Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মাসুদ রানা ৪৬৮ – স্বর্ণলিপ্সা

    কাজী মায়মুর হোসেন এক পাতা গল্প393 Mins Read0
    ⤷

    স্বর্ণলিপ্সা – ১

    এক

    ‘এত বিচ্ছিরি দিনে কোন্ শালার ইচ্ছে করে প্যাচপেচে কাদার ভেতরে যেতে?’ মাথা নেড়ে স্বগতোক্তি করল রবার্ট উইলসন। জঙ্গলের মাঝে এঁকেবেঁকে বহু দূরে গেছে সরু গ্রাম্যপথ। ডিসেম্বরের হাড়-কাঁপানো শীত, সেইসঙ্গে উইণ্ডশিল্ডের ওদিকে ঝুপঝুপ বৃষ্টি। যেন কোটি কোটি কল খুলে দিয়েছে ধূসর আকাশটা। বিরূপ পরিবেশে কাজে যেতে হচ্ছে বলে খিঁচড়ে আছে রবার্টের মন। ভাবছে, কপালটা মন্দ বলেই বেরোতে হয়েছে আজ বাড়ি ছেড়ে। গত বছর এই দিনেই ওকে তালাক দিয়ে ইনভার্নেস শহরের লম্পট ওই প্লাস্টিক সার্জনের হাত ধরে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল ওর স্ত্রী লোপা। আর তাই আজকের দিনটা ছুটি পেলে বাড়িতে আর্মচেয়ারে পিঠ ঠেকিয়ে বসে গলা পর্যন্ত নির্জলা স্কচ গিলত। তাতে হয়তো একটু কমত ওর মনের জ্বালা।

    ভালবেসে স্ত্রীকে সব উজাড় করে দিয়েছিল রবার্ট। তবে তাতে কোনই লাভ হয়নি। লোভী মেয়েটার জীবনে সবচেয়ে প্রিয় ছিল টাকা-পয়সা। আর আজ ওই টাকার জন্যেই ডিসেম্বরের কনকনে শীতে শেষ দুপুরের বৃষ্টি মাথায় নিয়ে রবার্ট চলেছে সার্ভে-র কাজে। ছোটবেলার বন্ধু পিটার হ্যানন আর ওর গড়ে তোলা চার্টার্ড বিল্ডিং সার্ভেয়ার ফার্ম টিকিয়ে রাখতে হলে এ ছাড়া কোনও উপায়ও নেই। লক আরডাইকের তীরে পাইন জঙ্গলের পশ্চিম সীমানায় নির্মাণ-এলাকা জরিপ করতে হবে। ওটা ফোর্ট উইলিয়াম থেকে তিরিশ মাইল উত্তরে। আগেও কমপক্ষে দশবার জরিপ করা হলেও আবারও যেতে হচ্ছে রবার্টকে ওই এলাকায়।

    সাইটের মাইলখানেকের মধ্যে পৌঁছুতেই আকাশ ভেঙে নামল মুষলধারে বৃষ্টি। জঙ্গলের মাঝে আরও সরু হলো আঁকাবাঁকা পথ। একটু দূরেই গভীর হ্রদ লক আরডাইক। ওটাকে ঘিরে আকাশে উঠেছে সবুজ গুল্মে ছাওয়া উঁচু পাহাড়। বরফ-ঢাকা কালো-বাদামি চূড়ার কাছে ভাসছে ঘন ধূসর কুয়াশা ও সফেদ মেঘের ভেলা। পথের ধারে এখানে- ওখানে একটা-দুটো ছাত ধসে যাওয়া শত শত বছরের পুরনো পাথরের তৈরি পরিত্যক্ত কুটির। মেঘমুক্ত দিনে মাছের আশায় লক আরডাইকের আকাশে চক্কর কাটে অসপ্রে ও ঈগল। কখনও কখনও চলন্ত গাড়ির নাকের ডগা দিয়ে পাশের জঙ্গলে ছিটকে ঢোকে লালচে হরিণ, ভীষণ চমকে দেয় অপ্রস্তুত ড্রাইভারকে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর স্কটল্যাণ্ডের এই মায়াবী পশ্চিম এলাকা সত্যিই জগৎ- বিখ্যাত। চারপাশে বিচিত্র প্রাণীর সমাহার মুগ্ধ করার মত। সেই টানে প্রতিবছর আসে হাজার হাজার টুরিস্ট। তবে এই এলাকায় বড় হয়েছে বলে এসব চোখেই পড়ে না রবার্টের।

    একটু পর দেখা গেল সাইট ঘিরে রাখা ওয়াএয়ার ফেন্স- এর বুকে মেইন গেট। আজ আবহাওয়া খারাপ। তাই বাড়ি ফিরে গেছে বেশিরভাগ বিক্ষোভকারী। তবে গায়ে রেইন কোট পরে গেটের কাছে রয়ে গেছে কমপক্ষে দশজন। নির্মাণকারী কোম্পানির কর্মচারীর গাড়ি এলে ভেজা ব্যানার তুলে প্রতিবাদ জানাবে তারা।

    তাদের সঙ্গে আছে জিম অ্যাণ্ডারসন। সেই ইংল্যাণ্ড থেকে এসেছে ঘোঁট পাকাতে। বিক্ষোভকারীদের ভেতর সবচেয়ে জঙ্গি ধরনের মানুষ সে। অবশ্য এখন ওসব নিয়ে ভাবছে না রবার্ট। আগেই মেনে নিয়েছে, সত্যিই কঠিন যুক্তি আছে প্রতিবাদকারীদের পক্ষে। ওর বন্ধু পিটার হ্যাননের আগ্রহে ডেভেলাপারদের কাজটা হাতে নিয়েছে ওরা। আগে কখনও এতবড় প্রজেক্টের কাজ পায়নি ওদের ফার্ম। নির্মাণকারীরা গড়বে আঠারো গর্তের চ্যাম্পিয়নশিপ গল্ফ কোর্স। শুধু কি তাই? বড়লোকদের জন্যে তৈরি হবে মিলিয়ন পাউণ্ডের প্রকাণ্ড সব ডুপ্লেক্স বাড়ি। আর তাতেই খেপে গেছে স্থানীয় মানুষ। তাদের রেগে যাওয়ার বড় কারণ হচ্ছে, বাড়ি ও গল্ফ কোর্স তৈরি করতে গিয়ে কেটে সাফ করা হবে প্রাচীন পাইন গাছের দুশো একরের মাঝারি এক জঙ্গল। এই বিপর্যয় ঠেকাতে আদালতে মামলা ঠুকেছিল ইকোফ্রেন্ড্স নামের বড় এক পরিবেশবাদী সংগঠন। তবে মাস কয়েক আগে মামলায় হেরে গেছে তারা। এরপর থেকে নানা কায়দায় নির্মাণকারীদের বাধা দিচ্ছে কারা যেন। হরদম চুরি হচ্ছে রসদ ও মালপত্র। হ্রদের জলে পাওয়া যাচ্ছে হারিয়ে যাওয়া যন্ত্রপাতি।

    প্রথম যে কোম্পানি কাজ নিয়েছিল, তাদেরকে ঠেকাতে নিজেদেরকে গাছের সঙ্গে শেকলে বেঁধে আলোড়ন তৈরি করে ইকোফ্রেণ্ডরা। বুলডোযার এনে একটা গাছও ফেলতে পারেনি নির্মাণকারী কোম্পানি। পরে বাধ্য হয়ে ওই এলাকা ওয়াএয়ার মেশ দিয়ে ঘিরল তারা। পাহারা দিত সিকিউরিটির লোক। বিক্ষোভকারীরা ঢুকতে পারত না ওখানে। কিন্তু তা মাত্র ক’দিনের জন্যে। এরপর আগুনে পুড়ে ছাই হলো কোম্পানির দামি সব মেশিনারি। বিপদ বুঝে রণে ভঙ্গ দিয়ে লেজ গুটিয়ে পালিয়ে গেল সেই কোম্পানি।

    এরপর বাড়ি ও গল্ফ কোর্স নির্মাণে একের পর এক এল আরও চারটে কন্সট্রাকশন ফার্ম। গুজব আছে, সরকারি কর্মকর্তাদের পকেট ভারী করতে বহু টাকা খরচ করেছে তারা। স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে লোভ দেখিয়েছে, গফ্ কোর্স ও বাড়ি তৈরি হলে মেলা টাকা দেয়া হবে তাদেরকে।

    অবশ্য আগে তো শেষ করতে হবে কাজ!

    আর তাতেই এসেছে রহস্যজনক জটিল সব বাধা- বিপত্তি।

    শেষে মাঠে নামল আরেকটি কোম্পানি। তাদের হয়েই জরিপের কাজ করছে হ্যানন অ্যাণ্ড উইলসন চার্টার্ড বিল্ডিং সার্ভেয়ার ফার্ম। রবার্ট যে গাড়িটা চালাচ্ছে, এটা ডেভেলাপার কোম্পানির নয়, ওদের নিজেদের ছোট্ট ফার্মের। দু’পাশের দরজায় সোনালি লোগো। ওই ছবি ও লেখা দেখলেও ইঁট- পাটকেল ছুঁড়বে বিক্ষোভকারীরা। তাই বুদ্ধিমানের মত মেইন গেটে না থেমে পশ্চিমে চলল রবার্ট। ভাল করেই জানে, ওদিকে আছে ছোট আরেকটা গেট।

    কিছুক্ষণ চলার পর অপেক্ষাকৃত ছোট গেটের কাছে গাড়ি রাখল রবার্ট। গাড়ির ছাতে তবলার বোল তুলছে বৃষ্টির ফোঁটা। এই মৌসুমে এত খারাপ হয় না স্কটল্যাণ্ডের পরিবেশ। তবে গত ক’দিনের বৃষ্টিতে ভিজে নরম হয়েছে তুষার ছাওয়া কাদাটে মাটি। উঁচু ওয়াএয়ার মেশ ফেন্স-এর ওদিকে থমথম করছে শত বছরের পুরনো, কালো পাইনের জঙ্গল। গ্রামে শ্রুতি আছে: ওখানে আছে হাজার বছর বয়সী ভয়ঙ্কর বদমেজাজি এক বুড়ি ডাইনী, অশুভ আত্মা ও কবন্ধ ভূত।

    অবশ্য গাঁজাভরা এসব গল্প শুনতে বয়ে গেছে রবার্টের। যদিও মনে মনে স্বীকার করল, অন্ধকার জঙ্গলে ঢুকতে মোটেও ভাল লাগবে না ওর। গামবুট ও রেইন কোট পরে ভ্যান থেকে নেমে পড়ল রবার্ট। প্যাডলক খুলে ওয়াএয়ার মেশ ফেন্স-এর গেটের ওদিকে গিয়ে ভেতর থেকে তালা আটকে দিল। গ্রামের মানুষ হলেও জঙ্গলে অভ্যস্ত নয় সে। জিপিএস ন্যাভিগেশন ডিভাইস চালু করে কপালের ফুলে থাকা শিরার মত শেকড়ে হোঁচট খেতে খেতে পৌঁছে গেল সিকি মাইল দূরে। জঙ্গলের আরেকটু সামনে সাইটের পশ্চিম সীমানা। জিপিএস কাজ না করলে বহু আগেই পথ হারাত রবার্ট। তাতে হয়তো মারা পড়ত পানযোগ্য পানি, দরকারি খাবার ও নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে। মিলনের সময় এলে মাদী হরিণকে জয় করে নিতে শিঙে শিং বাধিয়ে খটা-খট শব্দে যে লড়াই করে প্রতিপক্ষ দুই পুরুষ হরিণ, এখন মাথার ওপর এলোমেলো হাওয়ায় পাইনের শাখা-প্রশাখা থেকে আসছে তেমনই আওয়াজ।

    বিড়বিড় করে নিজের কপালকে দোষ দিল রবার্ট। একটু পর পর টপকে যেতে হচ্ছে শেওলাভরা উপড়ে যাওয়া পাইনের সবজেটে গুঁড়ি। চারপাশে ঘন ঝোপঝাড়। আরও কয়েক গজ যেতেই ঢালু হলো বৃষ্টিতে ভেজা পিছলা জমি। সামনে ভূমিধসের এলাকা। মাটিতে অসংখ্য মোটা ও চিকন শেকড়। পচা ঝোপঝাড় থেকে আসছে বাজে গন্ধ।

    ‘ধুশ্‌শালা!’ বিড়বিড় করল রবার্ট।

    অবশ্য কপাল ভাল যে থেমে গেছে বৃষ্টি। মাথার উপর থেকে সরে যাচ্ছে মেঘ।

    ধসের পিছলা জায়গাটায় সতর্কতার সঙ্গে নামতে লাগল রবার্ট। কিন্তু অর্ধেক নেমে যেতেই হড়কে গেল ওর দুই পা। ভারসাম্য হারিয়ে হুড়মুড় করে মাটিতে পড়ে সরসর করে নিচে চলল ও। পতন ঠেকাতে দু’হাতে খামচে ধরতে চাইছে শেকড় আর ঘাস। তবে তাতে কোনও লাভ হলো না। শরীরে কাদা মেখে গড়াতে গড়াতে গিয়ে পড়ল সমতল জমিতে। ওখানে কয়েক মুহূর্ত স্থির হয়ে থাকল রবার্ট। তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে মনে মনে জঘন্য সব গালি দিতে দিতে উঠে বসল। নিজের দিকে চেয়ে আরও তিক্ত হলো ওর মন। কাদাভরা ভূত হয়ে গেছে!

    ‘শালার কপাল!’ আরও কিছু গালি মনে এলেও অদ্ভুত এক দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে গেছে রবার্ট।

    একটু দূরের মাটিতে চকচক করছে সোনালি কী যেন!

    চট করে চারপাশের জমিতে চোখ বোলাল রবার্ট। ওর খামচি খাওয়া ভেজা মাটি থেকে উঠে এসেছে বৃত্তাকার কিছু সোনালি মোহর! পাইনের ঘন পাতার ফাঁক দিয়ে নিচে এসে পড়েছে সূর্যের আলো। একটা কয়েন তুলে নিয়ে প্যান্টে কাদা মুছে নাকের কাছে ধরল রবার্ট।

    রোদে ঝিকিয়ে উঠল জিনিসটা!

    মুহূর্তে রবার্ট বুঝে গেল, ওটা কী দিয়ে তৈরি! কাঁচা সোনা!

    কাদার ভেতর ছড়িয়ে আছে অনেকগুলো!

    সাতটা… আটটা… এগারোটা…

    অঝোর বৃষ্টির তোড়ে ধসে গেছে ওপরের মাটি। তাতেই বেরিয়ে এসেছে বেশ কিছু সোনার কয়েন। কে জানে, কত শত বছর ধরে জঙ্গলের মাটির নিচে লুকিয়ে আছে এই গুপ্তধন! কতগুলো… কে জানে!

    আছাড় খেয়ে দারুণ কিছু ঘটেছে রবার্টের জীবনে। দেরি হলো না স্বর্ণের মোহরগুলো তুলে কোট-প্যান্টের পকেটে পুরতে। আরেকটু খুঁজতেই মিনিট তিনেকের ভেতর পেল আরও অন্তত ডযন দুয়েক কয়েন। নিজেও জানে না, কখন বাচ্চা ছেলের মত খিলখিল করে হাসতে শুরু করেছে ও। চারপাশের কয়েন পকেটে রেখে সাবধানে সিধে হয়ে দাঁড়াল রবার্ট। এক পা এক পা করে আবারও গিয়ে উঠল ওপরের জমিতে।

    গুপ্তধন! সত্যিই গুপ্তধন পেয়েছে ও!

    রবার্ট স্থির করল, আগামীকাল আবারও ফিরবে এখানে। তখন কোদাল চালিয়ে তুলে আনবে শত শত… কে জানে হয়তো হাজার হাজার কয়েন। এবার ভ্যানের কাছে ফিরতে অর্ধেক সময়ও লাগল না ওর। মনে থাকল না পথে উঁচু-নিচু, এবড়োখেবড়ো সব শেকড়, সামনে ঘন ঝোপঝাড়। কোট- প্যান্ট ভিজে গেছে বা কাদায় ভরে গেছে, তা-ও মনে নেই। ভ্যানের ড্রাইভিং সিটে বসে পকেট থেকে একটা কয়েন নিয়ে মনোযোগ দিয়ে দেখল রবার্ট।

    কয়েনটা বহু পুরনো। এক্সপার্টদের মত এসব চেনার যোগ্যতা না থাকলেও সে বুঝে গেল, মাত্র একটা কয়েন থেকেই পাবে বস্তাকে বস্তা-পাউণ্ড। শত শত বছর ধরে জঙ্গলে আছে সাত রাজার ধন! অপেক্ষা করছিল শুধু ওর জন্যে!

    সব কাজের কথা ভুলে গেল রবার্ট। স্থির করল, বাড়ি ফিরে বন্ধু পিটার হ্যাননকে ফোনে বলে দেবে, আজ আবহাওয়া খারাপ, তাই আগামীকাল শেষ করবে সার্ভের কাজ। গুপ্তধনের এলাকার সঠিক লোকেশন লিখে নিয়েছে জিপিএস ডিভাইসে। এবার বাড়ি ফিরে গরম পানি দিয়ে স্নান সেরে নেবে। তারপর গরম চা হাতে আর্মচেয়ারে বসে পার করবে মধুর বিকেলটা। ভাল করে দেখবে সোনার কয়েন। একেকটার দাম হবে বোধহয় হাজার হাজার পাউণ্ড!

    কী পেয়েছে সেটা ভাবতে গিয়ে মাথা ঘুরছে রবার্টের। মনের ভেতর ডানা মেলছে রঙিন সব স্বপ্ন। এখন থেকে আর কোনও কাজ করবে না। গ্রাম ছেড়ে সোজা চলে যাবে ইতালিতে। পামগাছে ভরা উষ্ণ কোনও সৈকতের ধারে বাড়ি কিনবে। আর ফিরবে না পোড়া এই দেশে। সবসময় ওকে ঘিরে রাখবে বিকিনি পরা সুন্দরী মেয়েরা!

    মরুক লোভী লোপা আর তার লম্পট প্রেমিক প্লাস্টিক সার্জন! রবার্টের সৌভাগ্য দেখে হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরবে তারা! তবে আগে জানতে হবে একেকটা সোনার কয়েনের দাম কত করে। ইন্টারনেট ঘাঁটলে মোটামুটি আন্দাজ পাওয়া যাবে। এডিনবার্গ বা লণ্ডনে অ্যান্টিক বিশেষজ্ঞ আছে। তেমন কাউকে সাবধানে খুঁজে নেবে ও। তাকে বলবে না কোথায় পেয়েছে এসব কয়েন। গ্রামের কাউকে কিছুই জানাবে না। লক আরডাইক এলাকায় ডেভেলাপারদের কাজ আপাতত বন্ধ। তাই ওদিক থেকে কোনও বিপদ হবে না। সমস্ত গুপ্তধন উদ্ধার করে নেয়ার জন্যে অনেক সময় পাবে রবার্ট।

    ভাবনাগুলো গুছিয়ে নেয়ার পর কাঁপা হাতে ভ্যানের ইঞ্জিন চালু করল ও। গাড়ি ঘুরিয়ে ঝড়ের বেগে ফিরে চলল বাড়ির দিকে। ভাবছে, আজকের দিনটা সত্যিই অদ্ভুত ভাল। মুহূর্তে বড়লোক হয়ে গেছে ও! একেবারে আচমকা!

    রবার্ট অবশ্য জানে না, কিছুদিনের মধ্যেই মোহরগুলো হাতিয়ে নেয়ার জন্যে এই শান্ত গ্রামাঞ্চলে শুরু হতে চলেছে সর্বগ্রাসী লোভের প্রচণ্ড এক সাইক্লোন! ফুরিয়ে আসছে ওর সময়।

    ওই গুপ্তধন কোনদিনই উদ্ধার করতে পারবে না ও।

    রবার্ট এ-ও জানে না, ওর ওই আবিষ্কারের কারণে কী অকল্পনীয় সব ঘটনা ঘটতে চলেছে স্কটল্যাণ্ডের নিরিবিলি পাহাড়ঘেরা এই শান্ত এলাকায়। আর সেসবে জড়িয়ে গিয়ে এখানে এসে হাজির হবে বহু দূরের এক সুজলা, সুফলা, শস্য-শ্যামলা, মায়াবী, মিষ্টি দেশের অজানা, অচেনা, অকুতোভয় এক যুবক-মাসুদ রানা!

    ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleধাওয়া – কাজী মায়মুর হোসেন
    Next Article অদৃশ্য ঘাতক – কাজী মায়মুর হোসেন

    Related Articles

    কাজী মায়মুর হোসেন

    অদৃশ্য ঘাতক – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    ধাওয়া – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মৃত্যু উপত্যকা – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    খুনে ক্যানিয়ন – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৪৮ – মৃত্যুঘণ্টা

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৮ – মহাপ্লাবন

    July 25, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }