঙ্গ। ওর প্রতিপক্ষের দিকে তাকিয়ে থমকে যেতে হলো। মানুষ নয়, দানব যেন। চেহারাসুরতে প্রাচীন নর্স দেবতা থরের মত লাগছে তাকে। সাড়ে ছ’ফুটের ওপর লম্বা, মাথায় সোনালি রঙের বাবরি চুল, দেহটা যেন পাথর কুঁদে তৈরি করা হয়েছে। কালো রঙের শর্টস আর হেডগিয়ার পরে আছে লোকটা। মুরল্যাণ্ডের তুলনায় নড়াচড়া অনেক মন্থর তার, তবে বিদ্যুতের মত ঘুসি ছুঁড়ছে, ঘুসির জোরও অনেক বেশি।

    একটা ঘুসি ফাঁকি দিল মুরল্যাণ্ড, আরেকটার তলায় বসে পড়ল, এরপর ঝটপট পিছিয়ে গেল কয়েক পা। দূর থেকে কিংবদন্তি বক্সার শুগার রে লিওনার্ডের মত লাগছে ওকে—শুনলে নিশ্চয়ই খুশি হবে। হঠাৎ করে সামনে বাড়ল আবার, পর পর কয়েকটা ঘুসি বসাল প্রতিপক্ষের তলপেটে, কোনও কাজ হলো না। একটাই পাল্টা-ঘুসি ছুঁড়ল দানব, মুরল্যাণ্ডের মাথার বাঁ পাশে লাগল সেটা। আধপাক ঘুরে যেতেই বোঝা গেল, শুগার রে-র সমতুল্য হতে বহুদূর যেতে হবে বেচারাকে।

    হাহাকার করে উঠল দর্শকেরা, বিশেষ করে সামনের সারির কতগুলো মেয়ে। টলতে টলতে ওদের সামনে চলে গেল মুরল্যাণ্ড, রোপ ধরে সামলাল নিজেকে। হেডগিয়ার ঠিক করে ভুবনভোলানো হাসি উপহার দিল। এরপর ঘুরে দাঁড়িয়ে ফের মুখোমুখি হলো প্রতিপক্ষের। এবার অবশ্য আগের বোকামি করল না, নাগালে গেল না লোকটার। ঘণ্টি বাজার আগ পর্যন্ত নাচানাচি করে কাটিয়ে দিল সময়। টুং টুং করে খানিক পরেই বিরতি ঘোষণা করল ঘণ্টি।

    নিজের কর্নারে ফিরে এল মুরল্যাণ্ড, রানা দাঁড়িয়ে আছে ওখানে। টুলে বসতেই ট্রেইনার এসে পানির বোতল ধরিয়ে দিল, স্মেলিং সল্ট শোঁকাল নাকে।

    কুলি করে রানার দিকে তাকাল মুরল্যাণ্ড, ঘন ঘন শ্বাস ফেলছে সে। ‘এতক্ষণে আসার সময় হলো তোমার?’

    ‘হুঁ,’ বলল রানা। ইশারা করল দানবের দিকে। ‘কাহিল করার ভাল কৌশলই নিয়েছ। তোমার মাথায় যদি ওভাবে ঘুসি মারতে থাকে, হাতদুটোর শক্তি ফুরিয়ে যেতে বাধ্য।’

    আরেকবার কুলি করল মুরল্যাণ্ড। ‘টিটকিরি মার দেখোই না কী করি!’

    আশ্বস্ত হতে পারল না রানা। মুরল্যাণ্ড ভাল বক্সার, কিন্তু বহুদিন থেকে প্র্যাকটিসে নেই সে। দর্শকসারিতে চোখ বোলাল। ‘আর কিছু না হোক, বেশ কিছু ভক্ত জুটেছে তোমার।’

    সামনের সারিতে বসে থাকা মেয়েগুলোর দিকে তাকিয়ে আছে ও। কলেজ পড়ুয়া তরুণী যেমন আছে, তেমনি আছে মুরল্যাণ্ডের সমবয়েসী থেকে শুরু করে চল্লিশের কোঠার একাধিক মহিলা। তাদের সাজসজ্জা বক্সিং ম্যাচের দর্শক হিসেবে বেমানান।

    ওদের সম্মান রক্ষার জন্যে লড়ছ নাকি?’ জিজ্ঞেস করল ও।

    ‘ওসব কিছু না,’ উঠে দাঁড়াল মুরল্যাণ্ড। ট্রেইনার তার মুখে মাউথগার্ড গুঁজে দিল। ‘আমি একটা গরুকে গাড়িচাপা দিয়েছি।’

    ঘণ্টি বাজল। ঘুসি বাগিয়ে রিঙের মাঝখানে চলে গেল সে। পেছনে বোকার মত দাঁড়িয়ে রইল রানা। কথাটা কি ঠিক শুনেছে? গরু? গাড়িচাপা?

    এই রাউণ্ডটা বেশ দ্রুতই কেটে গেল। প্রতিপক্ষের হামলা এড়িয়ে দানবের মিডসেকশনে কয়েকটা ঘুসি বসাতে সক্ষম হলো মুরল্যাণ্ড, যদিও তাতে বিশেষ লাভ হলো না। হাবভাবে মনে হলো, কোনও পাথরের দেয়ালে ঘুসি মেরেছে সে।

    ঘণ্টি বাজার পর হাঁপাতে হাঁপাতে আবার ফিরে এল মুরল্যাণ্ড।

    ‘গরুর ওপর গাড়ি তুললে কী করে?’ জিজ্ঞেস করল রানা।

    ‘ঠিক তুলিনি, গাড়ির গুঁতো দিয়েছি একটার গায়ে,’ জানাল মুরল্যাণ্ড।

    ‘গরুর মালিক কি ওই দৈত্যটা?’

    ‘না। ওটা এখানকার এক র‍্যাঞ্চারের।’

    রানার বিভ্রান্তি দূর হচ্ছে না। ‘তা হলে ব্যাপারটা বক্সিং ম্যাচে গড়াল কী করে?’

    ‘এখানে নানা ধরনের নিয়ম আছে,’ বলল মুরল্যাণ্ড। ‘কিন্তু বেড়া বলে কিছু নেই। গরুরা ঘুরে বেড়ায় স্বাধীনভাবে—রাস্তাঘাটে উঠে পড়ে। নিয়ম হলো, রাতের বেলা যদি গরুর সঙ্গে ধাক্কা লাগে, সেটা গরুর দোষ; আর দিনের বেলা হলে গাড়িঅলার। আমি গুঁতো মেরেছি গোধূলির সময়। নিয়মটা, এক্ষেত্রে, অস্পষ্ট।’

    ‘তাই বক্সিং লড়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে হচ্ছে তোমাকে?’

    ‘অনেকটা সেরকমই। আমিও খানিকটা বোকামি করে ফেলেছি। ওই দৈত্যটা এখানকার লোকাল চ্যাম্পিয়ন, মাতবরি ফলাতে চাইছিল আমার ওপর, ক্ষতিপূরণ না দিলে মারধরের ভয় দেখাচ্ছিল। রেগে গিয়ে চ্যালেঞ্জ করে বসলাম। পরে অবশ্য দেখলাম, অনেকেই পছন্দ করে না ব্যাটাকে। মনেপ্রাণে চাইছে ও হেরে যাক, তাতে যদি ওর বড়াই খানিকটা কমে! সেজন্যেই এত ভিড়।’

    আবার ঘণ্টি বাজল, লড়াইয়ের জন্যে উঠে গেল মুরল্যাণ্ড। এবার বিপজ্জনক কায়দায় ঢুকতে শুরু করল দানবের নাগালের ভেতরে। কয়েকটা ঘুসি খেলেও ভালই সামলাল, পাল্টা-ঘুসিও দিতে ছাড়ল না। রাউণ্ডের শেষদিকে রানার মনে হলো, গতি কমতে শুরু করেছে বিশালদেহী লোকটার।

    ঘণ্টির আওয়াজে বিরতি নিতে এল মুরল্যাণ্ড। এবার প্রসঙ্গ পাল্টাল রানা।

    ‘হ্যামারহেডের ব্যাপারে কথা আছে তোমার সঙ্গে।’

    ‘কী কথা?’ কুলকুচি শেষ করে শুধাল মুরল্যাণ্ড।

    ‘ষোলো হাজার ফিটে ডাইভ দিতে পারবে ওটা?’

    মাথা নাড়ল মুরল্যাণ্ড। ‘জিনিসটা ব্যাথিস্ফিয়ার নয়, রানা। গতির জন্যে ডিজাইন করা হয়েছে, গভীরতার জন্যে নয়।’

    ‘মডিফাই করে নামানো যাবে না?’

    ‘যাবে। ব্যাথিস্ফিয়ারে ভরে।’

    নীরব হয়ে গেল রানা। ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে মুরল্যাণ্ডের তুলনা হয় না, কিন্তু তাকেও পদার্থবিদ্যার আইন মানতে হয়।

    শব্দ করে বাকেটের ভেতর মুখের পানি ফেলল মুরল্যাণ্ড। ‘হঠাৎ আটলান্টিকের তলায় নামার জন্যে উতলা হয়ে উঠলে কেন?’

    ‘অ্যাযোর্সে আসার পথে কীসের মধ্যে পড়েছিলাম, শোনোনি?’

    ‘হুঁ। মানুষের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে, আর তোমার মাথায় নাকি জাহাজ ভেঙে পড়েছিল।’ মুরল্যাণ্ডের কণ্ঠে কৌতুক।

    ‘ঘুরে বেড়াবার সুযোগ পাইনি,’ রানাও ঠাট্টা করল। ‘তবে এখন যেহেতু জাহাজটা সাগরের তলায় ডিমে তা দিচ্ছে, একটু দর্শন করতে চাই।’

    ঘণ্টি বাজছে। মুরল্যাণ্ড উঠে দাঁড়াল, চোখ রানার দিকে। কী যেন ভাবছে। ‘একটা উপায় মনে হয় আছে,’ বলল সে। চোখের তারা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে

    কথাটা ব্যাখ্যা করার সুযোগ পেল না, ঘণ্টির আওয়াজ থামতেই তার দিকে ধেয়ে এল বিশালদেহী দানব।

    ‘সাবধান!’ চেঁচিয়ে উঠল ট্রেইনার।

    পাঁই করে ঘুরল মুরল্যাণ্ড, একেবারে অপ্রস্তুত সে। শেষ মুহূর্তে দু’হাত তুলে কোনোমতে দানবের ঘুসি ঠেকাল। তবে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে, ডান-বাম থেকে ছুটে আসছে মুহুর্মুহু আঘাত। অপরাধবোধে আক্রান্ত হলো রানা, একপেশে লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে ম্যাচটা… আর সেটা ওর কারণে। ও-ই সাবমারসিবলের প্রসঙ্গ তুলে মনোসংযোগ নষ্ট করেছে মুরল্যাণ্ডের।

    ‘নিচু হও, ববি!’ চেঁচাল রানা।

    ওর গলার আওয়াজ চাপা পড়ে গেল দর্শকদের হৈ- হল্লায়। মেয়েগুলো মুখে হাতচাপা দিয়েছে, দৃষ্টি বিস্ফারিত। মোটামুটি নিশ্চিতভাবেই বলা চলে, এ-অবস্থা থেকে ফেরার কোনও আশা নেই মুরল্যাণ্ডের। রিঙের কোনায় আটকা পড়েছে সে, নড়তে-চড়তে পারছে না, পাল্টা আঘাত করার তো প্রশ্নই আসে না। হাতের ভাঁজ খোলার মতই জায়গা নেই তার।

    ঘড়ির দিকে তাকাল রানা—এটাই শেষ রাউণ্ড, তবে ঘণ্টি বাজতে এক মিনিটের বেশি বাকি। অতক্ষণ মুরল্যাণ্ড টিকবে বলে মনে হয় না। আশা ছেড়েই দিচ্ছিল, কিন্তু আচমকা ভোজবাজির মত বদলে গেল সব।

    মার খেতে খেতে কুঁজো হয়ে গেছে মুরল্যাণ্ড, লম্বু দৈত্যের জন্যে কঠিন হয়ে উঠেছে স্বাভাবিক পাঞ্চ দেয়া। কাছে গিয়ে দু’হাত উঁচু করল সে-সর্বশক্তিতে কিল বসাবে প্রতিপক্ষের মাথায়; আর তাতেই ক্ষণিকের জন্যে উন্মুক্ত হয়ে গেল তার সম্মুখভাগ। এর প্রতীক্ষাতেই যেন ছিল মুরল্যাণ্ড, কাঁধ ঢিল করে দিল সে, পরক্ষণে তলা থেকে ভয়ঙ্কর একটা আপারকাট ছুঁড়ল শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে।

    দানবের থুতনিতে গিয়ে লাগল সেই ঘুসি। ঝট্ করে পিছে হেলে গেল তার মাথা। রানা দেখল, লোকটার চোখের মণি উল্টে গেছে। এলোমেলো পায়ে একটু পিছাল, হাত নিচু হয়ে গেছে। সোজা হলো মুরল্যাণ্ড, এগিয়ে গিয়ে একটা রাইট হুক বসাল দানবের বাম চোয়ালে। পাক খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়ল লোকটা।

    পিনপতন নীরবতা নেমে এল। ঘটনার আকস্মিকতায় বোবা হয়ে গেছে সবাই। কয়েক মুহূর্ত ওভাবেই কাটল, তারপর হঠাৎ কিচিরমিচির করে চেঁচিয়ে উঠল সামনের সারির মেয়েরা—উল্লসিত। তাদের সঙ্গে যোগ দিল বাকি সবাই। ওদের চিৎকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সত্যি সত্যি শুগার রে লিওনার্ডের মত নাচতে শুরু করেছে মুরল্যাণ্ড।

    রেফারি কাউন্ট করায় ব্যস্ত। চার পর্যন্ত যেতেই হাত- পায়ে ভর দিয়ে উঁচু হলো বিশালদেহী বক্সার; ছয়ে যখন পৌঁছুল, তখন রোপ ধরে সিধে হতে শুরু করেছে সে। নাচানাচি থেমে গেল মুরল্যাণ্ডের। আটের সময় দু’পায়ে খাড়া হলো লোকটা, ঝাঁকি দিল সারা শরীর, লাল চোখে তাকাল প্রতিপক্ষের দিকে। মুরল্যাণ্ডের চেহারায় তখন তিক্ততা ভর করেছে।

    জিভ দিয়ে ঠোঁট চাটল দানব, নিষ্ঠুর একটা হাসি ফুটেছে ঠোঁটের কোণে। এবার নিকেশ করবে বেঁটে শয়তানটাকে। রেফারি এগিয়ে গিয়ে তাকে পরীক্ষা করল, সন্তুষ্ট হয়ে ইশারা করল লড়াই ফের শুরু করতে।

    পরস্পরের দিকে এগিয়ে গেল দুই বক্সার। আর তখুনি টুং টুং করে শেষবারের মত বেজে উঠল ঘণ্টি।

    রাউণ্ড শেষ… লড়াইও শেষ। ফলাফল ড্র ঘোষণা করা হলো। কেউই খুশি নয়, তারপরেও হৈ-হল্লা কমল না এক বিন্দু।

    .

    পনেরো মিনিট পর একটা আউটডোর ক্যাফের টেবিল দখল করে বসল দু’বন্ধু। খ্যাতি জুটেছে মুরল্যাণ্ডের কপালে, বেশ কিছু অটোগ্রাফ দিতে হয়েছে, কয়েকটা মেয়ের কাছ থেকে জুটেছে ফোন নম্বর। তারপরেও মুখ কালো করে হাত থেকে টেপ খুলছে সে, আইস ব্যাগ চেপে ধরছে মুখের এখানে- সেখানে।

    ‘এরপর থেকে আমার বক্সিং দেখতে এলে একদম পেছনের সারিতে বসবে,’ রানাকে বলল মুরল্যাণ্ড। ‘সবচেয়ে ভাল হয় একেবারেই না এলে।

    ‘খেপছ কেন?’ জিজ্ঞেস করল রানা। ‘লড়াই তো ভালই করলে।’

    ‘তোমার আর আমার ভালর সংজ্ঞায় বিস্তর পার্থক্য আছে।’

    টেপ খোলা শেষ হয়েছে, আইস ব্যাগটা এবার ঘাড়ের পেছনে চেপে ধরল মুরল্যাণ্ড। ওকে আরাতামা মারুর পুরো ঘটনা শোনাল রানা।

    ‘হুঁ, অস্বাভাবিক,’ একমত হলো মুরল্যাণ্ড। ‘মাথার ভেতরে বিপদের ঘণ্টা শুনতে পাচ্ছ?’

    ‘রীতিমত পাগলাঘণ্টি।’

    ‘আমিও শুনতে পাচ্ছি, তবে ভিন্ন কারণে।’

    রানা হাসল। ওয়েইট্রেস ঠাণ্ডা পানীয় দিয়ে গেছে, গ্লাস তুলে চুমুক দিল তাতে।

    ‘আমি একটু উঁকি দিতে চাই,’ বলল ও। ‘হ্যামারহেডকে নিয়ে যাওয়া যাবে না?’

    ‘কায়দা একটা আছে,’ জানাল মুরল্যাণ্ড। ‘তবে সেটা রিমোট অপারেটেড ভেহিকল, মানে আরওভি হিসেবে। ওই ডেপথে সাবমারসিবলে কোনও যাত্রী পাঠানো ঠিক হবে না। তা ছাড়া জায়গাও হবে না।’

    চোখ ছোট করে তার দিকে তাকাল রানা। ‘ঠিক কী করতে চাইছ তুমি?’

    ‘ছোট একটা আউটার হাল বানিয়ে হ্যামারহেডকে তাতে ভরে দেয়া যেতে পারে, ব্যাখ্যা করল মুরল্যাণ্ড। জাত- ইঞ্জিনিয়ার সে, কল্পনার চোখে দেখতে পাচ্ছে ডিজাইনটা। ‘নন-কম্প্রেসিং লিকুইড দিয়ে ভরে দেব কম্পার্টমেন্টটা, কিংবা নাইট্রোজেনের সাহায্যে হাইপার-প্রেশারাইজড্ করে দেব। একইভাবে হ্যামারহেডের ইন্টেরিয়রও প্রেশারাইজ করে দিতে হবে, যাতে আউটার বা ইনার… কোনও হালের ওপরেই পানির পুরো চাপ না পড়ে।’

    ‘ইনস্ট্রুমেন্ট আর কন্ট্রোলের কী হবে?’

    ‘ওসব নিয়ে চিন্তা নেই। সবকিছুই ওয়াটারপ্রুফ, আর হাই-প্রেশার এনভায়রনমেন্টের উপযোগী করে বানানো হয়েছে।’

    ‘তা হলে তো সমাধান হয়েই গেল,’ বলল রানা। মুরল্যাণ্ডের ওপর আস্থা রয়েছে ওর—হ্যামারহেড তার নিজের হাতে বানানো সাবমারসিবল।

    ‘একটা ঝামেলা রয়ে গেছে,’ অদ্ভুত গলায় বলল মুরল্যাণ্ড।

    ‘কীসের ঝামেলা?’

    ‘তুমি আসার আগেই অ্যাডমিরাল হ্যামিলটন আমাকে ফোন করেছিলেন।’

    ‘তো?’

    ‘আমাকে পই পই করে বলে দিয়েছেন, তোমাকে যেন কোনও পাগলামি করতে না দিই।’

    ‘আর তুমি যা করতে এসেছ, সেটা পাগলামি নয়? কীসের নাকি এক রেসে অংশ নেবে?’

    ‘পাগলামি হতে যাবে কেন? এমনিতেই হ্যামারহেডের সি-ট্রায়াল করার কথা ছিল। রেসের খবর পেয়ে ভাবলাম, এক ঢিলে দুই পাখি মারি না কেন? অ্যাডমিরালকে বলতেই রাজি হয়ে গেছেন। অনেক টাকার পুরস্কার আছে কিনা।’

    ‘নুমার কি টাকার অভাব?’

    ‘আরও পাওয়া গেলে মন্দ কী? এমন তো নয় যে টাকার পেছনে দৌড়াচ্ছি। সম্মানটাই আসল-দুনিয়ার সবচেয়ে দ্রুতগামী সাবমারসিবল হিসেবে স্বীকৃতি পাবে হ্যামারহেড।’

    ‘ব্যস, হাত তুলে মুরল্যাণ্ডকে থামাল রানা। ‘আর ফাঁপা বুলি ছাড়তে হবে না। তুমি সম্মানের আশায় এসেছ এখানে? টাকা বড় নয়?’

    দাঁত বের করে হাসল মুরল্যাণ্ড। ‘আমাকে একটু বেশিই চেনো তুমি।’

    ‘অ্যাডমিরালকেও চিনি। হ্যামারহেড নিয়ে ডাইভ দেবার কথা আগেই বলেছি তাঁকে। তারপরেও তোমাকে সরাসরি মানা করে দেননি কেন, আন্দাজ করতে পারছি। একটু ফাঁক রেখে দিয়েছেন। কাজটা

    কাজটা পাগলামি কি না, সেটা আমাদেরকেই ঠিক করতে দিচ্ছেন।’

    ‘এক শর্তে তোমাকে সাহায্য করতে পারি,’ বলল মুরল্যাণ্ড। ‘রেসে একজন সহকারী থাকলে সুবিধে হয় আমার।’

    ‘রেসটা কবে?’

    ‘পরশু।’

    ‘তারমানে আর মাত্র পাঁচদিন হাতে পাব। এত অল্প সময়ে মডিফিকেশন শেষ করতে পারবে?’

    ‘মাই ডিয়ার রানা,’ চওড়া হলো মুরল্যাণ্ডের মুখের হাসি, ‘আমাকে দশ মিলিয়ন ডলারের ফার্স্ট প্রাইজটা যদি এনে দিতে পারো, জাদু দেখাব আমি।’

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleমাসুদ রানা ৪৬৩ – ছায়াঘাতক
    Next Article মাসুদ রানা ১৪৪ – অপহরণ-২

    Related Articles

    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৩৮৫-৩৮৬ – হ্যাকার (দুই খণ্ড একত্রে)

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৬ – টপ টেরর

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৪ – নরপশু

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৩ – ধর্মগুরু

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫২ – কালো কুয়াশা

    July 22, 2025
    কাজী আনোয়ার হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫১ – মায়া মন্দির

    July 22, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    কালিকা পুরাণ (কালিকাপুরাণম্‌) – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত

    September 9, 2025

    শ্রীশ্রীচণ্ডী – অনুবাদ : পঞ্চানন তর্করত্ন

    September 9, 2025

    পুলিশ কাহিনী ১ – পঞ্চানন ঘোষাল (প্রথম খণ্ড)

    September 9, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.