Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মৃত্যু উপত্যকা – কাজী মায়মুর হোসেন

    কাজী মায়মুর হোসেন এক পাতা গল্প184 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    মৃত্যু উপত্যকা – ১৫

    পনেরো

    সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে শহরের থমথমে ভাবটাও যেন বেড়ে চলেছে। রাস্তাগুলো প্রায় ফাঁকা। ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করতে তাড়াহুড়ো করছে, যেন যেকোন সময় আঘাত হানবে প্রচণ্ড ঝড়।

    সময়টা পার করছে জিম বস্কেটের দোকান আর ম্যালোনের সেলুনে। নিস্পৃহ চেহারা, যেন কোন দিকে কোন খেয়াল নেই, কিন্তু তীক্ষ্ণ নজরে দেখছে সবাইকে। মাঝে মাঝে পাহাড়ী পথ ধরে শহরে এসে ঢুকছে দু’একজন অশ্বারোহী, ঘোড়া বেঁধে রেখে ঢুকে যাচ্ছে কোন রেস্টুরেন্ট বা সেলুনে। দোকানগুলোর সামনে বোর্ডওয়াকের ধারে বেঞ্চে এখানে ওখানে বসে আছে কয়েকজন পাহাড়ী লোক। নিচু স্বরে নিজেদের মাঝে কথা বলছে তারা।

    পরিস্থিতি ভাল ঠেকছে না জিমের। পাহাড়ীদের প্রত্যেকে সশস্ত্র, গানবেল্ট গুলিতে ভরা। অতিরিক্ত শান্ত আচরণ করছে। আর সেকারণেই সন্দেহ জাগে মনে। এদের মত লোকদের সভ্য মানুষের মত আচরণের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ কোন গোপন কারণ না থেকেই পারে না। এখানে অবস্থান নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এদের। কিন্তু কী জন্যে? কেলটনের গুটি এরা, কোন একটা চাল গোপন করার জন্যে কেলটন এদের সামনে বাড়িয়ে ধরছে। কিন্তু কী সেই চাল?

    নিজের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সুদৃঢ় আর সুসংহত না হওয়ায় যে করে হোক কেলটনের মতলব জানতে হবে, বুঝতে পারছে জিম। কেলটনের অন্তত বারোটা উপায় আছে ওদের ধ্বংস করে দেয়ার। অথচ ওরা জানে না লোকটা ঠিক কী করবে। করে বসার আগে জানার কোন উপায়ও মাথায় আসছে না। ততক্ষণে বড় বেশি দেরি হয়ে যাবে। টানটান উত্তেজনা তার ছাপ ফেলতে শুরু করেছে জিমের ওপর। ক্লান্ত লাগছে ওর। মাথা কাজ করতে চাইছে না। মনের জোরে নিজেকে শান্ত রাখল জিম।

    কী করবে সে ব্যাপারে মনস্থির করতে পারল বেশ রাতে, বস্কেটের দোকানে তখন ও। রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করছে পাহাড়ী দস্যুর দল। হঠাৎ করে বস্কেটের দিকে ফিরল জিম, অধৈর্য স্বরে বলল, ‘আর অপেক্ষা করব না। চলো রওনা হয়ে যাই।’

    শান্ত করার চেষ্টা করল বস্কেট। ‘কী করবে? কেলটন কী ভাবছে সেটা আমরা এখনও জানি না।’

    ‘ও কী করে সেটা জানার জন্যে অপেক্ষা করব না। সেটা ঠিক হবে না। আমি আগেই জানতে চাই সে কী করবে।’

    ‘কিন্তু তা কীভাবে সম্ভব?’

    ‘কিছু করে বসার আগেই পাহাড়ী শকুনগুলোকে বন্দি করতে হবে। হয়তো ওদের কারও মুখ থেকে বের করা যাবে কেলটনের পরিকল্পনা কী।’

    দ্বিধান্বিত চেহারা হলো বস্কেটের। ‘কিন্তু ওদের বিরুদ্ধে কোন চার্জ নেই।’

    ‘কোন চার্জের দরকারও নেই। লেভি ফক্সকে শাস্তি দেয়ার আইনগত কোন অধিকার আমাদের নেই সেটা কেলটন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে। বেশ, এরা কোন একটা মতলব নিয়ে ঘুরঘুর করছে, আমরা যদি আইনত ওদের আটক করতে না পারি তো এমনিই আটক করব। আইন নিয়ে পরে ভাবা যাবে। শুধুমাত্র আমাদের ভয় দেখানোর জন্যে লোকগুলোকে এখানে পাঠায়নি কেলটন।’

    ‘তা হলে কেন পাঠিয়েছে বলে তোমার ধারণা?’

    ‘সেটা বুঝতে পারছি না বলেই বেশি দুশ্চিন্তা হচ্ছে। এরা কী করবে তা বলা মুশকিল। হয়তো এখানে অবস্থান নিয়ে আমাদের ঠেকিয়ে রাখাই ওদের কাজ। সেই সময়ে অন্য কোথাও অন্য কিছু পাকিয়ে তুলবে কেলটন।’

    ‘যা ইচ্ছে করে বসবে কেলটন,’ সায় না দিয়ে পারল না বস্কেট। ‘লোকটা বদ্ধ উন্মাদ।’

    ‘আর সেকারণেই আমি অপেক্ষা করতে রাজি নই। অপমানিত হয়েছে সে। অবস্থান নড়বড়ে হয়ে উঠেছে। আহত হয়েছে তার অহমবোধ। অহমবোধ যে পুরুষের ক্ষতিগ্রস্ত হয় সে একটা বিপজ্জনক প্রাণী। আমাদের ধ্বংস করে দেয়ার আগেই ওকে ধ্বংস করে দিতে হবে।’

    ‘কিভাবে?’

    ‘যেদিন লেভি ফক্সের বিচার চলছিল সেদিন এই দোকানের বাইরে দাঁড়িয়েই ওকে আমি বলেছিলাম যদি আমার গরু চুরির সঙ্গে সে জড়িত থেকে থাকে তা হলে ব্যক্তিগত ভাবে তাকে আমি খুঁজে বের করে বদলা নেব। এখন প্রমাণ হয়ে গেছে যে আমাদের সবার কাছ থেকে গরু চুরি করেছে সে। সে জানে যে আমরা জানি ও একটা চোর। চোর হিসেবে ধরা পড়ার জন্যে আমাকেই দায়ী ভাবে সে। পালাবে না কেলটন। পালানোর লোক নয় সে। ওর মত লোকের সামনে এখন একটা মাত্র পথই খোলা আছে। নিজে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আগেই যে তার মুখোশ খুলে দিয়েছে তাকে সে ধ্বংস করতে চেষ্টা করবে।’

    ‘এখন আমাদের কী কর্তব্য?’

    ‘একটা মাত্র কাজই করতে পারি আমরা। আগে আঘাত হানতে পারি। চাল দিতে শুরু করেছে কেলটন। সেজন্যেই পাহাড়ী লোক শহরে এসেছে। এবার আমি আমার চাল দেব। কেলটনের মুখোমুখি হবো আমি।’

    ‘একা তুমি গেলে মরবে!’

    ‘সঙ্গে কিছু লোক নেব। তোমাকে যা বলছিলাম, আমি চাই শহর থেকে লোক সংগ্রহ করে পাহাড়ী দস্যুদের তুমি গ্রেফতার করো। কর্তৃত্ব আছে তোমার। শহর প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা নিতে হবে তোমাকেই।’

    ‘একই সঙ্গে দু’জায়গায় থাকতে পারবে না কেলটন।’

    ‘ঠিক। ও সম্ভবত চাইছে রেঞ্জ আর শহরে আমাদের লোক ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকুক। সেক্ষেত্রে যেখানে খুশি আক্রমণ করতে পারবে সে, আমাদের ঠেকানোর উপায় থাকবে না। শহরেই প্রথমে হামলা করবে বলে আমার বিশ্বাস। সবাইকে সতর্ক করে তৈরি থাকা দরকার তোমার। আমি শটিকে খুঁজে নিয়ে কেলটনের ওখানে যাব। দেখি ও কিছু করার আগেই ঠেকানো যায় কিনা। ‘

    শর্টিকে ম্যালোনের সেলুনে পেল জিম, সেলুনমালিকের সঙ্গে ডোমিনো খেলছিল। সংক্ষেপে জানাল জিম কী করতে চায়।

    ‘বেশ,’ ওর বক্তব্য শেষে উঠে দাঁড়াল ম্যালোন, অ্যাপ্রন খুলে সেলুনের বাতি নেভাতে শুরু করল।

    শর্টি গম্ভীর হয়ে গেছে, বলল, ‘পাহাড়টা বিরাট। কেলটনের সঙ্গে লাগতে যাওয়ার আগে ওর লোকদের মুখ খোলানো দরকার। দেরি করছি কেন আমরা?’

    ম্যালোন একটা নতুন ডার্বি হ্যাট মাথায় চাপিয়েছে, তবে ভেস্ট পরেনি, দেখা যাচ্ছে তার বাম বগলের কাছে অস্ত্র ঝুলছে। বারের পেছনে গিয়ে একটা নল কাটা শটগান নিল সে। বারের ড্রয়ার থেকে শটগানের শেল বের করে পকেটে পুরল। আগে কখনও ম্যালোনকে এত গম্ভীর দেখেনি জিম।

    ‘কয়েকজনকে দেখলাম ডাওডির বারে মদ খাচ্ছে,’ বলল শর্টি। ‘ওখান থেকে কাজ শুরু করতে পারি আমরা।’

    শেষ বাতিটা ফুঁ দিয়ে নিভিয়ে দরজায় তালা মারল ম্যালোন। তিনজন পাশাপাশি এগোল বোর্ডওয়াক ধরে।

    হঠাৎ করে শর্টির বাহুতে হাত রেখে জিম থামতে বলল। ‘এক মিনিট।’

    লিভারি স্টেবল থেকে একজন অশ্বারোহী বেরিয়ে এসেছে। ঘোড়ার গতি বাড়িয়ে সোজা ওদের দিকেই আসছে সে।

    ‘দেখি এর মুখ থেকে কিছু আদায় করা যায় কিনা।’ রাস্তায় নামল জিম। ওকে অনুসরণ করল ম্যালোন আর শর্টি। অস্ত্র বের করে ফেলেছে শর্টি। শটগান কাঁধে তুলে তাক করে রেখেছে ম্যালোন।

    ওদের দেখতে পেয়ে ঘোড়া থামাল অশ্বারোহী। বিস্ময়ের চিহ্ন ফুটে উঠল তার মুখে। অবাক গলায় জিজ্ঞেস করল, ‘ব্যাপার কী!’

    এক পা বেড়ে লোকটার হোলস্টার থেকে অস্ত্র বের করে নিল শর্টি। মৃদু মৃদু হাসছে। বলল, ‘আমি তোমাকে আগেই বলেছিলাম মেক্সিকোয় অনেক মেয়ে তোমার জন্যে অপেক্ষা করে আছে, রেড। এতক্ষণ দেরি করা তোমার উচিত হয়নি। নামো।’

    পিছলে ঘোড়া থেকে নামল লালচুলো যুবক, মাথার ওপর হাত তুলে দাঁড়াল। শর্টি লুকোনো অস্ত্রের খোঁজে ওকে সার্চ করছে দেখে হাসি ফুটল তার মুখে। ‘কী?’ জিজ্ঞেস করল সে, ‘আমার পকেটে তোমাদের হারানো গরু খুঁজছ?’

    ‘স্টেবলের পেছনে এসো,’ কড়া গলায় বলল জিম। ‘কিছু কথা আছে তোমার সঙ্গে। ঠিক ঠিক উত্তর দেবে, নইলে পস্তাতে হবে তোমাকে।’

    ‘ফাঁসিতে ঝোলাতে চাও নাকি!’ পা বাড়াল লালচুলো। ‘আমি কিন্তু তোমাদের কোন গরু চুরি করিনি। তাছাড়া ভাবছিলাম শর্টির উপদেশ মেনে চলে যাব।’

    ‘ওসব জানতে চাই না,’ বলল জিম। ‘কথা আছে তোমার সঙ্গে। এসো।’

    ‘কিন্তু আমি চলে যাচ্ছিলাম এই এলাকা থেকে।’

    ‘একটু পরে,’ বলল শর্টি। ‘কেলটনের ওখানে সতর্ক করে দিয়ে আমাকে বাঁচিয়েছিলে তুমি। সেকারণেই আমিও তোমাকে সাবধান করেছি। কথাটা শোনা উচিত ছিল তোমার।’

    শ্রাগ করল লালচুলো। ‘বড় বেশি দেরি করে ফেলেছি, না? তো গুলি যদি করতেই হয় তা হলে এখানে করছ না কেন?’

    ‘এগোও!’ নির্দেশ দিল জিম। লোকটার কলার চেপে ধরার ইচ্ছে দমন করতে হলো ওকে। ‘ঘোরো। বার্নের পেছনে।’

    লিভারি বার্নের পেছনের আঁধারে গিয়ে হাতের পিস্তলটা শর্টির কাছে দিল জিম। ‘এর ওপর তাক করে রাখো। আমি এর মুখ খোলানোর ব্যবস্থা করছি।’

    ‘একটা কথা বলি শোনো,’ শান্ত শোনাল লালচুলোর গলা। ‘কী জানতে চাও সেটা আমাকে না বলেই মুখ খোলাতে চেষ্টা করবে ভাবছ তোমরা। তোমাদের আমি ভয় পাই না। আমাকে গুলি করে মেরে ফেললেও ভয় পাব না। কিন্তু কী জানতে চাও সেটা বললে আমি হয়তো এমনিতেই মুখ খুলব।’

    ‘খুলতে হবে,’ হাত মুঠো পাকাল জিম। ‘কেলটন তোমাদের শহরে পাঠিয়েছে। কিছু একটা করার মতলব আছে তোমাদের। হয় সেটা আমাদের জানতে হবে, নয়তো সবকয়টাকে মেরে ফেলতে হবে। তোমরা কেলটনের কাছে পৌঁছুনোর একটা বাধা। কোন বাধা আমরা মানব না। দরকার হলে তার সামনে যতজনই আসুক তাদের লাশ মাড়িয়ে যাব। এবার তুমি আমার প্রশ্নের জবাব দেবে, নয়তো তোমাকে খুন করেই কাজ শুরু করব আমি।’

    এক মুহূর্ত চুপ করে থাকল রেড, তারপর বলল, ‘একথা ঠিক যে কেলটন আমাকে পাঠিয়েছিল। কিন্তু কেলটনের কাজ আমি ছেড়ে দিয়েছি, বিশ্বাস করো আর না করো।’

    ‘তাই?’ টিটকারির সুরে বলল জিম। ‘তুমি জেনে গেছ যে সে একটা চোর?’

    ‘ওসব আগেও জানতাম। যেটা জানতাম না সেটা হচ্ছে লোকটা একটা আস্ত উন্মাদ। জানার পর চাকরি ছেড়ে দিলাম। বেশ ক্ষতি পোহাতে হয়েছে।’

    ‘বলে যাও।’

    ‘শহরে আমাদের পাঠানো হয়েছিল নির্দেশের জন্যে অপেক্ষা করতে। সে যখন নির্দেশটা দিল তখন আমি প্রতিবাদ করেছি। তর্কাতর্কি হয়েছে আমাদের। শহরের বাইরে অন্ধকারে ছিলাম তখন। চাকরি করব না শুনেই অস্ত্র বের করল সে। আমিও বের করলাম। দেরি করে ফেলেছিলাম। জ্ঞান ফিরতে দেখি ঝোপের মধ্যে পড়ে আছি। মাথাটা মনে হচ্ছে ছিঁড়ে যাবে ব্যথায়। কেলটনের দলের লোকরা ততক্ষণে ওখান থেকে চলে গেছে। কেলটন বোধহয় ভেবেছে আমাকে খুন করে ফেলেছে।

    ‘অবাক লাগল। পিস্তলে আমার হাত চালু। তাছাড়া ওর গানহ্যাণ্ড আমি নজরে রেখেছিলাম। আমি যখন ড্র করি তখনও অস্ত্রের দিকে হাত বাড়ায়নি সে, অথচ আমাকে হারিয়ে দিয়েছে! এখন বুঝছি যতটা চালু মনে করতাম আমার হাত ততটা চালু না।’

    ‘সে যাই হোক, জ্ঞান ফেরার পর হাতড়ে দেখলাম কী কী আছে আর কী কী নেই। চিরকালই আমি ভবঘুরে, উত্তেজনার পাগল। লড়াইয়ে আমি অংশ নিয়েছি, দুয়েকটা গরুর বাচ্চাকে যে এতিম করিনি তাও নয়, তাছাড়া সুন্দরী মেয়ে উৎসাহী হলে সুযোগ নিতে দেরি করিনি। র‍্যাঞ্চে জন্ম আমার। যুদ্ধের সময় আমাদের র‍্যাঞ্চ পুড়িয়ে দিয়েছিল কনফেডারেটরা। আমার বাবা-মা পুড়ে মারা যায়। সেকারণেই কেলটন যখন পোড়ামাটি নীতির নির্দেশ দিল ভেতরে ভেতরে রীতিমত অসুস্থ বোধ করলাম। কেলটন বলল মাঝরাতে শহরে আগুন দেয়া হবে। একটা বাড়িও যাতে না দাঁড়িয়ে থাকে সে ব্যবস্থা করতে হবে। প্রেয়ারিতেও একই নির্দেশ কার্যকর। প্রত্যেকটা র‍্যাঞ্চ হাউস পুড়িয়ে দেয়া হবে। লোকে যখন আগুন নেভাতে ব্যস্ত থাকবে সেই সুযোগে হামলা করবে কেলটনের লোকরা, যাকে পাবে শেষ করে দেবে। আমার ধারণা লোকটার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। আমি এসবের মধ্যে থাকতে চাই না। সেজন্যেই কিছুটা সুস্থ হবার পর চৌবাচ্চা থেকে হাত-মুখ ধুয়ে ঘোড়াটাকে ধরে রওনা হয়ে গিয়েছি। যত দ্রুত সম্ভব এই এলাকা ছাড়তে চাই।’ জিমের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকাল সে। ‘আমি আমার কাহিনী বললাম। এরপর তোমাদের যা ইচ্ছে করতে পারো।’

    ‘তা হলে কেলটন তোমাকে গুলি করে মৃত মনে করে ফেলে গেছে?’

    ‘হ্যাঁ। একটুর জন্যে বেঁচে গেছি।’

    ‘তা হলে তোমার ক্ষতটা কোথায়?’

    ‘আছে, বন্ধু, আছে। আমার অর্ধেক মাথা লোকটা উড়িয়ে দিয়েছে।’

    ‘ঘুরে দাঁড়াও।’ একটা ম্যাচের কাঠি জ্বালল জিম

    লালচুলো ঘুরে দাঁড়ানোর পর তার মাথা থেকে হ্যাট খুলে চুলের ভেতর আঙুল চালাল জিম। কেঁপে উঠল লোকটা। জিমের হাতে আঠাল রক্ত লাগল।

    ‘অনেক দিন ধরে রেডকে চিনি আমি,’ বলল শর্টি। ‘সত্যি কথাই বলেছে ও। মিথ্যে বলে শুধু সুন্দরী মেয়েদের কাছে। ওকে বিশ্বাস করা যায়।’

    ‘কতটা চেনো?’ জিজ্ঞেস করল জিম। যতটা চেনো তাতে কি ওকে ছেড়ে দেয়া যায়?’

    ‘যায়। যদি ও কথা দেয় চলে যাবে, তা হলে। আর ও যদি মিথ্যে বলে তা হলে আমিই প্রথমে গুলি করে মারব ওকে।’

    ‘ঠিক আছে,’ দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছে বলল জিম। ‘রওনা হতে হবে আমাদের।’ তাকাল যুবকের দিকে। ‘তুমি বললে কেলটনের দলে আর নেই। আমাদের সঙ্গে যোগ দেবে?’

    ‘যেভাবে বললে তাতে আমি রাজি,’ জানাল দানব। ‘যদি জোর করতে বা বাধ্য করতে চেষ্টা করতে তা হলে এখানে আমাকে মেরে রেখে যেতে হত তোমাকে।’

    ‘আমাদের সঙ্গে এলে আশা করব বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে পারবে। ওই এলাকা সম্বন্ধে কী জানো সেটা জানালে অনেক উপকার হয়।’

    ‘আগে কখনও কোন লড়াইয়ের মাঝে পক্ষ ত্যাগ করিনি। কিন্তু কেলটন আমাকে গুলি করেছে। একটা গুলি শুধু পাওনা আছে তার আমার কাছে। চলো, পথ দেখাব আমি।’

    ‘তুমি কী বলো, ম্যালোন?’

    এতক্ষণ চুপ করে শুনছিল সেলুনকীপার, এবার মুখ খুলল সে। ‘আমি মনের কথা মেনে চলি। বিশ্বাস করেছি আমি রেডকে। একটা কথাই শুধু বলব, সে যদি বিশ্বাসঘাতকতা করে তা হলে শর্টির মত আমিও ওকে গুলি করে মারব।’

    ‘ঠিক আছে, বলল জিম। ‘কেলটন কী করবে সে ব্যাপারে কোন ধারণা আছে, রেড?’

    ‘আজকে রবিবার। পাইনটপে জড়ো হবে কেলটনের লোকরা। প্রচুর মদ খাবে ওরা, মাতাল হয়ে ঝগড়ার সুযোগ খুঁজবে। মাঝরাতে তাদের নিয়ে রওনা হবে কেলটন। প্রথমে শহরে আগুন লাগানো হবে, যাতে আগুন নেভাতে ব্যস্ত লোকজন কেলটনের মূল দলের পেছনে লাগতে না পারে। ব্যাঙ্ক আর স্টোর ডাকাতি করা হবে, তারপর আগুনে পুড়িয়ে দেবে। শহরটা ধ্বংস করার পর রেঞ্জে যাবে ওরা, একটা একটা করে র‍্যাঞ্চ হাউসে আগুন দেবে।’

    ‘তা হলে জ্যাকের দোকানে ওর মুখোমুখি হতে পারি আমরা,’ বলল জিম।

    ‘জানি না,’ কাঁধ ঝাঁকাল রেড। ‘বিশেষ কোন মতলব আছে কেলটনের। মাত্র অর্ধেক লোক সে আগুন লাগানোর জন্যে বেছে নিয়েছে। বাকিদের অন্য কাজ দেয়া হবে। সেটা কী তা আমার জানা নেই। তবে মনে হয় কেলটন সরে পড়ার পথও খোলা রাখছে। উদ্দেশ্য পূরণ না হলে হয়তো গরু ড্রাইভ করে চলে যেতে চাইবে।’

    শিস বাজাল শর্টি। ‘আমারও ধারণা কেলটন সরে পড়বে। পরিস্থিতি অনেক বেশি গরম হয়ে গেছে, এখানে আর টিকতে পারবে না সে। সেজন্যেই ঠিক করেছে যারা তার এই পরিণতি করেছে তাদের শেষ করে দিয়ে লুটের মাল নিয়ে হাওয়া হয়ে যাবে।’

    ‘চলো তা হলে রওনা হই,’ পা বাড়াল জিম।

    রাস্তায় বস্কেটের সঙ্গে দেখা হলো ওদের। শহরের চোদ্দজন সশস্ত্র লোক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সে। রেডের কাছ থেকে কী জেনেছে তা সংক্ষেপে শেরিফকে বলল জিম। শর্টি আর ও যে রেডকে বিশ্বাস করছে সেটাও জানাল।

    শেষে বলল, ‘আমাদের সবাইকে ডেপুটি করে নাও, বস্কেট। ছয়- সাতজনকে আমাদের সঙ্গে দাও, পাইনটপে হামলা করব আমরা। বাকিদের নিয়ে তুমিও তৈরি থাকো, যাতে কেলটনকে ঠেকানো যায়। খবরটা শহরে ছড়িয়ে দাও যে রাতে হামলা হবে। আমরা যদি পাইনটপে কেলটনকে ঠেকাতে ব্যর্থ হই তা হলে যা করার তোমাদেরই করতে হবে।’

    বস্কেট কিছুক্ষণ চিন্তা করে দেখল। তার সঙ্গের লোকজন নিচু গলায় আলাপ করছে। একটু পরই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে গেল। সবাই জিমের প্রস্তাবে রাজি।

    ‘ঠিক আছে,’ বলল বস্কেট, ‘সবার কাছে যথেষ্ট গুলি আছে তো?’

    বস্কেটের দোকান থেকে গুলি কিনল কয়েকজন। একটু পরই শহরের আটজন লোক ঘোড়া নিয়ে রওনা হয়ে গেল জিমের সঙ্গে। প্রত্যেকের চেহারা গম্ভীর। জানে, যে.কাজে যাচ্ছে সে কাজ সেরে জীবিত না-ও ফিরতে পারে সে।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleখুনে ক্যানিয়ন – কাজী মায়মুর হোসেন
    Next Article ধাওয়া – কাজী মায়মুর হোসেন

    Related Articles

    কাজী মায়মুর হোসেন

    অদৃশ্য ঘাতক – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৬৮ – স্বর্ণলিপ্সা

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    ধাওয়া – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    খুনে ক্যানিয়ন – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৪৮ – মৃত্যুঘণ্টা

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৮ – মহাপ্লাবন

    July 25, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }