Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মৃত্যু উপত্যকা – কাজী মায়মুর হোসেন

    কাজী মায়মুর হোসেন এক পাতা গল্প184 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    মৃত্যু উপত্যকা – ২

    দুই

    দ্রুত পায়ে সিঁড়ি বেয়ে নেমে কোর্টহাউসের দিকে এগিয়ে চলা লোকদের ভিড়ে মিশে গেল জিম। খেয়াল করল কিছু লোক ওদের সঙ্গে কোর্ট রূমে যাওয়ার জন্যে পা বাড়ায়নি। প্রত্যেকে তারা পাহাড়ী মানুষ।

    দরজা দিয়ে ঢোকার সময় এমন একটা ব্যাপার ওর চোখে পড়ল যে অবাক না হয়ে পারল না জিম। স্টোরের কোনা ঘুরে ঘোড়ায় চড়ে বেরিয়ে এসেছে এক কঠোর চেহারার পাহাড়ী। তার হাতে চারটে স্যাডল চড়ানো ঘোড়ার দড়ি ধরা। আরোহীশূন্য ঘোড়াগুলো দড়ির টানে পেছন পেছন আসছে। দৃশ্যটা দেখে মুহূর্তের জন্যে থমকাল ও, সতর্ক হওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করল। তারপর আগের চেয়ে ধীরে পা বাড়াল ও, পেছনের লোকদের ওকে পেরিয়ে এগিয়ে যেতে দিল।

    দ্বিতীয় তলায় পুরোটা জুড়ে বিরাট দীর্ঘ হল রূম, ভেতরে লোক গিজগিজ করছে। ও সিঁড়ির শেষ ধাপে উঠতেই সবচেয়ে পেছনের লোকটা ওকে পাশ কাটিয়ে দুটো দরজার একটা দিয়ে প্রবেশ করল কোর্ট রূমে।

    লোকের মাথার ওপর দিয়ে জিম দেখল শেষ জুরি মাত্র তার আসনে বসল। গম্ভীর চেহারার পাকাচুলো বুড়ো অ্যাভরি লকরিজ তার ডেস্কে কাঠের হাতুড়ি ঠুকতেই নীরব হয়ে গেল সবাই, ঘরে নামল পিনপতন নীরবতা।

    লকরিজ শহরের একমাত্র উকিল। তাকে ভিজিলেন্স কমিটির কোর্টে বিচারক নির্বাচিত করা হয়েছে। ‘ভদ্রমহোদয়গণ,’ জুরিদের উদ্দেশে বলল সে, ‘আপনারা আপনাদের রায় ঠিক করেছেন?’

    ‘হ্যাঁ,’ শেষ জুরি উঠে দাঁড়িয়ে জানাল।

    ‘দয়া করে তা হলে বিচারের রায় পাঠ করে শোনান কোর্টে।’

    জুরি নাকের ওপর চশমাটা ঠিক করে বসাল। কেশে গলা পরিষ্কার করে নিল, বুক পকেট থেকে বের করল একটুকরো কাগজ। নীরবতায় অত্যন্ত জোরাল শোনাল তার কণ্ঠ।

    ‘আমরা জুরিরা এই সিদ্ধান্তে এসেছি যে অভিযুক্ত লেভি ফক্স আসলেই দোষী।’

    ফিসফিস আওয়াজে ঘর ভরে উঠল। কে যেন হাততালি দিল। হাতুড়ি ঠুকে নীরবতা দাবি করল লকরিজ। সবাই চুপ হয়ে যেতে বলল, ‘আসামীকে উঠে দাঁড়াতে বলা যাচ্ছে।’

    এক পাশে শেরিফ, আরেক পাশে তার নিযুক্ত বিবাদী পক্ষের উকিল, পাইন টেবিলের পেছন থেকে উঠে দাঁড়াল লেভি ফক্স। চিকন লোক সে, একটু কুঁজো। পরনে বাড়িতে বানানো প্যান্ট আর উঁচু বুট জুতো। মুখে কয়েক দিনের না- কামানো খোঁচা-খোঁচা দাড়ি, দৃষ্টিতে স্পষ্ট অবহেলা আর বিদ্বেষ, তাচ্ছিল্য ভরে মেঝেতে থোক করে থুতু ফেলল সে। সাধারণ র‍্যাঞ্চারদের মাঝে রাগের একটা গুঞ্জন উঠল। নার্ভাস ভঙ্গিতে টেবিলে হাতুড়ি ঠুকল লকরিজ। আইনী পথে বিচার বীভার শহরে এই প্রথম।

    ‘লেভি ফক্স, তোমাকে তোমার অপরাধের জন্যে দায়ী ঘোষণা করেছে এই কোর্টের জুরিরা। এখন আমার কর্তব্য হচ্ছে তাদের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে তোমাকে…’

    ‘এত সহজেই নয়!’ তাকে বাধা দিল একটা কর্কশ কণ্ঠ।

    সামনের সারিতে বসে থাকা বিশালদেহী এক লোক উঠে দাঁড়িয়েছে। নাম তার স্টিচ। কয়েক কদম সামনে বেড়ে জাজের কাছে চলে গেল সে। হাতে বিরাট একটা সিক্সগান। নলটা সোজা লকরিজের বুকে তাক করা। অস্ত্রটা আরেকটু উঠিয়ে এবার লকরিজের কপালে গুঁতো দিল সে। ইতিমধ্যেই তার চারপাশে দাঁড়িয়ে গেছে আরও ছয়জন লোক। প্রত্যেকে অস্ত্র বের করে ফেলেছে। ভিড়ের ওপর অস্ত্র তাক করে রেখেছে তারা।

    ‘শোনো, জাজ,’ বলতে শুরু করল বিশালদেহী, ‘আমরা চাই আমাদের বন্ধু এখানে ন্যায্য বিচার পাক। কিন্তু যেহেতু আমাদের বন্ধু এখানে তা পাচ্ছে না, কাজেই তোমাদের হাত থেকে ওকে নিয়ে যাচ্ছি আমরা।’

    হতভম্ব জনতা নীরবে ঘটনা দেখছে। যদিও সবাই জানত যে ঝামেলা হতে পারে, তবু এত সহজে লেভির বন্ধুরা সবাইকে কব্জা করে ফেলেছে যে এখনও চমক কাটিয়ে উঠতে পারেনি কেউ।

    চেয়ারে পাথরের মূর্তির মত বসে আছে লকরিজ। তার কানের পাশে অস্ত্রের কালো নল।

    দর্শকদের সবার কাছেই অস্ত্র আছে, কিন্তু জাজের জীবন চিকন একটা সুতোয় ঝুলছে দেখে কেউ অস্ত্রের দিকে হাত বাড়াল না। তাছাড়া ছয়জন অস্ত্রধারী তাদের দিকে অস্ত্র তাক করে রেখেছে। যেকোন সময় ঘটে যেতে পারে যেকোন কিছু। বেপরোয়া লোক এরা, আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অভ্যস্ত। কেউ একটু বাড়াবাড়ি করতে গেলেই মরবে লকরিজ।

    ‘চলে এসো, লেভি, লকরিজের দিকে অস্ত্র তাক করে রাখা বিশালদেহী স্টিচ হাঁক ছাড়ল, ‘এই মাত্র আমরা জানতে পারলাম যে তুমি আসলে দোষী নও।’

    শেরিফের দিকে তাকিয়ে দাঁত কেলিয়ে হাসল লেভি, হাত বাড়িয়ে তার হোলস্টার থেকে অস্ত্রটা বের করে নিল। শেরিফ আসলে স্যাডল প্রস্তুতকারক, বন্ধু লকরিজের দিকে একবার তাকাল সে, দেখল তার মাথায় স্টিচের পিস্তল। লেভিকে অস্ত্র বের করতে কোন বাধা দিল না সে। এবার সঙ্গীদের সঙ্গে যোগ দিল সশস্ত্র লেভি, অস্ত্র তাক করল দর্শকদের দিকে।

    শ্বাস ফেলতেও যেন ভুলে গেছে সবাই। অপেক্ষা করিয়ে দর্শকদের আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে তুলছে পাহাড়ী দস্যুরা। লেভির ঠোঁটে তৃপ্তির হাসি লেগে আছে। দলপতি বিশালদেহী লোকটা কড়া চোখে উপস্থিত র‍্যাঞ্চারদের দেখছে। ভাব দেখে মনে হলো চাইছে কেউ বিরুদ্ধাচরণ করুক, যাতে সে গুলি করতে পারে।

    টান টান উত্তেজনার মাঝে পাশের দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকল জিম কার্সন। সহজ একটা ভঙ্গিতে হাঁটছে সে, সোজা গিয়ে দাঁড়াল জাজের পাশে, বিশালদেহীর উল্টোদিকে।

    ‘স্টিচ,’ বিশালদেহীর উদ্দেশে বলল জিম শান্ত স্বরে, ‘ভাল পরিকল্পনা করেছিলে, কিন্তু যথেষ্ট ভাল নয়। তোমার লোকদের বলো অস্ত্র ফেলে দিয়ে শহর ছেড়ে চলে যেতে। উদ্দেশ্য পূরণ হবে না তোমাদের।’

    ঘর্মাক্ত জাজের মাথা থেকে অস্ত্র সরাল না স্টিচ, চোখ সরু করে জিম কার্সনকে দেখছে। স্টিচ হপকিন্স বার্ড কেলটনের ফোরম্যান, প্রকাণ্ড শরীরে চর্বির লেশমাত্র নেই। চওড়া হাড় আর পেশির কারণে তাকে দেখে ক্ষ্যাপা ষাঁড়ের কথা মনে পড়ে যায়। কঠোর পাহাড়ী লোকদের লাইনে রাখতে হলে তার মত লোকই দরকার। পাহাড়ী দস্যুরা তাকে মেনে চলে, কারণ ওরা যতটা নিষ্ঠুর আর কঠোর, তার চেয়ে স্টিচ হপকিন্স আরও অনেক বেশি ভয়ঙ্কর এবং বিপজ্জনক। অত্যন্ত হিংস্র লোক সে, বুনো জন্তুর মত। সাবধানে তার ওপর নজর রাখছে জিম, ভাল করেই জানে অন্যান্যরা স্টিচের নির্দেশে সক্রিয় হবে। একমাত্র স্টিচের মাত্রাছাড়া রাগই পারে এই চালমাত অবস্থাকে বিস্ফোরণে রূপ দিতে।

    স্টিচের লোকরা তার দিকে তাকিয়ে আছে, অপেক্ষা করছে অনাহূত অতিথির ব্যাপারে তার সিদ্ধান্তের। ঘটনা যেদিকে গড়াচ্ছে তার পরিণতি সম্বন্ধে স্পষ্ট কোন ধারণা নেই তাদের। হোলস্টার থেকে অস্ত্র বের না করেই হুমকির সুরে কথা বলছে জিম কার্সন। এখনও অস্ত্র বের করার কোন চেষ্টা করছে না। জিম কার্সনকে গুলি করে মেরে ফেলতে পারে ওরা, কিন্তু তা হলে মুহূর্তের বিশৃঙ্খলতায় নিজেদের অস্ত্র বের করে গোলাগুলি শুরু করার সুযোগটা নেবে অন্যান্য র‍্যাঞ্চাররা। সংখ্যায় র‍্যাঞ্চাররাই বেশি। লড়াই শুরু হলে স্টিচের দলের একজনও বাঁচবে না। স্টিচের দিকে তাকিয়ে আছে তারা। স্টিচ নিস্পৃহ চেহারায় পরিস্থিতি বিচার করে দেখছে।

    ইচ্ছে করেই নীরবতা বজায় রাখল জিম। স্টিচের সশস্ত্র লোকদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে উত্তেজনা দানা বাঁধতে দিল। অপেক্ষা করছে, যাতে লোকগুলোর মনে দ্বিধা দ্বন্দ্ব ডানা মেলে। আচমকা বাধাগ্রস্ত হলে সহসা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না লোকে। থমকে গেছে স্টিচের দলবল।

    স্টিচও কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।

    থম মেরে দাঁড়িয়ে আছে র‍্যাঞ্চাররা। অপেক্ষা করছে। অপেক্ষা করছে পাহাড়ী লোকগুলো কী করে দেখার জন্যে। প্রত্যেকে তৈরি, প্রথম গুলিটা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্র বের করে লড়াই শুরু করবে। জিম জানে র‍্যাঞ্চারদের মনোভাব। পাহাড়ীদেরও এটা জানা আছে। তবে সবার চেয়ে পরিস্থিতির ভয়াবহতা বেশি টের পাচ্ছে এখন স্টিচ।

    নীরবতা স্নায়ু ছিঁড়ে দেবার মত একটা পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। দাঁড়িয়ে আছে জিম কার্সন, মুখে কোন কথা নেই। একদৃষ্টিতে স্টিচের দিকে তাকিয়ে আছে। হাত দুটো উরুতে বাঁধা অস্ত্র দুটোর পাশে অলস ভঙ্গিতে ঝুলছে।

    একেকটা সেকেণ্ড মনে হচ্ছে একেকটা ঘণ্টা। অসহ্য হয়ে উঠছে নীরব উত্তেজনা। স্টিচের দু’তিনজন সঙ্গী নার্ভাস ভঙ্গিতে পা বদল করল।

    সরাসরি স্টিচের কুঁতকুঁতে চোখের দিকে নিষ্পলক চেয়ে আছে জিম, বুঝতে পারছে ভেতরে ভেতরে রাগে ফেটে পড়ছে লোকটা। নেতা সে, দলের লোকদের সামনে নিজের ভাবমূর্তি বজায় রাখতে হবে, যে করে হোক জিমের হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে হবে বিজয় মুকুট।

    কিন্তু কী করে তা সম্ভব সেটা স্টিচের মাথায় ঢুকছে না। সঙ্গে সাতজন লোক রয়েছে তার, কিন্তু জিমের পেছনে আছে আটজন র‍্যাঞ্চার। জিমকে গুলি করে শেষ করে দেয়া যায় এটা যেমন সত্যি, তেমনি এটাও ঠিক যে বাকি আটজনের হাতে তা হলে মারা পড়তে হবে তাকে। এর অন্যথা হবার উপায় নেই।

    জিম কার্সনও বসে থাকবে না। অস্ত্রে লোকটার হাত চালু। মারা যাবার আগে দুটো সিক্সগান সে অবশ্যই ড্র করবে। তার মানে মরার আগে অন্তত কয়েকটা গুলি করবে। এত কাছ থেকে লক্ষ্য ভ্রষ্ট হবার কোন সম্ভাবনা নেই। সঙ্গে করে অন্তত দু’জনকে নিয়ে যেতে পারবে সে।

    জিম কার্সনকে খুন করতে গিয়ে দু’তিনজন লোক হারাতে আপত্তি নেই স্ট্রিচের, কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে মরার আগে কাকে খুন করবে কার্সন?

    জিমকে জিজ্ঞেস না করেও জবাবটা জানে স্টিচ। জানে, কার্সনের বুলেট প্রথমে তাকেই খুঁজে নেবে। সে-ই নেতা।

    একদৃষ্টিতে স্টিচের চোখে চেয়ে আছে জিম। বিদ্যুৎ গতিতে ড্র করে স্টিচকেই শেষ করবে সে। স্টিচ যেমন এটা জানে, তেমনি জানে অন্যান্যরাও।

    উত্তেজনার স্নায়ু ছেঁড়া পরিবেশে আরেকটা চিন্তা স্টিচের মাথায় খেলে গেল। ধরা যাক কোন না কোন ভাবে কার্সন গুলি করার আগেই ওরা তাকে শেষ করে দিল। তারপর?

    কী হবে সেটা বুঝতে বুদ্ধির দরকার পড়ে না। লেভিকে নিরাপদে বের করে নিয়ে যাবার সম্ভাবনা কত কম সেটা অনুভব করল সে মর্মে মর্মে। গোলাগুলি শুরু হলে ছোট র‍্যাঞ্চাররা চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকবে না। স্টিচ মনের চোখে দেখতে পেল, হয় তারা সবাই গুলি খেয়ে মারা যাচ্ছে, অথবা ঝুলছে সবচেয়ে কাছের কোন গাছের ডাল থেকে।

    সামনে দাঁড়ানো কার্সনের দিকে আবার পূর্ণ মনোযোগ দিল স্টিচ। আশা করছে জিম এমন কিছু করবে যে গুলি করতে পারবে সে। কিন্তু জিম কার্সন স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে তাকিয়ে আছে শুধু। সে নীরব, ধৈর্যশীল, স্থির-মনের মধ্যে কী চলছে তা চেহারা দেখে বোঝার কোন উপায় নেই। অদ্ভুত অসহায় বোধ করল স্টিচ। যেন সে একটা ঝড়ের মধ্যে ফাঁকা জায়গায় আটকে গেছে, আশঙ্কা করছে যেকোন সময় বজ্রপাতের আঘাতে হঠাৎ-মৃত্যু ছোবল হানবে।

    অনিশ্চয়তা স্টিচের কাছে অসহ্য হয়ে উঠল, জোর করে ঠোঁট প্রসারিত করে হাসির ভঙ্গি করল সে। চাপা নার্ভাস গলায় জিমের উদ্দেশে বলল, ‘দেখা যাচ্ছে কারও পক্ষেই কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না, তাই না? আমরা গুলি করলে আমাদের কয়েকজনকে শেষ করে দিতে পারবে তুমি। তুমি শুরু করলে আমরা তোমাকে শেষ করে দেব। আমাদের মধ্যে কেউই আসলে জিততে পারবে না।… তুমি কি বলো, একটা সমঝোতায় আসা যায় না?

    চেহারায় কোন পরিবর্তন এল না জিমের। জিজ্ঞেস করল, ‘কী ধরনের সমঝোতা?’

    ‘আমরা চলে যাব। এবারের মত। কোন গোলাগুলি হবে না। তোমরাও আমাদের গুলি করবে না। আজকের কথা ভুলে যাব আমরা। ঠিক আছে?’

    ‘না,’ শীতল স্বরে বলল জিম। ‘শাস্তিপ্রাপ্ত একটা গরুচোরকে তোমরা মুক্ত করেছ। শেরিফ কী বলবে জানি না, কিন্তু আমার মত হচ্ছে, লেভি ফক্স অস্ত্রটা শেরিফকে ফেরত দেবে, তারপর হাতকড়া পরে তার পাশে দাঁড়াবে। এটা হওয়ার পর তোমরা চলে যেতে পারো, কেউ কিছু বলবে না। তোমাদের অপরাধের কারণে শেরিফ যদি কোন ব্যবস্থা নিতে চায় সেটা তার নিজস্ব ব্যাপার।’

    কথাটার প্রতিবাদ এল লেভি ফক্সের কাছ থেকে।

    ‘ওরা আমাকে ফাঁসিতে চড়াবে, স্টিচ।’

    ‘স্টিচ আবার তোমাকে পালানোর সুযোগ করে দিতে চাইতে পারে,’ বলল জিম। ‘এখানের জেলে থাকবে তুমি। ওটাই তোমার উপযুক্ত জায়গা।’ স্টিচের দিকে তাকাল সে। ‘এতে যদি রাজি থাকো তো সমঝোতা হতে পারে, নইলে নয়। ভেবে দেখো কী করবে।’

    কথাটা চিন্তা করে দেখল স্টিচ। লেভিকে ইচ্ছে করেই কথা বলার সুযোগ করে দিল, সুযোগ খুঁজছে তার কথা থেকে একটা সম্মানজনক সমাধানে আসার।

    লেভি বলল, ‘আমরা যা চাই না তা আমাদের দিয়ে করাতে পারবে না তোমরা। গুলি শুরু করলে এক সেকেণ্ডে মরবে তুমি, অস্ত্রে তোমার হাত যত চালুই হোক। শুধু স্টিচ একবার নির্দেশ দিক, তা হলেই শকুনের খাবার হয়ে যাবে তুমি।’

    ‘নির্দেশ দেবে না স্টিচ,’ শান্ত গলায় জানাল জিম। ‘তোমার চামড়া বাঁচানোর জন্যে নিজের জীবনটা শেষ করবে না সে। ওকে জিজ্ঞেস করে দেখো আমি ভুল বলছি কিনা।’

    বক্তব্য বুঝতে পেরে মুখ কালো হয়ে গেল লেভির।

    দীর্ঘ একটা মুহূর্ত নীরব থাকল স্টিচ, মেঝের দিকে তাকিয়ে আছে, চোখ তুলে জিমকে দেখল, তারপর চোখ বুলাল অপেক্ষারত র‍্যাঞ্চারদের ওপর। সফলতার সুযোগ কতটা আছে বিচার করে দেখল, কোন সুযোগই নেই সফল হবার।

    হঠাৎ সিদ্ধান্তে পৌঁছে গেল সে, বলল, ‘আপাতত তোমাকে আমরা এখানেই রেখে যাব, লেভি। চিন্তা কোরো না, তোমার কোন বিপদ হতে দেব না।’

    ‘কিন্তু…’

    ‘কোন কিন্তু নয়। নির্দেশ যা দেবার আমি দিচ্ছি, তুমি নিজের চামড়া বাঁচাতে চাইলে যা বলছি তা করবে।’

    ‘কিন্তু কেন…’

    ‘চুপ! যা বলছি করো। তোমার কথা ভুলে যাচ্ছি না আমরা। অস্ত্রটা ফেলে দাও। আপাতত চলে যাব আমরা।’

    আরেকবার প্রতিবাদ জানাতে গিয়েও স্টিচের চেহারা দেখে থমকে গেল লেভি ফক্স। গজগজ করতে করতে অস্ত্রটা মেঝেতে ফেলল সে। ‘আমাকে খুন করার জন্যে রেখে যাচ্ছ তোমরা।’

    অস্ত্রটা হোলস্টারে পুরল স্টিচ, দলের উদ্দেশে বলল, ‘ওরা লেভির কোন ক্ষতি করবে না। চলো, এবার যাওয়া যাক।’

    অসন্তুষ্ট চেহারায় যার যার অস্ত্র খাপে পুরল স্টিচের দল, জাজকে পাশ কাটিয়ে একে একে নীরবে বেরিয়ে গেল কোর্ট রূম ছেড়ে। যাবার আগে প্রত্যেকে জিম কার্সনের দিকে কড়া চোখে তাকাল, কিন্তু মুখ খুলল না একজনও।

    দরজার কাছে থমকে দাঁড়িয়ে জিম কার্সনের দিকে তাকাল স্টিচ। কয়েকরকম অনুভূতি খেলা করছে তার চেহারায়। আক্রোশ, চতুরতা, ঘৃণা, হতাশা আর প্রতিশোধের স্পৃহা। স্পষ্ট বুঝল জিম, লোকটা নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছে বটে, কিন্তু আহত গর্ব তাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। এধরনের লোক হেরে যেতে ঘৃণা বোধ করে। বিশেষ করে তা যদি হয় অজস্র লোকের সামনে।

    ‘এতই সোজা, না?’ হিসহিস করে বলল স্টিচ। ‘হঠাৎ এসে হাজির হয়ে নিজেকে বিরাট এক নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছ। মনে করছ বাকি জীবন সুখে কাটবে? এতই সোজা? মনে রেখো, এ সবে শুরু হলো।’

    ‘আমি জানি, স্টিচ,’ শান্ত স্বরে বলল জিম। ‘জানি ঘটনা মাত্র শুরু হলো। সাধ্য থাকতে থাকতে রওনা হয়ে যাও। বড় বেশি কথা বলো তুমি। একদিন এজন্যে বিপদে পড়ে যাবে।’

    বিশালদেহী ফোরম্যান কর্কশ হাসল, তারপর ধুপধাপ পা ফেলে বেরিয়ে গেল ঘর ছেড়ে।

    লোকটাকে চলে যেতে দেখল জিম, বুঝতে পারছে বারুদের পিপের সলতেয় আগুন লেগে গেছে। শীঘ্রি ঘটবে বিস্ফোরণ। সংগঠিত চোর এবং সৎ মানুষদের সহাবস্থান আর সম্ভব নয় জ্যাকফর্ক উপত্যকায়।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleখুনে ক্যানিয়ন – কাজী মায়মুর হোসেন
    Next Article ধাওয়া – কাজী মায়মুর হোসেন

    Related Articles

    কাজী মায়মুর হোসেন

    অদৃশ্য ঘাতক – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৬৮ – স্বর্ণলিপ্সা

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    ধাওয়া – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    খুনে ক্যানিয়ন – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৪৮ – মৃত্যুঘণ্টা

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৮ – মহাপ্লাবন

    July 25, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }