Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মাসুদ রানা ৪৬৮ – স্বর্ণলিপ্সা

    কাজী মায়মুর হোসেন এক পাতা গল্প393 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    স্বর্ণলিপ্সা – ৪৪

    চুয়াল্লিশ

    বিশাল এক পাথুরে বোতলের মত করে তৈরি স্টুয়ার্টের ডানজন। ভেতরে ঢুকিয়ে দিলে কারও সাধ্য নেই নিজে থেকে উঠে আসবে। আফ্রিকায় এমন কিছু জেলখানা দেখেছে রানা। অনেক কষ্ট করে ওর একটা থেকে বেরিয়েও এসেছে। তবে এই ডানজনটা খারাপের দিক থেকে একনম্বর।

    ‘শুনছিস, হ্যানন?’ হাঁক ছাড়ল বাক ওয়াকি। ‘তৈরি হ! একটু পরেই শুরু হবে পার্টি!’

    অন্ধকার থেকে কোনও জবাব এল না। কোয়ার্ট বলল, ‘বুড়ো শালাটা বোধহয় মরেই গেছে। মজা দেখতে পাবে না।’

    মাথা নাড়ল বাক ওয়াকি। ‘না, ওই শালা সবসময় ভাব ধরে যে সে ঘুমিয়ে আছে। আসলে সবই দেখে চোখ সরু করে। এবার চোখ বড় করে সব দেখবে। কোয়ার্ট, তোমার ছোরার ফলায় যথেষ্ট ধার আছে তো?’

    ‘আছে, আছে!’ বাঁকা হাসল কোয়ার্ট

    মুহূর্তের জন্যে অসতর্ক হয়েছে সে, বুঝে গেল রানা। ফলে ঝট করে সামনে বাড়ল ও। শরীরের মাংসপেশি হয়ে গেছে টান খাওয়া স্প্রিঙের মত। এবার ঝাঁপিয়ে পড়ে লোকটার অস্ত্র কেড়ে নিয়েই গুলি করবে তিন বদমাশের বুকে। তবে মুহূর্তটা দেখতে পেয়েছে ওয়াকিও, তৈরি হয়ে গেছে। সরাসরি রানার মাথা লক্ষ্য করে পিস্তল তাক করেছে সে। ‘না, মেজর! এত সহজে রেহাই নেই। চালাকি করলে নাক-মুখ উড়ে যাবে হলো-পয়েন্ট গুলি খেয়ে।’

    ‘আমাকে খুন করলে খুব অসন্তুষ্ট হবে তোমার বস্,’ বলল রানা। ‘ভুলে গেছ, তার চাই মেলা সোনার কয়েন?

    ‘সোনা,’ গজগজ করল বাক ওয়াকি। ‘পাগল হয়ে গেছে লোকটা, নইলে সবই বুঝত। আমি তার মত গাধা নই! যা শুনতে চাইছে, তাই তাকে শোনাচ্ছ! আসলে এক তোলা সোনাও নেই তোমার কাছে।’

    ‘অথচ দেখো, আমার মুখ খোলার জন্যে টর্চার করতে নিয়ে চলেছ।’

    ‘আমি শুধু ফুর্তির জন্যে তোমাকে খুন করতে চাই,’ বলল ওয়াকি, ‘যাতে হাড়ে হাড়ে বোঝো, ডিযঅনারেবলদের সঙ্গে লাগলে কী হয়।’ সঙ্গীদের উদ্দেশে বলল সে, ‘শুয়োরের বাচ্চার ওপর নজর রাখো। চালাকির চেষ্টা করতে পারে। কোয়ার্ট, তুমি আগে নেমে যাও গর্তে। জলদি!’

    অস্বস্তি নিয়ে গর্তের পাশে থামল কোয়ার্ট। মই বেয়ে নেমে চলল। হাতের লণ্ঠন থেকে চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে আলো। নিচে বিন্দু-বিন্দু জলে ভেজা পাথুরে দেয়াল দেখল রানা। মেঝেতে নেমে ওপরে লণ্ঠন তুলে ধরল কোয়ার্ট।

    ‘এবার তুমি,’ রানাকে বলল বাক ওয়াকি। যাতে বিপদ না হয়, তাই বন্দির কাছ থেকে সরে গেছে।

    মই বেয়ে নামতে লাগল রানা। ওপর থেকে ওর দিকে তাক করা রয়েছে দুটো পিস্তল। নিচে আরেকটা। ধীরে ধীরে শ্বাস নিচ্ছে রানা। শান্ত রাখছে নিজেকে। ভাবছে, দেখাই যাক এরপর কী ঘটে। এক ধাপ এক ধাপ করে যেন নরকে নেমে চলেছে রানা। কয়েক দিন ধরে এখানেই আটকে রাখা হয়েছে ওর ওস্তাদ বেন হ্যাননকে। ক্রমেই হয়তো খারাপের দিকে গেছে তার শরীর। হয়তো মারধর করা হয়েছে। এখন আহত এবং প্রায়-মৃত। যতই মই বেয়ে নামছে রানা, বাড়ছে ভয়াবহ দুর্গন্ধ। নিচে দাঁড়িয়ে মুখ বিকৃত করে ওপরে চেয়ে আছে অ্যালান কোয়ার্ট। মইয়ের শেষ ধাপে রানা পা রাখার আগেই দূরে সরে গেল সে।

    মই থেকে নেমে পায়ের নিচে শক্ত মেঝে পেল রানা। দূর থেকে ওর দিকে পিস্তল তাক করেছে কোয়ার্ট। বামহাতে উঁচু করে ধরেছে আলোকিত লণ্ঠন। আড়ষ্ট কণ্ঠে বলল সে, ‘এক পা নড়লে মগজ উড়িয়ে দেব। কথাটা মাথায় ঢুকেছে?’

    এখনও সাড়া নেই বেন হ্যাননের। উজ্জ্বল আলোয় ডানজনের পেছনদিকে গাঢ় ছায়া আর অন্ধকার ছাড়া কিছুই দেখল না রানা। কোথাও নেই ওর ওস্তাদ। মইয়ের ধাপ বেয়ে নেমে আসছে বাক ওয়াকি আর গ্রেগরি বেল।

    রানাকে সরে দাঁড়াতে ইশারা করল কোয়ার্ট।

    নীরবে নির্দেশ পালন করল রানা।

    কয়েক মুহূর্ত পর ডানজনে নামল দুই ডিযঅনারেবল। লণ্ঠন তুলে চারপাশে আলো ফেলল বাক ওয়াকি। ‘হ্যানন?’

    মাথার দিকে দুটো পিস্তলের নল তাক করা আছে বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে রানা। বাক ওয়াকির হাতের লণ্ঠনের আলোয় দেখছে দূরের দেয়াল। গলা শুকিয়ে গেছে। ভাবছে, যে-কোনও সময়ে মেঝেতে দেখবে মৃত বেন হ্যাননকে।

    অবশ্য, তখনই ঘটল দুটো ঘটনা।

    প্রথমটা হচ্ছে: বাক ওয়াকির লণ্ঠনের আলোয় পাথরের ডানজনের কোথাও দেখা গেল না বেন হ্যাননকে। পেছন দেয়ালে আছে চারকোনা একটা গর্ত। ওখান থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে পাথরের একটা ভাঙা ব্লক।

    ধক করে উঠল রানার হৃৎপিণ্ড।

    ডানজনে নেই বেন হ্যানন! স্টুয়ার্ট আর তার দলের সবাইকে ফাঁকি দিয়ে বেরিয়ে গেছে সে!

    শুয়োরের বাচ্চা তো নেই!’ আঁৎকে উঠল বাক ওয়াকি।

    কেন যেন গলা ছেড়ে হাসতে ইচ্ছে হলো রানার। এমন নিশ্ছিদ্র ডানজন থেকেও হাওয়া হয়ে গেছে ওর ওস্তাদ!

    এখনও রানার দিকে অস্ত্র তাক করে রেখেছে কোয়ার্ট আর বেল। অনিশ্চয়তায় কাঁপছে পিস্তলের নলদুটো। তখনই দ্বিতীয় ঘটনাটা ঘটল। বেজে উঠল বাক ওয়াকির মোবাইল ফোন। ওটা পকেট থেকে নিয়ে কানে ঠেকাল সে। প্রায় চেঁচিয়ে উঠল, ‘কী?’ রাগ উবে গিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে সে। ‘বেনেট? কী হয়েছে?’

    ওদিকের আবছা কণ্ঠ শুনছে রানা। কর্কশ গলায় চেঁচিয়ে চলেছে কেউ। অর্থ বোঝা যাচ্ছে না। তবে ভালভাবেই শুনছে বাক ওয়াকি। বিস্ফারিত হলো তার দুই চোখ। ঝুলে গেল নিচের চোয়াল। ‘শালী কী করেছে? বলছ, হারামজাদী ছোরা দিয়ে ফুটো করে দিয়েছে তোমার পেট?’

    রানা বুঝল, দুর্গের কোথাও এক ডিযঅনারেবলকে কাঁচকলা দেখিয়ে মুক্ত হয়ে গেছে জেসিকা! বুকে অদ্ভুত এক স্বস্তির বাতাস টের পেল ও।

    নতুন সংবাদে হতভম্ব হয়েছে ডিযঅনারেবলদের সবাই। অবশ্য, তা মাত্র কয়েক মুহূর্তের জন্যে। কিন্তু ওই একমুহূর্তই দরকার ছিল রানার।

    নিজেদের মাঝে তিনফুট ব্যবধান রেখে রানার কাছ থেকে মাত্র পাঁচফুট দূরে আছে কোয়ার্ট ও বেল। কোয়ার্ট বামে, বেল ডানে। তারা ত্রিকোণের দুটো পয়েন্ট হলে তাদের কয়েক ফুট দূরে তৃতীয় পয়েণ্ট বাক ওয়াকি। কোয়ার্ট আছে রানার একটু কাছে।

    টার্গেট হিসেবে তাকেই বেছে নিল রানা। এক পা এগিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল কোয়ার্টের ওপর। ওর কাঁধের জোর গুঁতো লাগল লোকটার পাঁজরে। একইসময়ে মুচড়ে কেড়ে নিল তার হাত থেকে পিস্তল। ট্রিগার গার্ডে ছিল কোয়ার্টের তর্জনী, মড়াৎ করে ভাঙল ওটা। পিস্তলটা পেয়েই সরাসরি তার মুখে গুলি করল রানা। পরক্ষণে তিনফুট দূরে গ্রেগরি বেলের বুকে লাগল ওর দ্বিতীয় গুলি। প্রায় একই মুহূর্তে ছিটকে পিছিয়ে মেঝেতে পড়ল দুই লাশ। রানা বুঝে গেল, কোয়ার্ট বা বেল অসতর্ক হলেও এত সহজ হবে না বাক ওয়াকিকে শেষ করা।

    এদিকে ফোন ফেলে হোলস্টার থেকে পিস্তল নিয়ে কুঁজো হয়েছে ডিযঅনারেবলদের নেতা। চমকে গেছে বলে অন্যহাত থেকে ফেলে দিয়েছে লণ্ঠন। মেঝেতে ঠাস্ করে পড়ে নিভে গেল আলো। দু’হাতে পিস্তল ধরে অন্ধকারে গুলি করল বাক ওয়াকি। ম্যাগাযিনে আছে সতেরোটা রাউণ্ড। সেগুলোর যে- কোনও একটাই রানাকে খতম করতে যথেষ্ট।

    মরার শখ নেই বলে ডাইভ দিয়ে মেঝেতে পড়েই শরীর গড়িয়ে দিয়েছে রানা। এক সেকেণ্ড পর ওর গায়ে ঠেকল কোয়ার্টের লাশ। শক্ত হাতে ওটাকে নিজের শরীরের সঙ্গে চেপে ধরল রানা—ওর এখন চাই নিরাপদ বর্ম। থ্যাপ-থ্যাপ আওয়াজে দুটো গুলি কোয়ার্টের পিঠে লাগতেই থরথর করে কেঁপে উঠল লাশ। রানা ধরে নিয়েছে, বাক ওয়াকির নাইন এমএম হলোপয়েন্ট বুলেট লাশের শরীর ফুটো করে বেরোবে না। ওই থিয়োরি ঠিক কি না জানতে গিয়ে মস্তবড় ঝুঁকি নিয়েছে। কোয়ার্টের কাঁধের ওপর দিয়ে পাল্টা দুটো গুলি পাঠাল রানা। তবে এরই মধ্যে ডানজনের মই লক্ষ্য করে ছুট দিয়েছে বাক ওয়াকি। প্রায়ান্ধকারে তাকে দেখতে পেল না রানা। পাথরের ডানজনের দেয়ালে লেগে রাগী মৌমাছির মত বিই-বিই আওয়াজে নানাদিকে ছিটকে যাচ্ছে কয়েকটা বুলেট। নিজেদের গুলিতেই যখন-তখন খুন হবে ওরা।

    রানার বড় সমস্যা হচ্ছে, বাক ওয়াকিকে দেখতে না পেলেও কোয়ার্টের হাত থেকে পড়া লণ্ঠনের আলোয় ওকে ভাল করেই দেখবে লোকটা। বুটের হিল দিয়ে পিষে লণ্ঠন চুরমার করে দিল রানা। চারপাশে নামল ঘুটঘুটে আঁধার। ক্রল করে লণ্ঠনের কাছ থেকে সরে গাঢ় ছায়া হয়ে উঠল রানা। মনে মনে আফসোস করল, এখন ওর নাইট-ভিশন গগল্‌স্‌টা থাকলে কাজে লাগত!

    ডানজনে নেমেছে থমথমে নীরবতা। গুলির আওয়াজে ভোঁ-ভোঁ করছে কানের ভেতর। রানার ধারণা, দূর থেকে ওকে দেখতে চাইছে বাক ওয়াকি। অন্ধকারে চোখও সয়ে গেছে তার। যে-কোনও সময়ে গুলি করবে ওকে লক্ষ্য করে। ওর ধারণাই সঠিক হলো। ডানজনের আরেক দিকে ঝলসে উঠল মাযল ফ্ল্যাশ। পরক্ষণে গুড়ুম শব্দে কানে তালা লাগিয়ে দিল বুলেট। রানা কোথায় আছে আন্দাজ করে গুলি করেছে বাক ওয়াকি। তবে তার গুলি লাগল রানার কাছ থেকে ছয়ফুট দূরের মেঝেতে। ফুলকি তৈরি করে দূরের দেয়ালে লেগে নানাদিকে ছুটতে লাগল বুলেট। রানার মাথার কয়েক ইঞ্চি ওপর দিয়ে গেল একবার, দ্বিতীয়বার গেল কয়েক ফুট ওপর দিয়ে।

    রানা জানে কোথায় আছে বাক ওয়াকি। পাল্টা গুলি করতে দেরি করল না। তবে ডিযঅনারেবল দলনেতা সতর্ক যোদ্ধা। সরে গেছে আরেক দিকে। রানার পিস্তলের মাযল ফ্ল্যাশ লক্ষ্য করে গুলি পাঠাল সে। অবশ্য আগেই ক্রল করে ডানদিকে সরে এসেছে রানা।

    আবারও নীরবতা নামল ডানজনে। কান পেতে আছে রানা আর বাক ওয়াকি। সামান্য আওয়াজ পেলেই বুঝবে কোথায় গুলি পাঠাতে হবে। দু’জনের ভেতর শুরু হয়েছে ইঁদুর-বেড়াল খেলা। যে-কোনও সময়ে মরবে দেয়ালে পিছলে যাওয়া যে-কোনও বুলেটের আঘাতে।

    তিলতিল করে পেরোচ্ছে সময়। তারপর হঠাৎ করেই শুরু হলো ধুপধাপ আওয়াজ। পরক্ষণে অ্যালিউমিনিয়ামের ধাপে ঠং-ঠং শব্দ। মই বেয়ে ঝোড়ো বেগে উঠছে বাক ওয়াকি। আওয়াজ লক্ষ্য করে গুলি পাঠাল রানা। মইয়ের ধাপে লেগে পিছলে গেল বুলেট। আবারও গুলি করল রানা। বুনো বেড়ালের মত আছড়েপাছড়ে মই বেয়ে উঠছে বাক ওয়াকি। রানা আবারও গুলি করার আগেই পৌঁছে গেল ওপরে। একদৌড়ে মইয়ের কাছে পৌছে গেল রানা। এবার ঝড়ের বেগে ধাপ বেয়ে উঠবে ভেবেছে, এমনসময় ওপর থেকে এল একরাশ গুলি। ডানজনের দেয়ালে লেগে নানাদিকে ছুটছে রাগী বুলেট। বাধ্য হয়ে মেঝেতে ডাইভ দিয়ে পড়ল রানা। পরক্ষণে শুনল খড়মড় আওয়াজে টেনে তুলে নেয়া হচ্ছে মই। মাত্র পাঁচ সেকেণ্ড পর ঠাং আওয়াজে গর্তের মুখে নামল ট্র্যাপডোর। খটাং শব্দে আটকে গেল বল্টু। ট্র্যাপডোরের শিকের মাঝ দিয়ে এল গুলির মাযল ফ্ল্যাশ। পর পর পাঁচটা বুলেট নিচে পাঠাল বাক ওয়াকি। জবাবে ওপরের গর্তের মাযল ফ্ল্যাশ লক্ষ্য করে পাল্টা চারটে গুলি করল রানা। থেমে গেছে ওয়াকির পিস্তলের গর্জন। ছুটন্ত পায়ের আওয়াজ পেল রানা।

    দূরে সরে যাচ্ছে পদশব্দ। ঘুটঘুটে অন্ধকারে একা রয়ে গেল রানা। চারপাশে বারুদ পোড়া গন্ধ ও থমথমে নৈঃশব্দ্য। যুদ্ধরত অবস্থায় অনেক সময় গুলির আঘাত টের পাওয়া যায় না। তাই উঠে দাঁড়িয়ে আহত হয়েছে কি না, সেটা বুঝতে হাত দিয়ে শরীর চাপড়ে দেখল রানা। না, কোনও জখম নেই ওর শরীরে। তিক্ত মনে ভাবল, আগের চেয়ে কমে গেছে শত্রু। মারা গেছে তিন ডিযঅনারেবল। ছোরার আঘাতে আহত আরেকজন। এ খবর পেলে খুব খুশি হতেন কর্নেল হপকিন্স।

    নিজে রানা আছে দুশ্চিন্তায়। ওপরে গিয়ে জেসিকাকে খুঁজে নেবে বাক ওয়াকি। অথচ, ডানজনে বন্দি অবস্থায় কোনও সাহায্যে আসতে পারবে না ও।

    কয়েক মুহূর্ত ভেবে নিয়ে পা দিয়ে মেঝেতে ঝাড়ু দেয়া শুরু করল রানা। একটু পর পেয়ে গেল বাক ওয়াকির হাত থেকে ফেলে দেয়া ইলেকট্রিক লণ্ঠন। ভেবেছিল নষ্ট হয়ে গেছে ওটা। তবে ক’বার ঝাঁকিয়ে নেয়ায় জ্বলে উঠল বাতি। মেঝেতে লণ্ঠন রেখে গ্রেগরি বেলের পিস্তলটা তুলে বেল্টে নিজের পিস্তলের পাশে গুঁজল রানা। কোয়ার্ট ও বেলের পকেট সার্চ করে পেল বাড়তি দুটো ম্যাগাযিন। তারাও ওয়াকির মত একই ক্যালিবারের বুলেট ব্যবহার করছিল। এখন রানার কাছে চৌত্রিশটা হলো-পয়েন্ট বুলেট থাকলেও যুদ্ধ ঘোষণার মত উপযুক্ত অস্ত্র বা গোলাগুলি ওর নেই। অবশ্য মাত্র একটা বুলেটই যথেষ্ট রন স্টুয়ার্টকে শেষ করতে। সে মারা গেলে লড়াইয়ের আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে ডিযঅনারেবলরা। কোয়ার্ট ও বেলের মোবাইল ফোনদুটো সংগ্রহ করল রানা। মেঝে থেকে লণ্ঠন তুলে নিয়ে চলে গেল দেয়ালের নিচে রহস্যময় সেই গর্তের কাছে। ওদিক দিয়েই বেরিয়ে গেছে ওস্তাদ।

    সিমেন্ট দিয়ে গাঁথা পাথুরে ব্লক কীভাবে খুলল বেন হ্যানন, ভেবে পেল না রানা। ডানজনে কোনও যন্ত্রপাতি নেই। দিনের পর দিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা খালি হাতে কাজ করেছে মানুষটা। ভাঙা এক ব্লকে লেগে আছে শুকনো রক্ত।

    গর্ত থেকে ভকভক করে বেরোচ্ছে বাজে দুর্গন্ধ। লণ্ঠনের আলোয় রানা দেখল, দেয়ালের ওদিকটা সুড়ঙ্গমত লাগছে। আকারে দুই ফুট চওড়া ঢালাই করা মোটাসোটা সিউয়ারেজ পাইপের মত। পানির ভেতর পড়ে আছে বাঁধাকপি, গাজর ও শাকসব্জির পচা টুকরো। দুর্গের কিচেন থেকে নেমে ডানজনের গা ঘেঁষে গেছে এই পাইপ।

    বিস্ময় নিয়ে আনমনে মাথা নাড়ল রানা। পাইপের ভেতর দিয়ে যাওয়া জলের কলকল আওয়াজে জায়গাটা খুঁজে পেয়েছে বেন হ্যানন। দিনের পর দিন ভিজে নরম হয়ে গেছে পাথরের ব্লকের চারপাশ। ভীষণ যন্ত্রণা সহ্য করে খালি হাতে খামচে তুলে নেয়া হয়েছে সিমেন্ট। পরে ঠিক জায়গায় গায়ের জোরে কয়েকটা লাথি দিতেই খুলে গেছে পাথরের ব্লক। মেঝেতে আছাড় মেরে ওটা কয়েক খণ্ড করে নিয়েছে বেন হ্যানন। চোখা দেখে একটা অংশ নিয়ে হামলা করেছে পাইপের ওপর। একসময় পাইপের গায়ে তৈরি হয়েছে বড় ধরনের ফাটল। ওদিক দিয়ে নেমে যেতে পারবে বোঝার পর মারাত্মক ঝুঁকি নিয়েছে মানুষটা। ভাল করেই জানত, পাইপের কোথাও আটকা পড়লে প্রাণে বাঁচবে না।

    যেহেতু ডানজন থেকে বেরোবার অন্য আর কোনও উপায় নেই, তাই এবার একই ঝুঁকি নেবে বলে স্থির করল রানাও। ওর ওস্তাদ পাইপের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারলে ও-ও পারবে।

    হাঁটু গেড়ে মেঝেতে বসল রানা। বড় করে শ্বাস নিয়ে কুঁজো হয়ে মাথা ভরে দিল ভাঙা পাইপের ভেতর। ভয়ানক গন্ধ আর গ্যাসের কারণে জ্বলছে ওর নাক-মুখ। নিজেকে সান্ত্বনা দিল, আমি তো আর টয়লেটের পাইপের মাঝ দিয়ে যাচ্ছি না! অবশ্য এই পাইপ কত দূরে গেছে, তা কে জানে!

    দু’হাতের জোরে শরীর টেনে পাইপের ভেতর ঢুকল রানা। মেঝেতে জমে আছে বরফের মত ঠাণ্ডা চার ইঞ্চি গভীর পানি। ওখান থেকে উঠছে বাজে দুর্গন্ধ। বেন হ্যানন আকারে ছোট, তাই পাইপের ভেতর দিয়ে অপেক্ষাকৃত সহজে এগোতে পেরেছে। একেকবারে খানিকটা করে শরীর এগিয়ে নিচ্ছে রানা। সামনে মেঝেতে রাখছে ইলেকট্রিক লণ্ঠন। আলোয় দেখছে কয়েক ফুট। তার একটু দূরেই ঘুটঘুটে আঁধার। বদ্ধ জায়গায় দম আটকে আসতে চাইছে রানার। কোথায় চলেছে জানা না থাকলেও কোথাও না কোথাও নিশ্চয়ই শেষ হয়েছে পাইপ।

    প্রতিবারে কয়েক ইঞ্চি করে এগোচ্ছে রানা। নাকের কাছেই ঘোলা পানি। শ্বাস নিচ্ছে মুখ দিয়ে। আশা করছে হড়হড় করে বমি করে দেবে না। মনে পড়ছে জেসিকার কথা। দুর্গের ভেতরে ওকে খুঁজছে বাক ওয়াকি। একবার পেয়ে গেলে ঘুষিয়ে ভর্তা করবে ওকে।

    মৃদু ছপছপ আওয়াজে চলেছে রানা। কয়েকবার ওর সামনে থেকে ছুটে পালিয়ে গেল ধেড়ে ইঁদুর। ওগুলো কামড়ে দিতে পারে ভেবে চিন্তিত হলো রানা। পরের দশ মিনিটে দু’বার মনে হলো, শেষ নেই এ পাইপের। প্রতি দুই মিনিটে একবার করে চোখ বুজে বিশ্রাম নিল। মনের আয়নায় দেখল সবুজ পাহাড় ও ফুলে ভরা উপত্যকা। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক হলে আবারও চলল। নিজেকে সান্ত্বনা দিল, ওস্তাদ এই পাইপ দিয়ে বেরিয়ে থাকলে তুমিও পারৰে।

    আরও বিশ মিনিট পর দূরে দিনের আবছা আলো দেখল রানা। নতুন উদ্যম ফিরল শরীরে। একটু পর পাইপ শেষ হলো এক ম্যানহোলের ভেতর। কয়েক ফুট ওপরে সরিয়ে রাখা হয়েছে দুই ফুট ব্যাসের লোহার গোল ঢাকনি। ওই পথে হু-হু করে ঢুকছে শীতল হাওয়া। মাঝে মাঝে ঝরছে তুষারকণা। ম্যানহোলের ভেতর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বুক ভরে শ্বাস নিল রানা। বুঝতে পারছে, বেশ ক’দিন পর প্রথমবারের মত মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে পেরে কেমন লেগেছে বেন হ্যাননের।

    মেঝেতে লণ্ঠন রেখে দুই হাতের জোরে ম্যানহোল থেকে উঠে এল রানা। চারপাশে চেয়ে বুঝল, ও এসে উঠেছে দুর্গ থেকে বেশ কিছুটা দূরে। নতুন করে ঝরছে তুষার। ধূসর আকাশ বলে দিচ্ছে, যে-কোনও সময়ে শুরু হবে তুষারঝড়।

    ভেজা পোশাকে হ্যাঁচকা টান মারছে দমকা হাওয়া। চোখে-মুখে লাগছে তুষারকণা। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় থরথর করে কাঁপছে রানা। বুঝে গেল, কিছুক্ষণের ভেতর নিরাপদ কোনও উষ্ণ আশ্রয় না পেলে মরতে হবে প্রবল শীতে। এরই ভেতর দিনের আলো কমে এসেছে। ধীরে ধীরে নামছে রাত। তার সঙ্গে যেন প্রতিযোগিতা করে নেমে চলেছে তাপমাত্রা।

    হাঁটু সমান গভীর তুষারের ভেতর এবড়োখেবড়ো জমিতে হোঁচট খেতে খেতে চলল রানা। যে-কোনও সময়ে শুরু হবে তুষারঝড়। চারপাশ হয়ে যাবে সাদা চাদরের মত। এখনই বড়জোর কয়েক গজ দূরের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। কোন্ দিকে চলেছে কোনও ধারণা নেই রানার। মিনিট কয়েক হাঁটার পর দূরে দেখল কালো, নিচু এক লম্বাটে ঘর। দেরি না করে ওদিকেই চলল।

    রানার মনে হলো ওটা কোনও আস্তাবল বা খোঁয়াড়। তবে কাছে যেতেই দেখল কাঠের একতলা ঘরটা ব্যবহার করা হচ্ছে মালপত্র বা রসদ রাখার গুদাম হিসাবে। ওখানে ধাক্কা খেয়ে স্তূপ তৈরি করছে তুষার। দেয়াল ধরে এগোতেই একটু দূরে কাঠের পলকা এক দরজা পেল রানা। দেরি না করে কবাট ঠেলে ঢুকে পড়ল কুটিরের ভেতরে।

    একদিকের দেয়ালে তুষার-ঢাকা ছোট দুটো বন্ধ কাঁচের জানালা। সেই পথে আসছে আবছা আলো। অবশ্য বাইরের চেয়ে ঘরের তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি বেশি। বাতাসে ভাসছে চেনা গন্ধ। একটু আগেও এখানে জ্বলছিল প্রোপেইন স্টোভ বা হিটার।

    মৃদু আলোয় চাষের যন্ত্রপাতি, বাড়ি মেরামতের মালপত্র, একটা র‍্যাকে কয়েক ক্যান এনামেল রং আর কয়েকটা কাঠের বাক্স দেখল রানা। কুটিরের ভেতরে তারপুলিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে বড় কী যেন। টান দিয়ে তারপুলিন সরাতেই রানা দেখল, ওটা দুই সিটের এক অল-টেরেইন ইউটিলিটি ভেহিকেল। ব্যাটারিচালিত জিনিসটা গলফ কার্ট ও মিলিটারি অ্যাসল্ট বাগির সঙ্কর বলেই মনে হলো ওর। দুর্গ পাহারা দিতে বোধহয় ওটা ব্যবহার করে রন স্টুয়ার্টের প্রহরীরা।

    তারপুলিন আগের জায়গায় রেখে ঘুরে দাঁড়াল রানা। শীতে এতই কাঁপছে, খট-খট করে বাড়ি খাচ্ছে দুই পাটি দাঁত। ওর বুঝতে দেরি হলো না, খুঁজে নিয়ে জ্বালতে হবে প্রোপেইন হিটার। আগে চাই শরীরের স্বাভাবিক তাপ ফিরিয়ে আনা। কুটিরের অন্যদিকে কী আছে দেখতে চলল রানা। ক্রমেই কমে আসছে বাইরের আলো। জোরেশোরে শুরু হয়ে গেছে তুষারঝড়। র‍্যাকে চোখ বোলাতে গিয়ে রিচার্জেবল একটা ইলেকট্রিক লণ্ঠন দেখল রানা। ওটা নিতে হাত বাড়াতেই পেছন থেকে ওর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল কেউ!

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleধাওয়া – কাজী মায়মুর হোসেন
    Next Article অদৃশ্য ঘাতক – কাজী মায়মুর হোসেন

    Related Articles

    কাজী মায়মুর হোসেন

    অদৃশ্য ঘাতক – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    ধাওয়া – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মৃত্যু উপত্যকা – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    খুনে ক্যানিয়ন – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৪৮ – মৃত্যুঘণ্টা

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৮ – মহাপ্লাবন

    July 25, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }