Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মৃত্যু উপত্যকা – কাজী মায়মুর হোসেন

    কাজী মায়মুর হোসেন এক পাতা গল্প184 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    মৃত্যু উপত্যকা – ১০

    দশ

    সন্ধ্যার সময় পাহাড়ী বনভূমি পেরিয়ে সমতল প্রেয়ারিতে পড়ল ওরা। বারবার ঢুলে ঢুলে পড়ছে জিম, যেন পাঁড় মাতাল। জ্বর এসেছে ওর, বিড়বিড় করে আপনমনে প্রলাপ বকছে।

    ‘আরেকটু, জিম,’ সান্ত্বনা দিল শর্টি, ‘আমরা প্রায় এসে গেছি।’

    জিমের কোমর এক হাতে জড়িয়ে ধরে ঘোড়াটাকে দূরের এক সারি ঘরের দিকে এগিয়ে নিয়ে চলল শর্টি। অত্যন্ত চিন্তিত বোধ করছে। যতটা ও ভেবেছিল আঘাতটা তার চেয়ে খারাপ। অনেক রক্ত হারিয়েছে জিম। সহজে সামলে উঠতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না।

    হঠাৎ করে জিজ্ঞেস করল শর্টি, ‘উডফোর্ডদের র‍্যাঞ্চ হাউসটা কোনদিকে?’

    ‘পুবে,’ বিড়বিড় করল জিম, ‘চারমাইল দূরে।’

    জিমকে কিছু না বলে ঘোড়াটাকে দক্ষিণ-পুব দিকে চালাল শর্টি। জিমের র‍্যাঞ্চের দিকে যাচ্ছে না এখন আর, যাচ্ছে সরাসরি উডফোর্ডদের ওখানে।

    বেশ কিছুক্ষণ পর সামনে একটা আলো দেখতে পেল, দূর থেকে মনে হয় মিটমিট করছে। ওরা যখন উডফোর্ডদের র‍্যাঞ্চ হাউসে পৌঁছল তখন সমস্ত শক্তি শেষ জিমের, শর্টির সহায়তায় কোনরকমে বসে আছে স্যাডলে।

    উঠানে ঘোড়া থামিয়ে হাঁক ছাড়ল শর্টি। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির ভেতরের আলো নিভে গেল। আবার ডাকল শর্টি। এবার একটা স্বর সন্দেহের সুরে জিজ্ঞেস করল, ‘কে?’

    এখানে কেউ ওর নাম জানে না, জানার কথাও নয়, কাজেই শর্টি গম্ভীর স্বরে জানাল, ‘জিম কার্সন।‘

    বাড়ির ভেতর থেকে কোন সাড়া এল না। নীরবতা বিরাজ করছে। অপেক্ষা করতে করতে অধৈর্য হয়ে গেল শর্টি।

    জিমের মাথা ঝুঁকে পড়েছে। আরেকটু ঝুঁকলে স্যাডল হর্ন স্পর্শ করবে। পিছলে ঘোড়া থেকে নামল শর্টি, এক হাতে জিমকে ধরে রাখল যাতে পড়ে না যায়।

    নিজে দু’পা ফাঁক করে স্থির হয়ে দাঁড়ানোর পর নরম স্বরে বলল, ‘নামো, জিম। এক দিকে কাত হও, বাকিটা আমি সামলে নেব।’

    স্যাডল হর্ন থেকে হাত সরাল জিম। কাত হতে শুরু করল ওর শরীর, লাশের মত নির্জীব। পুরোপুরি ওজন নিতে পারল না শর্টি, বন্ধুকে জড়িয়ে ধরে ধুলোর মধ্যে পড়ে গেল। তাড়াহুড়ো করে উঠল ও, জিমকে চিৎ করল। নিচু স্বরে সাহস দিয়ে বলল, ‘জ্ঞান হারিয়ো না, জিম। এসে গেছি। এক্ষুণি বিছানায় শোয়ানো হবে তোমাকে।’

    ‘এক চুল নড়বে না!’ শর্টির পেছন থেকে কড়া হেঁড়ে গলার নির্দেশটা ভেসে এল। ‘তুমি জিম কার্সন হলে আমি দেবতা জিউস।’

    মাথার ওপর হাত তুলল শর্টি, উঠে দাঁড়িয়ে ঘাড় ফিরিয়ে তাকাল। বাড়ির পেছন ঘুরে বেরিয়ে এসেছে লোকটা। আবছা একটা আকৃতি, কিন্তু রাইফেলটা চেনা গেল।

    ‘আমি শর্টি,’ তড়িঘড়ি করে নিজের পরিচয় দিল ও, ‘জিমের বন্ধু।’ মাথা কাত করল। ‘ওই যে জিম। মাটিতে। গুলি খেয়েছে। তুমি উডফোর্ড তো?’

    ‘আমি বার্ট উডফোর্ড,’ রাইফেলটা নামল না। ‘জিম গুলি খেলো কী করে! মারা গেছে?’

    ‘কেলটনের লোকরা হামলা করেছিল,’ অধৈর্য গলায় জানাল শর্টি। ওকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যেতে হবে। তোমার সাহায্য দরকার। প্রচুর রক্ত হারিয়েছে জিম, এখনও পড়ছে।’

    গলা উঁচাল তরুণ উডফোর্ড। ‘লিণ্ডা, আলোটা জ্বালবে?’

    এক মুহূর্ত পর লণ্ঠন জ্বলে উঠল সামনের ঘরে। জানালা দিয়ে খানিকটা আলো এসে পড়ল উঠানে। জিমকে দেখা গেল সে আলোয়।

    আর দ্বিধা থাকল না বার্টের, জিমকে ওঠাতে সাহায্য করল সে শর্টিকে। দু’জন ধরাধরি করে ওকে নিয়ে দরজার দিকে এগোল। দরজা খুলে দিল লিণ্ডা, চেহারায় রাজ্যের উদ্বেগ। বার্ট আর শর্টি জিমকে শুইয়ে দিল কাউচে।

    জিমের পাশে দাঁড়িয়ে ঝুঁকে তাকাল লিণ্ডা, থমথমে মুখে জিজ্ঞেস করল, ‘কী হয়েছে ওর? রক্ত কেন?’

    ‘কেলটনের গোপন উপত্যকায় লুকানো গরু খুঁজে পেয়েছে জিম,’ জানাল শর্টি। ‘কেলটনের লোকরা আমাদের তাড়া করে। জিমের কাঁধে গুলি লেগেছে। আঘাতটা কাঁধে হলেও মারাত্মক, অনেক রক্ত হারিয়েছে ও।’ বার্টের দিকে তাকাল শর্টি। ‘কাপড় আর গরম পানি দরকার। ক্ষতটা পরিষ্কার করতে হবে।’

    ‘আমি দেখছি,’ বাৰ্ট কিছু বলার আগেই দ্রুত পায়ে কিচেনের দিকে চলে গেল লিণ্ডা। কিচেন থেকে ওর গলা ভেসে এল। ‘তোমরা ওর শার্ট খুলে ফেলো।’

    একটু পরই গরম পানির মগ আর পরিচ্ছন্ন কাপড় নিয়ে ফিরল মেয়েটা। কারও দিকে তাকাল না, সোজা গিয়ে বসল জিমের পাশে। জ্ঞান আছে এখনও জিমের, তবে জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে।

    ক্ষতটা শুকনো রক্তে প্রায় বুজে এসেছে। পানিতে কাপড় ভিজিয়ে আস্তে আস্তে পরিষ্কার করতে শুরু করল লিণ্ডা। রক্ত মুছে ফেলার পর দেখা গেল বুলেটের ফুটো।

    ‘ওকে একটু তুলে বসাও,’ নির্দেশ দিল লিণ্ডা।

    জিমকে তোলার পর পরীক্ষা করে দেখে স্বস্তির শ্বাস ফেলল ও, কাঁধের পেছন দিয়ে বেরিয়ে গেছে বুলেট।

    ‘কলার বোন আর শোল্ডার ব্লেডের মাঝ দিয়ে গেছে গুলি,’ বলল ও। ‘ভাগ্যিস একটুর জন্যে ফুসফুস ছুঁয়ে যায়নি!’

    এক পা এগোল শর্টি। ‘তার মানে খুব খারাপ কিছু না?’

    লিণ্ডার কথা শুনে মনে হলো পাকা ডাক্তার। ‘যেকোন ক্ষতই মারাত্মক হতে পারে। নির্ভর করে কতটা রক্তপাত হয়েছে আর ইনফেকশন হবে কিনা তার ওপর। জিমের ক্ষতটা মাংসে। গুলিও বেরিয়ে গেছে। শকের কারণে খারাপ একটা সময় যাবে ওর, তবে বিপদ হবে বলে আমি মনে করি না। দ্রুতই সেরে উঠবে।’

    স্বস্তির কারণে মৃদু হাসল শর্টি। তার স্থির বিশ্বাস জন্মে গেছে যে এ মেয়ে যখন বলছে তখন ভয়ের কোন কারণ নেই। ‘তুমি একেবারে ডাক্তারের মত কথা বলছ,’ প্রশংসার সুরে বলল সে। ‘আসলে তুমি বোধহয় মহিলা ডাক্তার নও, নাকি ভুল বললাম?’

    ‘না, রেঞ্জ ওয়ারের কারণে বাবা-মা মারা যাওয়ায় ডাক্তারী পড়া আর শেষ করতে পারিনি। তবে কিছু কিছু রোগী চিকিৎসার অভিজ্ঞতা হয়েছে।’

    ‘এই এলাকার লোকের কপাল ভাল যে ডাক্তারী জ্ঞান আছে এমন কেউ আছে এখানে। আগামী কয়েকদিন অনেক লোকের চিকিৎসা করতে হবে তোমাকে। সামনে একটা বড় লড়াই হবে।’

    ‘কিন্তু ও থাকবে না,’ জানাল বার্ট উডফোর্ড। ‘জিনিসপত্র গুছিয়ে নিয়ে পুবের আত্মীয়দের কাছে ফিরে যাচ্ছে লিণ্ডা। কালকেই রওনা হবার কথা।’ তিক্ত হাসল তরুণ। ‘আমাদের এই রুক্ষ এলাকায় আর থাকতে রাজি নয় ও। আমরা আমাদের একমাত্র মহিলা ডাক্তার হারাচ্ছি।’

    জিম যে লিণ্ডার প্রতি অত্যন্ত দুর্বল সেটা শর্টির জানা নেই। খুশি হয়েই হাসল সে। ‘আমার ধারণা ঠিক কাজই করছে লিণ্ডা। শান্তিপূর্ণ নির্বিঘ্ন জীবন যাদের পছন্দ এই এলাকা তাদের জন্যে মোটেই উপযোগী নয়।’

    জিমের ক্ষতটা ব্যাণ্ডেজ করতে ব্যস্ত লিণ্ডা, মুখ তুলে তাকাল না।

    গুঙিয়ে উঠল অচেতন-প্ৰায় জিম।

    বার্ট জিজ্ঞেস করল, ‘ওকে একটু হুইস্কি দেব? ব্যথা কমে যাবে। ওর অবশ ভাবটা দূর হয়ে যাচ্ছে।’

    ‘না!’ আবেগ জড়িত স্বরে কথাটা বলেই লজ্জা পেল লিণ্ডা। দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরল। রক্ত জমে লাল হয়ে গেল মুখটা। কী করে ফেলেছে বুঝতে দেরি হয়নি। পছন্দের মানুষ মদ খাবে এটা অপছন্দ হওয়াতেই ওর মুখ দিয়ে ‘না’ বের হয়েছে, জিমের বর্তমান অবস্থা বিবেচনার চিন্তা মাথাতেই আসেনি।

    এক মুহূর্ত চুপ করে থেকে ও বলল, ‘ঠিক আছে। দাও। ও মদ খাবে কি খাবে না তাতে আমার কিছু যায় আসে না।’

    পাশের ঘর থেকে একটা গ্লাসে হুইস্কি ঢেলে নিয়ে এল বার্ট। শর্টি আর বার্ট মিলে আধবসা করল জিমকে, তারপর ওর ঠোঁটে তুলে ধরল গ্লাস। কিচেনে চলে গেল লিণ্ডা, কিছুক্ষণ পর মনস্থির করে ফিরে এসে বার্টকে বলল, ‘আজকেই আমি শহরে যেতে চাই। তুমি কি বাকবোর্ডে আমার মালামাল তুলে দেবে?’

    লিণ্ডার সঙ্গে বেরিয়ে গেল বার্ট। জিমের পাশে একটা চেয়ারে বসল শর্টি ঘোরের মধ্যে আছে জিম, বারবার এপাশ ওপাশ করছে, মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসছে অস্ফুট গোঙানি।

    হঠাৎ দরজাটা আবার খুলে গেল। দৃঢ় ভঙ্গিতে দু’পা ফাঁক করে দরজায় দাঁড়াল বার্ট, ওর চেহারায় খেলা করছে টানটান উত্তেজনা। নিচু স্বরে শর্টির উদ্দেশে বলল, ‘জিমের বাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। তোমার কি মনে হয়, কেলটনের কাজ?’

    দ্রুত পায়ে দরজার কাছে চলে এল শর্টি। পোর্চে দাঁড়িয়ে আছে লিণ্ডা। কালো দিগন্তের এক জায়গায় লাল একটা আভা দেখতে পেল শর্টি। ওদিকেই জিমের র‍্যাঞ্চ হাউস।

    ‘আমাদের অনুসরণ করে পাহাড় থেকে নেমে এসেছে ওরা,’ বলল শর্টি। ‘ভাগ্যিস আমি জিমকে ওর বাড়িতে নিয়ে যাইনি! ক্ষেপে গেছে কেলটন। স্বাভাবিক। আমরা ওর ভাইকে খতম করে দিয়েছি।’

    ‘কীভাবে?’ চমকিত দেখাল বার্টকে।

    সংক্ষেপে খুলে বলল শর্টি। শুনতে শুনতে একটা সিগারেট রোল করে ওকে দিল বার্ট, নিজেও ধরাল একটা। শর্টি থামার পর বলল, ‘শহরে কী ঘটেছে সেটা তোমাদের জানানো হয়ে ওঠেনি। একদল পাহাড়ী লোক আক্রমণ করে লেভি ফক্সকে জেল থেকে ছুটিয়ে নিয়ে গেছে। লড়াইতে শেরিফ কস্টিগ্যান মারা গেছে। আমাদের সবাই গেছে শহরে। ওরা ভাবছে শহর প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা না নিলে শহর দখল করে নেয়া হবে। …কেলটন এখন জানে জিম ওর শয়তানী জেনে গেছে। মরিয়া হয়ে উঠবে লোকটা, প্রয়োজনে সর্বশক্তি দিয়ে হামলা করবে।’

    ‘তাই বলে আমি ভাবিনি লোকটা জিমের বাড়ি পুড়িয়ে দেবে।’

    ‘এ তো মাত্র শুরু,’ বলল গম্ভীর বার্ট। ‘আমাদের সবার বিরুদ্ধে লড়াইতে নামবে কেলটন। মরণ কামড় দেবে। আমার ধারণা যদি ভুল না হয় তা হলে কেলটন এখন আমাদের র‍্যাঞ্চের দিকেই আসছে, আমাদের উৎখাত করতে চাইবে। আমরাই জিমের সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশী। আসতে দেরি করবে না কেলটন।’

    সিগারেটে টান দিল শর্টি। চিন্তিত স্বরে বলল, ‘তার মানে দাঁড়াচ্ছে জিম ওর হাতে ধরা পড়ে যাবে।’

    ‘হ্যাঁ। সেজন্যেই এখান থেকে জিমকে সরিয়ে নেয়া দরকার। সমস্ত কিছুর জন্যে জিমকেই দায়ী ভাবে কেলটন।’

    ‘কিন্তু জিম ঘোড়ায় চড়তে পারবে না। ওকে তা হলে কোথাও লুকিয়ে ফেলতে হবে।’

    চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল লিণ্ডা, এবার বলল, ‘ওর সেবা করবে কে?’

    ‘আমি,’ বলল শর্টি। ‘আমি ওর বন্ধু।’

    ‘তোমাকে দিয়ে হবে না,’ দৃঢ় শোনাল লিণ্ডার কণ্ঠ। ‘ওর দক্ষ নার্স দরকার।’ বার্টের দিকে ফিরল। ‘বার্ট, তুমি বাকবোর্ডে খাবার আর ব্ল্যাঙ্কেট তোলো।’

    ‘কিন্তু তুমি তো শহরে যেতে চেয়েছিলে?’

    ‘জিমকে ফেলে যাওয়া ঠিক হবে না,’ মেয়েটার কণ্ঠে সিদ্ধান্তের সুর। ‘আমি ওর দেখাশোনা করব।’ তাগাদা দিল। ‘তাড়াতাড়ি করো, বার্ট।’

    ‘কোথায় ওকে নেব আমরা?’ জিজ্ঞেস করল শর্টি।

    ‘পাহাড়ের গোড়ায় একটা জায়গা চিনি আমি। ওখানে জিম নিরাপদে থাকবে।’ একটু চিন্তা করল লিণ্ডা, তারপর বার্টের উদ্দেশে বলল, ‘বাকবোর্ড তৈরি করে সোজা শহরে গিয়ে সবাইকে জানাবে এদিকে কী ঘটছে। ওদের নিয়ে এখানে চলে আসবে।’ তাকাল শর্টির দিকে। ‘ভাল হয় তুমি এখানেই থেকে গেলে। কেলটনের লোকদের ঠেকাতে পারবে। তাতে সুবিধে হবে আমাদের। জিমকে নিয়ে নিরাপদে সরে যেতে পারব আমি।’

    ‘কী করব বুঝতে পারছি না,’ অনিশ্চিত গলায় বলল শর্টি, সাধ্যমত মাথা খাটাচ্ছে। ‘এটা খুব খারাপ এলাকা। এখানে একা একটা মেয়ে সঙ্গে অসহায় এক পঙ্গু লোক নিয়ে…পুরো এলাকা গরুখোঁজা করবে কেলটন। জিমকে না পাওয়া পর্যন্ত হাল ছাড়বে না।’

    ‘আমি যা বলছি সেটা করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে,’ দৃঢ় শোনাল লিণ্ডার গলা। ‘দুশ্চিন্তা বাদ দিয়ে জিমকে বাকবোর্ডে তুলতে বার্টকে বরং সাহায্য করো। বাগির পেছনে ওর ঘোড়াটাও বেঁধে দিয়ো। পরে হয়তো ওটা দরকার হবে।

    বাড়ির ভেতর থেকে কোট পরে রাইফেল হাতে বেরিয়ে এল লিণ্ডা। ততক্ষণে অজ্ঞান জিমকে বাকবোর্ডে তুলে ফেলল শর্টি আর বার্ট। জিমের অস্ত্রটা ওর পাশে নামিয়ে রাখল শর্টি।

    ‘কিছুক্ষণ পরই জ্ঞান ফিরবে ওর,’ ওকে আশ্বস্ত করে বলল লিণ্ডা। ‘তখন হয়তো আমাকে সাহায্য করতে পারবে।’

    ‘তুমি যা করছ সেটা আমার পছন্দ হচ্ছে না,’ আপত্তির সুরে বলল বার্ট। ‘বড় বেশি ঝুঁকি নিচ্ছ। আমার মনে হয় আমাদের দু’জনের কেউ তোমার সঙ্গে থাকলে ভাল হয়। একা তুমি…’

    ‘অবস্থাটা জরুরী, দৃঢ় গলায় বলল লিণ্ডা। ‘আমাদের প্রত্যেকেরই নিজস্ব কাজ আছে। যার যার কাজ করতে হবে। আমাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে নিজের কাজটা ঠিক মত করো।’

    দু’মিনিটের মাথায় রাকবোর্ড নিয়ে রওনা হয়ে গেল লিণ্ডা, প্রেয়ারির মাঝ দিয়ে সরু বাঁকা পথটা ধরে পাহাড়ের দিকে এগিয়ে চলল। তাড়া দিচ্ছে ঘোড়াগুলোকে। এপথেই আসবে কেলটনের লোকরা।

    একটু পর পথ থেকে সরে সরাসরি পাহাড়ের দিকে চলল ও। পেছনে উডফোর্ডদের র‍্যাঞ্চ হাউসের দিক থেকে গোলাগুলির আওয়াজ ভেসে এল। অন্ধকারে পেছনে তাকিয়ে কিছু দেখতে পেল না লিণ্ডা। থেমে থেমে গোলাগুলি হচ্ছে। আওয়াজটা ক্রমেই কমে আসছে। কেলটনের দলের সঙ্গে দ্রুত দূরত্ব বাড়ছে ওর। শর্টি বোধহয় লোকগুলোকে ধোঁকা দিয়ে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

    পাহাড়ের গোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে একটা পরিত্যক্ত চার্চ। ওটা পাশ কাটিয়ে পুরোনো লগিং ট্রেইল ধরে এগোল লিণ্ডা, বাঁক নিয়ে বনের ভেতর চলে যাওয়া একটা অন্ধকার পথে পড়ল। একটানা আধঘণ্টা দু’পাশের গাছের মাঝ দিয়ে আঁকাবাঁকা পথে বাকবোর্ড চালাল, তারপর পৌঁছল খাড়া ক্লিফটার কাছে। গাছ নেই এখানে। মাঝরাতের চাঁদের আলোয় চারপাশ উদ্ভাসিত। অত্যন্ত দুর্গম একটা খাদে নেমে বাকবোর্ড থামাল ও, পাথরের সঙ্গে ঘোড়াগুলোর রাশ বাঁধল।

    জায়গাটা চিনেছে ও শহরের স্কুলে টীচার হওয়ায়। বাচ্চাদের নিয়ে পিকনিক করতে এসেছিল। জাম খুঁজতে গিয়ে চিনেছে। বুনো এলাকা। লগিং ট্রেইলটা এদিকে আসার একমাত্র পথ। সে পথও শেষ হয়ে গেছে একটা জলপ্রপাতের সামনে।

    একটা গুহা আছে এখানে। প্রাচীন কালে একটা ঝর্না ছিল, এখন আর নেই। সেটার স্রোত পাথর কেটে গুহা তৈরি করেছিল। গুহার ভেতরটা শুকনো। একে একে বাকবোর্ড থেকে জিনিসপত্র নামাল লিণ্ডা, তারপর সেগুলো নিয়ে রাখল গুহার মেঝেতে। অন্ধকারে বারবার যাওয়া আসা করতে হলো ওকে।

    কাজটা শেষ করার পর দেখল জিমের জ্ঞান ফিরেছে। আগের মতই অর্ধঅচেতন। প্রলাপ বকছে।

    ‘জিম,’ ঝুঁকে ডাকল লিণ্ডা। ‘বাগি থেকে নামতে হবে। আমাকে একটু সাহায্য করবে তুমি?’

    শুনতে পেয়েছে, আস্তে করে মাথা দোলাল জিম, চোখ মেলল না।

    কাঁধে হাত বেড় দিয়ে ওকে বসাল লিণ্ডা। নিজেই নামল জিম, তারপর লিণ্ডার সাহায্য নিয়ে টলতে টলতে গুহা পর্যন্ত গেল, জানে না কোথায় আছে বা কোথায় যাচ্ছে। মেঝেতে ব্ল্যাঙ্কেট বিছিয়ে রেখেছে লিণ্ডা, শুইয়ে দিল জিমকে। কী ভেবে সামান্য হুইস্কি গ্লাসে ঢেলে তুলে দিল ওর মুখে।

    শোয়ার কারণে কিছুটা সচেতন হয়েছে। হুইস্কিটুকু গিলে নিয়ে জিম বলল, ‘আমি তো ভেবেছিলাম তুমি মদ খাওয়ার ঘোর বিরোধী।’

    ‘এখন মদ ওষুধের কাজ করবে,’ বলল গম্ভীর লিণ্ডা। ‘ব্যথার ওষুধ বলেই দিলাম।’

    মাথা ঘুরছে জিমের, আস্তে করে লিণ্ডার আনা বালিশে মাথা এলিয়ে দিল, তলিয়ে গেল অস্বস্তিকর ভাঙা ভাঙা ঘুমে।

    গায়ে হাত দিয়ে লিণ্ডা দেখল ওর গায়ে ভীষণ জ্বর। আলতো করে হাত বুলাল কপালে। জিমের সারা মুখে জায়গায় জায়গায় লেগে আছে শুকনো রক্ত। কেটে গেছে কোথাও কোথাও। ঘুমের ভেতরও ব্যথার ছাপ ফুটে উঠেছে চেহারায়।

    কিছুক্ষণ পর গুহার বাইরে বেরিয়ে এল লিণ্ডা, বাগিটা ঝোপঝাড়ের মধ্যে অনেক চেষ্টার পর ঘুরিয়ে নিয়ে ফিরে চলল ফেলে আসা ট্রেইলের দিকে। তিন মাইল পেরিয়ে প্রেয়ারির মাঝে থামল ও, বাগি থেকে নেমে জিমের ঘোড়ায় উঠল, তারপর বাগির ঘোড়াটাকে পেছনে চাপড় দিয়ে তাড়িয়ে দিল উডফোর্ডদের র‍্যাঞ্চের দিকে। জানে ঠিকই ওটা পথ চিনে বাড়ি ফিরে যাবে। যাবার পথে ঘাসে কোন চিহ্নও রেখে যাবে না। ফলে কেলটনের লোকরা অনুসরণ করতে পারবে না।

    এবার ফিরতি পথ ধরল ও। মনে মনে সন্তুষ্টি বোধ করছে। ওর পক্ষে যা যা করা সম্ভব তার সবই করেছে ও। জিম কোথায় আছে তা সহজে জানতে পারবে না কেলটন। আপাতত জিম আর ও সম্পূর্ণ নিরাপদ। আপাতত।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleখুনে ক্যানিয়ন – কাজী মায়মুর হোসেন
    Next Article ধাওয়া – কাজী মায়মুর হোসেন

    Related Articles

    কাজী মায়মুর হোসেন

    অদৃশ্য ঘাতক – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৬৮ – স্বর্ণলিপ্সা

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    ধাওয়া – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    খুনে ক্যানিয়ন – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৪৮ – মৃত্যুঘণ্টা

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৮ – মহাপ্লাবন

    July 25, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }